যে দেশে অধিকার শুধুই নষ্টদের

অরফিয়াস এর ছবি
লিখেছেন অরফিয়াস (তারিখ: বুধ, ০২/০৪/২০১৪ - ৫:০০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[আমি দেশপ্রেমিক নই, দেশ নিয়ে আশা-ভরসা কিছুই নেই, হতাশাবাদী মানুষ, এই লেখা আশাবাদী মানুষরা না পড়লেই ভাল। ব্লগ লেখার কোন ইচ্ছা ছিল না তারপরেও অযথা মনে হল কিছু কথা বলা থাক]

কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে যখন শাহবাগ উত্তাল তখন আমার আশা ছিল এইবার কিছু একটা হবে। পচে-গলে নষ্ট হয়ে যাওয়া সমাজটায় এইবার অন্তত একটা ঝাঁকুনি লাগবে। কিছুদিনের কিংবা কয়েক মুহূর্তের জন্য হলেও আশা ছিল পরিবর্তন আসবে। কিন্তু সেই আশা মরীচিকায় পরিনত হতে বেশি সময় নেয়নি। খুব অল্প সময়েই দেখেছি পরিচিত মানুষদের বদলে যেতে। আন্দোলনের মাঝে অসংখ্য বিভক্তি। শুরুটা ছিল অনাকাংখিত কিন্তু একেবারেই আমাদের ধারনার বাইরে এরকম কিছু ছিলনা।

ব্লগার রাজীবের হত্যাকাণ্ডের পরে খুব দ্রুত শাহবাগ আন্দোলনে বিভক্তি আসে ধর্মানুভুতির হাত ধরে। সেই অতি প্রাচীন "ধর্মানুভূতি"। মোটা দাগে দুটো দল ছিল তখন, একদল- রাজীব নাস্তিক তাই যা হয়েছে ভালই হয়েছে মত পোষণকারী, আরেকদল-রাজীব ওইসব কথা লিখতেই পারেনা মত পোষণকারী। বিখ্যাত কন্সপিরেসি থিউরির জনকদের কথা আর নাই বা বললাম। কিন্তু একটা কথা জোর গলায় বলার সাহস খুব কম লোকই পেল, যে রাজীব নাস্তিক হতে পারে, ধর্মের বিরুদ্ধে তার নিজস্ব মতামত থাকতে পারে, সে ধর্মকে কটূক্তি করতে পারে কিন্তু শাহবাগ যে আন্দোলনকে বুকে ধারন করে তার সাথে রাজীবের কোন মতপার্থক্য নেই। শাহবাগ যেখানে রাজাকারের ফাঁসির কথা বলে, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের কথা বলে, জামাত-শিবির নামক খুনি সন্ত্রাসী দল নিষিদ্ধের কথা বলে সেখানে আরও হাজার সৈনিকের মত রাজীবও একজন। "আমরা আগে মুসলমান, পরে বাংলাদেশি"- নামক আবেগের জোরে তখন যুক্তির কোন স্থান নেই।

রাজীবের মৃত্যুর পরে শাহবাগের আন্দোলনে যোগ দেয়া মানুষের একটা বড় অংশ টুপি পরে নিতে খুব একটা দেরি করেনি। আন্দোলনের হর্তা-কর্তারা মূল দাবিগুলোর নির্দিষ্ট কিছু পরিবর্তন আনতেও খুব একটা দেরি করেননি। তাই ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি খুব দ্রুতই বদলে শুধু জামাত-শিবির নিষিদ্ধের দাবিতে সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। আন্দোলনের অধিকাংশ মানুষ ভুলে যায় এই একটা দাবি চেপে যাওয়া ঠিক কতটা বড় ভুল। যার ফলশ্রুতিতে "হেফাজতে ইসলাম" নামক ধর্মীয় উন্মাদনার আত্মপ্রকাশ হয় খুব দ্রুত। আশ্চর্যভাবে দেশের অধিকাংশ মানুষ তখন ধর্মের অবমাননা নিয়ে মত্ত।

এই দেশের মানুষের মানসিকতা বুঝতে খুব একটা বেশি দেরি হওয়ার কথা না কারও। ইতিহাস তাই বলে। এই দেশের মানুষ নিজেদের ধর্মভীরু হিসেবে পরিচয় দিয়ে তৃপ্তি পায়। ধর্মীয় কুসংস্কারের সাথে তাদের নিত্য বসবাস। ধর্মের বিরুদ্ধে যেকোন কথায় দেশের অধিকাংশ মানুষের রক্তের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় হু হু করে। এই দেশে যে কোন খেলায় জিততে হলে ধর্মকে সম্বল করতে হবে একথা জানতে বেশি দিন লাগেনা। এই কারনে ভোটের আগে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দাড়ির দৈর্ঘ্য বাড়ে দ্রুত, কপালে আসে কালো ছোপ, মাথায় টুপি। ধর্ম নিয়ে কথায় কথায় আসর গরম করা, দেশ হিন্দুদের দখলে গেল রে বলে রব তোলা, এগুলো ৪৩ বছর ধরেই চলছে, নতুন কিছু না। তাই ধর্ম বাঁচাও বলে দেশের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়বে এটা স্বাভাবিক।

হেফাজতে ইসলামের উন্মাদনার মাঝেই গ্রেফতার হয়ে যান চারজন ব্লগার। তাদের বিরুদ্ধে ধর্মানুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ। অস্বাভাবিক কিছু না। নাজুক অনুভূতির সমাজ আমাদের। তার মাঝে আবার বেশ বড় একটা অংশের ধর্মানুভূতি ততোধিক নাজুক। কিছু মুক্তমনা মানুষকে সন্ত্রাসীদের মত গ্রেফতার করে জেলে নিয়ে যাওয়া হল, তারপরে শুরু হল নাটক। ধর্ম আগে না মানুষ আগে- এই লড়াইয়ে ধর্মই আগে প্রমান করতে খুব বেশি সময় নেয়না অধিকাংশ মানুষ। অসাম্প্রদায়িক দল হিসেবে ধুয়ো তোলা সরকারী দলটিও তখন ধর্মের সুরক্ষা বর্মে নিজেদের ঢাকতে ব্যস্ত। সামনে নির্বাচন তাই।

এক হিসেবে দেখলে ভারতীয় উপমহাদেশের সময়কাল থেকে এখন পর্যন্ত এই সমগ্র ভূখণ্ডের রাজনীতির খুব একটা পরিবর্তন আসেনি। ৪৭ এর ভাগাভাগির পেছনেও ছিল ধর্ম, ৭১ এও ছিল সেই ধর্ম, এই ২০১৩-১৪ তেও সেই ধর্ম। ধর্মের নামে এখানে সব চলে। তাই ২০১৩ তে আসে ৫৭ ধারার মত "ব্লাসফেমি আইন" আর তা চমৎকারভাবে আবারও পথ খুলে দেয় নির্যাতন -নিপীড়নের। অদ্ভুত হলেও সত্যি, ৫৭ ধারা শুধু একটি নির্দিষ্ট ধর্মের ধর্মানুভূতি অটুট রাখতেই বদ্ধ পরিকর, নাহলে মাইকে ডেকে যেখানে হিন্দু-বৌদ্ধ পাড়ায় আগুন দেয়া হয়, ধর্ষণ করা হয়, খুন করা হয় তখন আর ৫৭ ধারা কাজ করে না। ফেসবুকে প্রকাশ্যে যখন মানুষকে হত্যার হুমকি দিয়ে তা কার্যকর করার জন্য ডাক দেয়া হয় তখন রাষ্ট্র থাকে নীরব। রাষ্ট্রের আইন আর ৫৭ ধারা শুধু তাদের জন্য যারা প্রশ্ন করতে শিখেছে। রাষ্ট্র আর ধর্ম দুটোই প্রশ্নকে ভয় পায়, আর এইখানেই রাষ্ট্র আর ধর্মের বন্ধুত্ব।

চারজন ব্লগার গ্রেফতার-নির্যাতনের এক বছর পূর্তিতে প্রশাসন আবারও উল্লাস এবং রাহী নামের দুই ব্লগারকে সেই ৫৭ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে মনে করিয়ে দেয় প্রশ্ন করা বারণ। মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছেলেগুলোকে জেলে ঢুকিয়ে রাষ্ট্র যখন তৃপ্তির ঢেকুর তোলে তখন অবাক হওয়ার কিছু নেই আসলে। রাষ্ট্রের কাছে একজন মুক্তমনার মেধা এবং জীবনের মূল্যের থেকে একগাদা ছাগলের মূল্য বরাবরই বেশি। কারন ছাগলেরা দলবেঁধে ভোট দেয়। আর রাষ্ট্রের কাছে নাগরিকের মূল্য ভোটে। ধর্মের আফিমে বুঁদ সমাজে এর থেকে বেশি কিছু আশা করাটাও বোকামি।

ক্ষুধা-দারিদ্র্য-অশিক্ষা-কুশিক্ষা এই উপাদানগুলো রাজনীতিতে অত্যাবশ্যক। নাহলে ব্যবসা চলেনা। যেই সমাজে এই উপাদানগুলোর প্রকোপ বেশি সেই সমাজে ধর্মের বাগাড়ম্বরও বেশি। কারন ধর্মের আফিমে জনগন যতক্ষণ বুঁদ থাকে তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে ততক্ষন শান্তিমত রাজনীতি করা যায়। জনগনের চোখ খুললেই সমস্যা। তাই প্রত্যেকটি বিষয়ের সাথে ধর্মের এক ফোঁটাই যথেষ্ট। দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন আশ্বাস দিয়েছেন তখন স্বাভাবিক ভাবেই ধরে নেয়া যায় আফিমের ডোজ বাড়বে বৈ কমবেনা অচিরে।

বাংলাদেশের মানুষের কখনো আন্দোলনের জন্য ইস্যুর অভাব হয়না। পাকিস্তানকে গালি দিয়ে পাকিস্তানি জামা পরে ভারতীয় দোকানে গিয়ে বাটার চিকেন চাখতে চাখতে ভারতের ইয়ে দিয়ে বাঁশ ভরার স্বপ্নে বিভোর বাংলাদেশিরা কখনও খেলার ইস্যুতে লাফায়, কখনও পতাকার ইস্যুতে লাফায়, কখনও দূরের মুসলমান ভাইদের জন্য বুকফাটা হাহাকারের মাঝে একটু হিন্দু-বৌদ্ধদের দৌড়ানি দিয়ে নেয়, কখনও জাতীয় সঙ্গীতের রেকর্ডের জন্য দেশদ্রোহীদের কাছে হাত পাতে আবার কখনও ইতিহাসের সন তারিখ বদলে নতুন করে লিখতে বসে। এর সাথে আন্তর্জাতিক ইস্যু থেকে শুরু করে অন্য সব ধরনের ইস্যু তো আছেই। এত ইস্যুর মাঝে মানুষ ভুলে যেতে বাধ্য হয়, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি দেশের গভীরে আরও গভীরে তাদের শেকড় ছড়িয়ে দিয়েছে, জামত-শিবির নিষিদ্ধ হয়নি বরং উপজেলা নির্বাচনে তাদের জয়জয়কার, ইসলামি ব্যাংক নিষিদ্ধ হয়নি বরং সরকার আর ইসলামি ব্যাঙ্কের সম্পর্ক আরও নিবিড়।

ইতিহাসের প্রসঙ্গ আসলেই আমরা বীরত্বের প্রসঙ্গ তুলি, কিন্তু আমরা ভুলে যাই মীরজাফরও আমাদেরই ইতিহাস।

ধর্ম নিয়ে উন্মত্ত এই দেশ নিয়ে আমার কোন স্বপ্ন নেই, বরং মনে হয় অযথাই কিছু ভাল মানুষ ভুল করে জন্ম নেয় এই দেশে। উল্লাস-রাহী দ্রুত মুক্তি পাক এই কামনা করি।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ইতিহাসের প্রসঙ্গ আসলেই আমরা বীরত্বের প্রসঙ্গ তুলি, কিন্তু আমরা ভুলে যাই মীরজাফরও আমাদেরই ইতিহাস।

ধর্ম নিয়ে উন্মত্ত এই দেশ নিয়ে আমার কোন স্বপ্ন নেই, বরং মনে হয় অযথাই কিছু ভাল মানুষ ভুল করে জন্ম নেয় এই দেশে। উল্লাস-রাহী দ্রুত মুক্তি পাক এই কামনা করি।

রাষ্ট্রের প্যান্ট ভিজানো দেখি !

রাজর্ষি

অতিথি লেখক এর ছবি

এই যে ধর্মানু ভুতি, হ্যাঁ আপনাকে বলছি। আপনার এত ঠুনকো কেন? আপনার বসবাস কোমরের নিচেই বা কেন? কি অনাচার অজাচার করেছিলেন যৌননে, যে সামান্য বাতাসেই উত্থিত হয়ে ওঠেন? হাজার হাজার বছরের মিথ্যাচার আর লোভ, হুমকি দিয়েও প্রশ্নকারীদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। এজন্যেই বুঝি সামান্য বাতাসেই উত্থিত হয়ে জাগা-বেজাগায় গুঁতোতে ইচ্ছে করে? এভাবে চলতে থাকলে দিন আর বেশি বাকি নেই, সংশয়বাদীদের ভিড়ে উত্থিত হতে হতে আর হবার শক্তি থাকবে না।। লুপ্তপ্রায় উপাঙ্গের মতই হয়তো ঝুলতে থাকবে কোমরের নিচে। টেনশন নিয়েননা, আমরা চমতকার চমতকার অরবিচুয়ারি লিখবো

----ইমরান ওয়াহিদ

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

চরম উদাস এর ছবি

দ্রুত মুক্তি পাক ছেলেদুটো - এর বাইরে আর বেশী কিছু ভাবতে পারছি না আপাতত। ক্ষোভ, হতাশা, বিরক্তি সব মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে ...

এক লহমা এর ছবি

"দ্রুত মুক্তি পাক ছেলেদুটো" - সেইটাই।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অরফিয়াস এর ছবি

দ্রুত মুক্তি পাক ছেলেদুটো

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

এক লহমা এর ছবি

আসলে কি ভয়ংকর এক দুঃসময়ের পায়ের আওয়াজ এগিয়ে আসছে?
লেখায় ৫ তারা। যদিও তাতে হয়ত কিছুই যায় আসে না। কে জানে!

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সবজান্তা এর ছবি

এই লেখাটা সম্পর্কে এক লাইনে একটা কথা বলতে পারি- আ ব্রিফ হিস্টি অভ আওয়ার টাইম।

এস এম নিয়াজ মাওলা এর ছবি

চলুক

-------------------------------------------
এমনভাবে হারিয়ে যাওয়া সহজ নাকি
ভিড়ের মধ্যে ভিখারী হয়ে মিশে যাওয়া?
এমনভাবে ঘুরতে ঘুরতে স্বর্গ থেকে ধুলোর মর্ত্যে
মানুষ সেজে এক জীবন মানুষ নামে বেঁচে থাকা?

অরফিয়াস এর ছবি

আর হিস্ট্রি !

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

এস এম নিয়াজ মাওলা এর ছবি

এই ঘটনা কি স্বাভাবিক নয়? এক বছর আগে যখন চারজন ব্লগার গ্রেফতার করা হয়েছিলো- কি এমন কাজ করেছিলাম আমরা যাতে রাহী আর উল্লাসের গ্রেফতারের ঘটনা এড়ানো যেত? কিছু লিখতে ইচ্ছে করছে না, শুধু বলি- আমরা হচ্ছি হুজুগে জাতি। একবার লাফিয়ে উঠি, তারপর গা ঢাকা দিই। এই জন্যই যুদ্ধপরাধীদের বিচারের মামলায় রায় ঝুলে গেছে!

-------------------------------------------
এমনভাবে হারিয়ে যাওয়া সহজ নাকি
ভিড়ের মধ্যে ভিখারী হয়ে মিশে যাওয়া?
এমনভাবে ঘুরতে ঘুরতে স্বর্গ থেকে ধুলোর মর্ত্যে
মানুষ সেজে এক জীবন মানুষ নামে বেঁচে থাকা?

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মন মাঝি এর ছবি

শাহবাগের পর থেকেই সচলায়তনে আপনার লেখালেখির ঝর্নাধারা হঠাৎ করেই একদম বন্ধ হয়ে যাওয়াতে আশঙ্কা করেছিলাম বড়সড় কোন ধাক্কা খেয়েছেন। আপনার এই উপলব্ধিটা অবশ্য আমার কাছে অপরিচিত নয় - আশাবাদী, আদর্শবাদী বা অনুভূতিপ্রবণ বহু মানুষের ক্ষেত্রেই এমনটা আগে অসংখ্যবার ঘটতে দেখেছি। লেখাটার সম্পর্কে বলার কিছুই নেই, শুধু এটুকুই প্রার্থনা করি যে এই নতুন উপলব্ধি বা হতাশা সাময়িক হবে আপনার জন্য। নিদেনপক্ষে, এটা "If you can't beat 'em - join 'em" - জাতীয় নতুনতর কোন বাস্তববাদী পরিপক্কতায় বা উপলব্ধিতে পৌঁছে দিবে না আপনাকে, কিম্বা পরিণত করবে না একটি সর্বনিন্দুক তিক্ত চিরসিনিকে। আশেপাশে অনেক সাবেক স্বপ্নবাদী, আশাবাদী, আদর্শবাদী, মতবাদী আর বিপ্লববাদীদের মধ্যে এই দুই করুণ পরিণতি প্রচুর দেখতে পাই। আশা করি আপনি তাদের একজন হয়ে উঠবেন না। হাসি

****************************************

অরফিয়াস এর ছবি

বিপ্লবীদের বেশিদিন বেঁচে না থাকাই ভাল, থাকলে নষ্ট হয়ে যায়।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

"ইতিহাসের প্রসঙ্গ আসলেই আমরা বীরত্বের প্রসঙ্গ তুলি, কিন্তু আমরা ভুলে যাই মীরজাফরও আমাদেরই ইতিহাস।" নিঠুর বাস্তব!!!

ক্ষোভ, দু:খে জর্জরিত হয়ে আছি। রাগ লাগছে ভীষণ।

____________________________

অরফিয়াস এর ছবি

অক্ষম ক্রোধই সম্বল এখন।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সুবোধ অবোধ এর ছবি

ছেলে দুটোর জন্য শুভকামনা ...

অরফিয়াস এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

অতিথি লেখক এর ছবি

হাজতবাসের বীভৎস অভিজ্ঞতা আছে তাই আন্দাজ করতে পারছি কতোটা দুঃসহ অবস্থায় আছে ছেলে দুটো। বড্ড অসহায় লাগছে নিজেকে।

'ঘুড়ি হয়ে উড়ছে স্বদেশ
ঘাতক হাতে ঘুরছে লাটাই
দেশপ্রেমিক তোমরা এসো
দেশ বাঁচাতে বুদ্ধি খাটাই'।

ছেলে দুটো দ্রুত মুক্তি পাক, শুভকামনা।

-দেব প্রসাদ দেবু

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অন্ধ দলবাজির চক্রে পড়ে যারা আজকে ৫৭-ধারাকে সমর্থন দিচ্ছেন আগামীকাল তারাই এর শিকার হতে পারেন। যা কিছু ভুল তা সব সময়ের জন্যই ভুল।

সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে অবধারিতভাবে কিছু জিনিসের পরিবর্তন হবে। এবং সেই পরিবর্তনের কিছু কিছু বিষয় ধনাত্মক হয়। তবে ঐসব ধনাত্মক পরিবর্তন কোন বিবেচনায়ই উন্নয়ন নয়। আশাবাদী মানুষেরা অবশ্য এগুলোকে উন্নতি বলতে চান। তবে সেটা নিজেকে সান্ত্বনা দেবার মত ব্যাপার, প্রকৃত অর্থে নয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অরফিয়াস এর ছবি

আশাবাদী মানুষেরা অবশ্য এগুলোকে উন্নতি বলতে চান। তবে সেটা নিজেকে সান্ত্বনা দেবার মত ব্যাপার, প্রকৃত অর্থে নয়।

এই কথাটা বুঝতে যতটা ঘিলু দরকার তা অধিকাংশের নেই অথবা ক্ষণিকের অর্জনেই তারা খুশি।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

নীড় সন্ধানী এর ছবি

৫৭ ধারায় যাদের ধরার কথা ছিল তার উল্টো লোকদেরই ধরা হচ্ছে। যে কাজটা বিএনপি জামাত করার কথা সেই কাজটা যেন আওয়ামী লীগ সরকার করে দিচ্ছে। যাদের খুশী করার জন্য গত বছর রাসেলদের ধরা হলো, এবার এই বাচ্চা ছেলে দুটোকে ধরা হলো, তাদের কাছ থেকে কোন উপকারটা আশা করছে সরকার?

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অরফিয়াস এর ছবি

দেশের একটা বড় অংশ কি রকম ধর্মান্ধ হলে দেশের প্রধানমন্ত্রীও তাদের সুরে কথা বলেন সেটা ভাবার বিষয়।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

তিথীডোর এর ছবি

ফারাবির মতো ২১টাকার ফ্লেক্সি ফকিরের খ্যামতা দেখে বড় বিস্মিত হই।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অরফিয়াস এর ছবি

ক্ষমতাটা ফারাবির না, ফারাবি একজন মুখপাত্র মাত্র, ক্ষমতা হচ্ছে তার মত মানসিকতা নিয়ে দলবদ্ধ হতে পারা ধর্মান্ধ ছাগলদের।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

মেঘলা মানুষ এর ছবি

ক্ষমতাটা ফারাবির না, ফারাবি একজন মুখপাত্র মাত্র, ক্ষমতা হচ্ছে তার মত মানসিকতা নিয়ে দলবদ্ধ হতে পারা ধর্মান্ধ ছাগলদের।

-একমত। এরা সাধারণ মানুষকেও তাদের ছাতার নিচে টেনে নিচ্ছে সুকৌশলে।

শুভেচ্ছা হাসি

মাহবুব ময়ূখ রিশাদ এর ছবি

সাইদীর ছেলে যে উপজেলা নির্বাচনে জয়ী হইসে, এইটা শুনস?

চিন্তা করতেসি, ক্ষমতার পট-পরিবর্তন হলে এই ধারার প্রয়োগ আরো কত সাংঘাতিকভাবে হবে

------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

অরফিয়াস এর ছবি

হুজুরের ছেলেরে জনতা ভোট দিবে, অবাক হওয়ার কিছু নাই বুঝছ?

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

স্যাম এর ছবি

চলুক মন খারাপ

আয়নামতি এর ছবি

ধর্মভিত্তিক রাজনীতি এবং ৫৭ ৫৮ ইত্যাদি ইতং বিতং বন্ধ না হলে এমন ঘটনা বাড়তেই থাকবে।
মাধ্যমিক পরীক্ষা তো শুরু হতে যাচ্ছে শিঘ্রই! ওদের কী হবে??? পরীক্ষার কী হবে???

অরফিয়াস এর ছবি

শুনলাম, এক উকিল নাকি মামলা লড়বে না বলে দিছে কারন সে নাকি ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলা পাব্লিকের পক্ষ নিতে পারবেনা। শালারা, খুনি-ধর্ষকের মামলা লড়তে পারবে কিন্তু এইটা পারবেনা।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হুমম, ধার্মিক খুনী-ধর্ষক বোধ হয় চোখ টিপি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সৌরভ কবীর এর ছবি

চলুক চলুক
হতাশাবাদী লেখাটার জন্য ধন্যবাদ। মানুষের আশাবাদীতারে মাঝেমাঝে বড্ড বেশি কমফোর্ট জোন প্রবণ লাগে।

__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
বাংলাদেশের সবচয়ে বড় সমস্যা কি? অনেকেই দারিদ্র, অধিক জনসংখ্যা, সু-শাসনের অভাব সহ নানান ব্যাখা নিয়ে হাজির হয়ে যাবেন। আমি জানি, আরো অনেকে জানে বাংলাদেশের মূল সমস্যা ধর্ম আর ধর্মানুভূতি। যা ব্যাধির মতো ছড়িয়ে আছে সর্বত্র। কিন্তু এগুলো নিয়ে কিছু বলা যাবে না, বলতে গেলে আপনার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যাবে সবাই। রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার এমনকি তথাকথিত প্রগতিশীল সুশীল রাও। যতদিন ধর্মের এই ব্যাধি থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে আসতে পারবে না ততদিন আশাবাদী হওয়ার কিছু নেই এই ছাপান্নো হাজার বর্গ মাইলের নষ্ট ভূমিকে নিয়ে।

মাসুদ সজীব

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ইতিহাসের প্রসঙ্গ আসলেই আমরা বীরত্বের প্রসঙ্গ তুলি, কিন্তু আমরা ভুলে যাই মীরজাফরও আমাদেরই ইতিহাস।

চলুক

আর ছেলেদুটো? ওরা আপাতত জেলেই থাক, তবু নিরাপদে থাকবে মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

ধর্মান্ধতা আর উগ্র জাতীয়তাবাদ -- দুটোই নিপাত যাক! মানবতা মুক্তি পাক!

নিকঃ শেহজাদ আমান

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।