রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ, জঙ্গি তৎপরতা এবং বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক একটি পরিস্থিতি

অরফিয়াস এর ছবি
লিখেছেন অরফিয়াস (তারিখ: রবি, ২৩/০৯/২০১২ - ৮:১৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশে আবারও বৃদ্ধি পাচ্ছে জঙ্গি তৎপরতা। দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলগুলোর বিভিন্ন অংশকে আশ্রয়স্থল হিসেবে বানিয়ে দুর্ধর্ষ জঙ্গিরা নিজেদের প্রশিক্ষণ ও সাংগঠনিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে বেশ জোরেসোরে। কিছুদিন আগে গোপন বৈঠকের সময় একইসাথে ১৬ জন জঙ্গি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় গুরুত্বপূর্ণ এবং আঁতকে উঠার মতো কিছু তথ্য বেরিয়ে আসে, আর তার ফলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। মায়ানমারের অস্থিতিশীলতার সুযোগে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের নিয়ে জঙ্গি সংগঠনগুলো আবারও নাশকতামূলক কর্মকান্ডের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা যায়। শুধু তাই নয়, "জামায়াত-এ-আরাকান" নামক একটি জঙ্গি সংগঠন কক্সবাজারে বেশ সক্রিয় এবং দেশের অভ্যন্তরীণ জঙ্গিদের সাথে মিলিত হয়ে তারা পার্বত্য অঞ্চল এর কিছু অংশ এবং মায়ানমারের আরাকান এই নিয়ে একটি স্বাধীন ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে বলে জানা যায়। বান্দরবন এবং কক্সবাজারের দুর্গম অঞ্চলগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রভাব কম, এরই সুযোগে বিভিন্ন অংশে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প স্থাপন করে সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছে দুর্ধর্ষ জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যরা।

বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা আছে, এই অভিযোগ অনেক আন্তর্জাতিক মাধ্যমের। কিন্তু এই বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সেরকম পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমান না থাকায় প্রথম থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে দেশের সরকার। কিন্তু বর্তমানে একইসাথে বেশ কিছু জঙ্গিসদস্য এবং অস্ত্র-গোলাবারুদ, জিহাদী সরঞ্জাম পুলিশের হাতে আসায় এই অভিযোগের দিকে নতুন করে দৃষ্টিপাতের প্রয়োজন হয়েছে বলে মনে হয়। শুধু জঙ্গিসদস্যই নয়, বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে আন্তর্জাতিক জঙ্গিসংগঠনগুলোর বেশ কিছু নেতৃস্থানীয় সদস্যকেও। তাই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দুর্গম অঞ্চলগুলোর আড়ালে আন্তর্জাতিক জঙ্গিসংগঠনগুলো ঠিক কি ধরনের নাশকতামূলক তৎপরতা চালাচ্ছে এই প্রশ্ন আবার সামনে চলে এলো।

মায়ানমারে অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতার কারণে বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীর অনুপ্রবেশ বৃদ্ধি পায়। বর্ডার গার্ডস বাংলাদেশ এবং পুলিশের সহযোগিতায় সরকার অনেক শরণার্থীকে ফেরাতে সক্ষম হলেও অনেকেই দেশের অভ্যন্তরীণ সহায়তার মাধ্যমে বাংলাদেশে গোপনে প্রবেশ করে। এছাড়াও জামাত সমর্থিত বেশ কিছু এনজিও এর প্রতক্ষ্য সহায়তায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের দেশের অভ্যন্তরে আসার সুযোগ করে দিতে দেখা যায়। বর্তমানে শরনার্থী আগমন হ্রাস পেলেও গোপনে অনুপ্রবেশ ঠেকানো যাচ্ছেনা। রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন দুর্গম অঞ্চল দিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে অনেকেই। পার্বত্য অঞ্চলগুলোতে বিভিন্ন সময়ে আগত রোহিঙ্গা শরনার্থীরা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য দায়ী, এই অভিযোগ অনেক আগে থেকেই ছিলো। দেশের ভেতরে বিভিন্ন সন্ত্রাসী চক্রের সাথে মিলিত হয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীরা অনেকদিন ধরেই সমাজ বিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত। এছাড়াও যুদ্ধাপরাধীদের দল জামাতের প্রতক্ষ্য সহযোগিতায় অনেক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী আইনের ফাঁক গলে বাংলাদেশী পাসপোর্ট পেতে সক্ষম হয় এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শ্রমিক হিসেবে চলে যায়। এদের অনেকেই সেসব দেশে বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপের কারণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে এবং পারতপক্ষে এই দোষ যায় বাংলাদেশী শ্রমিক জনগোষ্ঠির উপরে। একারণে মধ্যপ্রাচ্যের অনেকগুলো দেশে বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি হুমকির মুখে পড়ে। তারপরেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মদদে দেশে রোহিঙ্গা অবৈধ অনুপ্রবেশ জারি আছে এবং এসব অনুপ্রবেশকারীকে নানাবিধ অসামাজিক কার্যকলাপে ব্যবহার করারও যথেষ্ঠ প্রমান রয়েছে। তাই এবার রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় পার্বত্য অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। কিন্তু তারপরেও বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা তৈরী করে কিছু সুযোগসন্ধানী গোষ্ঠী এই অনুপ্রবেশকে বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করে এবং রাখাইন জনগোষ্ঠির বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র তৎপরতায় মদদ দেয়ার আশ্বাস দিতে থাকে।

বর্তমানে বেশ কিছুদিন ধরে পুলিশ এবং রেব এর অভিযানে গ্রেফতারকৃতদের থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, দেশে আবারও সংঘটিত হচ্ছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবি ও হরকাতুল জিহাদ। তারা বান্দরবন জেলাতে "জামায়াত-এ-আরাকান" নামে সংগঠিত হচ্ছে এবং দল ভারী করছে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের দিয়ে। এই দলের ৪ জন সদস্য সম্প্রতি গ্রেফতার হয় কক্সবাজার পুলিশের হাতে। তাদের তথ্যমতে দীর্ঘদিন ধরেই এই অঞ্চলে তারা কার্যকলাপ চালিয়ে আসছে। শুধু তাই নয়, একই সাথে তারা বান্দরবন ও কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের কিছু রোহিঙ্গাদেরকে সশস্ত্র ট্রেনিং দিয়ে আফগান যুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য প্রস্তুত করছিল। তারা কক্সবাজারে রিক্সা ও টমটম গাড়ি চালিয়ে ছদ্দবেশে অবস্থান করছিল। এধরনের কার্যকলাপ নতুন কিছু নয়। এরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কক্সবাজারে এসে বিভিন্ন পরিচয়ে অবস্থান করার পর বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের তাদের দলে অন্তর্ভুক্ত করে। মৌলবাদী চক্রগুলো এবং মিয়ানমার বিদ্রোহী সংগঠন আরএসও, আরএনও, নুপা সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা এদেরকে পৃষ্টপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে বলে জানা যায়।

এরপরে কক্সবাজার থেকে জঙ্গি সন্দেহে আরও গ্রেফতার করা হয় ৯ জনকে। একইসাথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকরী বাহিনী এই দলগুলোর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। দেশের অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপারে সরকারের উচ্চমহল প্রথম থেকেই ছিলো উদাসীন। কিন্তু বর্তমানে এই পরিস্থিতি একটি উদ্বেগজনক অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। সরকারের উদাসীনতার সুযোগে দেশে আশ্রয় নিচ্ছে নানা জঙ্গি সংগঠনের দুর্ধর্ষ সদস্যরা। পুলিশের কিছু অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে এই তথ্যের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। দেশে অনেকদিন ধরেই ভারত ও পাকিস্তানভিত্তিক বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় কর্মীরা অবস্থান করে এসেছে। কিন্তু সরকারের তরফ থেকে পর্যাপ্ত মনিটরিং এর ব্যবস্থা কখনো নেয়া হয়নি। এরই সুযোগে এরা দেশের ভেতরে সংগঠিত হয়েছে।২০০৯ সালের ২৭ মে, ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড আব্দুর রউফ দাউদ মার্চেন্ট সর্বপ্রথম বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আন্তর্জাতিক অপরাধী ও জঙ্গি সংগঠনগুলোর কার্যকলাপের ব্যাপারে তথ্য জানায়। তারপরে দেশে গ্রেফতার হয় পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন "লস্কর-ই-তৈয়বার" শীর্ষ নেতা মুফতি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ। তার তথ্যনুযায়ী বাংলাদেশে ১৫ বছর ধরে ৫টি কওমি মাদ্রাসায় জঙ্গি প্রশিক্ষণের বিবরণ জানা যায়। সে নিজেই প্রায় ৫ হাজার জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিয়েছে বলে স্বীকার করে। তার সঙ্গে দেশের শীর্ষ সকল জঙ্গির সম্পর্ক ছিলো এবং ২১শে আগস্টের গ্রেনেড হামলার প্রধান আসামিদের সাথেও তার যোগাযোগ ছিলো বলে সে স্বীকার করে।

মুফতি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ এর তথ্য অনুযায়ী পরবর্তিতে ঐ বছর গ্রেফতার করা হয় "লস্কর-ই-তৈয়বার" অন্যতম সংঘটক, ২৫ বার আফগান যুদ্ধে অংশ নেয়া, সমরাস্ত্র ও বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ মাওলানা মো: মনসুর আলীকে। সে ১৭ বছর ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছিলো। ২০১০ সালে রেবের গোয়ান্দা শাখা রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানভিত্তিক আত্মঘাতী জঙ্গি সংগঠন "জইশ-ই মোহাম্মদের" উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দুর্ধর্ষ জঙ্গি রেজওয়ান আহম্মদকে। পরে তার বাংলাদেশী সহযোগীদেরও আটক করা হয়। একইসাথে গ্রেফতার হয় তাদের আশ্রয়দাতা জামাত নেতা। তাদের তথ্যানুযায়ী ঢাকার নিউমার্কেট অঞ্চলে বিভিন্ন ব্যবসার আড়ালে জঙ্গিরা নিজেদের অবস্থান তৈরী করে নিচ্ছে। দেশে নানা সময়ে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা আটক হলেও দেশের অভ্যন্তরে এধরনের অবৈধ অভিবাসী সম্পর্কে সঠিক তথ্য নেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কাছে। তাই দেশের বিভিন্ন আন্দোলন ও সহিংসতায় এধরনের জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা এবং অবদান সম্পর্কে সঠিকভাবে নিঃশ্চিত হতে পারছেনা সরকার।

গত ১৬ আগস্ট রাজধানীর ফকিরারপুল এলাকাতে গ্রেফতার হয় পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনের বাংলাদেশ প্রধান মাওলানা ইউসুফ। তার থেকে জানা যায়, কক্সবাজার, বান্দরবন এলাকায় অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদেরকে টার্গেট করে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জয়েশ-ই মোহাম্মদ বাংলাদেশে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। এর আগেও দেশে নানা জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের ছিলো আস্তানা। এমনকি বাংলাদেশে পড়াশোনা করে নিজ দেশে হামলার পরিকল্পনা করে ভারতের কাশ্মিরের নাগরিক ওয়াসিম আহম্মেদ। মুম্বাইয়ের হাইকোর্টে বোমা হামলার পরিকল্পনায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে তাকে আটক করে মুম্বাই পুলিশ। সে সিলেটের রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিল।

দেশের অভ্যন্তরে এভাবে সন্ত্রাসবাদী আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর কার্যকলাপের ব্যাপক বিস্তার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। পার্বত্য অঞ্চল হতে আটককৃত জঙ্গিদের থেকে সশস্ত্র যুদ্ধের প্রস্তুতিমূলক তথ্য আঁতকে উঠার মতো একটি খবর। বান্দরবন এর দুর্গম জঙ্গলে প্রশিক্ষণ ক্যাম্প স্থাপন করে তাতে উন্নত অস্ত্রের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে অনেক জঙ্গি। এদের সংখ্যা অনির্দিষ্ট। এভাবে আবার দেশের ভেতরে নাশকতামূলক কর্মকান্ডের জন্য সংগঠিত হচ্ছে সন্ত্রাসীরা। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীদলগুলোর মদদে পার্বত্য অঞ্চলগুলোকে অভয়ারণ্য হিসেবে ব্যবহার করে এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের দলে নিয়ে জঙ্গি তৎপরতার উত্থান বাংলাদেশের জন্য একটি হুমকি।

এই তৎপরতাকে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য ব্যবহার করছে মৌলবাদী চক্রগুলো। দেশে নানা রকমের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে সরকারের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করে এরা নিজেদের ফায়দা লোটার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আর দেশের প্রথম সারির অনেক দৈনিক এবং সংবাদ মাধ্যম নানা অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে তাদের খবরের পাতা গরম রাখলেও দেশের আইন-শৃঙ্খলার এহেন অবনতির খবরে নিরব ভূমিকা পালন করছে। তাই আমাদের সাধারণ নাগরিকদেরই দেশের স্বার্থে সচেতন ও সংঘবদ্ধ থাকা প্রয়োজন। নয়তো আবার দেখতে হবে অজস্র বোমা হামলা, হামলায় নিহত স্বজনের মৃতদেহ এবং আবার হয়তো রমনার বটমূলের মতো আরেকটি হৃদয় বিদারক সন্ত্রাসী হামলার জন্ম হবে।

পাদটীকা


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

কিছুদিন আগেই বিভিন্ন পত্রিকা মারফত জানা যায় বেশ কিছু মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট চুরি হবার কথা। হয়তো ওগুলো ব্যবহার করেই অনেক রোহিঙ্গা এই দেশের পাসপোর্ট পেয়ে যাবে!!

দেবা ভাই
-----------------------------------------
'দেবা ভাই' এর ব্লগ

অরফিয়াস এর ছবি

মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট চুরি যাওয়ার সাথে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের বাংলাদেশী হিসেবে বাইরে পাঠানোর একটা সম্পর্ক বিচার করে তদন্ত করছে প্রশাসন।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

এইখানেই তো সমস্যা - সর্ষের মাঝে ভূত!!

দেবা ভাই
-----------------------------------------
'দেবা ভাই' এর ব্লগ

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

রোহিঙ্গা ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট জঙ্গি সমস্যা সমাধানের উপায়গুলো হতে পারে:

০১। আর কোন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না দেয়া।
০২। যেসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আছে, তাদের মায়ানমারে পুশব্যাক করা।
০৩। মায়ানমার সরকারকে চাপ দেয়া, যাতে রোহিঙ্গাদেরকে মায়ানমারে নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে নেয়া হয় এবং স্বায়ত্বশাসন দেয়া হয়।

৩ নং টি হয়ত অনেকের কাছে পছন্দ হবে না কিন্তু ৩ নং টি অপরিহার্য যদি আমরা পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে শান্তি চাই। কারণ, ওখানে নিপীড়িত রোহিঙ্গারা আর বাঙালী বিকৃত মস্তিষ্ক মুসলমানরা মিলে ভয়াবহ আকারের জঙ্গি সমস্যা সৃষ্টি করেছে ও তা আরো ভয়াবহ হতে যাচ্ছে।

অরফিয়াস এর ছবি

জঙ্গি সমস্যাটা বাংলাদেশের জন্য কখনোই লো প্রায়োরিটি কেস ছিলোনা, এখনও নেই। সমস্যা এখানেই যে দেশের প্রশাসন নির্বিকার এবং একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী এই সুযোগে ফায়দা লুটছে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ নজরুল ভাই।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ধুসর জলছবি এর ছবি

আমাদের খবর কাগজওয়ালাদের এ ব্যপারে উদাসীনতা দেখলে সন্দেহ হয় তারা সাংবাদিকতার নামে আসলে কি করছে? আমাদের সাধারন নাগরিকদের সচেতন এবং ঐক্যবদ্ধ থাকা উচিত, কিন্তু আমাদের দেশের অনেকেই কোথায় কে কি মুভি বানাল সেটা নিয়ে যতটা মাথা ঘামায় নিজের দেশের ভিতরে কি হচ্ছে সেটা নিয়ে ততটা ঘামাতে চায় না। আপনার লেখা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই, চমৎকার গোছান লেখা। চলুক চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

আমাদের দেশে সাংবাদিক হাতে গোনা কয়েকজন, বাকিরা খবর-ব্যবসায়ী। ধন্যবাদ।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

মায়ানমারের সাথে বাংলাদেশের যেটুকু সীমান্ত আছে সেটা খুব দুর্গম। সেখান দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকানো খুব দুষ্কর। তবু আমাদের স্বার্থেই বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত থেকে একটু দূরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এমনভাবে সেনা মোতায়েন করতে হবে যাতে আন্তর্জাতিক সীমানা আইন লঙ্ঘিত না হয় আবার অনুপ্রবেশও ঠেকানো যায়। রোহিঙ্গাদের মায়ানমারের নাগরিক হিসাবে স্বীকার না করে বাংলাদেশে পুশ-ইন করার অপচেষ্টাটার ব্যাপারে বাংলাদেশের কূটনৈতিক অবস্থান খুব শক্ত নয়, তৎপরতাও যথেষ্ট নয়। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে যারা বাংলাদেশকে এই ব্যাপারে চাপ দেবার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ উলটো তাদেরকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেবার কথা বলতে পারে। পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অলরেডি আছে। তারা যদি 'জিরো টলারেন্স' নিয়ে নিয়মিতভাবে এইসব জঙ্গী তৎপরতার বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালায় তাহলে এগুলোকে অঙ্কুরে বিনষ্ট করা যাবে। দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব যেখানে হুমকির মুখে পড়ে সেখানে সামরিক অভিযান আইনসঙ্গত।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অরফিয়াস এর ছবি

দুর্গম অঞ্চলগুলোতে সেনা ছাউনি আছে, তারা নিয়মিত টহলও দেয়। কিন্তু অনেক অঞ্চল আবার এর আওতামুক্ত। বড় ধরনের অপারেশন যদি উচ্চপর্যায়ের অনুমতি না আসে তাহলে করা সম্ভব নয়। তবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যদি শান্তিবাহিনীর খোঁজে দুর্গম অঞ্চলে লড়াই করতে পারে, তাহলে জঙ্গিদের থেকে দেশ বাঁচানোর জন্যও করতে পারবে।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তানিম এহসান এর ছবি

রোহিঙ্গাদের সাথে কাজ করলে টের পাওয়া যায় এরা মোটেই আমাদের মত নয়। মানবতার বিষয়টা মুখ্য কিন্তু দেশের স্বার্থ সবার আগে। এরা এতবেশি অন্ধ, চতুর আর লোভী! এই কথাগুলো লিখতে খারাপ লাগছে কিন্তু তার চাইতে মেজাজ খারাপ হয় যখন কক্সবাজারের মানুষের অসহায়ত্ব দেখি, শুধুমাত্র জামাত ছাড়া বাকি সব দল একসাথে তীব্রভাবে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে তাদের মতামত ব্যক্ত করেছে সবসময়। রোহিঙ্গাদের ভেতর জামাতের কাজ করার প্রয়োজন নেই, এরা এমনিতেই তৈরি। ঘরে মেহমান আসলে ভালো কিন্তু সেই মেহমান যখন চারপাশে সব দখল করে নিতে থাকে, ঘরের চৌহদ্দি পাল্টাতে ব্যস্ত হয়ে যায় এবং সবকিছু বিক্রি করে দিতেও তার এতটুকু সমস্যা হয়না তখন সেইসব মেহমান বিষবৎ পরিত্যাজ্য। উঠোনে প্রবেশের আগেই তাদের শক্তভাবে ফিরিয়ে দেয়া ভালো।

লেখায় বরাবরের মতই যত্নের ছাপ। চলুক হে ভ্রাত! চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

তানিম ভাই, আপনি রোহিঙ্গাদের সামনে থেকে দেখেছেন, তাই হয়তো ভালো বলতে পারবেন এই ব্যাপারে। তবে খবর দেখে যা মনে হয় তাতেও খুব একটা সুবিধার নয়। যারা দেশে আশ্রয় নিয়ে সেই দেশের বিরুদ্ধেই কাজ করে তাদের আর যাই হোক মেহমান বলা যায়না, তারা ডাকাত।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

নীড় সন্ধানী এর ছবি

কক্সবাজার বান্দরবান এলাকার পাহাড়গুলোতে ছোট ছোট অনেকগুলো মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নব্বই দশক জুড়ে। এদের কোন তালিকা সরকারের কাছে আছে কিনা জানি না। দুর্গমতার কারণে এদেরকে কতটুকু নজরদারীতে রাখা হয়েছে তাও সন্দেহ আছে। এই মাদ্রাসাগুলো সম্পর্কে যতটুকু জানা গেছে এরা কওমি বা খারেজী মাদ্রাসার অন্তর্ভুক্ত। যাদের উপর সরকারের কোন নিয়ন্ত্রন নেই। বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে এখানে জঙ্গীবাদের ভালো প্রশিক্ষণ হয় এবং এখানে রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে ভালো একটা সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট তৈরী হয়েছে যেটা সারাদেশে জঙ্গী সরবরাহ করে। ইসলামী এনজিওগুলো এসবের প্রসারের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করে। জঙ্গী ইসলামী সংগঠনগুলো এই সাপ্লাই দিয়ে পরিপুষ্ট হচ্ছে। মুশকিল হলো আওয়ামীলীগ কোন ইসলামী সাইনবোর্ডের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়ার মতো হ্যাডম রাখে না। আর বিএনপি জামাত তো এদের সরাসরি ভিটামিন সাপ্লাই করে। সুতরাং আমাদের হাতে খুব বেশী উপায় বোধহয় নাই। পাবলিকের মাইরের উপর যতদিন ভরসা করা যায় ততদিনই রক্ষা।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সাইদ এর ছবি

চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

প্রত্যন্ত অঞ্চলে এরা সাহায্যের নামে জঙ্গি সংগ্রহ করে যেভাবে করে পাকিস্তানে। একই পদ্ধতিতে এরা কাজটা করে। মাদ্রাসা কিংবা এতিমখানাগুলো এদের ক্যামোফ্লেজ। এদের বিরুদ্ধে এখনই সরব না হলে, শক্ত হাতে দমন করতে না পারলে, দেশে আফগানিস্তানের মতো একটা যুদ্ধ লাগিয়ে দেবেনা এটা হলফ করে বলা সম্ভব নয়।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

অত্যন্ত গোছানো প্রয়োজনীয় একটি লেখা। হ্যাঁ, আমাদের সচেতন হতে হবে। অনেক আগেই হওয়া প্রয়োজন ছিলো তারপরও বলবো এখনও সময় শেষ হয়ে যায়নি। আমার জানা মতে বেশ কিছু বছর আগে বাংলাদেশ পাসপোর্ট এন্ড ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের কর্তা ব্যক্তিরা জেনে বুঝে টাকার বিনিময়ে অনেক রোহিঙ্গাকে পাসপোর্ট ইস্যু করেছে। এরা রোহিঙ্গাদের চেয়েও জাতির বড় শত্রু।
এরকম লেখা আরও আসুক।

অরফিয়াস এর ছবি

আমার জানা মতে বেশ কিছু বছর আগে বাংলাদেশ পাসপোর্ট এন্ড ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের কর্তা ব্যক্তিরা জেনে বুঝে টাকার বিনিময়ে অনেক রোহিঙ্গাকে পাসপোর্ট ইস্যু করেছে। এরা রোহিঙ্গাদের চেয়েও জাতির বড় শত্রু।

চলুক ধন্যবাদ।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

স্যাম এর ছবি

চলুক চলুক

অরফিয়াস এর ছবি

অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- স্যাম।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক - বরাবরের মত দারুণ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা কীরূপ বা তাদের কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হয় সেখানে? এখানে নজরদারী বাড়ানো প্রয়োজন । দুর্গম অঞ্চলগুলো দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের হার বেশি কারণ সেখানে নজরদারীর হারও সীমিত ও ও নজর রাখাও দুষ্কর । দেশের স্বার্থে এ নিয়ে কাজ করা অত্যাবশ্যকীয় ।

কয়েকদিন আগেও অং সান সুচি আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন । ভাল কথা । ৩০ বছর পার হয়ে গেছে- অতি দ্রুত ব্যাপারটা গুরুত্বের সাথে দেখা হবে বলে আশা করি ।

কড়িকাঠুরে

অরফিয়াস এর ছবি

ক্যাম্পগুলোর অবস্থা শোচনীয়। সেখানে মানবেতর জীবন-যাপন করে শরনার্থীরা। তবে অনুপ্রবেশকারীদের অধিকাংশই ক্যাম্পে থাকেনা যারা এধরনের কাজে যুক্ত। ক্যাম্পের শরনার্থীরা রেজিস্টার্ড।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

দুর্দান্ত এর ছবি

কিছু গ্রেফতারের পরে নড়েচরে বসা, বা টনক নড়ার খবর পড়ে বিচলিত বোধ করি।

এটা বিশৃাসযোগ্য় নয় যে বান্দরবান-কক্সবাজার-উখিয়া-টেকনাফ অন্চলের জংগি প্রশিক্ষণ ভাটিয়ারি বা কুর্মিটোলার কিছু মানুষের অজান্তে ঘটছিল ও ঘটছে। ৭৫-৯০ এর বছরগুলোতে য়াংগন ও পিন্ডির সাথে আমাদের জলপাইএর সাথে বেশ নিবীড় সম্পর্ক ছিল। শান্তিবাহিনীকে উত্তরে হটিয়ে সে জায়গাগুলোকে মুসলমান অধ্য়ুষিত বানাতে রোহিংগাদের ব্য়াবহার করা হয়নি, সেটা প্রমানিত নয়। ভুলে গেলে চলবে না, যে কাকুল-কোয়েটা প্রশিক্ষিত সামরিক অফিসারের আফগানিস্তান সহ সারাবিশ্বে জংগিতৎপরতার কেন্দ্রে আছে, আমাদের আইনশৃ্ংখলা বাহিনীর প্রচুর সংক্ষক চোখ-নখ সদস্য়ও সেখানেই প্রশিক্ষিত। তাদের মধ্য়ে আবার যারা ৭৮-৮১ সালে দেশে ফিরে রাষ্ট্রযন্ত্রের ধমনী-শিরা-উপশিরায় অবঃ পদবীর পেছনে ঘাপটি মেরে আছেন, তাদের সবাই যে ৭১ এর 'গন্ডগোল' এর ফলাফলে খুশী, তাও আবার নয়।

চোখ-নখ-শিরা-ধমনীতে বিষ আছেরে ভাই। শুধু সীমানায় অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে ল্য়াঠা চুকবেনা।

অরফিয়াস এর ছবি

আপনার ল্যাপটপ এতদিন ধরে রোগাক্রান্ত, ডাক্তার দেখান না কেন? চিন্তিত

পুরা শরীর বিষাক্ত হয়ে যাচ্ছে এখন, শরীর বদলাইতে হলে তো সমস্যা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

দুর্দান্ত এর ছবি

অফিসের মেশিনটা একটু ঘাড়ত্যাড়া, যুক্তাক্ষর লিখতে রাজী হয়না।

অরফিয়াস এর ছবি

জোরে দুইটা থাবড়া মারেন। ঠিক হইলেও হইতে পারে। শয়তানী হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কল্যাণ এর ছবি

খুব দরকারি লেখা চলুক

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

অরফিয়াস এর ছবি

ধন্যবাদ কল্যাণদা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।