ইউরোট্রিপঃ যাত্রা হল শুরু

গৃহবাসী বাউল এর ছবি
লিখেছেন গৃহবাসী বাউল [অতিথি] (তারিখ: বুধ, ০৯/০১/২০১৩ - ১১:২৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আগে যেখানে থেমেছিলাম

“"এয়ারপোর্টে পৌঁছে চেক ইন সহ আরও কাজ শেষ করে উঠে গেলাম প্লেনে বিনা ঝামেলায়। সিটে বসতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ, চোয়াল ঝুলে মাটিতে। এ আমি কি দেখছি?? এও কি সম্ভব??"”

কি ঘটেছিল বলার আগে একটু মুখবন্ধ দিয়ে নেই। বাসা থেকে দূরে থাকাতে বছরে কয়েকবার দুরপাল্লার জার্নি করা লাগত। বেশিরভাগই বাসে করে। আমার বিশ্ববিখ্যাত ফাটাকপালের বদৌলতে পাশের সিটে সবসময় বসতেন সেইমাপের লোকজন। হয়ত বিদিক স্বাস্থ্যের কেউ, অথবা বাস ছাড়া মাত্রই মুখ হা করে ঘুম দেয়া পাবলিক। মানুষের মুখে শুনতাম তাদের পাশে বসেছে দমবন্ধ করা সুন্দরী গোত্রের কেউ, আর আমি খালি হাপিত্যেশ করতাম, আর মনে মনে বলতাম, “খাড়াও একটু বড় হইয়া নেই, তারপর আমার পাশেও বসবে”। প্লেনে উঠে বুঝলাম আজই সেই দিন। পাশের সিটে বসেছে সেই মাপের সুন্দরী, যার বর্ণনা দিতে গেলে কি-বোর্ডের কালি তো শেষ হবেই, আমার আঙ্গুলও ফুলে কলাগাছও হয়ে যেতে পারে। সোনালী চুল, টানা টানা চোখ, খাড়া নাক, লম্বায় আমার সমান (আমি বাটকু সাইজ, গড়পড়তা বাঙ্গালীর সমান)। আমার ছিল উইন্ডো সিট, তার আইল সিট। আমি পাশে দাঁড়াতেই সে মুক্তোঝরা হাসি দিয়ে বলল, "এইটা তোমার সিট?" আমার কি আর তখন কোন কথা কানে যায়? সে আবার জিজ্ঞেস করল। ভ্যাবলার মত মাথা নাড়লাম। সে উঠে গিয়ে আমাকে জায়গা করে দিল। পাশে বসতেই আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিল। হাসি দেখে আমার দিলমে কেমন জানি করে উঠল, মনে হল আমার হার্ট বন্ধ হয়ে গেছে, কান দিয়ে গরম বাতাস বেরুচ্ছে (সাধারণত কোন মেয়ে আমার দিকে তাকালেই আমার কান গরম হয়ে যায়, কাল গাত্রবর্ণের কারণে লাল হয়েছে কিনা বুঝা যায় না)। সাহিত্যকরা একেই মনে হয় বলে “হৃদস্পন্দন হারিয়ে ফেলা”। তারপর সে বলল, “"কোথায় যাবে?”" বললাম, "স্পেন যাচ্ছি, কনফারেন্সে"। সে বলল, "“তুমি সাইন্টিস্ট?”" সে কথা বলছে, আমার কেমন জানি হাসফাঁস লাগছে। বহু কষ্টে বললাম, "হুমম"। সে বলল, “"আমিও কনফারেন্সে যাচ্ছি, তবে ইউএসএ-তে"”। আমি আবারও বললাম, "হুমম"। এইবার সে হেসে বলল, "তুমি তো হুমম ছাড়া কিছু বলছ না, হ্যাভ অ্যা নাইস জার্নি।" আমি মনে মনে বললাম, “"জীবনে এই প্রথম পাশে একটা অগ্নিকুণ্ড বসেছে, মুখ দিয়ে হুমম হামম ছাড়া আর কিইবা বের হবে?"” মুখে বললাম, "হুমম, ইউ ঠু।" সে আবারও তার ৩২ দন্ত-বিকশিত করে আরেকটা হাসি দিল। আমার তখন মনে হচ্ছে এই মহিলা পাশে না বসলেই ভাল হত। জার্ণিটা ভালভাবে এঞ্জয় করা যেত, এখন তো পুরা ছিরিঙ্খলা। না পারছি জার্ণি এঞ্জয় করতে, না পারছি সহযাত্রীর সাহচার্য এঞ্জয় করতে। এইদিকে দু-চোখে রাজ্যের ঘুম।তারপর মনে মনে কয়েন টস করলাম, ঘুমাব? নাকি জার্ণি এঞ্জয় করব? ঘুম বিপুল ভোটে জয়যুক্ত হল। কি আর করা? কম্বলমুড়ি দিয়ে দিলাম ঘুম।

মাঝে একবার ঘুম ভাংল। দেখি সুন্দরীর কানে হেডফোন, হাতে আইফোন, সামনে ম্যাকবুক। বুঝলাম মহিলা অ্যাপেল ফ্যানাটিক। আমি মোচড় দিতেই আমার দিকে মুখ ফিরিয়ে হাসি দিয়ে বলল, “"ভাল ঘুম দিলে মনে হচ্ছে?"” আবারও যথাসাধ্য ভদ্রতা বজায় রেখে বললাম, "হুমম"। ভয়ে একটা পাংগিও মারতে পারলাম না, অথচ পুরো শরীর কেমন যেন করছে একটা মোচড় মারার জন্য। ভদ্রমহিলা তার হাতব্যাগ খুলে মেকাপবক্স বের করছে, আমার কেন যেন মনে হলো তার মেকাপ বক্সও অ্যাপেলেরই হবে। আবার চিন্তা করলাম, অ্যাপেল কি মেকাপ বক্স বানায়? তার হাতে যেই পরিমাণ অ্যাপেলের জিনিসপত্র, মেকআপের উপকরণও অ্যাপেলের হওয়া বিচিত্র না। কিন্তু না, আমার আশার গুড়ে বালি ঢেলে দিয়ে সে নন-অ্যাপেল মেকআপ বক্স বের করল। হালকা করে লিপস্টিক দিল, ব্রাশ বের করে শিল্পির মত করে গালে পাউডার দিল, আমি আড়চোখে দেখলাম এবং এক সময় আবার কম্বলমুড়ি দিয়ে ঘুম দিলাম। ঘুম ভাংল পাইলটের ঘোষণায়। আমরা মন্ট্রিয়েল পৌছে গেছি। এখানে আমার ট্রান্সিট। পাইলটের ঘোষণার সাথে ঘড়ির সময় মিলিয়ে নিলাম। দেখলাম হাতে ঘন্টাখানেকের মত সময় আছে। আমার পরবর্তী বোর্ডিং গেট বেশ দূরে। নামার সময় সুন্দরী আবারও দিলমে চাক্কু লাগানো হাসি দিয়ে বলল, "“বেস্ট অফ লাক উইথ ইউর কনফারেন্স, সি ইউ।"“ আমি ধন্যবাদ দিয়েই আর কথা খুঁজে পেলাম না।

প্লেন থেকে নেমে আমি হাঁটা শুরু করলাম আমার পরবর্তী বোর্ডিং গেটের দিকে। প্রায় আধা ঘন্টা সময় যাবত অনন্তকাল ধরে হাঁটলাম। চোখে এখনও ঘুম লেগে আছে। ইচ্ছা করছে হাঁটতে হাঁটতেই ঘুমাই। মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম, এইবার প্লেনে উঠে আর কোন কথা নয়। সোজা ঘুম দিব। হাঁটতে হাঁটতে এক সময় পৌছে গেলাম। অইখানে যেয়ে দেখি এখনও বোর্ডিং শুরু হয়নি, হবে হবে করছে। ভাবলাম এই ফাঁকে খোমাখাতায় একটা স্ট্যাটাস দেই। ল্যাপ্টপ খুলে দিলাম স্ট্যাটাস। মেইল চেক করলাম, অ্যালেক্স মেইল দিয়েছে। আমি বার্সেলোনায় কোন স্টেশন থেকে জারাগোজার ট্রেনে উঠব, জারাগোজায় নেমে কিভাবে হোটেলে যাব এইসব। আমি এইগুলি আমার চোথায় টুকে নিলাম। লাউডস্পিকারে ডাক পড়ল। উঠে বোর্ডিং করে ফেললাম। প্লেনে যেয়ে সিটে বসে পড়লাম। এইবার আমার আইল সিট। সহযাত্রী এখনও আসেনি। আমি বালিশ কম্বল খুলে ঘুমের গোছগাছ শুরু করলাম। হঠাত নারী কন্ঠের ক্যাঁচ-ম্যাচ শুনে মাথা তুলতেই দেখি চারটা জলজ্যান্ত সুন্দরী খল খল করতে করতে এদিকে আসছে। এবং আমাকে অবাক করে দিয়ে তারা আমার সিটের পাশে দাঁড়িয়ে গেল। বুঝলাম এইবারও কপালে খারাবি আছে। তাদের সিট পড়েছে মাঝের তিন সিট এবং একটা আমার পাশে। তারা ভাগাভাগি করে বসে পড়ল, তিনজন মাঝের সিটে, একজন আমার পাশের উইন্ডো সিটে। বসার আগে তারা উপরের ট্রাঙ্কে তাদের ব্যাগ রাখতে গিয়ে আমার উপর ফেলল দুইবার। ভদ্রতার খাতিরে আমিই উঠে তাদের গাট্টিবোচকা জায়গামত রেখে দিলাম। আমার পাশের জন বসে গেল। তারা এখনও আগের মতই খলখল করছে। ভাবটা এমন যেন বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করে নানা বাড়ি যাচ্ছে। আমি মনে মনে প্রমাদ গুনছি। এইবারো আমার ঘুম গেল মনে হয়।

কিছুক্ষণ পর টের পেলাম। যেই তিনজন একসাথে বসেছে, তারা সমানে কথা বলে যাচ্ছে, হাসতে হাসতে একজন আরেক জনের গায়ের উপর ভেঙ্গে পড়ছে, আর মাঝে মাঝে তার কিছু অংশ এই পারে বসা বান্ধবীর দিকে পাস করছে। তখন এই বান্ধবীও প্লেনের সবাইকে শুনিয়ে শুনিয়ে খিলখিল করে হাসছে। আমার আবারও 'ছাইড়া দে মা, কাইন্দা বাঁচি' অবস্থা। একটু চোখ লেগে আসে, আবার তাদের হাসির দমকে জেগে উঠি। এইভাবে কয়েকবার করার পর বুঝলাম আর সম্ভব না। উঠে চলে গেলাম এয়ার হোস্টেসদের কেবিনের দিকে। পানি খেলাম, ওয়াশরুমে গিয়ে মাথায় ঘাড়ে পানি দিলাম। আয়নায় দেখলাম চোখজোড়া লাল টকটকে হয়ে আছে। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে এয়ারহোস্টেসদের দাবড়ানি খেয়ে আবার সিটে বসলাম। একটা মুভি যে দেখব তারও উপায় নেই। এই প্লেনটা এয়ার কানাডার আদ্যিকালের প্লেনগুলির মধ্যে একটা। গোটা প্লেনে এক্টাই মনিটর, যেটা একেবারে ফ্রন্ট সিটের সামনে। এই জিনিসে মুভি দেখা সম্ভব না। এইদিকে ওই চার সুন্দরীর খল খল চলছেই। ওই তিনজন এইবার নেইল পলিশ নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট শুরু করেছে। এ ওর নখে লাগিয়ে দিচ্ছে। আমার পাশে বসা জন কি আর এই আনন্দ থেকে দূরে থাকতে পারে? সে এখান থেকেই তাদের সেই এক্সপেরিমেন্টে অংশ নিচ্ছে তার বিদগ্ধ মতামত জানিয়ে। আর তাদের সব কথা বার্তাই যাচ্ছে আমার উপর দিয়ে। আমার ততক্ষণে মাথা ঢিপ ঢিপ করছে, ইচ্ছা করছে একেকটাকে ধরে জানালা দিয়ে বাইরে ফেলে দেই। এইভাবে চলতে চলতে এক পর্যায়ে খাবার আসল। গোগ্রাসে গিললাম। এইবার শুরু হল আরেক যন্ত্রণা। তাদের সরঞ্জামাদি আনা নেওয়া করা। ব্যাগ থেকে জিনিস পত্র বের করা ইত্যাদি। বেশ কিছুক্ষণ এই নকশা করার পর সেটাও শেষ হল। আমি আল্লাহ্‌ আল্লাহ্‌ করছি যেন তারা একটু ক্লান্ত হয় এবং ঘুমিয়ে পড়ে, তাতে আমিও একটু শান্তিমত ঘুমাতে পারি। এক সময় আল্লাহ্‌ আমার দোয়া কবুল করলেন। তারা একটু চুপ করল। আমি কম্বলমুড়ি দিয়ে ঘুম দিলাম।

ঘুমের মধ্যে মনে হল কেউ আমাকে ধাক্কা দিচ্ছে। চোখ খুলব না খুলব না করতে করতেও খুললাম। দেখি আমার পাশে বসা সুন্দরী সিটের উপর পা তুলে হাঁটু মুড়ে বই পড়ছে, আর তার হাটুর গুঁতা লাগছে আমার হাতে। আমি মোচড় দিতেই একটা দন্তবিকশিত হাসি দিয়ে বলল, "“দুঃখিত, খেয়াল করিনি, তোমার ঘুমের অসুবিধা করলাম”।" মনে মনে বললাম, “"অসুবিধা!? ক যে বারোটা বাজাইস”।" মুখে বললাম, "ঠিক আছে, সমস্যা নেই”।" সে বলল, "“ভালই তো ঘুম দিলে”।" আমি একটা হাইচাপা দিয়ে কোনমতে বললাম, "‘হুমম’।" কিছুক্ষণ চুপচাপ। আমি ঝিমাচ্ছি, সে বই পড়ছে। সে কিছুক্ষণ পরপর আমার দিকে তাকাচ্ছে। মনে হয় কিছু জিজ্ঞেস করতে চায়। আমি একবার ঘাড় ঘুরাতেই শুরু করল, "“তুমি কি কর?"”। বললাম, "পড়াশুনা করি।" "“কোন স্কুলে?”" "“ওরে না রে, স্কুলে না, ভার্সিটিতে।" "“অঅ, কোন ইয়ারে?"” "“ওরে না রে, ইয়ারে না। মাস্টার্স করি।"“ "“মাস্টার্সে তোমরা কি কর?"” "“গবেষণা করি আর ছাত্র পড়াই”।" "“অঅ তুমি গবেষক? তাইলে তো তুমি সব জান”।" "‘ওরে না রে, সব কিছু কি জানা যায়? নিজে কি করি তাই তো ঠিকমত জানি না।" “"“না, গবেষকরা সব জানে, কিন্তু বলে না"।“ এতক্ষণ ভালই চলছিল। তারপর শুরু হল তার প্রশ্নের ছড়রা গুল্লি, "‘কুত্তার লেজ কেন বেকা? গরুর লেজ কেন সোজা? প্লেন কেমনে চলে? ব্যাক্টেরিয়া কেমনে কামড়ায়? সিঙ্গারার ভিত্রে আলু কেমনে ঢুকে?" এই জাতীয় তাবৎ লাইন বেলাইনের প্রশ্ন। কোনমতে চাপাচুপা দিয়া ছাড়া পেলাম। এমন সময় আবার খাবার আসল। তার প্রশ্নের হাত থেকে বাঁচার জন্য খাওয়া শুরু করলাম। তার খাওয়া শেষ হবার আগেই আমি গপাগপ গিলে আবার দিলাম ঘুম। ঘুম ভাংলা পাইলটের ঘোষনায়। আমরা বার্সেলোনায় পোঁছে গেছি। জানালা দিয়ে বাইরে তাকাতেই দেখলাম বিশাল বার্সেলোনা শহর। পাশের জন কি একটা দেখে তারস্বরে বান্ধবীদেরকে ডাকতে শুরু করল। তারা হুমড়ি খেয়ে এইদিকে পড়ার আগেই আমি আড়চোখে দেখলাম প্লেন সাগরের উপর গোত্তা খাচ্ছে। অসাধারণ দৃশ্য। উইন্ডোসিট না পাওয়ার বেদনায় মুষড়ে পড়লাম, এমন একটা সিন মিস করলাম। সুন্দরীরা আমার গায়ের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ছে দেখে আমি তাড়াতাড়ি সিট ছেড়ে দিলাম। আফসুস ছবি তুলতে পারলাম না। পাইলটের সিটবেল্ট বাঁধার ঘোষণা আসতেই তারা যার যার সিটে ফিরে এল। আমিও আমার জায়গায় ফিরে গেলাম। প্লেন অত্যন্ত সুন্দরভাবে ল্যান্ড করল। নিচে নেমে এলাম।

IMG_7993

বার্সেলোনা এয়ারপোর্ট, আমি ছবি তুলতারিনাই তো কি হইছে? গুগুল মামু আছে না?(ছবিসুত্র )

অত্যন্ত পরিপাটি করে সাজানো এয়ারপোর্ট, সবকিছু চকচক করছে। তবে খালি খালি। হাঁটতে হাঁটতে এক পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়ালাম ইমিগ্রেশন অফিসারের সামনে। অফিসার বাংলাদেশী পাসপোর্ট দেখে কেমন যেন একটু ভুরু কুঁচকাল। তারপর জিজ্ঞেস করল, "“কোত্থেকে আসছ?”" "“কানাডা থেকে”।" এইবার যেন একটু সহজ হল। “"কেন আসছ?"” "‘কনফারেন্সে’।" "“কনফারেন্স কোথায়?”" "“জারাগোজাতে”।" "কনফারেন্সের ইনভাইটেশন লেটার দেও।" এইত মারছে। এখন মনে পড়ল আমি এইসব কাগজ ভুল করে প্রিন্টারের উপর রেখে আসছি। কোনমতে বললাম, "ইনভাইটেশন তো অনলাইনে। আর আমার সাথে ইন্টারনেট নাই, তুমি কি আমারে নেটের লাইন দিতে পারো?" সে বলল, "থাক, জারাগোজাতে কোন হোটেলে থাকবা?" নাম বললাম, "“হোটেল রয়াল জারাগোজা”।" সে ফোন তুলে কল করার আগেই বললাম, "হোটেল তো আমার নামে বুক করা নাই, আছে আমার ফ্রেন্ডের নামে।" "“তাইলে আমি কেমনে বুঝুম যে তুমি কনফারেন্সে জারাগোজা যাইতেছ?" আমার হাতে পোস্টারের টিউব ছিল। সেটা দেখিয়ে বললাম, “ "এইযে, আমি এই পোস্টারটা প্রেজেন্ট করুম”।" সে বলল, "আইচ্ছা ঠিক আছে, তোমারে ছাইড়া দিলাম।" ততখনে আমার ঘাম ছুটে গেছে। ওখান থেকে ছাড়া পেয়ে, কনভেয়ার বেল্ট থেকে লাগেজ নিয়ে বুঝতে পারলাম ট্যাংকি ভরে গেছে, এখনি খালি না করতে পারলে পেট ফেটে যাবে, এতক্ষণ উত্তেজনায় টের পাইনি। ট্যাঙ্ক খালি করে বাইরে যেয়ে বুদ্ধির গোড়ায় একটু ধোঁয়া দিলাম আর পরবর্তী করণীয় ঠিক করলাম। সবার আগে ইনফরমেশন খুঁজতে হবে। দুইটা প্রশ্ন আছে। ইনফরমেশন (ইনফরমাসিও) বুথ পেলাম। যেয়ে গুগুল মামুর কাছ থেকে টুকলিফাই করা স্প্যানিশ দিয়ে বললাম, "“ওলা, আমি স্প্যানিশ কইতারিনা, তয় ইংলিশ কইতারি”।" ইনফরমেশনে বসা সুন্দরী বলল, "“কও”।" বললাম, "“আমি বার্সেলোনা সান্তে স্টেশনে যামু, কেমনে যামু কও। আর টাকা ভাংগামু কই? এইখানে কি মানি এক্সচেঞ্জার আছে?" "সে বলল, "“ভেরি গুড, তুমি লা কাইশা (আমি বানান লেখলাম La Kaisha) তে টাকা ভাঙ্গাইতে পারবা। আর নিচতলায় গেলে দেখবা শাটল বাস দাঁড়ানো আছে, ওইটা তোমারে এয়ারপোর্ট স্টেশনে নিয়া যাইব, অইখান থেইকা তুমি বার্সেলোনা সান্তে’র বাস পাইবা।“" আমি তাকে "“gracias"” বলে "লা কাইশা" খুঁজতে বের হলাম। পুরা স্টেশন তিনবার চক্কর দিলাম, কিন্ত লা কাইশা তো আর খুঁজে পাইনা। শেষে এক জায়গায় দেখলাম লেখা আছে “"La Caixa",” কাউন্টারও অনেকটা ব্যাংকের মত, অনেক পাবলিকও লাইন ধরা। মনে মনে সন্দেহ করে এই লাইনেই দাঁড়িয়ে গেলাম। না, ঠিকই আছে। এইটাই। টাকা ভাঙ্গালাম। এইবার আর নিচে যাওয়ার রাস্তা খুঁজে পাইনা। দেখলাম ওয়াকিটকি হাতে এক খালা দাঁড়িয়ে আছে। তাকে যেয়ে বললাম,” "ওলা, এয়ারপোর্ট স্টেশনে কেমনে যামু?"” সে কি বুঝল কি জানে, তার গায়ের শার্ট ধরে কইল, "বাস।" তার গায়ের সবুজ শার্ট, আমি বুঝলাম, সবুজ রঙের বাস, আর আঙ্গুল দিয়ে এস্কেলেটর দেখাল। বুঝতারলাম, এই রাস্তা দিয়ে নিচে নেমে সবুজ রঙের বাসে উঠতে হবে। যা করে আল্লায়, বলে এস্কেলেটর দিয়ে নামা শুরু করলাম, কিছুদুর নামতে দেখি আসলেই সবুজ রঙের বাস দাঁড়িয়ে আছে। লাগেজ টেনে হিচঁড়ে সেই বাসে উঠলাম। বাস সারা দুনিয়া ঘুরে মিনিট পাঁচেক পর আমাকে নামিয়ে দিল টার্মিনাল মত এক জায়গায়। মামারে জিজ্ঞেস করলাম, “"এইরুপুয়ের্তো স্তাসিও?" (এতক্ষণ এয়ারপোর্টে ঘুরাঘুরি করে বুঝতে পারছি ইংলিশ আর স্প্যানিশ কাছাকাছি ভাষা, পড়তে জানলেই হয়, অনেক শব্দ বুঝা যায়)। মামা তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে আমাকে বুঝাল যে, “ উপরের ফুটওভারব্রিজ দিয়ে অইপারে গেলেই এইরুপুয়ের্তো স্তাসিও। আমি সেখানে যেতেই দেখলাম মামা যা বলেছে, আমি তা বুঝেছি। নিজেকে নিয়ে বেশ গর্ব হল। ওইখানে যেয়ে দেখলাম টিকিট করতে হবে, মাগার কাউন্টার নেই, আছে মেশিন। মেশিনে আবার ইংলিশ নেই। আবার ছিরিংলা। যা করে আল্লায় বলে আন্দাজের উপর টিপ্তে শুরু করলাম। খুট করে একটা আওয়াজ হল, দেখলাম মেশিনটি একটি টিকেট প্রসব করেছে, আর আমার পাঁচ ইউরো থেকে বাকি পয়সা ফিরত দিয়েছে। ভিতরে ঢুকতেই একটি বাস দেখলাম। গার্ডকে বললাম, "“বার্সেলোনা সান্তে?" গার্ড মামা আঙ্গুল তুলে বাস দেখিয়ে দিল। কোনমতে বাসের ভিতরে ঢুকলাম। সাথে লাগেজ, কাঁধে ব্যাগ, আর হাতে পোস্টারের টিউব, বহুত ছিরিংলা করে একজায়গায় দাঁড়ালাম। বাস ছাড়ার আগ মুহুর্তে আবার দমবন্ধ করা, স্যান্ডোগেঞ্জী পড়া এক সুন্দরী এসে আমার সামনে দাঁড়াল। এইবার লম্বায় আমার চেয়ে বেশি, সাথে ট্যাটু করা এক পোলা। সুন্দরী হাত ছেড়ে দাঁড়িয়ে আছে, এই সময় ড্রাইভার মামা ব্রেক করল। সুন্দরী পরতে পরতেও উপরের রড ধরে দাঁড়িয়ে থাকল। কিন্ত তার এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকাটা আমার জন্য বড়ই বিব্রতকর। কারন আমি এমন এক চিপায়, আমার পক্ষে আর ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব না, আর আমার নাক মুখের সামনে সুন্দরীর রড ধরা হাতের বগল। সেখানে উঁকি দিচ্ছে ......থাক। আর নাইবা বলি। কোনমতে আড়চোখে বার্সেলোনা দেখতে লাগলাম। দেখেই বুঝা গেল অনেক পুরনো শহর। ছুটির দিন, মানুষজন তেমন নেই। ঢাকার সাথে অনেক মিল। কিছু কিছু জায়গা দেখে মনে হল, ঢাকা মনে হয় এই শহরকে দেখেই বানিয়েছে। আমি পুরা বাটে, সোজা তাকালে বগল, আর আড়চোখে তাকালে বার্সেলোনা। কতক্ষণ আর আড়চোখে তাকিয়ে থাকা যায়, তাই মাঝে মাঝে একটু চোখ সোজা করেই আবার বাইরে তাকাচ্ছি। এই করতে করতে এক সময় পোঁছে গেলাম বার্সেলোনা সান্তেতে।

এখন জারাগোজার টিকিট করতে হবে। স্টেশনে যেয়ে কাউন্টার খুঁজে টিকিট করলাম, হাতে তখনও আছে এক ঘন্টার কিছু বেশি সময়। এইবার রিলাক্স। কিন্তু কিছু খাওয়া দরকার। খুঁজে পেতে একটা ম্যাকডোনাল্ডস পেলাম। সেখান থেকে দুইটা বার্গার আর একটা লার্জ কোক মেরে দিয়ে স্টেশনের বাইরে গেলাম। বেশিদূর যাবার সাহস পেলাম না (অ্যালেক্সের বাপের বাচ্চা বলে দিয়েছে বার্সেলোনা বড়ই খারাপ জায়গা, তোমার জিনিস মুহুর্তেই নাই হয়ে যাবে, আমার হাতে আছে আমার বহু কষ্টের ধন আমার কেম্রা, এইটা নিলে আমি শেষ)। ওইখানে দাঁড়িয়ে দুই একটা ছবি তুল্লাম।

IMG_5407

বার্সেলোনা সান্তে স্তাসিও’র সামনে দাঁড়িয়ে।

ট্রেনের টাইম হয়ে এসেছে। যেয়ে দেখি এলাহি কান্ড। আবার এয়ারপোর্টের মত ব্যাগ স্ক্যান করিয়ে ঢুকতে হবে। ঢুকলাম। লাইনে দাঁড়ালাম, এক সময় ট্রেনও পেলাম। ট্রেনের নাম “রেনফে” (Renfe)। খুঁজতে খুঁজতে আমার বগি আর সিটও পেলাম। একদম শেষ বগির শেষ সিট। ভাবলাম এইটার এক্টা ছবি না তুল্লে অন্যায় হয়ে যাবে। তাই বাইরে যেয়ে একটা ছবিও তুল্লাম। ভিতরেও তুললাম।

IMG_5412

রেনফে ট্রেন, একদম শেষের যে জানালা দেখা যাচ্ছে, আমি বসেছিলাম তার পাশে।

IMG_5413

এই সেই সিট যেটাতে একদা গৃহবাসী বাঊল ভ্রমন করেছিল। সামনের সিট তখনও খালি, আগে যদি জানতাম সেই সিটে কি আসছে, তাহলে তারও একটা ছবি তুলে রাখতাম।

এইট্রেন জারাগোজা হয়ে মাদ্রিদ যাবে। ট্রেন একেবারে টাইমমত ছেড়ে দিল। দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে চলছে।

IMG_5418

দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে ট্রেন। ছবির নিচের দিকে তাকালেই তার গতি বোঝা যায়।

বাইরে বেশিক্ষন তাকানো যাচ্ছে না। মাথা ঘুরায়। শেষে না আবার বমি বমি লাগে এই ভয়ে ব্যাগ থেকে মাসুদ রানা বের করে পড়া শুরু করে দিলাম। আমার সামনের সিট তখনও ফাঁকা। আমি তখনো জানি না আমার জন্য কি অপেক্ষা করছে। মিনিট বিশেক পর ট্রেন একটি স্টেশনে থামল। কিছু যাত্রী নামল, কিছু উঠল। আমার সামনের সিটেও মনে হল একজন আসল। আমার চক্ষু আবার চড়কগাছ, চোয়াল আবারও মাটিতে। নাহ... এই ট্রিপে আর শান্তি পাবো বলে মনে হয় না............

অনেকক্ষণ লেখছি, যাই, চা খেয়ে আসি।
ওই বুলেট সবাইরে আদা-লেবু দিয়া চা চু দে।

গৃহবাসী বাউল

grrihobasibaul@gmail.com

বিঃদ্রঃ ফাহিম পোলাডা বড়ই বদ। মনে করছিলাম দুইটা লেইখাই খেমা দিমু, এই পোলার গুতাগুতিতে পারলাম না।

আগের পর্বগুলি পড়তে চাইলে এইখানে গুতান
ইউরোট্রিপঃ যাত্রা শুরুর আগে- ১
ইউরোট্রিপঃ যাত্রা শুরুর আগে- ২


মন্তব্য

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

লেখা মজারু হয়েছে। হো হো হো হাততালি
ছবি এত কম কেন?
পরের পর্ব যেন বেশিদিন ঝুলাই রেখেন না, তাইলে কিন্তু রেগে টং

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

লেখার স্বাদ পাওয়ার জন্য ধইন্যা, পুরাটাই আপনার কৃতিত্ব।
পরে এত্ত ছবি দিব যে তখন বলবেন লেখা এত্ত কম কেন? চাল্লু
না ঝুলাইলে লম্বা হবে কেমনে? রাগ করে লাভ নেই চোখ টিপি
বাই দা ওয়ে, আপনার লেখায় আমি কোনদিন মন্তব্য করেছি কিনা ঠিক মনে নেই, আজ চান্স পেয়ে করে যাই, আপনি অসাধারণ লেখেন। আমি আপনার সব লেখাই পড়ি। শুধু আইলসামির কারনে মন্তব্য করতে পারি না। নাহলে সবগুলিতেই করতাম।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

ধুর মিয়া, এত আইলসা হলে চলবে? এত মজা করে লিখেন পড়তে পড়তে হাসি আর হাসতে হাসতে পড়ি। প্লিজ একটু নিয়মিত হন, আমরাও বাউলের কাজকর্ম আরও জানতে পারি।
প্রশংসার জন্য অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- লইজ্জা লাগে
আমি তো অচল মানুষ, কি আর লিখি! চিন্তিত
নাহ, বাউলের মন্তব্য পাওয়া আমার কুনদিন হইল না। ইয়ে, মানে...

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

কি করমু? আইলসামি তো ছাড়তে পারি না। মন খারাপ
আপ্নে কি আর লিখেন? এইটা আপ্নের বিনয়। চাল্লু
করমু, একটু আইলসামি কমুক, আপ্নের পোস্টেও মন্তব্য করমু। ম্যাঁও

বেচারাথেরিয়াম এর ছবি

আপনের মিয়া কপাল, পুরাই কপাল। পুরা ট্রিপে সামনে পিছনে পাশে একটা মুশকো জোয়ানও পরে নাই। আমার যে এইরাম একটা কপাল কবে হইব!!! দেঁতো হাসি
আর ট্রেনে কারে দেখলেন এইডা না কইয়া কামটা ভালা করলেন না, সচল কি হিন্দী সিরিয়াল পাইছেন নি রেগে টং

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

হ, কপালই তো। নাইলে এত্ত তকলিফ কইরা ট্রিপ মারতে হয়? জার্নিতে সুন্দরী অপেক্ষা মুশকো জোয়ান উত্তম। একবার সুন্দরী পড়ুক, মজা টের পাইবেন।
ট্রেনে পাইছি একজনরে, তার কথা কমু, একটু ওয়েটান।
লেখা পড়া ও মন্তব্য করার জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ফাহিম হাসান এর ছবি

হুঁ, আমি বদ - আর আপনি যে দুই পর্বে উপ্রে উঠায় মই কেড়ে নিয়ে গেলেন সেইটার কী হবে?

লেখা শামুকের গতিতে আগাচ্ছে - শুরু করেছেন সভ্যতার উষালগ্ন থেকে আর ঠিক জায়গামত চা খেতে যাচ্ছেন - এইসব আর চলবে না। আরো ছবি যুক্ত করে পরের পর্ব দ্যান।

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

তুমি আর কথা কইও না মিয়া। তোমার গুতাগুতিতে এইটা ছাড়লাম।

আররে মিয়া স্লো অ্যান্ড স্টিডি উইন্স দ্যা রেইস। আস্তে ধীরে আগাই, চা চু খাই, চেত ক্যা?
পরে এত ছবি দিমু যে তখন কইবা লেখা এত্ত কম কেন, লেখা দেন, লেখা দেন
তবে তোমারে অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনে তো বেশ ভাল লেখেন। ফাহিমের কাছে আপ্নের গল্প শুনলাম। ফাহিম পোলাটা সবাইরেই লেখার জন্যে গুতায়। যাক এই গুতানির বদৌলতে আপনার আগুন-গরম-ইউরোট্রিপের ইতিহাস কিছুটা হইলেও জানা হইল। তবে সব যে বলতেছেন না সেটা তো বোঝাই যাচ্ছে। যুবা ১৮+ ট্যাগে আমাদের মত অ্যাডাল্ট মাইন্ডের জন্যেও কিছু লেখেন, 'যাত্রার ফাঁকে ফাঁকে' টাইপ কিছু। আর সহযাত্রীদের ছবি দেন, জান্নি কি আফনে একাই করলেন নাকি! এ তো বড্ড বেইন্সাফি!

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

আররে না রে ভাই, ভাল আর লেখি কই? কিছুই তো কন্সট্রাকশন-ডিকন্সট্রাকশন করতে পারলাম না, গ্রান্ড নেরেটিভ তো দুরের কথা নেরেটিভেই যাইতারলামনা। লেখা ভাল হইব কেমনে? লেখেন তো আপনেরা। সারাদিন পড়লেও ক্লান্ত লাগে না।
ফাহিম আমার কি গল্প যে করছে আল্লাই জানে। ওর সব কথা বিশ্বাস কইরেন না, পোলা বড়ই বদ।
লেখা পড়ার ও মন্তব্য করার জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সাবেকা সুলতানা এর ছবি

আগের গুলা পড়ি নাই, প

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

ব্যাপার না, আস্তে আস্তে পড়ে ফেলেন হাসি পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

সাবেকা সুলতানা এর ছবি

সব একসাথে পড়ব, কিছুটা পড়এই বুঝেছি অনেক মজার হয়েছে লেখাগুলো হাসি

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

বাপ্পীহায়াত এর ছবি

হো হো হো
আপনার লিখার স্টাইলটা খুবই ভাল লাগে, সচলে এই ধরনের লিখা খুব বেশি দেখা যায়না।
এক বসাতেই পুরা পর্ব পড়লাম, এখন নীচের কুশ্চেনের জবাব দেন দেখি:

১# কুশ্চেন: সুন্দরী নাম্বার ১ (এডমন্টন টু মন্ট্রিয়াল ফ্লাইট) কি ব্রুনেট নাকি ব্লন্ড?

২# কুশ্চেন: সুন্দরী নাম্বার ৫ (মন্ট্রিয়াল টু বার্সিলোনা ফ্লাইট) কি ব্রুনেট নাকি ব্লন্ড?

৩# কুশ্চেন: সুন্দরী নাম্বার ৬ (বার্সিলোনা বাস যাত্রা) কি ব্রুনেট নাকি ব্লন্ড?

আর বরং ত্যানা না প্যাঁচাই... কিন্তু এখনো যদি উপ্রের কুশ্চেনগুলার কারণ না বুঝেন তাইলে রেনফে ট্রেনের সুন্দরীর খোমা সহ ইউরোট্রিপ-২ তাড়াতাড়ি ছাড়েন মিঁয়াভাই চোখ টিপি

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

১। এইটা পোস্টেই লেখা আছে, সোনালি চুল।
২। কালো চুল, চেহারায় কিঞ্ছিত মেক্সিকান ভাব, আর স্বাস্থ্য কিঞ্ছিত ভাল
৩। কালো চুল, ছিলিম ফিগার, মাগার পোক্ত

লেখা তো দেখি ভালোই মনোযোগ দিয়া পড়ছেন, ভেরি গুড। পুরা সিরিজ শেষ হোক, তারপর ক্লাশটেস্ট দিবেন। চোখ টিপি

এই স্টাইল আর দেখবেন কেমনে? সচলে সবাই পাঙ্খা পাঙ্খা লেখক, আমি আমি তাগো তুলনায় চক্ষুনি মাছ, দয়া কইরা যে পড়ছেন, আর কমেন্ট করছেন এইটাই তো আপ্নেগো বদান্যতা।

অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

স্যাম এর ছবি

বাউল ইজ ব্যাক - আর আমি হ্যাপি দেঁতো হাসি

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

স্যাম হ্যাপি, বাউল হ্যাপি হাততালি
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মনি শামিম এর ছবি

সত্যি, জটিল লিখেছেন, হাসতে হাসতে গড়াগড়ি, আমি এমন ভ্রমন কাহিনী কেন লিখতে পারিনা, কেন, কেন। মন খারাপ

-মনি শামিম

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

কি যে বলেন না শামিম ভাই, আপনার লেখা আর ছবি তো পুরা ছম্মক ছল্ল, অইগুলির ধারে কাছ দিয়া ও তো আমার লেখা যায় নাই। আমি তো আপ্নের ছবি দেখি আর আফসোস করি। আহা,যদি আপ্নের মত ছবি তুলতারতাম।
লেখা পড়ে আবার কষ্ট করে মন্তব্য করছেন, অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

কৌস্তুভ এর ছবি

ছি ছি ছি, আপনি এক্কেরে অচলীল লেখক!

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

আঁই কিচ্চি? ইয়ে, মানে...

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

যে কয়টা সুন্দরী মেয়ে আপনার যাত্রা সঙ্গী ছিলো, মাসুদ্রানা হইলে প্রত্যেক্টারে ডিনারে (আহেম) নিয়ে যাইত। আপনি মিয়া কোন কাজের না শয়তানী হাসি

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

কোথায় মাসুদ রানা, আর কোথায় আমি, এইটা একটা কথাই কইলেন বস? তার তো আর খাইটা খাওয়া লাগে না, সে ডিনারে কেন খালি, ডিনারের পরে ম্যাসাজেও নিতে পারে, আমি তো আর তা পারি না, তাইলে পাবলিক কইব যে পোলার চরিত্র খারাপ। খাইছে

অতিথি লেখক এর ছবি

এরেই কয় কপাল!! ওঁয়া ওঁয়া

ফারাসাত

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

হ রে ভাই, এরেই কয় কপাল ওঁয়া ওঁয়া

ধুসর জলছবি এর ছবি

আপনার তো যাত্রাসঙ্গিনী ভাগ্য সেরকম খাইছে দেঁতো হাসি
আপনার লেখা খুবই মজার। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম। হাসি

গৃহবাসী বাউল এর ছবি

আবার জিগায়, এই রকম যাত্রাসঙ্গিনী থাকলে লাইফ আর লাইফ থাকে না, পুরা জীবন হয়া যায়।
লেখা পড়া ও মন্তব্য করার জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

আপনার লেখাও বেশ ঝরঝরে, আমি আইলসামির জন্য কোনদিন মন্তব্য করি নাই, আজকে চামে কইয়া গেলাম। হাততালি

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

হ্যাঁ, 'ইউরোট্রিপ' সবই পড়েছি, মজাও পেয়েছি।

স্যাম এর ছবি

প্রথম জনের মেকাপ আমি শিউর MAC এর প্রোডাক্ট চোখ টিপি

সবজান্তা এর ছবি

সপ্তাহ দুয়েক আগে একদিন ল্যাবে বসে আছি, হঠাৎ মনে হলো, আপনার ইউরোট্রিপের সিরিজটা তো আর দেখিনি। এই পর্বটা যেদিন দিয়েছেন, সেদিনই পড়েছিলাম। আলস্যে মন্তব্য করা হয়নি।

আপনার বর্ণনা চমৎকার এবং সাবলীল। আর রসবোধও আমার কাছে ভালো লেগেছে। সিরিজটা দ্রুত শেষ করুন, না হলে ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে যে কোথা থেকে শুরু করেছিলেন হো হো হো

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।