যাযাবর দিনের গল্প (চার) – ইস্তাম্বুল আর গ্রীক সুন্দরী এথিনা

তীরন্দাজ এর ছবি
লিখেছেন তীরন্দাজ (তারিখ: রবি, ২৯/০৩/২০০৯ - ৪:৩০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ভান লেকের জাহাজে ট্রেন উঠছে, তুরস্কছ’জনের একটি কামরা। বেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও আরামদায়ক। আরো দু’জন সহযাত্রি উঠলো। ফ্রান্সের জ্যাক ও তার বান্ধবী ক্যারল। উঠেই হাজারো গল্পে মেতে আমাদেরকে আপন করে নিল দু’জন। নিদারুন এই পরিস্থিতিতে ওদের সাথে আলাপচারিতা খুব জরুরী ছিল আমাদের । ইরানের প্রতিকুলতার কবলে নিজেদের আত্মবিশ্বাসের মাঝে যে ঘাটতি তৈরী হয়েছিল, তার অনেকটাই পূরণ হয়ে গেলো। আমরা যে সভ্যজগতের মানুষ, আমরা যে দু’বেলা খাবার আর ভবিষ্যতের চিন্তা বাদে অন্য চিন্তাও মাথায় রাখি, তা অনুভব করলাম আবার। জ্যাক আর ক্যারলের কাছ থেকে কোন পার্থিব সহায়তার চেয়ে এই আত্মিক যোগাযোগটাই আমাদের জন্যে অনেক বেশী মূল্যবান হয়ে দাঁড়ালো।

সামনের দিনগুলো কেমন হবে, জানা নেই এখনো। তুরস্ক পেরিয়ে গ্রীসে পৌঁছেই জাহাজে কাজ পাবো কি না, তাও জানিনা। সবই অনিশ্চিত! তারপরও ভাবলাম, এই তিন দিনের ট্রেণ ভ্রমণে একটু চোখ রাখি আলোর দিকে, বাইরের পৃথিবীর দিকে যেন একবার প্রাণ ভরে তাকাই! ট্রেণের কামরার বাইরে একটি ম্যপ আটকানো। দেখালাম, ক্যাস্পিয়ান সাগরকে ডানে রেখে, তিব্রিজ ও ভান লেক পেরিয়ে পুরো তুরস্ককে পুব থেকে পশ্চিমে অতিক্রম করে পৌঁছাবো আমাদের গন্তব্যস্থল ইস্তাম্বুলে। এর মাঝে পড়বে রাজধানী আঙ্কারা। প্রায় পুরো রেলপথই এঁকে বেঁকে পাহাড়ী এলাকার বুক কেটে এগিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও সুড়ঙ্গ কেটে লাইন বসানো হয়েছে। কোথাও পাহাড়ের খাদ ঘেসে ঘেসে। সবশেষে বসফরাস পেরিয়ে ইস্তাম্বুল। এবার সত্যি সত্যিই রোমাঞ্চের ছোঁয়াচ লাগলো ভেতরে। বুকের ভেতরে পৃথিবী দেখার যে সাধ কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে অন্ধকারে লুকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়েছিলাম, তাকে মুক্ত করতে পারলাম আবার। তাতে নিজেদের পরম সৌভাগ্যকে যেন হৃদয় ছুঁইয়ে স্পর্শ করতে পারলাম। গত দুই মাসের অনিশ্চয়তার কালিমা, অনাগত ভবিস্যতের অপরিচিত অবয়ব- সব মিলে মিশে এক হয়ে বর্তমানের আনন্দের আড়ালে নিথর হয়ে পড়ে রইলো। আর আমরা চারজন সেই বর্তমানকে বুকে করে বাইরে চোখ মেলে উদ্দেলিত হয়ে রইলাম। আমাদের সাথে রইলো জ্যাক আর ক্যারল।

পরদিন এক আলোকিত সকালে আমাদের ট্রেন এসে ভান লেকের পাড়ে থামলো। জ্যাকের কাছে শুলাম, এবার পুরো ট্রেনটিই তোলা হবে ফেরীতে। প্রথমে বিশ্বাস করতে চাইলাম না। পরে যখন একটি একটি বগি ফেরীতে তোলা হলো, করতে বাধ্য হলাম। প্রায় চার ঘন্টার পাড়িপথ। ট্রেনের কামরা থেকে বেরিয়ে জাহাজের সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে উপরের ডেকে গিয়ে দাঁড়ালাম। জলছোঁয়া দুরন্ত বাতাস উড়ে এসে জড়িয়ে ধরলো শরীর, আমার মাথার অযত্নে বর্ধিত চুলে ঢেউ খেললো । সে বাতাসের আদরে আবার বিষন্নতা এসেও বাসা বাঁধলো ভেতরে। বাবা-মা ভাইবোনের কথা খুব বেশি করে মনে পড়লো আবার। বাতাসের ভাঁজে ভাঁজে মায়ের ডাক এসে কানে বাজলো। ভান লেকসে ডাক শুনতে শুনতে এক আত্মমগ্নতায় ডুবে নিজের মাঝেই হারিয়ে ফেললাম নিজেকে। হঠাৎ কেউ একজন পেছন থেকে আমার চোখ চেপে ধরলো। অনুমান করার চেষ্টা করলাম, ভাবলাম, আমার বণ্ধুদেরই কেউ একজন হবে হয়তো! ছাড়া পেয়ে পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখি, মিষ্টি মুখে হাসছে ক্যারল। তার পাশে একটু দুরে দাড়িয়ে জ্যাক। খুব নরম আর কোমল হয়ে বুকে লাগলো ওদের এই অনাবিল বন্ধুত্বের ছোঁয়া। তিনজনে পাশাপাশি বসলাম। নানা গল্পে বিভোর হয়ে গেলাম আমরা। একসময় বললাম, “তুর্কীরা হাত সরাসরি মুখে তুলে খেতে জানেনা, মাথার পেছন থেকে ঘুরিয়ে এনে খায়”। বলেই হাতে ভঙ্গি করে দেখিয়েও দিলাম। ওরা অবাক হয়ে আমার এই কথার কারণ জানতে চাইল। বললাম, “দেখছনা, ওরা লেকের পাশ ঘেসে ট্রেন লাইন না করে পুরো ট্রেনে তুলে দিল জাহাজে!” শুনে হাসতে হাসতে পেট চেপে ধরলো দু’জন। একটু পরই শাজাহান ও সাদরূল ভাই এসে যোগ দিল সাথে। ভন লেকের বুকে আমাদের নির্মল আনন্দঘন হাসি বাতাসের শরীরে এক বিষন্ন আনন্দে ভেসে রইলো।

আবারাত পর্বতমালার মাঝে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় আঠারোশ মিটার উপরে অবস্থিত এই ভান লেক। এটি তুরস্কের সবচেয়ে বড় লেক। একশো কুড়ি কিলোমিটার লম্বা ও আশি কিলোমিটার চওড়া। ওপারে পৌঁছাতে রাত হয়ে গেলো। বেশ ধীরে সুস্থে জাহাজের পেট থেকে বেরিয়ে এলো ট্রেণের এক একটি বগি। বাইরে জোড়া দেয়া হলো আবার। তারপর অন্ধকারে বুক চিড়ে ছুটে চললো ইন্তান্মুলের পথে। আরারাত পর্বতমালা ভান লেক পেরুনোর সময় যতটুকু দেখার, দেখা দিয়ে হারিয়ে গেলো রাতের অন্ধকারে। আমাদের সামনে আরো দু’দিনের পথ।

সেই দু’দিনের পথ পেরিয়ে কোন এক দুপুরে আমাদের ট্রেন এসে ইস্তান্বুল ষ্টেশনে থামলো। জ্যাক আর ক্যারল ওদের ঠিকানা দিয়ে বিদায় নিয়ে চলে গেলো অন্যদিকে। আমরা আবার কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি। যত দ্রুত সম্ভব ইস্তান্বুল ছেড়ে গ্রীসের পথে রওয়ানা হতে হবে। তার জন্যে ট্রেণের সময় জানা দরকার, টিকিটের দাম আমাদের পকেটের পয়সায় কুলোবে কি? এসব খোঁজখবরের জন্যে ষ্টেশনেই রয়ে গেলাম। দু’দিন পর একটি ট্রেণ ছাড়বে গ্রীসের পথে। ভাড়া আশাতীত বেশী হলেও কুলিয়ে যাবে কোনভাবে। এসব খবর জেনে ষ্টেশন ছেড়ে ইস্তান্বুলের বুকে পা রাখলাম আমরা। ইউরোপের মাটিতে এই আমাদের প্রথম পদক্ষেপ!

তেহরানের চেয়ে অনেক বেশী জীবনচঞ্চল ইস্তান্বুল। প্রাচ্য, পাশ্চাত্য ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক মিলনের এক বিশাল পটভুমি। রাস্তায় বেরিয়েই বিভিন্ন গায়ের রংএর বিভিন্ন দেশের মানুষের সমারোহ। এদের পোষাক আলাদা, ভাষা আলাদা, চলাফেরাও আলাদা। নিজেকে তাই তেহরানের মতো আলাদাভাবে চোখে পড়লো না। এদের মাঝে মিশে গিয়ে এদেরই একজন হয়ে রাত কাটানোর ডেরার সন্ধানে ব্যাস্ত হলাম ইস্তান্মুলচারজন। ভাড়ার বহর দেখে আবার শুকিয়ে গেলো মুখ। কিন্তু শহরের অলিতে গলিতে ঘুরে ঘুরে আর চলতে চাইল না পা। অবশেষে বসফরাসের তীরেই আমাদের জন্যে বিলাসিতা হলেও একটি সস্তা হোটেলের ভাঙ্গাচোরা কামরায় আমরা চারজন আস্তনা গাড়লাম। বিশাল এক খাট ঘর জুড়ে। তাতে চারজনের ঘুমোনোর জায়গা। বরাদ্ধ রুটি আর পানি খেয়ে ঘুমোতে চেষ্টা করলাম। কিন্তু আমাদের ঘুমকে বরবাদ করে দিতে হাজার হাজার ছারপোকা বেরিয়ে এলো বিছানার ফাঁকফোকড় থেকে। কামড়ে অস্থির হয়ে গেলাম সবাই। এতো ছারপোকা কখনো দেখিনি। তেহরানের হোটেলেও এতো ছিলনা। প্রায় বিনিদ্রই কাটলো সারারাত। ঠিক করলাম, একদিন উপোষ থাকতে হলেও ছাড়পোকা নাশক কিছু একটি কিনবই কাল।

পরদিন বসফরাসের তীরে হাটতে হাটতে মিলিয়ে গেলো সেই গ্লানিময় রাত। বিশাল এক ব্রীজ পেরিয়ে এশিয়া আর ইউরোপ পাড়ি দিচ্ছে অসংখ্য গাড়ির বহর। এর পাশে আলাদা অংশে হেটে ওপারে যাবারও ব্যাবস্থা রয়েছে। ইউরোপীয় তীরে যেনো মানুষের মেলা বসেছে। ছোট বড় জাহাজ এসে ভিড়ছে তীরে, ওঠানাম করছে লোকজন। মাছের নৌকোও ভীড়ছে, সেই তাজা মাছ খোলা আকাশের নীচে ভেজে বিক্রি করা হচ্ছে। দেখে আমাদের লোভ হলেও কেনার সাহস করলাম না। সাদরুল ভাই এর তাড়ায় নানা জনকে জিজ্ঞেস করে ইয়থ হোষ্টেলের ঠিকানা বের করলাম। বসফরাসের তীর ছেড়ে বেশ মন খারাপ করেই সেদিকে ছুটলাম। এবার ইন্টারন্যশনাল আইডেন্টিটি কার্ডটি করাতেই হবে। তাতে হয়তো গ্রীসের ভাড়ায় ছাড় পাওয়া যেতে পারে অনেকটা। জায়গাটি খুঁজে পেতে তেমন দেরী হলোনা। আইডেন্টিটি কার্ডটিও সহজেই পেয়ে মন ভালো হয়ে গেলো। সাথে সাথেই ছুটলাম শ্টেশনে। এথেন্সের টিকিটও কেটে ফেল্লাম অনেক কম খরচে। এবার সত্যিই আনন্দিত আমরা। সে আনন্দের তোড়ে বসফরাসের তীরে এসে সবাই মিলে মাছভাজা খাবার সাহসও করলাম। তারপর খুঁজে বের করালাম ছাড়পোকা নিধন করার মহৌষধ। রাতে হোটেলে ফিরে এসে সেগুলো বিছানাল চারপাশে ছড়িয়ে দিলাম। ভয়ঙ্কর দুর্গন্ধ! তাতে কি? ছাড়পোকা পালালেই হলো! ওদের যন্ত্রণা থেকে পুরো না হলেও কিছুটা রক্ষা পাওয়া গেলো বটে! বেশ তাড়াতাড়িই ঘুমিয়ে পড়লাম সবাই।

আরেকটি দিন কাটাতে হবে এখানে। তার পরদিন সকালে গ্রীসের ট্রেন। দিনটি হাতে পেয়ে সবাই মিলে ঠিক করলাম, পায়ে হেঁটে ইউরোপ এশিয়া পাড়ির সুযোগ গ্রহণ করবো এবার। বেশ লম্বা হাঁটাপথ। তাছাড়া গত কয়েক দিনের যাত্রাপথের ক্লান্তিতে এমনিতেই অবসন্ন শরীর। কিন্তু কবে আবার ইস্তান্বুলে আসতে পারবো, কে জানে! স্কুলের বইতে বসফরাস প্রণালীর কথা অনেকবার পড়েছি। আজ তার উপর দিয়ে হেটে যাবার সুযোগ হবে আমাদের, ভাবতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পরলো শরীরে। ইউরোপ থেকে এশিয়া পেরুতে আধঘন্টার মতো সময় লাগলো। ওপারে উদ্দেশ্যহীন সামান্য ঘোরাঘুরির পর আবার ফিরে এলাম ইউরোপে। আমাদের পায়ের নীচ দিয়ে বসফরাসে ভেসে গেলো অসংখ্য ছোট বড় জাহাজ আর নৌকোর বহর। আমরা ব্রীজ পেরুনোর পথে থেমে থেমে সেগুলো দেখে স্পন্দিত হলাম। অনিশ্চিত ভবিষ্যতকে সামনে রেখেও নিজেদের সৌভাগ্যকে অনুভব করলাম পলে পলে। হয়তো জাহাজে করেই আবার বসফরাস পাড়ি দেবো, এমনি এক অনুভুতি লালন করে ফিরে এলাম ইউরোপে। ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের নিদর্শণ ইস্তান্মুলের সুবিখ্যাত „সুলতান শাহী সমজিদ“ বাইরে থেকে হলেও একবার দেখা হলো। সে মুহুর্তে নিজেদেরকে পরিব্রাজক বলেই মনে হলো। একসময় কিছুক্ষনের জন্যে ভুলেও গেলাম যে, কালই এথেন্সের অনিশ্চিত জীবনে পা বাড়াচ্ছি আবার।

ইস্তান্বুলকে বিদায় জানিয়ে চড়লাম এথেন্সের ট্রেনে। বুকের ভেতরে দুরু দুরু ভাব। জাহাজে কাজ পাবো তো! গ্রীক মাইথোলজির রানী, শৌকর্যের প্রতীক এথিনার কাছে যে আমাদের অনেক প্রত্যাশা! বিমুখ হলে আমাদের সমস্ত পরিকল্পনা ধুলিস্যাত হয়ে যাবে! এতোদিন তো ছিল এগিয়ে যাওয়া, এখন কিছুদিনের জন্যে হলেও এথিনার আশ্রয়ে নিজেদেরকে কিছুটা আর্থিকভাবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখি। পাশাপাশি জাহাজে সমুদ্র আর নানা দেশ পাড়ি দেবার মাঝে যে রোমাঞ্চকর আনন্দ, সেটাও ভর করলো আমাদের মাঝে। শুধুমাত্র সাদরুল ভাই বাস্তবমুখী প্রসঙ্গ টেনে আমাদের ভাবনাকে লাগামবদ্ধ করায় প্রয়াসী হলেন।

দুপুরের পর গ্রীক সীমান্তবর্তী শহর পিথিয়নে এসে থামলো ট্রেন। এবার আরেক নতুন দেশ আমাদের সামনে। আরেক নতুন অভিজ্ঞতা! ওরিয়েন্ট পেরিয়ে এবারই আসল ইউরোপ। ইমিগ্রেশনের লোকজন উঠলো গাড়ীতে। সবার মতো আমরাও আমাদের পিথিয়ন রেলষ্টেশনপাসপোর্ট দেখালাম। বাংলাদেশ থেকেই গ্রীসের ভিসা নেয়া ছিল সবারই। সে ভিসার বৈধতাও ছিল তখনো। কিন্তু ওরা ইশারা করলো, ওদের সাথে নেমে আসার জন্যে। মালপত্রও নিতে বললো সাথে। ষ্টেশনের একটি ঘরে বসানো হলো আমাদের। কারণ জানতে চাইলাম। কিন্তু জানা সম্ভব হলোনা। একটি অক্ষরও ইংরেজী বলেনা কেউ! গ্রীক ভাষাতে যা বললো, তাতে পকিস্তান শব্দটিই শুনতে পেলাম কয়েকবার। ওরা আমাদেরকে পাকিস্তানী ভেবেছে। পাসপোর্ট, বিভিন্ন কাগজপত্র দেখিয়েও কিছুতেই নিজেদেরকে বাংলাদেশী বলে প্রমাণ করতে পারলাম না। আমাদের চোখের সামনে ঘরঘর আওয়াজ করতে করতে এথেন্সের দিকে মিলিয়ে গেলো আমাদের ট্রেন। আমাদের নিদারুন বিধ্বস্ত করে আমাদের জমানো স্বপ্নকেও কেড়ে নিয়ে গেল সাথে। আমরা সে ধ্বংসের অতল গহব্বরে নিজেদের সমর্পন করে হতবাক হয়ে বসে রইলাম পিথিয়ন রেলষ্টেশনে।

চলবে……।

আগের পর্ব:
যাযাবর দিনের গল্প - ঢাকা, দিল্লী, কাবুল
যাযাবর জীবনের গল্প - কাবুলের বারী ভাই
যাযাবর দিনের গল্প (তিন)– তেহরান এক ঝলসানো রুটি


মন্তব্য

মুস্তাফিজ এর ছবি

বাংলাদেশী পাসস্পোর্ট দেখে ইউরোপীয়ান দের নাক সিটকানো ভাব তাহলে নুতন নয়

...........................
Every Picture Tells a Story

তীরন্দাজ এর ছবি

শুধু ইউরোপীয়ান কেন? সব দেশেই প্রায়! গরীব আমরা, তাই!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

আবু রেজা এর ছবি

অনেক দিন পর পড়লাম ভ্রমণ কাহিনী! পরবর্তী পর্ব তাড়াতাড়ি পোস্ট করুন ভাই।
*****************************************************
যে জন বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গ বাণী
সে জন কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।।

যে জন বঙ্গেতে জন্মি হিংসে বঙ্গ বাণী
সে জন কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।।

তীরন্দাজ এর ছবি

ধন্যবাদ....! অবশ্যই করবো।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

জ্যাক আর ক্যারলের সাথে করা কৌতুকটি বেশ মজার লাগলো।

তীরন্দাজ এর ছবি

আমিও কৌতুকটি করতে পেরে মজা পেয়েছিলাম। তাই এত বছর পরও মনে আছে।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

কীর্তিনাশা এর ছবি

এ কোথায় এসে লেখা থামালেন তীরু'দা ! ?

এই উব্দেগ, উত্তেজনা হজম করা মুশ্কিল। পরবর্তি পর্ব তাড়াতাড়ি দেবেন দয়া করে.........

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

তীরন্দাজ এর ছবি

এখানে এনে শেষ করে বাড়াবাড়ি করলাম কি? তবে পরের পর্ব আসবে দ্রতই। ধন্যবাদ আপনাকে‍!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

পুতুল এর ছবি

আহা কি নিদারুণ অনিশ্চয়তায় এনে পর্বটি শেষ করলেন! পরের পর্বটা একটু ...
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

তীরন্দাজ এর ছবি

অবশ্যই.......!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

রানা মেহের এর ছবি

তীরন্দাজ

আপনার এই সিরিজটা এত অন্যরকম।
এতো ভালো।
মন্তব্যের জন্য শব্দে টান পড়ে যায়
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

তীরন্দাজ এর ছবি

এর চেয়ে সুন্দর মন্তব্য আর কি হতে পারে? অনেক অনেক ধন্যবাদ!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

এনকিদু এর ছবি

ভাল লাগল, যথারীতি ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

তীরন্দাজ এর ছবি

খুশী হলাম জেনে ভাই! ধন্যবাদ!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

গৌরীশ রায় এর ছবি

মুগ্ধতা জানিয়ে গেলাম।

'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর

'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর

তীরন্দাজ এর ছবি

আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

ফারুক হাসান এর ছবি

প্রায় প্রতি পর্ব পড়েই আমার মনে একটি প্রশ্ন জাগে কিন্তু করা হয়ে উঠে না। সেটি হলো, আপনারা চাকরির জন্য গ্রীসকে কেন বেছে নিলেন? অন্যঅর্থে, গ্রীসে কেন গেলেন, আমেরিকা কিংবা ইংল্যান্ড নয় কেন?

মুস্তাফিজ এর ছবি

বেশীর ভাগ জাহাজের রেজিস্ট্রেশন গ্রীসে হয়ে থাকে, সেখান থেকে জাহাজে কাজ পাওয়া সহজ, আর বিশ্ব ঘোরার জন্য আমার ধারনা জাহাজী জীবন মন্দ নয়।

...........................
Every Picture Tells a Story

তীরন্দাজ এর ছবি

আপনার আগ্রহের জন্যে ধন্যবাদ। আমাদের হাতে যতটা রসদ ছিল, তাতে আমেরিকা বা ইংল্যান্ডের কথা ভাবা সম্ভব ছিল না। তাছাড়া জাহাজে চাকুরী করার পেছনে মূল কারণ ছিল, বাইরে কোথাও পড়াশোনার জন্যে প্রাথমিক রসদ জোগাড় করা। আরেকটি কারণ, দেশ দেখা।

পরে আমরা সবাই জার্মানীতে এসে পড়াশোনা করেছি। এর বাইরে, বাকী তিনজনের না হলেও আমার একটি দূর্বলতা ছিল জার্মানীর প্রতি অনেক আগে থেকেই। যেহেতু জাহাজ ছেড়ে আমিই প্রথমে জার্মনীতে এসেছি, পড়াশোনার সুযোগ করতে পেরেছি, বাকী তিনজন পরে তাই এখানেই এসেছিল।

আরেকটি কথা বলছি। সেসময়ে তখনকার ইউরোপ আমাদের জন্যে এখনকার চেয়ে অনেক কঠিন ছিল।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

জিজ্ঞাসু এর ছবি

আপনার লেখা পড়ে ভাল লাগে। চলুক তাহলে। আচ্ছা, পাকিস্তানিরা কি গ্রিস যেতে পারে না?

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

তীরন্দাজ এর ছবি

পাকিস্তানীরা গ্রীস যেতে পারে না, এমন কোন লিখিত বা অলিখিত নিয়মের কথা সত্যিই জানা নেই আমার। তবে পাকিস্তানও আমাদের দেশের মতোই গরীব একটি দেশ। এসব দেশের লোকজনদের ফিরিয়ে দিতে চাইলে যে কোন বানোয়াট কিছু বলেই ফিরিয়ে দেয়া যায়। অনেকদিন দেশের বাইরে, এধরণের ব্যাবহার অনেক সইতে হয়েছে।

তবে এখনকার পৃথিবীতে পাকিস্তানীদের ভালো চোখে দেখা হয়না। ইসলাম ধর্মের কারণে। সেটাও তো ঠিক নয়। ধনী আরবদের আবার আদর করে ডেকে নেয়া হয়। আমি যে শহরে থাকি, মিউনিখ, ধনী আরবদের সেখানে খুব আনাগোনা। শহরের কেন্দ্রে বোরকাধীনীরা ইচ্ছেমতো কেনাকাটা করে। খুব কদর ওদের। আসলে টাকাই আসল।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

তীরুভাই ভালোলাগা জানাতে সত্যিই শব্দ কম পড়ে।
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

তীরন্দাজ এর ছবি

অনেক অনেক আন্তরিক ধন্যবাদ ভাই!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

তুলিরেখা এর ছবি

কাহিনীতে বুঁদ হয়ে আছি।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

তীরন্দাজ এর ছবি

পুরোনো কাহিনীর ভেতরে ঢুকে আমিও বুদ হয়ে যাই বারবার! ধন্যবাদ আপনাকে!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

রণদীপম বসু এর ছবি

চলুক

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

তীরন্দাজ এর ছবি

খুশী হলাম রণদীপম!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সচল জাহিদ এর ছবি

তীরুদা এত অসম্ভব সুন্দর বর্ননা, আমার মনে হচ্ছে আমিও বসফরাস প্রণালীর উপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে ইউরোপ থেকে এশিয়ায় পাড়ি দিচ্ছি ।

-----------------------------------------------------------------------------
আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ, তবুও সমূদ্র ছোবনা
মরুর আকাশে রোদ হব শুধু ছায়া হবনা ।।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

তীরন্দাজ এর ছবি

আপনাকে এভাবে হাটাতে পেরে আমারও যে খুব আনন্দ হচ্ছে। তবে লিখতে গিয়ে মনে হলো নিজেও হাঁটছি। ... ধন্যবাদ আপনাকে!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

তাড়াতাড়ি পরের পর্ব দিন .... লেখায় চলুক
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

তীরন্দাজ এর ছবি

ধন্যবাদ বাদশা ভাই! যতো দ্রুত পারি, দেবো!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

বাউলিআনা [অতিথি] এর ছবি

পড়তে একটু দেরি হয়ে গেল।
ভাল লাগল আগের মতই..
আবার অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে চিন্তাও হচ্ছে।

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

ইস্ এত চমৎকার করে কিভাবে লিখেন তীরুদা!

তীরন্দাজ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ অনিন্দিতা। নিজের জীবনের বিশেষ সময়ের কাহিনীগুলো সবসময় জেগে আছে মনের ভেতরে। তাই হয়তো সুন্দর হয়ে যায়।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

অসমাপ্ত রহস্যগল্পের স্টাইলে পাঠককে ঝুলিয়ে রাখা কি ঠিক? হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

তীরন্দাজ এর ছবি

এবার মনে হচ্ছে ঠিক হয়নি। কিন্তু করে যে ফেললাম, ফিরিয়ে নেবার উপায় কি?

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আমি না কখনো ছারপোকা দেখিনি...ইয়ে, মানে...
পেছন থেকে চোখ ধরার ব্যাপারটা কি মিষ্টি, না?

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

তীরন্দাজ এর ছবি

ছারপোকা গ্রামে দেখেছি, আর দেখেছি তেহবান আর ইস্তান্বুলে।

পেছন থেকে চোখ ধরার ব্যাপারটা মিষ্টি তো বটেই, ভীষন মিষ্টি। তাইতো সাথে সাথে চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম, জ্যাক কাছে আছে কি না। আছে দেখে স্বস্তি পেলাম তখন।

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।