হত্যা অথবা মৃত্যু

আশালতা এর ছবি
লিখেছেন আশালতা (তারিখ: শনি, ০৬/০৮/২০১১ - ৯:১২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছোটখাটো শ্যামলা চেহারার নাজমা বেগম থাকেন ছোট্ট এক উপজেলা শহরে। পরিবার পরিকল্পনা অফিসে হেলথ ভিজিটর পদে কাজ করেন, স্বামী সেই অফিসেই আরও নিচু এক ধাপের কর্মচারী। এঁদের ছেলেমেয়েরা মাঝে সাঝে শহরে বেড়াতে এলে আমাদের পাড়াসুদ্ধু বাচ্চাদের বড় দুঃখ হত। দুঃখটা বৈষয়িক। ওরা ওই বয়েসেই ব্যাটারিওলা গাড়ি, আলোজ্বলা কেডস এইসব দুর্লভ সম্পদের অধিকারি ছিল। একবার মেয়েকে সোনার ঘড়ি কিনে দিয়ে আমাদের সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন। একটু বড় হবার পর ওই চাকরির বেতন স্কেল সম্পর্কে ধারনা তৈরি হওয়ায় বড়দের জিজ্ঞেস করেছিলাম যে ওঁদের এই বৈভবের উৎস কোথায়। একটু মুচকি হাসি ছাড়া সদুত্তর পাইনি কারো কাছেই। উত্তর পেয়েছিলাম, অনেক পরে।

নাজমা বেগমের আয়ের মূল উৎসই আসে অবৈধ গর্ভপাত করিয়ে। সরকার থেকে এঁদের যে ট্রেনিং দেয়া হয় তা তিনি কাজে লাগান। যারা চুপিসারে গর্ভপাত করাতে চান, তাঁরা আসেন এঁর মত 'ডাক্তারনি'র কাছে। একবার দিন সাতেকের জন্য ওনার বাসায় বেড়াতে গিয়ে অনানুষ্ঠানিক নির্মমতার এক অদ্ভুত রূপ দেখেছিলাম।

রোজ দিন নানান চেহারার মানুষ বাসায় এসে বাইরের ঘরে বসে থাকত শুকনো মুখে। তাদের সাথে থাকত ততোধিক শুকনো মুখের এক নারী। বেশিরভাগ সময়েই যে বালিকা থেকে নারী হয়ে ওঠার সময় পায়নি এমন বয়েসি। কথাবার্তা রফাদফা শেষে মেয়েটিকে নিয়ে নাজমা বেগম চলে যান কলতলার পাশে খোলা ছাদের দেয়ালঘেরা গোসলখানায়। সাথে থাকে নানা আকারের যন্ত্রপাতি। আধাঘণ্টাটাক পরে মেয়েটা এসে মুমূর্ষুর মত করে শুয়ে থাকে বাইরের ঘরের বিছানায় আর কাজের মেয়ের ওপর হুকুম যায়, 'ময়নাআ, গোসলখানাটা ধুয়ে দে'। একদিন না জানতে গোসলখানায় ঢুকে দেখি সবুজ সবুজ পেছল শ্যেওলার ওপর ক্ষুদে ক্ষুদে হাত পায়ের রক্তাক্ত ছেঁড়া টুকরো পড়ে আছে।

জিজ্ঞেস করে বসেছিলাম, 'আপনার কি খারাপ লাগে ?' উনি বললেন, 'খারাপ লাগবে কেন ? আমি তো খারাপ কাজ করছিনা। এখানে যারা আসে, তারা কেউই হয় বাচ্চাটা চায়না, নয়ত অবিবাহিতা। এদের সমস্যার সমাধান করে দিয়ে নিজের ইচ্ছেমত জীবন যাপনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি, এটা তো বরং ভালো কাজ। নইলে এই অবিবাহিত মেয়েগুলোর কি গতি হত ?' আমি বিড়বিড় করে বললাম, '... কিন্তু ওটা তো মানুষ ! সত্যিকারের প্রাণ !' উনি মৃদু হেসে, 'তাও তো আমি এনেস্থেসিয়া ব্যবহার করি' বলে উঠে চলে গেলেন।

নাজমা বেগম অবশ্য একটা বিষয়ে খুব ভুল কিছু বলেন নি। গ্রামগুলোতে এখনও এবরশন করান হয় অদ্ভুত সব পৈশাচিক কায়দায়। বছর তিনেক আগে এক ডাক্তার আত্মীয়ার সুবাদে কুমিল্লার প্রত্যন্ত এক গ্রামের হাসপাতাল কোয়ার্টারে দিন কয়েকের আতিথ্য নিতে কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছিল। প্রথম দিনই একটি কম বয়েসি মেয়েকে নিয়ে এল তার বাবা মা। মেয়েটার প্রায় সাত মাসের শিশুটিকে দাই দিয়ে নানারকম গ্রাম্য পদ্ধতিতে প্রিম্যাচিওর ডেলিভারি করে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। এতে বেবির শরীরটা বেরিয়ে এলেও প্লাসেন্টা অর্থাৎ জরায়ুর ভেতর যে ব্যাগের মত আবরণটির মাঝে শিশু থাকে সেটি কিছুটা বেরিয়ে এসে আটকে গিয়েছে। সেটা বের করার কোন উপায় না দেখে শেষে তার সাথে একটা আস্ত থান ইট বেঁধে ঝুলিয়ে দিয়ে মাইল তিনেক রাস্তা হাঁটিয়ে মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে; যাতে ওই ইটের ভারে আপনাতেই তা বেরিয়ে আসে। হাসপাতালে পৌঁছনর পর রক্তক্ষরণেই মেয়েটা মারা যায়।

প্রকৃতি নারী শরীরে শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে অভিনব ব্যবস্থার আয়োজন করে রেখেছে। তাই পুরুষ স্পার্ম দিয়ে নারীর ওভামটি নিষিক্ত হওয়ামাত্র তার চারদিকে খুব দ্রুত একটি সুরক্ষা বলয় তৈরি হয়ে যায় এবং জরায়ুর মুখে বেশ কয়েক প্রস্থ প্রাকৃতিক লক তৈরি হয়ে বেরনোর রাস্তাটি বন্ধ হয়ে যায়। কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া একদম ডেলিভারির আগে ছাড়া এই লক খুলতে চায়না। জরায়ুর মুখ খুলে অপরিপূর্ণ শিশুটিকে বের করে আনার জন্য তাই গ্রামগুলোতে নানারকম পাশবিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। প্রথমে আনারস, কাঁচা পেপে খাইয়ে চেষ্টা করা হয়। এগুলোতে কিছু রাসায়নিক আছে যা কিছু ক্ষেত্রে গর্ভপাত ত্বরান্বিত করে। তাতে কাজ না হলে নানান জড়িবুটি এবং শেষে অত্যাচার চলে। একজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল যার তলপেটে জোরে জোরে কিল ঘুষি মেরে শিশুটিকে ওখানেই মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়। তারপর জরায়ুতে লম্বা খেজুর কাঁটা বিঁধিয়ে রেখে ফুটো করে শিশুটিকে বের করে আনার তুমুল প্রচেষ্টাও চলে । শিশুটি মারা গিয়েছিল অবশ্যই কিন্তু সাথে তলপেটে গ্যাংগ্রিন হয়ে মেয়েটাও বাঁচতে পারেনি। আরও অন্যান্য ক্ষেত্রে খেজুর কাঁটার জায়গায় সাইকেলের স্পোক, বড় ছুঁচ এমনকি গাছের ডালের লাঠি পর্যন্ত ব্যবহার করতে দেখেছি।

এই ধরনের ঘটনাগুলো কোন একক ঘটনা নয়। সমাজের আনাচে কানাচে হামেশাই এরকম ঘটছে। সবসময় হয়ত মা- টি মারা যাচ্ছেন না। তাই বলে নিস্পাপ ক্ষুদ্র প্রাণের অস্বাভাবিক মৃত্যু থেমে থাকছেনা। সামাজিক মান সম্মান বাঁচাতে এগুলো নিয়ে কেউই কথা বলেনা।

গর্ভপাতের প্রক্রিয়াটি অবশ্যই সহজ নয়। এতে ফরসেপ দিয়ে শিশুর অপরিণত শরীরটি ছিঁড়ে ছিঁড়ে টেনে বের করে আনা হয়। ডাক্তাররা অল্প কিছু ক্ষেত্র ব্যতীত তা সমর্থনও করেন না। অনেক ক্ষেত্রেই পরবর্তীতে তা জটিলতা আনতে পারে। আর নৈতিক অসমর্থন তো থাকেই। তবে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে বেবিটি বিকলাঙ্গ হয়ে বেড়ে উঠছে, বা তার বৃদ্ধি মায়ের জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ হয়ে যায়, এরকম ক্ষেত্রে ডাক্তাররাই প্রেগনেন্সি টার্মিনেট করতে বলেন। এগুলো ছাড়া বাকি ক্ষেত্রগুলোতে একটি সুস্থ প্রাণকে 'নষ্ট' করার কোন যুক্তিই যথেষ্ট বলে মনে হয়না। আজকাল অবশ্য পৃথিবী জুড়ে গর্ভপাতকে আইনি বৈধতা দেবার পক্ষে জোরালো মতবাদ তৈরি হচ্ছে। কিন্তু একজন নারী এবং অবশ্যই মা হিসেবে বিষয়টিতে আমি সমর্থন দিতে পারিনি কখনই। প্রেগনেন্সি অনাকাঙ্খিত হলে তা এড়ানোর অনেক রকম বৈজ্ঞানিক উপায় এখন হাতের কাছেই আছে। দরকার শুধু একটু সচেতনতা আর মানবিক বোধের।

মায়ের গর্ভে আসার একুশ থেকে আঠাশ দিনের মাথায়ই বাচ্চার অতি ক্ষুদে হার্টটি বিট করা শুরু করে। আর তিন মাসের ভেতর মোটামুটি শরীরের কাঠামোটি দাঁড়িয়ে যায়। এর কিছুদিনের ভেতরেই তার শোনার ক্ষমতা তৈরি হয় এবং মায়ের গলার স্বর চিনতে শিখে যায়। এমনকি আচমকা জোর আওয়াজে চমকে যাওয়া আবার মায়ের নরম গলার স্বর শুনে খুশিতে 'হেসে' ফেলাও শিখে যায়। এরকম একটি জলজ্যান্ত প্রাণকে ছিঁড়ে খুঁড়ে আক্ষরিক অর্থেই টুকরো টুকরো করে পৃথিবীর সবচাইতে নিরাপদ স্থান তার নিজের মায়ের পেট থেকে তাকে জোর করে টেনে বের করে আনাকে হত্যা নাকি মৃত্যু বলে আমার ঠিক জানা নেই।


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ভয়াবহ!!! মন খারাপ

আশালতা এর ছবি

এই ঘটনাগুলো খুব কাছে থেকে দেখেছি বলেই মনে হয়েছে এগুলো 'ভয়াবহ' এর চাইতেও বেশি কিছু, সেই প্রতিশব্দটা আমার জানা নেই। মন খারাপ

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

guest_writer এর ছবি

অথবার কোনো প্রশ্ন নেই, এটা ঠান্ডা মাথায় হত্যা।

পড়াচোর

আশালতা এর ছবি

এতে শিশুটির বাবা মা নিজেরাই ইনভলভড থাকেন কাজেই এটা বোধ হয় শুধুই 'ঠান্ডা মাথায় হত্যা' নয়, আরও ভয়ঙ্কর কিছু।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

jol এর ছবি

NOTHING TO SAY APU.....
Bangladeshi laws does not suport the event of abortion,,,,,strictly prohibited and punishable offence.....good laws having on practical and effective enfocement.

আশালতা এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জল। শুধুমাত্র আইন করে অন্যায় বন্ধ করা যে সম্ভব নয় এটা প্রমানিত সত্য। তার জন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। তাহলে আইনেরও দরকার পড়বেনা খুব একটা।

একটা কথা মনে পড়ে গেল। একজন বিদেশী সৈনিকের কথা জানি, যিনি মসজিদে সবাইকে একসাথে নামাজ পড়তে দেখে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, আমরা যখন ট্রেনিং করি তখন সামনে যে ক্যাপ্টেন থাকেন উনি পেছন ফিরলেই আমরা ঢিলেমি দিতে শুরু করি, অথচ, এখানে যে ভদ্রলোক সামনে আছেন উনি তো পেছন ফিরে দেখছেনও না, তবু সবাই ওকে ওবে করছে। কার বা কিসের ভয়ে সবাই মিলে একজনকে ওবে করছে ? কেউ কেন দুষ্টুমি করছে না ? আমাদের আইন সচেতনতাটিও এই পর্যায়ে গেলে আর কিছুরই দরকার পড়ত না।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

অপছন্দনীয় এর ছবি

মন খারাপ

আশালতা এর ছবি

মন খারাপ

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

দিহান এর ছবি

আপনি কীভাবে লিখতে পারলেন! আমি পড়তে পারলাম না...অনেক জায়গা স্কিপ করে গেলাম...ভয়াবহ, আসলেই।

আশালতা এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ দিহান। আমি ইচ্ছে করেই ঘটনাগুলোর ভয়াবহতাটুকু শব্দের আড়ালে আড়াল করার চেষ্টা করিনি। সচেতন ভাবেই চেষ্টা করেছি বীভৎসতাটুকু তুলে আনতে। এই জিনিসগুলো লুকিয়ে লুকিয়েই এতদুর এসেছে। সত্যিকারের চিত্রটা জানলে যেকোনো সভ্য মানুষ হতভম্ব হয়ে যাবে। এই বিষয়গুলোর সত্যিকারের চেহারাটা মানুষকে জানাতে চাই আমি, যাতে যারা এখনও জানেন না, তারা সচেতন হতে পারেন।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

কৌস্তুভ এর ছবি

মন খারাপ

কিন্তু একজন নারী, যে অনাকাঙ্খিত প্রেগনেন্সি নিয়ে সমস্যায় পড়েছে, তাকে গর্ভপাতের অধিকার দেওয়াই উচিত, যখন শেষমেষ পুরো ব্যাপারটাই তারই শরীরে ঘটছে। প্রয়োজন এ নিয়ে শিক্ষা+সচেতনতা, আর গর্ভপাতের জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো দেওয়া।

আশালতা এর ছবি

এই বিষয়টা বর্তমানে অনেকটাই বিতর্কিত কৌস্তুভ। কিছু ক্ষেত্রে এটি অনাকাঙ্খিত হলেও এড়ানো যায়না এ আমি মানি । কিন্তু একজন নারীর শরীরে একটি প্রাণের জন্ম হলেই কি সে তা হত্যার অধিকার পেয়ে যায় বলে আপনার মনে হয় ? প্রাণটিকে শুরু করার ক্ষেত্রে তার দায়িত্ব কিভাবে এড়ানো যায় ? হয়তো একশো তিনটা ভালো ভালো যুক্তি আনাই যায়, কিন্তু সেসবকে একপাশে সরিয়ে রেখে, শুধু শিশুটির দিক থেকে ব্যাপারটা ভাবুন দেখি !

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

কৌস্তুভ এর ছবি

ভালো যুক্তি সব সরিয়েই ফেললে তো মিটেই গেল...

শিশুটার দিকই ১০০% নিয়ে ফেলে তারপর ভাবতে যাব কেন? একটা স্টেজ পর্যন্ত তো তার নিজেরই ভাবার ক্ষমতা আসেনি। একটা স্টেজ পর্যন্ত সে নিজে নিজে viable-ও নয় গর্ভের বাইরে। এরকম একটা প্রায়-জড় অবস্থায় শিশুকে তার মায়ের ইকুইভ্যালেন্ট একটা স্ট্যাটাসে ধরে বিচার করব কেন?
(@সবুজ পাহাড়ের রাজা, এই জন্যেই এরকম একটা অবস্থার শিশুকে টার্মিনেট করা আর একজন পূর্ণাঙ্গ পূর্ণসচেতন মানুষকে হত্যা করা এক জিনিস নয়।)

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

কিন্তু একজন নারী, যে অনাকাঙ্খিত প্রেগনেন্সি নিয়ে সমস্যায় পড়েছে, তাকে গর্ভপাতের অধিকার দেওয়াই উচিত।
.....আর গর্ভপাতের জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো দেওয়া।

কৌস্তুভ দা,
কোনভাবেই একমত হতে পারলাম না।
মানুষ খুন করা আর গর্ভপাত দুটোই কি বাস্তবিক অর্থে এক নয়?
কাঙ্খিত হোক কিংবা অনাকাঙ্খিত, মানব প্রাণ হত্যার অধিকার কেউ রাখে না; এমনকি গর্ভধারিনী মা-ও না....
তাই না!
অজুহাত, কারণ, হাজারটা যুক্তি থাকুক না কেন গর্ভপাত/মানব শিশু হত্যা মেনে নেয়া যায় না.....

কৌস্তুভ এর ছবি

ওহ, আচ্ছা, আপনি যদি কোনো যুক্তিই কানে নিতে রাজি না হন, তাহলে তো ল্যাটা চুকেই গেল... দেঁতো হাসি

অর্ক রায় চৌধুরী এর ছবি

সমাজটা বদলাতে পারবেন!!!

অর্ক রায় চৌধুরী এর ছবি

আশাদি পুরোটা পড়তে পারলাম না।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

যে অনাকাঙ্খিত প্রেগনেন্সি নিয়ে সমস্যায় পড়েছে

অসতর্কতার দোহাই দিয়ে কেউ খুনের দায় এড়াতে পারে না। নির্যাতিত নারীদের ক্ষেত্রে ব্যপারটা ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু স্রেফ অসতর্ক ছিল বলে কেউ একটি প্রাণ হত্যার অধিকার কি পেতে পারে?

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সচলায়তনের পাঠক কৌশিক এর ছবি

অসতর্কতা? "নির্যাতিত নারীদের ক্ষেত্রে ব্যপারটা ভিন্ন হতে পারে।" বলে কত সহজেই আপনি প্রশ্নটা এড়িয়ে গেলেন। ধর্ষণের শিকার হয়ে যে নারী গর্ভবতী হয়ে পড়েন, তার কোন অসতর্কতার দোহাই আপনি দেবেন? কেন সেই নারী বাধ্য হবেন দীর্ঘ দশ মাস ধরে সেই পীড়াদায়ক এবং যন্ত্রণাকর ঘটনার স্মৃতি নিজের শরীরে বহন করতে? অথবা যদি প্রি-ইক্লাম্পসিয়া বা একটোপিক গর্ভাধানের কারণে কোন নারী জীবনসঙ্কুল হয়ে ওঠে তাহলে কি হবে? অথবা যদি অ্যামনিওসেন্টেসিস মারফত জানা যায় যে জেনেটিক কারণ বা ক্রোমোজোমাল অ্যাবনর্মালিটির জন্য জন্মালেও শিশুটি দারুণ কষ্ট পাবে, সেই শারীরিক এবং মানসিক কষ্টযন্ত্রণার দায় আপনারা কেউ নেবেন কি?
গর্ভপাতের বিরূদ্ধে সওয়াল করার আগে ভালভাবে চিন্তা করে নিন, সত্যিই কার কথা ভাবছেন। একজন নারীর শরীরটা একটি প্যাসিভ ভেসেল বা ইনকিউবেটর নয়। তাঁর শরীর এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গের উপর তাঁর পূর্ণ অধিকার আছে। তাঁর শরীরের মধ্যে বেড়ে ওঠা একটি প্রাণী, যে কিনা বহুমাস ধরে তাঁর শরীর থেকে পুষ্টি টেনে নেবে, সেই প্রাণী স্ব-উদ্যোগে বাঁচার অবস্থায় না আসা পর্যন্ত তার ভবিষ্যত নির্ধারণের পূর্ণ অধিকারও সেই রমণীর থাকা প্রয়োজন।
গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত একজন নারীর পক্ষে কখনোই সোজা বা সহজ নয়। কিন্তু সব দিক ভেবে শুনে তিনি যদি সেই সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তাঁর ওপর আপনাদের ভাবালুতাজনিত, স্বল্পজ্ঞানসমণ্বিত নীতিকথার বোঝ নাইবা চাপালেন?
এই সব কারণেই গর্ভপাতের জন্য স্যানিটারী এবং সুরক্ষিত পরিবেশ তৈরী করা দরকার, যাতে সেই কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া নারীর তারপর প্রাণসংশয় না হয় - যে কথা কৌস্তুভ ওপরে লিখেছেন। লেখিকা যেরকম পরিবেশে যে দৃশ্য দেখেছেন, তাতে কড়া রিঅ্যাকশান হওয়া খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু কোন চিকিৎসাকেন্দ্রে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ের বন্দোবস্ত থাকলে পরে এই পরিস্থিতির উদয় হত না।

কৌস্তুভ এর ছবি

চলুক

সুমন_তুরহান এর ছবি

সহমত। চলুক

অপছন্দনীয় এর ছবি

একজন নারীর শরীরটা একটি প্যাসিভ ভেসেল বা ইনকিউবেটর নয়। তাঁর শরীর এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গের উপর তাঁর পূর্ণ অধিকার আছে।

গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত একজন নারীর পক্ষে কখনোই সোজা বা সহজ নয়। কিন্তু সব দিক ভেবে শুনে তিনি যদি সেই সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তাঁর ওপর আপনাদের ভাবালুতাজনিত, স্বল্পজ্ঞানসমণ্বিত নীতিকথার বোঝ নাইবা চাপালেন?

চলুক

অপছন্দনীয় এর ছবি

লম্ফনরত মন্তব্য

আশালতা এর ছবি

লাফাং

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ওরে খাইছেরে ইমো'টা আসলেও দরকার!

ধর্ষণের শিকার হয়ে যে নারী গর্ভবতী হয়ে পড়েন, তার কোন অসতর্কতার দোহাই আপনি দেবেন?

তাঁকে কোনো অসতর্কতার দায় আমি দেব না। আমি কেবল অনুরোধ করব সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করেন একেবারে প্রথম পর্যায়ে।

অথবা যদি প্রি-ইক্লাম্পসিয়া বা একটোপিক গর্ভাধানের কারণে কোন নারী জীবনসঙ্কুল হয়ে ওঠে তাহলে কি হবে? অথবা যদি অ্যামনিওসেন্টেসিস মারফত জানা যায় যে জেনেটিক কারণ বা ক্রোমোজোমাল অ্যাবনর্মালিটির জন্য জন্মালেও শিশুটি দারুণ কষ্ট পাবে, সেই শারীরিক এবং মানসিক কষ্টযন্ত্রণার দায় আপনারা কেউ নেবেন কি?

না নেবনা। আমি স্বাভাবিক অবস্থার কথা বলেছি। আপনি সেটাকে 'বিশেষ' পরিস্থিতির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছেন!
[অট: কঠিন কঠিন টার্ম ব্যবহার করেছেন, একটাও বুঝিনি। এইসব নিয়ে সচলে বিস্তারিত লেখা দিতে পারেন। আমরা অনেকেই বিজ্ঞান বিষয়ক লেখা খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ি।]

একজন নারীর শরীরটা একটি প্যাসিভ ভেসেল বা ইনকিউবেটর নয়।

অবশ্যই নয়। কিন্তু তার মানে কি শরীরের মালিক খুন করার অধিকার পেয়ে যাবেন?

গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত একজন নারীর পক্ষে কখনোই সোজা বা সহজ নয়। কিন্তু সব দিক ভেবে শুনে তিনি যদি সেই সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে তাঁর ওপর আপনাদের ভাবালুতাজনিত, স্বল্পজ্ঞানসমণ্বিত নীতিকথার বোঝ নাইবা চাপালেন?

বেশ বলেছেন। কেউ কেউ সিদ্ধান্ত নিতে হয়তো কয়েকমাস দেরি করে ফেলতে পারেন। সেক্ষেত্রে জন্মানোর পর বাচ্চাটাকে মেরে ফেলা যায়। ক্লিনিকে বাচ্চা মেরে ফেলার মতো এরকম একটা বিভাগ থাকা দরকার। নাকি?

একটি বাচ্চা যখন তার মায়ের পেটে পরিপূর্ণ মানুষ, তখন অসতর্কতা/সিদ্ধান্তহীনতা/সামাজিকতা/ঐশী যে অজুহাতেই তাকে মেরে ফেলা হোক সেটা খুন। সেই দায় এড়াবার কোনো উপায় নেই।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

বলছেন "মায়ের পেটে"র "বাচ্চা", আবার তাকেই বলছেন "পরিপূর্ণ মানুষ"? "পরিপূর্ণভাবে বেড়ে ওঠার" জন্য তো একটা ভ্রুণের ৯ মাস + ১৫ বছর (পিউবারটি/অ্যাডাল্টহুড কিছু একটা ধরতে পারেন) মত সময় লাগে। আর "পরিপূর্ণ মানুষ" হয়ে পড়ার আগেই তাকে থামিয়ে দিলে কি সেটা "খুন" নয়?

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আক্ষরিক অর্থে নেবেন বুঝতে পারিনি। তাহলে আরো স্পষ্ট করে বলবার চেষ্টা করতাম। স্পার্ম তো আর মানুষ নয়, এগ ও নয়। পরিপূর্ণ অবস্থা বলতে তাই বুঝিয়েছি যখন তাকে মানুষের বাচ্চা হিসেবে চেনা যায় সেই অবস্থাকে!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আমি পুরাটা পড়তে পারলাম না ... ভয়াবহ

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আশালতা এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ত্রিমাত্রিক কবি। সচেতন হোন, সচেতন করুন।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

ইস্কান্দর বরকন্দাজ এর ছবি

মন খারাপ মন খারাপ

আশালতা এর ছবি

মন খারাপ মন খারাপ

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

তারাপ কোয়াস এর ছবি

বীভৎস! মন খারাপ


love the life you live. live the life you love.

আশালতা এর ছবি

মন খারাপ

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

guest_writer এর ছবি

খুব কষ্ট পেলাম খুব......
nawarid nur saba

আশালতা এর ছবি

মন খারাপ

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

তিথীডোর এর ছবি

গা শিউরে উঠল...

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

আশালতা এর ছবি

মন খারাপ মন খারাপ

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

সাইফ জুয়েল এর ছবি

নির্মম

আশালতা এর ছবি

ভয়াবহ নির্মম।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

তানিম এহসান এর ছবি

আগের তুলনায় এই হত্যার আধিক্য কিন্তু বেড়েছে, ব্যাঙের ছাতার মত জায়গায় জায়গায় গজিয়ে উঠেছে ক্লিনিক, ডায়াগনোষ্টিক সেন্টার কাম হাসপাতাল - এখন হত্যায় প্রযুক্তির ব্যবহারও হচ্ছে। যে তিনটি পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় তার প্রতিটিই ভয়াবহভাবে নৃশংস!

আপনি লিখলেন আশালতা আপা, আমরা পড়লাম, মন্তব্য করলাম। তারপর?

আশালতা এর ছবি

তানিম, এই লেখাটা নিছক শব্দ সাজিয়ে পড়ার আনন্দ নেবার জন্যে লেখা নয়। অনেকেই এই বিষয়টা সম্পর্কে হয়তো ভালমত জানেন না, তাঁরা জানবেন, ভাববেন বিষয়টা নিয়ে। আবার যারা এর মাঝেই জানেন তাঁরা নিজেদের পরিমণ্ডলে আলোচনা করবেন। পাব্লিক ফোরামে এরকম একটা বিষয় আলোচনা হলে কিছু পরিমান সচেতনতা বৃদ্ধির আশা করা যায়। হয়তো তা খুব সামান্য কিন্তু তা-ই বা কম কি ?

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

তানিম এহসান এর ছবি

ওকে। জানতে চেয়েছিলাম তারপর? উত্তর দিয়ে দিয়েছেন - হাসি

জহির  আহমাদ এর ছবি

জরুরী লেখা । এ ক্ষেত্রে সহজ সমাধানের উপায়গুলো আরেকটু বিশদভাবে আলোচনা করলে ভাল হত । একইসাথে এধরনের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি কেন হচ্ছে এবং এগুলো না হতে দেবার জন্য কী ধরনের সতর্কতা ও সচেতনতা জরুরী এসব বিষয়েও কিছু দিকনির্দেশনামূলক মন্তব্য আশা করছি ...

আশালতা এর ছবি

মন্তব্যে ধন্যবাদ জহির আহমাদ। আপনি যে বিষয়গুলো নির্দেশ করেছেন সেগুলো আসলেও ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মুশকিল হল আমি ডাক্তার নই। ডাক্তার হলে খুঁটিনাটি জিনিসগুলো খুব স্পষ্ট করে তুলে ধরা যেত।
তবে আপনার কথামত আমি চেষ্টা করব কিছু তথ্য সংগ্রহ করে এই বিষয়ে আরেকটি সচেতনতা মূলক পোস্ট দিতে। সচলে অনেক ডাক্তার আছেন উনারা এবিষয়ে লিখলে বরং অনেক ভালো হয়।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

জহির  আহমাদ এর ছবি

আপনাকেও ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা ।

আমরা ভয়াবহ, নির্মম, বিভৎস বা ঠান্ডা মাথার খুন অথবা আর যাই বলি না কেন....মন খারাপ করে বা ঘৃনা প্রকাশ করে আর ছি ছি করে তো দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারবো না ! আর তাছাড়া এগুলোই বাস্তবতা !! বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়াটাও দরকার !!!

আইন তো করে কতগুলো সুশীল ইয়ে ! অথচ এসব জরুরী বিষয়ে কোনওদিন তো সুশীলগুলারে দুইটা বয়ান করতে শুনি নাই !!! আর বয়ান করবে কী, এইসব বানিজ্যে সুশীলদের অংশগ্রহনটাই তো বেশী !! আরে ব্যাটারা, নারীদের আগে ভালভাবে বাঁচতে দে, তাদের জন্য সহজ, স্বাভাবিক, নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোল । তাইলেই তারা সুস্থ, সুন্দর, স্বাভাবিক মানুষ জন্ম দিবে ॥ আর নইলে তোদের মত অপ্রকৃতিস্থ সুশীল এ দেশ ভরে যাবে, সহজ মানুষ আর খুঁজে পাওয়া যাবে না ॥

ডাক্তার সাহেবদের পাশাপাশি সাইকোলজিস্ট, সোশ্যাল সাইন্টিষ্ট এবং বিষয় সংশ্লিষ্ট যারা আছেন পারলে এনাদের সাথেও একটু কথা বলে নিয়ে আরো কিছু টেস্ট কেস নিয়ে আরেকটা লেখা দিলে বোধহয় ভাল হত । ভেবে দেখবেন আশা রাখি ॥

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

মনটা খারাপ হয়ে গেলো।
মানুষ কত নিমর্ম হতে পারে, তাই না!!!
মানব শিশু হত্যা রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনের যথোপযুক্ত প্রয়োগ ছাড়া অন্য কোন রাস্তা নেই।

আশালতা এর ছবি

ভালো বলেছেন সবুজ পাহাড়ের রাজা। কিন্তু নিজেরা সচেতন না হলে হাজার আইনেও কিছু হবেনা মনে হয়।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

হাসান মামুন এর ছবি

ঘৃণা প্রকাশ এর কোন রাস্তা পাই না এদের প্রতি।

আশালতা এর ছবি

ঘৃণা প্রকাশ এর চাইতে বোধ হয় সজাগ হয়ে ওঠাটাই বেশি জরুরী। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

শিবু বসু এর ছবি

নির্মম নিঃসন্দেহে। হাসান মানুন ভাই ঘৃণা প্রকাশ করছেন কাদের প্রতি? ভুক্তভোগির অবস্থানটা নিশ্চিতভাবে সহজ নয়। পুরো বিষয়টিতে সচেতনতার বিকল্প নেই। লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ........................

আশালতা এর ছবি

পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ শিবু বসু।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

পুরোটা পড়তে পারলাম না মন খারাপ
ভয়াবহ...
কদিন আগে ফেসবুকে একটা ভিডিও শেয়ার করেছিলাম...
ঐ ডাক্তারনিকে এই ভিডিওটা দেখাতে পারলে ভালো লাগতো
http://www.facebook.com/groups/gaanpagol/?id=256791431017180#!/video/video.php?v=2092468233535&oid=132982530105237&comments

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আশালতা এর ছবি

নেটে বসার সময় পাচ্ছিনা তেমন, উত্তর দিতে দেরী হয়ে যাচ্ছে। তবে ভিডিও কজনকে দেখাবেন ? ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে যে।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

মৌনকুহর এর ছবি

শিউরে উঠলাম! মানুষ কেমনে পারে এমন করতে! ঠাণ্ডা মাথায় নিজের সন্তানকে খুন!! কী বীভৎস!!

ঘটনাগুলোর ভয়াবহতাটুকু শব্দের আড়ালে আড়াল না করার জন্য পাঁচ তারা। প্রিয় পোস্টে নিলাম।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ

আশালতা এর ছবি

ধন্যবাদ মৌনকুহর। হাসি

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

অপছন্দনীয় এর ছবি

এই জন্যই বোধহয় কয়েকদিন আগে জিজ্ঞেস করছিলেন গর্ভপাত সমর্থন করি কিনা। ওই সময়ে আপনাকে এক বাক্যে উত্তর দিয়েছিলাম কারণ বিস্তারিত বলার সময় ছিলো না - এখানে বলছি।

আপনি যে পদ্ধতিগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন কোন অবস্থাতেই সেগুলোর সমর্থন বা এমনকি মেনে নেয়ারও কোন প্রশ্ন থাকতে পারে না।

কিন্তু কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে গর্ভধারণের প্রথম দিকে প্রপার মেডিক্যাল প্রসেডিওরের সাপেক্ষে আমি গর্ভপাত সমর্থন করি।

বাংলাদেশে যদি কোন মেয়ে রেপড হয়, তার ক্ষেত্রে অবশ্যই গর্ভপাতের প্রসেডিওর থাকা উচিত। এইভাবে যদি কেউ জন্মায় তাহলে বাংলাদেশের সমাজ তার জন্মদাতার উপরে নয়, বরং তার উপরেই লাফিয়ে পড়বে। যদি সেটা পাল্টাতে চান, তাহলে বাংলাদেশী সমাজের বেশিরভাগ অংশটা যে দুপেয়ে কুকুরগুলোকে নিয়ে তৈরী সেগুলোর পেছনে কষে লাথি মেরে মেরে তাদের দৃষ্টিভঙ্গী পাল্টান প্রথমে, তারপরে গর্ভপাতের অধিকার থাকা উচিত কিনা তা নিয়ে কথা বলুন।
(রূঢ় ভাষা ব্যবহার করার জন্য দুঃখিত, বাংলাদেশের সমাজের অধিকাংশের জন্য ভদ্র কোন ভাষা নেই আমার কাছে)

কোন প্যারেন্ট যদি নিশ্চিত না হন যে শিশুর বড় হওয়া পর্যন্ত তার সমস্ত যৌক্তিক স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা করার সাধ্য তাঁদের আছে অথবা যদি তার সমস্ত ইমোশনাল প্রয়োজন মেটানোর সাধ্য তাঁদের না থাকে, তাহলে সেক্ষেত্রে অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণের ক্ষেত্রে গর্ভপাতে আমি কোন দোষ দেখি না (অবশ্যই সেটা প্রেগন্যান্সির প্রথমদিকে হতে হবে) । এটাকে যদি হত্যা ধরা হয় তাহলে হত্যাটা অবশই অপরাধ, কিন্তু নিজেরা মজা লুটতে গিয়ে একটা মানুষকে পৃথিবীতে টেনে এনে তার সারা জীবন ধরে তাকে অতৃপ্তির মধ্যে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়াটা কোন অবস্থাতেই হত্যার চেয়ে হালকা অপরাধ নয়।

বাংলাদেশে পারিবারিকভাবে মেয়েদের উপরে অত্যাচার করার অন্যতম ফেইলসেফ উপায় হচ্ছে একটা বাচ্চার ব্যবস্থা করা। একে যেমন বাচ্চার উপরে অত্যাচার করে মায়ের উপরে অত্যাচার করা যায়, তেমনি মাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেলও করা যায় - সাধারণভাবে ধরে নেয়া যেতে পারে কোন মা-ই তার বাচ্চাকে ছেড়ে চলে যাবে না। এই সমস্ত ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রেগন্যান্সির প্রথম দিকে গর্ভপাত ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার মায়ের থাকা উচিত।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

বাংলাদেশে যদি কোন মেয়ে রেপড হয়, তার ক্ষেত্রে অবশ্যই গর্ভপাতের প্রসেডিওর থাকা উচিত।

নিশ্চয়ই। কিন্তু নির্যাতিতা কি এই কাজটি শিশুটি বেড়ে ওঠার আগেই করতে পারেন না?

সবক্ষেত্রেই গর্ভপাতের পক্ষে খুব কষ্ট করে হ্যাঁ বলব যদি সেটা বাচ্চাটি বেড়ে ওঠার আগে হয়। এই সময়টি সম্ভবত প্রথম সপ্তাহ দুই। তা না হলে সামাজিকতা অথবা অসতর্কতার দোহাই দিয়ে কেউ কাউকে খুন করতে পারে না।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অপছন্দনীয় এর ছবি

অবশ্যই প্রসেডিওরটা শিশুটি বেড়ে ওঠার আগে হতে হবে, সেকারণেই প্রথমে বলে নিয়েছিলাম "গর্ভধারণের প্রথম দিকে"।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ঠিকাছে।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সচলায়তনের পাঠক কৌশিক এর ছবি

এই সময়টি সম্ভবত প্রথম সপ্তাহ দুই।

আপনার এই ধারণাটি সঠিক নয়।
গর্ভাধানের পর শিশুর বেড়ে ওঠার স্তরগুলো নিয়ে যদি কেউ জানতে চান, এইখানে দিলাম একটা লিঙ্ক, যেখানে ছবি সমেত প্রতি সপ্তাহের ডেভেলপমেন্টের কথা বলা আছে।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

"বেঠিক" হবার সম্ভাবনা ছিল বলেই ওইটা একটা "ধারনা" ছিল এবং "দুই সপ্তাহ" কথাটির আগে "সম্ভবত" বলে একটি শব্দও ছিল। চোখ টিপি
যে লাইনটি কোট করেছের সেটির আগের লাইনটিও পড়ুন। আমি কী বলতে চাইছি বুঝতে পারবেন।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনার এই 'দুই সপ্তাহ' বেঁধে দেওয়ার পেছনে যুক্তি কী? প্রথম তিন-চার সপ্তাহ (এক মাস) এর আগে তো মহিলারা নিজের শরীরে স্পষ্ট লক্ষণই পান না অধিকাংশ সময়। ওই দিহানের লেখায় বলা পরিস্থিতিটাই দেখুন না। যে পরিবার নিয়মিত মিলনের সময় সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করছেন, তাঁরা তো আর প্রতি সপ্তাহে গিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্ট করাবেন না। তাহলে হঠাৎ করে কনসেপশন হয়ে গেলে বমি ইত্যাদি লক্ষণের মাধ্যমে জানতে প্রায়ই এক মাস বা তার বেশি লেগে যায়। তাঁদের ক্ষেত্রে কী হবে?

fetal viability নিয়ে বিতর্ক থাকলেও সেটার সময় দুই সপ্তাহ নয়, অনেকটাই পরে - কুড়ি সপ্তাহের আগে তো প্রায় অসম্ভব।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

দুই সপ্তাহের আগে 'সম্ভবত' শব্দটি ব্যবহার করেছি। সময়টি নিশ্চিত নই বলেই। একটি শিশু পরিপূর্ণভাবে বেড়ে ওঠার আগে পর্যন্ত যতটা সময় পাওয়া যায় সেই সময়টাকে বোঝাতে চেয়েছি। আমার মন্তব্যের আগের লাইনটি পড়ুন: "সবক্ষেত্রেই গর্ভপাতের পক্ষে খুব কষ্ট করে হ্যাঁ বলব যদি সেটা বাচ্চাটি বেড়ে ওঠার আগে হয়"।

অসতর্কতা কোনো যুক্তি নয়। কারো সতর্কতা 'সাধারণ' ধরনের ছিল দেখে কেউ খুন করার অধিকার পেয়ে যায় না।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

আ-হা! "বেড়ে ওঠার আগে" মানে কী? সে তো গর্ভধারণের পুরো নয় মাস সময় ধরেই বাড়ছে, এবং জন্মিয়েও বেড়েই চলেছে। "পরিপূর্ণভাবে" কোয়ালিফায়ারটাও একদম একই রকম ধোঁয়াটে।

আর একজনকে শুরু থেকেই প্রি-এম্পটিভ-ভাবে অসাধারণ পথগুলি ধরতেই বা হবে কেন? যে দম্পতি নিয়মিত নিরোধ ব্যবহার করে সেফ ভাবে মিলন করছেন, তাঁদের যদি নিরোধের কার্যকারিতা ১-২% ক্ষেত্রে ফেল করে বলে কখনও কনসেপশন হয়েই যায়, তাহলে তাঁদের কী দোষ? আপনি কী পরামর্শ দেন, মহিলাটিকে দ্বিগুণ নিরাপত্তার জন্য প্রতিদিন নানাবিধ সাইডএফেক্টওয়ালা পিল-ও খেয়ে যেতে হবে? হপ্তায় হপ্তায় গিয়ে প্রেগনেন্সি টেস্টও করিয়ে আসতে হবে, পাছে 'দুই সপ্তাহের' লিমিট অতিক্রম না হয়ে যায় দৈবাৎ'ও? এতকিছু ফ্যাচাং না করলেই তাদের খুনি বলে দাগিয়ে দিতে হবে?

মন মাঝি এর ছবি

আ-হা! "বেড়ে ওঠার আগে" মানে কী? সে তো গর্ভধারণের পুরো নয় মাস সময় ধরেই বাড়ছে, এবং জন্মিয়েও বেড়েই চলেছে।

ইন্টারেস্টিং প্রশ্ন !

আমারও এমন একটা প্রশ্ন ছিল। আমি যদ্দুর বুঝি, এই প্রসঙ্গে মানুষ বলতে একধরনের মোটা দাগের 'নৈতিক' স্ট্যাটাস বা 'মর্যাদা' বোঝানো হয়, কোন বস্তুনিচয়ের বিশেষ বা পুঙ্খানুপুঙ্খ ও সম্পূর্ণ সুনির্দিষ্ট কোন কনফিগারেশন বা কনফিগারেশনের কোন বিশেষ ও সুনির্দিশট অবস্থাকে অবজেক্টিভলি বোঝানো হয় না - বরং একটা ব্রড সাব্জেক্টিভ 'মূল্যবোধে'-র প্রতি নির্দেশ করা হয়, যার ছত্রছায়াতলে সমাজের সামগ্রিক নৈতিক ও আবেগিক ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে অনেক ধরনের কনফিগারেশনই আশ্রয় লাভ করতে পারে। এর সাথে বিজ্ঞানের বোধহয় সরাসরি কোন সংযোগ বা সম্পৃক্ততা নেই। 'মানুষ' শব্দটি ও 'মানবমর্যাদা' বৃহত্তর সমাজের সৃষ্টি ও সম্পত্তি, এক্সক্লুসিভলি বায়োলজি বা বিজ্ঞানের নয়।

কিন্তু বায়োলজি/চিকিৎসাশাস্ত্র বা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কোন বাস্তব অবস্থায় নীতিশাস্ত্র প্রয়োগ করতে গেলে এরকম একটা সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞার প্রয়োজন আছে বলেই মনে হয়। এ্যবর্শনের ক্ষেত্রে অন্যতম (একমাত্র বা দুইমাত্র নয়) ২টি প্রশ্ন আমার মাথায় আসছে। এর মধ্যে একটা হলোঃ-

১। কে 'মনুষ্য পদবাচ্য' হবে যে কিনা 'মানবহত্যা অন্যায়/অনৈতিক/অপরাধ' এই নৈতিক অবধারনের সীমানায় বা ছায়াতলে আশ্রয় পাবে এবং তাকে সচেতনভাবে মারা হলে বা যার অস্তিত্ত্ব ডেলিবারেটলি 'টার্মিনেট' করা হলে সেটাকে নৈতিক ভাবে 'হত্যা' বলা যাবে ? কনসেপশন (এমনকি কারো কারো মতে শুক্রানু/ডিম্বানুকেও অন্তর্ভুক্ত করা উচিত!!) থেকে শুরু করে জাইগোট ও ভ্রূণ হয়ে, ১৪ দিন পর্যায়, ২০ দিন পর্যায়, ২১ দিন পর্যায়, ৪০ দিন পর্যায় (ব্রেইন ওয়েভ পর্যায়), ষষ্ঠ সপ্তাহ, বা ৮ম সপ্তাহের পর্যায় হয়ে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর্যায় পর্যন্ত ঠিক কোন পর্যায়ে এবং কেন তার উপরিল্লিখিত নৈতিক উপায়ে 'হত্যাযোগ্য' 'মনুষ্যত্ব' অর্জিত হয় ?

আর ২য় প্রশ্নটি হলোঃ--

২। ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগেই বা পর থেকে শুরু করে - ১৮ বয়সে বয়ঃপ্রাপ্তি লাভ করা হয়ে, মধ্যবয়স হয়ে অতি বৃদ্ধ বয়সে মৃত্যূর আগ পর্যন্ত যে কোন পর্যায়ে যদি ঐ 'কারনটি' কোন না কোন ভাবে বা 'ইন ইফেক্ট' অনস্তিত্ত্বশীল হয়ে পড়ে বা পড়া সম্ভব হয়, তাহলে কি ঐ মানুষ 'মানবহত্যা অন্যায়/অনৈতিক/অপরাধ' এই নৈতিক অবধারনের সীমানায় বা ছায়াতলে আশ্রয় লাভে বঞ্চিত হয়ে মনুষ্য-অপদবাচ্য এবং হত্যা-অযোগ্য ভাবে টর্মিনেবল হয়ে যাবেন ? হলে বা না হলে সেটা কেন ? এই প্রশ্নটা মনে আসার কারন হলো, ১ম প্রশ্নের উত্তরে কিছু কিছু উত্তর শুনেছি যা মনে হলো ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেও প্রয়োগ করা যেতে পারে কোন কোন ক্ষেত্রে।

****************************************

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

"বেড়ে ওঠার আগে" অথবা "পরিপূর্ণভাবে" কোয়ালিফায়ারগুলো ধোঁয়াটে থাকার কারণ এই বিষয়ে আমার অজ্ঞানতা। আমি ভেবেছিলাম আপনি বুঝতে চাইবেন আমি আসলে কী বলতে চাচ্ছি।

আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে একটি মানুষ বেঁচে থাকার জন্য কেবল তার মায়ের উপর নির্ভরশীল বলেই তাকে হত্যা করার অধিকার আছে সেই মায়ের! আমি স্পষ্টতই সেই পক্ষে নই। দুই সপ্তাহ' কথাটি আগে একবার স্পষ্ট করার চেষ্টা করেছিলাম। আপনি মন্তব্যটি পড়েন নি বোধ হয়! সে যাই হোক, যেটা বলতে চাই, যখন ভ্রুণ একটি পূর্ণ মানব শিশু হয়ে গড়ে ওঠে তখন তাকে হত্যা করার জন্য তার মায়ের নিরোধ জনিত যুক্তি অন্তত আমার কাছে গ্রহনযোগ্য নয়।

পৃথিবীতে ইনফ্যাক্ট মানুষ মেরে ফেলার অসংখ্য যুক্তি আছে। একেক গোষ্ঠী একেকটা ধরে খুন করতে চায়/করে। আর তারা সেটাকে অন্যায় নয় বরং সত্য/ন্যায় বলে বিশ্বাস করে। তাদের ওই হত্যায় কোনো অপরাধ বোধও তাই তাদের তৈরি হয় না! আমার সমস্যা হচ্ছে কোনো যুক্তিকেই আমি খুন করার জন্য যথেষ্ট বলে মনে করি না। কোনো বিশেষ যুক্তির বলে কেউ খুন করলে তাই তাকে আমি খুনি বলেই দাগাই।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সচলায়তনের পাঠক কৌশিক এর ছবি

ব্রাভো। ভাল বলেছেন। এ প্রসঙ্গে একটি ওয়েবলিঙ্ক দিলাম, যেখানে গর্ভপাত সংক্রান্ত অনেক মিথ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটি একটি ইংরাজী পিডিএফ ডক্যুমেন্ট।

কৌস্তুভ এর ছবি

এই ছেলেটা অনেক দারুণ দারুণ কথা বলে...

আয়নামতি1 এর ছবি

................. মন খারাপ

আশালতা এর ছবি

মন খারাপ

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

অ্যাবরশন অবশ্যই হত্যা। অসতর্কতা' আর সামাজিকতাকে অজুহাত বানিয়ে দায় এড়ানোর কোনো উপায় নেই!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

আশালতা এর ছবি

লাখ কথার এক কথা বলে দিয়েছেন অনার্য সঙ্গীত। চলুক

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

আশালতা এর ছবি

এই লেখাটার প্রেক্ষাপট নিয়ে কিছু কথা বলার প্রয়োজন মনে করছি। একজন গাইনকলজিস্ট আত্মীয়ার সাথে কদিন আগেও কথা হচ্ছিল এই বিষয়টি নিয়ে। উনি ঢাকার এবং ঢাকার বাইরেও বেশ কিছু হাসপাতাল ক্লিনিক ইত্যাদিতে বেশ অনেক বছর কাজ করেছেন। এইসব হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলোর বেশির ভাগ জায়গায় মালিক পক্ষের আবদার থাকে যেন কর্মরত ডাক্তাররা কোনরকম প্রশ্ন না তুলে 'পার্টির' এবরশনটি করে দেন। কারন যারা এবরশন করাতে আসেন তারা এত ডেসপারেট থাকেন যে প্রায় যেকোনো মূল্য দিতে রাজি থাকেন। তাদেরকে বাচ্চার আল্ট্রাসনোগ্রাম করে বাচ্চার ছবি, মুভমেন্ট ইত্যাদি দেখানো হয় যাতে মমতাবশত তারা বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করেন। কিন্তু তাতে কখনই ফল হয়না। অনেক ক্লিনিকে শুধুমাত্র এবরশন করানর জন্য আলাদা ইউনিট থাকে। এবং এইসব পরিকাঠামোগত সেবা বা সুবিধেবলী নিতে আসেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কম বয়েসি এবং অবিবাহিতা মেয়েরা। সাথে থাকে তাদের বয়ফ্রেন্ড বা পার্টনার, যে কিনা অনেক সময়ই তার কাজিন, ড্রাইভার এমনকি মামা ! প্রতিদিন যে সংখ্যক নারী ক্লিনিকগুলো থেকে এই সেবা গ্রহন করেন তার সংখ্যাটি নেহাত ছোট নয়। এবং সবচেয়ে ভয়ের কথা হল এঁদের মনোভাবটি। অনেকেই আছেন যারা প্রায় পার্লারে গিয়ে ভুরু প্লাক করার মতই স্বাভাবিক এবং দ্বিধাহীন ভাবে কাজটি করতে আসেন।

এবরশনের বিষয়টা এইভাবে ব্যাপকভাবে ডালভাতের মত সহজ হয়ে ওঠার মনোবৃত্তিতেই আমার আপত্তি। এই লেখাটি এবরশনকে নিক্তি বিচার করে ভালো নাকি মন্দ তা প্রমাণ করার উদ্দেশ্যে লেখা হয়নি। বরং আমার ধারনা, আমরা এখানে সেটার ঔচিত্য নিয়ে গলার রগ ফুলিয়ে যতই তর্ক করি না কেন, যে মেয়েটি এই সমস্যায় পড়েছে, সে চাইবে যেকোনভাবে হোক সেটা থেকে বের হতে। কারন তার মমতাকে গুরুত্ব দিতে গেলে যে সামাজিক পরিকাঠামো দরকার তা সে কোথাও পাবেনা। সেখানে নিজের সামাজিক অস্তিত্ব রক্ষা করাটাই মুখ্য চিন্তা হয়ে উঠবে, একটি 'প্রায় জড়' বস্তুপিণ্ড যার 'নিজের কথা বলার ক্ষমতা নেই' তাকে গুরুত্ব দিলে তার চলবে না। এই জন্যেই গ্রামগুলোতে এখনও এই অবস্থা। সমস্যাগ্রস্ত মানুষের সামনে নৈতিকতার প্রশ্ন প্রায়শই মূল্যহীন হয়ে যায়। আমরা তর্ক করে যেটাই সাব্যস্ত করিনা কেন, ভুক্তভোগীর কাছে তা অর্থহীন।

ফিজিওলজিকাল কিছু ক্ষেত্রে এবরশনকে এড়ানো যায়না এটা আমি লেখায় উল্লেখ করেছি, সচলায়তনের পাঠক কৌশিক সেটা সম্ভবত খেয়াল করেননি। এগুলো ছাড়া এবরশন ভালো নাকি মন্দ সে তর্কে না গিয়ে আমার উদ্দেশ্য ছিল এই বিষয়টির অসুন্দর দিকটি লেখায় তুলে আনা, যাতে যারা এখনও এবিষয়ে ভালমত জানেন না তাঁরা সজাগ হয়ে উঠতে পারেন। প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধ এই ক্ষেত্রে ভালো উপায় আমার বিশ্বাস। কাজেই অল্প কিছু মানুষও যদি সচেতন হয়ে ওঠেন, সেটাই এই লেখার পক্ষে বিশাল পাওয়া হবে আমার জন্য। 'ভাবালুতাজনিত, স্বল্পজ্ঞানসমণ্বিত নীতিকথার বোঝ' চাপানোটা লেখার উদেশ্য ছিলনা। নইলে আমার মত অতি আবেগি মানুষের পক্ষে যুক্তির তোপ দেগে দেগে তর্কযুদ্ধে জেতা কস্মিনকালেও সম্ভব নয় বলে সে চেষ্টাও আমি করবোনা। আপনারা আপনাদের জ্ঞান দিয়ে অন্যদেরও যথাসাধ্য আলোকিত করে তুলুন- পাঠকদের প্রতি শুধু এই অনুরোধ রইল ।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

অপছন্দনীয় এর ছবি

আরেকটা ব্যাপার,

এতে ফরসেপ দিয়ে শিশুর অপরিণত শরীরটি ছিঁড়ে ছিঁড়ে টেনে বের করে আনা হয়

এই তথ্যটা সম্ভবত সঠিক নয়। methotrexate, mifepristone, prostaglandin ড্রাগ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সূত্র এবং সূত্র

হার্টবিট হয় ষষ্ঠ সপ্তাহ থেকে।সূত্র

কৌস্তুভ এর ছবি

হুম। ইমোশনাল হয়ে পড়লে তথ্যে অল্পস্বল্প এদিকওদিক হয়েই যেতে পারে...

আশালতা এর ছবি

ইমোশনাল হয়ে তথ্য বিকৃতি করা হয়নি। দুটি তথ্যই সঠিক ভাবে জেনে এবং 'দেখে'ই লেখা হয়েছে। আপনি গায়নকলজিস্টের সাথে কথা বলে দেখতে পারেন, ভিন্নতা পাবেন না। আর একদম অত্যাধুনিক পদ্ধতি দেশের সব জায়গায় ব্যবহার করা হয় বলে মনে হয়না। অনেক জায়গায় এমনকি এনেস্থেসিয়া পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়না, সেটার পয়সাও মেরে দেয়া হয়। রুগিকে অনেক ওষুধ পত্রের লিস্ট ধরিয়ে সেগুলো কেনানো হয়, কিন্তু সবগুলো ব্যবহার হয়না। এই তথ্যগুলো উইকিপিডিয়াতে দেয়া নেই, আমি স্বচক্ষে দেখেছি বলেই জানি।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

অপছন্দনীয় এর ছবি

দুঃখিত, যা বলতে চাচ্ছিলাম সেটা মনে হয় ঠিকমত বোঝাতে পারিনি।

আপনার লেখার পদ্ধতিগুলোর বাস্তবতা অস্বীকার করার কিছু নেই। এ ধরনের অমানবিক প্রথা আমাদের দেশে চলে শুধু না, খুব বিস্তৃতভাবেই চলে। কিন্তু আপনার যে লাইনটা আমি কোট করেছি সেটা পড়ে মনে হচ্ছিলো ওটাই অ্যাবরশনের একমাত্র উপায়। আমি শুধু এটাই বোঝাতে চাচ্ছিলাম যে অ্যাবরশনের নিরাপদ অনেক পদ্ধতি আছে এবং অ্যাবরশন মানেই অমানবিক স্টাইলে একটা শিশুর হাত পা টেনে ছিঁড়ে বের করে আনা হবে এমন নয়।

পাপী [অতিথি লেখক] এর ছবি

সত্যি বলতে কি, লেখাটার অল্প একটু পড়ে আর পড়তে পারিনি। এরকম বীভৎসতা নিয়ে কিছু পড়ব, এটা ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে। তবে পোস্ট যে সময়োপযোগী, এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। একটা ভিডিও আছে ইউটিউবে। এখানে আনার ব্যাবস্থা করছি।

আশালতা এর ছবি

পাঠক পাপীকে ধন্যবাদ জানাই।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

পড়তে পড়তে গলা আটকে আসছিল বীভৎসতার নমুনা দেখে। সমাজটার কত সমস্যা!!!! শিক্ষার আলো নেই, দারিদ্র্যের যাঁতাকলে পিষ্ট। এই অন্ধকার কবে দূর হবে!!!! মন খারাপ

আর একটি আধুনিক, বৈজ্ঞানিক, সঠিক পদ্ধতিতে এবরশন করালে আমি কোন সমস্যা দেখি না। তবে তা একেবারেই প্রথম দিকে করা উচিৎ। একজন মেয়েরতো বুঝতে পারার কথা সে কনসিভ্ড কী না। আর সবচেয়ে ভালো হয় খুব সতর্ক থাকলে, যাতে কিছুতেই অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ না হয়ে যায়। তবে অনেক ঘটনার ক্ষেত্রে আসলে এড়ানোর কোন উপায় থাকে না, সেক্ষেত্রে গর্ভপাতের বিকল্প থাকে না। তবে তা যতদ্রুত করা যায় তত ভালো।

আমি যতটুকু বুঝি তাতে মনে হয়, যখন গর্ভপাত এড়ানোর কোন উপায় থাকে না তখন গর্ভপাত করে ফেললেও গর্ভধারিনী কিন্তু সেই সন্তানের কথা চিরকাল মনে রাখে, নিভৃতে কাঁদে।

অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ লেখাটির জন্য ধন্যবাদ লতাপু। আমাদের আসলেই সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে হবে সবখানে।


_____________________
Give Her Freedom!

আশালতা এর ছবি

গর্ভেধারণ করলেই বা জন্ম দিলেই দুর্ভাগ্যজনকভাবে সব নারী 'মা' হয়ে উঠতে পারেনা । এই কথাটা আপনার বোধ হয় জানা নেই। আমিও না দেখা অব্দি জানতাম না।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

মন খারাপ


_____________________
Give Her Freedom!

কৌস্তুভ এর ছবি

একজন মেয়েরতো বুঝতে পারার কথা সে কনসিভ্ড কী না।

যে সঙ্গমে জানা ভাবেই কোনো সতর্কতা (নিরোধ-পিল-ইত্যাদি) ব্যবহার করা হয় নি (সেটা দাম্পত্যমিলনও হতে পারে, ধর্ষণও হতে পারে) তাতে কনসেপশনের হার ভালোই। তেমন হলে দ্রুত সতর্কতা নেওয়াই শ্রেয়, যেমন মর্নিং-আফটার পিল। কিন্তু তা ছাড়াও অনেক ক্ষেত্রেই অজান্তে কনসেপশন হয়ে যায়, তখন বোঝার কিছু উপায় তেমন নেই। আসলে, কনসেপশনের মুহূর্তটা, যখন একটা ভ্রুণ সৃষ্টি হচ্ছে, সেটা নারীদেহে বোঝা যায় না। প্রেগনেন্সির লক্ষণ প্রকাশ পেতে পেতে প্রায়ই মাসখানেক।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

কৌস্তুভদা, আমি যতটুকু জানি(ভুলও হতে পারে) বলিঃ কনসিভ্ড হলে নরমাল মেন্সট্রুয়াল সাইকেল নিয়মিত থাকে না, এরকম অস্বাভাবিকতা দেখলেই সতর্ক হয়ে যাওয়া উচিৎ, সন্দেহে প্রায়শই বার্থ টেস্ট(খুবি সহজ উপায় মনে হয় আছে) করে নিশ্চিত হওয়া উচিৎ। টেস্টরেজাল্ট পজিটিভ হলেই আর দেরি না করে ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হওয়া উচিৎ। আর ভ্রুণ তৈরি হয়ে গেলে মনে হয় গর্ভধারিণী কিছু সিম্পটমও পায়। একটু সতর্ক থাকতে হবে আর কী। তবে তাও 'প্রেগনেন্সি ধরতে মাসখানেকই লাগবে'।


_____________________
Give Her Freedom!

অপছন্দনীয় এর ছবি

মেনস্ট্রুয়াল সাইকেল অনিয়মিত হয় চার সপ্তাহের পরে। সেফ পিরিয়ডের শুরু যদি মেনস্ট্রুয়াল সাইকেলের দুই সপ্তাহ আগে ধরি, তাহলে এই ক্ষেত্রে বুঝতে বুঝতে ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত দেরী হয়ে যেতে পারে।

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

আচ্ছা আচ্ছা, তাহলে এর আগে বোঝার উপায় নেই দেখছি!! চিন্তিত


_____________________
Give Her Freedom!

ফাহিম হাসান এর ছবি

গর্ভপাত বিষয়ক লেখা এর আগে পড়ি নাই। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও নাই। আপনার এই লেখাতে মন্তব্য করার আগে একটু সময় নিলাম।

আপনার পোস্ট পড়তেই আমার কষ্ট হল। ভয়াবহ বিবরণ। যে কোন অনুভূতিপ্রবণ মানুষেই এরকম ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান নিবেন। তবু বিতর্কে আমার অবস্থান গর্ভপাতের পক্ষেই। পছন্দনীয়কে কোট করছি -

বাংলাদেশে যদি কোন মেয়ে রেপড হয়, তার ক্ষেত্রে অবশ্যই গর্ভপাতের প্রসেডিওর থাকা উচিত

বাংলাদেশে পারিবারিকভাবে মেয়েদের উপরে অত্যাচার করার অন্যতম ফেইলসেফ উপায় হচ্ছে একটা বাচ্চার ব্যবস্থা করা। একে যেমন বাচ্চার উপরে অত্যাচার করে মায়ের উপরে অত্যাচার করা যায়, তেমনি মাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেলও করা যায় - সাধারণভাবে ধরে নেয়া যেতে পারে কোন মা-ই তার বাচ্চাকে ছেড়ে চলে যাবে না। এই সমস্ত ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রেগন্যান্সির প্রথম দিকে গর্ভপাত ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার মায়ের থাকা উচিত।

আশা করছি বাংলাদেশের হাসপাতাল, ক্লিনিকের পরিবেশটা আরো ভাল হবে। যদি কখনো সম্ভব হয় নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করব কন্ট্রিবিউট করার।

আশালতা এর ছবি

ধন্যবাদ ফাহিম। হাসি

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

যান্ত্রিক যোদ্ধা এর ছবি

লিখা টি আমি তিন বার চেষ্টা করে পরেছি। এখনও অস্থির লাগছে শুধু ভাবতেই।আল্লা আমাদের বোঝার ক্ষমতা দিক।

আশালতা এর ছবি

এটাই আমারও প্রার্থনা। আমাদের সবার বোঝার ক্ষমতা হোক।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

ক খ গ  এর ছবি

যখন শিশুটাকে নেগেটিভ সাকশন প্রয়োগ করে বের করে নিয়ে আসা হয়, তখন মায়ের কি প্রচন্ড কষ্ট হয়, বলে বোঝানো যাবেনা।
সরকার বা আইন এম,আর ( menstrual regulation ) সমর্থন করে। যে মা তার সন্তান কে এভাবে হত্যা করতে বাধ্য হয় তাকে রক্ষা করতে কি আইন আছে?
সমাজ বাবার নামহীন শিশুকে বাচতে দেবে?
শুধু মা'র নামে যদি সন্তান কে বাচানো যেতো, আমি অন্তত আমার সন্তান কে মরতে দিতাম না। সমাজে সন্তান সহ বাচার মত সঙ্গতি আমার আছে। যা নেই তা হল আমার সন্তানের বাবা নাম। আমার সন্তানের ধর্ম ছিলোনা।
বাবা যদি না চায়, সন্তানের ওপর মা'র দাবি নেই?

আমাকে এর উত্তর কে দেবে?

আশালতা এর ছবি

ক খ গ, সন্তান আসলে বাবা বা মা কারোরই একার নয়। সন্তানের সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য বাবা মা দুজনকেই প্রয়োজন। একজন আরেকজনের অল্টারনেট হতে পারেনা। আর তাই দুজনের ভালবাসায়, দুজনের সম্মতিতে সন্তানকে পৃথিবীতে আনা উচিত। একজনের অমত থাকলে সেই সন্তানকে পৃথিবীতে আনা ভীষণ অনিশ্চিত হয়ে যায়। এই কষ্ট সন্তানটিকে দেয়ার আমি কোন ভালো যুক্তি দেখিনা। তাই আগে থেকেই সতর্ক এবং সন্তান ধারণের উপযুক্ত পারিবারিক পরিবেশ তৈরি করা দরকার। যাতে সন্তান হারাবার কষ্ট বা তাকে পৃথিবীতে এনে অসুখি দাম্পত্যের কষ্ট পেতে না হয়।
আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

বন্দনা কবীর এর ছবি

উম্মাগো... কি বিভৎস !!!
পেট গুলিয়ে গুলিয়ে উঠছিল লেখাটি পড়তে পড়তে।
ইট বেঁধে হাসপাতাল পর্যন্ত হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়াটা...
ভয়ংকর- প্রচন্ড ভয়ংকর আমরা মানুষেরা...

আশালতা এর ছবি

হ্যাঁ বন্দনা, আমরা এই ভয়ংকর মানুষের পৃথিবীতেই বাস করি। তারপরও চাই এই ভয়াবহতা রুখতে, এই জন্যেই আমরা মানুষ।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

ক খ গ  এর ছবি

পৃথিবীর আর কোন কিছু'ই আমাকে টানেনা।
তবে আমি মনে করি, মায়ের অধিকার থাকা উচিত, তার সন্তান বাচবে না মরবে সেই সিধান্ত নেয়ার।
ধন্যবাদ।

আশালতা এর ছবি

আপনি কোন কষ্টের ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন বুঝতে পারছি কিন্তু তারপরও জীবন বেঁচে থাকার জন্যই ভাই ক খ গ। দোয়া করি অন্য কোন পৃথিবীতে সৃষ্টিকর্তা আপনার কলজের টুকরোকে আপনার সাথে মিলিয়ে দিন।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

তানিয়ামুনিয়া এর ছবি

লেখাটি ভয়াবহ বাস্তব কিছু চিত্র তুলে এনেছে। সত্যিই খুব ভয়াবহ!!!!

কিন্তু একমত হতে পারলাম না অনাকাংখিত গর্ভধারণ বিষয়ে। যদি জন্মনিয়ন্ত্রনের সবরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেবার পরও কোন লিকেজ বা দুর্ঘটনায় একজন নারী গর্ভবতী হন, তিনি কি করবেন? ধরাযাক ইতিমধ্যে তার দুটি সন্তান আছে। স্বামী স্ত্রী যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিলেন তারা সন্তানটি নেবেন না। তাহলেও কি সেটা খুন হবে? এম আর বলে যে ব্যবস্থাটা আছে সেটা কি খুনের পর্যায়ে পড়ে?

গর্ভপাতের বিরুদ্ধে উপরে অনেকের মুখস্ত মন্তব্য দেখে বিরক্ত লেগেছে। যারা মন্তব্য করেছেন তাদের সবাই হয় ছাত্র নয়তো অবিবাহিত। কিছুই জানেন না এ ব্যাপারে, অথচ জ্ঞানগর্ভ মন্তব্য ছেড়েছেন। আসল কথা হলো গর্ভ নারীর সিদ্ধান্তটাও নারীর নেয়া উচিত। আর যারা খুনটুন বলে ফাঁকা মন্তব্য করছেন, তারা বিয়ের পর নিজেরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কতোগুলো খুনের সিদ্ধান্ত নেবেন সময়েই দেখবেন।

আশালতা এর ছবি

পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ তানিয়ামুনিয়া। আমরা আমাদের জ্ঞান এবং অনুভবের গভীরতায় জীবনকে দেখি, ব্যাখ্যা করি। তাই মতভেদ স্বাভাবিক। তাই বলে পৃথিবীকে সুন্দর আর বাসযোগ্য করে তুলতে আমাদের প্রচেষ্টায় ঘাটতি না পড়ে সেটাই শুধু কাম্য। হাসি

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

নীরব পাঠক এর ছবি

আমাদের জেন্ডার স্টাডিজের শিক্ষকেরা ও ক্লাসে অনেকসময় ইতঃস্তত বোধ করেন- "গর্ভপাতের আইনগত অধিকার" গ্রহনযোগ্য কিনা, এই প্রশ্নের উত্তরে। অবশ্যই এটি হত্যার সামিল। কিন্তু এর সাথে বিতর্কিত নানা বিষয় রয়েছে - সামাজিক মূল্যবোধ, সংস্কৃতি, নারীর অধিকার, পিতৃতন্ত্র আর "পুত্র সন্তান কামনা"...

খুব দরকারি পোস্ট...ধন্যবাদ। হাসি

আশালতা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ নীরব পাঠক। হাসি

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

কল্যাণF এর ছবি

এটা এমন একটা স্পর্শকাতর বিষয় যে অল্প কিছু কথায় কিছু বোঝান খুব মুশকিল। অনাকাংখিত গর্ভ সঞ্চার এর প্রধান কারণ কি অসচেতনতা? সেক্ষেত্রে এটা কি শিক্ষাপদ্ধতির দুর্বলতা নয়? আমাদের দেশের ছেলে মেয়েরা নারী-পুরুষের শারীরিক সম্পর্কের ব্যাপার গুলো এত অস্বাভাবিক পদ্ধতিতে শেখে যে তা আর কহতব্য নয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অনেকদিন অনেক ভুল ধারনা নিয়েই কিন্তু বেড়ে ওঠে। তাছাড়া প্রতিটি মানুষের তার ক্রিতকর্মের দায় নেওয়া ও ফল ভোগ করাই উচিত। এটাও আমাদের শিক্ষাপদ্ধতির দুর্বলতা যে নৈতিকতা ও মিথ্যার সাহায্য নিতে আমরা কখনোই লজ্জিত নই। একটা সামগ্রিক অবক্ষয় এবং সব জায়গায় শর্টকাট নেওয়ার প্রবনতা সব জায়গায়। উপরে তানিয়ামুনিয়া একটা মন্তব্য করেছেন, একেবারে চাঁছাছোলা হলেও রিতিমত বাস্তব। মেলা বড় বড় কথা বলে ফেলেছি, ভাই সব গুলিটা আস্তে কইরেন।

আশালতা এর ছবি

গোলাগুলি করার কিছু নেই। পথ আলাদা হলেও আমাদের গন্তব্য অভিন্ন হলেই হল। হাসি

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

কল্যাণF এর ছবি

আশাদিদি, গন্তব্য অভিন্ন।

(অটঃ আপনার সব লেখা পড়ে ফেল্লাম)

আশালতা এর ছবি

অভিন্ন পথের পথিকের জন্য শুভেচ্ছা। আর আপনার কল্যাণে আমার সব লেখায় আরেকবার ঘোরাও হয়ে গেল। হাসি
আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

পাঠক এর ছবি

আপা.....আপনার অনুমতি ছাড়াই লেখাটা আমার ফেসবুকে শেয়ার দিয়েছি। লেখাটা পড়ে ভীষন কষ্ট হচ্ছিলো...তাই ঐ মুহূর্তে অনুমতি নেবার কথা মাথায় ছিল না। কয়েকটা কমেন্ট পড়ার পর মনে হলো আপনাকে জানানো প্রয়োজন যে লেখাটা আমি শেয়ার করেছি।

ভালো থাকবেন।

নীরা

sneeras@yahoo.com

আশালতা এর ছবি

লেখাটা পড়ার এবং শেয়ার দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ নীরা। লেখা শেয়ার দেয়ার জন্য অনুমতি নিতে হয়না তো, উলটে লেখক খুশিই হন। আমার আবার স্বভাব হল এক টুকরো খুশিকে দশ দিয়ে গুণ করে হিসেবে তোলা। তাই আপনার মন্তব্যে গোছা গোছা আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

স্পর্শ এর ছবি

যারা অ্যাবসলিউট রায় দিয়ে দিচ্ছেন তারা এই ভিডিওটা দেখলে উপকৃত হবেন।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।