যাযাবর জীবনের গল্প - কাবুলের বারী ভাই

তীরন্দাজ এর ছবি
লিখেছেন তীরন্দাজ (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৪/১২/২০০৮ - ২:২৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বুকের একপাশে প্রিয়জনদের ছেড়ে আসার ব্যাথা তখনো কঠিন বরফের মতো জমাট। অন্যপাশে প্রতিদিন একেকটি নতুন পৃথিবী নতুন চেহারায় উন্মোচিত। সামনে এক অজানা ভবিষ্যত, যার অজানা অবয়ব আমাদের চ্যালেন্জকে আরো বেশী জোরদার করলেও বুকের ভেতরের গুরুগুরু শঙ্কা কালো মেঘের মতো ছেয়ে আছে নিজস্ব পরাক্রমে। এমনি এক সময়ে কাবুলিওয়ালার দেশ আফগানিস্তানের কাবুলের এক হোটেলে আমরা চার বন্ধু । দু'দিন আগে ঢাকা থেকে দিল্লী হয়ে নেমেছি এখানে। এখান থেকে ইরানী ভিসা জোগার করে ইরান ও তুরস্ক হয়ে গ্রীসে যাবার পরিকল্পনা। গ্রীক জাহাজে কিছুদিন খালাসীর কাজ করে পয়সা জমিয়ে ইউরোপের পছন্দসই কোন দেশে পড়াশোনা করে, আরো কিছু দেশ ঘুরে আবার ঘরের ছেলে ফেরা। সম্বল পাসপোর্ট, তুরস্ক আর গ্রীসের ভিসা, একশো পাউন্ড ও একটি স্কটিশ ডলার আর বুকভরা সাহস। সস্তা একটি হোটেলে আমাদের আবাস হলেও, পকেটের পাশাপাশি সে হোটেল খুবই ব্যয়বহুল।

পরদিনই ধর্না দিলাম ইরানী দুতাবাসে।কাগজপত্রে সামান্য চোখ বুলিয়েই গোমড়ামুখো ভিসা অফিসার আঙ্গুল দেখিয়ে বললো, গো ব্যাক টু বাংলাদেশ এন্ড কালেক্ট ভিসা। আমাদের জমানো সাহস তখনই অর্ধেক হয়ে গেল। কারো মতামতকে গ্রাহ্য না করে বেরিয়েছি পথে। আর এখন যাব কোথায়? দেশে ফিরবো শুরতেই? শুকনো মুখে হোটলে এসে অনেক ভাবলাম। চারজনে মিলে ঠিক করলাম বাংলাদেশ দুতাবাসে যাবো। কতৃপক্ষকে অনুরোধ করবো আমাদের স্বপক্ষে ইরানী দূতাবাসকে একটি চিঠি দিতে। কিন্তু যাওয়া তো যাওয়া নয়, প্রায় দুই ঘন্টার হাটাপথ, কাবুলের আরেক প্রান্তে। বাসে বা ট্যাক্সিতে চড়বো, সে রসদ আমাদের নেই। কাবুলবাসীদের এলাকা পেরিয়ে পেরিয়ে একসময় পৌঁছলাম বাংলাদেশ দুতাবাসে। বাইরে অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর ভারপ্রাপ্ত এমবেসেডরকে কথাটি বলতেই ভয়ানক রেগে গেলেন নোয়াখালীর এই ভদ্রলোক। "হেরা তো আংগোরে ফহির মনে করে, মিসকিন মনে করে, আই লেখলেও হেইডাই কইব। আন্নেরা দেশে চলি যান, আই কিছু করবার পাইরত্বাম না"। অনেক অনুরোধ করলাম, যতই করি ততো বেশী রেগে যান। আমাদের শুকনো মুখ আরো বেশী শুকনো হলো, বুকের ভেতরে কাঁপুনি বড় বড় হাতুড়ী হয়ে এদিক সেদিক ঘা দেয়া শুরু করলো।যতো না অপমানিত, তারচেয়ে বেশী হতাশ হয়ে দুতাবাস থেকে বেরুনোর সময়েই পরিচয় হলো বারী ভাইয়ের সাথে। ওনি বাংলাদেশ দূতাবাসেরই এক কর্মচারী। ওনাকে পেয়ে যেন হাতে চাঁদ পেলাম। আমাদের সমস্যার বিবরণ ঠান্ডা মাথায় শুনলেন বারী ভাই। আমাদের অনুরোধের চাপে তাঁর বাড়ীতে দেখা করতে বললেন আমাদের।

সেদিনই সন্ধ্যায় বারী ভাইএর বাসায় গেলাম।এমবেসেডর এর সাথে কথা বলবেন বলে ভরসা দিলেন ওনি।এমনকি আমাদের আর্থিক অবস্থা টের পেয়ে তাঁর ড্রয়িংরুমে আমাদের থাকারও অনুমতি দিলেন। এমন সময়ে জন্যে এর চেয়ে বড়ো সাহায্য আর কি হতে পারে? নইলে আমাদেরকে হয়তো রাস্তাতেই থাকতে হতো। তাঁর ভরসাতেই আমাদের বুকে সাহস ফিরে এলো আবার। আবার সামনের দিকে আলো খোঁজার সাহস পেলাম। আফগানিস্তানের কঠিন মাটিতে এমন একজন মানুষকে পাওয়ার মতো এমন ভাগ্য যাদের, তাদেরকে আটকায় কে?

আমাদের সবাইকে একেবারে আপন করে নিলেন বারী ভাই। আমাদের মাঝে বয়েসে বড় বন্ধুটি দেশে সাংবাদিকতা করতো, তার নাম দিলেন সাংবাদিক। একজনের নামকরণ হলো সাহিত্যিক, আরেকজনের নাম ফিলোসফার। আর আমি সর্বকনিষ্ঠ, নাম দিলেন নটি বয়। আর এই নটি বয়টির প্রতিই তার ভালোবাসা সবচেয়ে বেশী। একাই থাকতেন বারী ভাই কাবুলের এই বাসাতে। দেশে স্ত্রী কন্যা থাকলেও এখানে আনা সম্ভব করে উঠতে পারেন নি। দুতাবাসের একজন সাধারণ অফিসারের বেতনে সবাইকে নিয়ে সংসার চালানো সম্ভব ছিলনা। তাছাড়া পরিবারের অন্যান্য সদস্যের প্রতিও আর্থিক দ্বায়িত্ব পালন করতে হতো। তবে সেই অন্যান্য সদস্যরা ওনার স্ত্রী ও কন্যার প্রতি সে দ্বায়িত্ব পালন করতেন না বলে সবসময়েই মানসিক এক যন্ত্রণা ছিল তাঁর।

সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই বলতেন, নটি বয়, চলো বাজারে যাই। আমিও ছুটতাম তার পেছনে পেছনে। একগাদা মাংস, শাকসবজী কিনে ফিরতাম দু'জনে। আমাদের সাহিত্যিক রান্নায় পটু। তাকে রান্নার দ্বায়িত্ব দিয়ে বলতেন, ভালো করে রান্না করবে, বিকেলে এসে সবাই খাব একসাথে। কিন্তু প্রতি বিকেলে এসেই বারী ভাই ঢুকতেন শোবার ঘরে হুইস্কীর বোতল নিয়ে। তখন অনেক ডাকডাকি করলেও বেরুতে চাইতেন না। যখন বেরুতেন, দেখতাম চোখে জল। কোনক্রমে খাবারটুকু খেয়েই আবার ঢুকতেন শোবার ঘরে। তার ভেতরে কষ্ট, মানসিক বৈকল্য আমরা অনুভব করতাম,নিজেরাও ডুবে যেতাম বিষাদে,কিন্তু সমাধানের কোন ক্ষমতা ছিল না আমাদের। পরদিন সকালে আবার বাজারে যেতেন আমাকে নিয়ে, প্রচুর কেনাকাটা করতেন। কিন্তু দিনশেষে আবার আগের মতোই।

বারী ভাইএর অনুরোধে এমবেসেডর অবশেষে ইরানী দুতাবাসকে চিঠি লিখলেন। আমরা সেটি নিয়ে আবার দূতাবাসে গেলাম। আমাদের সর্বসাকুল্যে বারোশ ডলার সাথে আছে, তা দেখাতে পারলে ভিসা দেবে বলে জানিয়ে দিল ইরানী দূতাবাস। আবার চোখে অন্ধকার দেখলাম আমরা। বারোশ ডলার আমাদের কাছে তখন পাহাড় প্রমান টাকা। আমাদের কাছে তো থাকার কথাই নেই, বারী ভাইয়ের কাছেও নেই । ইতিমধ্যে সাংবাদিক বন্ধু এক আফগানী সাংবাদিকের সাথে বন্ধুত্ব করলো। তারই কল্যানে একদিন আমাদের এক পত্রিকা অফিস অফিস ও কাবুল শহর ঘুরে দেখার সুযোগও হলো। আমাদের সাংবাদিক বন্ধু আফগানি সাংবাদিককে হাতির দাঁতের (বাংলাদেশ থেকে আনা) একটি আংটি দিয়ে বললো, ইয়ে হ্যায় মেরা পেয়ারকা নিশানা। আমাদের টাকার সমস্যার আভাস পেয়ে উধাও হলেন আফগানিও।পেয়ারের কোন রেশও রইলো না আর ।

এবার নটি বয়ের নটি উদ্ভট পরামর্শ কাজে লেগে গেলো। কাবুল থেকে বেশ কিছু বিলাসবহুল বাস ইরানের মেশাদ শহর অবধি আসাযাওয়া করে। আমার পরামর্শ, আমরা এমনি কোন এক বাস কোম্পানীর টিকিট কিনব বলে কথা দেবো। তার বিনিময়ে ওদের কাছে একদিনের জন্যে বারোশ ডলার ধার চাইব আমরা। সে বাসগুলো বারী ভাইএর বাসার সামনে থেকেই ছাড়ে। এক বাসমালিকের সাথে ভালো পরিচয়ও ছিল তাঁর। আমরা সবাই মিলে সেখানেই গেলাম। বারী ভাইয়ের সাথে পশতু ভাষায় কি কথা হলো বাসমালিকের, তা বুঝলাম না। তবে আমাদেরকে একটা কাগজে অনেক লিখে সই যেভাবে বলা হলো, সেভাবেই করলাম।টাকাও পেলাম হাতে। পরদিন টাকা নিয়ে গেলাম ইরান দুতাবাসে। দূতাবাস বারোশ টাকা দেখতে চাইলো, আমি পকেট দেখিয়ে দিলাম। পকেট দেখেই সন্তুষ্ট হয়ে, ভিসা দিয়ে দিল ওরা। টাকার বান্ডিলের বদলে যদি সাদা কাগজের বান্ডিলও থাকতো, তাহলেও ভিসা পেয়ে যেতাম আমরা। আনন্দে উল্লসিত হয়ে ফিরে এলাম সবাই। দেখি অফিসে না গিয়ে বারী ভাইও আমাদের অপেক্ষায় এগিয়ে এসেছেন পথে। খবর শুনে ওনিও আনন্দে লাফালেন আমাদের সাথে।

কিন্তু পৃথিবীতে কখন কে কার আপন হয়ে যায়, কে জানে! আমাদেরকে বিদায় দিতে হবে, এই সত্যের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সন্ধ্যায় বারী ভাই কাঁদলেন সে সন্ধ্যায়। আমরাও চোখের জল চেপে রাখতে পারলাম না। দেশছাড়ার সময় যে অনুভূতিতে কেঁদেছি, এবারও তার অন্যথা হলো না।সে সন্ধ্যায় বারী ভাই হুইস্কীর বোতল না ছুঁয়ে আমাদের সাথে নানা গল্প করে কাটালেন।পরদিন বাস কোম্পানীকে টাকা ফিরিয়ে দিলাম। ওরা আমাদের পকেটের অবস্থা বুঝে আমাদেরকে সস্তা কোন বাসে যাবার অনুমতি দিল নিজ থেকেই। আমরাও হাঁফ ছেড়ে বাচলাম, কারন এ বাসের গেলে প্রায় ফতুর হয়ে ইরানে পৌঁছতাম আমরা। বারী ভাই আমাদের আরো একদিন থেকে যেতে বললেন। আমরা সানন্দে ওনার কথা রাখলাম।

বিদায়ের দিন সকালে বাস ষ্টেশনে রওয়ানা হবার কথা। ট্যাকসি ভাড়া বাঁচানোর জন্যে অনেক দুরে হাঁটাপথে যেতে হবে। তাই বেশ একটু আগেই ঘুম থেকে উঠলাম। বারী ভাইও উঠলেন। আমাদেরকে তাড়াহুড়ো করতে নিষেধ বললেন। নিজ খরচে ট্যাক্সি ভাড়া করে আমাদের সাথে বাস ষ্টেশন অবধি আসলেন। বিদায়ের সময় জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে যে কোন অবস্থাতেই সাহায্য করবেন বলে জানালেন বারবার। আমরা চোখের জল মুছে বাসে উঠে ইরানের মেসাদের দিকে তিনদিনের যাত্রাপথে পা ফেললাম। আজ এত বছর পর সে বিদায়ের ঘটনার কথা লিখতে এখনও মন ভারী হয়ে আসছে আমার।

যে বাসে চড়লাম আমরা, সে বাসে আফগানীরা মোরগ, মুরগী, ভেড়া, ছাগল- সব নিয়েই চড়ে। যেখানে নামাজের সময়, সেখানেই থামতে হয়। প্রায় দেড়দিন চলার পর সমরকন্দে এসে বদল হলো বাস। ঐতিহাসিক সমরকন্দের কথা ভেবে ভেতরে ভেতরে রোমাঞ্চিত হলেও আমাদের মাথায় বারী ভাই আর সামনের দিনগুলোর ভাবনা।ইরানের সীমান্ত পেরুনোর পর আবার বদলাতে হলো বাস। তিনদিনের অক্লান্ত চলার পর অবশেষে এসে পৌঁছলাম মেসাদে।

ব্লগে নাবিক জীবনের কথা মোটামুটি বিস্তারিত লিখেছি। আমরা চারবন্ধু তিন জাহাজে নাবিক হয়ে এক দেশ থেকে আরেক দেশে পাড়ি জমাই। যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল চিঠি। পেতে দেরী হতো বেশ। চিঠি পৌঁছাতো জাহাজ কোম্পানী অফিসে। সেখান থেকে পাঠানো হতো বন্দরে। সৌদী আরবের গিজান বন্দরে চিঠি পেলাম এক বন্ধুর। শোকে পাথর হয়ে গেলাম আমরা দুজনেই চিঠিটি পড়ে। আমাদের এই চড়াই উতরাই জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ বন্ধু, আমাদের প্রিয় বারী ভাই তার কাবুলের বাড়ীর বাবান্দা থেকে নীচে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

কিছু কিছু মানুষ শুধু দিয়েই যান, নিজের কষ্টকে বুকের গহনে লুকিয়ে রেখে। বারী ভাই ছিলেন তাদেরই একজন। আমরা পরম ভাগ্যগুনে আমাদের নিদারুণ সময়ে এই মানুষটির দেখা পেয়েছিলাম। তাঁব ভেতরের জমানো কষ্ট ধীরে ধীরে এক অসহনীয় বোঝা হয়ে তাঁকে চিরবিদায়ের পথে টেনে নিল। আমরা চারবন্ধু তার কথা জীবনের প্রতিটি মূহুর্তে শ্রদ্ধাভরে স্বরণ করি।


মন্তব্য

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

শেষটা খুবই কষ্ট দিল। পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় ঐশ্বর্য নিঃসন্দেহে নিরেট ভাল মানুষের সাথে পরিচয় হওয়া, তাঁদের সান্নিধ্যে কিছু সময় কাটাতে পারা।

আমার যেমনটা স্বপ্ন, ঠিক তেমন একটা ভ্রমণময় জীবন কাটিয়েছেন আপনি। লেখাগুলো পড়ার সময় মনে হয় যেন কৈশোরের বইগুলোর মত হচ্ছে। স্বপ্নগুলো "ভ্যালিডেটেড" হয় এ-রকম লেখা পড়ে। মনে হয়, একেবারেই পাগলামো না চিন্তাগুলো।

তীরন্দাজ এর ছবি

হ্যা, যতটুকু সম্ভব দেখে নিয়েছি জীবনে। এখনও দেখে যাচ্ছি। আপনাকে ধন্যবাদ!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

আমি খালি বলবো, তীরুদা আপনার সাহস আছে ...

বারী ভাইএর জন্য শ্রদ্ধা ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

তীরন্দাজ এর ছবি

হ্যা ভাই! বারী ভাই না হলে সেসময় আমরা কোথায় যেতাম, কে জানে! আমাদের জীবনের কাহিনী হয়তো অন্যভাবে লেখা হতো। ভালো থাকবেন!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

আলমগীর এর ছবি

সত্য কথা জাহাজী জীবনের গল্প সিরিজে কোন লেখা মন দিয়ে পড়িনি।
এ লেখাটা পড়লাম এবং আপ্লুত হলাম।

তীরন্দাজ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ! সময় নিয়ে বাকীগুলো পড়লে খুশী হবো।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

দুর্দান্ত লিখছেন আপনি। এই লেখার গাড়ি যেন শেষ না হয়। শেষটা কষ্টকর। আচ্ছা বারী ভাইয়ের পরিবারের এখন কী অবস্থা?

তীরন্দাজ এর ছবি

বারী ভাই তার জীবনের কথা বলেছেন, কিন্তু পরিবারের কোন যোগাযোগের ঠিকানা আমাদের দেননি।
ওনি যে এভাবে বিদায় নেবেন সেটাও হয়তো ভাবেন নি।
আমরা তখন জাহাজে ছিলাম। তেমন খোঁজ নেবারও ক্ষমতা ছিলনা।
তারপর যখন দেশা বেড়াতে আসার ক্ষমতা হলো, তখনও খোজ করেছি। পাইনি কাউকেই।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

কীর্তিনাশা এর ছবি

দারুন লিখেছেন তীরুদা। মন ছুঁয়ে গেল।

বারী ভাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধা ।
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

তীরন্দাজ এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ জানাই!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

নজমুল আলবাব এর ছবি

মন খারাপ হলো বারী ভাই এর জন্য।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

তীরন্দাজ এর ছবি

আমরা এখনও ওনার কথা ভাবি। একটি মাত্র ছবিই আছে আমাদের কাছে।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

পলাশ দত্ত এর ছবি

বুকের একপাশে প্রিয়জনদের ছেড়ে আসার ব্যাথা তখনো কঠিন বরফের মতো জমাট। অন্যপাশে প্রতিদিন একেকটি নতুন পৃথিবী নতুন চেহারায় উন্মোচিত।

এইটুকু আগে উপভোগ করে নিই। এমন লাইন কিভাবে লেখেন? চলুক

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

তীরন্দাজ এর ছবি

এখনও অনুভবে আছে সেসব দিনের কথা। একটু ভাবলে পুরোপুরি সে অনুভবে ডুবে যেতে পারি। সেজন্যেই হয়তো সম্ভব হয়েছে।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

পুতুল এর ছবি

কত কথা লুকিয়ে আছে আপনার জীবনের বাঁকে বাঁকে!
লেখাটা শুরু করার জন্য ধন্যবাদ। আশা করি জাহাজে উঠা অব্দি চলবে।
শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করি বারী ভাইকে।
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

তীরন্দাজ এর ছবি

আন্তরিক ধন্যবাদ। চেষ্টা করবো পুরো কাহিনীটি দাঁড় করানোর।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

মুস্তাফিজ এর ছবি

বারী ভায়ের জন্য শ্রদ্ধা

...........................
Every Picture Tells a Story

তীরন্দাজ এর ছবি

ধন্যবাদ!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

রণদীপম বসু এর ছবি

মর্মস্পর্শী লেখা। কষ্ট পেলাম বারী ভাইয়ের জন্য।
আহারে, যে দেশ এমন বারী ভাইয়ের জন্ম দেয়, আমাদের সেই দেশটাতেই আজ বারী ভাইদের বড় অভাব !
দিয়ে যায় বলেই এরা শুধু দিয়েই যায়, প্রাণটাও, পায় না কিছুই !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

তীরন্দাজ এর ছবি

হ্যা, বারী ভাইও কিছু পাননি জীবনে। খুব কষ্ট হয়!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

শাহীন হাসান এর ছবি

কোথাও কেউ কারও জন্য আছে ... ?
ভাল-লেখা ....
....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !

....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !

তীরন্দাজ এর ছবি

আসলেই তাই! ধন্যবাদ আপনাকে!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অসম্ভব মনছোঁয়া লেখা। খুবই ভাল লাগল। ঈর্ষা হয়, আপনার এই দারুন সব অভিজ্ঞতার জন্য। বারী ভাইয়ের জন্য শ্রদ্ধা, কিছু মানুষ আসলেই শুধু দিয়েই যায়...

ভাল থাকবেন তীরু'দা।


A question that sometimes drives me hazy: am I or are the others crazy?

তীরন্দাজ এর ছবি

আপনিও ভালো থাকবেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অতিথি লেখক এর ছবি

চমৎকার লেখা । বারী ভাইয়ের জন্য শ্রদ্ধা।

অফটপিক ঃ আমি যতদুর জানতাম, জাহাজে চাকরি নিলে, জাহাজ কোম্পানী যাতায়েতের প্লেনের টিকিট দেয়।

একজন

তীরন্দাজ এর ছবি

চুক্তিতে থাকলে অবশ্যই দেয়। তবে আমাদের টা তো সেরকম নয়। আমরা দেশ থেকে কোন চুক্তি করে যাইনি, এখানে গিয়ে কাজ করেছি। ওরা ওদের খরচেই আমাদেরকে পেরিয়াস থেকে ভলস ওড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল। দশমাস কাজ করেছি মাত্র। তারপর তো পড়াশেনার জায়গা খুজেছি।

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পৃথিবীতে খুব কম মানুষের অভিজ্ঞতাকেই আমি হিংসা করি
কিন্তু যাদেরকে হিংসা করি আপনি বোধহয় সেই তালিকার প্রথমেই উঠে যাচ্ছেন

তীরন্দাজ এর ছবি

খেয়েছে! কিন্তু হিসেব করলে অনেক কিছুও পাওয়া যাবে, যা আপনি পেয়েছেন, আমি পাইনি।
জীবনের, ভ্রমনের অভিজ্ঞতা অনেক করেছি অবশ্যই!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

বারীভাইদের সংখ্যা এত কম কেন?
লেখাটা ভীষণ মন ছুঁয়ে গেল।

তীরন্দাজ এর ছবি

ধন্যবাদ!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

পৃথিবীতে খুব কম মানুষের অভিজ্ঞতাকেই আমি হিংসা করি
কিন্তু যাদেরকে হিংসা করি আপনি বোধহয় সেই তালিকার প্রথমেই উঠে যাচ্ছেন

ঠিক এই বাক্যটাই খুঁজতেছিলাম মনে মনে... লীলেন্দা সহজ করে দিলো...

শেষটায় এসে মন খারাপ হয়ে গেলো...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তীরন্দাজ এর ছবি

আপনি ভালো আছেন। আপনার কথাগুলো খুব ভালো লাগে।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সুমন চৌধুরী এর ছবি
তীরন্দাজ এর ছবি

ভালো আছেন তো?
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সুমন চৌধুরী এর ছবি

হ্যা।
ভালোই আছি বলতে হবে।



অজ্ঞাতবাস

ধুসর গোধূলি এর ছবি
দময়ন্তী এর ছবি

আপনার লেখাগুলো এমনিতেই আমার খুব পছন্দের৷ তার মধ্যে ঐ জাহাজী জীবনের সিরিজটা বেশী পছন্দের ছিল৷ এইটাও মনে হচ্ছে সেরকমই ভাল হবে৷ "খুব ভাল' বা "চমত্কার' এইসব বলে ঠিক বোঝানো যাবে না ---- তাই ওসব কিছু বললাম না ৷

ইশ আমার কবেকার শখ সেলফোনটা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে, সিল্ক রুট ধরে পাঁচ ছয় বছর স্রেফ হেঁটে বেড়ানো
মন খারাপ

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

রানা মেহের এর ছবি

বারী ভাইয়ের জন্য শ্রদ্ধা
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

খুবই অনবদ্য রচনা। বারী ভাইয়ের কাহিনী মনটা খারাপ করে দিলো।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।