মিলেমিশে থাকা

চরম উদাস এর ছবি
লিখেছেন চরম উদাস (তারিখ: শুক্র, ২৭/০৩/২০১৫ - ২:৫৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একবার এক গ্রুপে জামাত শিবিরকে ব্যান করার দাবী উঠলো। দাবীর তীব্রতায় প্রথমে সবাই বেশ হকচকিয়ে 'আমি সাথে আছি' টাইপ বক্তব্য দিয়ে সংহতি প্রকাশ করলো। দুইদিন পর গর্ত থেকে আস্তে আস্তে ল্যাজ বের হওয়া শুরু হল। প্রথমে মিনমিন তারপর বেশ জোরেশোরে বলা শুরু হল, "বুঝলাম জামাত শিবিরকে ব্যান করা হচ্ছে কিন্তু শুধু জামাত শিবির কেন, সমস্ত পলিটিক্স ব্যান করা নয় কেন। ঐযে দেখেন ছাত্রলীগও তো বেশ ইয়ে টিয়ে সন্ত্রাস করে।" এই ধরনের কথা শুনলে চট করেই বুঝে ফেলা যায় তার ন্যাজখানা কোনদিকে মুখ করে আছে। কিন্তু চট করে বোঝা যায়না দ্বিতীয় শ্রেণীর ন্যাজধারীদের। এদের ন্যাজের নাম হচ্ছে, 'মিলমিশ মিলন মেলা' ন্যাজ। এরা এসে গুনগুন করা শুরু করে, আমরা সবাই মিলে কি সুন্দর মিলেমিশে আছি। কি দরকার এভাবে খোঁচাখুঁচি করার। কি দরকার শান্তি নষ্ট করার। কি দরকার রাজনীতির ভেতর পলিটিক্স ঢুকানোর। সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। ইত্যাদি ইত্যাদি ...

একটা একেবারে মৌলিক এবং ভীষণ গুরুতর বিষয় সাধারণ মানুষেরা বুঝতে ব্যর্থ হয় বারবার। জামাত শিবির এবং মৌলবাদীদের আজকে যে এত ভয়ঙ্কর শক্তি এবং প্রতাপ সেই শক্তি এসেছে এই মিলেমিশে থাকার ক্ষমতার জন্য। আগের এক লেখায় বলা হয়েছিল কথাটা। আবারও বলি।

বিষ্ঠাকে রাস্তার ধারে ফেলে রাখলে সেটা বিষ্ঠা। লোকজন সেটাকে এড়িয়ে চলে, একসময় সেটা মাটির সাথে মিশে যায়। কিন্তু সেই বিষ্ঠাকে সুন্দর কাঁচের পাত্রে সাজিয়ে টেবিলে এনে রাখলে সেই বিষ্ঠাকেই সিন্নি ভেবে পূজা দেয়ার লোকের আকাল হয়না। জামাত যেমন গু। এই গু হারিয়ে যাবার কথা ছিল স্বাধীনতার পরপরই। কিন্তু এই গুকে দেশের আবাল লোকেদের কাছে সিন্নি বানিয়েছে বিএনপি নামক পাত্র।

শুধু বিএনপিকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। আজকাল নানাভাবে, নানা কারণে, নানা স্বার্থে এই বিষ্ঠার সাথে মিলেমিশে এক হয়ে যেতে চায় মানুষজন। আম্লিগও এই বিষ্ঠাকে মাঝেমাঝে কাছে টানে রাজনৈতিক ফায়দার জন্য। ব্যবসায়ীরা কাছে টানে ব্যবসার ফায়দার জন্য। বলদেরা কাছে টানে এমনি এমনি, কিছু না বুঝেই। যতক্ষণ পর্যন্ত না কোপটা নিজের ঘাড়ে এসে না পরে ততক্ষণ পর্যন্ত বুঝতে পারেনা এই এক হয়ে থাকাতে আসলে কার ফায়দা হচ্ছে বেশী।

মৌলবাদী বা জামাত শিবির সম্পর্কে যখন তার সাথে মিলেমিশে চলা লোকজন সার্টিফিকেট দেয় সেই সার্টিফিকেট গুলা সবসময় এরকম ধরণের কিছু হয় - " উনাকে আমি অনেকদিন ধরে চিনি। উনি অত্যন্ত সদালাপী, বিনয়ী এবং অমায়িক মানুষ। কারো সাতে নেই পাঁচে নেই। মতের ভিন্নতা মানুষে মানুষে থাকতেই পারে। উনার সাথে আমার সব মত না মিললেও, আমি জানি উনি একজন চমৎকার মানুষ।" সমস্যা হচ্ছে আমি জীবনে যত কয়টা মোলায়েম, মিষ্টি, সদালাপী, বিনয়ী, অমায়িক মানুষ দেখেছি তাদের সবাই হয় ইনস্যুরেন্সের দালাল নাইলে মৌলবাদের দালাল ছিল। পেশাগত কারণেই ইনস্যুরেন্স বেচা লোকেরা মোলায়েম, অমায়িক হয়। একই ভাবে পেশাগত কারণে দ্বিতীয় দলটাও অমায়িক হয়। ঘরপোড়া গরু হয়ে সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পাই। অপরিচিত অর্ধ-পরিচিত যে কেউ 'আরে ভাই, কেমন আছেন' বলে তেলতেলে হাসি নিয়ে এগিয়ে আসলেই তাই ভুরু কুঁচকে ভাবা শুরু করি হালার মতলবটা কি? লাইফ ইনস্যুরেন্স বেচতে চায় নাকি নির্জনে নিয়ে আমার কল্লা ফেলতে চায়।

গডফাদার সিনেমার একটা বিখ্যাত ডায়লগ ছিল। ডন কর্লিয়নি তার পুত্র মাইকেল কর্লিয়নি কে বলে, তোমার কাছে যেই নেগশিয়েশনের অফার নিয়ে আসবে বুঝবে সেই বিশ্বাসঘাতক।জীবনে নানা সময় নানা আঙিনায় নানারকমের যুদ্ধ দেখেছি জামাত এবং মৌলবাদের বিরুদ্ধে। একেক যুদ্ধের রকম একেকরকম হলেও প্রতিটা যুদ্ধের সময় এই একটা ব্যাপার কমন ছিল। যুদ্ধের মাঝপথে কেউ না কেউ মিলমিশের অফার নিয়ে আসে। ৭১ এ মিলমিশের অফার নিয়ে এসেছিল শান্তিবাহিনী, রাজাকার, আলবদররা। এখন মিলমিশের অফার নিয়ে আসে ঝামেলা এড়ানো নিতান্ত সাধারণ মানুষেরা। বলে, ওরে থাম থাম লড়িস না, মিলেমিশে থাক। তারপর তারা এসে মিলমিশ করে জলের সাথে মূত্র মিশিয়ে দেয় বেশ।

আমার নানা মফস্বল শহরের মোটামুটি চেনাজানা উকিল ছিলেন। ১৪ই ডিসেম্বর এবং তার আগের পরের দেশজুড়ে বুদ্ধিজীবীদের লিস্ট করে হত্যার যে মহোৎসব শুরু হয় সেই লিস্টে তার নামও ছিল। মজার ব্যাপার হচ্ছে তাকে বাড়ি থেকে থেকে ডেকে নেয়ার জন্য যে লোকগুলা এসেছিল তারা কেউ অপরিচিত লোক নয়। এদের অনেকের সাথেই তার কোর্টে দেখা হত। কেউ কেউ বাড়িতেও আসতো নানা পরামর্শ নিতে। এরকমই একদল মুখ চেনা লোক এসে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যেতে চায় আর্মির গোপন ক্যাম্পে। কারণ হিসেবে বলে, উনারা এলাকার গণ্যমান্য লোকজনের সাথে একটু আলাপ করতে চান। এমনি কুশল বিনিময় টাইপের সৌজন্য সাক্ষাৎ। সেদিন আমার নানা কিভাবে অল্পের জন্য জানে বেঁচে গিয়েছিলেন সে অন্য কাহিনী। কিন্তু তার আরেক কলিগ আমাদের পাশের বাসার আরেক উকিল বাঁচতে পারেননি। সৌজন্য সাক্ষাৎ আর আলাপচারিতার জন্য গিয়ে লাশ হয়ে ফিরেছেন। তারা দুজনের কেউই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। আমার জানামতে কোন মুক্তিযোদ্ধার সাথে তাদের পরোক্ষ যোগাযোগ বা তাদের সাহায্য সহায়তা করার মতো ব্যাপারও ছিলনা। নিতান্ত সাধারণ ভীতু মানুষ ছিলেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর শত্রুপক্ষ ছিল মুক্তিযোদ্ধারা। শত্রুকে সামনে পেলে বিনাশ করার চেষ্টা করবে এটাই যুদ্ধের নীতি। কিন্তু আমার নানার মতো লোকেরা যারা মুক্তিযোদ্ধা ছিলোনা, যারা সৈন্য ছিলোনা। তাদের একমাত্র অপরাধ ছিল তারা বুদ্ধিজীবী। বাংলাদেশ যদি স্বাধীন হয় তবে এরকমের লক্ষ লক্ষ বুদ্ধিজীবীরা মিলে হয়তো নানাভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে। এবং এই লোকগুলা কারা সেই তথ্য পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কাছে থাকার কথা না। শহীদুল্লাহ কায়সার, জহির রায়হান বা ডক্টর ফজলে রাব্বির মতো মানুষরা দেশবরেণ্য নামী লোক ছিলেন। তাদেরকে সবাই হয়তো চিনতে পারে। কিন্তু আমার নানার মতো লোক, যিনি ছোট এক মফস্বল শহরের ছোটখাটো এক উকিল ছিলেন। কারো সাতে নেই পাঁচে নেই। তার নামতো তেমন কারো জানার কথা না। ইয়াহিয়া বা টিক্কা খান বসে তার নাম তালিকায় ঢোকায়নি। পাকিস্তানের কোন মেজর এসেও তার নাম তালিকায় তুলেনি। এইসব তৃণমূল পর্যায়ের বুদ্ধিজীবীদের যে তালিকা করা হয়েছে সেটা করেছে তাদেরই আশেপাশের লোক। এদের ঘর থেকে পাকিস্তানি আর্মি ডেকে নিয়ে যায়নি, ডেকে নিয়ে গেছে তাদেরই সহকর্মী, তাদের বন্ধু, তাদেরই সাথে মিলেমিশে চলা লোক। এদের কেউ কেউ কাজটি করেছে জেনেশুনে, সব বুঝেই। আবার কেউ কেউ হয়তো স্রেফ ব্যবহৃত হয়েছে তেমন কিছু না জেনেই বা বুঝেই। মিলেমিশে থাকতে থাকতে তাদের বোঝার ক্ষমতা ছিলোনা কিসের সাথে মিলে আছে।সেই লোকেদের বংশধরেরাই এই দেশের বর্তমান প্রজন্ম। এদেরকে ব্যাবহার করেই মৌলবাদী শক্তি দিব্যি মিলে যায় বাকি সবার সাথে। দিব্যি সবার সাথে হাসিখুশি হয়ে অমায়িক হয়ে থাকে।সঠিক সময়ে শুধু চাপাতি বের করে চারিদিক একটু ছেঁটে দেয়। তারপর আবার মিলে যায়।

তাই বলি কি যে কোন খানে যদি নানা মতের মিলন মেলা, মিলেমিশে থাকা, শান্তি বজায় রাখা, রাজনীতি না করা, পারস্পরিক সহনশীলতা, গোলমাল না করা, অতীত না ঘাঁটা, সব ভুলে সামনে এগিয়ে যাওয়া, ইত্যাদি শব্দমালা দেখতে পান তবে প্রতিবাদ না করুন অন্তত নিজের জান প্রাণ নিয়ে উল্টা ঘুরে দৌড় দিন। আর আমার কথা বিশ্বাস না হলে বরং everything is awesome, গাইতে গাইতে জীবনটা পার করে দিন। কপাল ভালো হলে কোপটা পাশের লোকের ঘাড়ে পড়বে। খারাপ হলে নিজের ঘাড়ে। কি আসে যায় - everything is awesome


মন্তব্য

নজমুল আলবাব এর ছবি

মাথা দেখে নামায়া দেওয়াটা সম্ভবত সামরিক কৌশল। পোলান্ডের যুদ্ধ নিয়ে পড়লাম কিছুদিন আগে। মিটিং এ ডেকে নিয়ে রাশানরা মাস্টার, ডাক্তার, উকিল সব শেষ করে দিলো। উদাহারণটা হয়তো খেলো হবে, তবু বাংলাদেশের সেনা শাসনগুলো খেয়াল করলে দেখবেন, প্রতিবারই কিছু মানুষকে টার্গেট করে সাইজ করা হয়। ১/১১ এর সময় এইটা বিরাট আকার নিয়েছিলো। শুদ্ধতার নামে ঢাকায়তো পিটাপিটি করেছেই, এমনকি মফস্বলেও করেছে। সবাই জানি শুধু রাজনৈতিক নেতাদের খবর। খুশিও হয়েছে মানুষ এদের ধরপাকড়ে। কিন্তু এর বাইরে ১/১১ এর সেনাসরকার কত সাংবাদিক, ডাক্তার, ব্যবসায়িকে পিটিয়ে জীবন নস্ট করেছে তার খবর নিলে শিউরে উঠতে হবে।

৭১ এ সামরিক এই কৌশলের সাথে দেশের কুকুরগুলো মিলে ভয়ঙ্কর করে তুলে পুরো বিষয়টা।

চরম উদাস এর ছবি

সেটাই। সব কিছু যে কিভাবে এত জলদি ভুলে যায় মানুষ।

স্পর্শ এর ছবি

এই লেখাটা দরকার ছিলো। চলুক
এ ধরনের মিলমিশ রোগীদের কারণেই অভিজিৎদার উপর আক্রমন কারীরা সুযোগ পেয়েছে।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

হাসিব এর ছবি

" উনাকে আমি অনেকদিন ধরে চিনি। উনি অত্যন্ত সদালাপী, বিনয়ী এবং অমায়িক মানুষ। কারো সাতে নেই পাঁচে নেই। মতের ভিন্নতা মানুষে মানুষে থাকতেই পারে। উনার সাথে আমার সব মত না মিললেও, আমি জানি উনি একজন চমৎকার মানুষ।"

এটা ঠিক এইভাবে বলে না। বলে এইভাবে,
" উনাকে আমি অনেকদিন ধরে চিনি। উনি অত্যন্ত বিনয়ী ও পরহেজগার মানুষ। ধর্মকর্ম নিয়ে আছেন। গেলবার মাদ্রাসায়ও অনেক কাজ করছেন। মতের ভিন্নতা মানুষে মানুষে থাকতেই পারে। উনার সাথে আমার সব মত না মিললেও, আমি জানি উনার মতো মানুষ হয়।"

এইভাবেই রাজাকারেরা সামাজিক স্বীকৃতি পাইছে।

চরম উদাস এর ছবি

সেটাই।

সবজান্তা এর ছবি

জামাতের মেইনস্ট্রিমে মিশে যাওয়া নিয়ে আমার ব্যক্তিগত কিছু পর্যবেক্ষণ আছে।

পচাত্তর পরবর্তী সময়ে জামাত যতোটা না রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত হয়েছে, তার চেয়ে বেশি হয়েছে সামাজিকভাবে। আমার কেন যেন মনে হয়, জামাত খুব ভালোমতোই জানতো যে, পচাত্তরের পর তারা চাইলেই চট করে ক্ষমতায় আসতে পারবে না। প্রতিরোধ আসবেই। তারা রাজনৈতিক পুনর্বাসনের চেয়েও মন দিয়ে সামাজিক পুনর্বাসনের কাজ করেছে। সমাজের গন্যমান্য পর্যায়ে, সার্টিফিকেটধারীদের পর্যায়ে, ডিসিশন মেকারদের পর্যায়ে নিজেদের লোক পৌছে দিয়েছে। তারা যেই ধরনের ইসলামিক কালচারকে এন্ডোর্স করে, প্রমোট করে, সেই ধরনের কালচারকে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে এস্টাবলিশ করেছে। ক্রমশই একজন ধার্মিক/ধর্মভীরু, পরহেজগার মানুষের প্রোফাইলের সাথে একজন জামাতির প্রোফাইলকে ব্লেন্ড করে ফেলা হয়েছে। তারই ফলশ্রুতিতে আজ ২০১৫ সালে আপনি একজন জামাতিকে যখন জামাতি বলবেন, তখন মৃদু থেকে তীব্র, নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া পাবেন এমন অনেক মানুষের থেকে, যে হয়তো (এখনো) জামাতকে সমর্থন করে না। তার প্রতিবাদের ভিত্তি হচ্ছে, এমন সজ্জন, পরোপকারী মানুষ যদি জামাত করেও, তবে শুধু মাত্র সেজন্যেই নিশ্চয়ই সে বাতিল হয়ে যায় না। জামাতের সার্থকতা এখানেই। এই কনফিউজড জনগোষ্ঠীই জামাতের রাজনৈতিক পুনর্বাসনকে সহজ করে দিয়েছে, দিচ্ছে। অদূর বা সুদূর ভবিষ্যতে জামাত যদি কখনো ক্ষমতা দখল করে, তবে এই জনগোষ্ঠীর কারণেই টিকে যাবে। রাজনীতির পাশাপাশি, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিকভাবেও জামাতকে মোকাবেলা করার একটা ইস্যু রয়ে যায়, যেখানে আমরা অনেকটাই উদাসীন, উন্নাসিক।

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

ইয়ামেন এর ছবি

"কিন্তু চট করে বোঝা যায়না দ্বিতীয় শ্রেণীর ন্যাজধারীদের। এদের ন্যাজের নাম হচ্ছে, 'মিলমিশ মিলন মেলা' ন্যাজ। এরা এসে গুনগুন করা শুরু করে, আমরা সবাই মিলে কি সুন্দর মিলেমিশে আছি। কি দরকার এভাবে খোঁচাখুঁচি করার। কি দরকার শান্তি নষ্ট করার। কি দরকার রাজনীতির ভেতর পলিটিক্স ঢুকানোর। সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। ইত্যাদি ইত্যাদি ..."

আজ ফেসবুক স্ট্যাটাসে এক বিষয়ে কথা বলতে বলতে আনুশেহ আনাদিলের কথা মনে পড়ে গেল। তখন তার 'পাকিস্তানী সৈন্যদের কুনো দুষ নাই, দুষ সব দুষ্টু পলিসি মেকারদের' মার্কা পোস্টের ব্যাপারে আবার কথা তুলেছিলাম। এর কিছুক্ষন পড়ে আপনার এই লেখা পড়লাম, পুরোই প্রাসঙ্গিক। এই দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাগবান্ধব আর দালালগুলো সনাক্ত করাই হল আসল কাজ, কারন মৌলবাদী জামাতি ছাগুদের বার বাড়তে দিয়ে তারপর অভিজিৎ দা রাজিব হায়দারদের মত মানুষের ঘাড়ে কোপ মারার সাহস এদের এমন মেহেরজান-মার্কা কথাবার্তাই জুতিয়ে দেয়।

উদাস ভাই, লেখাটা চরম হয়েছে। এটা এবং আপনার মুক্তমনায় লেখা পোস্ট দুটো মিলে পুরোই বিনা টিকিটে দুটো ছবি দেখার মত হয়ে গেলে। ধন্যবাদ চলুক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...

স্বপ্নের ফেরিওয়ালা  এর ছবি

"এইসব তৃণমূল পর্যায়ের বুদ্ধিজীবীদের যে তালিকা করা হয়েছে সেটা করেছে তাদেরই আশেপাশের লোক। এদের ঘর থেকে পাকিস্তানি আর্মি ডেকে নিয়ে যায়নি, ডেকে নিয়ে গেছে তাদেরই সহকর্মী, তাদের বন্ধু, তাদেরই সাথে মিলেমিশে চলা লোক। এদের কেউ কেউ কাজটি করেছে জেনেশুনে, সব বুঝেই। আবার কেউ কেউ হয়তো স্রেফ ব্যবহৃত হয়েছে তেমন কিছু না জেনেই বা বুঝেই। মিলেমিশে থাকতে থাকতে তাদের বোঝার ক্ষমতা ছিলোনা কিসের সাথে মিলে আছে।সেই লোকেদের বংশধরেরাই এই দেশের বর্তমান প্রজন্ম। এদেরকে ব্যাবহার করেই মৌলবাদী শক্তি দিব্যি মিলে যায় বাকি সবার সাথে। দিব্যি সবার সাথে হাসিখুশি হয়ে অমায়িক হয়ে থাকে।সঠিক সময়ে শুধু চাপাতি বের করে চারিদিক একটু ছেঁটে দেয়। তারপর আবার মিলে যায়।"
কলেজ জীবনের এক ক্লাসমেট এর সাথে আজ কথা হচ্ছিল।কথা প্রসঙ্গে চলে আসল জামাত শিবির আর আস্তিক নাস্তিক প্রসঙ্গ ।আমি কিছু কথা বলার পর সে আর স্থির থাকতে না পেরে আমাকে বলল"জামাত আওয়ামীলীগ বিনপির মত এত খবিসি রাজনীতি করেনা বলে আমি মনে করি,তো ওদের থাকতে দিলে সমস্যা কি,নিষিদ্ধ করতে হবে কেন?আর আমি ধর্মনিরেপেক্ষতার পক্ষে কিন্তু নাস্তিকদের পছন্দ করিনা"। এইটা শুনার পর আর কিছু বলার মত শক্তি আমার আর অবশিষ্ট ছিলনা।
সত্য হল এরকম লোকের সংখ্যা দেশে বেশি এখন,এবং এরাই দেশটাকে ছাগলের খোয়ারে পরিণত করতে সবছে বেশি সহযোগিতা করছে।এরা আবার সবাই নিজেদের শিক্ষিত মোডারেট বলে!

চরম উদাস এর ছবি

ঘুরে ফিরে সেই সমান সমান করার চেষ্টা আরকি

আয়নামতি এর ছবি

চলুক

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

rizvee এর ছবি

ইয়ে, মানে... এ ধরনের মিলমিশ রোগীদের কারণেই পরবর্তী অভিজিৎ আমাকে বানাতে দেরি করবে না বিষ্টা সমাজ।
ওঁয়া ওঁয়া

মেঘলা মানুষ এর ছবি

মিজান, পিষে ফ্যালো

নীড় সন্ধানী এর ছবি

মিলমিশের সংস্কৃতি চালু করে বিএনপি নিজেই এখন অবলুপ্তির পথে। আমরা যাদের ছাগু বলে ডাকি তাদের অধিকাংশের প্রকাশ্য পরিচয় বিএনপি সমর্থক অথবা নিরপেক্ষ সুশীল। লেখাটার সময়োপযোগী হইছে

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

হাসিব এর ছবি

বিএনপি তো ঠিক জায়গাতেই আছে। তারা প্রচুর ভোট পাবে ইলেকশন হলে। এই বিষয়ে ছোটখাটো একটা বাজি ধরতে পারেন।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সুবোধ অবোধ এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

যে জাতি কোন রকমের প্রশিক্ষণ ছাড়াই বলতে গেলে হাতের কাছে যা ছিল তাই দিয়েই একটা ভূখন্ডকে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর হাত থেকে স্বাধীন করে ফেলল, সেই জাতিই কি করে আজকে - আশে পাশে যাই ঘটুক না কেন আগে নিজের গা বাচিয়ে চলতে হবে তারপর বাকিসব- এই জাতীয় মনোভাব আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকে ! ধর্মের আফিম তো জামাত আর তাদের সমমনা সংগঠন সেই '৭১ সালেও বাঙ্গালীকে খাওয়ানোর চেষ্টা করেছিল। তখন সেটা কাজে না দিলে এখন কেন সবাই সেই আফিমে বুঁদ হয়ে থাকে? তার মানে কি এই যে সেই '৭১ এ আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের পর আমরা সবাই বেঁচে আছি বা বেঁচে থাকতে চাই নপুংসক হয়ে? মজাই তো, তারা আমাদের হাতে স্বাধীনতার "চোথা" ধরায়ে দিয়ে গেছে, আর আমরা আছি ফূর্তিতে। অভিজিৎ কোপ খেয়ে মরে পড়ে থাকে আর তার দশ হাতের মধ্যে লোক ভীড় করে থাকে, বন্যার সাহায্যের আর্তির চেয়ে দুহাত দূরে দাড়িয়ে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকা ছাড়া তো নপুংসকেরা কিছু করতেও পারে না। পরের কোপ নিজের ঘাড়ে পরতে পারে, তাই তথাকথিকত ডাকসাইটের কলামবাজদেরই বা কি দরকার এসব নিয়ে পত্রিকায় লেখা লেখি করার ! ফারাবীর মত কীটের ফেসবুক অনুসারীর সংখ্যা, অন্য ধর্ম এর উপর শত মানুষের সামনে হুজুরদের প্রকাশ্য আক্রমন এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের নীরবে সেটা প্রশ্রয় দেয়া, বিশ্ববিদ্যালয় এর সর্বোচ্চ ডিগ্রী গলায় ঝুলানো লোকদের জামাতের কাজকর্ম ইসলামের নামে মিনমিন করে জাস্টিফাই করার প্রবণতা ------এসবই আসলে নির্দেশ করে ভিতরে ভিতরে আমরা কতটা পচে গেছি। গন্ধটা ঠিক বের হচ্ছে না বলে সবাই ভাবছি আমরা ঠিকই আছি, কিছু কিছু দিন পর পর শুনি বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ঠিক বুঝি না কিভাবে? কোন জায়গাটায়? যারা জামাতের আফিম খায় তারা নাহয় খারাপ, কিন্তু যারা বলে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তারা ঠিক কি টানে সেটা জানার ইচ্ছাটা মাঝে মাঝে কামড়ায়।

চরম উদাস এর ছবি

আগাচ্ছে তো অবশ্যই, পাকিস্তানের দিকে আগাচ্ছে

সত্যপীর এর ছবি

..................................................................
#Banshibir.

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

চলুক

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

জামাতী-মৌলবাদী মিলমিশবাদীরা কিন্তু আলাদা কিছু নয়। অন্তরেও তাদের যথেষ্ঠ মিল! স্বীকার করার সাহটা কেবল তাদের নেই! দিনে দিনে সাহস পেয়ে যাবে নিশ্চয়ই!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তারেক অণু এর ছবি

কিন্তু, যদি, আসলে, বাট--- এই শব্দগুলো নেই যে বড় মিজান, পিষে ফ্যালো

সাফি এর ছবি

কোপ খাবেন শীঘ্রই।

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

দেবদ্যুতি

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

আমার সাথে একদিন একজন এই শ্রেণীর মানুষের প্রচণ্ড তর্ক হল। আমি চিৎকার করছিলাম। পাশের জন আমাকে বললো, আপা থাক আর বইলেন না, মানুষটা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে।!!!

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

saadat এর ছবি

বস, আপনার লেখা পড়ে 'মিলেমিশে থাকার' অন্যতম কুখ্যাত হারামী খোন্দকার মোশতাকের কথা মনে পড়ে গেল ।
হারামীটা তো পাকিস্তান ফেডারেশন করার জন্য উঠে পড়ে লাগছিলো।
লেখায় হারামীটার নাম যোগ করতে পারেন ।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

অতএব, সাধু সাবধান হে আর্য রসিক!

অতিথি লেখক এর ছবি

যতই আশেপাশের মানুষগুলির মতামত দেখি, ততই আপনার লেখার তাৎপর্য অনুধাবন করি। সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ।

- নীল কাকাতুয়া

রানা মেহের এর ছবি

সামাজিক প্রতিষ্ঠা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা থেকে অনেক বেশি কাজ দেয়,
জামাত প্রমান করে দিল।

জামাত আরো বহুদুর যাক।
সবাই মিলেমিশে মুক্তিযুদ্ধ ভুলে যাক।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

চরম উদাস এর ছবি

হ্যাঁ, একেবারে হাতে কলমে এসো নিজে করে দেখালো

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।