অ্যান্টিবায়োটিক পরবর্তী যুগ: মানুষের বিদায় ঘন্টা?

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি
লিখেছেন অনার্য সঙ্গীত (তারিখ: সোম, ২৬/০৫/২০১৪ - ৬:২৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

খানিকটা কাব্যিক শোনাতে পারে। যেরকম বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে আর সামাজিক-রাজনৈতিক থ্রিলারে দেখা যায়, ঠিক সেইরকম মনে হতে পারে। কিন্তু আমি নিশ্চিত করছি, এইখানে কাব্যিক কিছু নেই। নিতান্তই বাস্তব দুঃসংবাদ লিখতে শুরু করেছি। আপনি পড়তে পারেন, নাও পড়তে পারেন। আমরা ইতিমধ্যেই আমাদের নির্বুদ্ধিতার খেসারত দিতে শুরু করেছি!

পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে যে বিপর্যয় হবে সেই কথা আরো কয়েকদশক আগে থেকেই বলে আসছে বিজ্ঞান। (তাপমাত্রা বৃদ্ধির দুঃসংবাদ দিতে এই লেখা নয়।) আমরা সেই তাপমাত্রা বৃদ্ধির শাককচুতে পাত্তা দেইনি! আমাদের পাত্তা দেয়ার সুযোগ কম ছিল। পাত্তা দিতে পারত রাষ্ট্র, রাষ্ট্রেরা। কিন্তু রাষ্ট্র যারা চালান তাদেরকে নির্বোধ এবং হৃদয়হীন হতে হয়। সেইজন্য বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়ে গেছে, বাড়ছে এবং আরো বাড়বে। আমরা ইতিমধ্যেই সেই পরিবর্তনের অনুভূতির সঙ্গে পরিচিত হয়ে গেছি। কিন্তু এ কেবল শুরু। পৃথিবী বদলাচ্ছে। আরো বদলাবে। নতুন প্রাণিকুল বিবর্তিত হবে। পৃথিবী হয়ত সুজলা সুফলা থেকে "সজলা খরস্রোতা' হয়ে উঠবে। পৃথিবী তার নতুন আরো সহনশীল প্রাণিকুল নিয়ে মহাশুন্যে ভেসে বেড়াবে ঠিকই। কেবল আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো!

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই কথাগুলো বলার কারণ হচ্ছে, একবার মনে করে নেয়া যে, সামাজিক প্রাণি হিসেবে আমরা নির্বোধ। বিচ্ছিন্ন সত্ত্বা হিসেবে আমাদের মাঝে অসাধারণ কৌতুহলী আর চিন্তাশক্তির অধিকারী মানুষেরা জন্মেছেন এবং জন্মাবেন। কিন্তু সংঘবদ্ধভাবে আমাদের চাইতে নির্বোধ গোঁয়ার প্রাণি আর হয়না।

×××

আমরা গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে অদ্ভুত এক স্বর্গরাজ্যে বাস করছি। গতশতকের মাঝামাঝি অথবা তার আগের সময়ে ফিরে গিয়ে যদি কিছুদিন আমরা বেঁচে আসতে পারতাম তাহলে জীবন কাকে বলে সেই ধারনা খানিকটা আমাদের হতে পারত!

টাইফয়েডে মানুষ মরে যেতে দেখেছেন? দেখবার সম্ভাবণা কম। কারো টাইফয়েড হয়েছে শুনে আৎকে উঠেছেন? দুঃখ পেয়েছেন খুব? ঠিক যেমন কারো ক্যান্সার হয়েছে শুনে দুঃখ পান, সেরকম? মনে হয়না। বরং ভেবেছেন ঠিকমত ওষুধ খেয়ে বিশ্রাম নিলেই সেরে উঠবে টাইফয়েডের রোগী। ফোঁড়া কাটতে হবে শুনে ভয় পেয়েছেন কখনো? ফোঁড়া কাটলে মানুষটা না-ও বাঁচতে পারে বলে ভেবেছেন? কলেরায় কত মানুষ মরতে দেখেছেন? ওলাবিবির আক্রমণে গঞ্জ-গ্রাম উজাড় হয়ে যেত একটা সময়ে। এই দেশে। পৃথিবীর অনেক দেশেই। শামুকে পা কেটে গিয়ে মানুষ মরে যেতে পারে বলে মনে হয় আপনার? আমরা জানি, সে প্রায় অসম্ভব।

পায়ে একটা কাঁটা ফুটে ধনুষ্টংকার হয়ে মরে যেত মানুষ। চোখের সামনে, দেখতে দেখতে। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর উঠে দুম করে মাঝরাত্তিরে নিঃশেষ হয়ে যেত প্রাণ। একটুখানি কাটা ঘা থেকে সংক্রমণে পচেগলে যেত মানুষ। মাত্র কয়েক দশক আগে। আমি অগুনতি নাম লিখতে পারি। যে কেউ পারবে। অগুনতি রোগে অগুনতি মানুষ মরে নিঃশেষ হয়ে যেত সারা পৃথিবী জুড়ে। খুব বেশি রোগের নাম শুনে ভয় পাইনা আমরা এখন। রোগীর জন্য সত্যিকারের দুঃখ হয় সেরকম রোগ কমই আছে এখনকার পৃথিবীতে। শেষপর্যায়ের ক্যান্সার অথবা খারাপ রকমের হেপাটাইটিস হয়েছে শুনলে কেবল এখন আমরা খানিকটা ভয় পাই!

অতি দীর্ঘ দিন হয় গড়পড়তা রোগের নামে আমাদের চোখ কাঁপে না। আগে একটা পরিবারের শিশু দুম করে একটা রোগ হয়ে মরে যেতে পারত খুব সহজে। আর সেই রোগের ভয়ে আতঙ্কে দিন কাটাত তার সব স্বজন। সেই ভয় এখন নেই বললেই চলে। আমাদের এখন স্বর্গবাসের দিন। আমাদের রয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক। যাদুর গুলি। রোগশোক আমড়াঢেঁকিতে ভয়ের অভিজ্ঞতা হতে দেয়নি আমাদের এই অ্যান্টিবায়োটিকেই।

×××

যে দুঃসংবাদটি দিতে চাইছিলাম, সেটি হচ্ছে, অ্যান্টিবায়োটিকের স্বর্ণযুগ শেষ হয়েছে। আমাদের স্বর্গবাসের সময়ও শেষ হয়েছে। আমাদের নরক দর্শনের দিন এখন। তবে কিছু হিসেবে আমরা খানিকটা ভাগ্যবান। সত্যিকারের নরক দেখবে আমাদের সন্তানেরা। বস্তুত নরক তারা এখন থেকেই দেখতে শুরু করেছে।

তৃতীয় প্রজন্মের সেফালোস্পোরিন একটা খুব ভালো ওষুধ ছিল। জুটিবেঁধে থাকা গোল গোল এক ব্যাকটেরিয়া জাতের শেষ ওষুধ। আগে সেফালোস্পোরিন খেলে ব্যাকটেরিয়া চামড়া ফুটো হয়ে তার নাড়িভুড়ি বাইরে এসে পড়ত। গণোকক্কাল সংক্রমণের (যেমন, গণোরিয়া) শেষ ভরসা সেফালোস্পোরিন এখন আর আমাদের ভরসা যোগাতে পারে না। সেফালোস্পোরিন প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে গেছে সারা দুনিয়ায়। আর এখনো সারা দুনিয়ায় প্রতিদিন কম করেও ১০ লাখ মানুষ গণোরিয়ায় সংক্রামিত হয় (সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা)!

কার্বাপিনেম জাতের অসাধারণ অ্যান্টিবায়োটিক ছিল আমাদের। প্রাণঘাতি পেটের অসুখের ওষুধ (নিশ্চয়ই হেসে ফেলছেন অনেকে? পেটের অসুখে আবার মানুষ মরে নাকি! এতদিন মরত না অ্যান্টিবায়োটিকের জোরেই) । শিশুদের নির্দিষ্ট কিছু সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, রক্তের সংক্রমণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে কার্বাপিনেম ছিল আমাদের বাঁচবার সর্বশেষ উপায়।

ফ্লোরোকুইনোলন নামের একটা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ এ বিরাট গন্ডগোল করে দিতে পারত। মুখ আর মূত্রনালীর সংক্রমণে অতি চমৎকার ওষুধ! এখনকার প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া ফ্লোরোকুইনোলনে ডুবেও মরবে না। আমাদের মায়েদের, মেয়েদের মুত্রনালীর সংক্রমনের ভয় সবচে বেশি । আমাদের শিশুদের রয়েছে মারাত্মক মুখের সংক্রমণের ভয়। আমরা কী করব এখন?

স্টেফাইলোকক্কাস অরিয়াস নামের একটা জাত রয়েছে ব্যাকটেরিয়ার। ল্যাবরেটরিতে খুব সহজে এতো দারুণসব পরীক্ষা করা যায় একে নিয়ে সে আর বলার নয়! এই জাতটাকে যখন পাওয়া যায় তখন পরীক্ষার পাত্রে স্বর্ণের মতো তাদের রং ছিল বলে এই জাতের নাম দেয়া হয়েছিল "অরিয়াস' (লাতিন শব্দ "অরাম' অর্থ স্বর্ণ)। আঙুরের মতো থোকা বেধে জটলা পাকিয়ে থাকে, আর দেখতে গোল বলে গোত্রের নাম হয়েছিল "স্টেফাইলোকক্কাস'। অতি চমৎকার ব্যাকটেরিয়া। বাস করে মানুষের ত্বকে। কিন্তু এরাই সামান্য কেটে গেলে অথবা নগন্য ক্ষত থেকে মানুষের জীবন নিয়ে নিতে পারে! এরা এই সময়ে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়াদের মধ্যে সামনের কাতারে রয়েছে!

এ সামান্যই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া তথ্য খানিকটা তুলে দিয়েছি। মূল রিপোর্টটা পড়লে বিস্তারিত জানা যেতে পারে।

২০১৪ সালের শেষ হিসেব থেকে আমরা এখন জানি, সারা পৃথিবী অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণুতে ছয়লাব হয়ে গেছে! খুব সামান্য সংক্রমণ আর সাধারণ রোগেও এখন মানুষ মরে যাবে। যেমন হতো ৫০ বছর আগে। যেসব সাধারণ রোগকে আমরা পাত্তা দিতে শিখিনি, খুব অবাক হয়ে এখন আবিষ্কার করব সেইসব রোগেই আমাদের প্রিয়জনেরা মরে যাচ্ছে! অবাক করা বিষয় হচ্ছে পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ এবং তা যাচাইয়ের ব্যবস্থা নেই। তারমানে আমরা জানিও না ঠিক কী কী বিপদ আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে! (সকল দেশেই ভারী আকারের প্রতিরক্ষা বাজেট রয়েছে! সত্যিকারের বুদ্ধিমান কোন প্রাণি যদি জানত আমরাও নিজেদেরকে বুদ্ধিমান বলে দাবী করি তাহলে কী হাসাহাসিটাই না তারা করত!)

আমাদের মতো প্রযুক্তিতে অনুন্নত এবং নির্বোধ দেশগুলো এখনো উন্নত পরীক্ষণের জন্য অন্য দেশের উপর নির্ভরশীল। আমরা প্রয়োজনীয় শুমারী এবং গবেষণা করি না। যেসব দেশ তাদের প্রয়োজনে শুমারী এবং গবেষণা করে তাদের তথ্য থেকে একটুখানি আমরা জানতে পাই! তার মানে হচ্ছে, পরদেশী শিকারীর কাছ থেকে আমরা জেনেছি বনে বাঘ, ভালুক, নেকড়ে, কুমির, শিয়াল ইত্যাদি রয়েছে। আমাদের নিজেদের শিকারী নেই বলে আমরা জানতে পারছি না বনে রাক্ষস রয়েছে কীনা! কে জানে হয়তো নানাজাতের রাক্ষস খোক্কসেও আমাদের জঙ্গল ভর্তি!

×××

ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হওয়ার বড় কারণ হচ্ছে তাদের জীবনের চক্র অতি দ্রুত ঘোরে। তারমানে তারা অতিদ্রুত বংশবৃদ্ধি করতে পারে।

জেনেটিক কোড, যাতে জীবনের নিয়ম লেখা থাকে, সে বদলায়। বদলানো কঠিন। কিন্তু বদলায়। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বদলে যায় প্রজাতির রকম। ব্যাকটেরিয়া যেহেতু দুচারদিনে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের যাত্রা পার করে ফেলে তাই তাদের জেনেটিক কোড বদলায় খুব দ্রুত। সেইজন্য তাদের ভেতর প্রতিরোধী জিন তৈরির সম্ভাবণাও বেশি।

এবং আমরা তাদেরকে সাহায্য করি। বুড়ো ডারউইনের কথা তো আপনারা জানেনই। প্রাকৃতিক নির্বাচনে যোগ্যরাই টিকে থাকে। আমরা সবাই মিলে প্রাকৃতিক নির্বাচনে খুব দ্রুত অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়াদের টিকে থাকার সুযোগ করে দেই। উদাহরণ দিয়ে বোঝাতে চেষ্টা করি।

ধরুন হারাধনের দশটি ছেলেকে ছেড়ে দেয়া হলো ঢাকা শহরে। তাদের আর দশটা মানুষের মতই অতি সাধারণ। কেবল তারা বিশেষ একটা পানির ফিল্টার বানাতে পারে যা আর কেই পারেনা। এখন তাদের পক্ষে ঢাকা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বাচ্চাকাচ্চা নাতিপুতি মিলে ঢাকা শহরে রাজত্ব করবার সম্ভাবণা ১৫ লক্ষে ১ (ধরছি ঢাকার জনসংখ্যা ১৫০ লক্ষ)। এতো কম সম্ভাবণা হলে সেটাকে পাত্তা না দিলেও চলে। এখন যদি একটা অজানা কারণে ঢাকার পানি বিষাক্ত হয়ে যায়? ওই একটি ফিল্টারের গুণে হারাধনের দশটি ছেলের ঢাকা শহরের মালিক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবণা একশোভাগ।

আমরা যখন আমাদের পছন্দমতো অ্যান্টিবায়োটিক কিনে কিনে খাই তখন ওইরকম প্রাকৃতিক নির্বাচনে সাধারণ ব্যাকটেরিয়া মেরে প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়াদের টিকে থাকার এবং ছড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেই।

একটা অ্যান্টিবায়োটিকের পরিচিতি আমাদের কাছে কেবল একটি ওষুধ। কিনে খেলেই হয়। কিন্তু বস্তুত অ্যান্টিবায়োটিকে মহাভারতের গল্প থাকে। সব অ্যান্টিবায়োটিক সব ব্যাকটেরিয়াকে মারতে পারেনা, সবের মাত্রা এক নয়, সবের ক্ষমতা এক নয়, সবের কার্যপ্রণালীও ভিন্ন! অ্যান্টবায়োটিক পরস্পরের বিরোধী হতে পারে, পরস্পরের সহযোগী হতে পারে। অন্য ওষুধ/পদার্থের উপস্থিতিতে কখনো ইতিবাচক কখনো নেতিবাচক আচরণ করতে পারে! একটা অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে দশটা মহাকাব্য লিখে ফেলা যায়। একশোটা জীবন পার করে দেয়া যায় একটা অ্যান্টিবায়োটিকের ঠিকুজি বুঝতে বুঝতে!

আমি বলছিনা সবাইকে অ্যান্টিবায়োটিকের মহাভারত মুখস্থ করে ফেলতে হবে। কিন্তু মানুষের সবচে প্রয়োজনীয় জিনিসটি অন্তত কীভাবে ব্যবহার করতে হয় সেই তথ্যটুকু জানার এবং সেটা মেনে চলার মতো বুদ্ধিমত্তা তো আমরা দেখাতেই পারতাম, তাইনা?

একটি ব্যাকটেরিয়ার একটি অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জিন থাকলে সেটা সে অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারে। তার নিজের বংশধরেরা তো সেই জিন পায়-ই। এমনকি সেই ব্যাকটেরিয়াটি যদি মরে ছাতু হয়ে যায় তবুও প্রকৃতিতে পড়ে থাকা তার প্রতিরোধী জিন তুলে নিয়ে কাজে লাগাতে পারে অন্য ব্যাকটেরিয়া! একটি ব্যাকটেরিয়া কীভাবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠতে পারে সেই তালিকা দেয়া তাই সহজ নয়!

সব মিলিয়ে সেজন্য আমরা নিশ্চিত জানি ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হবেই। কিন্তু আমরা সেই হার কমিয়ে আনতে পারি। তাদের ছড়িয়ে যাওয়া রোধ করতে পারি। আর পারি নতুন আরো শক্তিশালী, আরো বিশেষায়িত অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করতে! সেই ক্ষমতা আমাদের রয়েছে। কিন্তু এই পৃথিবীতে নতুন অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে গবেষণা হয় কতটা? আপনি সেই হিসেব নিজেই করতে পারেন। এই দেশের ১৬০ মিলিয়ন মানুষের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে গবেষণা করার মতো উচ্চতর গবেষণাগার একটিও নেই। ১৬ কোটি মানুষের একটি জাতির বুদ্ধিমত্তা যে কত করুণ কৌতুক হতে পারে সে জানতে আমাদেরকে দেখা যেতে পারে!

প্রসঙ্গত মনে পড়ল, আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। যুদ্ধবিমান রয়েছে। ধারণা করি, এইসব ক্ষেপণাস্ত্র কিনে বেড়ানো বুদ্ধিমানেরা ওই ক্ষেপণাস্ত্রে ভর করেই প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়াদের থেকে পালাবার চিন্তা করে নিশ্চিন্ত থাকেন! অথবা তারা নিজেরা যে কীরকম বিপদে রয়েছেন সে বুঝতে যেরকম বুদ্ধিমত্তা দরকার হয় ওনাদের বুদ্ধিমত্তা তার চাইতে খানিকটা বেশি বেশি!

×××

"ডিনায়াল' পর্যায়ে যারা নেই তারা সম্ভবত এখন কী করা যেতে পারে বলে একটা প্রশ্ন করতে চাইছেন।

এই পৃথিবীর সকলে মিলে চেষ্টা করা যেত। এবং সেরকম হলে মানুষের টিকে যাওয়া খানিকটা নিশ্চিত হতে পারত। কিন্তু সে হয়নি। হবেও না। সেইজন্য কোন আশার বানী শোনাতে পারছি না।

আগে ভাবতাম, অসুখ-বিসুখ তো মানুষের হয়ই। কোন ভয়ঙ্কর কিছু যেন না হয় আমার স্বজনদের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই হিসেবটা আজ নাহোক কাল পেতে হবে সেটাও জানতাম। কিন্তু বড্ড তাড়াতাড়ি দুঃসংবাদটা পেয়ে গেলাম বলে মনে হচ্ছে। অত্রি, চন্দ্রা আর সূর্য আমার ভাগ্নে-ভাগ্নী। এদের কথা ভেবে মায়া লাগে! ভাবতে কষ্ট হয়। ভাবনা শেষ হয়না, বরং থেমে যায়। যেসব ঠুনকো রোগকে পাত্তাই দিতে শিখিনি আমরা, সেইসব সামান্য সংক্রমণ থেকে কী বিপদ হতে পারে ভাবলে ভয়াবহ ক্রোধে মাথা বিস্ফোরিত হতে চায়!

বিশেষত যখন আমি জানি সবকিছুর পরেও কিছু বদলাবে না। পৃথিবীর শিক্ষা আর গবেষনা বাজেট কোন যাদুবলেই আশাপ্রদ হয়ে উঠবে না। পৃথিবীর নীতিনির্ধারকেরা কোন মন্ত্রেই মানুষের প্রতি মমতা দেখাতে শিখবে না!


মন্তব্য

মরুদ্যান এর ছবি

হায় হায় মন খারাপ

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

হ্যাঁ। হায় হায়!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এই মুহুর্তে এরকম একটা লেখার দরকার ছিল আমার। লেখাটা আমার কিছু প্রিয়জনদের শেয়ার করলাম ফেসবুকে যারা সামান্য অসুখেই এন্টিবায়োটিক কিনে খেতে পছন্দ করেন মুড়ি মুড়কির মতো। শুধু সাধারণ মানুষ না অধিকাংশ ডাক্তারও যে কোন সমস্যাতেই এন্টিবায়োটিক দিতে পছন্দ করেন এবং সরাসরি থার্ড জেনারেশান এন্টিবায়োটিক। যদ্দুর বুঝি থার্ড জেনারেশান এন্টিবায়োটিক ফাইনাল পর্বে খেলে, কিন্তু আজকাল তাদেরকেই প্রথম রাউন্ডে খেলতে নামিয়ে দেয়া হয়, ফলে চুড়ান্ত পর্বে খেলার জন্য আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না। তখন ব্যাকটেরিয়ার সামনে থাকে খালি গোলপোস্ট আর ভয়াবহ পরিণতি।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া-দাওয়া শেষ হয়ে গেলে এখন কী আর শেযার করে কিছু লাভ হবে! তঁদের বেশিরভাগেই এখন দ্বিগুন শক্তির অ্যান্টিবায়োটিকে ভরসা রাখবেন। দ্বিগুন শক্তির মানে হচ্ছে পরিমাণে দ্বিগুন!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

এক লহমা এর ছবি

চলুক খুব দরকারী লেখা। ৫ তারা অবশ্যই।
"পৃথিবীর শিক্ষা আর গবেষনা বাজেট কোন যাদুবলেই আশাপ্রদ হয়ে উঠবে না। পৃথিবীর নীতিনির্ধারকেরা কোন মন্ত্রেই মানুষের প্রতি মমতা দেখাতে শিখবে না!"
- আসল সমস্যা এখানেই।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অতিথি লেখক এর ছবি

খুবই জরুরী লেখা। লোকজন নিজেরা এন্টিবায়োটিক খেতে দারুন পছন্দ করে ! ফার্মেসির সেলস ম্যানরাও এন্টিবায়োটিক বিক্রি করতে আগ্রহী। নিজে মেডিকেল প্রফেশনের হওয়াতে প্রায়ই এমন রোগী পাই যারা নিজেরাই বলে দেয় যে, ভাল এন্টিবায়োটিক দিয়েন। প্রথমে যে প্রথম পর্যায় থেকে শুরু করতে হয় এটা সাধারন লোকজনকে বুঝানো খুব মুস্কিল। যেই ডাক্তার দামি ওষুধ দেয় সে তত বড় ডাক্তার, ডাক্তারটাও বড় ডাক্তার হওয়ার জন্য এন্টিবায়োটিক এর যথেচ্ছ ব্যবহার করে। কেউ একবারও ভাবে না, আমরা আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে কোন গভীর খাদের দিকে ঠেলে দিচ্ছি।

ইসরাত

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

হা হা হা! সম্মানী বেশি নিলেও বড় ডাক্তার হওয়া যায় বলে জানি! আমাদের শিক্ষাদীক্ষায় আসলে বিরাট গণ্ডগোল আছে!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অতিথি লেখক এর ছবি

খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে লিখেছেন। আমাদের মূলধারার গণমাধ্যমে এইসব বিষয় নিয়ে কোন আলোচনাই হয় না। উন্নতবিশ্বেও এন্টিবায়োটিকের পিছনে গবেষণার পরিমাণ খুবই কম। কোথায় যেন পড়েছিলাম, গত ২০ বছরে নতুন কোন এন্টিবায়োটিক আবিস্কৃত হয়নি বললেই চলে। জায়ান্ট ঔষধ কোম্পানিগুলো শুধু 'ব্লকবাস্টার' ঔষধ বানাতেই ব্যস্ত। এন্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার যে কোন মূল্যে সীমিত করা উচিৎ। হালকা একটু সংশোধনী--ফ্লুরোকুইনোলোনকে একটা এন্টিবায়োটিক না বলে একটা গ্রুপ বললে মনে হও ভালো হয়।

গোঁসাইবাবু

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

নতুন অ্যান্টাবায়োটিক পাওয়া মুস্কিল। অ্যান্টিবায়োটিকের মূল অগ্রগতি যা হয়েছে তা সবই পুরনোগুলোকে খানিকটা বদলে দিয়ে বিশেষায়িত করে।
ফ্লুরোকুইনোলোন বিষয়ে ঠিক বলেছেন। শব্দ চয়নে সতর্ক হওয়া দরকার। এইসব বিষয়ে আমার জানাশোনাও নাই প্রায়। ঠিক করে দেব। ধন্যবাদ।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অতিথি লেখক এর ছবি

এখনই সতর্ক হতে হবে, ক্ষুদ্র জীবরাই বেশি শক্তিশালি। এদের বিষয়ে জানারপরিধি বাড়াতে হবে। ইচ্ছে হচ্ছে একটা ফিকশন লিখে ফেলি।
চার্বাক সুমন

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

হালার এন্টিবায়োটিক আর খামুই না, মোলবি সাবের কাছ থাইকা পানি পড়া খামু রেগে টং

গণোকক্কাল সংক্রমণের (যেমন, গণোরিয়া) শেষ ভরসা সেফালোস্পোরিন এখন আর আমাদের ভরসা যোগাতে পারে না।

আশ্চর্য! এই রোগটি এখনো টিকে আছে নাকি? একদিকে ভালই, মাত্রাছাড়া লুল যারা, তাদের প্রতি গায়েবী শাস্তি আবার ফিরে আসছে দেঁতো হাসি

বিচ্ছিন্ন সত্ত্বা হিসেবে আমাদের মাঝে অসাধারণ কৌতুহলী আর চিন্তাশক্তির অধিকারী মানুষেরা জন্মেছেন এবং জন্মাবেন।

এঁরাই শেষ ভরসা।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আশ্চর্য! এই রোগটি এখনো টিকে আছে নাকি? একদিকে ভালই, মাত্রাছাড়া লুল যারা, তাদের প্রতি গায়েবী শাস্তি আবার ফিরে আসছে :D।

আপনার এই লাইনটি পড়ে খুবই বিরক্ত হয়েছি। প্রসঙ্গ ভিন্ন বলে কথা বাড়ালাম না।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আপনার বিরক্তির কারনটা ঠিক বুঝতে পারলাম না, সম্ভবত আমার কথার সঠিক অর্থ ধরতে পারেন নি, আমাকে কাঠমোল্লা কিসিমের মানুষ ধরে নিয়ে বিরক্ত হয়েছেন। হতাশ হলাম।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আমি কিছুই ধরে নিচ্ছি না। আপনি যা বলেছেন, আমার মন্তব্য কেবল সেই কথার জন্যেই প্রযোজ্য।

আপনার ভাষ্যমতে যারা মাত্রাছাড়া লুল (বহুগামী?) তারা অপরাধী। এবং আপনার ভাষ্যমতে এই অপরাধীদের গণোরিয়া হওয়া ভালো। এইটা তাদের উপর গায়েবী শাস্তি। আমি আপনার এইরকম চিন্তাভাবনায় বিরক্ত হয়েছি।

আপনাকে জানিয়ে রাখি গণোরিয়া শিশুদেরও হতে পারে। কোনরকম যৌন সম্পর্ক ছাড়াও গণোকক্কাল সংক্রমণ সম্ভব। গণোরিয়া কেবল যৌনাঙ্গ এবং মুখে নয়, চোখেও হয়। কিন্তু সেটা কোন বিষয় নয়। গণোরিয়া যদি কেবল বহুগামীদেরই হতো, তবুও আপনার চিন্তাভাবনার কোন গ্রহনযোগ্যতা তৈরি হতনা।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আমার মন্তব্যটি আক্ষরিক অর্থে ধরলে, এবং আমার মনোভাবের প্রতিফলন হিসেবে ধরে নিলে সেরকমই মনে হতে পারে। কিন্তু আপনার কি একবারও মনে হল না যে এটি একটি শ্লেষাত্মক মন্তব্য? আমাদের সমাজে(হয়তো আরও কিছু সমাজেও) কমবেশি এরকমই মনোভাব পোষণ করা হয়ে থাকে। আপনার এই লেখার ঐ অংশটি যদি পড়ার সুযোগ হতো, তাহলে আমাদের দেশে শিক্ষিত অশিক্ষিত নির্বিশেষে অনেকেই সেই কথাটিই বলবে, যা আমি বলেছি। আমার মন্তব্য সেই কিসিমের মানুষদের মনোভাবের উপস্থাপন মাত্র, এটি আমার নিজস্ব মনোভাব নয়। ব্যক্তিগতভাবে কোন ধরনের গায়েবী শাস্তির উপর আমার বিন্দুমাত্র আস্থা নাই।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনার মন্তব্য আমার কাছে শ্লেষাত্মক মনে হয়নি। এটাকে পাঠক হিসেবে নিজের অযোগ্যতা ধরে নিচ্ছি। আপনার চিন্তা যে ইতিবাচক সেটা জেনে ভালো লাগল। হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

হাসিব এর ছবি

আমার সমিস্যা হবে না। আমি বিজ্ঞানসম্মতভাবে মঙ্গলগ্রহে পাড়ি জমাবো।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

চামড়া, পাকস্থলী, মুখ ইত্যাদি সামান্য কিছু অঙ্গ প্রত্যঙ্গ রেখে যেতে পারলেই জীবাণুমুক্ত জীবন! চোখ টিপি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অতিথি লেখক এর ছবি

খুবই সময় উপযুগী লেখা। আমরা তো অ্যান্টিবায়োটিক খাইতে খাইতে নিজেদের ঔষুধের একটা দোকান বানায় ফালায়ছি। তবে আমাদের নিরবোধ শাসকদেরও ব্যাপারটির দিকে লক্ষ্য রাখা উচিৎ।
-এ এস এম আশিকুর রহমান অমিত।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ধুসর গোধূলি এর ছবি

ছোট বেলায় ইশকুলে এক স্যার বলছিলেন, ওষুধ খাওয়া যদ্দুর পারা যায় এড়ায়ে চলতে। কলেজে পড়ার সময় আজমল স্যারও একদিন এন্টিবায়োটিকের কুফল নিয়ে বলেছিলেন। বলেছিলেন, যেনো পারতে এন্টিবায়োটিক না খাই। আমি এমনিতে পড়াশুনার উপদেশ ছাড়া আমার শিক্ষকদের বাকি সব কথাবার্তা মেনে চলার চেষ্টা করেছি। যেমন আজমল স্যার একদিন বলেছিলেন, মাঝে মইধ্যে সিগারেটে টানটোন দিও মিয়া, মাইয়ারা পছন্দ করবো। আমি সেই থেকে সিগারেটে টানটোন দিতে শিখে গেছি।

যাইহোক, গুরুর আদেশ শিরোধার্য। তাই ওষুধ পারতপক্ষে খাই না। তো, আমার জেনারেশনের কি কোনোভাবে বাঁচোন আছে?
অবশ্য, যেই অবস্থা। জেনারেশনের আগেই তো আমার নিজেরই রামনাম সইত্য হয়ে যাবে, যা দেখতেছি!

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

সুমায় থাক্তে ভাবীর লগে আলোচনা কইরা বিষয়টা মিটামাট কইরা ফেলেন! মেলাদিন বিরিয়ানি খাইনা!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ঈয়াসীন এর ছবি

চলুক

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

মেঘলা মানুষ এর ছবি

সামনে তো তাহলে কঠিন সময়! আমার মা প্রায়ই বলতেন, ছোটবেলায় নাকি অ্যান্টিবায়োটিক বেশি খাওয়ার কারণে আমার উচ্চতা বংশের অন্যদের তুলনায় কম হয়েছে! (যদিও, এটা বিশ্বাস করিনা)

এখন জীবাণু মারার কি উপায় হবে সামনের দিনগুলোতে? আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম তো আগাদের বেকুব আর মূর্খ মনে করবে।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

জীবানু মারার উপায় হয়তো কিছু না কিছু আছে। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প নেই। হওয়ার সম্ভাবণাও দেখা যাচ্ছে না।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

"সামাজিক প্রাণি হিসেবে আমরা নির্বোধ। " এর থেকে সত্য কথা বোধহয় আর হয়না।

আমি এন্টিবায়োটিক কম খেলে তাতে কী অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার কর্মক্ষমতা কমে যাবে? না। তাহলে উপায়?

____________________________

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

পরিবেশে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া থাকলে কোন একজনের অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়ায় বিশেষ কিছু বদলাবে না।
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

মুছে দেয়া মন্তব্য

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অতিথি লেখক এর ছবি

এন্টিবায়োটিকের সাথে উল্লেখ করা যেতে পারে এন্টিব্যাক্টেরিয়া সাবানের কথাও। আমাদের শরীরে ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া থাকার পাশাপাশি কিছু উপকারী ব্যাক্টেরিয়াও থাকে। কিন্তু এন্টিবায়োটিক এবং এন্টিব্যাক্টেরিয়াল সোপ অনেক সময় এই উপকারী ব্যাকতেরিয়াকেও ধ্বংস করে ফেলে। ফলে আমাদের শরীর রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা আরো হারাচ্ছে। লেখককে ধন্যবাদ তথ্যবহুল পোস্টের জন্য।

-সাদরিল

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

চরম উদাস এর ছবি

ব্যাপক ভয় পাইলাম। এই পুলাটা খালি ভয় দেখায় লোকজনরে ইয়ে, মানে...

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আমিও বিরাট ভয় পাইছি। এখনো ঠিকমতো বিশ্বাস হইতেছে না মন খারাপ

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সবজান্তা এর ছবি

আতংকিত হইলাম, তবে বিস্মিত হইলাম না। নিরপেক্ষভাবে নিজেদের কাজ কারবার বিচার করলে, এইটা বোঝা কোনো রকেট সায়েন্স না যে, আমরা নিজেদের পায়ে কুড়াল মারতে খুবই দক্ষ, এবং আগ্রহী একটি প্রাণিকূল। খুব সামান্য যে আশায় বুক বেঁধে থাকি, কোনো একদিন হয়তো মারাত্মক প্রতিভাবান কেউ একজন আসবে নতুন কোনো সমাধান নিয়ে...হয়তো... অনেক দেরি হয়ে যাওয়ার আগে।

ভয় দেখানোর জন্য মাইনাস।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

দেখ আমার পক্ষে আর মানুষকে উদ্ধার করা সম্ভব না। তোদের মতো কিছু মহাপাতককে উদ্ধার কইরাই এই জন্মের দায় মিটায় ফেলছি! তবে আমারে যে মহাপ্রতিভাবান বলতেছিস, ওইটা সত্যি!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

চমৎকার একটা লেখা খুব প্রয়োজনীয় একটি বিষয় নিয়ে।
আমার পড়াশুনার বিষয় ঔষধ বিজ্ঞান নিয়ে তাই জানি আপনি কি চমৎকার ভাবেই না বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করেছেন।
আপনার বিজ্ঞান বিষয়ক লেখাগুলো আমার ভীষণ পছন্দের। বাংলায় এত সহজ এবং সাবলীল ভাবে বুঝিয়ে লিখেন যতবার পড়ি মুগ্ধ হয়। কথাগুলো অপ্রাসঙ্গিক হলে দুঃখিত অনার্যদা, কিন্তু এই লেখাটা পড়ে আবারও এত বেশী ভালো লেগেছে, মুগ্ধতা না জানিয়ে পারলাম না। হাসি
লেখাটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

শামীমা রিমা এর ছবি

আমাদের দেশে সকল ফার্মেসির মালিক,কোয়াগ,এমঙ্কি আমরা সবাই অনেক বড় মাপের ডাক্তার । তাইতো মুড়ি মুড়কির মতো এন্টিবায়োটিক খাই !ফাস্ট থেকে থার্ড ফউরথ কোনটাই বাদ দেইনা । চেম্বারে এমন অনেক রোগী পাই যাদেরকে এন্টিবায়োটিক না দিয়ে মাইন্ড করেন,বিরক্ত হন । অনেকে আবার ৩ দিনের ভাইরাস জনিত জ্বরে ২ টা এযিথ্রোমাইসিন খেয়েই আমার কাছে এসেছেন !! কারন আমাদের বড় বেশি তাড়া আছে ।
লেখাটা সময়োপযোগী এবং চমৎকার চলুক

দীনহিন এর ছবি

পেটের অসুখে আবার মানুষ মরে নাকি!

আসলেই কাউকে মরতে দেখিনি! তবে আগে নাকি মরত! আমার এক ফুপুও নাকি পেটের অসুখেই মারা যান!

সকল দেশেই ভারী আকারের প্রতিরক্ষা বাজেট রয়েছে! সত্যিকারের বুদ্ধিমান কোন প্রাণি যদি জানত আমরাও নিজেদেরকে বুদ্ধিমান বলে দাবী করি তাহলে কী হাসাহাসিটাই না তারা করত!

হায়রে প্রতিরক্ষা!!
শেষ পর্যন্ত আশার বানী খুঁজছিলাম, কিন্তু মনে হচ্ছে বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী! গত বছর একটি বইয়েই সম্ভবত পড়েছিলাম, মানুষের বিলুপ্তি হয়ত আগামী দুই শতকেই ঘটবে। অনেকগুলো কারণের মধ্যে এইটিও মনে হয় ছিল! তাছাড়া বিবিসির 'এন্ড ডেইস অব ম্যান' ডকুমেন্টারিতে মনে হয় এই কারণটির কথা বলা হয়েছিল।

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

অতিথি লেখক এর ছবি

হায় হায়।
আমাদের সন্তানদের তবে কি কোন সুযোগ নাই?

আমাকে চিন্তায় ফেলে আপনি কেমন আছেন অনার্য সঙ্গীত?
ভালো থাকেন।
শেয়ার দিলাম খোমাখাতায়।

-----------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

মন খারাপ

সারা পৃথিবী অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জীবাণুতে ছয়লাব হয়ে গেছে! খুব সামান্য সংক্রমণ আর সাধারণ রোগেও এখন মানুষ মরে যাবে। যেমন হতো ৫০ বছর আগে। যেসব সাধারণ রোগকে আমরা পাত্তা দিতে শিখিনি, খুব অবাক হয়ে এখন আবিষ্কার করব সেইসব রোগেই আমাদের প্রিয়জনেরা মরে যাচ্ছে! অবাক করা বিষয় হচ্ছে পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ এবং তা যাচাইয়ের ব্যবস্থা নেই।

রিপোর্টটার কোনো কাজই নেই বলছেন?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

এন্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধ হওয়া উচিৎ, এতে দেশ ও জাতি উভয়েরই মঙ্গল। গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল টি দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
ডা মো রেদওয়ানুল হক মাসুম

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।