অন্ধকারের দিনগুলি

চরম উদাস এর ছবি
লিখেছেন চরম উদাস (তারিখ: মঙ্গল, ১৫/১২/২০১৫ - ২:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সেলিনা পারভীন যাবার আগে ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলেন, সুমন তুমি মামার সাথে খেয়ে নিও। আমি যাব আর চলে আসব। গিয়েছিলেন কিন্তু আর ফিরে আসেন নি। পায়ের সাদা মোজা দেখে চেনা গিয়েছিল তাকে। এমনিতে চেনার উপায় নেই। চোখ বাঁধা, নাক মুখের কোন আকৃতি নেই, স্তনের অংশ কাটা। তাঁকে যখন বেয়োনেট দিয়ে খোঁচানো হচ্ছিল তিনি তখন বারবার তার শিশু সন্তানের কথাই বলছিলেন।

মুনির চৌধুরীকে রড দিয়ে পেটাতে পেটাতে মঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামানের নেতৃত্বে থাকা যুবকরা বলছিল, আপনি তো এতদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মন্ত্র পড়িয়েছেন, আজ আমরা তোমাকে মন্ত্র পড়াব।
তার পাশে থাকা মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি রবীন্দ্রনাথের ওপর কয়টা বই লিখেছ?
মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী বলেন, আমি রবীন্দ্রনাথের ওপর বেশ কয়েকটি বই লিখেছি।
মঈনুদ্দীন বলে, এদের শেষ করে ফেলতে হবে। এরা ভারতের স্পাই।
এরপর যুবকরা মুনির চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীকে রড দিয়ে এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকে।
উৎসাহ দিয়ে মঈনুদ্দীন আশরাফকে বলে, হাতে সময় নেই। খুব তাড়াতাড়ি কাজ সারতে হবে।

কবি মেহেরুন্নেসাকে ২৭শে মার্চ কাদের মোল্লা আর তার বাহিনী মিলে হত্যা করে। জবাই করে ধড় থেকে মাথা আলাদা করা হয় প্রথমে তার মায়ের সামনেই। সেই কাটা মাথা তার লম্বা চুল দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলানো হয়। সেটা ফ্যান চালিয়ে কিছুক্ষণ ঘুরানো হয়। নিজ কন্যার মস্তক বিহীন লাশ ঝুলতে দেখার বেদনা বেশিক্ষণ সহ্য করতে হয়নি মায়ের। খানিক আমোদ শেষ হলে এরপর তার মাকে হত্যা করা হয়। দুই ভাইকে জবাই করে হত্যা করা হয়। ভাই শহিদুল্লাহ কায়সারকে খুঁজতে গিয়ে চিরতরে হারিয়ে যান জহির রায়হান। ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায় ডক্টর ফজলে রাব্বির। ডক্টর জিসি দেবকে হত্যার আধা ঘণ্টা পর আবার ফিরে এসে লাশ টেনে হিঁচড়ে মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়।

লিখতে লিখতে হাত অবশ হয়ে যায়, তাও এই গল্পগুলো শেষ হয়না।

কেন মারা হয়েছিল দেশের অসাধারণ এই মানুষদের? শুধু মারা নয়, এত নৃশংসভাবে মারা হয়েছিল কেন? উত্তরটা একদম সহজ। যুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তান পরিকল্পনা করেছিল বাংলাদেশকে পঙ্গু করে দেয়ার। তালিকা করে দেশের শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক, চিকিৎসক সহ নানা পেশার সফল এবং বুদ্ধিমান মানুষকে হত্যার মাধ্যমে একটা দেশকে তার জন্মের সময়ই পঙ্গু করে দেয়ার এক নৃশংস পরিকল্পনা। বুদ্ধিজীবীদের কেউ প্রত্যক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন, কেউ পরোক্ষভাবে। কিন্তু তাদের অপরাধ মুক্তিযোদ্ধা হওয়া বা না হওয়া যতটা, তারচেয়ে অনেক বেশী অপরাধ নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল মানুষ হওয়া। এই সফল মানুষদের সরিয়ে দিতে পারলেই যে দেশ আর কখনও মাথা তুলে দাড়াতে পারবে না। পুরো মুক্তিযুদ্ধের সময় বাকি সব গণহত্যা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র এক ১৪ই ডিসেম্বরের জন্যই পাকিস্তান আর তার দালালদের আগামী এক হাজার বছর ধরে ঘৃণা করা যায়। ১৪ই ডিসেম্বরের এই ভয়ঙ্কর অন্যায়ের কথা পাকিস্তানী আর তার দালালরাও ভালো করেই জানে। তাই নতুন নতুন কায়দায় একে প্রশ্নবিদ্ধ করে। যে কোন অন্যায় লুকানোর সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হচ্ছে সেই অন্যায়কে ঘিরে একটা ধোঁয়াশা তৈরি করা। একটা কন্সপাইরেসি থিউরি বানানো। নাইন ইলেভেনে আপনার চাচারা যা করেছে সেটা লুকাতে চান, সুন্দর থিউরি বানিয়ে ফেলুন এটা আসলে আমেরিকারই ষড়যন্ত্র। একইরকম ভাবে খুব সূক্ষ্মভাবে এই ১৪ই ডিসেম্বরকে নিয়ে দালালেরা তৈরি করে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব। এতটা নির্লজ্জ হবার সাহস নেই যে বলবে, ১৪ই ডিসেম্বর বা তার আগে পরে বুদ্ধিজীবীরা কেউ মরে নাই বা মরলেও তাদেরকে আসলে মুক্তিযোদ্ধারা মেরেছে। সরাসরি সেটা না বললেও ইনিয়ে বিনিয়ে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব বানায় এই বলে, "আহা সঠিক ইতিহাসটা তো জানা দরকার। আসলেই কি মেধা-শূন্য করার জন্য এই হত্যা হয়েছিল? আসলেই কি পাকিস্তানিরা হত্যা করেছিল? আবেগ বাদ দিয়ে আমাদের বাস্তব ইতিহাস জানতে হবে।" বাস্তব আমরা জানি, আপনি জানেন। আপনার উদ্দেশ্য বাস্তব জানা বা জানানো নয় বরং বাস্তবকে ঢাকা দেয়া। ১৪ই ডিসেম্বর বা তার আগে পরে বুদ্ধিজীবীদের কি হয়েছিল তার অসংখ্য সাক্ষ্য প্রমাণ চোখের সামনে ছড়িয়ে আছে। জানতে চাইলেই জানা যায়, বুঝতে চাইলেই বোঝা যায়। তার কিছুর চেষ্টা না করে বরং ১৪ই ডিসেম্বর নিয়ে কিছু মানুষ সন্দেহ প্রকাশ করে, করেই যায়। সন্দেহ থাকতেই পারে। ঠিক সেই পরিমাণ সন্দেহ এই মানুষগুলার জন্ম নিয়ে আছে। ১৪ই ডিসেম্বরে বুদ্ধিজীবীদের যে মারা হয়েছে সেটার কোন ভিডিও নাই। তাই কে মেরেছে সেটার প্রমাণ নাই। একইভাবে এই মানুষগুলার জন্মের প্রক্রিয়ার কোন ভিডিও নাই। তাই এটাও নিশ্চিত নয় এদের জন্ম মানব গর্ভে নাকি কোনও শুয়োরের গর্ভে (দুঃখিত শুয়োরদের অপমান করার জন্য, এই নিরীহ প্রাণীটাকে আমরা বারবার ব্যাবহার করি এদের চেয়ে কোটিগুণ নোংরা এবং হিংস্র কিছু মানুষকে বোঝাতে)।

বুদ্ধিজীবী হত্যার যে মহোৎসব শুরু হয়েছিল ২৫শে মার্চে সেটা চূড়ায় উঠে ১৪ই ডিসেম্বরে। কিন্তু এই হত্যার উৎসব শেষ হয়নি আজও। মালউন আর ভারতের দালাল শব্দদুটিকে নাস্তিক আর ধর্মবিরোধী দিয়ে প্রতিস্থাপন করে আজও চলছে বুদ্ধিজীবী হত্যার উৎসব। সেই একই পদ্ধতি, একই কুশীলব, একই উদ্দেশ্য। সেই সময় যেমন দালালেরা, "আরে বুদ্ধিজীবী কই? এত সামান্য মালাউন" বলে হাসতে। আজও তেমন একই দালালেরা, "হেহ, এই নাকি বুদ্ধিজীবী, এ তো নবী রসূলকে গালি দেয়া নাস্তিক" বলে ঠা ঠা করে হাসে। এই মানুষগুলো ভুলে যায় অথবা সবাইকে ভুলিয়ে দিতে চায় মুনির চৌধুরী তৎকালীন সরকারের কাছে ধর্মবিরোধী ছিলেন। ধর্মে আঘাত দেয়ার অভিযোগে তার কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হয় এবং ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে বারণ করা হয়। ভুলিয়ে দিতে চায় ডক্টর গোবিন্দচন্দ্র দেবের দরজায় ২৫শে মার্চের রাতে ধাক্কা দেয়ার সময় চিৎকার করে পাক সেনারা বলছিল, 'মালাউন কা বাচ্চা দরজা খোল'। ভুলিয়ে দিতে চায় নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যার পর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী হাসতে হাসতে পাশের মুসলমানদের বলেন, সামান্য একটা মালাউনের মৃত্যুতে এত শোক প্রকাশ করার কি আছে? ভুলিয়ে দিতে চায়, হত্যার আগ মুহূর্তে মুনির চৌধুরী আর মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরীকে বলা হয়েছিল, ভারতের দালাল। বলা হয়েছিল শিক্ষার নাম করে এরা নাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে পূজা করায়। এদের অপরাধ রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে লেখালেখি। ভুলিয়ে দিতে চায়, কারমাইকেল কলেজের চার অধ্যাপককে হত্যার পূর্বে চিৎকার করে বলা হচ্ছিল, শালা মালাউনের বাচ্চা। ভুলিয়ে দিতে চায়, যেই মানুষগুলো একসময় দেশ হিন্দু হয়ে যাবার ভয় দেখাত সেই একই মানুষগুলো এখন দেশ নাস্তিক হয়ে যাবার ভয় দেখায়। সে যুগের মালাউন চোখের সামনে কত সহজে হয়ে গেছে এযুগের নাস্তিক। সে যুগের সাকা চৌধুরীরা বুদ্ধিজীবীকে হত্যার পর ঠা ঠা করে হাসতে হাসতে যেমন বলত, সামান্য একটা মালাউনের মৃত্যুতে এত শোক প্রকাশ করার কি আছে? এ যুগের সাকা চৌধুরীরাও তেমনি হাসতে হাসতে বলে, এক নোংরা নাস্তিকের মৃত্যুতে এত দুঃখের কি আছে?

হাজার হাজার বুদ্ধিজীবী হত্যার মাধ্যমে আমাদের কি যে অপূরণীয় ক্ষতি করা হয়েছে এবং হচ্ছে সেটা উপলব্ধি করার মতো মানুষও দিনকে দিন কমে আসছে। এই সময়েও যে যুদ্ধ ছাড়াই বুদ্ধিজীবী হত্যা করা হচ্ছে, একের পর এক তালিকা হচ্ছে সেটা স্বীকার করার মত মানুষ কমে আসছে। তাই এসব কথা ভাবলে এখন আর মন খারাপ হয়না। বরং ঠা ঠা করে হাসতে হাসতে বলতে ইচ্ছা হয়, বুদ্ধিজীবী হত্যা নিয়ে খুব বেশী মন খারাপের কারণ দেখি না। ঢাকা ভার্সিটির শিক্ষক মুনির চৌধুরী, জিসি দেব, আনোয়ার পাশা, মুফাজ্জাল হায়দাররা মরে গেছেন তো কি হয়েছে? আমাদের আছে ডক্টর আসিফ নজরুল। আলতাফ মাহমুদকে মেরে ফেলেছে তো কি হয়েছে, আমাদের আছে হায়দার হোসেন। হার্টের চিকিৎসক ফজলে রাব্বি বা আলিম চৌধুরী মরে গেছেন তো কি হয়েছে? আমাদের আছে একই সাথে শরীর ও মন দুই এর চিকিৎসা করা ডাক্তার আব্দুন নূর তুষার। কবি মেহেরুন্নেসা মরে গেছেন তো কি হয়েছে? আমাদের আছে কায়কাউসের ছেলে বা দুধভাই সাইয়েদ জামিল। জহির রায়হান মরে গেছেন তো কি হয়েছে, আমাদের আছে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ পরিচালক মোস্তফা ফারুকি। সাংবাদিক সেলিনা পারভীন মরে গেছেন তো কি হয়েছে? আমাদের আছে মাহমুদুর রহমান। লেখক অভিজিৎ রায় মরে গেছেন তো কি হয়েছে? আমাদের আছে কাসেম বিন আবুবাকার!

যে ভোল পাল্টানো বুদ্ধিবেশ্যায় সুখ পায় তার বুদ্ধিজীবীর দরকার কি? যে 'পাঁচ ফুট শরীরে বার হাত শাড়ি, অঙ্গ ঢাকিতে তবে পারে না মোর নারী' তে সুখ খুঁজে পায় তার আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানোর প্রয়োজন কি? যে 'আমি কায়কাউসের ছেলে। আমি বেড়াই হেসে খেলে। ইচ্ছে হলে হাগি মুতি, ইচ্ছে হলে চুদি' তে খুশী তার আর 'মুক্তি শপথে দীপ্ত আমরা দুরন্ত দুর্বার, সাত কোটি বীর জনতা জেগেছি, এই জয় বাঙলার' প্রয়োজন কি? যে লিটনের ফ্ল্যাটে আনন্দ পায় তার জীবন থেকে নেয়ার প্রয়োজন কি? যে দেশে শুয়োর দিয়েই কাজ চলে সে দেশে মানুষের প্রয়োজন কি? যে জাতি বিষ্ঠাতে স্বর্গসুখ খুঁজে পায় সে জাতির অমৃতের প্রয়োজন কি?


মন্তব্য

অনুসন্ধিৎসু এর ছবি

গুরু গুরু

টিউলিপ এর ছবি

যে জাতি বিষ্ঠাতে স্বর্গসুখ খুঁজে পায় সে জাতির অমৃতের প্রয়োজন কি?

স্পট অন।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

জি.এম.তানিম এর ছবি

যে দেশে শুয়োর দিয়েই কাজ চলে সে দেশে মানুষের প্রয়োজন কি? যে জাতি বিষ্ঠাতে স্বর্গসুখ খুঁজে পায় সে জাতির অমৃতের প্রয়োজন কি?

চলুক

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

তিথীডোর এর ছবি

গুরু গুরু

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

হাসিব এর ছবি

আমাদের ঝোলায় আসিফ নজরুলের পাশাপাশি এই নসুরাও আছেন। যারা খুন হয়ে যাওয়া ব্লগারদের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজন মনে করেননি। প্রয়োজন মনে করেছেন স্বাধীনতার বিপক্ষশক্তির পক্ষে কাজ করা, মুক্তিযুদ্ধের নিহতের সংখ‍্যা কমিয়ে দেখাতে চেষ্টা করা এক ভিনদেশি বাটপারের।

নজমুল আলবাব এর ছবি

উৎসাহ দিয়ে মঈনুদ্দীন আশরাফকে বলেন, হাতে সময় নেই। খুব তাড়াতাড়ি কাজ সারতে হবে

বলেন এর স্থলে বলে করে দিন।

চরম উদাস এর ছবি

বলে করে দিলাম। শুয়োরের ভাষা জানা নাই, থাকলে সেই ভাষায় কথোপকথন লিখতাম।

নজমুল আলবাব এর ছবি

এই পিশাচের দল মুনির চৌধুরী বা অন্যদের আপনি সম্বোধন করছিলো বলে মনে হয় না।

চরম উদাস এর ছবি

আমারও মনে হয়না আপনি করে বলেছিল। রাষ্ট্রপক্ষের ২২তম সাক্ষী মোঃ দেলোয়ার হোসেন এর সাক্ষ্য থেকে পাওয়া কথা অনুসারে লিখেছি। সেখানে আপনি ছিল।

অতিথি লেখক এর ছবি

মোঃ দেলোয়ার হোসেনের মুখে সেদিনের ঘটনার ভিডিওটা আপনার ফেসবুকে মেসেজ করলাম।

চরম উদাস এর ছবি

পেয়েছি। অনেক ধন্যবাদ হাসি । ওটা শেয়ার দেয়ার জন্য ওইটা নিয়ে লিখতে লিখতে আস্ত একটা নতুন লেখা দাঁড়িয়ে গেছে। সেটা মুক্তমনাতে পোস্ট করে দিব আজকে।

চরম উদাস এর ছবি

ভিডিওতে দেখলাম তুমি করে বলার কথা। পত্রিকায় আপনি এসেছিল। ভিডিও যেহেতু তার সরাসরি নিজের মুখের বক্তব্য তাই লেখাতেও তুমি করে দিলাম।

নিটোল এর ছবি

গুরু গুরু

_________________
[খোমাখাতা]

চৈতী ‍আহমেদ এর ছবি

এই সময়ও যুদ্ধ ছাড়াই বু্দ্ধিজীবী হত্যা করা হচ্ছে, ‍একের পর ‍এক তালিকা করা হচ্ছে, ‍এটা স্বীকার করার মতো মানুষ দিন দিন কমে ‍আসছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

যুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকিস্তান পরিকল্পনা করেছিল বাংলাদেশকে পঙ্গু করে দেয়ার

আমি মনে করি, পাকি জারজরা ওদের বিজয় সম্পর্কে নিশ্চিত হলেও বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড ঘটাতো। এটা শুধুমাত্র বাংলাদেশকে পঙ্গু করার মিশন নয়, বাঙালি জাতিকে পঙ্গু করার মিশন ছিল। বাঙালিরা যেন আর কখনও পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধিকার আন্দোলনে নামতে না পারে। বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড অনিবার্য ছিল। বাংলাদেশ জিতুক বা হারুক, এ হত্যাকান্ড এড়ানোর উপায় ছিল না। ২৫ মার্চ থেকে এমনকি ২৫ মার্চের পূর্ব থেকেই বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড শুরু হয়েছিল অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে। কায়মনে বাঙালি এবং বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী- এমন সকলকে মেরে ফেলার মিশন ছিল।

রিপন

অতিথি লেখক এর ছবি

গুরু গুরু

স্বয়ম

অতিথি লেখক এর ছবি

যে ভোল পাল্টানো বুদ্ধিবেশ্যায় সুখ পায় তার বুদ্ধিজীবীর দরকার কি? যে 'পাঁচ ফুট শরীরে বার হাত শাড়ি, অঙ্গ ঢাকিতে তবে পারে না মোর নারী' তে সুখ খুঁজে পায় তার আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানোর প্রয়োজন কি? যে 'আমি কায়কাউসের ছেলে। আমি বেড়াই হেসে খেলে। ইচ্ছে হলে হাগি মুতি, ইচ্ছে হলে চুদি' তে খুশী তার আর 'মুক্তি শপথে দীপ্ত আমরা দুরন্ত দুর্বার, সাত কোটি বীর জনতা জেগেছি, এই জয় বাঙলার' প্রয়োজন কি? যে লিটনের ফ্ল্যাটে আনন্দ পায় তার জীবন থেকে নেয়ার প্রয়োজন কি? যে দেশে শুয়োর দিয়েই কাজ চলে সে দেশে মানুষের প্রয়োজন কি? যে জাতি বিষ্ঠাতে স্বর্গসুখ খুঁজে পায় সে জাতির অমৃতের প্রয়োজন কি?

লা জবাব।

bashabi এর ছবি

লেখা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নাই. বরাবর এর মত ই অসাধারণ। যেটা বলতে চাই সেটা হলো মোস্তফা ফারুকী কে নিয়ে আলাদা করে একটা লেখা চাই. please please please...

চরম উদাস এর ছবি

লিখবো সময় করে অবশ্যই। তার আগে এই দারুণ লেখাটা পড়ে দেখতে পারেন।
ফারুকীদের সহীহ বচননামা

ফারাবী এর ছবি

পুরো লেখার প্রতিটি শব্দের সাথে একমত। বুদ্ধিজীবীদের সমূলে বিনাশ করার যে পরিকল্পনা পাকিস্তান নামের ঘৃণ্য রাষ্ট্রটি করেছিল, তা আজ অনেকাংশেই সফল। এ এক অদ্ভুদ অন্ধকারের যুগে পদার্পণ করেছিল আমরা- যেখানে সবাই জেনে-বুঝে অন্ধ, অন্ধতাই পূণ্যের সামিল। অনেক ধন্যবাদ লেখাটার জন্য ভাইয়া।

ফাই সিদ্ধি এর ছবি

যে জাতি বিষ্ঠাতে স্বর্গসুখ খুঁজে পায় সে জাতির অমৃতের প্রয়োজন কি

সহমত

ধুসর জলছবি এর ছবি

গুরু গুরু

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি

গুরু গুরু

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

গুরু গুরু

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

রানা মেহের এর ছবি

তাদের ওপর করা অত্যাচারের বর্ণনা পড়তেই এতো কষ্ট হয়, লিখতেও নিশ্চই অনেক কষ্ট হয়েছে আপনার।
অনেক ধন্যবাদ এই কষ্টটুকুর জন্য।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

চরম উদাস এর ছবি

লেখাটা এজন্য অনেক অগোছালো আর অসংলগ্ন হয়েছে। লিখতে গিয়ে অনেকবার মনে হয়ছে বাদ দেই, যা বলার বোধহয় বলতে পারছি না গুছিয়ে।

অতিথি লেখক এর ছবি

রায়েরবাজারে সেলিনা পারভীন আর অনেকের নিথর দেহ। দৃক গ্যালারী থেকে নেয়া।

চরম উদাস এর ছবি

তাকানো যায় না মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

গুরু গুরু

এক লহমা এর ছবি

"হাজার হাজার বুদ্ধিজীবী হত্যার মাধ্যমে আমাদের কি যে অপূরণীয় ক্ষতি করা হয়েছে এবং হচ্ছে সেটা উপলব্ধি করার মতো মানুষও দিনকে দিন কমে আসছে। এই সময়েও যে যুদ্ধ ছাড়াই বুদ্ধিজীবী হত্যা করা হচ্ছে, একের পর এক তালিকা হচ্ছে সেটা স্বীকার করার মত মানুষ কমে আসছে।"

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

Zahidur Rahman (Elias) এর ছবি

"যে দেশে শুয়োর দিয়েই কাজ চলে সে দেশে মানুষের প্রয়োজন কি? যে জাতি বিষ্ঠাতে স্বর্গসুখ খুঁজে পায় সে জাতির অমৃতের প্রয়োজন কি?"

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

গুরু গুরু

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

গুরু গুরু

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

নীড় সন্ধানী এর ছবি

১৪ ডিসেম্বরের এই দিবসটা না থাকলে বিজয় দিবসের আনন্দটা বহুগুন বেশী হতে পারতো মন খারাপ

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

মুস্তাফিজ এর ছবি

উত্তম জাঝা!

...........................
Every Picture Tells a Story

অতিথি লেখক এর ছবি

যে জাতি বিষ্ঠাতে স্বর্গসুখ খুঁজে পায় সে জাতির অমৃতের প্রয়োজন কী?

দেবদ্যুতি

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক পরে পড়লাম। গুরু গুরু

সোহেল ইমাম

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।