এবড়ো খেবড়ো রং - ৪

দময়ন্তী এর ছবি
লিখেছেন দময়ন্তী (তারিখ: রবি, ২৫/০৭/২০১০ - ৯:৩৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


-
হাত দুখানা আজকাল কিবোর্ডের চেয়ে মাউসেই বেশী স্বচ্ছন্দ বোধ করে, তাই মাথায় কিলবিল করে বেড়ানো কথাগুলোর আর মুক্তি হয় না৷ এদিকে কিছুই না লিখলে আবার মনটা কিরকম যেন করে৷ অথচ হাবিজাবি চাট্টি অক্ষর বসিয়ে কি যে ছাই স্বর্গলাভ হয়! কিচ্ছু হয় না ---- কিস্যু না৷ হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ মোটের ওপর একইরকম হিংস্র আর মতলববাজ থেকেই গেছে৷ কিছু লোক নানারকম ভাল কথা বলেছে আর দিনের শেষে কিছু লোক সেগুলোকে 'দু: য্যা:' করে দিয়ে অন্যকিছু করে গেছে৷

কয়েক রবিবার আগে চন্দ্রিলের একটা লেখায় পড়ছিলাম যে দিনের বেলায় শিকার করব আর দিনেরাতে অচেনা দুপেয়ে দেখলেই ঘিলু ফুঁড়ে দেব, সন্ধ্যের পর একটা গুহা চাই ছবি আঁকার জন্য--- ঠিক এই কথাগুলোই নয়, এরকম কিছু একটা৷ এটা মন্দ নয় কিন্তু, বরং এটাই বেশ৷ সত্যি বলতে কি আসলে আমরা তাইই করি, শুধু মুখে সেসব বলি না৷ তবে গুহা ততটা সহজলভ্য নয় এখন আর, এইটা একটু সমস্যা হতে পারে বটে৷ অন আ সেকেন্ড থট, মেট্রো সিটিতে ফ্ল্যাটগুলোকে একটু এদিক ওদিক করে গুহায় পরিণত করাই যায়৷


-
আমি যে আবাসনে আপাতত থাকি, সেখানে বেশীরভাগই চাকুরিজীবি৷ সম্প্রতি সেখানে সুরক্ষাকর্মীদের নিয়ে পরিস্থিতি, যাকে বলে, 'একটু উত্তপ্ত' হয়ে উঠেছিল৷ এই ধরণের আবাসনগুলো যেমন হয় আর কি, চব্বিশঘন্টাই সুরক্ষাকর্মী থাকে৷ প্রধান ফটক ছাড়াও প্রতিটি টাওয়ারের নীচে এক বা দুইজন দাঁড়িয়ে থাকেন৷ তো, হঠাত্ই একদিন জানা গেল এঁরা নাকি গত দুইমাস বেতন পাচ্ছেন না আর তার আগের মাসে কেউ অর্ধেক কেউ পৌনে পেয়েছিলেন৷ নিরুপায় হয়ে তাঁরা ইউনিফর্ম খুলে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন৷ ফলে প্রধান ফটক হাট করে খোলা৷ যাই হোক, দু তিনদিন প্রতিবাদ দেখানোর পরে এঁরা বকেয়া বেতন পেলেন৷ এক কর্মীর কাছে শুনলাম তাঁদের সবাইকে নাকি অন্য একটি সুরক্ষাকর্মী যোগান দেবার সংস্থা কিনে নিচ্ছে৷ তাঁরা এখানেই থাকবেন, শুধু ইউনিফর্ম বদলে যাবে৷ ভাবলাম ভালই হল৷

ওবাবা! কদিন পরে মাস পয়লায় যেই এঁরা অন্য ইউনিফর্ম পরে কাজে এলেন, ব্যাস ফ্ল্যাট মালিকরা গেলেন বেজায় ক্ষেপে৷ ওঁদের সাথে পরামর্শ না করেই কেন অন্য সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছে ---- তাই নিয়ে তুমূল হইচই, চেঁচামেচি৷ শোনা গেল এই কর্মীদের 'দূর করে' দেওয়া হবে এবং অন্য সংস্থা (অথবা পুরানো সংস্থা)কে৷ কিন্তু কেন? তার কোন ঠিকঠাক উত্তর পেলাম না৷ এতদিন যখন এঁরা বেতন পাচ্ছিলেন না, তখন 'ওটা ওঁদের সংস্থার ব্যপার' বলে সবাই দিব্বি নিজ নিজ টিভি প্রোগ্রামে মন দিয়েছেন৷ এখন যে ঠিক কি সমস্যা হল, সেটা আমার বোধের বাইরেই রয়ে গেল৷ এই পর্যন্ত তবু একরকম ছিল, কিন্তু কিছু ফ্ল্যাটমালিক যখন এরজন্য সই সংগ্রহ করতে এলেন, তখন দেখি বক্তব্যের একজায়গায় লেখা আছে ঘরের কাজের লোক, কমন প্যাসেজ ঝাঁট দেবার লোক, নোংরা সংগ্রহকারী, খবরের কাগজ, ইস্ত্রি ইত্যাদি বিভিন্ন কাজের লোকদের লিফট ব্যবহার নিষিদ্ধ করার একটা দাবী রয়েছে৷ এটা দেখে আমি যে আমি সহজে অবাক হই না, সেও প্রচন্ড অবাক হলাম৷ ৮ তলা বা ১২ তলা বাড়ীগুলোর বেশ ওপরের দিকে থাকা লোকজনও এটায় সই করেছেন!!! কারণ জিজ্ঞাসা করে জানলাম এঁরা নাকি লিফট ঠিক করে বন্ধ করেন না, তাই কোন একটা তলায় আটকে থাকে৷ অথচ আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি বাসিন্দারাই এই কম্মটি হামেশা করে থাকেন৷ নির্দিষ্ট কিছু উদাহরণ দিয়ে 'স্ট্রংলি অবজেক্ট' লিখে সই করলাম৷ সই লেনেওয়ালারা খুবই অসন্তুষ্ট হলেন, কাগজটা নাকি নষ্ট হল৷

ভরসার কথা এটাই যে আমার চেঁচামেচি শুনে সামনের ফ্ল্যাটের তরুণ দম্পতি বেরিয়ে চেঁচামেচিতে যোগ দিল৷ যাক বাবা! সবাই তাহলে নিজের খোপে বন্দী হয় যায় নি৷


-
পশ্চিমবঙ্গে 'পরিবর্তন' আসছে৷ পোস্টারে পোস্টারে ছয়লাপ৷ ২০১১র বিধানসভা নির্বাচনই লক্ষ্য৷ গত পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস রীতিমত ভাল ফল করেছে৷ ফলে মমতা ব্যনার্জী বেশ উত্সাহিত৷ লোকজনের মধ্যেও সিপিএমের প্রতি একটা অসহিষ্ণু মনোভাব দেখা যাচ্ছে৷ মুশকিল হল মমতাদিদির কাজকম্মো দেখে ঠিক বিকল্প বলে ভরসা রাখা বোধহয় ওঁর অতিবড় ভক্তের পক্ষেও কঠিন ব্যপার৷ অথচ পশ্চিমবঙ্গ এমনই এক হতভাগা রাজ্য যে এর চেয়ে ভাল কোন বিকল্পও চোখে পড়ছে না৷ রাস্তাঘাটে লোকে বলছে আগে তো এরা বিদেয় হোক তারপর দেখা যাবে৷ এদিকে এই ভরসায় তৃণমূল এখনই তার লোভী চেহারা দেখাতে শুরু করেছে৷ গতবছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল জিতে এসেছে, এমন একটি এলাকায় টাকাপয়সার অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন করে শুনলাম 'দিদি এতদিন তো সিপিএম লুটেপুটে খেলো এবারে আমাদের কিছুদিন খেতে দিন'৷ দিব্বি বলে দিল৷ একেবারে খোলাখুলি৷ কোন লজ্জাশরমের বালাইটুকুও নেই৷

তবে এটাই সব নয়৷ এর পাশের পঞ্চায়েতেই আগে বসানো দুটো টিউবওয়েল ছিল সিপিএম সদস্যদের কারো না কারো উঠানে৷ চারিদিকে পাঁচিল ঘেরা জায়গায়৷ ফলে গ্রাম্য কোঁদলের ফলে সেই টিউবওয়েল থেকে জল নিতে মানা করে দেওয়াও ছিল নিত্যনৈমিত্তিক৷ তৃণমূল এসে আরো দুটো বসিয়েছে৷ দুটোই গ্রামের রাস্তার পাশে সর্বসাধারণের আওতার মধ্যে৷ লোকে বেশ খুশী৷ এতদিন গ্রামের দিকে নিজের বাড়ীতে একটা খুঁটি পুঁততে গেলেও 'পার্টি অফিস' থেকে অনুমতি না নিলে ক্যাচাল হওয়ার সম্ভাবনা থাকত৷ ছেলেমেয়ের বিয়ে, বাড়ী বানানো বা বাড়ানো, স্কুলের চাকরী সবেতেই 'পার্টি'র অনুমোদন দরকার৷ তো, পার্টির এই কন্ট্রোল ফ্রিক চেহারাটা মানুষ আর সহ্য করতে চাইছে না৷

সল্ট লেকের 'ইন্দিরাভবন' জ্যোতি বসুর বাসগৃহ হয়ে দাঁড়িয়েছিল৷ ফলে নিরাপত্তার অজুহাতে সামনের রাস্তাটায় যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হত না৷ রাস্তার বিভাজিকার ওপারের একদিকের গাড়ি চলাচলের অংশটুকু দিয়েই দুদিকের গাড়ি চলত৷ ব্যস্ততার সময় লোকের হয়রানির আর শেষ থাকত না৷ এখন ভদ্রলোক মারা যাওয়াতে রাস্তার একদিকের ব্যারিকেড উঠে গেছে৷ ফলে দুদিক দিয়েই গাড়ি চলে৷ গত সপ্তাহে এক অটোওয়ালা নেশ নিরক্তির সাথে বললেন 'কারো কারো মিত্যুও কেমন কাজে লাগে দেখছেন' ৷ বাকী যাত্রীরা অনেকেই সায় দিলেন৷ শুধু একজন 'জননেতা' ইত্যাদি বলে বক্তৃতা শুরু করেছিলেন৷ এরমধ্যে উল্টোডাঙা স্টেশান এসে গেল, আমি নেমে গেলাম৷ ঐ ভদ্রলোকের বক্তৃতাটা আর শোনা হল না৷ তবে সর্বহারার নেতার এমন লাটসায়েবের মত জীবনযাপন .......


-
মমতা ব্যানার্জী রেলমন্ত্রী হয়ে অবধি গাদাগাদা নতুন ট্রেন উদ্বোধন করে চলেছেন৷ এই ট্রেনগুলো চালানোর পয়সাই বা কোত্থেকে আসবে আর অন্যান্য পরিকাঠামোই বা কীভাবে হবে সে বিষয়ে তিনি নীরব৷ এদিকে রেলের পরিষেবার হাল দিনেদিনে খারাপ হচ্ছে৷ লালুপ্রসাদ যাদবের আমলে ট্রেনগুলো দিব্বি টাইমটেবল মেনে চলত টলত৷ এখন রোজ নতুন ট্রেন চালু হওয়ার ফলে টাইমটেবল ঘেঁটে ঘুগনি হয়ে গেছে৷ ওদিকে আরেক নাটক হল সব স্টেশানের রং বদলে সবুজ করে দেওয়া৷ আবারও টাকার প্রশ্নে তিনি নীরব৷ রেল দুর্ঘটনাও এদিকে বেশ জলভাত হয়ে গেছে৷ ভারতীয় রেল মোটামুটি এবারে বিজ্ঞাপন দিতে পারে "ট্রেনে চড়ে ভ্রমণ করুন, আপনার পরিবার পাঁচলক্ষ টাকা ও একটি চাকরি পেতেও পারেন' হাসি

মমতার আরেকটি অবদান হল 'লেডিজ স্পেশাল' ট্রেন৷ বিভিন্ন শাখায় স্বল্প দূরত্বের লোকাল ট্রেনে একটি করে আপ ও ডাউন লেডিজ স্পেশালের ব্যবস্থা করেছেন তিনি৷ কোন কোন শাখায় কিছু কিছু সময় এটা সত্যিই বেশ কাজের৷ মানে ঠ্যালাঠেলি, ধাক্কাধাক্কি ছাড়াই ট্রেনে ওঠা ও বসার জায়গা নিশ্চিত হওয়াটা কোথায়ও কোথায়ও এমনই অচিন্তনীয় একটা ব্যপার ছিল যে সেইসব ক্ষেত্রে এটা খুবই উপকারী হয়েছে৷ কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটা একদম ফালতু৷ লেডিজ স্পেশান শুনশান ফাঁকা ওদিকে পাশের লোকালটার পাদানীতেও জায়গা নেই ---- এটা আর যাই হোক, খুব একটা ভাল ব্যপার বা উপকারী পরিষেবা বলা যাবে না৷ সে যাক মহিলা কামরা ও মহিলা স্পেশাল নিয়ে আস্ত একটা লেখাই লিখে ফেলা যায়৷ অতএব এখানেই ক্ষান্ত দিই৷

তা, এই মমোদিদি কিন্তু আবার সাহিত্য শিল্প্চর্চাতেও খুবই আগ্রহী৷ এঁর বেশ কিছু কবিতার বই আছে৷ সেগুলো আবার বেস্টসেলারও৷ ইনি ছবিও আঁকেন, গল্প উপন্যাসও লেখেন ইত্যাদি ----- তা লিখুন্৷ তাতে কোন আপত্তি ছিল না৷ কিন্তু কেলোটা হল যখন এঁর লেখা কিছু প্রবন্ধ জাতীয় জিনিষ সংবাদপ্ত্রে বেরোতে টেরোতে লাগল৷ উরি বাবারে!! সেসব পড়লে যে কোন বাঙালী নির্ঘাত্ বাংলা বাক্যগঠন ভুলে যাবে৷

আহা সে জিনিষ থেকে সচলরা বঞ্চিত থাকবেন, তাই কি হয়! এই ব্লগটাকে আর বড় না করে এখানে একখান নমুনা দিয়ে যাই৷ দেঁতো হাসি


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

  • কিন্তু কেলোটা হল যখন এঁর লেখা কিছু প্রবন্ধ জাতীয় জিনিষ সংবাদপ্ত্রে বেরোতে টেরোতে লাগল৷ উরি বাবারে!! সেসব পড়লে যে কোন বাঙালী নির্ঘাত্ বাংলা বাক্যগঠন ভুলে যাবে৷
    উনি এগুলো কবিতা বলে চালিয়ে দিলেই কোন ঝামেলা থাকতো না ।

  • লিফট সংক্রান্ত অভিজ্ঞতা ঢাকাতে বহুকাল আগে যেই এ্যাপার্টমেন্টে থাকতাম সেখানকার গল্পের সাথে মেলে । আমার ধারনা এইসব বিষয় নিজেকে(দের) সমাজের নিচুতলার সবার সাথে আলাদা করতে মানুষ লিফকে কে উঠতে পারবে এবং কে উঠতে পারবেনা সেই নিয়ম করতে বসে । এর বাইরে আছে কর্তৃত্ব ফলানোর ইচ্ছে । নিজের বানানো নিয়মে আশপাশ চলছে এটা দেখলে মনে হয় বাঙালির ইগো বেশ আরাম পায় ।

  • ঢাকাতে যদ্দুর মনে পরে একবার মহিলা বাস চালু করা হয়েছিলো । বছর ৫/৭ আগের কথা । অভিজ্ঞতা একই রকম ।

দময়ন্তী এর ছবি

কিন্তু ওগুলোকে 'কবিতা' বলে দিলে ইতিহাস তো ওনার 'প্রবন্ধকার' পরিচয় লিপিবদ্ধ করবে না৷ মানে উনি যে স-অ-অ-ব পারেন সেইটা তো আর কেউ জানবে না৷ দেঁতো হাসি

অদ্ভুত! যাদের বাড়ীতে কাজ করে, তারাই লিফটে উঠতে দেবে না!! আরে লোকে তো তখন যাবেই না তাদের বাড়ী কাজ করতে৷
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

হাসিব এর ছবি

লোকে তো তখন যাবেই না তাদের বাড়ী কাজ করতে৷

বিশ বছর আগের তুলনায় বাংলাদেশে দরিদ্র নারীদের কর্মসংস্থানের বিকল্প হয়েছে এটা ঠিক। এখন আর আগের মতো সহজে "কাজের মেয়ে" পাওয়া যায় না। আমার ধারনা ভারতের ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি। তবে শেষমেষ মানি ম্যাটার্স। পেটে ভাত জোটাতে না পারলে এর থেকে অনেক হেয় কাজ, লাথিঝাটা সহ্য করতে হয় মানুষকে।

দময়ন্তী এর ছবি

হুঁ তা ঠিক৷ অসংগঠিত কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এটা একটা বড় সমস্যা৷
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

স্নিগ্ধা এর ছবি

কিঞ্চিৎ অফটপিক একটা প্রশ্ন - যেসব জায়গায় 'লেডিজ স্পেশাল' ট্রেনগুলো যাত্রীদের জন্য উপকারী হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে কি মুম্বাই একটা?

আপনি সহজে অবাক হন না? শুনে মন্টা ইক্টু বিমর্ষমতো হলো মন খারাপ আমি এখনও, এদ্দিন পরেও মাঝে মাঝে অবাক হয়ে পড়ি। আক্কেল কি আর কোনদিনই হবে না আমার! জানি জানি, বলবেন তো যার হয় না নয় বছরে ......

[আচ্ছা, আপনি একবার আমাকে অর্ধেক দাওয়াতমতো দিসিলেন না? সেদিন দেখলাম নজরুলকে ভারত বেড়ানো নিয়ে জিজ্ঞেস করতেসেন। আমার দাওয়াতের কী হলো?? পর্ক ভিন্দালু কি বাই-বাই গেলো? মন খারাপ ]

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনি এ নিয়ে একদম কোনো চিন্তা করবেন না। হাজার হলেও আপনি আমার বড় বোনের মতো। শ্রদ্ধা সম্মান বলে একটা ব্যাপার তো আছে তাই না?

আমি আপনার হয়ে পর্ক ভিন্দালু সব ডবল কোর্স সেঁটে আসবো। ছবি তুলে আপনাকে পাঠাবো। আর কটা দিন একটু কষ্ট করে দৈজ্জ দরেন পিলিজ চোখ টিপি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

দময়ন্তী এর ছবি

ঠিক ঠিক৷ আপনার আদরের 'নইজ্যা'র কোন অযত্ন হবে না৷ আপনি নিশ্চিন্তে নিদ্রা যান৷ হাসি দেঁতো হাসি
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

দময়ন্তী এর ছবি

আরে আরে আপনি বেঁচেবর্তে আছেন? আমার কিরম মনে হচ্ছিল আপনি বোধহয় সেই রাতে যাদের নাম করতে নেই, তাই হয়ে গেছেন৷ খাইছে

হ্যাঁ মুম্বাইয়ের বিভিন্ন শাখার লোকাল একটা৷ আরেকটা হল শিয়ালদা-বনগাঁ লোকাল৷

আরে আর্ধেক কেন, আপনারে তো পুরাই দাওয়াত দিসিলাম৷ আপনি আইসলেন না, আমি পুণে ছাইড়্যা আইয়া পড়লাম তো৷ কোথা সে পর্তুগীজ বাড়ী আর কোথা সে পর্ক ভিন্দালু৷:(

এখন আসলে আপনারে নাহয় নলেনগুড়ের আইসক্রিম খাওয়াবো৷ চলবে?
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আপনার দিনপঞ্জি পড়লাম।

মমতার প্রবন্ধ পড়লুম। দেঁতো হাসি

----------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

দময়ন্তী এর ছবি

হা হা দেঁতো হাসি
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এটা কেমনতরো লিফট যে দরজা বন্ধ করতে হয়? দরজা আপনা আপনি বন্ধ হওয়ার কথা নয়? কোন কোম্পানীর লিফট এটা? ঠিক মতো প্রোগ্রাম করা হয়নি, ঠিক করতে বলেন চোখ টিপি

দময়ন্তী এর ছবি

আরে তৃতীয় বিশ্বের এই শহরে অনেক বাড়ীর লিফটের দরজাই এখনো কোলাপসিবল গেটের মত৷ লিফটে একটা আর ফ্লোরে একটা থাকে৷ দুটোকে টেনে হিঁচড়ে এনে বন্ধ করতে হয়৷ কিছু কিছু দরজার সাথে তো রীতিমত কুস্তি করতে হয়৷ দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

তানভীর এর ছবি

তখন দেখি বক্তব্যের একজায়গায় লেখা আছে ঘরের কাজের লোক, কমন প্যাসেজ ঝাঁট দেবার লোক, নোংরা সংগ্রহকারী, খবরের কাগজ, ইস্ত্রি ইত্যাদি বিভিন্ন কাজের লোকদের লিফট ব্যবহার নিষিদ্ধ করার একটা দাবী রয়েছে৷

এ বাক্য পড়ে এখন বিদেশে বসে হয়তো অবাক হচ্ছি, পরে ভাবলাম দেশে থাকলে হয়তো মোটেও আপত্তি করতাম না, পারলে সই দিয়ে দিতাম। এই আমরাই তো দেশে 'কাজের লোক' নামক মধ্যযুগীয় দাসব্যবস্থা টিকিয়ে রেখে ব্লগে মানবাধিকারের ঝড় তুলি।

দময়ন্তী এর ছবি

হুঁ৷ আর লোকজনের ব্যবহার দেখলে অবাক হওয়াও ভুলে যাই৷
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অনেকদিন পর লিখলেন দিদি! তবে যা লিখেছেন তাতে মন ভরে গেছে।

১. ভেবে মনে হল আলতামিরার যুগের অবসান হয়না কখনো। তার রূপ কেবল পালটে যায়। প্রতিদিন সকালে শিকারে বের হই। একটা সময় শিকারলদ্ধ গলাধকরণ করি। তারপর গুহায় ঢুকে যাই। পরদিন সকালে আবারও একই চিত্র। শিকারী কোন কোন দিন নিজেও শিকার হয়ে যায়।

২. অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স নামের যে আবাসন ব্যবস্থাগুলোতে আমাদের অনেককেই থাকতে হয় তার সাত কাহন বলতে গেলে বই হয়ে যাবে। তবে সেগুলো বলার রুচি হয়না। তীব্র বিবমিষা হয়। কোলকাতার চিত্র ঢাকার থেকে ভিন্ন কিছু বলে মনে হলনা।

৩. এক একটা যুগ আসে যখন কেবল বলে 'ভেঙে ফেলো, ভেঙে ফেলো'। কিন্তু ভেঙে ফেলে কী গড়া হবে বা কী পাওয়া যাবে তা কেউ বলতে পারেনা। তারপর ভাঙা সারা হলে দেখা যায় সেই একই রাবণ পর্ব। তবে এর মানে এই না যে অচলায়তন ভাঙতে হবেনা। ভাঙাটা জরুরী - কারণ ধ্বংস নতুন নির্মাণের পথ তৈরি করে। সংসদীয় কম্যুনিস্টদের খাঁচা থেকে বের হবার জন্য পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সামনে যে বিকল্পগুলো আছে তাতে বোধ হয় পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে এখনো অনেকটা পথ হাঁটতে হবে।

৪. শ্রীমতি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কথা-লেখা পড়ে আমাদের শ্রীমান এরশাদের কথা মনে পড়ল। এই নাটক আমরা আটাশ বছর আগেই দেখেছি। শ্রীমতির চিত্রকর্মের কপি দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। অমন সৌভাগ্য আমার আর না হলে মনে হয় ভালো হয়।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দময়ন্তী এর ছবি

আপনার সবগুলো বক্তব্যেই এমন একমত হয়ে গেলাম যে নতুন কিছু আর বলার নেই৷

দারুণ ভাল থাকুন হাসি
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমাদের আবাসনে কিছুদিন আগে পরিচালনা কমিটি নির্বাচন হলো। যে ঢাকঢোল পিটিয়ে এবং খরচা পাতি করে, বিশেষ করে ফল প্রকাশের পরে যে বিশাল গণভোজ হলো তা দেখে শঙ্কিত... মাসে মাসে যে সার্ভিস চার্জ দেই, তা কোথায় যায় এবার আন্দাজ করা গেলো...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

দময়ন্তী এর ছবি

এখানে তো নির্বাচন আছে, এই পুজো, সেই পুজো আছে, অমুকবাবা, তমুকমা'র জন্মতিথি, তিরোধান দিবস আছে৷ মন খারাপ সবেতেই উদ্দাম মাইক বাজানো আছে৷
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।