গিটার কর্ডের টুকিটাকি ফর অ্যাবসলিউট বিগিনার্স

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি
লিখেছেন ইয়াসির আরাফাত [অতিথি] (তারিখ: বুধ, ১৪/১১/২০১২ - ৮:৫৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কখনো কি পরীক্ষা করে দেখেছেন একটা তারের দুই মাথা বেঁধে টান দিলে কি হয়? প্রশ্নটা বোকার মত হয়ে গেল, নিশ্চয়ই দেখেছেন। এই পোস্টে উঁকি দিয়েছেন আর কখনো গিটারের তারে একটা টোকা দেননি, এমন হবার সম্ভাবনা খুবই কম। ফলাফলটা খুবই সাধারণ, শব্দ হয়। ফুঃ! আমাদের চারপাশে হরহামেশাই নানান শব্দ হচ্ছে, এ আর এমন কি?

সত্যি কথাটা হচ্ছে, টানা তারের একটা পরীক্ষার ফলকে ভিত্তি করেই সঙ্গীতের ব্যাকরন তৈরী করা শুরু হয়েছিলো। করেছিলেন আর কেউ নন, আমাদের অতি পরিচিত গ্রীক গণিতবিদ মহামান্য পীথাগোরাস।

পীথাগোরাস সাহেবের আমলে অবশ্য গিটার ছিলো না, কাজেই তিনি একটা তারের দুই মাথা আটকে তাতে নানাভাবে টোকাটুকি (পড়ুন বল প্রয়োগ) করে দেখছিলেন। ফলাফল যা পেলেন তা মোটামুটি এইরকম

১। তারের ঠিক মাঝখানে চাপ দিয়ে ছেড়ে দিলে সেটা কাঁপতে কাঁপতে শব্দ করে (আজকালকার তিন চার বছরের বাচ্চারাও এটা জানে)

২। তারটার মাঝখান আটকে দিয়ে দুই পাশে টান দিলে আগের লম্বা তারের মত অনেকটা একই ধরণের শব্দ হয়, কিন্তু তীক্ষ্ণতা বেশি থাকে (হুম, এটা আগেরটার চেয়ে একটু জটিল আবিষ্কার)

৩। ঠিক মাঝখানে না আটকে প্রান্তবিন্দু আর মধ্যবিন্দুর মাঝে কিছু কিছু জায়গায় আটকালে যে কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন শব্দমালা তৈরি হয় সেগুলো ক্রমানুসারে বেশ শ্রুতি মধুর। এরকম জায়গার সংখ্যা এগারোটা (ব্যাপারটা ধীরে ধীরে জটিলতর হয়ে যাচ্ছে দেখি)। তাহলে মোট শব্দের সংখ্যা দাঁড়ালো বারো (পূর্ণদৈর্ঘ্য সহ)

৪। বারোটা শব্দ থেকে নির্দিষ্ট পাঁচটা বাদ দিয়ে দিলে শ্রুতিমধুরতা অনেকখানি বেড়ে যায় (দারুণ ব্যাপার তাই না?)

আসুন আমরা এই বারোটা শব্দের একটা করে নাম দেই। ধরা যাক, এগুলোর নাম

A, A#, B, C, C#, D, D#, E, F, F#, G, G#

ভ্রু কুঁচকাচ্ছেন কিপ্টেমি দেখে? A থেকে শুরু করে L পর্যন্ত নাম রেখে দিলেই হতো, বর্ণের কি অভাব আছে? থাক, একটু নাহয় কার্পণ্য হলোই। কারণ যদি কিছু থেকে থাকে পরে বের করা যাবে।

এই পর্যায়ে আপনি প্রশ্ন করতে পারেন, যে কোন দৈর্ঘ্যের তার নিয়ে যদি যদি পরীক্ষাটি করা হয়, আর সবাই যদি তাদের প্রথম শব্দটার নাম A রাখা শুরু করে, তাইলে কে কোনটা কিভাবে চেনা সম্ভব? উত্তর হচ্ছে, না, চেনা সম্ভব নয়। তাহলে A নামটার একটা সংজ্ঞা ঠিক করা জরুরী, কি বলেন? আমাদের কষ্ট করার দরকার নেই, ওটা ঠিক করাই আছে। যে দৈর্ঘ্যের তার একক বল প্রয়োগে সেকেন্ডে ২২০ বার কাঁপে, ওটার তৈরী করা করা শব্দের নামই A
সুতরাং পদার্থবিজ্ঞানের সংজ্ঞা অনুযায়ী, A এর কম্পাঙ্ক ২২০ হার্জ। বাকিদেরটা নিচে দিয়ে দিলাম কৌতুহলী পাঠকের জন্য।

A ২২০.০০
A# ২৩৩.০৮
B ২৪৬.৯৪
C ২৬১.৬৩
C# ২৭৭.১৮
D ২৯৩.৬৬
D# ৩১১.১৩
E ৩২৯.৬৩
F ৩৪৯.২৩
F# ৩৬৯.৯৯
G ৩৯২.০০
G# ৪১৫.৩০

আপনার পরবর্তী প্রশ্নটাও আমি আন্দাজ করতে পারি। G# যদি তারের মধ্যবিন্দুর ঠিক আগের জায়গাটা হয়, তাহলে মধ্যবিন্দুতে আটকালে যে শব্দটা হয় সেটার নাম কি? এটার উত্তর পেতে হলে পীথাগোরাসের পরীক্ষার দুই নম্বর ফলটি দেখুন। তীক্ষ্ণতা বেশি হলেও শব্দটা শুনতে পূর্ণদৈর্ঘ্যের মতই। কাজেই এটার নামও A। ইনার কম্পাঙ্ক ৪৪০ হার্জ (অনুসিদ্ধান্তঃ তারের দৈর্ঘ্য অর্ধেক হলে কম্পাঙ্ক দ্বিগুণ হয়ে যায়)।

আরেক পরিচয় সংকট তৈরী হলো দেখি। দুই A কে তফাত করব কেমনে? উপায় আছে, একটু আলাদা নাম দিয়ে দিলেই গোল মিটে যায়। আসুন ২২০ হার্জের A কে নাম দিই A৩ আর ৪৪০ কে A৪। এই যুক্তিতে চললে বাকিগুলোর নাম হবে এরকম

১৩.৭৫ – মানুষ শুনতে পায় না, (ত্বরিতাক্য?)
২৭.৫ – A০
৫৫ – A১
১১০ – A২
২২০ – A৩
৪৪০ – A৪
৮৮০ – A৫
১৭৬০ – A৬
৩৫২০ – A৭
৭০৪০ – কানের আগে সম্ভবতঃ: দাঁত শুনতে পায়

দুচ্ছাই বলে কেটে পড়তে যাচ্ছেন হয়তো আপনি বিরক্ত হয়ে। কি আলোচনা করার কথা, আর এই লোক কি শুরু করেছে মুর্শেদ ভাইয়ের মতো। ছুডুমুডু ব্লগাররা বড়দের অনুসরণ করবে এটাই কি স্বাভাবিক না? তবে ধৈজ্জ্য হারাবেন না, তবলার ঠুকঠাকের পর মূল সঙ্গীত শুরু হতে যাচ্ছে অচিরেই।

চলুন একটা ছবিতে আমাদের প্রিয় শব্দগুলোকে দেখে আসা যাক। আরি! গ্র্যান্ড পিয়ানো দেখি।

Notations on a keyborad

কীবোর্ডের ছবিটি অনেকের কাছেই পরিচিত। অনেকগুলো সাদা চাবি, মাঝখানে মাঝখানে দুইটা, তিনটা করে কালো চাবি। তিন কালোর ঠিক শেষের আগে সাদা চাবিটা হচ্ছে A। তাহলে তার পরের কালো চাবিটার নাম নিশ্চয়ই A#? ঠিক ধরেছেন। আসুন সামনে এগোই, আরেকটা ছবিতে সবগুলো চাবির নাম দেখে আসি।

Notations on a keyborad 2

এতক্ষনে নিশ্চয়ই দেখে ফেলেছেন সাদাগুলোর নাম A, B, C, D, E, F, G। আর কালো চাবিগুলোর নাম A#, C#, D#, F#, G# ।

সঙ্গীতের ভাষায়, হ্যাশ চিহ্নটার নাম শার্প। কোন নোটের পরের নোট বোঝাতে এই চিহ্নটি ব্যবহৃত হয়। যেমন, A এর পরের নোট A#। আরেকটি এইরকম চিহ্ন আছে। সেটা দেখতে ইংরেজী ছোট বি এর মত (♭)। এটার নাম ফ্ল্যাট। কোন নোটের আগের নোট বোঝাতে এই চিহ্নটি ব্যবহৃত হয়। যেমন A এর আগের নোট A ফ্ল্যাট। লক্ষ্য করুন, G# আর A ফ্ল্যাট একই নোট।

সঙ্গীতের বর্ণ পরিচয় আপাততঃ শেষ। এবার আসুন একটা ভিন্ন প্রসঙ্গে যাই। ধরুন আপনার সামনে একটা গ্র্যান্ড পিয়ানো রাখা। অনেকগুলো চাবি দেখতে পাচ্ছেন। কীবোর্ডের ঠিক মাঝখানে C চাবিটায় চাপ দিন (প্রথম ছবিতে middle C দ্রষ্টব্য)। এবার কোনরকম বাড়তি বা কমতি চেষ্টা ছাড়া স্বাভাবিক গলায় “সা” বলে আওয়াজ ধরে রাখুন। আপনার গলার আওয়াজ আর পিয়ানোর আওয়াজ একসাথে মিশে একরকম শোনানোর কথা। কি বললেন? গুল? হুম। তাহলে এক, দুই, তিন চাবি ডাইনে বা বাঁয়ে সরিয়ে একই পরীক্ষা করুন। যদি বলেন কোনটার সাথেই আপনার গলা মেলে নি তাহলে আপনি নিশ্চয়ই বিভা বিরহমানের কেউ হন!

ভাই কার সাথে মিডল C এর আওয়াজ মিলে গেছে হাত তোলেন। আপনাকে স্টেজে ডাকা হবে। এইতো পেয়ে গেছি একজনকে। ভাই আপনার নাম? বলতে চাচ্ছেন না? ঠিক আছে। আসুন মাইকের সামনে বসুন। কিছু খেলা খেলব আমরা এখন। D তে চাপ দিয়ে বলুন “রে”। না না, ওরকম স্বাভাবিক গলায় নয়। একটু চড়াতে হবে গলাটা। প্রথমবার পিয়ানো আপনার সাথে মিলিয়েছে, এবার আপনার পালা ওর সাথে মেলানোর। হ্যাঁ, এইবার হয়েছে। এবার E তে চাপ দিয়ে বলুন, “গা”, আরেকটু চড়িয়ে, হ্যাঁ হয়েছে। পরের ধাপগুলো আপনার হোমওয়ার্ক। F চেপে “মা”, G চেপে “পা”, A চেপে “ধা”, B চেপে “নি”, পরের C চেপে “সা” বলবেন। দেখবেন আস্ত সারগাম আপনার আয়ত্তে এসে গেছে।

প্রিয় পাঠক, প্যাটার্ণটা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন। C থেকে শুরু করে সব সাদা চাবি পরপর চেপে গেলে সা, রে, গা, মা, পা, ধা, নি এই সাত সুর পাওয়া গেল। পীথাগোরাস সাহেব এই জিনিসটাই বের করেছিলেন। শ্রুতিমধুর এই সাত সুরের নাম MAJOR SCALE – যেহেতু C থেকে শুরু, এই স্কেলের নাম C মেজর স্কেল।
আসুন বারোটা সুরকে আবার পাশাপাশি লিখি। দেখি মেজর স্কেলে কে বাদ পড়ল

C , C# , D , D# , E , F , F# , G , G# , A , A# , B , C

দেখা যাচ্ছে বোল্ডগুলো টিকে গেছে, ইটালিকগুলো বাকিরা বাদ পড়েছে।
ফাঁকতালে আপনাদের দুইটা নাম বলে রাখি। C# (সি শার্প) কে বলা হবে C এর SEMI TONE আর D কে বলা হবে C এর TONE। কাজেই প্যাটার্ণটাকে এভাবে দেখা যায়

Major-Scales-Structure

অনেকের কাছেই T T S T T T S এটা একটা বহুল পরিচিত আকার। এর মানে হচ্ছে, কোন বাদনযন্ত্রে এই প্যাটার্ণ মেনে বাজালে মেজর স্কেল পাওয়া যাবে। এখন কি আপনি বলতে পারবেন D মেজর স্কেলের নোটগুলো কি হবে? উত্তর হচ্ছে, D, E, F#, G, A, B, C#

নাহ, এইবার আপনাকে আর আটকে রাখা গেল না। গিটারের কর্ড শিখতে এসে পিয়ানোর কচকচানিতে পড়ে গেছেন, ভ্রু কুঁচকাতে কুঁচকাতে মাথা ধরে যাবার জোগাড়। কিন্তু ধৈর্য্যের ফল বড় মধুর। এক্ষুনি বলে দিচ্ছি কর্ড (বাংলায় স্বর) কিভাবে তৈরী হয়। নিয়মটা খুব সহজ। সাধারনভাবে কোন স্কেলের কিছু আলাদা আলাদা নোট একসাথে বাজালে যে শব্দসমষ্টি উৎপন্ন হয় তাকেই স্বর বা কর্ড বলে। ধরুন আপনি C মেজর স্কেলের প্রথম, তৃতীয় আর পঞ্চম নোট (C, E, G) একসাথে বাজালেন। তৈরী হলো অত্যন্ত শ্রুতিমধুর সুর ঝংকার। এইযে কর্ডটি বাজলো, এর নাম C মেজর কর্ড। তিনটি সুরের যৌথ প্রযোজনায় তৈরী বলে ইংরেজীতে এর আরেক নাম ট্রায়াড।

আপনি নিশ্চয়ই লাফিয়ে উঠেছেন। আরে, D মেজর কর্ড বাজানো তো তাহলে পানির মত সহজ। কীবোর্ডে D, F#, A এই তিনটি নোট বাজালেই তো কেল্লাফতে! ঠিক তাই। এমনি করে E মেজর, F মেজর, G মেজর, A মেজর, G# মেজর ইত্যাদি কর্ড বাজানো আপনার কাছে এখন পানিভাত। কিন্তু একি! রেগে যাচ্ছেন কেন? কি বললেন? গিটারে কেমন করে বাজাবেন সেটা শেখাই নি? ঠিক আছে, এই যে দেখুন গিটারে সাদা নোটগুলোর অবস্থান।

Basic_Notes_on_The_Guitar_Fret-Board

ছয় তারে C, E, G নোটগুলো খুঁজে বের করুন। এরপর সেগুলো চেপে ধরে সব তারে একটা ঝাঁকি দিন। হয়ে গেল C মেজর কর্ড, এত রেগে যাবার কি আছে? কি বললেন? পাঁচ আঙ্গুল দিয়ে ছয় তার কেমন করে ধরবেন? সেটা আপনার সমস্যা। তবে নিচে দেখানো ছবির কালো বিন্দুগুলোতে আঙ্গুল রাখলে কাজ হলেও হতে পারে।

CMaj-Free-Guitar-Chord-Chart

দেখলেন তো, তিনটি আঙ্গুলেই কাজ চলে গেল। অন্যান্য মেজর কর্ডগুলোও গুগল ইমেজে সার্চ দিয়ে দেখে নিতে পারেন।

মেজর স্কেল তো হলো। মাইনর স্কেল কি? কি জিনিস সেটা ব্যাখ্যা করা আমার জন্য কঠিন কিন্তু কেমন করে তৈরী হয় সেটা আমি জানি। বারোটা সুর থেকে এই T S T T S T T প্যাটার্ণ ধরে সাতটা নোট বের করুন দেখি। A থেকে শুরু করতে পারেন। দেখুন তো আমার সাথে মিলেছে কিনা? আমি পেয়েছিলাম এটাঃ

A, B, C, D, E, F, G, A

হুম, পেয়ে গেছেন A মাইনর স্কেল। এইবার প্রথম, তৃতীয় আর পঞ্চম নোটগুলোকে (A, C, E) একসাথে বাজান। হয়ে গেল A মাইনর কর্ড। সহজ, তাই না? C শার্প মাইনর কর্ড কেমন করে তৈরী হয় বলতে পারবেন?

মেজর মাইনর ছাড়াও আমরা আরও অনেক ধরণের কর্ডের নাম শুনি। যেমন ধরুন, মেজর সেভেন, সেভেন, মাইনর সিক্স, সাসপেণ্ডেড, অগমেন্টেড, ডিমিনিশড ইত্যাদি। এগুলো কি? কেমন করে তৈরী হয়? কি কাজে লাগে?

নিচে গঠনপ্রণালীগুলো দেখুন, ছবির জন্য গুগল ইমেজে সার্চ মারুন। কি কাজে লাগে সেটা এই পোস্টের আলোচনার বাইরে (আসলে আমার বিস্তারিত জানা নাই)

মেজর: মেজর স্কেলের ১ম, ৩য়, ৫ম নোট (উদাঃ C => C, E, G)

মেজর সেভেন: মেজর স্কেলের ১ম, ৩য়, ৫ম, ৭ম নোট (উদাঃ C M7 => C, E, G, B)

সেভেন: মেজর স্কেলের ১ম, ৩য়, ৫ম নোট + ৭ম নোটের ফ্ল্যাট (উদাঃ C 7 => C, E, G, A#)

অগমেন্টেড: মেজর স্কেলের ১ম, ৩য় নোট + ৫ম নোটের শার্প (উদাঃ C+ => C, E, G#)

সাসপেণ্ডেড 4: মেজর স্কেলের ১ম, 8র্থ, ৫ম নোট (উদাঃ C SUS4 => C, F, G)

সাসপেণ্ডেড 2: মেজর স্কেলের ১ম, ২য়, ৫ম নোট (উদাঃ C SUS2 => C, D, G)

মেজর সিক্স: মেজর স্কেলের ১ম, ৩য়, ৫ম, ৬ষ্ঠ নোট (উদাঃ C M6 => C, E, G, A)

নাইন: মেজর স্কেলের ১ম, ৩য়, ৫ম নোট + ৭ম নোটের ফ্ল্যাট + ৯ম নোট (উদাঃ C 9 => C, E, G, A#, D)

অ্যাড নাইন: মেজর স্কেলের ১ম, ৩য়, ৫ম নোট + ৯ম নোট (উদাঃ C add 9 => C, E, G, D)

ইলেভেন: মেজর স্কেলের ১ম, ৩য়, ৫ম নোট + ৭ম নোটের ফ্ল্যাট + ৯ম নোট + ১১তম নোট (উদাঃ C 11 => C, E, G, A#, D, F)

ডিমিনিশড: মেজর স্কেলের ১ম নোট, ৩য় নোটের ফ্ল্যাট, ৫ম নোটের ফ্ল্যাট (উদাঃ C dim => C, D#, F#)

ডিমিনিশড সেভেন: মেজর স্কেলের ১ম নোট, ৩য় নোটের ফ্ল্যাট, ৫ম নোটের ফ্ল্যাট, ৬ষ্ঠ নোট (উদাঃ C dim7 => C, D#, F#, A)

মাইনর: মাইনর স্কেলের ১ম, ৩য়, ৫ম নোট (উদাঃ C m => C, D#, G)

মাইনর সেভেন: মাইনর স্কেলের ১ম, ৩য়, ৫ম, ৭ম নোট (উদাঃ C m7 => C, D#, G, A#)

মাইনর মেজর সেভেন: মাইনর স্কেলের ১ম, ৩য়, ৫ম, ৭ম নোটের শার্প (উদাঃ C mM7 => C, D#, G, B)

মাইনর সিক্স: মাইনর স্কেলের ১ম, ৩য়, ৫ম, ৬ষ্ঠ নোট (উদাঃ C m6 => C, D#, G, A)

অনেক আলগা জ্ঞান ঝাড়লাম আপনাকে নবীশ পেয়ে। এইবার মানে মানে বিদায় হই।

ছবিসূত্রঃ গুগল ইমেজ সার্চের মাধ্যমে পাওয়া বিবিধ ওয়েবসাইট। সময় স্বল্পতার কারণে খুঁজে খুঁজে সবগুলোর ঠিকানা দেয়া সম্ভব হলো না।


মন্তব্য

বাওয়ানী এর ছবি

মন খারাপ চিন্তিত

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

পেনি ফর ইউর থটস চিন্তিত

সত্যপীর এর ছবি

ফাটাফাটি হাততালি

যদি বলেন কোনটার সাথেই আপনার গলা মেলে নি তাহলে আপনি নিশ্চয়ই বিভা বিরহমানের কেউ হন!

হো হো হো খাইছে

দারুণ পোস্ট, পাঁচ দুগুণে দশতারা।

..................................................................
#Banshibir.

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

তারা পাইলে দেখি ভালুই লাগে হাসি

pritorius এর ছবি

মধু! মধু!

-মেফিস্টো

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

চাল্লু

অতিথি লেখক এর ছবি

আইডিয়া কম তাই হয়তো মাথার উপর দিয়া গেল অ্যাঁ । তবে সময় করে বুঝে নেয়ার চেষ্টা করছি ইয়াসির ভাই। ভালো উদ্যোগ বলতেই হয়।

অমি_বন্যা

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ব্যাপারটা বোঝার খুব সহজ উপায় আছে। গুগলে অনলাইন কীবোর্ড লিখে সার্চ দেন। প্রচুর অ্যাপ্লিকেশন পাবেন। মাউস দিয়ে ক্লিক করে করে সেগুলো বাজান। একেবারে পানিভাত মনে হবে। ল্যাপটপের কীবোর্ডের সাথে কিছু কী অ্যালাইন করে নিলে আরও ভালো। তিন/চার/পাঁচটা কি চেপে কর্ডের আওয়াজ শুনতে পাবেন। আর যদি বাজার থেকে একটা সেকেন্ড হ্যান্ড কীবোর্ড কিনে নিতে পারেন তাহলে তো বাজিমাৎ। আমি দক্ষিন আফ্রিকায় আমার বাসার গার্ডের পুরনো কীবোর্ড সাড়ে চার হাজার টাকায় কিনে নিয়েছিলাম দেঁতো হাসি

ব্রুনো  এর ছবি

বিভা বিরহমানের আত্মীয় বললেন? চিন্তিত

ভালো লাগলো পোস্ট। আমার দৌড় বন্ধুর গিটারে বাংলা সিনেমার অপারেশন থিয়েটারের বাইরের দৃশ্যের আবহ সঙ্গীত বাজানো, মানে সবচেয়ে মোটা তারটারে দুই সেকেন্ড পরপর যথাসম্ভব উপরে তুলে ছেড়ে দেওয়া :D। তারপরও কেনো ভালো লাগলো বোঝার চেষ্টা করতেছি।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

বিভা বিরহমানের আত্মীয় হওয়া সহজ কথা না। আপনাকে অভিনন্দন কসরত করে এইরকম বেসুরো গলা তৈরী করার জন্য অ্যাঁ

আপনার আবহ সঙ্গীত আরেকটা যায়গায় বাজানো যাবে, শ্মশ্মান ঘাটে রাত্রি দ্বিপ্রহর, দুই একটা পেঁচা ডাকছে, মাঝে মাঝে শোনা যাচ্ছে শেয়ালের হুক্কা হুয়া। আচমকা সব থেমে গেল। এক্ষুনি আসর বসাবে পিশাচ আর ডাকিনীরা। সময় হয়ে এলো প্রায়, ঢং ঢং ঢং

পদব্রজী এর ছবি

খুব কাজে লাগার মত পোষ্ট, যারা একাই একশ, শিখার জন্য কাওকে লাগে না গোছের ভাব নিয়ে গিটার কোলে নিয়ে একলব্য হইতে চায় তাদের খুব উপকার হল

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

একলব্য হইয়া লাভ নাই, গিটার বাজানো শিখতে হইলে গুরু ধরতে হবে। সুখের বিষয় হইল গুরু সামনে না থাকলেও চলে (ইউটিউব বা সদৃশ ভিডিও হোস্টিং সাইট) হাসি

স্যাম এর ছবি

হাততালি

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

৭০৪০ – কানের আগে সম্ভবতঃ: দাঁত শুনতে পায়

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

চমৎকার পোস্ট! গ্রেইট গ্রেইট গাইড। কয়েকটা ত্রুটির কথা বলি। ত্রুটি গুলো শুধরে নিলে লেখার গ্রহণযোগ্যতা অনেক বেড়ে যাবে।

১) সেকশন করে দিন। যেমন প্রথম অংশটা "গানের গণিত", দ্বিতীয় অংশ "কি গুলো কি বোর্ডের সাথে" এভাবে সেকশন করে দিলে পাঠক পিছলে গেলেও যায়গা মত আটক যাবে।

২) প্রচুর ছবি দিয়েছেন এটা একটা ভালো দিক। আরো কিছু ছবি দেয়া যেতে পারতো। যেমন সার্কেল অফ ফিফথসই বাদ পড়ে গেছে।

৩) ভিডিও দেয়া চেষ্টা করতে পারেন। বাংলায় এরকম ভিডিও খুব উপভোগ্য হবে এবং খুব সাহায্য করবে বিগিনারদের। আমি কিছু ভিডিও করে দিবো ভাবছি।

৪) বর্ণনাগুলো মজার হয়েছে। একটু ধৈর্য্য নিয়ে পড়লে পাঠক উপভোগ করবেন।

সব মিলিয়ে অসাম হয়েছে! গুরু গুরু লেগে থাকুন।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য হাসি

১। পয়েন্ট করে না লেখার জন্য সবসময় পরীক্ষায় নম্বর কম পেতাম। এখানেও সেটা রয়ে গেছে। পরবর্তীতে মাথায় রাখবো

২। সার্কেল অফ ফিফথস ইচ্ছা করে দেই নি। স্টাফ নোটেশনের টুকিটাকি নামে একটা পোস্ট দেব ভাবছিলাম। সেখানে ঢুকিয়ে দেয়ার ইচ্ছা ছিল

৩। একবার দুর্ভাগ্যক্রমে নিজের গলা রেকর্ড করেছিলাম মোবাইল ফোনে। সেই স্মৃতি এতই ভয়ংকর, নিজের গলা অন্যকে শোনানোর আগে আমি দশ বার ভাবি। ভিডিও ব্লগিং তাই সুকন্ঠীদের জন্যই তোলা থাক। আপনার ভিডিওর অপেক্ষায় পপ্পন পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

৪। দেঁতো হাসি

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

২) যদিও আমার দেয়া সার্কেল অফ ফিফথসের ছবিটায় স্ট্যাফ নোটেশন উপস্থিত, সার্কেল অফ ফিফথস বুঝতে কিন্তু স্ট্যাফ বোঝার দরকার নাই। বাই দ্যা ওয়ে, আমি অনেক আগে একটা স্ট্যাফ নোটেশনের উপর পোস্ট দিয়েছিলাম।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

খাইছে। আপনার পুরনো কিছু লেখা উল্টে পাল্টে দেখেছি একসময় কিন্তু এটা চোখে পড়ে নি, আসলে লেখার সংখ্যা এত আপনার!

পরিশ্রমটা বাঁচিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ গুরু গুরু

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ম্যাথম‌্যাটিকালি ওরিয়েন্টেড মিউজিশিয়ানদের জন্য:

ইয়াসির যেমন বলেছে ২২০ হার্জের একটি নোটের দ্বিগুন হলে একই নোটের উঁচু স্কেলে চলে যায়। আর ২২০ হার্জ এবং ৪৪০ হার্জের মধ্যে ১২টা জায়গায় শ্রুতিমধুর শব্দ পাওয়া যায়। এই ১২ টা জায়গা আসলে একটা জিওম্যট্রিক সিরিজ তৈরী করে। সিরিজের একটা সংখ্যা আরেকটার সাথে (৪৪০/২২০)^১/১২ = ২^(১/১২) = ১.০৫৯৫ গুনে বৃদ্ধি পায়। তাই ২২০ এর পরের সংখ্যা ২২০*১.০৫৯৫ = ২৩৩.০৮, ইত্যাদি।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

একবার নোটগুলো সিতে বাজানোর একটা প্রোগ্রাম লিখেছিলাম। অনেকটা এরকম ছিলো (নোট বাজানোর ফাংশানটার নাম মনে নেই)।

for(int i =0; i<=12; i++)
{
int newnote = 220 * pow(1.0595, i);
sound(newnote);
}

আমি আসলেই একটা নার্ড দেখা যাইতেছে।

শামীম এর ছবি

কস্কি মমিন!

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

সুপার হার্ড নার্ড দেঁতো হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

অসাম। এই সিরিজটা যেন না থামে। আর থিওরি জ্ঞানের মোটামুটি একটা গতি করে প্র্যাক্টিক্যালি কীভাবে শুরু করা যায় সেই ব্যাপারে একটা আইডিয়া চাই। পাঁচতারা।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

প্র্যাক্টিকালি শুরু করা খুব সহজ। প্রথমে একটা গিটার কিনে ফেলতে হবে দেঁতো হাসি

পরবর্তী ধাপ, গুরু ধরতে হবে। বাঙালি গুরুরা বেশি ভাববাজ হয় বলে বিদিশি গুরু ধরুন। আপনার ওখানে তো ইউটিউব খোলা, তাইলে আর চিন্তা কি?

শামীম এর ছবি

লেখা ভাল লাগলো। হাততালি

পুরাতন স্মৃতি মনে করায়ে দিলেন। একাধিকবার টিউশনিতে পদার্থবিদ্যার শব্দের অনুরনন পড়ানোর সময়ে ছাত্রের সামনে গিটার নিয়ে বসতাম। গিটারটা টেবিলে শুইয়ে রেখে (হাওয়াইন গিটারের স্টাইলে) দুইটা পাশাপাশি কর্ডের একটাতে (say #1 E) পাশের কর্ডের ফ্রী টোনটা (B) বাজাতাম আর পাশের কর্ডে ছোট্ট একটা কাগজ ভাঁজ করে দড়িতে লুঙ্গি শুকাতে নেড়ে দেয়ার মত রেখে দিতাম। ঐ তার না বাজলেও পাশের তার একই ফ্রিকোয়েন্সীতে বাজলে অনুরননের (রেজোনেন্সের) সময়ে কাগজের টুকরা লাফ দিত।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

দারুণ দারুণ।

ছাত্রের মা সব উচ্ছন্নে গেল বলে ঝাঁঝিয়ে ওঠে নি তো?

মেঘা এর ছবি

একটা গীটার কিনেই ফেলতে হবে দেখছি‍! কী-বোর্ড জানা আছে। ছোটবেলা থেকে গান শেখার কারণে। মনে হয় গীটার ধরলে কর্ড খুঁজে বাজাতে পারবো। পোষ্টে ৫ তারা। হাততালি

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ঢাকায় আপনি কই থাকেন? ইস্কাটনে লিটন অধিকারী রিন্টু গিটারের ক্লাস নেন (মানে নিতেন, এখন সেটা আছে কিনা খোঁজ নিতে হবে আপনার)। ভর্তি হয়ে যান দ্রুত। দেশে নারী গিটারিস্টের বড়ই অভাব

মেঘা এর ছবি

ইস্কাটনের কোথায় খুঁজে পাওয়া যাবে তাকে? আমি ভাবছিলাম বাফায় এবার গিটারের জন্য ভর্তি হবো কিনা! ধারণা আছে নাকি ভাইয়া কেমন শেখায়? আমার আবার খুব তাড়াতাড়ি সব শিখতে না পারলে আগ্রহ চলে যায় ইয়ে, মানে...

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ইস্কাটনে যে চার্চটা আছে সেটায় সপ্তায় দুইদিন শেখাতেন, আমি দুইদিন গিয়েছিলাম। এখনো সেটাই তাঁর আস্তানা কিনা, জানা নেই। আমার ধারণা, ফেবুতে একটা বিজ্ঞাপণ দিলে খুব সহজেই খুঁজে পাবেন বর্তমান অবস্থা। কোন বিস্তারিত কারন ছাড়াই, বাফা সম্বন্ধে আমার ধারণা খুব উচ্চ নয়।

খুব তাড়াতাড়ি স্প্যানিশ গিটার শেখা একটা ভ্রান্ত ধারমা। আমার পরিচিত অনেকেই ছয় মাসে মাথায় হাল ছেড়ে পালিয়েছেন। সাবধানে থাকুন দেঁতো হাসি

বন্দনা এর ছবি

দারুণ একটা পোষ্ট, আমার তো এম্নিতে মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে বেহালা নিয়ে, কিন্তু সাথে অন্যগুলা এখন শিখতে ইচ্ছে করছে, সবগুলার কর্ডগুলা সিমিলার। চলুক

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

বেহালা গিটারের চেয়ে অনেক কঠিন বাদ্য যন্ত্র। দুটো একসাথে চালাতে গেলে আমছালা হারাবার সম্ভাবনা উড়ীয়ে দেয়া যায় না। কিন্তু আপনার হাতে যদি যথেষ্ট সময় থাকে, তাইলে ইয়ালী বলে ঝাঁপিয়ে পড়েন

CannonCarnegy এর ছবি

অনেক ধন‌্যবাদ ইয়াসির ভাই এমন একটা কাজের পোষ্টের জন‌্য। তারা দাগাইতে পারলে লিচ্চয়ই দাগাইতাম।
আপাতত মুখেই পাঁচতারা দিলাম।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

বহুব্রীহির কুদ্দুস সাহেবের কথা মনে আছে? উনি বলেছিলেন, সার্টিফিকেট তো আর কেউ দেখতে আসবে না। মানুষের মুখেই জয়, মানুষের মুখেই ক্ষয়। মুখের পাঁচতারাই চলুক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

কুমার এর ছবি

খাইছে যোগ বিয়োগ শেখাবেন কইয়া লিজেণ্ড্রে পলিনোমিয়াল শিখায় দিলেন।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

কি এমন টার্ম বললেন মাথার তিন হাত ওপর দিয়ে চলে গেল খাইছে

কুমার এর ছবি

বুঝেন তাইলে অবস্থা। হাসি

শাব্দিক এর ছবি

দারুন পোস্ট।

হাওয়াইন গীটার সামান্য জানা আছে। আপনি চালায় গেলে এটাও হয়ে যাইতে পারে। হাসি

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

আমার পোস্ট থেকে গিটার বাজানো শিখে ফেলা ব্যাঙের সর্দির মতই অসম্ভব ঘটনা। আমি সোজা সরল কথায় তারের পেছনের কাহিনী বলছিলাম, এর বেশি কিছু না। গুরু ধরে অথবা ইউটিউব দেখে আপনি যদি কখনো স্প্যানিশ গিটার শিখে ফেলতে শুরু করেন, হাওয়াইন গিটারের বাজানোর দক্ষতা কিছুটা হলেও কাজে আসবে। বিশেষতঃ গানের নোট খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে। কি আছে দুনিয়ায়, একটা গিটার কিনে শুরু করে দেন

অতিথি লেখক এর ছবি

শুরুতেই ধন্যবাদ, অসাধারণ জরুরী একটা পোস্টের জন্য। আপনি শুধু গিটার নিয়েই লেখেননি বরং সারা বিশ্বের সঙ্গীতের অবলম্বন ১২টি সুর নিয়েই লিখেছেন। এই বেসিক জিনিসগুলো অনেকে ১৫-২০ বছর ধরে গান শিখেও শেখে না , ভাবতে কষ্ট লাগে। ফিজিক্সকে বাদ দিয়ে সঙ্গীত অস্তিত্বহীন, আবার ফিজিক্সসর্বস্ব সঙ্গীত নীরস। আপনি যেহেতু গ্র্যান্ড পিয়ানোর পাঁচ অক্টেভের ছবিটা দিয়েছেন সেহেতু আরেকটা মজার জিনিস বলছি। প্রচলিত ধারনায় আমাদের গায়কদের গলা ওয়েস্টার্ন ক্ল্যাসিকেলের স্টাইলে বেস,ব্যারিটোন এবং টেনর -এই তিন শ্রেণীতে ভাগ করা হয়। বহু প্রখ্যাত মিউজিকোলজিস্ট এভাবেই ফৈয়াজ খান সাহেব ও দেবব্রত বিশ্বাসকে বেস, হেমন্তকে ব্যারিটোন এবং রবীন্দ্রনাথ,মান্না দে প্রমুখকে টেনর গায়ক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন কণ্ঠের পিচ অনুযায়ী। এটা আসলে সঠিক নয়। চলুন দেখা যাক কেন?
বেস গায়কের রেঞ্জ- E2-E4 বা তার বেশি
ব্যারিটোন গায়কের রেঞ্জ- F2-F4 বা তার বেশি
টেনর গায়কের রেঞ্জ -C3-C5 বা তার বেশি

লক্ষ্য করুন প্রথমত, বাংলা গানে সাধারণত গলায় F3 এর নিচের নোট দরকার হয় না এবং ওপরে সর্বোচ্চ G5 বা A5 পর্যন্ত খোলা আওয়াজে শুনেছি। অর্থাৎ গঠনগত ভাবেই সব বাংলা গান তথা পুরো ভারতীয় সঙ্গীতই টেনর পিচে বাঁধা। কাজেই শুধুমাত্র গলার ওজনের ভিত্তিতে হেমন্তবাবু বা মান্নাবাবুকে ব্যারিটোন বা টেনর বলা যায় না। কারণ প্রথমত, কণ্ঠের শ্রেণীবিভাগ প্রথমত রেঞ্জের ওপর নির্ভর করে, টিম্বার এক্ষেত্রে দ্বিতীয় বিষয়। তবে যেহেতু মোটা গলায় নিচে গাওয়া সহজ আর সরু গলায় ওপরে গাওয়া সহজ তাই সাধারণভাবে কণ্ঠের বর্ণনায় এই শব্দগুলো চালু হয়েছে। অবশ্য মান্না দের গলা যথেষ্টই ভারি, এখন তো প্রায় অমিতাভের মতোই!

তিন অক্টেভের হারমোনিয়ম প্রায় সবসময়ই C3 পিচ থেকে শুরু হয় এবং C6এ শেষ হয় । নুসরাত ফতে আলী এবং তাঁর সুযোগ ভাইপো রাহাত ফতে আলী খান অবশ্য কাওয়ালিতে আকছার F6 পর্যন্ত গেয়েছেন!

গিটার আমার সবসময়ের প্রিয়। কিন্তু মাথায় এমনিতেই এত পোকা আছে যে, গিটার বাজানোর শখটাকে জোর করে দমন করেছি বছর পাঁচেক আগে।

অসাধারণ এবং দরকারী একটা লেখা। এর আলোকে ভবিষ্যতে ভোকালিজম নিয়ে লেখার ইচ্ছে রইল।

নির্ঝর অলয়

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

গিটার বাজানো যখন শুরু করেছি তখন থেকেই শুভাকাঙ্ক্ষীরা আশা করতো যে গিটারের সাথে লেচ্চয় গানও গাও তুমি। সেই পিয়ার প্রেসারে পড়ে গিটার বাজানোর সাথে গানের নামে অল্প বিস্তর হাউকাউ করি আমি। ভোকাল বিষয়ে তাই এক্কেবারে কাঁচা। এ বিষয়ে আপনার পোস্ট পেলে খুব ভালো লাগবে। আমি আশায় রইলাম।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

বিস্তারিত মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ব্যারিটোন আর টেনর একদম নতুন শব্দ আমার কাছে। বেস আর ব্যারিটোন গায়কের স্টার্টিং নোটে মাত্র এক সেমিটোন তফাৎ? ইন্টারেস্টিং

রাহাত ফতেহ আলি খান মোটামুটি অমানুষ শ্রেণীর ভালো গায়ক। আমার ধারণা শুধু চিল্লা ফাল্লা না করে সুরেলা গলায় ৬ষ্ঠ অক্টেভে গানের প্রতিযোগিতা হলে এই লোক সেটার ট্রফি নিয়ে আসবে।

হাতে পর্যাপ্ত সময় না থাকলে গিটার একটা অভিশাপ।

ভোকাল সম্পর্কিত পোস্টের আশায় পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

অতিথি লেখক এর ছবি

রাহাত ফতেহ আলি খান মোটামুটি অমানুষ শ্রেণীর ভালো গায়ক। আমার ধারণা শুধু চিল্লা ফাল্লা না করে সুরেলা গলায় ৬ষ্ঠ অক্টেভে গানের প্রতিযোগিতা হলে এই লোক সেটার ট্রফি নিয়ে আসবে।

চলুক
নির্ঝর অলয়

তানিম এহসান এর ছবি

পরের পোস্টের আশায়, এটা বুকমার্ক করা হলো। চলুক

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

পরের পোস্ট দেবার ইচ্ছে কর্ড রিলেশনশিপ এর অ আ ক খ নিয়ে। কদ্দুর কি দিতে পারব জানি না এখনও। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে সময় করে এইটি পড়ার জন্য

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
নির্ঝর অলয়

কিষান এর ছবি

হারমোনির উপর কিছু লিখেন। বিশেষ করে মেজর কিংবা মাইনর স্কেলের হারমোনাইজেশন নিয়ে। এ বিষয়ে , কী আর বলবো গিটারের বিষয়েই বাংলায় মাশমশলা বড্ড অপ্রতুল মন খারাপ

পোস্টের জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

হারমোনি সম্বন্ধে আমি যতটুকু জানি তা লেখার মত কিছু নয়। উইকি ঘেঁটে দেখলাম অনেক কিছু লেখা, যার সারমর্ম হলো, হারমোনি মানে অনেক সুরের সুষম সংমিশ্রণ। সেই হিসাবে একটা সাধারন কর্ডও তো হারমোনি।

আমার গিটার গুরু বন্ধু পিয়াল শিখিয়েছিলো, যে কোন স্কেলের সা এর সাথে গা বাজালেই হারমোনাইজেশন হবে (একই ভাবে, রে এর সাথে মা, গা এর সাথে পা ইত্যাদি)। হারমোনিটা থার্ড নোট এর সাথে না হয়ে ফিফথ নোটের সাথেও হতে পারে (সা এর সাথে পা, রে এর সাথে ধা ইত্যাদি)।

আপনার কাছে যথেষ্ট রিসোর্স থাকলে, লিখে ফেলুন না একটা পোস্ট। সবাই মিলে বেশ ভালো কিছু মাল মশলা তুলে দেয়া যাবে পরবর্তী প্রজন্মের শিখিয়েদের কাছে।

হিমু এর ছবি

৯৮ ব্যাচের ইইইর পিয়াল?

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

একদম ঠিক। আপনার সাথে পরিচয় আছে নাকি?

হিমু এর ছবি

হ্যাঁ, তবে যোগাযোগ নাই অনেকদিন ধরে।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

বেশ খেয়ালি লোক পিয়াল। কিছুদিন চাকরী করে মাঝখানে নিজের টেলিকম সলিউশন ব্যবসা দাঁড় করাতে গিয়ে হোঁচট খেয়েছে বিস্তর। একসময়ের তুখোড় গিটারিস্ট এখন নতুন চাকরী নিয়ে ব্যস্ত। সম্ভবতঃ যন্ত্রগুলোতে হাত দেবার সময়ও পায় না।

হিমু এর ছবি

বছর তিনেক আগে গুতা দিয়েছিলাম ওকে একটা গানের কাজে, তখন বললো ওর পুরো মিউজিক সিস্টেম নাকি বিক্রি করে দিয়েছে। পাগলা এখন আছে কোথায়, দেশে না বিদেশে?

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

পুরো সময় সে দেশেই ছিলো। কোন একটা ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে কোম্পানীতে জয়েন করেছে সম্প্রতি।

কড়িকাঠুরে এর ছবি

খাইছে একবছরের জিনিস একদিনে- খাইছে

দারুণ হয়েছে- হাততালি - আসুক আরও...

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

এক বছরের কি বলছেন, একদম কিছু না জেনেও কেউ যদি সিরিয়াসলি শুরু করে, এই জিনিস মাথায় ঢুকতে এক সপ্তার বেশি লাগবে না।

তবে, যত রকম কর্ডের কথা বলা হয়েছে, বারোটা স্কেলের ততগুলো কর্ড (১২ x ১৬) আয়ত্তে আনতে বছর গড়িয়ে যাওয়া অসম্ভব নয় হাসি

দীপ্ত এর ছবি

অনেক সময় নিয়ে পড়লাম। সুর শুধু শুনি, কিছুই বাজাতে পারিনা। তাও অনেক কিছুই পরিষ্কার হল, এযে পুরো বিজ্ঞান। পরেরটাও পড়ব, আরেকদিন সময় নিয়ে।
পোস্টে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মরুদ্যান এর ছবি

জটিল পোস্ট। আর হ্যাঁ আমি বাফার ছাত্র ছিলাম, অবস্থা সুবিধার না।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।