ভাত বনাম আলু অথবা অন্যকিছু

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি
লিখেছেন মুহম্মদ জুবায়ের (তারিখ: বিষ্যুদ, ১০/০৪/২০০৮ - ৯:৪২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

রাহার কাছে আগেভাগে ক্ষমা চেয়ে নিই। তাঁর ভরা পেটে ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য কযেক ছত্র ব্লগঃ মানুষ বাঁচবে তো ?? শিরোনামের লেখাটিতে মন্তব্য লিখতে গিয়ে দেখি অনেক লম্বা হয়ে যাচ্ছে। তাই এটাকে সম্পূরক পোস্ট হিসেবে দেওয়া।

মনে পড়ে, ১৯৭৪-এ দুর্ভিক্ষ যখন আসছে সেই সময়ও বিকল্প খাদ্যাভ্যাস হিসেবে একবেলা রুটি বা আলুর কথা বলা হয়েছিলো সরকারি তরফে। তার প্রতিক্রিয়া এখন যা হচ্ছে তার চেয়েও অনেক তীব্র হয়েছিলো তখন। কারণ ছিলো প্রধানত দুটি। এক, স্বাধীন বাংলাদেশে পাকিস্তান আমলের চেয়ে শস্তায় চাল পাওয়া যাবে – মানুষের এই প্রত্যাশা পূরণ করা যায়নি বাস্তব কারণেই এবং তা হতাশার কারণ ঘটিয়েছিলো। দুই, সাধারণ মানুষের আর্থিক অবস্থা এখনকার চেয়েও অনেক গুণে খারাপ ছিলো এবং বিকল্প উপার্জনের উপায়ও সুলভ না।

আমি ব্যক্তিগতভাবে দীর্ঘকাল ধরে ভাত-নির্ভরতা কমানোর পক্ষে। ১৯৭৭-৭৮ থেকে আমি সচরাচর দিনে একবেলার বেশি ভাত খাই না, এমনকি ভাত ছাড়াও কয়েক সপ্তাহ দিব্যি থাকতে পারি কোনোরকম শারীরিক ও মানসিক অস্বস্তি ছাড়াই। দেশে থাকাকালে আমার এই কিঞ্চিৎ অস্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাস নিয়ে বন্ধুবান্ধবের অনেক ঠাট্টাও হজম করতে হয়েছে।

এখন প্রশ্ন হলো, সেই ৭৪-এ আমাদের একটা নিদারুণ অভিজ্ঞতা হলো, যার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ফলাফল হিসেবে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অনেক উত্থান-পতন ঘটলো। বন্যা ও ঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলি আগের মতোই নিয়মিত বিরতিতে হতে থাকলো। অথচ আমাদের রাষ্ট্রের শাসক বা সমাজের নেতারা নির্বাক ও নিশ্চল হয়ে থাকলেন। ৭৪ এবং তৎপরবর্তীকালের ঘটনাবলি থেকে বিন্দুমাত্র শিক্ষা নিলেও বিকল্প খাদ্যাভ্যাস তৈরিতে মানুষকে উদ্দুদ্ধ ও অভ্যস্ত করে তোলা অসম্ভব ছিলো বলে আমি মনে করি না। পরিবার পরিকল্পনার মতো দুরূহ কর্মসূচিতেও প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের তুলনায় আমাদের সাফল্য বেশি – এটাও তো বাস্তব। সুতরাং একটা পরিকল্পনা নিয়ে এগোলে ভাতের ওপর আমাদের নির্ভরতা অর্ধেক না হোক, সিকিভাগ কমিয়ে আনা সম্ভব হতো। বিকল্প হিসেবে গম বা আলু বা ভুট্টা অথবা অন্যকিছু চিন্তা করা যেতো। ভাতের বদলে আলু বা রুটি খাওয়া দোষের হবে কেন? আজকের কাগজে দেখলাম, ভুট্টার রুটি খাওয়ার সংবাদ এসেছে। এটা সংবাদ হওয়ার কথা ছিলো না। ভুট্টার রুটি অনেক দেশে খাদ্য হিসেবে রীতিমতো প্রচলিত এবং পুষ্টিগুণে তা ভাতের তুলনায় কিছুমাত্র নিচে নয়। মেক্সিকো মোটেই কোনো ধনী দেশ নয়, সে দেশের মানুষ নিয়মিত ভাত খায় এবং পাশাপাশি গমের ও ভুট্টার রুটিও চলে। সে দেশের জলবায়ু আমাদের দেশের মতোই এবং মানুষজনের আকার-আকৃতি-গাত্রবর্ণ আমাদেরই মতো।

সত্য বটে, আমাদের দেশে এখন উচ্চ ফলনশীল ধান উৎপাদনের ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ যা আমাদের বাৎসরিক দুঃখের পার্বণের মতো আসে তা ঠেকানোর কী ব্যবস্থা আছে? সুতরাং ধানের মৌসুমে উৎপাদন ব্যাহত হলো তো সর্বনাশ। এই অবস্থা বদলানোর চেষ্টাও সত্যিকার অর্থে কিছু হয়েছে বলে মনে করার কোনো কারণ নেই। কারণ, আমাদের সাধারণ প্রবণতাই হলো, সমস্যা হলে কোনোমতে ধামাচাপা দাও, অথবা দাঁতে দাঁত চেপে বসে থাকো, সময়ে সব ঠিক হয়ে যাবে। সত্যি সত্যি গেছেও তো। নাহলে আমরা এতোকাল এভাবে টিকে আছি কীভাবে?

আমাদের দেশে একটা কথা প্রচলিত আছে যে, চালের দামের ওপর সরকারের স্থায়িত্ব বা জনপ্রিয়তা ও নির্বাচনযোগ্যতা নির্ভর করে। নির্বাচিত-অনির্বাচিত অথবা জবরদখলকারী বা ছদ্মবেশী ক্ষমতাবানরা তবু এদিকে মনোযোগ দিলেন না কেন? বিকল্প খাদ্যাভ্যাসের জন্যে একটা সামাজিক আন্দোলনও হতে পারতো। হয়নি। আমরা ভাতের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পারিনি। এর আংশিক কারণও সম্ভবত ঐ ৭৪-এই সন্ধান করতে হবে। দুইবেলা ভাতের বদলে একবেলা করে রুটি খাওয়ার বা বিকল্প হিসেবে আলুতে অভ্যস্ত হওয়ার কথা বলে সেই সময়ের আওয়ামী লীগ সরকার বিষম বেকায়দায় পড়েছিলো। সেই ঝুঁকি তাহলে নেওয়া কেন? এখনকার সেনাপ্রধান আলুর কথা বলে বেড়াতে পারছেন, কারণ তাঁর নির্বাচিত হওয়ার দায় নেই, এমনিতেই সব হাতের মুঠোয়। স্মরণ করা দরকার, খোলা বাজারে যখন চাল ৪৫ টাকা তখনো কেউ কেউ ১.২৫ দরে চাল পাবে, শেখ মুজিব এই ধরনের ব্যবস্থাকে নিরুৎসাহিত করতে চেয়েছিলেন বলে চরম মূল্যও তাঁকে দিতে হয়েছিলো।

কিন্তু বাস্তবতা মানতে হবে। প্রকৃতিকে যেহেতু আমরা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখি না, ধানের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হলে দুর্ভোগ কমানোর জন্যে খাদ্যাভ্যাস বদলের কথা আমাদের ভাবা দরকার। জন্ম-জন্মান্তরের অভ্যাস বদলানো সহজ নয়, সে কথা মনে রাখছি। তবু বলি, দুর্দিনে মানুষ শাকপাতা খেয়েও জীবনধারণ করে। ভাত না হলে বিকল্প হিসেবে আলু বা ভুট্টায় অভ্যস্ত হওয়া কী খুব দুরূহ? অন্তত অনাহারে থাকার চেয়ে তো ভালো।


মন্তব্য

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

সত্য করে বলছি, এই পোস্টটারই অপেক্ষায় ছিলাম .... ৭৪ এ যেটা শুরু করা উচিত ছিল অথচ পারিনি, আজ ২০০৮ এ এখনই সেটা শুরু হোক
ভাতের চাহিদা দেশে দুকোটি টনের মতো বছরে ,,, গত বছর আলু হয়েছে ৮০ লাখ টন, ভুট্টা ১০ লাখ টন ,,, বন্টনে সাম্য নিয়ে আমরা কথা বলি, কিন্তু খাদ্যাভ্যাসে খাবারের সাম্য ব্যাপারটাও জরুরী ,,, এবং দেখা যাচ্ছে যে ৯০ লাখটন খাবার খুব ভালোভাবেই চালের ক্রাইসিস কমাতে পারে

আলু খাওয়া নিয়ে আমরা রসিকতা করতেই পারি, তবে সেটাতে অনির্বাচিত সরকারের কোণঠাসা হওয়া এবং আরেকদল নির্বাচিত দানবের দেশ লুটেপুটে খাওয়ার সম্ভাবনা তৈরীর চেয়ে বেশী কিছুই হবেনা ,,, গরীব যারা যারা না খেয়ে আছে, তাদের পেটে ভাত পড়বেনা ,,,

আমি বলি, গরীবের এই দূরবস্থা দেখে যদি আসলেই কইছু করতে ইচ্ছে হয়, তাহলে প্রত্যেক মধ্যবিত্ত আর উচ্চবিত্তের উচিত একবেলা করে আলুভর্তা খাওয়া ,,, চালের চাহিদা বাজারে কিছুটা কমুক
(আমরা এখন ডিনারে তাই করি চোখ টিপি ,,, তিনটা আলুভর্তা করে লবন, মরিচ আর কুঁচো পেঁয়াজে কচলে চামচ কেটে খাই (প্র্যাকটিসের জন্য), কোনভাবেই এটাকে ভাতের চেয়ে খারাপ বলা যায়না)

আপনাকে একটা বিশাল (বিপ্লব)
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

এই পোস্টটা লিখে কিছু বকাঝকা খাবো আশংকা করছিলাম। আপনার মন্তব্যে সাহস পাচ্ছি।

আপনি উচ্চ ও মধ্যবিত্তদের বলছেন বিকল্প খাদ্যে গিয়ে চালের চাহিদা কমাতে। অথচ বাস্তবতা হলো, সামনে চালের আকাল আরো বাড়তে পারে ধরে নিয়ে সমর্থরা আরো বেশি বেশি কিনে রাখছে।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমি ভাই পুরা ভেতো বাঙ্গালি। দেশে থাকতে মাঝেমধ্যে অন্য কিছু খেতে মন চাইতো, কিন্তু বাইরে আসার পর থেকে ভাত না খেলে যেন পেট ভরে না...

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আমার এক বন্ধু দাবি করে, ভাত খেয়ে কোনো মহৎ কাজ করা সম্ভব নয়। চোখ টিপি বাঙালি হয়েও রবীন্দ্রনাথ এতো বড়ো হয়ে উঠলেন কী করে সে সম্পর্কে আমার বন্ধুর বক্তব্য: রবীন্দ্রনাথের আত্মজীবনীতে ভাতের প্রসঙ্গ কোথাও নেই। আছে লুচি খাওয়ার কথা। রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন, 'আমসত্ব দুধে ফেলি / তাহাতে কদলি দলি', কিন্তু ভাতের কথা তো নেই। আবার একটি ছোটো গানে 'যদি অভয় দাও তো বলি আমার উইশ কি' বলে অন্ত্যমিলে হুইস্কির কথাও লিখছেন। কিন্তু ভাত কই? রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে স্মৃতিকথা যাঁরা লিখেছেন, সেখানেও ভাতের উল্লেখ পাওয়া যাচ্ছে না। ফজলুল হকের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের একটা ছবি দেখা যায়, সামনে মিঠাই-মণ্ডা সাজানো, ভাত কই?

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আমাদের দেশে অনেকেই ন্যুনতম একটা বেলা আটা কিংবা ময়দার ওপরে চালিয়ে দেয়। সেটাকে টেনে দু'বেলায় উন্নিত করা মোটেও অসম্ভব কিছু না। গ্রামে বড় হয়েছি বলে দেখেছি, আলু পুড়ে, মিষ্টি আলু সেদ্ধ করে অনেকে সকালের নাশ্তাটাও সেরে ফেলে। এটা স্বতস্ফুর্ত ভাবেই করে লোকজন। কিন্তু যখন কেউ বাধ্য করে ভাত খাওয়া ছেড়ে আলু খাওয়া ধরতে কিংবা উপদেশ দেয় তিনি যিনি সবার মাথার উপরে বসে ছড়ি ঘুরাচ্ছেন তখন বোধকরি মেজাজটা ঠিক রাখা একটু কষ্টকরই হয়ে যায় ভেতো বাঙালীর জন্য।

আলু, আটা, ভুট্রার রুটি কোনো কিছুতেই শর্করার পরিমান কম না। বরং অনেক দিন দিয়ে ভাতের চাইতে ভালো। ঘুম ঘুম কম লাগে, পেট ভারী লাগে না, খাওয়ার পর নিজেকে বস্তা বস্তা মনে হয় না। কিন্তু সেটা যদি বাধ্যবাধকতায় পরিণত করা হয়, ভাতের সংকট কৃত্রিম হোক আর প্রাকৃতিক- সেটাকে অস্বীকার করা হয়, তাহলে পাবলিকের মাথা খারাপ হবে না?
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

বিকল্প খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারে তাগিদটা যেন মানুষ নিজে থেকেই বোধ করে, এই ব্যবস্থাটা (সেটা প্রচারণা দিয়ে সচেতন করে) করা দরকার সরকারি ও বেসরকারি দুইভাবেই। ক্ষুধার্ত পেটে এবং চালের বাজারে যখন আগুন, তখন আলু খাওয়ার নসিহত এক ধরনের উৎকট রসিকতা - সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এটা বাধ্য করার বিষয় নয়, সেখানেও আপনার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

বিপ্লব রহমান এর ছবি

সম্পূর্ণ একমত @ পোস্ট। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

এ বিষয়ে কিছুদিন আগে কথা বলছিলাম বাংলাপিডিয়ার প্রধান সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনিও বলছিলেন একই কথা।

বিশিষ্ট এই অধ্যাপকের মতে, আমরা যদি শুধু ভাতের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে বিকল্প খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে পারতাম, তাহলে হয়তো '৪৩ ও '৭৪ এর দুর্ভিক্ষে অনেক কম মানুষ মারা যেতো। ...

'ভোতো বাঙালির' খাদ্য বৈচিত্র বাড়াতে প্রয়োজন মানসিকতার আমূল পরিবর্তন। আর এ জন্য দীর্ঘ সামাজিক আন্দোলনের পাশাপাশি দীর্ঘ মেয়াদী সরকারি - বেসরকারি বাস্তবমুখি কর্মসূচির বিকল্প নেই।

অন্যথায় শুধু চালের সঙ্কটের সময় 'ভাতের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আলু খান' ধরণের সরকারি বক্তৃতাবাজীর নৈপথ্যে রাজনৈতিক দুরাভিসন্ধি থাকে বৈকি!

-----

আমি নিজেই পার্বত্যাঞ্চলে দেখেছি, চরম খাদ্যাভাবের সময়ও মাসের পর মাস পাহাড়ি মানুষ শুধুমাত্র বুনো আলু খেয়ে টিকে থাকে; অভাবের সময়টুকু তারা অনায়াসেই পার করে দেয়।

তাই তীব্র খাদ্য সঙ্কটের সময়ও পাহাড়ি মানুষের মৃত্যূ প্রায় হয়ই না। আর এ জন্য দেশান্তরী হওয়া বা শহরে এসে খাবারের জন্য কাউকে হাত পাততেও দেখা যায় না। ...

সারাদেশে চালের দাম আকাশচুম্বী হওয়ার আগেই গত আগস্ট - নভেম্বরে ইঁদুর বন্যায় পাহাড়িরা আক্ষরিক অর্থেই নিঃস্ব হয়েছেন। বন্যার মতো ধেয়ে আসা ঝাঁক ঝাঁক ইদুর পাহাড়ের প্রান্তিক চাষী জুমিয়াদের ফসল তো বটেই, এমন কী বীজধান খেয়েও শেষ করেছে। তাই আবার আবাদ করে তারা যে খাদ্য ঘাটতি পুষিয়ে নেবেন, অধিকাংশের এমন সঙ্গতিও নেই। সামনের বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতি হবে আরও সঙ্কটময়।

বলা বাহুল্য, এ ক্ষেত্রে সরকারি ত্রাণ সাহায্য নামমাত্র। আর দুর্গম পাহড়ে এ সব ত্রাণের ছিটেফোঁটাও পৌঁছে নি।...


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

'ভোতো বাঙালির' খাদ্য বৈচিত্র বাড়াতে প্রয়োজন মানসিকতার আমূল পরিবর্তন। আর এ জন্য দীর্ঘ সামাজিক আন্দোলনের পাশাপাশি দীর্ঘ মেয়াদী সরকারি - বেসরকারি বাস্তবমুখি কর্মসূচির বিকল্প নেই।

আমার পোস্টের মূল প্রতিপাদ্য এটাই। সরকারি উদ্যোগ তো অবশ্যই জরুরি। কিন্তু পরিবেশ বা অন্যান্য সামাজিক আন্দোলনের মতো বিকল্প খাদ্যাভ্যাস নিয়েও একটা বিশাল সচেতনতা ও উদ্যোগ খুবই কার্যকর হতে পারে। পরিবেশ আন্দোলনের তুলনায় এই বিষয়ে সবাইকে সম্পৃক্ত করা অনেক সহজ হবে বলে মনে হয়। পরিবেশ নিয়ে সবাই সচেতন নয়, খাদ্য কিন্তু সবারই দরকার এবং আমাদের দেশে সেটা যে একটা সমস্যা তা-ও সবার জানা।

পার্বত্য অঞ্চলের প্রসঙ্গটা তুলে এনে ভালো করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

নন্দিনী এর ছবি

ভাতের বদলে আলু বা রুটি খাওয়া দোষের হবে কেন?

খাঁটি কথা !

নন্দিনী

কনফুসিয়াস এর ছবি

পোস্টে উত্তম জাঝা।
এই কথাগুলা দেশের মানুষদের বুঝিয়ে বলাটা দরকারী। মুশকিল হলো সরকার বাহাদুর টাইমিং-এ গোলমাল করে ফেলেন বারবার।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

সরকার বাহাদুর টাইমিং-এ গোলমাল করে ফেলেন বারবার।

তাঁদের সময়জ্ঞান বা হিতাহিত জ্ঞান থাকলে মন্দ হতো না। কিন্তু তাঁরা কথাগুলি বলার জন্যে অতি যত্নে অসময় খুঁজে বের করেন। তাতে হয় হিতে বিপরীত। ভুল সময়ের মিষ্টি কথার স্বাদও তেতো হয়ে যায়।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

কনফুসিয়াসের 'টাইমিং', জুবায়ের ভাইয়ের 'বাধ্য করা' বিষয়গুলোকে সামনে রেখেই বলি -
এখনো আমাদের দেশের 'খেয়েছেন?'/'খাবো'/'খাবার' বলতে - 'ভাত'-কেই বোঝানো হয়। ব্যাপারটি খাদ্যাভ্যাস-সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের মোড়ক পেরিয়ে মানুষের অস্থিমজ্জায় মিশে আছে।

এখন ৩০ টাকা কেজির চালের সময়ে - আলু-ভুট্টা অথবা রুটি খেয়ে মানুষ পেট ভরানোর যে চেষ্টা করবে, সেটায় যতোটা না ক্ষিধা চাপা দেয়ার চেষ্টা থাকবে, তার চেয়ে বেশি থাকবে - ভাত না পাওয়ার/খাওয়ার ক্ষোভ, কষ্ট।
কোটি কৃষক-শ্রমিক যারা সকালে পান্তা ভাত খেয়ে মাঠে বের হয়, তাদের সন্তানেরা হয়তো স্কুলে যায় - যাদের কাছে দিনে দুবেলা খাবার মানেই ভাত; তাদের অন্য খাবারে অভ্যস্ত করানোর চেষ্টা ব্যবহারিক দিক থেকে কতোটা বাস্তব হবে সেটা দেখার জন্য দশকের বেশি সময় লাগবে বলে আমার ধারণা।

আরেকটি শংকার কথা থেকে যায় - বন্যা-ঝড় বিপর্যয়ে চালের বাড়তি মূল্য মানুষ মেনে নেয়। কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণ সমস্যার কারণে এরকম হুটহাট করে চালের দাম তিনগুন হয়ে গেলো, সেটা সমাধান না করে - আলুভ্যাস তৈরি করে ক'দিন পর আলুর দামও বাড়ানো হবে - তারপর বলবে, মুড়ি খাও - আলুর উপর চাপ কমাও। ফড়িয়ারা যাবে মুড়ির ব্যবসায় - তখন ঈশ্বর বলবেন, বিষ খাও ভেতো বাঙাল।

ভাত-প্রেমী বাঙাল হিসাবে আমি কোনোভাবেই, খাদ্যাভ্যাস পাল্টাতে রাজী না। ৬/৭ বছর আগেও যে দেশ কৃষিতে স্বয়ং সম্পূর্ণ ছিলো, সে দেশের নীতি নির্ধারকরা ঠিক করুক, ব্যবস্থা নিক - চালের দাম কীভাবে কমানো হবে, কীভাবে মানুষের আয়ত্বে আসবে। রাষ্ট্রকেই সে দায়িত্ব নিতে হবে। উটকো পরামর্শ শুনতে আমি রাজী না, যেমন রাজী না রমনার বটমূলে বৈশাখের প্রথম সকালে কতিপয় সেলিব্রেটির সাথী হয়ে দু'শ টাকায় এক সানকি পান্তা ইলিশ খেয়ে টিস্যু পেপার দিয়ে আলতো করে ঠোঁটের কোণা মুছে নিতে। আমি পেট ভরে ভাত খেয়ে দিন যাপনের মানুষ।

বিপ্লব রহমান এর ছবি

...কিন্তু বাজার নিয়ন্ত্রণ সমস্যার কারণে এরকম হুটহাট করে চালের দাম তিনগুন হয়ে গেলো, সেটা সমাধান না করে - আলুভ্যাস তৈরি করে ক'দিন পর আলুর দামও বাড়ানো হবে - তারপর বলবে, মুড়ি খাও - আলুর উপর চাপ কমাও। ফড়িয়ারা যাবে মুড়ির ব্যবসায় - তখন ঈশ্বর বলবেন, বিষ খাও ভেতো বাঙাল।

যথার্থই বলেছেন।


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

শিমুল, আমি কিন্তু বিকল্প খাদ্যাভ্যাসের জন্যে কাউকে বাধ্য করার কথা বলিনি। বলেছি, বিষয়টা মানুষের চিন্তায় নিয়ে আসতে, একটা সামাজিক সচেতনতা তৈরি করতে। তোমার দৃষ্টিভঙ্গিটা বুঝতে পারছি। কারো ওপরে কিছু চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হলে এই মনোভাবটা খুব স্বাভাবিকভাবেই আসবে প্রতিক্রিয়া হিসেবে। এটা এক ধরনের মানসিক প্রতিরোধ, অনেকটা মানুষের সহজাত শাসন-না-মানার প্রবৃত্তি। সেটাকে আমি যথার্থ ও যৌক্তিক মনে করি।

একটা কথা মনে রাখতে বলি। আমাদের দেশে মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়বেও। সেই তুলনায় চাষের জমি কিন্তু অনেক দ্রুত হারে কমছে। ক্রমশ আরো কমবে। সুতরাং চাষের জমিটির সর্বোচ্চ ব্যবহারেরও একটা প্রশ্ন আমাদের বিবেচনা করতে হবে যা একাধিক খাদ্যশস্য উৎপন্ন করবে, বাড়তি খাদ্যের চাহিদা মেটাবে। সেই শস্যটি যে অবশ্যম্ভাবীভাবে ধান না-ও হতে পারে। অন্য কোনো শস্যের চাষ হোক, মানুষ সেই খাদ্যে অভ্যস্ত হয়ে উঠুক।

কৃষ্টি-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য বিষয়টাও কিন্তু অনড় অপরিবর্তনীয় কিছু নয়। এগুলিও সময়ে পাল্টায়। যেমন পাল্টায় মানুষের দৈনন্দিন জীবনচর্যা। গ্রামের মানুষ চৌদ্দপুরুষের পেশা কৃষিকাজ ছেড়ে শহরে এসে রিকশা চালায়, কলকারখানায় শ্রমিকের কাজ নেয় - সবই প্রয়োজনের তাগিদে। সারাজীবন দুই বেলা ভাত খেয়েছি, এখন না জুটলেও তার জন্যে বায়না ধরে বসে থাকবো - এটা বোধহয় ঠিক যুক্তির কথা নয়।

সরকারি ব্যবস্থাপনা বা অব্যবস্থাপনা, বণ্টনের সমস্যা, ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণ এবং আকালের সময়ে অন্য খাদ্য খেতে বলার অশ্লীল রসিকতা বিষয়ে তোমার বক্তব্যের সঙ্গে আমার কিছুমাত্র দ্বিমত নেই।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

প্রিয় জুবায়ের ভাই:
প্রথমেই দু:খিত 'বাধ্য না করা'কে 'বাধ্য করা' লিখে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। টাইপো। আমি মূলত: সম্পূরক মন্তব্যে আপনার বলা - এটা বাধ্য করার বিষয় নয় কেই সামনে আনতে চেয়েছি। এবং অবশ্যই আপনার বলা 'বাধ্য করার বিষয় নয়'কে সমর্থন করি। কোনো অভিযোগ নেই।

মানুষের দৈনন্দিন জীবনচর্চা পাল্টানোর বিষয়েও আমি একমত। কৃষি থেকে শিল্প কিংবা অন্য সেক্টরে শ্রমের যাতায়াত স্বল্পকালীন সময়ে দ্রুত ঘটে, কিন্তু দীর্ঘদিন কৃষি নির্ভর একটি পরিবার সম্পূর্ণভাবে অন্য পেশায় যাওয়াটা বোধ করি এক দিনে ঘটবে না। কৃষি পেশা জীবন-উপার্জনের জন্য যথেষ্ঠ নয়, এটাও ধাপে ধাপে অনুধাবন করে তারা অন্য পেশায় যাবে। এবং এখানে একটা সময় জড়িত। কৃষি থেকে শিল্প এবং শিল্প থেকে সেবা খাতে উন্নীত হওয়া অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ারই অংশ।

বিপরীতে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনকে আরও দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়া হিসাবে দেখি। এরশাদের শাসন কালীন সময়েও রেডিও'তে বিজ্ঞাপন দিতো - 'বেশি করে আলু খান, ভাতের উপর চাপ কমান'। এ আবেদন স্লোগানের বাইরে যেতে পারেনি, বরং হাস্যকর মনে হয়েছে অনেক সময়। 'বায়না/আবেগ'কে বাদ দিয়ে আলুকে প্রধান খাবার করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব, ২০০৮ সালের চালের আগুন দাম সময়ে, যৌক্তিক মনে হয় না, মনে হয় - দায় দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা - ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা।

তবে বর্ধমান জনসংখ্যার কথা চিন্তা করে - অন্য শস্যের উপর নির্ভরশীল হতে চাইলে, সে প্রক্রিয়া শুরু হোক ধীরে ধীরে। সেখানে মানুষের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ থাকুক, সম্মতি থাকুক। অর্থনীতির সূচকগুলো ইংগিত দিক - এ বিকল্প খাবারটি , গুনে এবং দামে, এ জনপদের মানুষের প্রধান খাবার হয়ে উঠার সম্ভবনা ধারণ করে।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

পরিবর্তনটা রাতারাতি হবে এমন আশা করা বোকামি। সময়ের ব্যাপার তো অবশ্যই।

বিষয়টা পরিষ্কার করার জন্যে ধন্যবাদ, শিমুল।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

অমিত আহমেদ এর ছবি

আমাদের খাদ্যাভাস বদলানো দরকার এর সাথে আমি একমত। এর চেষ্টা হয়েছিলো সাতানব্বুই এর দিকে। তখন স্লোগান লেখা ব্যানার ঝুলতো
"বেশি করে আলু খান
ভাতের উপর চাপ কমান"

কিংবা

"আলু খেলে মোটা হয়
এই কথাটি সত্য নয়"

সেই উদ্যোগ মাঠে মারা গেছে। আমার মনে হয় না বাঙালি কৃষক-শ্রমিক তাঁদের খাদ্যাভাস বদলাবে। আমাদের সব কিছুই ভাত কেন্দ্রিক। দুপুরে, রাতে খেয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করতে আমরা বলি, "ভাত খাইছিস?" তবে চেষ্টা করা যেতে পারে। করাটা জরুরী।


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ভাতের ওপর চাপ কমানোর শ্লোগানটা আগেই চালু হয়েছিলো, ৯৭-এ এই উদ্যোগটার কথা জানা ছিলো না। এটা এগোলো না কেন? একটু আশ্চর্য লাগছে এইজন্যে যে ওই সময় তো চালের ঘাটতি ছিলো না বলে জানি।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

অমিত আহমেদ এর ছবি

সঠিক সালটি আমার মনে নেই। যদ্দুর মনে পড়ে এটা বিএডিসি-র একটা প্রচেষ্টা ছিলো। জাতীয় প্যারেড স্কোয়ারে আলুর নানান পদ নিয়ে সপ্তাহ ব্যাপী মেলা ছিলো। সংবাদপত্র, টিভি, রেডিওতে বিজ্ঞাপন ছিলো। আমার ব্যাপারটা মনে আছে কারণ আমার খালাদেরকে আমি খেপাতাম "আলু খেলে মোটা হয়, এই কথাটি সত্যি নয়" স্লোগানটি দিয়ে।


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

অমিত আহমেদ এর ছবি

একটা কাজ করা যায়। আমার মনে হয় এতে কাজ হবে বেশি। আলুকে পশ খাদ্য হিসেবে প্রচার করা যায়। পাশ্চাত্য আলু-মেনু সহ। এতে উচ্চবিত্তেরা অন্তত্য ভাতের উপর চাপ কমাবে।


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

সৌরভ এর ছবি

আমি বোধহয় এই পোস্টটার বক্তব্য বুঝতে পারি নাই।
তারপরও একটা মন্তব্য করার দুঃসাহস দেখাবো।

চালের দাম বাড়াটা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। সারা পৃথিবী জুড়ে নতুন উন্নত দেশে (ভারত, চীন) চাহিদা বেড়ে গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফলন কম হয়েছে, তার রেশ ধরেই তো এইসব।

জুবায়ের ভাইয়ের এই পোস্টে,
"ভাত দুর্লভ হয়ে গেছে" বা "চালের দাম বাড়ছে" বাক্যাংশটুকু বেশি আক্ষরিক অর্থে নেয়া হয়েছে বোধহয়। আমার মনে হয় এই বাক্যাংশটুকু পুরো অবস্থার একটা মুখপাত্র মাত্র।

প্রতিদিন যে জিনিষগুলো না হলে আমাদের চলবে না, সেইসবের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় বিকল্প খোঁজা হচ্ছে।
তেলের দাম বেড়ে গেছে, এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম দ্বিগুণ হয়েছে গত ছয় মাসে (দুঃখজনক হলেও সত্য, উত্তরের মানুষকে এই এলপিজি না হলে রান্না বন্ধ করে দিতে হয়)

এরপরে তারা আমাদের কী বলবেন?
সয়াবিনের বদলে আমরা কী তেল ব্যবহার করবো? এলপিজি গ্যাসের বদলে খড়ি বা শুকনো গোবর চলতে পারে?

আমার মনে হয়েছে, সব বিকল্পেরা সবসময়ই সমাধান হতে পারে না। তাই, আমি আলুকে না বলবো।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আধুনিক ব্যবস্থাপনায় - হোক তা রাষ্ট্রীয় বা ব্যবসায়িক, এমনকি ব্যক্তিগত - বিকল্প ব্যবস্থা রাখা জরুরি। তাতে সংকটের কালে বিভ্রান্ত হতে হয় না, কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় পড়তে হয় না।

সারা পৃথিবীতে জ্বালানি সংকটের কারণে গ্যাসোলিনের বিকল্প তৈরি হচ্ছে। নব্বুইয়ের দশকেই মালয়েশিয়াতে পাম তেল দিয়ে গাড়ির জ্বালানি করার চেষ্টা হচ্ছিলো, আমেরিকায় ভুট্টা থেকে জ্বালানি করার গবেষণা চলছে। বিকল্প ভাবা অথবা লভ্য হলে তা গ্রহণ করায় কোনো দোষ আছে বলে আমার মনে হয় না।

ভাতের বিকল্প শুধুমাত্র আলু, এটা কিন্তু আমার বক্তব্য নয়। আলুর কথা বলেছি প্রসঙ্গ এসেছে বলে। আমাদের সৈনিককূলচূড়ামণি বলেছেন বলেও নয়। বিকল্প খাদ্য অন্যকিছুও হতে পারে। আমি ভুট্টার কথা বলেছি। গমের কথা বলেছি। রুটি অবশ্য আজ আমাদের দেশে অনেকটাই গ্রহণযোগ্য, তারও প্রসার ঘটানো যায়। পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ নুডলস বা পাস্তা খায়, তা-ও বিবেচনায় আনা চলে। আজ সারা পৃথিবীতে যখন চালের বাজার মন্দা ও সরবরাহ অপ্রতুল, তখন বিকল্প বিবেচনা তো করাই উচিত। সেটাই বাস্তব চিন্তা, স্মার্টনেস।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি
মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ঠিক এই কথাটাই তো বলতে চেয়েছিলাম। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্যে।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।