জিকা ভাইরাস মহামারী: সাবধানে থেকো, মা

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি
লিখেছেন অনার্য সঙ্গীত (তারিখ: মঙ্গল, ২৮/০৬/২০১৬ - ৬:৪৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

জিকা ভাইরাসের নামটা ভালো। শুনলেই কানে বাজতে থাকে, "ঝাকানাকা ঝাকানাকা..."। নামে ভাইরাসটাকে র্নিবিষ মনে হতে পারে। বাস্তবে, এতোকাল ধরে মানুষ জানেও তেমন। জিকা ভাইরাস পাত্তা দেয়ার কিছু নাই। জিকা সংক্রমণ হলেও খেয়ে দেয়ে খুব র্ফূতি করে বেড়ানো যাবে...। কিন্তু এখন আমরা জেনেছি র্ফূতি করা যাবে না। কেনো যাবে না সেই কথা বলতে এই লেখা।

জিকা ভাইরাসের গণ হচ্ছে ফ্লাভিভাইরাস। বংশ পরিচয়ের হিসেব করলে তাদের বদনাম করে দিন পার হবে। ওই বংশের সকলেই ভাইরাসঘটিত উটকো র্সদিজ্বর-মাথাব্যথার কারণ। ফ্লাভি-ভাইরাস গণের ভাইরাস যারা, তাদের প্রায়শই “এনসেফালাইটিস” এর কারণ হতে দেখা যায়। তাদের বেশিরভাগেরই মস্তিস্কে অথবা স্নায়ুতন্ত্রে সংক্রমণের স্বভাব।

মাথা মানেই স্নায়ুর কারবার। স্নায়ুর যে জাল শরীরের ছড়ানো, তাকে বলে শরীরের স্নায়ুতন্ত্র। জিকা ভাইরাস আর তার ভাইবেরাদরদের স্বভাব হচ্ছে মস্তিস্কে, মস্তিস্কের থলিতে আর স্নায়ুতে সংক্রমণ ঘটানো। এদের মাঝে আরেকটা মিল আছে। ফ্লাভিভাইরাস (জানামতে) সকলেই কোনো না কোনো বাহনে চড়ে হামলা করে। এদের বাহনের তালিকায় আছে মশা, উকুন আর উকুনের মতো পোকামাকড়। ডেঙ্গু আর জিকা ভাইরাস দুটিরই বাহন হচ্ছে এডিস মশা।

জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ দুই ধরনের হতে পারে। সাধারণ সংক্রমণ আর অসাধারণ সংক্রমণ।

ডেঙ্গু জ্বরকে বলসাবান দিয়ে ভালোমতো ঘষে ধুয়ে ফেললে যে ভাসা ভাসা ডেঙ্গুর গন্ধওয়ালা জ্বর থাকে, সেইটাকে জিকা ভাইরাসের সাধারণ সংক্রমণের সঙ্গে তুলনা করা যায়। সামান্য মথাব্যথা, হালকা জ্বর, একটু আধটু চোখ লাল হওয়া, কোমর-হাঁটু-কনুতে ব্যথাভাব, এসব হচ্ছে জিকা ভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ। আমাদের দেশের মতো “অতো উন্নত নয়”-দেশে, এইসব হালকা লক্ষণ কেউ পাত্তা দেয় না। সেইজন্য অনেক মানুষ জানেও না তারা সংক্রামিত হয়েছে। একবার জিকা ভাইরাসে সংক্রামিত হলে পরর্বতীতে আর সংক্রামিত না হওয়ার সম্ভাবণা বেশি। (কারণ হচ্ছে শরীরের রক্ষী কোষ, যারা প্রথম সংক্রমণে ভাইরাসকে চিনে রাখে আর পরবর্তী সংক্রমণে ভাইরাস কিছু ক্ষতি করে ওঠার আগেই তাদের ধরে কচুকাটা করে)।

সুতরাং সব মিলিয়ে, জিকা ভাইরাসের সাধারণ সংক্রমণে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। টের পাওয়ারও তেমন কিছু নেই। কিন্তু মায়েদের জন্য বাস্তবতা অন্যরকম। সেই প্রসঙ্গে আসছি।

৬০ বছরেরও বেশি হলো জিকা ভাইরাস সর্ম্পকে মানুষ জানে। মাঝে মাঝে মহামারীও হয়, হয়েছে। কেউ পাত্তা দেয় না। পাত্তা না দেয়ার একটা কারণ সম্ভবত গুরুত্ব দেয়ার মতো কাণ্ডজ্ঞান না থাকা। তবে বিশেষত, যেসব দেশে নিপাহ, জিকা, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মতো অসম্ভব শক্তিধর জীবাণুর সংক্রমণ বেশি হয়, সেসব দেশের সংক্রমণ গবেষণা হাস্যকর। তাদের গবেষণার ইচ্ছা নাই। সামান্য ইচ্ছে থাকলেও টাকা নাই। যে সামান্য টাকা আছে সেও তারা বন্দুক কিনে পাহাড়ি-আদিবাসী মেরে খরচ করে।

সাম্প্রতিক জিকা ভাইরাস মহামারী, ২০১৫ সালে শুরু হয়ে যেটা ছড়িয়েছে অন্তত ৬১টি দেশে সেটা নিয়ে চিন্তা না করলেই নয় (সকল দেশেই কিন্তু "মহামারী পরিস্থিতি" নয়) । সাম্প্রতিক মহামারীর প্রেক্ষিতে জিকা ভাইরাস সর্ম্পকিত গবেষণার পরিমাণ কিছু বেড়েছে । আর তাতে জানা গেছে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ আর কয়েকটা রোগের মাঝে শক্ত সর্ম্পকের কথা। একটা রোগ হচ্ছে গিলিন-বারি সিন্ড্রোম (ফরাসি Guillain–Barré। উচ্চারণের হিসেব করে এই নাম বাংলায় লেখা যায় বলে আমার জানা নেই)। গিলিন বারি সিন্ড্রোমে, শরীররে রক্ষী কোষেরা. মানে যাদের কাজ হচ্ছে শরীরকে সব জীবাণু আর বিগড়ে যাওয়া কোষ ধ্বংস করা, তারা গিয়ে শরীরের স্নাযু কোষে হামলা চালায়। সে খুব ভয়াবহ রোগ। তাতে শরীরের নানারকমের পেশীতে সংকেত আদানপ্রদানের শৃংখল বিগড়ে যেতে পারে। তারমানে হয়ত, ফুসফুসের যে পেশীর কাজ ফুসফুসকে ফুলিয়ে আর সংকুচিত করো শ্বাস প্রশ্বাস চালু রাখা, সেই পেশী অকেজো হয়ে গেলো! অথবা হয়তো হৃদপিণ্ডের পেশি গেলো অকেজো বা র্দুবল হয়ে আর তাতে প্রথম প্রেমে পড়ার মতো করে হৃদপিন্ডের ধুকপুকানির তাল গেলো কেটে! গিলিন-বারি সিন্ড্রোমের আরো অনেক কারণ থাকতে পারে। কিন্তু সে আজকের প্রসঙ্গ নয়।

মনে করিয়ে দেই, সংক্রমনের পর জিকা ভাইরাস মস্তিস্কে গিয়ে বাসা বাধে। মস্তিস্কে মানে “নিউরাল প্রোজেনিটর কোষে”। মস্তিস্কের সঙ্গে প্রোজেনিটর কোষের র্পাথক্য হচ্ছে বিস্কুটে আর ময়দায়। নিউরাল প্রোজেনিটর কোষ হচ্ছে সহজ কথায় নিউরাল স্টেম কোষ। মানে যেসব কোষ বেড়ে উঠে মস্তিস্ক তৈরি করে সেইসব কোষ। ময়দা থেকে নানান ক্যারিকেচারে যেমন বিস্কুট হয়, তেমন।

মস্তিস্ক তৈরির যে কোষ, তাতে যদি ভাইরাস বাসা বাধে তাহলে কী হয়?

এতোকিছু হয় যে তার সব এখনো আমরা জানতে পারিনি। তবে জিকা ভাইরাস সংক্রমণের সঙ্গে সর্ম্পক আছে এমন উপর্সগগুলো হলো হাইড্রাএনসেফালি (র্গভস্থ শিশুর মস্তিস্কের অংশবিশেষ তৈরি না হওয়া), মাইক্রোসেফালি (এই উপর্সগটার ব্যাখ্যা দিচ্ছি পরে), প্লাসেন্টাল ইনসাফিশিয়েন্সি (শিশুর র্গভনালীর র্দুবলতা/অক্ষমতা যার ফলে শিশু র্পযাপ্ত পুষ্টি পায় না), সেরেব্রাল ক্যালসিফিকেশন (মস্তিস্কের কোনো অংশে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম জমে যাওয়া), খুলির অস্বাভাবিক গঠন ইত্যাদি ইত্যাদি। জিকা সংক্রমণে মায়েদের র্গভপাত অথবা মৃতশিশু প্রসবের মতো র্দুঘটনা ঘটতে পারে। প্রজননতন্ত্র, পরিপাকতন্ত্র আর সংবহনতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবণাও রয়েছে।

এবার মাইক্রোসেফালি প্রসঙ্গে আসি। সাম্প্রতিক গবেষণায় জিকা ভাইরাসের সঙ্গে যে সমস্যার সর্ম্পক সবচে বেশি বেশি উচ্চারিত হচ্ছে, সেটি মাইক্রোসেফালি। মাইক্রোসেফালি বুঝে ফেলা খুব সহজ। মাইক্রো মানে ছোট/ক্ষুদ্র। আর সেফালাস মানে মাথা। র্গভবতী মায়েরা যদি জিকা ভাইরাসে সংক্রামিত হয় তাহলে শিশুদের মাইক্রোসেফালি হতে পারে। তাতে শিশুর মস্তিস্কের আকার ছোট হয়ে যায়। শিশুর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী হওয়া, উচ্চতা কমে যাওয়া, মৃগীরোগের মতো খিচুনি, বাক-শ্রবণপ্রতিবন্ধী হওয়া, এসবের কারণ মাইক্রোসেফালি।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি কী?

গবেষণা হয়না বলে ঠিক জানিনা। তবে বাংলাদেশে এডিস মশার বিচরণ আবাধ বলে, ধারনা করি সংক্রমণের হার অনেক। বাংলাদেশে (চট্টগ্রামে) জিকা ভাইরাস সংক্রমনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। (সংক্রমণ হয়েছিল সম্ভবত ২০১৪ সালে, প্রমাণ পাওয়া গেছে কিছুদিন আগে)।

কেবল বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বজুড়েই জিকা ভাইরাস সর্ম্পকিত গবেষণা হয়েছে সামান্যই। আমরা তাই জানিও সামান্য। জিকা ভাইরাস প্রধাণত ছড়ায় মশা থেকে। আর কোনো মাধ্যমে ছড়ায় কিনা তা এখনো নিশ্চিত নয়। সংক্রামিত রক্ত আর যৌন সর্ম্পক থেকেও জিকা ছড়াতে পারে। আর যেহেতু বাস্তবতার বিচারে জিকার বিপদ র্গভবতী মায়েদের, সেজন্য মায়েদেরকে আর মায়েদের আশেপাশে যারা আছে তাদের সর্তক থাকা দরকার সবচে বেশি।

মায়েদেরকে জানিয়ে দিতেই তাই লিখলাম। আমার ক্ষমতা এটুকুই। লেখাটাও।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল লাগলো লেখাটা।

ফাহমিদুল হান্নান রূপক

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ধন্যবাদ

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সজ এর ছবি

অনেকদিন পর! সেই রকম হাত আপানার!
আচ্ছা, হু( WHO) এর করা মশাদের জেনেটিক পরিবর্তনের কারণে জিকা হবার একটা গুজব শুনেছিলাম!

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ধন্যবাদ।
আমি এরকম কোনো গুজন শুনিনি। শুনে এটাকে খুবই র্দুবল গুজব বলে মনে হচ্ছে।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সোহেল ইমাম এর ছবি

খুবই প্রাসঙ্গিক এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মূল্যবান তথ্য গুলোর জন্য লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ। জিকা ভাইরাসের মোকাবিলায় আরো কি কি করনীয় আছে সে সম্পর্কে আমার মনে হয় আরো বেশি প্রচারনার দরকার আছে।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ধন্যবাদ।
ডেঙ্গু এবং জিকা মোকাবেলার পদ্ধতি একই। জিকার ক্ষেত্রে শুধু গর্ভবতী মায়েদের বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কল্পনা আক্তার এর ছবি

শক্ত একটি বিষয় অনেক সহজ করে লিখে বুঝিয়েছ। যতদুর সম্ভব হবে ছড়িয়ে দিবো, জানিয়ে দিবো অন্যদের। ধন্যবাদ রতন হাসি


........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ধন্যবাদ কল্পনাপা হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অতিথি লেখক এর ছবি

সহজ ভাষায় বিজ্ঞানের জটিল বিষয়গুলো বাংলায় লেখার জন্য আপনার ব্লগ আমাদের অনেকেরই প্রিয়। কিন্তু কোন কারণে যেন এই পোস্টটা অমন মনে হয়নি। আমি বলছি না যে এটার ভাষা কঠিন, বরং সহজ ভাষায় লেখা এই পোস্টটা আমার কাছে বিভ্রান্তিকর লেগেছে। ইনফরমাল টোন একটু বেশি হয়ে গেছে মনে হয়েছে, এবং এতে খেই হারিয়ে ফেলেছি।

জিকা নিয়ে খুব ক্লিয়ার-কাট একটা ব্লগ লেখার জন্য আপনাকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি যেটা রেফারেন্স হিসেবে আমার মতো সাধারণ মানুষদেরকে দিতে পারবো। জিকা কী, কেন হয়, কীভাবে হয়, কীভাবে ছড়ায়, এর উপসর্গগুলো কী কী, এর চিকিৎসা পদ্ধতিটি কী, সময়মতো বা ঠিকঠাক চিকিৎসা না হলে কী কী বিপদ হতে পারে, কীভাবে জিকা ঠেকানো যায় - এইসব নিয়ে লিখুন। বলতে পারেন এর অনেক কিছুই এই পোস্ট কাভার করেছে। কিন্তু ঐ যে বললাম, খেই হারিয়ে ফেলেছি, তাই আরেকটু সহজ আর স্পষ্ট ভাষায় লিখুন। ঐ দফাতে মজাটা না হয় নাই বা করলেন।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। পরের লেখায় আপনার পরামর্শ মনে রাখব। জিকা বিষয়ক আরেকটি নতুন ব্লগ লেখার মতো সময় পাবো কিনা জানিনা। তবে আপনার প্রশ্নগুলো সংক্ষিপ্ত জবাব আরেকবার লিখতে পারি।

জিকা কী?
- একটা ভাইরাসের নাম। উগান্ডা'র 'জিকা' বনের বানরের শরীরে প্রথম খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল বলে ভাইরাসটার নাম হয়েছে জিকা ভাইরাস। ফ্লাভিভাইরাস গণের একটি ভাইরাস এরা।

কেন হয়?
- জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে হয়। সংক্রমণের পর যেসব উপসর্গ দেখা যায় প্রাথমিকভাবে সেগুলোকে বলে 'জিকা ভাইরাস ডিজিজ"।

কীভাবে হয়?
- খুব বিস্তারিত এখনো অজানা। তবে জিকা ভাইরাস মস্তিস্ক এবং স্নায়ুকোষকে সংক্রামিত করে।

কীভাবে ছড়ায়?
- সাধারণভাবে এডিস মশার কামড় থেকে ছড়ায়। তবে সংক্রামিত রক্ত, যৌন সম্পর্ক এবং মায়ের শরীর থেকে গর্ভস্থ শিশুর শরীরের ছড়াতে পারে।

এর উপসর্গগুলো কী কী?
- জিকা ভাইরাস ডিজিজের উপসর্গ হালকা জ্বর, সর্দি, মাথা ব্যথা, শরীরে-হাড়ের সংযোগস্থলে ব্যথা, ত্বকে লাল দাগ (র‍্যাশ) ইত্যাদি।

এর চিকিৎসা পদ্ধতিটি কী?
- জিকা ভাইরাস ডিজিজের চিকিৎসা নেই। চিকিৎসার প্রয়োজনও হয়না। মায়েরা সংক্রামিত হলে গর্ভস্থ শিশুর যে সমস্যাগুলো হয় সেগুলো মারাত্মক। তবে সেগুলোরও এখনো কোনো চিকিৎসা নেই।

সময়মতো বা ঠিকঠাক চিকিৎসা না হলে কী কী বিপদ হতে পারে?
- চিকিৎসা করারই উপায় নেই এখনো। সংক্রমণ থেকে বাঁচাটাই নিরাপদ থাকার উপায়।

কীভাবে জিকা ঠেকানো যায় ?
- মশার বিস্তার রোধ করে। মশার কামড় থেকে গর্ভবতী মায়েদের বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লিখেছেন ।

যে সামান্য টাকা আছে সেও তারা বন্দুক কিনে পাহাড়ি-আদিবাসী মেরে খরচ করে।

গুরু গুরু

জিকার সবচেয়ে বড় আউটব্রেকটা ব্রাজিলে হলেও বিষুবরেখার আসেপাশের ট্রপিকেল আবহাওয়ার অনেকগুলো দেশেই কিন্তু এর উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে ।

বাংলাদেশে এর প্রাদুর্ভাবটা এখনো মনে প্রাথমিক পর্যায়ে । চট্টগ্রামের এই ঘটনার কথাই বলছেন কি ? মার্চের এই খবরের পর কিন্তু আর তেমন কোন খবর আসেনি পত্রপত্রিকায় ।

জিকা নিয়ে ভয়ের কিছু আছে কি না জানতে চাইলে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইডিসিআর) পরিচালক ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, এটি নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। তবে, সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। আফ্রিকায় এটি এই সময়ের একটি বড় সমস্যা। যেসব নারী গর্ভবতী হতে চান, তাদের সাবধান থাকতে হবে। যদি বাংলাদেশ থেকে ওখানে কেউ যান এবং গর্ভবতী হন, তাহলেই কেবল আতঙ্কের বিষয় আছে।

বাংলাদেশের ডাক্তারদের কথাবার্তা আসলে সবসময়ই কেমন যেন ধোঁয়াসা । উনি একদিকে বলছেন উদ্বীগ্ন হবার কারন নেই আরেকদিকে বলছেন কেবল গর্ভবতী হলে উদ্বীগ্ন হবার কারন আছে । উনার কথায় মনে হচ্ছে বাংলাদেশে বছরে হাতেগুনে কয়েকজন মাত্র গর্ভবতী হয় । তাই চিন্তার আমাদের তেমন কোন কারন নেই ।

মশার কামড়ের ব্যপারে আমাদের দেশে কেউই খুব একটা সতর্ক না । এই অসতর্কতার কারনে কয়েক লক্ষ মা গর্ভকালীন জটিলতার সম্মুখীন হতে পারে । হাজার হাজার শিশু মাইক্রোসেফালিতে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মাতে পারে ।

প্যারাসাইটোলজি (নিপসম) ও মাইক্রোবায়োলজি বিশেষজ্ঞ পরিচালক অধ্যাপক বেনজির আহমেদ বলেন, ভাইরাসটি বাংলাদেশে প্রবেশের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম। কারণ দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ খুব বেশি নেই।

সুত্র ঃ ইত্তেফাক

অথচ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে আমাদের প্বার্শবর্তী মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ফিলিপিনসে জিকার ভাইরাস বেশ ভালো ভাবেই সঙ্ক্রমিত ।

বিষয়টাকে আমলে নিয়ে সরকারী বা বেসরকারী ভাবে অতি সত্বর সতর্কতামুলক প্রচারনা শুরু করা উচিৎ ।

মামুনুর রশীদ [ ভবঘুরে শুয়োপোকা ]
========================
mamun babu ২০০১ at gmail.com
হাজার মানুষের ভিড়ে আমি মানুষেরেই খুজে ফিরি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনি দেখছি খুবই পরিশ্রমী পাঠক! হাসি

জিকা ভাইরাসের বিস্তারের একটা সাম্প্রতিকতম চিত্র আছে এখানে:

সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

বাংলাদেশে এর প্রাদুর্ভাবটা এখনো মনে প্রাথমিক পর্যায়ে । চট্টগ্রামের এই ঘটনার কথাই বলছেন কি ? মার্চের এই খবরের পর কিন্তু আর তেমন কোন খবর আসেনি পত্রপত্রিকায় ।

হ্যাঁ, এটার কথাই বলছি। মজার বিষয় হচ্ছে, সংবাদটি এখন পেলেও যে রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে তা ২ বছর আগে থেকে সংরক্ষিত। তারমানে এটা দুবছর আগের সংবাদ যা আমরা এখন জানতে পারছি।

জিকা ইতমধ্যেই বাংলাদেশে ছড়িয়েছে। কিন্তু তার প্রকোপ কেমন তা জানিনা। "মহামারী কর্তৃপক্ষ" জানার চেষ্টা করেছেন বলেও মনে হয়না। মহামারী বিষয়ে সরকারী কর্মকর্তার দেয়া তথ্য কীভাবে কতটুকু গ্রহনযোগ্য সে নিয়ে আর মন্তব্য না করি!

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আগের মন্তব্য সম্পাদনা করতে পারছি না। ছবি ভেঙে যাচ্ছে।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

বহুদিন পর লিখলেন। মাঝে-মধ্যে আপনার জন্য নতুন কোনও ভাইরাস বানিয়ে ছেড়ে দিতে ইচ্ছে হয়!

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আমার জন্য বানাইলে ছেড়ে দিয়েন না। আমারে দিয়েন। পালব চোখ টিপি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

স্পর্শ এর ছবি

সর্দিকাশির ভাইরাস আক্রমন যেমন কয়েকদিন পর একা একাই সেরে যায়, জিকাও কি নিজে থেকেই সারে?
নাকি একবার হলে বাকি জীবন বয়ে বেড়াতে হবে?


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

নিজে থেকেই সেরে যায়। একবার হলে আর হওয়ার সম্ভাবণা নেই প্রায়।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অতিথি লেখক এর ছবি

দেখা যাচ্ছে সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিশনের চান্সটা আগে যতটা ভাবা হয়েছিল তার চেয়ে বেশি।

http://nyti.ms/29oVM0k

মামুনুর রশীদ [ ভবঘুরে শুয়োপোকা ]
======================== 
mamun babu ২০০১ at gmail.com
হাজার মানুষের ভিড়ে আমি মানুষেরেই খুজে ফিরি

অতিথি লেখক এর ছবি

মাথা মানেই স্নায়ুর কারবার। মাইগ্রেইন আমাকে ভাল বুঝিয়েছে সেটা। জিকা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কে ছিলাম। আপনার লেখা পড়ে এর কার্যক্রম ও বিস্তার জানলাম। ধন্যবাদ লেখক।

জান্নাতুন নাহার তন্দ্রা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।