দেশবিদেশের উপকথা-মহাবন্যা(সার্বিয়ান) (২)

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: বুধ, ১৯/০৬/২০১৩ - ১২:১৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কুরেন্ত আর ক্রানিয়াৎস ঘুরে ঘুরে দেখছিল মহাপ্লাবনের (এইখানে প্রথম অংশ) পরের দুনিয়াটাকে। ডাঙা জেগে উঠেছে বটে কিন্তু কোনোখানে কেউ নেই। প্রাণশূন্য এক বিবর্ণ দুনিয়া। কেজানে কতদিন লাগবে আস্তে আস্তে গাছপালা পশুপাখিতে দুনিয়া ভরে যেতে। মানুষ জাতির মধ্যে আছে কেবল ক্রানিয়াৎস। সে এই বদলে যাওয়া দুনিয়া দেখে কেমন হতভম্ব হয়ে গেছে, মুখে কথা নেই। হাজার হোক, মানুষ তো! একদিন তার পরিবার-পরিজন বন্ধু-সুজন সবাই ছিল পৃথিবীতে, আজ তারা কেউ নেই। সে কেন রইলো তবে?

কুরেন্ত দেবতা, তাঁর কাছে এসব মহাকালের নৃত্যের ছন্দ মাত্র, কত সৃষ্টি কত ধ্বংসই হয়তো তিনি দেখেছেন, এসব তাঁর গায়ে লাগে না।

হাঁটতে হাঁটতে তারা সমুদ্রতীরে এসে পড়লো। সামনের নীল সমুদ্র, ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে সমুদ্রবেলায়। ঐপারে দেখা যায় ডাঙা। ক্রানিয়াৎস নতজানু হয়ে বসে দুইহাতে মুখ ঢাকলো, আর সে সহ্য করতে পারছে না। এমন সমুদ্রতীরে সে ঐ প্রলয়বন্যার আগে কতদিন--

কুরেন্ত বললো, " কী হলো ক্রানিয়াৎস? মনখারাপ? আরে চীয়ার আপ ম্যান। আয়, একটা প্রতিযোগিতা করা যাক, দেখি এক লাফে কে সমুদ্রটা ডিঙিয়ে ঐপারে গিয়ে পড়তে পারে। যে জিতবে এইপারের এই ডাঙা ঐপারের ঐ ডাঙা আর মাঝের সমুদ্র সব হবে তার। সে হবে এই সব কিছুর মালিক। করবি প্রতিযোগিতা?"

ক্রানিয়াৎস তাড়াতাড়ি নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে উঠে দাঁড়ায়। আরেকটু হলেই ধরা পড়ে গেছিল আরকী! কী কেলেংকারিই না হয়ে যেত তাহলে। কুরেন্ত দেখে ফেলতেন ক্রানিয়াৎসের মতন একটা ইয়া লম্বাচৌড়া বীর কিনা কাঁদছে! পরে গিয়ে হয়তো অন্য দেবতাদের বলতেন। সে এক গুরুচরণ কেস হয়ে যেত।

সে তাড়াতাড়ি বলে, "করবো প্রতিযোগিতা। আমি আগে লাফাবো নাকি আপনি?"

কুরেন্ত বলেন, "আমি আগে চেষ্টা করি। তারপরে তুই।"

"ঠিক আছে, তাই হোক।" সম্মত হয় ক্রানিয়াৎস।

"ইয়া আ আ আ আ হু প" করে এক বিশাল লাফ দেন কুরেন্ত, সমুদ্র পার হয়ে গিয়ে ওপারের ডাঙায় পড়েন ঠিকই, কিন্তু বাঁপায়ের গোড়ালি জল ছুঁয়ে যায়।

এবারে ক্রানিয়াৎস। সে কোমরবন্ধটা আঁট করে নিয়ে টুপ করে সমুদ্র পার হয়ে যায় যেন একটা খাল পেরোলো মাত্র। ওপারে পৌঁছে বলে, "কুরেন্ত, পারলাম?"

কুরেন্তের তো চোখ নাটা-নাটা। বলে, "ওরে রে রে, কী দারুণ পার হলি রে! আমার তো গোড়ালি ডুবে গেছিল। তুই কামেল আদমি দেখি। সমুদ্র আর এইপার ঐপারের ডাঙা সব তোর হলো। আচ্ছা, আরেক রাউন্ড প্রতিযোগিতা করবি? মাটির নীচের দখল কে পাবে তাই নিয়ে?"

ক্রানিয়াৎস ততক্ষণে বেশ মেতে গেছে, ভালোই লাগছে এসব করতে। ব্যস্ত থাকলে মনটা বিষন্ন হতে পারে না। সে বলে, "হ্যাঁ রাজী। এইবারে কী প্রতিযোগিতা?"

কুরেন্ত বলেন, "এইবারে জোরের পরীক্ষা। মাটিতে পা দিয়ে ধাক্কা মেরে কতটা গভীর সুড়ঙ্গ খুঁড়তে পারি দেখি। যে বেশী গভীর সুড়ঙ্গ খুঁড়তে পারবে পাতালের দখল তার।"

ক্রানিয়াৎস রাজী, বলে, "আগে আপনি শুরু করবেন নাকি আগে আমি শুরু করবো?"

কুরেন্ত হেসে বলেন, "আগে আমি চেষ্টা করি।"

এই না বলে তিনি কোমরবন্ধ আঁটো করে চোখমুখ কুঁচকে ডান পা দিয়ে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে দিলেন মাটিতে ধাক্কা। হুড় মুড় গুড় গুড় হুম হুম করে মাটি ভেঙে পড়লো, বিশাল এক সুড়ঙ্গের সৃষ্টি হলো। সে পেল্লায় সুড়ঙ্গ, মাইলে পর মাইল। ক্রানিয়াৎস দেখে চোখ গোল গোল করে বলে, "ও ও ও ও রে ব্বাবা। এ যে বিপুল ব্যাপার।"

কুরেন্ত মুচকি হেসে বলেন, "এইবারে তোর পালা।"

ক্রানিয়াৎস প্রস্তুত হয়ে সর্বশক্তি দিয়ে মারলো মাটিতে পায়ের ধাক্কা। হুড় হুড় গুম গুম হু হু টরাস টারাশ ধ্রাম ধ্রাম্ম্ম্ম্ম করে মাটি পাথর সব ভেঙে এত বড়ো সুড়ঙ্গ হলো যে সুড়ঙ্গের তলা পৌঁছে গেল পৃথিবীর ভিতরের গলিত লাভায়, সেই সুড়ঙ্গপথে তরল সোনা উঠে এলো।

দেখেশুনে কুরেন্ত চক্ষু চড়কগাছ করে বললেন, "তুই জিতলি রে ক্রানিয়াৎস। কী সাংঘাতিক ছেলে রে! খুঁড়ে তুলে ফেললো পাতালের গলিত স্বর্ণ! আরে এখনো মুখ চুন কেন রে তোর? হাস একটু হাস দেখি। "

ক্রানিয়াৎস ম্লান হাসে, সতর্ক চেষ্টায় নিজেকে সামলায়। এঁর সামনে ভেঙে পড়া চলবে না, কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে তাহলে। একলা মানুষের দুঃখ কী করে বুঝবেন দেবতা?

কুরেন্ত বলেন," আরে তোর মনখারাপ দেখি আর কমে না। চীয়ার আপ ম্যান। আরেকবার একটা কমপিটিশন করবি? বার বার তিনবার। এই তিনবারের বার যে জিতবে, সেই আসল বিজয়ী, আগের ফলাফল নাকচ হয়ে যাবে। করবি?"

ক্রানিয়াৎস রাজী হয়, তার একটা কিছুতে মন ন্যস্ত করে রাখাই দরকার। ভয়ও তার তেমন কিছু নেই, তার কাছে কোনো কিছু পাওয়া বা না পাওয়া সমান। কেউ যে নেই, কেউ যে তার নেই!

ক্রানিয়াৎস বলে, "এইবারে কী প্রতিযোগিতা?"

এইবারে তীরন্দাজির লড়াই। আমি এক তীর ছুঁড়বো সো ও ও জা উপরে, তাতে আমার নাম লেখা থাকবে। তুইও ছুঁড়বি সো ও ও জা উপরে, তাতে তোর নাম দেখা থাকবে। যার তীর দেরিতে এসে পড়বে মাটিতে, বোঝা যাবে তার তীরই বেশী উপরে গেছে, সেই বিজয়ী হবে। কী, রাজী?"

ক্রানিয়াৎস রাজী হয়, দুইজনেই ধনুকে ছিলা পরিয়ে নিজের নিজের নাম লেখা তীর ধনুকে বসিয়ে আকর্ণ জ্যা টেনে তীর ছুঁড়ে দেয় সো ও ও ও জা উপরে, নীল আকাশ ফুঁড়ে দেখতে দেখতে মিলিয়ে যায় তীরগুলো।

আটদিন পরে ফিরে আসে কুরেন্তের তীর, আর নয়দিন পরে ফিরে আসে ক্রানিয়াৎসের তীর, তার তীরে আটকে ছিল একটা অদ্ভুত পালক।কুরেন্ত দেখে চোখ নাটা নাটা করে বলেন, "আরে এ যে উচ্চ স্বর্গের পাহারাদার ঈগলের পালক! তুই জিতলি রে ক্রানিয়াৎস, এখন আর সন্দেহ নেই, সসাগরা পৃথিবী আর পাতাল, সব তোর হলো, তুই এইসবের মালিক। এখন থেকে আমি তোর প্রজা। তুই যা বলবি আমি করবো।"

পরদিন কুরেন্ত এসে দ্যাখেন সোনার নদীর তীরে ম্রিয়মান হয়ে বসে আছে ক্রানিয়াৎস। কুরেন্ত এসে বেশ ঘটা করে কুর্ণিশ করে বললেন, " প্রভু, রাজা, বলুন কী করতে পারি আপনার জন্য? আমি আপনার সেবক।"

ক্রানিয়াৎস বলে, "আমি তৃষ্ণার্ত, একটু সেই আঙুরের রস দিতে পারো? "

কুরেন্ত তো এই চাইছিলেন, তাড়াতাড়ি গেলাসে ভরে সেই আঙুরের রস এনে দিলেন, এইবারে তিনি রসে একধরনের মাদক ভেষজ পিষে মিশিয়ে দিয়েছিলেন গোপণে। দেখতে চাইছিলেন এই ব্যাটা ক্রানিয়াৎস মাতাল হয় কিনা!

কিন্তু ক্রানিয়াৎসের তেমন কিছুই হলো না, বেশ কয়েক গেলাস খেয়ে লম্বা হয়ে নিদ্রা গেল নদীর তীরে।

পরদিন কুরেন্ত এসে দ্যাখেন আবার সোনার নদীর তীরে ম্রিয়মান হয়ে বসে আছে ক্রানিয়াৎস। কুরেন্ত এসে বেশ ঘটা করে কুর্ণিশ করে বললেন, " প্রভু, রাজা, বলুন কী করতে পারি আপনার জন্য? আমি আপনার সেবক।"

ক্রানিয়াৎস আবার পানীয় চাইলো। কুরেন্ত গেলাসে ভরে সেই আঙুরের রস এনে দিলেন, এইবারে তিনি রসে শুধু মাদক ভেষজ পিষে মিশিয়ে দিয়েছিলেন তাই না, সঙ্গে নিজের এক ফোঁটা রক্তও মিশিয়ে দিয়েছিলেন। কুরেন্তের রক্ত তীব্র নেশা জাগাতে সক্ষম।

এইবারে ক্রানিয়াৎস দুই গেলাস খেয়েই মাতাল হয়ে গেল, উঠে দাঁড়িয়ে বুক চাপড়ে চাপড়ে হাহা হা হা করে অট্টহাসি হাসতে লাগলো, বলতে লাগলো, " সব আমার, ডাঙা জল আকাশ পাতাল সব সব সব সব আমার। কুরেন্ত, তাই না? আমি রাজা, আমি প্রভু, আমি মালিক। হা হা হ্হ্হা মুহা হা হা।"

কুরেন্ত বলেন, "হ্যাঁ, আপনি রাজা, আপনি প্রভু, আপনি মালিক। এখানে আপনাকে মানায় না। চলুন ঐ যে প্রভু ঈশ্বরের বাড়ী উঁচু পাহাড়ের মাথায়, সেখানে আপনাকে নিয়ে যাই। ওঁর টেবিলে বসে ওঁর খাদ্য পানীয় আপনি গ্রহণ করবেন। কারণ আপনি মালিক, আপনি প্রভু, আপনি রাজা।"

কুরেন্ত নেশাগ্রস্ত ক্রানিয়াৎসকে নিয়ে চললেন প্রভু ঈশ্বরের বাড়ীতে। মাতালের হাসি হাসতে আবোলতাবোল বকতে বকতে সঙ্গে সঙ্গে চললো ক্রানিয়াৎস।

প্রভু ঈশ্বর তখন বাড়ীতে ছিলেন না। মহাবিশ্বে কত কাজ থাকে তাঁর, হয়তো সেসব কাজে ব্যস্ত ছিলেন কোথাও।

ঈশ্বরের টেবিলে থরে থরে ঈশ্বরিক খাদ্যপানীয় সাজানো। ক্রানিয়াৎস খুবই হৃষ্টচিত্তে আহারে প্রবৃত্ত হলো। সঙ্গে অনবরত তাকে পানীয় যুগিয়ে চলতে লাগলেন চতুর কুরেন্ত, সেই আঙুরের রস যাতে কিনা মাদক ভেষজ আর কুরেন্তের ফোঁটা ফোঁটা রক্ত মেশানো।

নেশায় চুর হয়ে ক্রানিয়াৎস উদ্দাম নাচতে নাচতে জিনিসপত্র আছড়াতে আছড়াতে একসময় মেঝেয়ে পড়ে ঘুমিয়ে পড়লো। চারিদিকে ছড়িয়ে রইলো ভুক্তাবশিষ্ট খাদ্য আর গড়িয়ে পড়া পানীয়। সে এক বীভৎস অবস্থা।

প্রভু ঈশ্বর ফিরে এসে এই অবস্থা দেখে চটে গেলেন, চটে গিয়ে রেগে গেলেন, রেগে গিয়ে ক্ষেপে গেলেন।

"কী, এত সাহস তোর! " বলে দিলেন ক্রানিয়াৎসকে এক রামধাক্কা। সেই ধাক্কায় পাহাড় বেয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে পড়তে লাগলো ক্রানিয়াৎস, অচেতন হয়ে পাহাড়ের পায়ের কাছে পড়ে রইলো সে।

যখন তার চেতনা ফিরলো তখন সে আর আগের ক্রানিয়াৎস নেই, সেই শক্তি নেই, সেই বিশাল চেহারা নেই। সে তখন আমাদের মতন সাধারণ আকারের মানুষ হয়ে গেছে, আর সে স্বর্গ মর্ত্য পাতাল হেলায় জয় করে নেবার মতন শক্তিশালী নেই।

অমানুষিক শক্তিশালী অবস্থা থেকে সাধারণ মনুষ্য হয়ে যাওয়া ক্রানিয়াৎস কালক্রমে খুঁজে পায় তারই মতন চেহারার, হৃতশক্তি কিছু মানুষ, তারাও মহাপ্লাবন থেকে বেঁচে গেছিল। ওদেরই মধ্য থেকে একজনকে বিবাহ করে সে, তারা সংসার ধর্ম পালন করতে থাকে। কালক্রমে তাদের সন্তানসন্ততিরাই দুনিয়া ভরে ফ্যালে।

এইভাবেই আঙুরের দ্বারাই আমরা রক্ষা পেয়েছিলাম, আবার এর দ্বারাই পতনও ঘটেছিল আমাদের।

তবে যাই বলুন ঐ গল্পকারেরা, ঐভাবে দৈত্যাকার মানুষ হয়ে অমানুষিক কাজ করে ঘুরে বেড়ানোর চেয়ে এই আশা-নিরাশা আকাঙ্ক্ষা-আশংকা স্বপ্ন-স্বপ্নভঙ্গ সুখ-দুঃখ আনন্দ-বেদনা হাসি-গান-ছবি দিয়ে দোলদোলানো টলটল ছলছল মনুষ্যজীবন মন্দ কী?

(সমাপ্ত)


মন্তব্য

ঈয়াসীন এর ছবি

চলুক

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

তুলিরেখা এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব সুন্দর লেখা হয়েছে। ঝরঝরে। খুব ভাল লেগেছে।

তুলিরেখা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

চলুক

তুলিরেখা এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

খামাখা আঙুরের রসের বদনাম করলেন কেন? দোষ তো কুরেন্তের রক্তের। তবে হ্যাঁ, কুরেন্ত ব্যাটাকে পেলে একটা ডিস্টিলারী দিয়ে দেয়া যেত। তা দিতে না পারলে ভ্যাম্পায়ারের মতো ব্যাটার রক্ত চুষে খেতাম।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তুলিরেখা এর ছবি

আমার সন্দেহ হয় কুরেন্তের ঐ প্রতিযোগিতা করে করে ক্রানিয়াৎসের কাছে হেরে যাওয়া, সবটাই ছিল ইচ্ছে করে। ওঁর উদ্দেশ্যটাই ছিল মানুষদের নেশা ধরানো, নানাকিছুর নেশা, শুধু আঙুরের না, ক্ষমতার নেশা, আত্মম্ভরিতার নেশা, ভুল করার নেশা----যাতে কিনা প্রোগ্রামড রোবট অবস্থা থেকে তারা আসল মানুষ হয়। নইলে চিন্তা করুন মহাপ্লাবনের আগে কী ছিল? সবাই সুপারহিউম্যান, যখন যা দরকার সব পেয়ে যা্য, কোথাও কোনো কমতি নেই, তাই কোনো স্বপ্ন আশা এইসবও নেই! কী সাংঘাতিক দুনিয়া! চিন্তিত

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন লাগলো হাততালি

তুলিরেখা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

Iffat এর ছবি

"এই আশা-নিরাশা আকাঙ্ক্ষা-আশংকা স্বপ্ন-স্বপ্নভঙ্গ সুখ-দুঃখ আনন্দ-বেদনা হাসি-গান-ছবি দিয়ে দোলদোলানো টলটল ছলছল মনুষ্যজীবন মন্দ কী?"

চলুক

তুলিরেখা এর ছবি

আপনাকে ধন্যবাদ। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
ঠিক না? এই ভালোমন্দ আলো অন্ধকারে নিত্য দোল খেতে থাকা মনুষ্যজীবন মন্দ কী?
রোবটের মতন সবাই একেবারে ক্যালকুলেট করা রাস্তা ধরে চললে, "চাইবে নাকো ডাইনে বাঁয়ে চাইবে নাকো পাছে/ চার পা তুলে থাকবে ঝুলে হট্টমূলার গাছে" এরকম হলে ভালো হতো কি? সে তো তাসের দেশ হয়ে যেত! চিন্তিত

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

তবে যাই বলুন ঐ গল্পকারেরা, ঐভাবে দৈত্যাকার মানুষ হয়ে অমানুষিক কাজ করে ঘুরে বেড়ানোর চেয়ে এই আশা-নিরাশা আকাঙ্ক্ষা-আশংকা স্বপ্ন-স্বপ্নভঙ্গ সুখ-দুঃখ আনন্দ-বেদনা হাসি-গান-ছবি দিয়ে দোলদোলানো টলটল ছলছল মনুষ্যজীবন মন্দ কী?

মন্দ তো নয়ই, বরং অনেকগুণ ভাল।
লেখাটা চমৎকার। চলুক

তুলিরেখা এর ছবি

ধন্যবাদ প্রদীপ্তময়। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

কৌস্তুভ এর ছবি

বেশিরভাগ উপকথাতেই দেখি দেবতাগুলো খুব ষড়যন্ত্রী হয়!

তুলিরেখা এর ছবি

আহা, সেইজন্যেই তো গুপী ঐ গান বেঁধেছিলো। হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।