বাংলা ভাষা মানুষ বা তরুর মত জন্ম নেয়নি, কোন কল্পিত স্বর্গ থেকেও আসেনি।—হুমায়ুন আজাদ
গবেষকদের মতে বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় সাত হাজার ভাষা প্রচলিত আছে। অবশ্য সব ভাষার লিপি নেই। আবার লিপি আছে, কিন্তু কিছু ভাষাকে মাতৃভাষা হিসেবে ব্যবহারের মানুষ নেই। যেমন, লাতিন ও সংস্কৃত ভাষা। আর পৃথিবীতে প্রচলিত প্রধান ভাষাগুলোর একটি সম্পর্ক লক্ষ করে ভাষাবিজ্ঞানীরা এদের পরিবারভুক্ত করেছেন। এই ধারায় আমাদের বাংলাসহ গ্রিক, ল্যাটিন, ইংরেজি, হিন্দি, ফারসি, ফরাসি, ডাচ, নেপালি ইত্যাদি ভাষা হচ্ছে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশের অন্তর্ভুক্ত। [১]
[justify]একটি ভাষা শুধু তার সংস্কৃতির পরিচায়কই নয় বলতে গেলে ভাষাকে ঘিরেই গড়ে উঠে সংস্কৃতির অবকাঠামো।মানুষের আচার অনুষ্ঠান, উৎসব, সামাজিকতা, চাল চলন, বিনোদন সেই অবকাঠামোটির একটা অবয়ব দেয় মাত্র।তাই ভাষার সমৃদ্ধতা যেমন সংস্কৃতিকে পরিপুষ্ট করে তেমনি ভাষার দৈন্যতা সাংস্কৃতিক দৈন্যতারই বহিপ্রকাশ।তবে বাংলাদেশে থেকে পহেলা বৈশাখে ছোটবেলায় বাবার সাথে সাতসকালে হালখাতা খেয়ে কিংবা যৌবনে রমনার বটমুলে এসো হে বৈশাখ গানের সাথে নববর্ষের সুর্যোদয় দেখে, বা পহেলা ফাল্গুনে বাসন্তি রঙের বসন পরে চারুকলার আশেপাশে ঘুরে বেড়িয়ে যে বাংলা সংস্কৃতিকে অনুভব করতে পারিনি তা পেরেছি এই সংস্কৃতির বেদি থেকে থেকে হাজার মাইল দূরে এস
ভাষা একদিনে জন্মায় না। বাংলা ভাষার জন্মও একদিনে হয়নি। মানুষের মুখে মুখে ধ্বনি বদলে যায়। শব্দ তো ধ্বনি দিয়ে আঁটিবাঁধা মালার মতন। সেও তাই বদলে যায় ধীরে ধীরে। একই সাথে বদলায় তার অর্থও। অনেক দিন পার হয়ে গেলে মনে হয় ভাষাটি একটি নতুন ভাষা হয়ে উঠেছে। বাংলা ভাষার আগেও এদেশে ভাষা ছিল। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে, খ্রিষ্টীয় দশম শতকের কাছাকাছি সময়ে বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়। কেউ কেউ অবশ্য ধারণা করেন খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতক থেকেই এ ভাষার অস্তিত্ব ছিল। এসব হিসেব থেকে একটি বিষয় পরিষ্কার যে, বাংলা ভাষার পথ পরিক্রমা কমপক্ষে হাজার বছরের। কিন্তু অবিশ্বাস্য শোনালেও এটাই সত্যি যে, বাংলা ভাষার ব্যাকরণ এখনও তৈরিই হয়নি!
[i]
“উচ্চারণ যেন ঠিক নদীর বহমান জলের মতো, প্রতি মুহূর্তে তার দিকপরিবর্তন হচ্ছে, কিন্তু বানান থাকে পাথরে খোদাই, তাকে মোছা কঠিন। লিখন ও মুদ্রণ প্রক্রিয়াই বানানের অজরত্ব এনে দেয়। বানানের কোনো পরিবর্তন দেখলেই তাই আমরা গোঁড়া হয়ে পড়ি। আরে এই ফটো তো সেই লোকের (শব্দের) নয়, একে মানি না। কানের ভিতর দিয়া যা মরমে পশে, তার চেয়ে চোখের ভিতর দিয়ে যা মগজে পৌঁছায় তার ওজন বেশি, সে খাঁটিকে ধমক দেয়, তুমি যা- ...
–কুটুমবাড়ি–
সত্যি, বানানায়তন- ১-এর সাড়া ছিল অভূতপূর্ব। অবশ্য বিলক্ষণ জানি, এ আমার লেখার গুণ নয়। বরং বানান-সংক্রান্ত লেখালেখির আকালই এজন্য দায়ী। বাংলা বানানের বিশৃঙ্খলা তো আর আজকের নয়।
আঠারো শতক পর্যন্ত বাংলা বানানে রীতিমতো নৈরাজ্য চলছিল। তখন ‘বাংলা বানান ছিলো স্বাধীন স্বেচ্ছাচারী–লেখক বা লিপিকরের উচ্চারণ অনুসারেই লিখিত হতো বানান।’ (হুমায়ুন আজাদ, ব ...
আমাদের হাতে একটি প্রমিত বাংলা বানানরীতি আছে। অথচ এত কষ্টের মাতৃভাষায় যে সুখ করে কিছু লিখব বা পড়ব! বানানের দৌরাত্ম্যে সে সুযোগ খুবই কম। সারা বিশ্বেই বানান উচ্চারণ-নির্ভর নয়। ব্যাকরণের ছাপ তাতে থাকবেই থাকবে। কিন্তু বাংলা বানানের বিশৃঙ্খলা যেন কিছুতেই কমবার নয়।
যা হোক আশার কথা হলো একটি গ্রহণযোগ্য বানানরীতি আমাদের হাতে আছে। বাংলা একাডেমীর বানানরীতিটি ভাষাবৈজ্ঞানিক এবং প্রগত...
গত পর্বের লেখার মূল বক্তব্য ছিলো যে একটি ফন্ট-এর গঠনগত ও ব্যবহারিক সৌন্দর্য নির্ভর করে এর প্রতিটি বর্ণে ব্যবহৃত রং ও স্পেস-এর ভারসাম্যপূর্ণ প্রয়োগের ওপর। প্রথমদিককার টাইপোগ্রাফী ক্লাসগুলোতে আমাদেরকে সেজন্যে খুব বেশি বলা হত আদর্শলিপি বর্ণে ব্যবহৃত স্পেস খুব ভালোভাবে আত্মস্থ করতে । স্পেস নির্ণয়ের জন্যে আমরা কাটা কম্পাস ধরে একই বর্ণের বিভিন্ন অংশের দুরুত্ব তুলনা করতাম, রে...
(টাইপোগ্রাফী বিষয়টা যতটা না মজার তার চেয়ে অনেক বেশি শ্রমসাধ্য। বিষয়টাকে একটু সহজ করার জন্যে আমরা সরাসরি আমাদের অভিজ্ঞতার কথা বলব। তাতে হয়ত উপস্থাপনা খুব গোছানো থাকবে না। কিন্তু আশা করি বিষয়টা একটু সহজবোধ্য হবে। এই পর্ব থেকে আমরা দুজন আমাদের অভিজ্ঞতার কথা সরাসরি তুলে ধরব। সেই সূত্রেই আমার উপস্থিতি।)
বর্ণমালার সাথে পরিচয় তো সেই ছোটবেলায় যখন ভাঙ্গা ভাঙ্গা লাইন-এ প্রথম ...
কাগজে কলমে বাংলা লেখা যত সহজ, কম্পিউটারে টাইপ করাটা এখনও তত সহজ নয়। বাংলা বর্ণমালা নিয়ে যারা কাজ করেন তারা জানেন এটা কতটা জটিলতাপূর্ণ। ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের গ্রাফিক ডিজাইন বিভাগের পাঠ্যক্রমের অংশ হিসেবে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স-এ আমাদের বাংলা বর্ণমালার কতগুলো সেট বানাতে হয়। কাজটা মোটেও সহজ নয় বলে প্রতিবছর এখান থেকে অনেকে পাশ করে বের হলেও বাংলা টাইপোগ্...
[justify]স্কুলের একটা গ্রুপ আছে ফেসবুকে, ঘটনাক্রমে আমাকে সেটার একরকম কেয়ারটেকার হতে হয়েছে, স্বভাবতই গ্রুপ-মুরুব্বি হিসেবে আমার নৈতিক দায়িত্ব বিশেষ বিশেষ দিনে শুভেচ্ছাবাণী জাতীয় লেখা। বছর দুয়েক আগে ২১শে ফেব্রুয়ারীতে কিছু লিখতে গিয়ে যন্ত্রণাটা হাড়ে হাড়ে টের পেলাম আবার। রোমান হরফে মনের মাধুরী মিশিয়ে যে চমৎকার সব পাঁচমেশালী বাংলা status/GP-sms/friend sms পড়ে আমার বাংলিশ বানান জ্ঞান সমৃদ্ধ হ...