ইনহাস্ত ওয়াতানাম

ধুসর গোধূলি এর ছবি
লিখেছেন ধুসর গোধূলি (তারিখ: রবি, ২৭/০১/২০০৮ - ৮:৪৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

'তোর জন্য আমার মনটা পুড়ে। কলজেটা খা খা করে। বুকটা মোচর দিয়ে ওঠে বারবার- এইটা বুঝস? তারপরেও বলবি আমি তোরে মনে রাখি নাই! আমার প্রতিটা মুহূর্ত ক্যামনে যায় সেইটা কেবল আমিই জানি। চোখের পানি লুকাতে বুকে যে খরস্রোতা নদীর ভাঙন খেলে এইটা আমি কারে বলি!... ... ...'

আমার মা, দুষ্টামী করে আমাকে ভুলে গেছে কি না জিজ্ঞেস করতেই এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো উগড়ে দিলো দূরালাপনীর ভেসে আসা কম্পনগুলোতে। শেষের দিকে এসে আর স্বাভাবিক রাখতে পারেনি নিজেকে। কাঁপা গলায় ভেজা আওয়াজে ফোশফোশ করছিলো। আমি সন্তর্পণে চোখ মুছি, গলা স্বাভাবিক রেখেই বাৎচিত চালাতে হয়। আমার সামান্যতম দুর্বলতা টের পেলেই ওইদিকে ভেঙে পড়বে শতবছরের পুরনো বাঁধ। তখন হয়তো প্রয়ঙ্করী বাণটাকে আর আটকানো সম্ভব হবেনা কিছুতেই!

একাকীত্বকে আমি সবসময়ই উপভোগ করি। আমি কোনকিছুরই দাস নই। কিন্তু তাও সয়ে গেছে মা-বাপ, ভাইদের ছেড়ে থাকতে থাকতে। শুধু কয়েকটা সময় হুটহাট করে সব তেড়ে আসে প্রবল তোড়ে আমার শীর্ণ দুয়ারে আঘাত করতে থাকে। এমনই একটা সময়, যখন আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। মাকে খুব মনে পড়তে থাকে তখন। স্কুল কামাইয়ের লোভে যখন ইচ্ছে করে জ্বর বাঁধিয়ে বসতাম মা তখন মাথায় জলপট্টি দিয়ে এক নিঃশ্বাসে বকাঝকা করতো। আমি মিটিমিটি হাসতাম, নানা খাবারের বায়না ধরতাম। মা তখন বিশাল একঝাপি গালি আমার মাথায় ঢেলে দিয়ে পছন্দের সবকিছু বানিয়ে মুখের সামনে তুলে ধরতো। খেতে পারতাম না কিছুই তিতা রসনার কারণে। এই আমি গত একসপ্তায় কিছুই খাইনি। না তেতো স্বাদের জন্য নয়, ঘরে কিছু বানানোর ছিলো না তাও নয়, কিন্তু উঠে রান্নাঘর পর্যন্ত যাওয়া আর সব যোগাড়যন্ত করে উনুনে চড়ানোটা বেশ অতীতের কাজ মনে হচ্ছিলো। বাইরে খাওয়ার রূচি নেই। খাবার দেখলেই বমিচ্ছা হয়। বুকের ভেতর থেকে আস্তে করে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে পড়ে, মা থাকলে নিশ্চই খাওয়ার এই কষ্টটা করতে হতো না। ঠিকই কি মুখে রচবে, এমন কিছু চলে আসতো চোখের সামনে। খেতে হতো জোর করেই!

বড় ভাইয়ের বিয়ে হয়ে গেলো। আমার একটাই মাত্র বড় ভাই। তার বিয়েতে যাওয়া হলো না, খুব ছোটবেলা থেকে ভাইয়ের বিয়ে নিয়ে বুণা স্বপ্নগুলো শেষাবধি আর মালা হতে পারলো না। আমার কষ্টটা আরো বেশী লাগার কারণ মা খুব কেঁদেছে তাঁর মেজো ছেলে না থাকাতে। আমি মাকে কী করে বুঝাই, 'মাগো তোমার ছেলের যে যাযাবর হওয়ার শখে পেয়েছে...'।

ফোনে কথা বলছি, দুষ্টামী করছি, হাসছি- মা হঠাৎ বলে ওঠে 'তুই কি খুশীতেই হাসতেছিস নাকি নিজের কষ্টটা লুকানোর জন্য!' মুহূর্তের জন্য বোবা হয়ে যাই, বাকহারা আমার আর রা' সরে না। প্রসঙ্গ পালটাই, ছোট মামার পিচ্চিটা বড় হয়ে যাচ্ছে। কটকট করে কথা বলে এখন। প্যান্ডা পেয়ে খুব খুশী হয়েছে।

গ্রামেই কেটেছে বেশিরভাগ সময়। গ্রামকেও চিনি তাই অনেক বেশি শহরের তুলনায়। চিনি গ্রামের মানুষগুলোকে। উপলব্ধি করতে পারি গ্রামের গন্ধটাকে। ষড়ঋতুর দেশে বৈচিত্র কমে গেলেও গ্রীষ্মের গন্ধের সঙ্গে যে বর্ষার গন্ধ কোনমতেই খাপ খায়না এটা বুঝতে পারি। শরৎ আর শীতের গন্ধেও তফাৎটা বিশাল। আমি থাউজেন্ডস মাইল দূরে উষ্ণ কক্ষের নরম বিছানায় শুয়েও গন্ধ গুলোকে উপলব্ধি করতে পারি। প্রতিটা ঋতুর পরিবর্তনের সাথে সাথেই মাটির রং, রস গন্ধও বদলায়। আমি সেই গন্ধ সারা গায়ে মেখে ইট-পাথরের বাধাই করা পথে দৌঁড়াই। ছোটভাইকে ফোন ধরে বিভিন্ন রাস্তা ধরে হাঁটতে বলি, আমি বলে বলে দেই ও কখন কোন বাঁশঝারের কাছ দিয়ে যাচ্ছে, এই মাত্র রাস্তার কোন মোড়টি বাঁক নিলো সে, আমি এখানে বসে বলে দেই। ভাই অবাক হয় না, এটা যেনো জানারই কথা; কিংবা অবাক হলেও জিনোটাইপের কারণে সেটা প্রকাশ করে না।

আমার খুব ইচ্ছে করে মূলহীন জীবনের ইতি টেনে ফিরে যাই আমার মায়ের কাছে। অনিশ্চয়তার কোলে সঁপে দিই নিজেকে। কী হবে, যেখানে আর বারো কোটি মানুষ বেঁচে আছে সেখানে আমি কি বেঁচে থাকবো না! হোক না ছাপোষা, তাও তো অসুস্থ হয়ে পড়লে কপালে হাত দিয়ে জ্বরটা মেপে দেখার মতো কেউ থাকবে আশে পাশে। না থাকুক সেখানে রঙীন দামী নোটের কড়কড়ানি, অন্তত ম্যাড়ম্যাড়ে কয়েকটা পুরনো ময়লা পঞ্চাশ টাকার নোট তো হাতে গুজে দিবে কেউ। তাতেই খুশী আমি। আমার আর ভালো লাগে না সৃষ্টিহীন এই দিনাতিপাত, আর ভালো লাগে না অভব্য এই ইঁদুর দৌঁড়। মা-মাটি-মাতৃভূমি, যেমনই হোক- যেমনি থাকি সেই তো আমার জন্মভূমি।


মন্তব্য

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

বড় ভাইয়ের বিয়ে হয়ে গেলো। আমার একটাই মাত্র বড় ভাই।

লাইন ঘাট পরিষ্কার হইলো।
মন খারাপ করেন কেনো?

এইবার বাদ্য বাজনা বাজান। আমরাও একটু মৌজ করি। বহুদিন বিয়েশাদী খাওয়া হয় না। হাসি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আমি কি ব্যান্ড পাট্টির লোক নাকি মিয়া? আর আমার বিয়েতে বাদ্যি বাজানোর আপনার এতো শখ ক্যান শুনি? ঘরে রিনিকিঝিনিকি রিনি রাইখা পরশালীর দিকে কু-নজর দিতে নইজ্জ্যা করে না আপনার?
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

দিলেন মনটা খারাপ করে! কেন যে ঘুমোতে যাবার আগে এই লেখাটা পড়লাম!

এই আমি গত একসপ্তায় কিছুই খাইনি।

এটা তো, ভাই, কোনও কাজের কথা নয়। আর যা-ই হোক, খাওয়া-দাওয়াটা ঠিকমতো করুন। গায়ে পড়ে উপদেশ দিচ্ছি না। দীর্ঘ দিন একা থাকি। আপনার অবস্থা তাই খুব ভালোভাবে অনুভব করতে পারছি বলেই কথাগুলো বেরিয়ে এলো আপনা থেকেই।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আমি এমনিতে যা পাই সব খাই টাইপের পাবলিক। বমনেচ্ছা খুব খারাপ জিনিষরে ভাই। আশাকরছি ঘুমটা ভালো হয়েছে। স্বপ্নে পরী টরি কিছু ছিলোনা? চোখ টিপি
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আগে গরম এক পাত্র সু্যপ বানিয়ে খেয়ে নিন। তারপর পরিত্রাণ ভাবতে বসা যায়। সমাধান বলতে দেখতে পাচ্ছি এক নম্বরে শিমুলের প্রেসক্রিপশন। আর দুই নম্বরে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে যাওয়া। অবশ্য দুই নম্বরটা নিলে এক নম্বরটা চটজলদি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। হাসি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- এই চটজলদি সুযোগটার সমূহ একটা সম্ভাবনা ছিলো বলেই তো না যাওয়াটা ফলেছে। আর শরীর তো এখন বেশ ভালো। স্যুপের দরকার নেই, রান্নাঘরে যেতে পারছি। বাইরেও। শুধু খেলেই হবে, কিছু অবলোকন করতে হবে না? চোখ টিপি
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

অনুভূতিশূন্য কেউ একজন এর ছবি

মনটা ভালো নাই অনেকদিন ধরে।
মনে হয়, কিছু লিখতে বসলেই কেঁদে ফেলবো।

আর পারলাম না, আপনার লেখাটা পড়েই কেঁদে ফেললাম।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- মাঝে মাঝে কেঁদে ফেলা ভালোই বোধহয়। চোখের পানি শুকিয়ে গেছে কিনা এটা জেনে নিতে হলেও অন্তত একবার কাঁদা উচিৎ।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

সবজান্তা এর ছবি

আমি আর কোন প্রবাসী সচলের লেখা পড়বো না বলে সিদ্ধান্ত নিলাম। কিছু দিন আগে প্রকৃতিপ্রেমিক ভাই একটা লেখা দিয়ে মন খারাপ করসিলেন। আর এইবার আপনি।

প্রবাসীদের এই ষড়যন্ত্র আমি দেশে বসে প্রতিরোধ করবো।

লেখাটা পড়ে মনটা বেশ খারাপ হল। সাধে কি আমার বিদেশের নাম শুনলেই জ্বর আসে !
----------------------------------------------------
অলমিতি বিস্তারেণ

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- হাহাহা, মন খারাপ হলো বলে পড়বেন না?
কথা দিচ্ছি নেক্সট লেখাটা হবে মন ভালো করার জন্য। এবার একপাক নেচে নিন দেখি হাসি
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

বিপ্লব রহমান এর ছবি

কথা দিচ্ছি নেক্সট লেখাটা হবে মন ভালো করার জন্য।

মনে থাকে যেনো!


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

ধুসর গোধূলি এর ছবি
সৌরভ এর ছবি

কী হইসে ভাইডি! মন খারাপ ক্যান?
কুন মাইয়া কী কৈসে, খালি নামটা কন, তারপর বাকিটা আমি দেখবো..


আমি ও আমার স্বপ্নেরা লুকোচুরি খেলি


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

ধুসর গোধূলি এর ছবি

কী হইসে ভাইডি! মন খারাপ ক্যান?

- কি তামশা। আমি কই সালাম দিয়া কথা আর আপনে কন ভাইডি!

কুন মাইয়া কী কৈসে, খালি নামটা কন, তারপর বাকিটা আমি দেখবো..

- অরে কে কোথায় আছোস, আমারে ধর। আমি এতো বেক্কলই তো যে আপনেরে কমু! আমছালা দুইটাই যাক আরকি!

ঘটনা হইলো আমি ছিক আছিলাম। আর ছিক থাকলে মনে সেক্স থাকে কম। মন খারাপ
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

মমতা জাগানিয়া লেখা।
মন ছুঁয়ে গেল প্রবাসী একাকীত্ব।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- অনেক ধন্যবাদ পারভীন শিমুল। সম্ভবত এই প্রথম সাক্ষর রাখলেন আমার বুকের জমিনে।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

so sweet....

.......................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অনিন্দিতা এর ছবি

কী দরকার ভাই মন খারাপ করে বিদেশে থাকার। দেশের ছেলে দেশে ফিরে আসুন।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আপনিতো প্রবাসী। আপনার কথায় যুক্তি থাকতে পারে
কিন্তু একবার আমার মা আমাকে ফোনে বললেন- তোর চেহারাইতো ভুলে গেছি। রাস্তায় দেখলে চিনবো না

সাথে সাথে মনে হলো ঢাকা থেকে সিলেট মাত্র ৪ ঘন্টার রাস্তা। কিন্তু আমার যাওয়া হয়নি দুবছরের বেশি...

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- দূরত্বটা কোন ফ্যাক্টর না লীলেন ভাই। যেটা ফ্যাক্টর সেটা গ্রহণ করার সদিচ্ছা আছে কি নেই সেটাই আসল কথা। ৪ ঘন্টা লাগুক আর ২৪ ঘন্টা- ইচ্ছেটাই কেনো জানি খুব বড় মনে হয়।

পরশুদিন ফোনে মা যেভাবে বলছিলেন- তার মানে দাঁড়ায় 'আই ওয়ান্ট ইউ টু কাম ব্যাক মাই চাইল্ড'। বিশ্বাস করবেন না লীলেন ভাই মা বললো, 'বাড়ি এসে দু'বেলা ডাল-ভাত খেয়ে দিন পার করতে পারবি না?' কিছুই ভালো লাগছে না... একদমই না।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

স্বপ্নাহত এর ছবি

গুরু আফনে দুর্দান্ত লেখেন।
এখনতো ভয় ভয় লাগতেসে এত হোমড়া চোমড়া মাইনষের মধ্যে থাকতে...
কি কইতে কি কইয়া ফালাই...

লেখাটা মন খারাপ করে দেবার মত ভাল।বিদেশে থাকার কষ্ট বুঝিনা।তবে মা ছাড়া থাকাটা বুঝি।ক্লাস সিক্স থেকেই ঘরছাড়া।তবু মন না মানলে সব ছেড়ে ছুড়ে বাসায় ছুটে যেতে পারি।বিদেশে থাকলে সেটা সম্ভব হতোনা।ব্যাপারটা ভাবতেই কেমন লাগে।

দুনিয়ার সব সুখই কেমন কষ্ট দিয়ে মোড়ানো।

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

-

গুরু আফনে দুর্দান্ত লেখেন।
- আপনেরে কিছু না খাওয়াইলে না গুরু। কী খাইবেন কন!

দুনিয়ার সব সুখই কেমন কষ্ট দিয়ে মোড়ানো।
- ঠিক। কষ্টের রাঙতা কাগজে মোড়ানো সেই সুখগুলো। কিন্তু বিভুঁইয়ে যে কোন সুখ নাই, এটা পাগলেও বুঝে। এখানে কষ্টের রাঙতা কাগজে মোড়ানো সুখের বড় অভাব। বাইরের পরত খুললে ভেতর থেকে অন্যপদের কষ্টই কেবল উঁকি দেয়, সুখের দেখা মিলে না কভু!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

উদ্দেশ্যহীন এর ছবি

কখন যে চোখ দিয়ে পানি পরা শুরু করল!!!
একদম ভাল হয়নি! খুব পচা, খুব খারাপ একটা লেখা!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- অনেক দেরীতে হলেও দুঃখবোধ আর ধন্যবাদ একসঙ্গে জানালাম আপনাকে, জানিনা আপনার চোখে পড়বে কীনা!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।