বিয়াল্লিশ হতে আর এগারো বছর বাকি, মা

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি
লিখেছেন প্রকৃতিপ্রেমিক (তারিখ: বুধ, ১৯/১২/২০০৭ - ১১:২৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মাগো, তোমার কাছে জীবনে একটি মাত্র চিঠিই লিখেছিলাম। আজ দ্বিতীয়টি লিখছি। দুদিন ধরেই আমার মনটা খারাপ মা। কাল এখানে ঈদ। তোমাদের ঈদ তো একদিন পরেই। সেদিন টেলিফোনে যখনই জানতে চাইলাম তোমরা কিভাবে কোরবানী দিচ্ছ তুমি অপ্রস্তত হয়ে পড়লে মা। তোমার অপ্রস্তত হওয়ার কারণ হল আমার জমানো কয়টা টাকায় তোমার হাত দিতে হল বলে। মাগো, তুমি আমার কাছে লজ্জা পেয়ে আমাকে যে লজ্জা দিলে সেজন্য গত দুই রাত আমি ঘুমাতে পারছিনা, মা। চোখের জলে ভিজে যাচ্ছে সব। মাগো, কাঁদতে কাঁদতে কন্ঠ আমার ভেঙে আসছে মা। তোমাদের জন্য আজ পর্যন্ত কিছুই যে করতে পারলাম না.. তোমাদের অসফল ছেলে তোমাদের মুখে দু'মুঠো খাবার তুলে দিতে পারলনা মা, এর চেয়ে কষ্টের কিছু আর নেই মা।

মাগো, বিদেশে এসেছি তোমাদের আশা পুরণ করতেই। আমার কী সাধ লেগেছে এত কষ্ট করে তোমাদের ছেড়ে এখানে পড়ে থাকতে। তোমাদের সাথে থাকলে মাসে মাসে ৬ হাজার টাকা তো তুলে দিতে পারতাম। মাগো, তোমার ছেলে সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে মাস্টারি করেছে মা , কিন্তু তোমাদের হাতে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা তুলে দিতে পারেনি মা। কারণ তোমার ছেলেকে তো ফাঁকিবাজি করতে শেখাওনি মা। তোমার ছেলে তো খ্যাপ মারতে শেখেনি মা। তোমার ছেলে তো একটা আবুল ছাড়া কিছু নয় মা। দুনিয়াদারির হালচাল আজ অবধি শিখতে পারলনা মা। তাইতো মাস শেষে ওই ৬হাজার টাকাই তার সম্বল ছিল মা।

মাগো, কত কষ্ট করে তোমরা আমাদের বড় করেছো; কোনদিন কোন ঈদে তোমার গায়ে একটা নতুন শাড়ী উঠেছে বলে মনে পড়েনা মা। বাবার আদ্দি কাপড়ের পাঞ্জাবীটা কত বছর ধরে সেই আগের মতই মনে হয়। অথচ বিদেশে থাকে তোমার ছেলে। কত লোকে কত কথা বলে। বিদেশে থাকা মানেই ডলার ডলার আর ডলার। বিশ্বাস করো মা তোমার ছেলে সাড়ে আটশ ডলার মাসে আয় করে। তার থেকে ছয়শ আশি টাকা যায় বাসা ভাড়ায়। আর পঞ্চাশ টাকা যায় টেলিফোন আর আনুষঙ্গিক খরচে মা। কানাডার সরকার আমার বাচ্চাটার জন্য মাসে মাসে দুইশ ডলার না দিলে হয়তো এক বেলা খেয়েই থাকতে হতো মা। এসব কথা তো তোমাকে কোনদিন বলিনি মা। আজ বলছি শুধু নিজের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য।

মাগো কোন ঈদেই তোমাদের কিছু দিতে পারিনি। তাই গত ঈদে জমানো কিছু টাকা একজনের হাতে পাঠিয়েছিলাম। আমি জানি, সে ডলার তুমি আজো ভাঙাওনি। আমি জানি ওই ডলার তুমি আবার আমাদের পেছনেই খরচ করবে। মাগো, এখানে এসে গত চার বছরে তোমার ছেলে একটা সূতাও কেনেনি। গত ঈদের সময় বড় একটা দোকানে বেশ ভাল সেল দিয়েছিল। সেখান থেকে পাঁচ ডলার দামের দুটো শার্ট কিনেছে মা। শার্টগুলো এতই পুরাতন যে হ্যাংগারের দাগ বসে গেছে মা। খালি বাংলাদেশের তৈরি আর দামে সস্তা বলেই কিনেছিলাম। তার একটা শার্ট এখনো পড়া হয়নি। সেটা দিয়েই এবছরের ঈদ হবে মা। কিন্তু তোমরা কিভাবে ঈদ করবে তা-ই ভেবে আমার বুকটা ভেঙে যাচ্ছে মা।

মাগো, তোমার ছেলে সারা জীবন শুধু পরাজিতই হয়ে এল। কারণ তোমার ছেলে চালু নয়। তোমার ছেলে সেকেলে। তোমার ছেলে জীবনের মারপ্যাঁচ বোঝেনা, তোমার ছেলের উপর তাই সবাই কাঁঠাল ভেঙে খায়। মাগো, এখানে এসেও সেই অসম প্রতিযোগীতায় তোমার ছেলে মার খেয়েছে। এসব দেশের পরীক্ষায় যে পুরানো প্রশ্নপত্র হুবহু তুলে দেয় তা তোমার ছেলে বুঝতে পারেনি মা। তাইতো দৌড়ে ভাল হলেও তোমার ছেলের পথ ছিল কর্দমাক্ত। সে কিভাবে জয়ী হবে তুমিই বলো মা?

মাগো, আমি তো বুঝি কেন এই বয়সেও বাসে ঝুলে বাবাকে কাজে যেতে হয়। মা আমি কিভাবে আর তোমাকে বোঝাবো আমার ব্যর্থতার কথা। আমি জানিনা তোমাদের মুখে কোনদিন হাসি ফোটাতে পারব কী না। আমার সময় তো ফুরিয়ে যাচ্ছে মা। ঢাকার একাউন্টে আর টাকা জমা হবে না মা, কারণ আমাকে ওরা আর ছুটি দেবেনা। এদিকে পড়া শেষ হতেও অনেক বাকী।

মাগো, তোমার ছেলে প্রায়ই একটা স্বপ্ন দেখে-- একটা শান্ত নদীর উপর চিকন একটা নৌকায় সে ঘুমিয়ে আছে। দুই পাশে ঝরনার মত পানি ঝরছে অবিরত, অথচ অস্বাভাবিক রকম শান্ত। তার উপর নুয়ে পড়েছে নাম না জানা হরেক রকম গাছপালা। তোমার ছেলে এত পাখি প্রেমিক কিন্তু তার স্বপ্নে কোন পাখি নেই মা, শুধু নাম না জানা কতক ফুল ঝুলে থাকে নাম না জানা ঐসব লতাপাতার সাথে। শান্ত নদীর উপর চিকন সেই নৌকায় তোমার ছেলে শান্তিতে ঘুমিয়ে থাকে কেবল।

মাগো, তোমরা আর কটা বছর জেগে থাক মা। তোমার ছেলের কেন যেন মনে হয় বিয়াল্লিশেই তার সব কষ্ট ফুরিয়ে যাবে। মাগো, কতরাত বিনিদ্র হয়ে তাকে ঘুম পাড়িয়েছ মা। আর তো মাত্র কয়টা বছর, তোমার ছেলে তোমার পায়ের উপর চিরনিদ্রায় যেতে চায় মা। তোমার ছেলে তোমার চোখের জলে ভেসে তোমার চুলের লতার বনে নাম না জানা ফুলের ঘ্রাণ নিতে নিতে চলে যেতে চায় মা। মা তুমি আমাকে ক্ষমা করো মা। আমি কাপুরুষের মত চলে যেতে চাইনা মা। কিন্তু মাঝে মাঝে মনে হয় সবখানেই পরাজিত তোমার ছেলে হয়তো নিজের কাছেও একদিন পরাজিত হয়ে যাবে। তুমি আমাকে ক্ষমা করো মা। তোমার সাথে হয়তো দেখা হবে অন্য কোন দিন, ভিন্ন কোন জগতে।


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

প্রকৃতিপ্রেমিক ভাই,
মন খারাপ করবেন না। নিশ্চয়ই সামনে সুন্দর সকাল আসবে আপনার। একই ধরনের কষ্টের ভিতর দিয়ে আমরা প্রবাসী ছাত্ররা সবাই যাচ্ছি। দিন গুনছি কবে বাবা মাকে বিশ্রাম দিতে পারবো সেটা ভেবে ভেবে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

ফারুক হাসান এর ছবি

চোখ ভিজে গেলো।
----------------------------------------------
আমাকে নিঃশব্দে অনুসরণ করে একটা নদী-
সাথে নিয়ে একটা পাহাড় আর একটা নিঃসঙ্গ মেঘ।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আরে প্রকৃতিপ্রেমিক ভাই, মন খারাপ করেন কেনো? আমরা যারা বাইরে আছি সবারই তো একই অনুভূতি। পূজা-পার্বনে মন খারাপগুলো জেগে ওঠে। শুনেন - এই যে আজকের দূরে থাকা, ব্যবধান - এটা আগামীতে নিশ্চিত ভালো লাগার দিন আনবে। ক'টা বছর এভাবেই কেটে যায়। যাক না। সে জন্যই - মন খারাপটা যেনো দীর্ঘ না হয়।
শুভকামনা।

অনিকেত এর ছবি

মনটা একেবারেই ভেঙ্গে গেলো।
শুধু ছোট্ট একটি কথা, এই মিছিলে আপনি কিন্তু একা নন। আমাদের প্রায় সকলেরই জীবনের গল্পগুলো এই রকমের।

আমাদের সকলেরই চোখে একটি মাত্র স্বপ্ন, একদিন এই নাটকের 'মধুরেণ সমাপয়েৎ' দেখতে পাব।

ভালো থাকুন। আর আপনার মা কে আমার সালাম।

বিপ্রতীপ এর ছবি

প্রকৃতিপ্রেমিক ভাই,
শেষটা আর পড়তে পারলাম না, চোখ ঝাপসা হয়ে আসছিলো... আপনার আগামী দিনগুলো আনন্দময় হোক...।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
খুঁজে যাই শেকড়ের সন্ধান…

আরণ্যক সৌরভ এর ছবি

কান্না ধরে রাখতে পারলামনা।
অনেক কষ্ট। এইসব আর ভাবি না।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

কী লিখলেন এটা?! অনেক কষ্টের মাঝেও জোর করে ঈদে খুশি থাকবো ভেবেছিলাম। অন্তত খোদার হুকুম পালন করার জন্যও খুশি থাকবো ভেবেছিলাম। নামাজের ক'ঘন্টা আগে এই পোস্ট পড়তে হল। প্রথম কয়েকটা লাইনের পর উড়ে উড়ে পড়ে গেলাম। ইচ্ছা করেই ফাঁকিটা মারতে হল। ছুঁয়ে যাওয়া লেখা।

প্রবাস জীবনের শ্রম আর একাকিত্বের কথা আমরা সবাইই টুকটাক লিখি। মামু থেকে প্রকৃতিপ্রেমিক পর্যন্ত লেখাগুলো পড়ে মনে হল, সচলায়তনে কি প্রবাসীদের একেবারে সত্যিকারের কষ্টগুলো খোলামেলা ভাবে লেখার সংকলন করা যায় না একটা? কোন রথী ভেবে দেখবেন?

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

প্রেমিক ভাই, আপনে তো সবাইরে কান্দাইয়া ছাড়লেন। আসেন ভাই, ঈদ মোবারক আর কোলাকুলি!

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

সবজান্তা এর ছবি

চমৎকার একটা রোদ ঝলমলে দুপুর হঠাৎই কেন এতটা ঝাপসা হয়ে গেলো ?

আপনি ভাই, আমাকে বাধ্য করলেন, চশমা খুলে চোখটা মুছতে।

-------------------------------------------------
অলমিতি বিস্তারেণ

মাহবুব লীলেন এর ছবি

২০০৮ এর আমার বইয়ের নাম এখনও ঠিক হয়নি
কিন্তু উৎসর্গটা ঠিক করে রেখেছি গত বছরই

আমার মা আর বাবা
যাদেরকে দেয়া হয় না কিছুই

আপনার লেখার অনুভূতি থেকেই আমার আগামী বইয়ের এই উৎসর্গটি লেখা

দৃশা এর ছবি

আমি আমার বাবা-মা'র চরম অপদার্থ সন্তান...যদি অপদার্থ হলেই এমন বাবা মা পাওয়া যায় তাহলে যুগের পর যুগ অপদার্থ থাকতে কোন দুঃখ নাই। আর এ জীবনে তারা যা করছে আমার লাইগা সেইটা তো এমনেতেও কোনদিন শোধ করতে পারুম না।
ভাইজান শুনেন দুনিয়ার চোখে আপনে কি তা ভাইবা লাভ কি? আপনি আপনার মা'র কাছে সবসময়ই পৃথিবীর সবচেয়ে পদার্থ থুক্কু যোগ্য সন্তান। খাস দিলে দোয়া করলাম যেন এই অবস্থান সবসময়ই অটুট থাকে।

দৃশা

শেখ জলিল এর ছবি

মনটা তো খারাপ করে দিলেন ভাই! না গেলেও প্রবাসজীবনের জ্বালা অনেকের কাছে শুনেছি। এদেশের বাস্তবতায়ই অনেকে প্রবাসে ঠাঁই নেয়। সাধ করে কেউই যায় না।
...তবে এ কষ্টের দিনের অবসান হবেই। ভাগ্যলক্ষ্মী আপনার দিকে অবশ্যই মুখ ফেরাবে।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

নিঝুম এর ছবি

ভাই,এক্টা কথা বলি,
আপনি খালি চিন্তা করেন, যাদের মা নেই-বাবা নেই তাদের কথা।সারাদিন যদি কাঁদতে কাঁদতে মরেও যায়,সারাদিন যদি বিলাপ করে ...কোনদিন...কোনদিনও তারা আর ফিরে আসবেন না।
সুশান্ত ভাইয়ের মন্তব্য টা দেখেন...কান পাতলেই উনার কান্না'র আওয়ায শুনতে পাবেন।
আপনি তো অ-ন-ক অ-নে-ক ভাগ্যবান।মা আছেন।একদিন না একদিন আল্লাহর রহমতে উনাদের জন্য আপনি যা চাইবেন তাই করতে পারবেন।এগারো বছর লাগবে না ভাই।
আর আরেকটা কথা,
আপনার বেঁচে থাকা ,সুস্থ থাকাটাই আপনার মা'র জন্য বাবার জন্য
অনেক অনেক বড় ব্যপার।

বাদ দেন...আপনারে একটা নিঝুমীয় জোক্স বলি-ফাঁকতালে একটু হাইসা লন...

দুই ভাই।রন্টু আর মন্টু।প্রথম টা হইলো দুনিয়ার পোংটা আর পরেরটা হইলো এক্কেবারে মফিজ।মন্টু অবশ্য চান্স পাইলেই রন্টুরে নকল করতে চায় আর ওভারস্মার্ট হইতে চায়।যাউজ্ঞা।।

কাজকর্ম না পাইয়া রন্টু আর মন্টু শহরে আসার সিদ্ধান্ত নিল।কারন ,তারা চুরি পেশায় নিজেদের নিয়োজিত করবে ,এই আশায়।

ধানমন্ডির এক বাড়ির রান্নাঘরে দুই ভাই ঢুকসে।শুন -শান রাত।হঠাত কইরা রন্টু'র হাত থেইকা একটা বাটি পইড়া গেলো।
ঠাশ কইরা আওয়াজ হইসে...
গৃহকর্তী কে-রে। কে-রে। কে-রে করে মাতম করতে করতে ছুটে আসছে।রন্টু যেহেতু পোংটা রাজা, কিছুটা চালাকও বটে ,তাই সে "মিঁয়াও" কইরা একটা আওয়াজ করল। গৃহকর্তী বদনা বেগম মাঝ পথেই থেমে যান।অস্ফুট সরে বলেন...
"ও.ও ও..বিলাই!!!!...আমি বাবসুইন চুর।"

এই যাত্রায় রন্টুর বুদ্ধিতে রক্ষা পেলো দুই ভাই।

এইবার মন্টু সব বাসন কোসন ব্যাগে ঢুকাইতে গিয়া তার হাত থেইকাও একটা বাটি পইড়া গেলো।এইবারো ঠাশ কইরা আওয়াজ হইসে...

গৃহকর্তী বদনা বেগম এইবার আর মাতম না,একবারে হা রে রে রে রে করে ডাকাতের মত করে ছুটে আসছে।হাতে আবার লাঠি জাতীয় কি যেন কি একটা।

মন্টু যেহেতু একটু মফিজ কিসিমের ।তার উপর আবার রন্টুরে নকল করে, প্লাস ওভার স্মার্ট।তাই সে বদনা বেগম কাছে আসতেই বলে উঠলো...

"আফা ঘটনা একই ...আরেকটা বিড়াল"

বুঝেন অবস্থা!!!!

---------------------------------------------------------
জায়গায় খাইয়া, জায়গায় ব্রেক...

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

শার্টগুলো এতই পুরাতন যে হ্যাংগারের দাগ বসে গেছে মা।

এইরকম লাইন আর লিখেন না! মনটা খুব খারাপ হলো। আপনার সুদিন কামনা করছি। ঈদ মোবারক!!

নজমুল আলবাব এর ছবি

খুব বাজে একটা লেখা। খুব বাজে। এসবের কোন মানে হয়না। এভাবে মন খারাপ করে দেয়ার অধিকার আমি কাউরে দেইনাই।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

সৌরভ এর ছবি

আমাকেও না?
তাহলে তো আমার আর কোনদিন লেখা হয়ে উঠবেনা।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

নজমুল আলবাব এর ছবি

বিষন্নতার সোল এজেন্সি নিছি আমি। এইটায় আর কারো অধিকার নাই। আমার সিগনেচার কি ভুইলা গেলা সৌরভ? আছ কেমন? তোমারে খুব মিস করছি। খুব। এবং তোমার উপর মনটাও খারাপ। আমার ফোন নাম্বারটা মনে হয় ছিল তোমার কাছে?

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

কাল রাতে হঠাৎ কী যে হল আমার -- এসব লিখে ফেললাম। নিজের কাছেই এখন কেমন যেন লাগছে। মাকে তো আর এই চিঠি দেয়া যাবে না, তাই সচলায়তনেই তুলে রাখলাম। কোনদিন ভাল সময় এলে তখন মাকে দেখাবো।

আপনাদের মন্তব্যের জবাবে আর কী বলব? কাউকে আলাদা করে তাই জবাব দিলাম না। সুশান্ত দা, আপনার মায়ের জন্য দোয়া রইল। আর সবার জন্য ভালোবাসা। সবাই ভাল থাকেন। সচলেই থাকেন। ঈদ মোবারক।

তানভীর এর ছবি

সকালে ঈদের নামাজে গেছিলাম। তারপর থেকে আকামে অফিসে বইসা আছি মন খারাপ আমার পচা ঈদটা আরো মাটি করলেন এই লেখা দিয়া। ঈদ মোবারক, ভাই। কি আর বলব, এই দিন দিন নয়...

========
"পুনরায় রৌদ্রহীন রৌদ্রে আমি, পথহীন পথে"

হিমু এর ছবি

ব্যাপার না। মন খারাপ হলে মন খারাপ করবেন। মন খারাপ ভাব পুষে রেখে ঝিম মেরে পড়ে থাকারও মানে হয়না। মন খারাপ হলে চিৎকার করে সবাইকে জানান যে আপনার মন খারাপ। বন্ধুরা তা না হলে আছে কী করতে?

ভালো থাকুন। বিয়াল্লিশ বছর বয়সে আপনার পিচকিটার বয়স হয়তো হবে বারো-তেরো। ঐ বয়সে হয়তো সে স্কুল থেকে এসে তার বাবাকে দেখাতে চাইবে তার ভূগোলের খাতা, কিংবা কোন অঙ্ক, কিংবা হয়তো কিছুই না, শুধু বাবার কাছে বসেই গল্প শুনতে চাইবে। বেচারার ঐ বয়সে কাঁধে পিতৃবিয়োগের শোক চাপানোর কুমতলব ছেড়ে গাঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ান, এক কাপ চা খান।

আপনার নিসর্গপোস্ট কিন্তু জমে আছে অনেক।


হাঁটুপানির জলদস্যু

রেজওয়ান এর ছবি

"তাইতো দৌড়ে ভাল হলেও তোমার ছেলের পথ ছিল কর্দমাক্ত। সে কিভাবে জয়ী হবে তুমিই বলো মা?"

সব জয় সনাতন নিক্তিতে মাপা যায় না।

না আমি কাঁদবো না। একটিই প্রার্থনা করব ঘরের ছেলেরা ঘরে ফিরুক।

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

নিঘাত তিথি এর ছবি

শিরোনামটা দেখেই কেমন ধাক্কা লাগলো বুকের মধ্যে...এত কথা জমে গেলো পোস্টটা পড়ে...কি বলব বুঝতে পারছি না...
ভালো থাকুন।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

Anjuman Ahmed এর ছবি

I am surprised to read this article!! I cann't think of how beautifully is the writer expresses his feelings? Great! Really great!! I hope he will overcome this situation and will get a better life soon.

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রকৃতি ভাই,

জীবন একটি যুদ্ধের ময়দান যেখানে প্রতিনিয়তই আমাদের কোন না কোন যুদ্ধ করতেই হচ্ছে বেচে থাকার তাগিদে। আমি সেই ছোট বেলা থেকেই সংসারের জোয়াল নিজের কাধেঁ তুলে নিয়েছি সব সময় আপ্রাণ চেষ্টা করেছি মা-বাবা ও ছোট চারটি ভাই বোন যেন কোনদিন কষ্ট না পায়, অনাহারে না থাকে....

কিন্তু এমন অনেক দিন গেছে যখন সবার মুখে কোন খাবার তুলে দিতে পারিনি তবে, আশা ছাড়িনি কোন দিন। এই আশায় সব সময় বুকে বেধেছি যে, একদিন আসবে যেদিন আমিও আমার পরিবারের মানুষগুলোর মুখে অমলিন হাসি ফোটতে পারবো এবং সত্যি সত্যি সেদিন এসেছে! এখন আর আমার ছোট বোনকে ক্ষুধায় কাঁদতে হয়না, ভাইকে এবং অন্য বোনদের ছেড়া জামা পড়তে হয় না, আমার মাকে নীরবে অসহায় এর মতো চোখর জল ফেলতে হয়না আর অসুস্থ বাবাকে বিছানা থেকে অসহায় এর তাকিয়ে থেকে নিজের মৃতু্য কামনা করতে হয় না (যদি আজ ২৯ দিন হলো আমার বাবা সব কষ্টের উর্দ্ধে চলে গেছেন)।

আমার মা বলে আমি তার ছেলের দায়িত্ব পালন করছি, কিন্তু আমি বলি আমি তার শুধু তার সন্তানের দায়িত্ব পালন করছি মাত্র... আজ আমারও বিয়াল্লিশ হতে মাত্র এগারো বছর বাকি!

একদিন আপনার ও আসবে যেদিন আপনিও আপনার মা-বাবার মুখে অমলিন হাসি ফোটাতে পারবেন।

ভালো থাকেন,

কল্পনা আক্তার

অতিথি লেখক এর ছবি

আহারে....
ভাল থাকুন উনারা, আপনারা সবাই, বিয়াল্লিশের আগেই সব ঠিক হয়ে যাবে, আমি বলছি।

কুচ্ছিত হাঁসের ছানা

মাইক্রোকাতার এর ছবি

মন খারাপ কইরেন না। ভাল দিন অবশ্যই আসবে।

ovaga এর ছবি

my situation is same to yours, except-
1.i dont get a penny for the kid
2.my kid is not a mainstream(normal) one.
Is there anyone named God!?!

অতিথি লেখক এর ছবি

কাঁদিয়ে ছাড়লেন, আরকি।

ইউক্লিড

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।