তিথীরা ভালই থাকে

ফাহিম এর ছবি
লিখেছেন ফাহিম [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ১১/০২/২০১০ - ৪:১৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এখানে শীতের সময় বিকেল বলে কিছু থাকে না। দুপুরটা কিছুক্ষণ গাড়লের মতো ঝুলে থাকে, তারপর ঝুপ করে সন্ধ্যা। এই অফিসপাড়ার ভেতর পুরো পৃথিবীটাকেই এতো মৃত মনে হয়! ভারী জানালার কাচের ভেতর দিয়ে তাকিয়ে সারি সারি উচু দালান, মাঝ দিয়ে ছেড়া ফাটা কয়েক ফালি আকাশ। কেমন যেন দম বন্ধ হয়ে আসে মামুনের।

পিঁপ পিঁপ করে টেবিলের ফোনটা বেজে উঠে। অ্যালানের ফোন!
"মামুন, রিপোর্ট কতদূর?"
"এইতো, হয়ে আসছে।"
"একটু হাত চালাও 'বাডি'। আমাকে সবারটা কম্পাইল করে ওলগার কাছে পাঠাতে হবে।"
"জানি, পাঠাচ্ছি দশ মিনিটের মধ্যে।"
"ওকে, থ্যাংকস"। অ্যালান লাইনটা কেটে দিলো।

শুক্রবারের বিকেলগুলোতে এই কাজটাই সবচেয়ে বিরক্তিকর। পুরো সপ্তাহের কাজের খতিয়ান পাঠাতে হয় উপরের দিকে, তার বসের কাছে। বস তার নিচের লোকেদের রিপোর্ট সামারি করে পাঠায় তার বসের কাছে। এইভাবে পুরো কোম্পানীর আগা থেকে মাথা পর্যন্ত সবার কাজের খতিয়ান রেকর্ডে চলে যায়।

পুরো অফিস কেমন যেন নিঝুম হয়ে আছে। শুক্রবার বিকেল, সবারই বাড়ি ফেরার তাড়া। ফিরবে, হয়তো তারপর ডিস্কোতে দৌড়াবে, কেউ হয়তো বারে, কেউ থিয়েটারে, কেউ সিনেমায়। 'কেবল আমারই কোন তাড়া নেই', মামুন ভাবে। ওয়ার্ড ফাইলটা মেইলে অ্যাটাচ করে অ্যালানের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেয়। যাক, এবার মুক্তি, অন্তত দুই দিনের জন্য।

'যাওয়ার আগে একটা কফি হবে নাকি?' - নিজেকেই নিজে জিজ্ঞেস করলো। হোক, সাথে একটা সিগারেট। বাড়ি যাওয়ার তাড়া যখন নেই, আয়েশ করে ফুসফুসটাকে একটু পোড়ানো যাক।

কফি নিয়ে নিচে নেমে গেলো স্মোকিং কর্ণারে। লিফটে দেখা হলো ছয়তালার পেট্রার সাথে, ডিজাইন ডিপার্টমেন্টের। হাসি-খুশি মেয়ে, জিজ্ঞেস করে, "কী, এখন সিগারেট ব্রেক কেন? বাড়ি যাবে না??"

"এইতো, যাচ্ছি" বলে এড়িয়ে গেলো মামুন।

স্মোকিং কর্ণারে কেউ থাকলে ভালো লাগে না মামুনের। এই স্মোকিং ব্রেকটা মামুন নেয় একটু বিশ্রামের জন্য, নিজেকে একটু আড়ালে সুশ্রুষার জন্য। এই সময় কেউ সামনে থাকলে তার সাথে একটু হাই-হ্যালো করতেই হয়, সামাজিকতার মেকি মুখোশ চাপিয়ে, মাঝে মধ্যে যা খুব ভারী হয়ে উঠে। ভালো লাগে না তার।

কপাল খারাপ, রাশান জোসেফটা আছে!
"আরে, মামুন যে, আস, আস..." - দাঁত বের করে বললো। "খবর শুনেছো নাকি? শালার রোমানের তো বারোটা বেজে গেছে, চাকরি ছেড়ে দিচ্ছে, খিক খিক..." ।
"তা তুমি এতো খুশি কেন?"
"আর বইলো না, শালা আমাকে এক প্রজেক্টে তিন মাস গাধার খাটুনি খাটিয়েছিল, বেটা একটা ফ্রিক!!!"
"হুম... ফ্রিক না হইলে কেউ সপ্তাহে ৭০ ঘন্টা কাজ করে না। আর ৭০ ঘন্টা কাজ করে বলেই এতো কম বয়সে এতো উপরে উঠতে পেরেছে।"
"লাভ কি হলো? লাথি খেয়ে তো বের হয়ে গেল, খিক খিক খিক..." জোসেফ মহা ফূর্তিতে আছে দেখা যায়!
"এটা ওর জন্য কোন ঘটনাই না, ও আরো ভালো কোন কাজ খুজে পাবে, এমনকি নিজেও কোম্পানী দিয়ে বসতে পারে"।
"তা যা ইচ্ছা করুক, কিন্তু আমাকে তো আর জ্বালাতে আসছে না, হা হা হা"
"তাহলে তো তোমার সুখের দিন শুরু হলো বলে" মামুন খোঁচা দিলো।
"তা আর বলতে, আচ্ছা আমি গেলাম, নাইস উইকএন্ড!"
"ইউ টু" - নচ্ছারটাকে বিদায় দিয়ে প্রতীক্ষিত একাকীত্বটাকে পেল মামুন। সিগারেটের ধোঁয়া মাথার চারপাশে একটা আদুরে বালিশের মতো জড়িয়ে থাকে। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখে আবার তুষার পড়া শুরু হয়ে গিয়েছে।

সেই প্রথম এখানে আসার পর যেদিন তুষার পড়তে দেখলো, সে রোমাঞ্চে প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিলো। কি নীরব, নিস্তব্ধ সৌন্দর্য্য! পুরো আকাশটা পাতলা বরফের কুঁচি হয়ে ভেঙ্গে পড়ছে গায়ে-মাথায়, অথচ কোন শব্দ নেই। ক্রান্তীয় অঞ্চলের ঝুম বৃষ্টি দেখে যার অভ্যাস, বৃষ্টির শব্দের মাঝে যার বেড়ে ওঠা, তার কাছে এই নীরব প্রপাত কেমন যেন অতি-প্রাকৃত লাগে। তার মনে হচ্ছিল, চারপাশে এতো কিছু ভেঙ্গে-চুরে যাচ্ছে, কিন্তু এতো মৌনতা কেন? আমি কি তবে বধির হয়ে গেলাম?

সময় সব রোমাঞ্চ কেড়ে নেয়, নিয়েছে এই বিমুগ্ধতাও। এখন তুষারপাত দেখতে আর ভালো লাগে না, এখন মামুনের বরং বিরক্ত লাগে। আর কতো? সেই নভেম্বরে শুরু হয়েছে, এখনো জমা বরফগুলো গলার সুযোগ পেল না, তার উপরে আবার নতুন করে! রাস্তায় আবারো গাড়ির জট, নিশ্চিতভাবেই দু-চারটা গাড়িকে দেখা যাবে রাস্তার পাশে স্কিড করে পড়ে আছে। ফোরকাস্ট দেখতে হবে, এইবার যদি আবারো টানা বরফ পড়ে, তাহলে একবারে সপ্তাহের বাজার করে ফেলতে হবে।

সিগারেটটা ছাইদানিতে পিষে মামুন উঠে দাড়ালো। ফ্লোরে এসে দেখলো প্রায় ফাকা হয়ে গেছে। স্বঘোষিত জিনিয়াস দানিয়েল কি নিয়ে যেন নিজেই নিজের সাথে বকর-বকর করছে। আচ্ছা, সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেটরগুলো এরকম পাগলা কিসিমের হয় কেন? দানিয়েল পাগলা হলেও লোক ভালো, কারণে অকারণে হো হো করে হাসে আর তার বিশাল ভুড়িটা থলথল করে দুলতে থাকে। মামুন খেয়াল করে দেখেছে বিশালবপু মানুষগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভালো মানুষ টাইপের হয়।

"পালিয়ে যাবে কোথায়? ঠিকই বের করে নিয়ে আসবো কানে ধরে... আমার সাথে ফাজলামী!!" দানিয়েলকে একা একা বিড় বিড় করতে দিয়ে মামুন চলে আসলো নিজের ডেস্কে। মেইলটা চেক করে বাড়ি যাবে।

ইনবক্সের দিকে তাকিয়ে তার হৃৎপিণ্ড হঠাৎ থেমে যায়। তিথীর মেইল!

"তুমি কেমন আছ? আমি ভালো নেই।"

'ভালো নেই? কিভাবে ভালো নেই তুমি, তিথী?' মামুন ভাবে। 'তোমারই তো সবচেয়ে ভালো থাকার কথা। যে পরিবার, আত্মীয়-স্বজনের সম্মানের দিকে চেয়ে, যে নিশ্চয়তার দিকে চেয়ে নির্বিকারভাবে আরেকজনের ঘরে চলে গেলে, তা তো তুমি পেয়েছ। কিসের অপূর্ণতা তোমার? যা হারানোর তা তো হারিয়েছি আমি।'

মেইলটা মামুন ডিলিট করে দিলো। জীবনের এই পর্যায়ে এসে সে বুঝে গেছে, এইসব নাটুকে অস্থিরতা, এটা মানুষের এক ধরণের বিনোদন মাত্র, কষ্টবিলাস! টিভির সামনে বসে চিপস চাবানোর মতো উপভোগ্য। ক্লান্তিকর দিনের শেষে, দিনের পর দিন, মামুনকে একলা শূন্য ঘরে ফিরতে হয়। সন্ধ্যায় টিভির সামনে বসে অর্থহীন চ্যানেল পাল্টাতে পাল্টাতে অতীতের জাবর কেটে, তিথীরা ভালোই থাকে!


মন্তব্য

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনি কি নিশ্চিত তিথী ভালো আছে? একবার গিয়ে একটু দেখেই আসুন না।

ক্যাটেগরীতে দিয়েছেন চিন্তাভাবনা। তাহলে এটা কি গল্প নয়? গল্প না হলে মামুনটা কে?



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ফাহিম এর ছবি

মামুন পরেরবার দেশে গেলে দেখে আসবে। যদিও সে ঠিক করেছে সে আর দেশে যাবে না, সে আবার একটু এসকেপিস্ট কিনা...

লেখাটা আমার গল্প ট্যাগ দিতে ঠিক সাহস হলো না, মানের অভাবে ভুগছে বলে মনে হলো। তাই চিন্তা ভাবনা করে চিন্তাভাবনা দিয়ে দিলাম আর কি!

মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

নৈষাদ এর ছবি

তিথীরা ভাল থাকেনা।
মামুনরা দেশে, বিদেশে যে কোন জীবন বেছে নিতে পারে, তিথীদেরকে হয়ত বাকীটা জীবন অভিনয় এবং অ্যাডজাস্ট করে যেতে হয়...।

ফাহিম এর ছবি

মামুনরা দেশে, বিদেশে যে কোন জীবন বেছে নিতে পারে,

জীবন বেছে নেয়া আর ভালো থাকাটা মনে হয় এক বিষয় না।

তিথীদেরকে হয়ত বাকীটা জীবন অভিনয় এবং অ্যাডজাস্ট করে যেতে হয়...।

সেটা সেই পথে পা বাড়ানোর আগে ভাবলেই হতো। সহজ ওয়ে-আউট বেছে নিয়ে পরে কষ্ট-কষ্ট ভাব দেখানো, এটাকেই আমি কষ্টবিলাস বলতে চেয়েছি।

পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

লেখাটা ভালো লাগলো খুব।
তারচেয়েও বেশি ভালো লাগলো আপনার 'কষ্টবিলাস'-এর বিশ্লেষণটুকু।
লিখতে থাকুন...

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ফাহিম এর ছবি

প্রিয় লেখিকার মন্তব্য পেয়ে বেশ ভালো লাগছে, অনেক ধন্যবাদ।

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

তারানা_শব্দ এর ছবি

তিথীরা ভালো থাকলে মামুনদেরো ভালো থাকা উচি\।

ভালো থাকা বা না থাকাটা নিজের সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করাই ভালো। আরেক জনের হাতে এর রিমটটা তুলে না দিলেই সব সময় ভালো থাকা যায়। হাসি

দু'একটা বানান ভুল ছাড়া লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো।

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

ফাহিম এর ছবি

আরেক জনের হাতে এর রিমটটা তুলে না দিলেই সব সময় ভালো থাকা যায়।

পুরোপুরি একমত।

দু'একটা বানান ভুল ছাড়া লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো।

ভুলগুলো ধরিয়ে দিলে ঠিক করে নিতে পারতাম!

ধন্যবাদ আপনাকে।

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

তিথীডোর এর ছবি

খুক খুক...
শিরোনামে ৫ তারা! দেঁতো হাসি
কিন্তু তিথীদের এমন গড়পড়তায় ভালো থাকার দলে ঠেলে দিলেন? মেনে নেওয়া আর মনে নেওয়া আলাদা যে...

--------------------------------------------------
"আমি তো থাকবোই, শুধু মাঝে মাঝে পাতা থাকবে সাদা/
এই ইচ্ছেমৃত্যু আমি জেনেছি তিথির মতো..."
*সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

ফাহিম এর ছবি

না না, আমি দিই নি তো, মামুন দিয়েছে। লেখক ও চরিত্র, দুজন দুই বস্তু।

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

গল্প বলার ভঙ্গিটা অসম্ভব ভালো লাগলো। অনেকটা ধীর লয়ে বলা গল্প, তেমন কোনো তাড়াহুড়ো নেই, আবার পাঠককে থামতেও দেয় না।

ভালো থাকার আসলে নির্দিষ্ট কোনো মাপকাঠি নেই। মানুষের চাহিদা অসীম, আর মানসিক চাহিদার তো আরো তাল-বেতাল অবস্থা। জীবন যেহেতু একটা চলমান জিনিস, সেহেতু বর্তমানে ভালোভাবে বেঁচে থাকাই হয়তো ভালো থাকা।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

ফাহিম এর ছবি

ভালো থাকার আসলে নির্দিষ্ট কোনো মাপকাঠি নেই। মানুষের চাহিদা অসীম, আর মানসিক চাহিদার তো আরো তাল-বেতাল অবস্থা। জীবন যেহেতু একটা চলমান জিনিস, সেহেতু বর্তমানে ভালোভাবে বেঁচে থাকাই হয়তো ভালো থাকা।

আচ্ছা, "ভালো থাকা" - এই জিনিষটা আসলে কি? ঠিক কী ভাবে থাকলে বা কী পেলে ভালো থাকা যায়? পৃথিবীতে কেউ কী সেই অর্থে ভালো আছে?

আপনাকে কেউ চিমটি দিয়ে অনেকক্ষন ধরে রাখলে আপনার কষ্ট হয়, তারপর যদি ছেড়ে দেয়, তখন ভালো লাগে। আমার মনে হয় জীবনটা এই রকমই, ভালো থাকা বলে আসলে কিছু নাই, যেটা আছে সেটা হলো কষ্টের অনুপস্থিতি।

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাকে কেউ চিমটি দিয়ে অনেকক্ষন ধরে রাখলে আপনার কষ্ট হয়, তারপর যদি ছেড়ে দেয়, তখন ভালো লাগে। আমার মনে হয় জীবনটা এই রকমই, ভালো থাকা বলে আসলে কিছু নাই, যেটা আছে সেটা হলো কষ্টের অনুপস্থিতি--সুখে থাকার/ভাল থাকার দারুণ একটা ব্যাখ্যা...।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ভালো থাকার সংজ্ঞাটা ভালো লেগেছে ফাহিম ভাই।

লেখায় বেশ কয়েকটা উপমা ব্যবহার করেছেন। অসম্ভব দারুণ। তুষারপাতের সময়টা, সিগারেট খাওয়ার সময়টা বিশেষ করে।

বেশ গোছানো লাগলো বলিয়ে ঢংটা। চলুক
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

ফাহিম এর ছবি

সহৃদয় মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

রেশনুভা এর ছবি

আমি এক নিঃশ্বাসে পড়ে গেলাম। অনেক ভালো লেগেছে।
প্রতিক্রিয়া দেখলাম পাঠক এবং বিশেষ করে পাঠিকাদের। দেঁতো হাসি । একটুও অবাক হইনি।
ওরা ভালোই থাকে সবসময়।

ক্লান্তিকর দিনের শেষে, দিনের পর দিন, মামুনকে একলা শূন্য ঘরে ফিরতে হয়। সন্ধ্যায় টিভির সামনে বসে অর্থহীন চ্যানেল পাল্টাতে পাল্টাতে অতীতের জাবর কেটে, তিথীরা ভালোই থাকে!

আর এই লাইনগুলো তো ক্লাসিক। দারুণ।
----------------------------------------------

আমার যত অগোছালো চিন্তাগুলি,
রয়ে যাবে এইখানে অযতনে ।।

ফাহিম এর ছবি

প্রতিক্রিয়া দেখলাম পাঠক এবং বিশেষ করে পাঠিকাদের।

হা হা হা... নারে ভাই, এভাবে জেনারালাইজ করাটা ঠিক হলো না।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

শাফক্বাত এর ছবি

আপনার লেখাটা আমি একনাগাড়ে অনেকবার পড়েছি। মন ছুঁয়ে গেল মামুনের অনুভব গুলো।
কবিগুরু বলেছেন
"তোরা পাবার জিনিস হাটে কিনিস
রাখিস ঘরে ভরে-
যারে যায়না পাওয়া তারি হাওয়া
লাগলো কেনো মোরে?
আমার যা ছিল তা গেলো ঘুচে
যা নেই তার ঝোঁকে।
আমার ফুরোয় পুঁজি, ভাবিস বুঝি
মরি তারি শোকে?
আমি আছি সুখে, হাস্যমুখে
দুঃখ আমার নাই।
আমি আপন-বনে মাঠে বনে
ঊধাও হয়ে ধাই।
তোরা যে-যা বলিস ভাই
আমার সোনার হরিণ চাই।।"
---এই সোনার হরিণটাই হলো "ভালো থাকা"।

মামুন, তিথী, কেউ ভাল নেই। হিসেব-নিকেশ করে ভালোবাসা বিসর্জন দিয়ে হা-হুতাশ করার চেয়ে; বেহিসেবী ভালবেসে পরে বাস্তবতার আঘাতে পস্তানোও ভালো। ভালবাসা একটি সুখকর ভাইরাস, যা উপড়ে ফেললে জীবন থেমে যেতে চায়।
================================================
পরদেশী বঁধু, ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।
যদি গো নিশিথ জেগে ঘুমাইয়া থাকি,
ঘুম ভাঙায়ো চুমি আঁখি।।

ফাহিম এর ছবি

হুমম... সোনার হরিণ, তাই হবে হয়তো।

হিসেব-নিকেশ করে ভালোবাসা বিসর্জন দিয়ে হা-হুতাশ করার চেয়ে; বেহিসেবী ভালবেসে পরে বাস্তবতার আঘাতে পস্তানোও ভালো। ভালবাসা একটি সুখকর ভাইরাস, যা উপড়ে ফেললে জীবন থেমে যেতে চায়।

চলুক

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

হুম।

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

নাশতারান এর ছবি

তিথীরা খারাপ থাকে না। ভালোও থাকে না। তারা কেবল থাকে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

চলুক

---------------------------------------------
আকাশে তোর তেমনি আছে ছুটি
অলস যেন না রয় ডানা দুটি

ফাহিম এর ছবি

এই কমেন্টটাতো জটিল লাগলো...

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

তাসনীম এর ছবি

ভালো লেগেছে।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++
মাঝে মাঝে তব দেখা পাই, চিরদিন কেন পাই না?

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

ফাহিম এর ছবি

হাসি

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

বেশ মসৃন, বাহুল্যহীন একটা গল্প... চলুক
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

ফাহিম এর ছবি

ধন্যবাদ।

অটঃ আপনার সিগনেচারটা পসন্দ হইসে...

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

চমৎকার লাগল।

ফাহিম এর ছবি

ধন্যবাদ...

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

স্নিগ্ধা এর ছবি

গল্প ভালো লাগলো হাসি

ফাহিম এর ছবি

যাক, এই পোস্টে আমার দুই প্রিয় লেখিকার মন্তব্যই পাওয়া গেল। পড়েছেন জেনে ভালো লাগলো।

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

তুলিরেখা এর ছবি

চমৎকার গল্প।
পরের কোনো গল্পে মামুনকে ও ঘোরতর সংসারী করে দিন । ডানাকাটা পরীর মতন সুন্দরী বৌ নিয়ে হানিমুনে গিয়ে তারা তিথি আর তার হোৎকা গোমড়ামুখো বরের সামনে পড়ুক। তাদের সামনে নেচে আসুক দু'জনে হাত ধরাধরি করে। বলিউড স্টাইলে নাচালে আরো শখানেক ছেলেমেয়ে নেচে যাবে সঙ্গে সঙ্গে। হাসি
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

ফাহিম এর ছবি

হা হা হা... সত্যি কথাটা হলো, যতই ডানাকাটা পরীর সাথেই বিয়ে দেই না কেন, মামুনের বুকের ক্ষতটা থেকেই যাবে। কাঁচ ফেটে গেলে সুপার গ্লু দিয়ে হয়তো লাগানো যায়, ফাটা দাগটা থেকেই যায়, ওটা লুকানো যায় না... এর চেয়ে থাকুক না এভাবেই।

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

তুলিরেখা এর ছবি

তেমন তেমন প্রেমিকের কাছে হরেদরে সকলেই পরী। হাসি
আসল ভালোবাসা মানুষটার নিজের হৃদয়ে, ক্ষত সারানোর সুধাও সেখানেই।
নিজের ভালোটুকু বুঝে নিয়ে সরে পড়া কিছুটা দুর্বল কিছুটা স্বার্থবাদী "তিথি"রা কোনোদিন সে ক্ষত সারাতে পারতো না। সারাতে মামুনকে নিজেকেই হবে।

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

ফাহিম এর ছবি

সারাতে মামুনকে নিজেকেই হবে।

চলুক

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালু পাইলাম, আসলেই ওরা ভাল থাকে।

স্বপ্নদ্রোহ

ফাহিম এর ছবি

ধন্যবাদ, পড়ার জন্য।

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

টারজান এর ছবি

"যা হারানোর তা তো হারিয়েছি আমি"...
এই না পাবার আকুতি আর একই সাথে একা থাকার কষ্টটাই মনে হয় মামুন কে আরো দুরবল করে দিয়েছে।
কিন্তু এইটাই লাইফ, সাজানো নাট্যমঞ্ছ। আমরা শুধু অভিনেতা/ অভিনেত্রি... কলাকউসলি। মামুন ১টা অধ্যায় এর পরিস্থিতির শিকার। এখন তাকেই নাটকের নতুন অন্য প্লটগুলা নিজের মত করে বানাতে হবে।

///বানান ভুলের জন্য সরি। বরই অধৈয্যশীল আমি।

নাশতারান এর ছবি

স্যরি বলার সময়টুকু বানানের পেছনে দিলেই চলবে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ফাহিম এর ছবি

এতো কষ্ট করে মন্তব্য করার জন্য সাধুবাদ দিতেই হয়, ধন্যবাদ।

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

বইখাতা এর ছবি

চমৎকার মেদহীন, সাবলীল লেখার ধরন।

ফাহিম এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে।

=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

জুয়েইরিযাহ মউ এর ছবি

গল্প হিসেবে বলি -
লেখনী বেশ ঝরঝরে... পড়তে ভালো লাগলো।

চিন্তাভাবনার ক্ষেত্রে -
মামুন এবং তিথী দুজনকেই কষ্টবিলাসী মনে হল।
তিথী যদি সন্ধ্যায় টিভির সামনে বসে অর্থহীন চ্যানেল পাল্টাতে পাল্টাতে অতীতের জাবর কেটে ভালোই থাকে। তবে মামুন কোন এক সন্ধ্যায় ভালবাসায় ভরে থাকা সেই মুহূর্তগুলোয় বিভোর থাকতেই ভালবাসে।
আসলে আমরা ভালবাসায় ডুবে থাকতে ভালবাসি, হোক সে অতীতের কিংবা আজকের।

--------------------------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো, গৃহী হয়ে কে কবে কি পেয়েছে বলো....


-----------------------------------------------------------------------------------------------------

" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি

রেজা এর ছবি

".........যা হারানোর তা তো হারিয়েছি আমি।'...."
মামুন দেরকেই হারানোর ট্রাকে সকল সময় ই প্রথম করে দেয়া হয়।
গল্প অনেক ভালো লেগেছে...।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।