নির্বোধ পরিবেশ সাংবাদিক এবং আমাদের সুন্দরবন

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি
লিখেছেন অনার্য সঙ্গীত (তারিখ: শুক্র, ১৯/১২/২০১৪ - ৩:০২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সুলতানা রহমান নামক এক সাংবাদিকের লেখা পড়লাম বাংলা ট্রিবিউন নামের একটি অনলাইন মাধ্যমে। এই মাধ্যমটি যেহেতু তাদের সম্পাদিত(?!) এবং প্রকাশিত লেখার দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, সুতরাং ধরে নিতে পারি এটি ব্লগের মতো কোনো মতপ্রকাশের মুক্ত মাধ্যম। যেখানে ফুলের চাষও হতে পারে, পায়খানাও করা যেতে পারে।

সম্প্রতি সুন্দরবনে তেল ছড়িয়ে পড়ায় পরিবেশের উপর যে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিকর প্রভাবের আশংকা দেখা দিয়েছে, সেই বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ এবং পরিবেশন করার জন্য সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের কোনো একটি স্থানে সুলতানা রহমান গিয়েছিলেন এবং সেইখান থেকে তিনি তথ্য সংগ্রহ করে উপস্থাপন করেছেন তার লেখায়। সেইসঙ্গে তার নিজের খানিকটা বিশ্লেষণও রয়েছে। লেখাটি যতটা না হাস্যকর, তারচে বেশি বিরক্তিকর এবং ক্ষতিকর।

সুলতানা রহমানের পরিবেশ, উপকূলীয় নোনাপানির বনের পরিবেশ, পরিবেশে তৈলজাত পদার্থের প্রভাব, সেই প্রভাবের বিস্তৃতি এসবের কোনো বিষয়েই ন্যূনতম জ্ঞান নেই। কিন্তু তারপরও তিনি পরিবেশ সাংবাদিকতা করতে ছুটেছেন। সব বিষয়ে সাংবাদিকদের অনেক জানাশোনা থাকবে সেই আশা করিনা। কিন্তু কোনো বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ এবং সংবাদ পরিবেশনের আগে সেই বিষয়ে খানিকটা পড়াশোনা করে অন্তত প্রাথমিক ধারানাটুকু সাংবাদিকেরা নিয়ে নেবেন তা বোধ করি আশা করা যেতে পারে। সুলতানা রহমান সেটি করেন নি। পেশাদারিত্বের মান কত নিচু হতে পারে সেটি তার লেখা পড়ে ধারনা করা যায়।

সুলতানা রহমান জানতে চেষ্টা করেন নি, কোনো নদীতে, যেখানে জোয়ারভাটা খেলে, সেখানে তেল পড়লে সেই তেল কীভাবে ছড়ানোর কথা! নদীতে ছড়িয়ে পড়া তেল কোনো নির্বোধ পরিবেশ সাংবাদিকের লাইভ ক্যামেরায় সাক্ষাৎকার দেয়ার জন্য বসে থাকে না। তেল ছড়ানোর তিনদিনের মাথায় বনের সব গাছ মরে গিয়ে প্রমাণ করার কথা নয় তারা মরে যাচ্ছে। তিনটির বদলে তিন লক্ষ লাল কাঁকড়া সাংবাদিকের ক্যামেরার সামনে এসে মরে থাকাটাও তেল ছড়িয়ে পড়ার প্রভাব নয়। পরিবেশ সম্পর্কে কাণ্ডজ্ঞানহীন কোনো নির্বোধের চোখে ধরা দেয়ার মতো করে পরিবেশের পরিবর্তন হয় না।

ফরমালিনওয়ালা খাবার খেয়ে কি কেউ একবেলায় ক্যান্সার হয়ে মরে? একটি সিগারেট খাওয়ার পরের মুহূর্তেই কি কেউ ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়? বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কাল সকালেই কি সমুদ্রের পানি বেড়ে গিয়ে কারো দোরগোড়ায় এসে পৌঁছাবে? পরিবেশের পরিবর্তন এক ঘন্টায়, একদিনে হয় না। তেমনি পরিবর্তন শুরু হলে সে একদিনে থামানোও যায় না! এই প্রক্রিয়া কীরকম, আর তার জটিলতা কতটুকু সে বুঝতে গেলে খানিক পড়াশোনার প্রয়োজন আছে।

খালিচোখে যতটুকু চোখে পড়ে পরিবেশের ব্যপ্তি তারচে বিশাল। মানুষ তার নিজেকে দেখে কি বুঝতে পারে সে তার শরীরে যে কয়টি কোষ রয়েছে তারচে অন্তত দশগুণ জীবাণু বয়ে বেড়াচ্ছে প্রতিমুহূর্তে সঙ্গে করে? মানুষ কি বুঝতে পারে তার শরীরে কী অভূতপূর্ব কায়দায় অক্সিজেনের জ্বালানি প্রতিমুহূর্তে পৌঁছে যাচ্ছে কোষে কোষে? যিনি ধূমপান করেন, তিনি কি টের পান, প্রতিবার সিগারেটের ধোঁয়ার সঙ্গে অন্তত ৬০টি ভিন্ন ভিন্ন রসায়নিক তার শরীরের কোষকে ক্যান্সার কোষে বদলে দেয়ার চেষ্টা করছে? ক্যান্সার হলেইবা কতদিন পরে মানুষ বুঝতে পারে?

আমি নিজে সুন্দরবনের পরিবেশ সম্পর্কে আলাদাভাবে জ্ঞান রাখি না। পরিবেশে তেলজাতিয় পদার্থের প্রভাব কীরকম হবে তার একটি সাধারণ ধারনা আমাকে আমার স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পড়াশোনার অংশ হিসেবে নিতে হয়েছে কেবল। তারপরও আমি সাধারণ পাঠককে পরিবেশের পরিবর্তন সম্পর্কে (আংশিক হলেও) একটি মৌলিক ধারনা দেয়ার চেষ্টা করতে পারি।

পরিবেশের অংশে রয়েছে বাতাস আর পানি আর তার অসংখ্য উপাদান। তার রয়েছে মাটি আর মাটিতে মিশে থাকা সেইসব উপাদান যা জীবনের যেমন, তেমন মৃত্যুরও নিয়ামক। মাটি পানি আর বাতাসের এইসব হাজারো উপাদানে ভর করে একটি পরিবেশ আর সেই পরিবেশের জীবনচক্র তৈরি হয়। সেই জীবনচক্রের অতি সাধারণ রূপটি অন্তত আমরা স্কুলে পাঠ্যবইয়ে পড়েছি।

জীবনের সবার প্রথমে থাকে অণুজীবেরা। তাদের কেউ মৃত জীবদেহ ভেঙে প্রকৃতিতে মিশিয়ে দেয়। সেই জীবদেহের কণা সংগ্রহ করে বাড়তে পারে উদ্ভিদ। উদ্ভিদের উপর নির্ভর করে বাঁচে তৃণভোজী প্রাণীরা। অণুজীবকে খাদ্য বানিয়ে বেঁচে থাকে অতিক্ষুদ্র প্রাণীরা। সেইসব প্রাণীর উপর নির্ভর করে বাঁচে তারচে খানিক বড় প্রাণীরা। জীবনের শৃঙ্খল চলে এই নিয়মে। জীবনের যে অতি জরুরি প্রয়োজন অক্সিজেন, তার সরবরাহ আসে উদ্ভিজ্জ অণুজীব থেকে। পানির এসব অণুজীবের দেয়া অক্সিজেন নিয়ে বাঁচে পানির প্রাণীরা। সেই অক্সিজেনের ভাগ পাই আমরাও। প্রাণীর শরীর গড়ে ওঠে যে প্রোটিনে, সেই প্রোটিন তৈরির উপাদান বাতাস থেকে সংগ্রহ করার সামর্থ্য কেবল অণুজীবদেরই রয়েছে! অণুজীবেদের থেকে প্রোটিনের উপাদান 'নাইট্রোজেন' সংগ্রহ করে সকল প্রাণীকে পৌঁছে দেয় উদ্ভিদেরা। এইসব হাজারো অণুজীবের স্বাভাবিক পরিবেশ পরিবর্তিত হলে তাদের জীবনযাত্রাও বদলে যায়। সেইসঙ্গে অসহায় হয়ে পড়ে তাদের উপর নির্ভরশীল সকল প্রাণী, সবমিলিয়ে পরিবেশ।

জীবনের শেকল যেখানে শুরু হয়, সেইখানের পরিবেশের একেকটি উপাদানের উপর পরিবেশের জীবন-মৃত্যু নির্ভর করে। তিনদিনের মাথায় কোনোরকম পূর্বজ্ঞান না রেখে বিচার করতে গেলে পরিবেশের ক্ষতি চোখে পড়ে না, পড়ার কথা নয়। কিন্তু যিনি পরিবেশের সাধারণ জ্ঞানটুকু রাখেন, তিনিও জানেন, কেবল একটি উপাদানে কমবেশি হলেই পরিবেশের শেকল ভেঙে পড়তে পারে। আর যেহেতু পরিবেশের জীবজগৎ একে অন্যের উপর নির্ভর করে সহাবস্থানে বেঁচে থাকে, তাই সেই শৃংখলের কোনোখানে ভাঙন মানেই পুরো জীবজগৎ সেই ভাঙনের ক্ষতির মুখে পড়ে।

সুন্দরবনে তেল ছড়িয়ে পরে বাহ্যিকভাবে কোন কোন প্রাণির গায়ে তেল লেগে গেল, আর কোন কোন প্রাণীর চেহারা নষ্ট হয়ে গেল সেটি পরিবেশের ক্ষতির ঠিক বিচার করে না। সামাজিক মাধ্যমে যেসব তেলে চুবসে ওঠে প্রাণীর ছবি দেখছি, সেসব যাঁরা প্রচার করছেন, তাঁদের সদিচ্ছা এবং সুন্দরবনের প্রতি মমতা নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু বিনীতভাবে জানাতে চাই, কিছু প্রাণীর দেহ তেলে ঢেকে যাওয়াটাই সুন্দরবনের পরিবেশের মূল ক্ষতি নয়। একটি প্রাণী অথবা কয়েকটি প্রাণী পরিবেশ নয়। কয়েকটি প্রাণী মরে গেলে পরিবেশের শৃঙ্খল ভেঙে পড়ে না। বরং পরিবেশের শৃঙ্খল ভেঙে গেলে বিপন্ন হয় সেই পরিবেশের সকল প্রাণী আর উদ্ভিদ। সুন্দরবনে তেল ছড়িয়ে যদি কেবল কয়েকটি পশু-পাখি মরে গিয়েই বিষয়টি শেষ হতো, তাহলে সেটি বরং খুশির সংবাদ হতে পারত। কিন্তু সেরকম হবে না। বরং ক্ষতি শুরু হবে জীবনচক্রের সবচে নিচের স্তর থেকে। যে ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার সহজ কোনো উপায় নেই।

পরিবেশের রাসায়নিক উপাদানের যে ভারসাম্য ছড়িয়ে পড়া তেল সেই ভারসাম্য নষ্ট করবে। কেবল এই একটি ভাসাম্যহীনতা একটি পরিবেশের মূল শেকলটাকে ভেঙে দিতে পারে। পানির উপরের স্তরে তেল পানিতে অক্সিজেন মিশতে বাধা দেবে। তাতে ক্ষতিগ্রস্থ হবে পানিতে বেঁচে থাকা অক্সিজেননির্ভর সকল প্রাণী। একইসঙ্গে সেখানে গড়ে উঠতে পারে অক্সিজেন এড়িয়ে থাকা অতিক্ষুদ্র জীবের নতুন আবাস (habitat)। সেটি সুন্দরবনের আবহমান জীববৈচিত্র্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। কাছাকাছি পরিস্থিতি তৈরি হবে সুন্দরনের মাটিতেও। শ্বাসমূল তেলে ঢেকে গেলে উদ্ভিদের শ্বসনপ্রক্রিয়া ব্যহত হবে। মাটি তেলে ঢেকে গেলে সেখানে বেঁচে থাকা অতিক্ষুদ্র জীবের জীবনযাত্রা নষ্ট হবে। তার সঙ্গে অসহায় হয়ে পড়বে সেইসব ক্ষুদ্র এবং অতিক্ষুত্র জীবের উপর নির্ভর করে টিকে থাকে উদ্ভিদ এবং ফলশ্রুতিতে পুরো পরিবেশ। বলাবাহুল্য, মাটি, ক্ষুদ্র উদ্ভিদ এবং পানির প্রয়োজন হয় যেসব উদ্ভিদ এবং জীবের তারা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হবে এই ব্যাপক পরিবর্তনে। সেই ক্ষতির খানিকটা বাহ্যিক দৃষ্টিতে বোঝা যাবে। কিন্তু তার বেশিরভাগটাই অনভিজ্ঞ চোখে, অথবা বৈজ্ঞানিকভাবে যাচাই না করে ধরা যাবে না।

পরিবেশে ছড়িয়ে পড়া রাসায়নিক এক দারুণ নিয়মে জীবের দেহে ক্ষতিকর মাত্রায় জমা হতে পারে। অতিক্ষুদ্র প্রাণিরা এবং উদ্ভিদ অতি সামান্য পরিমাণে ধীরে ধীরে পরিবেশের বিষ নিজেদের শরীরে জমাতে থাকে। তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাতেই সেই বিষ জমে তাদের শরীরে। কিছুটা বড় যেসব প্রাণী, তারা এইসব অতিক্ষুদ্র প্রাণি আর উদ্ভিদ থেকে সেই বিষ নিজের শরীরে গ্রহণ করে। বাড়তে থাকে বিষের পরিমাণ। এইভাবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রাণিদেহে পরিবেশে ছড়িয়ে থাকা বিষে অগ্রহণযোগ্য মাত্রায় জমে ওঠে। সেও কিন্তু খালিচোখে দেখার উপায় নেই। যে পরিবেশ সাংবাদিক কয়েকদিনের মাথায় পরিবেশের উপর ক্ষতিকর পদার্থের প্রভাব খালিচোখে দেখতে চান, তার নির্বুদ্ধিতার কোনো পরিমাপ হয়না!

সুন্দরবনে ছড়িয়ে পড়া তেলের অন্যতম সমস্যা, তেল "বায়োডিগ্রেডেবল" নয়। তার মানে পরিবেশের অণুজীবেরা সহজে তেলকে ভেঙে ফেলে নির্বিষ পদার্থে রুপান্তরিত করতে পারে না। সেইজন্য দীর্ঘদিন এই পরিবেশেই ছড়িয়ে পড়া তেলের ক্ষতিকর উপস্থিতি থাকবে। সেই উপস্থিতিও খালিচোখে দেখা যাবেনা। রান্নার আগে তরকারিতে দেয়া তেলের কতটুকু রান্নার পরে আলাদা করে দেখা যায়? দেখা না গেলেই কি তেল অনুপস্থিত ধরে নিতে হবে?

সুলতানা রহমান লিখেছেন, “সুন্দরী গাছের ফল থেকে বীজ এই মৌসুমে হয় না। কারণ এখন নদীতে মিঠা পানি, সুন্দরী ফল থেকে বীজ হতে লাগে নোনা পানি এবং মিঠা পানির মিশ্রণ, যা কেবল বর্ষা মৌসুমে হয়"। এই তথ্যকে তিনি বৈজ্ঞানিকভাবে পরীক্ষিত তথ্য বলেছেন। আজকাল যেসব গজিয়ে ওঠা বিজ্ঞানবীর ঘরে বানানো বিজ্ঞানের তথ্য দিয়ে দিয়ে বিজ্ঞানের মুখে বিষ্ঠা মাখিয়ে বেড়াচ্ছে তাতে আর রুচি হয় না এইসব বিষয়ে কথা বলতে! তারপরও আমাদের জ্ঞানী পরিবেশ সাংবাদিক এই "বৈজ্ঞানিক তথ্য" কোথায় পেয়েছেন তার সূত্র দিলে আমার মতো লোকেদের জ্ঞানচক্ষু খুলত বলে মনে হয়! সুন্দরবনের নদীর পানি এখন মিষ্টি রয়েছে আর বৃষ্টি হলে পানি হয়ে যাবে নোনা পানি এবং মিষ্টি পানির মিশ্রণ (সেইটা কী মিষ্টি হবে নাকি নোনা, নাকি তৃতীয় কোন স্বাদ হবে তার!) এই তথ্য সুলতানা রহমানের মতো সাংবাদিক ছাড়া আর কেউ লিখলে ধরে নিতাম নিতান্ত কী-বোর্ডের গণ্ডগোলে এই তথ্য বেরিয়েছে। সুন্দরী গাছের অলৌকিক জীবনযাত্রা সম্পর্কেও তার লেখাতে জানলাম। আফসোস, সুন্দরবনের কোলে জন্মটা বৃথাই গেলো আমার!

সুলতানা রহমান এমন কোনো লেখা লেখেননি যার যুক্তিগুলোর একটি সুস্থ প্রত্যুত্তর দেয়া যায়। কোনো দায় নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এই বিষ্ঠাখণ্ড প্রকাশের কারণও সেই পুরোনো, খানিকটা বিতর্ক এবং পরিচিতি। বাংলা ট্রিবিউনের মতো গজিয়ে ওঠা মাধ্যম সে জেনেশুনেই করেছে। তারপরও সুন্দরবন আর স্বদেশের প্রতি মায়া থেকে অনেকেই এর প্রতিবাদ করেছেন। চমৎকার যুক্তি দিয়ে লিখেছেন। চমৎকার গোছানো কিছু না হলেও এই লেখাটিও সুন্দরবনের প্রতি সেই মমতার অংশ। কারণ কে না জানে, নির্বোধ সাংবাদিককে বুঝিয়ে বলার মতো মূর্খামি আর হয় না!


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

সুন্দরবনে তেলের কারণে প্রাথমিক বড় ক্ষতি হবে এভাবে:

(১) সুন্দরবনের খাল ও নদী তীরবর্তী কাদায় ব্যাকটিরিয়া ও অন্যান্য অণুজীব সুন্দরবনে জোয়ার-ভাটার চক্রে এসে জমা হওয়া পুষ্টিকণার (নিউট্রিয়েন্টস) ওপর নির্ভরশীল। তিন লক্ষ লিটার তেলের একটা বড় অংশ এই কাদার ওপর একটা পর্দা হিসেবে জমা হবে এবং এই অণুজীবদের খাদ্যগ্রহণে বাধা দেবে। কাজেই এরা দ্রুত মারা পড়বে।

(২) এই অণুজীবদের ওপর নির্ভরশীল সুন্দরবনের কাঁকড়া, যেমন পাঞ্জা কাঁকড়া (ফিডলার ক্র্যাব)। সূক্ষ্ম স্তরে স্তরে পলি জমাট হয়ে বেড়ে ওঠে বলে সুন্দরবনের মাটি অত্যন্ত ঘন ও আঠালো, এর ভেতরে বাতাস ঢোকে না। কাঁকড়া গর্ত খোঁড়ে বলেই সুন্দরবনের মাটির ভেতরে জোয়ারের সময় পানি ও ভাটার সময় বাতাস চলাচলের সুযোগ তৈরি হয়। খাবার না পেলে কাঁকড়া হয় মরে যাবে নয়তো এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করবে। সে চেষ্টার সময় ভাসমান তেলের সংস্পর্শে এলে কাঁকড়া মারা পড়তে পারে, যেহেতু তেল কাঁকড়ার কানকো অচল করে দেবে।

(৩) সুন্দরবনে গাছের ঝরে পড়া পাতা আবার খাল ও নদীর জলে জোয়ারের সময় ভেসে যায়। এই পাতায় গাছের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিকণা রয়েছে। সুন্দরবনের পাতাকাটা কাঁকড়া জোয়ারের জলে ভেসে যাওয়ার আগেই এই পাতা কেটে টুকরো টুকরো করে আবার মাটির নিচে নিয়ে যায়, ফলে পুষ্টিকণার পরিমাণ ক্রমাগত হ্রাসের হাত থেকে রক্ষা পায়। সুন্দরবনের মাটির যে অংশে তেল জমাট হবে, সেখানে পাতাকাটা কাঁকড়া আর টিকে থাকতে পারবে না। ফলে ঐ অংশের মাটিতে আর পুষ্টিকণার চক্র চলতে পারবে না। ফলে ক্রমশ মাটি পুষ্টি হারিয়ে অনুর্বর হয়ে উঠবে এবং ঐ অংশের গাছ ধীরে ধীরে মরে যাবে। গাছ মরে গেলে ঐ অংশের মাটিও ক্ষয় হতে শুরু করবে। আর কাঁকড়া যদি না থাকে, তাহলে সুন্দরবনের মাটিতে গর্ত খোঁড়ার কেউ থাকবে না, ফলে ঐ মাটিতে বাতাস আর পানিও ঢুকবে না।

(৪) সুন্দরবনের তেল আক্রান্ত অংশে গাছ মরা শুরু করলে ঐ অংশে গাছের ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকা প্রাণসমষ্টি অন্যত্র সরে যাবে। ফলে প্রাণিজ ক্রিয়ার মাধ্যমেও পুষ্টি সরবরাহের সুযোগ (বিষ্ঠা, মৃতদেহ) রদ হবে এবং সেখানে নতুন করে বনের প্রসার আর হবে না।

এগুলো যদি ঘটে, ঘটতে দীর্ঘ সময় লাগবে।

সরকার ও বিশেষজ্ঞদের কাছে অনুরোধ, সুন্দরবনের একটি সিস্টেম সিমুলেশন প্রকল্প হাতে নিন। সুন্দরবনের ওপর গোটা বাংলাদেশের নিরাপত্তা নির্ভরশীল। সুন্দরবন না থাকলে বঙ্গোপসাগরের মাঝারি মাপের ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত দিনাজপুর পর্যন্ত গিয়ে আঘাত হানতে পারে। এমন একটি সংবেদনশীল গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলের সকল চলককে একীভূত করে একটি সিস্টেমের আওতায় এনে সিমুলেট করে দেখার ব্যবস্থা করা হোক। এরকম কিছু করা হলে নবীন বিজ্ঞানীদের পৃষ্ঠপোষকতা করা হবে, সুন্দরবনকে ঘিরে গবেষণার সুযোগ তৈরি হবে, আমরাও একবিংশ শতাব্দীর জ্ঞানচালিত সমাজের অংশে পরিণত হতে পারবো। জাতিসংঘের কাছে বারবার হাত না পেতে দেশের বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদেরও নিজেদের জ্ঞান প্রয়োগ করে সুন্দরবনকে চিনতে, চেনাতে ও বাঁচাতে সহযোগিতা করুন। এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করুন যেখানে দেশে সাংবাদিকের চেয়ে বিজ্ঞানীর সংখ্যা বেশি হবে।

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি

এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করুন যেখানে দেশে সাংবাদিকের চেয়ে বিজ্ঞানীর সংখ্যা বেশি হবে।

চলুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এই মন্তব্যটা মূল লেখাতে যুক্ত হওয়া উচিত। লেখাটা তাতে যৌথ হলেও ক্ষতি নেই। কারণ, বিষয়টা যত গুরুত্বপূর্ণ তাতে সঠিক তথ্য জনসাধারণকে জানানোর জন্য collective effort দরকার।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রণদীপম বসু এর ছবি

চলুক

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এই মন্তব্যটি লেখাতে যুক্ত হতে পারে, ঠিক বলেছেন।
আরেকটি সম্ভাবণার কথা মনে হল। শুধুমাত্র সুন্দরবনের সম্ভাব্য পরিবেশ বিপর্যয়ের উপর একটা লেখা তৈরি করা যেতে পারে কয়েকজনে মিলে। যেখানে বিপর্যয়ের বিভিন্ন সম্ভাবণা বিশ্লেষষ করা হবে। সচলে কয়েকজন এই বিষয়ে জানেন বলে মনে হয়। সেটা হয়ত ভবিষ্যতেও কাজে লাগতে পারে। আয়োজনটা কি করা যায়?

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

সচলদের মধ্যাযে রা এই বিষয়গুলো ভালো জানেন, বোঝেন তাদের সাথে কথা বলো।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

তারেক অণু এর ছবি
অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

উদ্যোগ নিলেই নিজেদের বিশেষজ্ঞ দিয়ে চমৎকার গবেষণা এবং পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। চলুক

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

স্যাম এর ছবি

চলুক

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি

চমৎকার একটি লেখা লিখেছেন। সকলের বুঝবার মত সহজ এবং দরকারি একটি লেখা।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ধন্যবাদ।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

মেঘলা মানুষ এর ছবি

সাংবাদিক হবার মজাই আলাদা! আপনারে কেন যে সেসব মজা করার মধ্যে বাগড়া দেন? খাইছে

এসব খবরের সাথে আরেকটা একরকম জিনিস মনে পড়ল। একবার যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমিটির কয়েকজনের বক্তব্য ছিল:
১। বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা কতটা হলে আমরা মারা যাব? ঐ পর্যায় থেকে যদি আমরা দূরে থাকি তবে চিন্তার কি?
২। গ্লোবাল ওয়ার্মিং ভুয়া কারণ যারা এগুলোর গবেষণা করে তারা এটার উপর নির্ভরশীল। তারা যদি বিজ্ঞানের এই দিকটা গবেষণার জন্য কোন টাকা-পয়সা না নিতো তবে তাদের কথা বিশ্বাসযোগ্য হত।

মানুষের চিন্তা চেতনা অদ্ভুত! আমাদের যে কোন বিষয়ে এক্সপার্ট হয়ে যেতে কোন সময়ই লাগে না!

রেগে টং

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আজাইরা সাংবাদিকের চিন্তাচেতনা অদ্ভুত!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

এক লহমা এর ছবি

দরকারী লেখা। ভাল লেখা। সাথে হিমুর মন্তব্যটি একটি চমৎকার সংযোজন।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ধন্যবাদ।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

মাসুদ সজীব এর ছবি

চলুক চলুক

লাশ/মৃত্যের সংখ্যা দিয়ে এই মহানজ্ঞানী সুন্দরবনের ক্ষতির পরিমান নির্ধারণ করে ফেলেছেন, যেহেতু খুব বেশ প্রাণী মারা যায়নি তাই যারা যারা সুন্দর বনের অনেক ক্ষতির কথা উল্লেখ করেছেন তাদেরকে তিনি ধুয়ে দিয়েছেন। জাতিসংঘ-আম্রিকা ইনাকে তাদের কাজে নিযুক্ত করতে পারেন, যাতে উনি বিশ্ব ঘুরে দেখবেন কার্বন নি:সরনের জন্যে পৃথিবীতে এখনো একটা প্রাণীও সরাসরি মারা যায়নি তাই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কোন যুক্তিই থাকতে পারে না। অথবা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরাও তাকে নিয়োগ দিতে পারে, উনি সারাদেশ ঘুরে প্রমাণ করবেন ফরমালিন যুক্ত খাবার খেয়ে এখন পর্যন্ত একজন মানুষও যেহেতেু মরেনি সেহেতু ফরমালিনের বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন, আর তাই ফরমালিনকে বৈধতা দেওয়া হোক। পরিবেশ-স্বাস্থ্য নিয়ে যার নুন্যতম কোন ধারণা নেই তার পক্ষেই সম্ভব লাশ/মৃত্যের সংখ্যা দিয়ে পরিবেশের ক্ষতির পরিমান নির্ধারন করা।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এই নির্বুদ্ধিতার আসলে কোনো পরিমাপ হয়না!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সাফি এর ছবি

সুনছি সুন্দরবনে নাকি ড্রাগস হয় রেপ হয়, বেঙ্গল টাইগারের বিয়া হয়। ঘটনা সত্যি নাকি? এই সুন্দরবন মরলে হুয়াট ইজ দি প্রবলেম?

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

হ! সরকারী মদদে সাজানো নাটক! হো হো হো

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

সুলতানা রহমানের লেখাটা পড়ে স্রেফ বাকরুদ্ধ হয়ে গেছিলাম। লেখাটা পড়ে আমার মনে হলো উনি আক্ষরিক অর্থেই সুন্দরবনে পিকনিক করতে গিয়েছেন। লেখাটা দরকার ছিলো।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

উনি বনভোজন করেই এসেছেন হয়তো। সাংবাদিকতা করলে সংবাদও সেরকম হতো।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

প্রথমেই সুলতানা রহমানের নিবন্ধটি খন্ডিতভাবে উপস্থাপনের জন্য নিন্দা জ্ঞাপন করছি। সংবাদ পরিবেশনে স্পষ্টতই তিনি একটি নতুন ধারা চালু করার প্রয়াস পেয়েছেন, সংবাদ/নিবন্ধের সাথে তিনি তাঁর শ্রীময়ী মুখশ্রী বিশিষ্ট একটি ছবিও প্রযুক্ত করেছেন, ছবিটির পিছনেও যথেষ্ট যত্ন, শ্রম, মেধা ব্যয়িত হয়েছে বোঝাই যায়। তা ছাড়া এমন সুন্দর একটি ছবি উক্ত সংবাদ পেজ এর পরিবেশ বহুলাংশে উন্নত করেছে, বলাইবাহুল্য। এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে কেন সবিস্তার আলোচনা হল না, সেই বিষয়ে ব্যখ্যা দাবী করছি।
তবে একটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন বলে মনে করি- সুলতানা রহমান যে ভুল কিংবা অপরাধটি করেছেন, সেই একই ভুল এবং অপরাধ আমাদের মিডিয়াগুলো কিন্তু ক্রমাগতভাবে করে চলেছে। আপনার এই লেখাটি পড়ার আগে গত কয়েকদিনে আমার ধারনা হয়েছিল অচিরেই সুন্দরবনে বড় রকমের প্রাকৃতিক ম্যাসাকার হতে চলেছে। সেটা যখন ঘটল না, তখন ভাবতে শুরু করেছিলাম যাক, এ যাত্রা বোধ হয় বেঁচে গেলাম, আল্লার মাল আল্লাই রক্ষা করেছেন। এই বিপর্যয়ের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য এর সুদূরপ্রসারী ফলাফল সম্পর্কে আমাদের প্রধান প্রধান মিডিয়াগুলোও বোধ হয় একই রকম নির্বুদ্ধিতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনার মন্তব্যের প্রথমাংশ খুবই অগ্রহনযোগ্য। সুলতানা রহমানের লেখায় ছবি সংযুক্ত করেছে সংশ্লিষ্ট সংবাদ মাধ্যম। কাজটি তিনি নিজে করলেও সেটা কেন গুরুত্বপূর্ণ হতো!? কেউ চেহারায়/ছবিতে সময়/শ্রম ব্যয় করেছে কি করেনি, সেটা নিয়েই বা আপনি কথা বলছেন কেন?! ওনার লেখা নিয়ে কথা বলুন। কারো চেহারা/ছবি ইত্যাদি বিষয়ে বিদ্রুপ তো নোংরামি!

দয়া করে আমার লেখায় এই ধরনের মন্তব্য করবেন না।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আমার মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আপনি যে এরকম মন্তব্য করতে পারেন, সেরকম একটা আশংকা আগেই করেছিলাম। এখন সত্যি সত্যি আমার আশংকা সত্য প্রমানিত হওয়ায় নিরতিশয় হতাশ হলাম। কারো চেহারা/ছবি ইত্যাদি বিষয়ে বিদ্রুপ করা যে নোংরামির পর্যায়ে পড়ে, সে বিষয়ে আমার বিলক্ষণ জ্ঞান আছে, কিন্তু আমার বিবেচনায় আমি সুলতানা রহমানের চেহারা কিংবা ছবি নিয়ে কোন বিদ্রুপ করি নাই, কটাক্ষ করেছি সংবাদ পেজ এ বড় করে তাঁর ছবি প্রকাশের অপ্রয়োজনীয় এবং অপ্রাসঙ্গিক উদ্যোগকে। হার্ড কপি কিংবা ওয়েবে এ যাবত কালে বহু সংবাদ/নিবন্ধ পড়েছি, কিন্তু মুষ্টিমেয় কিছু ধারাবাহিক কলাম ছাড়া এরকম দৃষ্টিকটু ভাবে নিজের ছবি সংযুক্তির কোন ঘটনা কোথাও দেখেছি বলে মনে পড়ে না। সে বিষয়েই একটু রসিকতার চেষ্টা করেছিলাম, দুঃখের বিষয় আপনি সেটা ধরতে পারেন নি। আপনার লেখা এর আগের একটি পোষ্টেও আমার ক্ষেত্রে এরকমটা ঘটেছে। সুতরাং এটা বলা যায় যে, হয় আপনি আমার রসিকতার ধরনটা ধরতে পারেন না, কিংবা পছন্দ করেন না, কিংবা আমি নিজেই সহজবোধ্য করে কোন রসিকতা করতে পারি না। আপনি গুণী বিদ্বান মানুষ, আপনার সকল পোষ্টই অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে পড়ে থাকি, প্রায়শই কিছু মন্তব্যও করে থাকি। কিন্তু আপনি যখন আপনার লেখায় এ ধরনের মন্তব্য করতে নিষেধ করছেন, তখন আপনার কোন লেখায় আমার আর কোন মন্তব্য না করাই শ্রেয়, কারন আমি তো আর চট করে আমার মন্তব্যের ধরন বদলাতে পারব না।

রিং এর ছবি

শনি এবং অশনি সংকেত -- দুটোই একসাথে, মাখামাখি। চমৎকার একটি লেখা। লেখককে ধন্যবাদ।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকেও।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

রায়হান আবীর এর ছবি

ঐ লেখাটার নিচে একটা কমেন্টই লাইনে ছিলো ...

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

পারসেপশন থেকে বেরিয়ে বস্তুনিষ্ঠ রিপোর্টিং খুব সহজ নয়!

হো হো হো কস্কি মমিন!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

নাশতারান এর ছবি

পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। হাসি

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

তোমাকেও অনেক ধন্যবাদ। বিশেষত বানানগুলো ঠিক করে দেয়ার জন্য। হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

স্যাম এর ছবি

চলুক চলুক

ফেসবুক থেকে করা মন্তব্য কি সংরক্ষিত হয় মূল লেখার মন্তব্যের মতন? নীচে ফেসবুক মন্তব্যে আপনার উত্তরে বেশ ভাল আরো কিছু ব্যাখ্যা পেলাম।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ফেসবুকে মন্তব্য করলে সেটা এখানে সংরক্ষিত হয়না। এখানের "ফেসবুকের মাধ্যমে মন্তব্য" অংশে কিছু লিখলে সেটা ফেসবুকেও প্রকাশিত হয় বলে জানি।
হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।