অণুগল্প-১৪। বাউল।

জাহিদ হোসেন এর ছবি
লিখেছেন জাহিদ হোসেন (তারিখ: সোম, ২৭/০৭/২০০৯ - ৩:৫২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এগারোই পৌষ শনিবার ঠিক সন্ধ্যেবেলা আমার দাদীজান মোসাম্মৎ নূরজাহান বেগম ইন্তেকাল করেন। যদিও আমি তখন ছোট, কিন্তু আমার সময়টি স্পষ্ট মনে আছে, কেননা তখন গ্রামের মসজিদের মাইক্রোফোনে মাগরিবের আজান দিচ্ছিল মাদ্রাসার সবচেয়ে কৃতি ছাত্র আমাদের নসু ভাই।

‘হাইয়ালাস সালাহ, হাইয়ালাস সালাহ!’

আমাকে একবাটি মুড়ি দিয়ে বসিয়ে দাদীজান তখন অজু করার জন্য কুয়োতলায় যাচ্ছিলেন। হঠাৎ করে তিনি উঠোনে পড়ে গেলেন এবং তা দেখে আমি মজা পেয়ে হা হা করে হেসে উঠেছিলাম। তখন বুঝিনি যে নসু ভাইয়ের বয়োসন্ধির ভাঙ্গা এবং কর্কশ গলার আজান শুনতে শুনতে আমার অপার স্নেহময়ী দাদীজান মারা যাচ্ছেন।

পরদিন বাদজোহর দাদীকে কবর দেওয়া হয়। এবং ওইদিনই বিকেল বেলা আমাদের বাড়ীতে বসলো আত্মীয়স্বজনদের বিশাল মিটিং। যদিও সবাই তখন শোকাহত, কিন্তু সবার মনেই তখন একটিই চিন্তা। এখন পাগলটাকে এই খবর কে দেবে?

সেই পাগলের মেলা নাম। কেউ ডাকে পাগলা বাবুল, কেউ বলে বাউল বাবুল, আবার কারো কাছে সে শুধুই পাগল। আমার দাদীজান তাকে ডাকতেন সুজন বলে। আর আমি তাকে ডাকতাম বাউল কাকা।

আমার জন্মের পর থেকেই দেখে আসছি প্রতি বছর পৌষ মাসে শেষ সপ্তাহে একজন দীর্ঘকায় লম্বাচুলের বাবরিদোলানো তরুন অকস্মাৎ আমাদের বাড়ীর দরজায় এসে দাঁড়াবে। তারপর সে তার ভরাট গলায় ডাক দেবে,‘মা জননী, আপনার সন্তান ঘরে ফিরছে।’
দাদী যেখানেই থাকতেন না কেন, সেখান থেকেই এই ডাক শুনে ছুটে আসতেন। তারপর মিনিট পনেরো ধরে তরুনটিকে নানাভাবে বকাঝকা করবেন। যার বেশীর ভাগই ছিল কেন এবারে তাকে এতো শুকনো লাগছে দেখতে। নিশ্চয়ই সে খাওয়াদাওয়া ঠিকভাবে করছে না, নিশ্চয়ই সে তার স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখছেনা।

তরুনটি এই সময়ে কোন কথা বলতো না, শুধু চুপ করে হাসিমুখে দাদীর কথা শুনতো। তারপর মাথা নীচু করে বলতো,‘বড্ড খিদা লাগছে, মা জননী।’

এই কথা শুনে দাদী কেঁদে ফেলতেন। কাঁদতে কাঁদতে বলতেন,‘তোর মতো হাড়জ্বালানো ছেলের না খেয়ে মরাই উচিত।’

দাদীর কাছে গল্প শুনেছি যে খুব ছেলেবেলায় বাউল কাকা ঘর থেকে পালিয়ে গিয়ে বাউলের দলে গিয়ে ভিড়েছিলেন। আর কোনদিন তার ঘরে ফেরা হয়নি। বাউলের আবার ঘর কি? শুধু কোন এক অজ্ঞাত কারণে একদিন দাদীকে মা জননী বলে ডেকেছিলেন, এবং সেই দিন থেকে তিনি দাদীর চোখের মণি হয়ে গিয়েছিলেন।

প্রতি বছর পৌষের শেষ সপ্তাহে আমাদের বাড়ীতে তার আগমন ঘটতো। চার-পাঁচ দিন থাকতেন প্রতিবার। এই চার-পাঁচ দিন দাদী তাকে কত কিছু খাওয়াতেন। এই সময়টুকু বাউল কাকাও আর বাউল থাকতেন না, তিনি তখন আমাদের কাকা হয়ে যেতেন। হয় আমাকে ঘাড়ে করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, না হয় গাছে উঠে নারকেল পাড়ছেন, নয়তো দাদীর পাশে বসে মটরশুঁটি বাছছেন।

ছেলেবেলায় আমার খালি ইচ্ছে হোত বড় হয়ে কাকার মতো বাউল হবো। হাতে থাকবে একতারা, মাথার বাবরি চুল দুলিয়ে আমি কাকার মতো পথে পথে গান গেয়ে বেড়াবো।

কাকা আমার সে ইচ্ছের কথা শুনে একগাল হেসেছিলেন। ‘তোরে আমি বাউলামী শিখিয়ে দেবো। তখন দেখিস তোর আর ঘরে মন টিকবে না। পুরো দুনিয়াটাই তখন তোর সংসার হবে।’
‘তোমার ঘরে ফিরতে ইচ্ছে করেনা কাকা।’
‘বাউলদের ঘর থাকতে নেইরে। বাহিরই আমাদের ঘর।’

দাদী মারা যাবার পর থেকে বাউল কাকা আর কোনদিন আমাদের বাড়ীতে আসেন নি। হয়তো বা কারো মুখে খবর শুনেছিলেন এই জগৎ সংসারে যেখানে তার একটি ঘর ছিল, সে ঘরে আর তার জন্যে কেউ পথ চেয়ে বসে থাকবেনা।

এরপর অনেক দিন কেটে গেছে। আমার পড়াশুনা শেষ। একটা মাঝারী আকারের চাকরি করি। এখন থিতু হয়ে বসার চিন্তা করে সবাই। কিন্তু আমার ভিতরে মাঝে মাঝেই গেরুয়া কাপড় পরা কে যেন ডাক দেয়। চৈত্রের নির্মেঘ আকাশে যখন চাঁদ ওঠে, তখন আমার রক্তে অসহ্য সুখে একটা নেকড়ে বাঘ দাপাদাপি করে।

"চলো- বাইরে যাই। জগৎ সংসার তোমাকে ডাকছে।"

এমনই এক সময় বাউল কাকার সাথে আমার হঠাৎ দেখা হয়ে যায়।

উত্তরার দিকে গিয়েছিলাম একজনের সাথে দেখা করতে। ফেরার পথে রিকশা না পেয়ে হাঁটছি। রাস্তার দুপাশে নতুন নতুন বাড়ী তৈরীর কাজ চলছে। হঠাৎ আমার চোখে পড়লো মাথায় গামছা বেঁধে যে বুড়োসুড়ো মানুষটি ইঁটের খোয়া ভাংছে, সে আমার অতি পরিচিত বাউল কাকা, পাগলা বাবুল।
আস্তে আস্তে তার কাছে গিয়ে দাঁড়াই। পরিশ্রমে ব্যস্ত মানুষটি মাথা তোলেন না।
আমি ডাকি,‘আপনি বাউল কাকা না?’
মুখ তুলে তাকান তিনি। একগাল দাড়ি, মাথার দীর্ঘ চুল আর নেই, চোখেমুখে ক্লান্তির ছাপ।
‘আপনি কে বাবা?’
‘আমাকে চিনছেন না কাকা? আমাদের গ্রামের বাড়ীতে আপনি যেতেন। আমার দাদীকে মা জননী বলে ডাকতেন। আমি অভি।’
আমার দু হাত ধরে বুড়ো মানুষটি ঝরঝর করে কেঁদে ফেলেন।

পাশের চায়ের দোকানে বসে কাকার সাথে কথা হয় অনেকক্ষণ।
‘আপনি বাউলামী ছেড়ে দিলেন কেন কাকা?’
কাকা ম্লান হাসেন। ‘ভুল হইছিলো আমার। একজনে এসে আমার হাত ধরলো, আমারে সংসারের লোভ দেখাইলো। বললো গান করবা ভালো কথা, তার জন্যে পথে পথে ঘোরার দরকার কি? মস্ত ভুল হইছিলো আমার। বাউল মানুষের ঘর থাকতে নেই, সংসার থাকতে নেই। আমি যে কিসের লোভে পড়ে এত বড় জগৎ সংসার ফেলে ছোট্ট একটা ঘরের মধ্যে আটকাইয়া গেলাম, তা আজো বুঝতে পারিনা।’
‘এখন আর গান করেন না কাকা?’
‘একবার সংসারের মধ্যে আটকা পড়লে গলায় কি গান থাকে? থাকে না। এখন আর কিচ্ছু নাই। আমার সেই বাউলামী নাই, একতারা নাই, পথে পথে ঘোরার মতো সেই মানুষটাও নাই। আমার ভিতরের বাউল সেই কোন কালে মইরা গেছে বাবা।’
‘কাকা-মনে আছে আপনার যে ছেলেবেলায় আমিও আপনার মতো বাউল হতে চেয়েছিলাম।’
‘সংসারে যদি বাঁধা না পড়ো, তাইলে পারবা।’

কাকার সাথে আর দেখা হয়নি কোনদিন, কিন্তু তার কথাগুলো কানে বাজতো সব সময়। আমার ভিতরের গেরুয়াবসনের পুরুষটি সেই কথাগুলো শুনে বারবার আনমনা হয়ে যেতো। চোখের সামনে ভেসে উঠতো আঁকাবাঁকা একটি পথ। পথটি যেন আমারই অপেক্ষায় বসে আছে।

এমন সময় একটি শীতের বিকেলে আমার পকেটের ফোনটি বেজে উঠলো।
‘হ্যালো-আমি অভি বলছি।’
ওপাশ থেকে সংগীতময় কণ্ঠ শোনা গেল,‘অভি, আমি ঋতু বলছি। তোমাকে এখন এই মুহুর্তে আমার খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। তুমি কি একটিবার আসতে পারবে? প্লিজ অভি-তুমি না করোনা।’

ফোন রেখে আমি দ্রুত হাতে পোশাক বদলাই, চুলে জেল দেই, গায়ে ঢালি সুবাসিত কোলোন। সিঁড়ি দিয়ে দ্রুত পায়ে নামতে নামতে আমি চেঁচিয়ে বলি,‘মা-আজ রাতে আমার ফিরতে দেরী হবে। তুমি আমার জন্যে না খেয়ে বসে থেকোনা।’

এভাবে-ঠিক এভাবেই, আঠেরোই মাঘ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যে সাতটা পনেরো মিনিটে আরো একজনের বাউলের মৃত্যু ঘটে।

(পুনশ্চঃ এই লেখাটিতে বর্ণিত কোন চরিত্রের সাথে বাউল পাগলা বাবলু বা সচলায়তনের ‘রেসিডেন্ট বাউল’ জনাব নজমুল আলবাব এর কোন মিল খুঁজে পাওয়া গেলে সেটি নিতান্তই কাকতালীয়। এর জন্য লেখক দায়ী নহেন।)


মন্তব্য

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

আপনার বাউল মনের মৃত্যুর ঘটনা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। দেঁতো হাসি

জাহিদ হোসেন এর ছবি

আমার বাউল মনের মৃত্যু? এই লেখাটি উৎমপুরুষে লেখা মানেই কি এটা আমার কাহিনী? নারে ভাই-আমার মধ্যে বাউলের ব'ও নেই। আমি ভয়াবহ রকমের গৃহপালিত প্রাণী, ঘরকুনো কিসিমের বলা যায়। আমি গান-সুর-লয়-তাল কিছুই বুঝিনে, হাইথট বাউলদর্শন আমার অ্যান্টেনায় ধরা দেয় না। পাগলা বাবলুর ভিডিও দেখে মনে হোল, আচ্ছা-একজন বাউলকে একটা গল্প ফাঁদলে কেমন হয়? ব্যাস-যা মনে এলো, লিখে ফেললাম। খেল খতম!
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

বুকের মাঝে একটু হুহু করা টাইপ লেখা তো, সেটা ওভাবেই উড়ানোর একটা প্রচেষ্টা বলতে পারেন। মন্তব্যটাকে পার্সোনালি নিয়েন না জাহিদ ভাই। হাসি

জাহিদ হোসেন এর ছবি

আরে না না-পার্সোনালী নেবার প্রশ্নই ওঠেনা।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

পুনুশ্চ পড়ে হেসে ফেললাম! দেঁতো হাসি...

গল্প সুন্দর হয়েছে। ভাল লাগল খুব।

--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

মূলত পাঠক এর ছবি

দারুণ লাগলো! আমি আপনার সব গল্প তো পড়ি নি, তবে যা পড়েছি এটা তার মধ্যে সবচেয়ে ভালো।

একটা ছোটো পয়েন্ট: 'তোর মতো হাড়জ্বালানো ছেলের না খেয়েই মরা উচিত', এটা 'না খেয়ে মরাই উচিত' হবে বলে মনে হয়। আপনার বাক্য অনুসারে মা জননী মরাটা মানছেন, পদ্ধতি নিয়েই তাঁর বক্তব্য, অন্য কোনো ভাবে নয়, না খেয়েই মরা উচিত। আসলে বোধ হয় তিনি বলতে চান এমন অবাধ্য ঘরপালানো ছেলের মরাই উচিত যে মাকে এতো জ্বালায়। এতো ভালো লাগলো বলেই এই সব সামান্য পয়েন্ট নিয়ে কথা তুললাম।

দৈনিক একখানা করে গল্প লিখছেন প্রায়, তারপর এমন কোয়ালিটি, মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না।

জাহিদ হোসেন এর ছবি

আপনার ছোট পয়েন্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ, এবং সেই মোতাবেক বাক্যটি বদলে দিলাম। আসলে কোন লেখাটি যে পাঠকের ভালো লাগে, তা বোঝা মুশকিল। যাকগে-আমি যতটুকু পারি লিখে যাই।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

মামুন হক এর ছবি

বরাবরের মতোই অসাধারণ হয়েছে জাহিদ ভাই হাসি

জাহিদ হোসেন এর ছবি

সে না হয় হোল, কিন্তু আপনার লেখা কৈ?
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

মামুন হক এর ছবি

সাহস পাচ্ছিনা। আপনার গল্পে বুঁদ হয়ে আছি।

জাহিদ হোসেন এর ছবি

এই অজুহাতে কাজ হবে না জনাব!
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

এত সুন্দর করে লেখেন ক্যাম্নে? কী সুন্দর বর্ণনা।
আপনার অণুগল্প সিরিজে এটা আমার তিন নাম্বারে থাকবে। প্রথম দুইটা- ইলিশ আর দাদুর গল্প।
লিখতে থাকুন সবসময়।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

জাহিদ হোসেন এর ছবি

ধন্যবাদ। কিন্তু আপনার লেখা পড়বার জন্যে যে বসে আছি, তার কি হবে?
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

স্বপ্নাহত এর ছবি

আমি আপনার "চোখ বন্ধ করে ভাল লাগা" পর্যায়ের ফ্যান, সেই নির্বাসিত জীবনের সময় থেকেই। চোখ টিপি

এই গল্পটাও ভালো লাগলো। বরাবরের মতই।

---------------------------------

তবে যে ভারি ল্যাজ উঁচিয়ে পুটুস্‌ পাটুস্‌ চাও?!

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

সাইফ তাহসিন এর ছবি

এভাবে-ঠিক এভাবেই, আঠেরোই মাঘ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যে সাতটা পনেরো মিনিটে আরো একজনের বাউলের মৃত্যু ঘটে।

বরাবরের মতই জটিল হয়েছে, চরম ফাটাফাটি, আপনার মাথায় তো মনে হয় যে কোন সময়ে এক কোটি প্লট ঘুরাফিরা করে। আর লেখায় কী যে এক অদ্ভুত যাদু আছে, প্রত্যেক বারই ভালোলাগা অনুভূতি নিয়ে পড়ে শেষ করি।

আপনে আসলেই গুরু গুরু , অনেকবার বলেছি, তাও আবার বললাম।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

"চৈত্রের নির্মেঘ আকাশে যখন চাঁদ ওঠে, তখন আমার রক্তে অসহ্য সুখে একটা নেকড়ে বাঘ দাপাদাপি করে। "

দুর্দান্ত! চমৎকার লেখার হাত আপনার। এরকম পাইকারি হারে গল্প নামাচ্ছেন, বড্ড ঈর্ষা হচ্ছে। নাঃ, আমারও ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে আপনার মতোই! যদিও পারব না! হা হা হা!
--------------------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়...

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

জাহিদ হোসেন এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে।
আপনি আবার ঝাঁপিয়ে পড়বেন কি? আপনাকে দেখেই না আমি পানিতে নামলাম। আপনার লেখারও আমি খুব ভক্ত।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

তানবীরা এর ছবি

রোজ ভাবি গল্পগুলো পড়ে ফেলবো হয়ে উঠে না। আজকে তিনবার এটেম্প নিয়ে পড়লাম। গল্পের কথাতো সবাই বলেছে আমি বলবো পুনশ্চ এর কথা। আপনি শিউর জাহিদ ভাই যে অপু ভাইয়ের সাথে এ গল্পের কোন মিল নেই??? আমার কেনো যেনো মনে হচ্ছে মিল আছে ঃ)
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

জাহিদ হোসেন এর ছবি

আপনার প্রশ্নের জবাব স্বয়ং বাউলই দিয়েছেন নীচে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

স্নিগ্ধা এর ছবি

আচ্ছা, কেন এটা 'অণু'গল্প? হাসি

ট্যুইস্ট ছাড়াও কি চমৎকার গল্প হয়, এটা তারই প্রমাণ! দারুণ!

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সংসার যে সংসারের একটা সন্তান সেই সংসার কি একটা বিরাট সংসার নয়? সেই সংসারে এই যে সং হয়ে দিনাতিপাত করছি সেটাও কি এক ধরনের বাউলিয়ানা নয়?

জাহিদ হোসেন এর ছবি

এইতো দিলেন প্যাঁচ লাগিয়ে! এখন না আবার প্রকৃত বাউলিয়ানা/বাউলামীর ডেফিনিশন নিয়ে তর্ক না লেগে যায়।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

নজমুল আলবাব এর ছবি

শুধুমাত্র আপনার লেখা পড়ার জন্যে অনেকদিন সামহ্যোয়ারে গিয়েছি। ঝরঝরে লেখার ধরণ আপনার। খুব টানে আমাকে।

মন্তব্যবাজ কখনই নই। তাই সব লেখাতে দাগ রেখে যেতে পারি না। এখানেও সেটাই ঘটতো। কিন্তু ফুটনোট পড়ে দাগটা রাখতেই মনস্থির করলাম।

আমি কিন্তু ভুল সময়ের বাউল। বলে কয়েই ভুল মানুষ। সংসার ভালো লাগে না তবু গৃহেই বসবাস। এইটা একটা বৈপরিত্ত অথবা ভন্ডামী আমার।

নিজের কথা আর নাই বলি। আপনার লেখার প্রতি আমার মুগ্ধতার কথা কি আবার বলতে হবে?

রুদ্র'র একটা কবিতা আছে, পুরাটা মনে নাই। তবে ভাব ধরে লাইন শব্দ উল্টেপাল্টে বল্লে যা দাঁড়ায় তা হলো -

পা ছোয়া যায় কোনো মতে
এমনি সুজোগ, এমনি পরিস্থিতি,
......................................
মুহুর্তেই জেগে উঠে পদপ্রীতি
.......................................

ধেয়ে পেয়ে আসে নিন্দুক শতে শতে
................................................

পা ছুয়েছি শুধু, আর সব র'লো বাকি,
নারীতো নারীই, তার আবার পা কি?

এইটা কেনো ভুলভাল ভাবে, টুকরা টাকরা মতো করে তুলে দিলাম জানেন? শেষ লাইনটার লগে মিল রেখে একটা কথা বলবো বলে। সেই কথাটা হলো,-

গল্পতো গল্পই, তার আবার অনু কি?

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

জাহিদ হোসেন এর ছবি

আমার লেখাতে আপনার উপস্থিতি দেখে আনন্দ লাগছে। সচলায়তনে আমার লেখালেখির প্রথম দিকে আপনি আমাকে অনেক সৎ উপদেশ আর নির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে কথা মনে আছে আমার। আপনার কথাতেই সামহোয়্যারইনে যে নিকে লিখতাম সেটা পরিত্যাগ করে এখানে স্বনামে লেখা শুরু করি।

"গল্পতো গল্পই, তার আবার অনু কি?" আপনার এই মন্তব্যের সাথে একমত। এই ক্ল্যাসিফিকেশনটি গল্পের সাইজের উপর নির্ভরশীল। আমার ছোটখাটো লেখাগুলোকে সব এই দলে ফেলে দিয়েছি।

বাই দ্য ওয়ে-ফুটনোটটি কিন্তু দিয়েছিলাম আপানর নজর কাড়বার জন্যে। কৌশলটিতে কাজ হয়েছে। বাউলের উপর লিখলাম, আর সেখানে আপনার মন্তব্য নেই, তা কি হয়?

ভালো থাকুন সপরিবারে!
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি
জাহিদ হোসেন এর ছবি

এই নিয়ে কতশত বাউল খর্চা হয়ে গেল, আরও একটাতে আর এমন কি বেশি ক্ষতি হবে?
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

নিবিড় এর ছবি

ভাল লাগল অণু গল্পটি চলুক


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

রণদীপম বসু এর ছবি

বাউল মনের একতারাটায় টংকার দিয়ে দিলেন তো... !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।