গত এপ্রিল মাসে প্রায় সব দৈনিকে একযোগে খবর বেরোয় চট্টগ্রামের গিয়াসুদ্দিন এমন এক যন্ত্র বানিয়েছে যা থেকে অবিরাম বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এটি কোন খবর হত না, যদি না জ্বালানির প্রশ্নটি থাকত। গিয়াসুদ্দিনের চেরাগ কোন রকম জ্বালানী ছাড়াই বিদ্যুৎ তৈরি করে যেতে থাকবে।
কেবল সাংবাদিক না, রীতিমত বাঘা বাঘা লোকদের ডেকে গিয়াসুদ্দিন চট্টগ্রামে তার যন্ত্র দেখান। উপস্থিত প্রকৌশলীরা বিস্ময় প্রকাশ করেন। বিদ্যুতের সমস্যা শেষ হলে বলো ভবিষ্যতবাণী করেন। কেউ কেউ তার আবিষ্কাররে কৌশল গোপন রাখার কথা স্মরণ করিয়ে দেন।
গতকাল প্রথম আলোর শেষ পাতার একটা খবর। দিনাজপুরের শাহীদও একই কাজ করে ফেলেছেন। তিনি খ্যাতিমান লোকজনের পাশাপাশি, সামরিক লোকজনকেও দাওয়াত দিয়েছে তার কীর্তি দেখার জন্য। বরাবরের মতো সবাই এ ধরনের আবিষ্কারের ভূয়সী প্রসংসা করেছে।
দেশে থাকতে, কমাস পর পরই, নিউটনের সুত্র ভুল, জ্যামিতির অমুক উপপাদ্য ভুল ইত্যাদি লেখা দেখতাম।
মানুষের পাগলামি একটা পর্যায় পর্যন্ত হাসির খোরাক যোগায়। কিন্তু এ ব্যাপারগুলো যখন জাতীয় পত্রিকায় স্থান পায় তখন মানুষগুলোর জ্ঞান-বুদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। জিইসির মতো কোম্পানির কোন প্রকৌশলী গিয়াসুদ্দিনের যন্ত্র দেখে অভিভুত হয়ে যায়।
বড় বেদনার এ ধরনের অজ্ঞানতা; মানা যায় না।
মন্তব্য
আজিব। এইটা কখনও হয় নাকি? যেইসব প্রকৌশলীরা বিস্ময় প্রকাশ করছেন তাদের খুব দেখতে ইচ্ছা হচ্ছে।
---------------------------------
জানিনা জানবোনা... কোন স্কেলে গাইছে কোকিল
গুনিনা আমি গুনিনা...কার গালে কটা আছে তিল
তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয়াও ঠিক না। সে সত্যি সত্যি হয়ত যা দাবী করেছে সেটা ঠিক না। কিন্তু একটা অ্যাফোর্ট দিয়েছে এটা ঠিক। অ্যাচিভমেন্ট নয় বরং অ্যাফোর্টটার খানিকটা মূল্য দেয়া উচিৎ।
এই প্রসঙ্গে একটা মজার একটা এনালজি মাথায় এল। আমাদের বির্বতনের প্রথম দিকে নতুন প্রজাতির জীব জন্তু হবার কি ভীষণ সম্ভাবনা ছিল। সেই প্রসেসের কোথাও সামান্য এদিক ওদিক হলেই আজকের জীবজগৎ ভিন্ন হতে পারত। সে সময় নতুন নতুন লাইফ ফর্ম করাও সম্ভবপর ছিল। কিন্তু এখন আর নতুন লাইফ ফর্ম হওয়া সম্ভব নয়। মানুষ জন্ম নিতে মানুষের গর্ভেই জন্ম নিতে হবে, এভোলিউশানের মাধ্যমে আর সম্ভব নয়।
ঠিক একই ভাবে মানব জাতি সায়েন্টিফক এভোলিইশানের ফেইজ পার হয়ে এসেছে। এখন বিজ্ঞানী হতে হলে বিজ্ঞানে পড়াশোনা করতে হবে। এভোলিউশানের মাধ্যমে বিজ্ঞানী তৈরী হবে না।
জাস্ট আ থট।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
এটা কী বলেন?
নাটোরে এক লোক বছর খানেক আগে সেচের জন্য ইঞ্জিন বানাল। পানি থেকে চলবে, কোন তেল, বিদ্যুৎ লাগবে না। সে ব্যাটা গোটা দশেক মানুষ মেরে এখন পলাতক। এরা ওই লোকটার পরীক্ষণের সময় সাহায্য করতে গিয়েছিল। তাকে কী জেলে দেয়া উচিৎ না?
কারো যদি পদার্থবিদ্যায় সামান্য ধারণা থাকে তাহলে তুড়িই মারবে।
জীব বিজ্ঞান (যেখানে অনেক কিছুই অজ্ঞাত) আর পদার্থবিদ্যার তুলনা হয়?
আমাদের দেশে খুটখাট বুদ্ধি ওয়ালা মানুষ গুলান যদি এন্ট্রিপ্রিনিওর পাইত তাহলে কাজ দিতো। সামান্য যাদের বুদ্ধি শুদ্ধি আছে তারা খ্যাতির আশায় এইসব ফালতু আবিষ্কারের নেশায় মাতে। অমিত আহমেদের এমএসএনের টাইটেলটা চোখে ভাষছে : Wasted Headspace - ক্ষয়ে যাওয়া করোটি।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
এই নিয়ে এক আবুলের সাথে আমার বিশাল তর্ক হয়েছিলো। আমার কথা ছিলো এনার্জির জন্য কিছু একটা লাগবেই। সেটি পেট্রোলিয়াম হোক, বাতাস হোক, পানি হোক, বা অন্য কিছু। এমনি এমনি এনার্জি সম্ভব না। সাধারণ জ্ঞানের জিনিস এটা। এই নিয়ে তর্ক করতেও ইজ্জতে বাঁধে। মুর্শেদ ভাইয়ের এই মন্তব্যে বিপ্লব
ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল
আর কত!!
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অন্ততপক্ষে এ বিষয়ে দেশের তথাকথিত যোগ্য ব্যক্তিদের যোগ্যতা বোঝা গেছে ... ...
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।
এই পোস্টটা দেখে গিয়াসুদ্দিন কচি সাহেবকে নিয়ে এই দুইটা পোস্টের কথা মনে পড়লোঃ
http://www.somewhereinblog.net/blog/india/28790343
http://forum.projanmo.com/viewtopic.php?id=5005&p=1
এই লিংক দুইটায় দেখেন, প্রচুর মানুষ বলছে যে ব্যপারটা সত্যি হলে খুবই ভাল হবে ইত্যাদি ইত্যাদি (দ্যাট ইজ তারা আশা করে যে ব্যপারটা সত্যি হোক) ... বাংলাদেশে যারা নেট ইউজ করে তারা কেউই কিন্তু মূর্খ না, আর প্রজন্ম ফোরামে তো আমার ধারণা ছিল যথেষ্ট উচ্চশিক্ষিত মানুষজনই শুধু যান, সেখানে এমন একটা চিত্র যথেষ্টই হতাশাজনক ... সাধারণ মানুষজনকে বোকা বানানো তাহলে আর এমন কি?
আমার ভাবতে অবাক লাগে যে আমাদের কি এতই খারাপ অবস্থা যে শেষমেষ এইসব উদ্ভট গাঁজাখুরি জিনিসের ভরসায় থাকতে হবে? ... এর পরের স্টেজ কি? পীর-ফকির-পানিপড়া-জ্বিনসাধনা?
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...
আচ্ছা কাহিনী তাহলে এখানেও এসেছে !
এটা নিয়ে আসলে আমরা বিস্তর ধন্ধে পরেছি। কারণ তড়িৎপ্রকৌশলের ছাত্র হিসেবে এ ব্যাপারে আমি চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত, এমন কিছু হওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। কিন্তু খানিকটা হোঁচট খেলাম তখনই যখন দেখলাম, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক ( চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোন একটির ) যেন যন্ত্রটি দেখেছেন এবং বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। আমি জানি না এ ধরণের কিছু আদৌ সম্ভব কি না ! বছরের পর বছর ধরে গবেষণা করে আসা শক্তি সংক্রান্ত কাজগুলি, তাপগতিবিদ্যার সূত্র সব একদম পানিতে যাওয়ার কথা।
যাই হোক, এ ঘটনা দেখে আমাদের মনে খায়েশ জেগেছে নিজের চোখে যন্ত্রখানা দেখবার। একজন তরুণ শিক্ষককে ওইদিন বলেছি যে, আমরা যন্ত্রটা দেখতে আগ্রহী, ডিপার্টমেন্ট থেকে কোনভাবে ব্যবস্থা করা যায় কি না। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে কথা চলছে ডিপার্টমেন্টে।
আশা করি এর কোন গ্রহণযোগ্য সমাধান বের হবে দ্রুত।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
কোনো ধরনের জ্বালানি বা উপাদান ছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব নয়। আমার ক্ষোভ এখানে নয়, অন্য জায়গায়।
নব্বইয়ের পর থেকে সংবাদপত্র শিল্প দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। সার্কুলেশন বেড়েছে, পত্রিকার আকার বেড়েছে, বেড়েছে সাংবাদিকের সংখ্যাও। বাড়েনি কেবল সংবাদ-সংশ্লিষ্ট জ্ঞান এবং জানাশোনার পরিধি (কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া)।
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
ব্লগস্পট ব্লগ ::: ফেসবুক
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ
আজব ব্যাপারে বরাবরই আমাদের উত্সাহ বেশি। এটাও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে সেখানে যদি বোদ্ধারাও বুদ্ধুর মতো আচরন করেন তখন ব্যাপারটা কেমন যেন ইয়ে হয়ে যায়।
---------------------------------
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে !
-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।
এখন কেউ চাষবাস ছাড়া খাদ্যশস্য উৎপাদনের ব্যবস্থাটা করে দিলেই আমাদের আর কোনো সমস্যা থাকে না!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
এই একই চাপা আর কত বার শুনতে হবে!!
এসব ঘটনার পেছনে অনেক কিছু থাকে। আমেরিকাতে ২০০ বছর ধরে বিভিন্ন বাটপার এই রকম দাবি করে আসছে। সব ক্ষেত্রেই একই ঘ্টনা, ইনভেস্টর জোগাড় করে তাদের হাত থেকে পয়সা খসানো। কচি আর গিয়াসউদ্দিনের পেছনেও ব্যব্সায়ীরা আছে।
সাংবাদিক ভাইদের একটু বুঝে শুনে রিপোর্ট করা উচিত। একবার আমেরিকার ডাকটিকিটে একুশে ফেব্রুয়ারী, আরেকবার ১০ বছরের পুরানো ক্লাস্টারিং টেকনলজিতে বানানো মেশিনকে সুপার কম্পিউটার আবিষ্কার, আর এসব শুন্য থেকে বিদ্যুত বানানোর মেশিন ।।। এতো সব ভুয়া খবর ছাপিয়ে পত্রিকাগুলোরই মান কমছে।
যারা এর সাফাই গেয়েছে, তাদের দোষ ধরি না , বুয়েটের কারিগরদের আলোচনা গ্রুপেও অনেকে বলে বসেছে, হতেও তো পারে!! থার্মোডাইনামিক্স ১০১ এর ক্লাসে এরা সব ঘুমিয়েছে, তা বোঝা যায়।
----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com
----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম
আগেই বলছি, আমি নিজেও বিশ্বাস করিনি , এখনো করি না। কিন্তু একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক যদি বিস্ময় প্রকাশ করেন, তাহলে খানিকটা ভ্যাবাচ্যাকা খেতেই হয়। আমি আপাতত সেই ভ্যাবাচ্যাকা স্টেজে আছি, তবে আমি এখনো বিশ্বাস করি, এটা নিতান্ত ভূয়া। মুর্শেদ ভাই এর কথাটাই ঘুরিয়ে বলতে চাই, বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল বিদ্যা এখন উৎকর্ষের এমন সীমায় পৌছেছে যে তাত্বিক জ্ঞান ছাড়া কোন ব্যক্তি এই পর্যায়ের প্রধানতম আবিষ্কার করার সম্ভাবনা শূন্য।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
এই বিজ্ঞানীদের এক ভক্ত কিছুদিন আগে আমাকে এই বিষয়টা বোঝাতে এসেছিলেন
আমি তার সামানে সব কথা বিশ্বাস করে বলেছি- ভাইজান। বিদ্যুত লাগবে না
আপনার বিজ্ঞানীদের বলেন চাকরি না করে বেতন পাওযার একটা তরিকা আবিষ্কার করে দিতে
আমি ওটার মার্কেটিং করব
(অন্য যে কেউ এই বিষয়ে গবেষণা করতে পারেন)
নতুন মন্তব্য করুন