ফিলিস্তিন, হিটলার - এবং অপরবাস্তবতা

টিউলিপ এর ছবি
লিখেছেন টিউলিপ [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ২৫/০৭/২০১৪ - ২:৫০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গাজাতে এই মূহুর্তে যে নারকীয় যজ্ঞ চলছে সেটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কোন মানুষের পক্ষেই ইজরায়েল গাজাতে যা করছে সেটা সমর্থন করা সম্ভব না। এটা নিয়ে কিন্তু বলে ত্যানা প্যাঁচানোতেও আগ্রহ নেই। তবে এই লেখার বিষয় সেটা না। বরং ফিলিস্তিন সাপোর্ট দিতে গিয়ে কেউ কেউ হিটলারকে নায়ক বানাচ্ছেন কেন সেটা নিয়ে একটু জানার ইচ্ছা থেকেই এই পোস্ট।

আগেই বলে নিচ্ছি এটা একেবারে অগোছালো একটা পোস্ট। লেখার আগে কোন পড়াশোনা করে বসি নি। মন্তব্যে পোস্টটা সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে সেই আশাতেই লেখা।

বেশ ভালো পরিমাণে ছাগু তাড়ানোতে ফেসবুকের নিউজফিডে এখন তেমন উলটাপালটা কিছু চোখে পড়ে না। হিটলারকে যারা সমর্থন দিচ্ছে, তারা ঠিক কোন যুক্তিতে দিচ্ছে সেটা তাই আমার এখনো সেভাবে বড় নমুনা থেকে যাচাই করা হয় নি। একজনের কাছে শুনলাম হিটলার না কি ইহুদিদের শায়েস্তা করে দিত, তাতে ফিলিস্তিন সুবিধা পেত। কিন্তু আসলেই তাই কী?

হিটলার শেষপর্যন্ত ক্ষমতালোভী, রেসিস্ট এক নরপশু। হিটলারের রেসিজমের প্রকাশ ইহুদিবিদ্বেষে প্রকাশ পেলেও তার মূল এন্টিসেমিটিজম। হিটলারের উদ্দেশ্য ছিল আর্যদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা। ফিলিস্তিনি মুসলমানরা কী সেই আর্যজাতির কোটাতে পড়ত? তাদের সাহায্য করার জন্য হিটলার কী মধ্য এশিয়াতে গিয়ে ইহুদি মেরে আসত? না কি দুই পক্ষকেই নিজেদের মাঝে মারামারি করে শেষ হয়ে যেতে দেখত?

আমার নিজের ধারণা হিটলার দ্বিতীয় পছন্দটাই বেছে নিত। অথবা পরিস্থিতির সুযোগ নিতে শুরুতে ফিলিস্তিনের সাথে জোট বাঁধলেও পরে তাদের পিঠেই ছুরি বসাতে দ্বিধা করত না।

ছয় মিলিয়ন মানুষকে গ্যাস চেম্বারে মারার মহাপরিকল্পনা যে দানব করতে পারে, তাকে মিত্র ভেবে এগিয়ে যাওয়া বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। আর তাকে নায়ক বানিয়ে পূজা করা চূড়ান্ত মূর্খতা।


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

- হিটলার কী ছিলো এই জ্ঞানটার অভাব আছে আমাদের মধ্যে। সদ্য সমাপ্ত বিশ্বকাপের সময় জার্মানির খেলার সময় জার্মানদের রিপ্রেজেন্ট করাতে হিটলারকে টেনে নিয়ে আসা হয়েছে। জার্মানি নাৎসি অপবাদ ঠেকাতে যথেষ্টই করেছে ও করছে। এই অবস্থায় জার্মানদের হিটলারের ছবি দিয়ে রিপ্রেজেন্ট করিয়ে দেয়াটা অন্যায়।

- বাংলাদেশে তেমন না হলেও পশ্চিমবঙ্গে হিটলারের সহযোগি হতে চাওয়া সুভাষ চন্দ্র বসু ব্যাপক জনপ্রিয়। যেহেতু সুভাষ স্বাধীনতার জন্য এসব করেছে সেইজন্য এইসব হালাল এরকম একটা ধারণা পুশ করা হয়। যুদ্ধেও যে নৈতিকতা থাকতে পারে এটা এদের বোধের বাইরে।

- হিটলার সমর্থকদের রাজনৈতিক ওরিন্টেশন একটা ইন্টারেস্টিং স্টাডি হতে পারে। আমার হাইপোথিসিস হলো হাঁটু, মোল্লা আর ঞলিবারেলরা একে অন্যের স্বার্থ দেখে। হিটলার বিখ্যাত হাঁটু। সবকিছু পিটায় ঠিক করা যায় এরকম ধারণার স্যাডিস্টরা হিটলার, আইউব খান ইত্যাদি দেখে উত্তেজিত হবে এতে অবাক হবার কিছু নাই।

হিমু এর ছবি

পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি মুসলমান হত্যাকারী দেশটার নাম পাকিস্তান। একক সংঘাতে সবচেয়ে বেশি ফিলিস্তিনি হত্যার কলঙ্কতিলকও লেগে আছে পাকিস্তানি জেনারেল জিয়াউল হকের কপালে (যখন সে জর্দানের বাদশার সামরিক উপদেষ্টা ছিলো)। কই, কাউকে তো দেখি না এ নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য করতে। কিন্তু ইহুদি মারার জন্য হিটলারের প্রশংসায় একেকজন ফিট খায়।

এটা দেখেই বোঝা যায়, বাঙালি মুসলমানের মনে আসলে মুসলমানের প্রতি প্রেমের চেয়ে বড় হচ্ছে ইহুদিদের প্রতি ঘৃণা।

টিউলিপ এর ছবি

এইটা ঠিক কথা, আমরা আসলে জাতিগত ভাবে নেগেটিভ দিকটা নিয়ে লাফাতে পছন্দ করি মনে হয়।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

স্যাম এর ছবি

চলুক চলুক লাখ কথার এক কথা

টিউলিপ এর ছবি

- আমাদের দেশে মনে হয় একনায়কদের নিয়ে ফ্যান্টাসিও কাজ করে। হিটলার, সাদ্দাম - এদের অপকর্মগুলোকে এদের গাটসের পরিচয় হিসাবে দেখা হয়। কোনটা সত্যিকারের বীরত্ব আর কোনটা দানবিকতা সেটা আমরা এখনো বুঝতে পারি না।

- এই রাজনৈতিক ওরিয়েন্টেশনটা আসলেই স্টাডি করার বিষয়। আপনার লিস্টে একটা বাদ গেছে, কাঠভোদাইয়ের দল। হাসি

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

১।
আরও মজার ব্যাপার হল ইসরায়েল সৃষ্টির মানবিক প্রেক্ষাপটটাই হিটলারের বানিয়ে দেয়া, এর পরও হেইল হিটলারে ভরা মমিন মুসলমানদের ওয়াল।

২।
এই গ্রুপটাই আবার এক ইসরায়েলীর করা "সকল ফিলিস্তিনি মা ধ্বংস হোক" টাইপের এক উক্তিতে চেইতা যায় ক্যান বুঝি না। দুইটা তো কমবেশি একই কথা, পক্ষগুলা আলাদা।

৩।
ভাবতেছি ইয়াহিয়া খানে যদি কইত "পূর্ব পাকিস্তানে আমি অল্প কিছু মুসলমানকে বাঁচিয়ে রেখেছি যাতে বাকিরা এদের দেখে বুঝতে পারে আমি কেন এই কাজ করেছি" তাহলে এরা কি করত, জানতে ইচ্ছা হয়।

৪।
বিশ্ব-রাজনীতিতে কি নতুন করে "নাৎসিজম" আমদানী করার কোনও ষড়যন্ত্র চলছে? ঐদিকে ব্রাদারহুড, এইদিকে শিবসেনার উত্থান যদি এত ব্যাপকভাবে ঘটতে পারে, তাহলে আরেকদিকে নাৎসিবাদ কি দোষ করল?

৫।
জার্মানী সেইরকম গুটিকয় দেশের মধ্যে অন্যতম যারা নিজেদের কলঙ্কময় অতীত স্বীকার করে সেই কলঙ্ক মুছে ফেলতে সোচ্চার। জার্মানীর দেখাদেখি "নাৎসিবিরোধী আইন"/"হলোকাস্ট অস্বীকাররোধী আইন" ইত্যাদি ভাল ভাল জিনিষ যাতে আমরাও শিখে না ফেলি সেইজন্য এই প্রচারণা কোনও সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ নয় তো? সিদুরে মেঘ দেখে কেবলি ডরাই।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

টিউলিপ এর ছবি

১/ হেইল হিটলার যারা বলে, তাদের একদল এই ইতিহাস জানে না, আরেকদল জেনেও লুকিয়ে রাখবে, ইতিহাস বিকৃতিই তাদের বড় শক্তি যে!

২/ঠিক তাই, আমি একজনকে এই জিনিসটাই বুঝাতে গেছিলাম। তাও স্বীকার গেল না, ইসরায়েল যা করছে তা খারাপ, সুতরাং সকল ইহুদিকে মারো।

৩/ এদের অনেকেই খুশি হয়ে বগল বাজাতো, এবং এরা যে বাঙালি মুসলমান না, বরং সাচ্চা পাকিস্তানি মুসলিম, সেটা প্রমাণের জন্য অস্থির হয়ে যেত।

৪, ৫/ আসলেই চিন্তার বিষয়। পুরো বিশ্বেই চরমপন্থা আস্তে আস্তে জনপ্রিয় হচ্ছে। আমরা কী আরেকটা অন্ধকার যুগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি?

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

এই বোলগ দিয়া ইন্টারনেট চালানোর জামানায়ও না জানা পার্টি আছে বিশ্বাস করিনা

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

টিউলিপ এর ছবি

আছে রে ভাই, ফেসবুকে একটা অ্যাকাউন্ট আছে - এই পর্যন্তই। গুগলে গিয়ে www.facebook.com লিখে সার্চ দেওয়া পাবলিকও আছে এখনো।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

অ্যাঁ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নৈষাদ এর ছবি

এই লোক জাতিগতভাবে যে ধরণের delusion এ ছিল, অন্য জাতি নিয়ে যে ভাল কিছু ভাবত তা মনে হয়না, উইকি আরব জাতি নিয়ে তার চিন্তাভবনা কিছুটা বলছে... (ইংরেজীতে তুলে দিচ্ছি)

Hitler said that the conquering Arabs, because of their racial inferiority, would in the long run have been unable to contend with the harsher climate of the country. They could not have kept down the more vigorous natives, so that ultimately not Arabs but Islamized Germans could have stood at the head of this Mohammedan Empire.

This exchange occurred when Hitler received Saudi Arabian ruler Ibn Saud’s special envoy, Khalid al-Hud al-Gargani. Earlier in this meeting Hitler noted that one of the three reasons why Germany had warm sympathies for the Arabs was:

… because we were jointly fighting the Jews. This led him to discuss Palestine and conditions there, and he then stated that he himself would not rest until the last Jew had left Germany. Kalid al Hud observed that the Prophet Mohammed … had acted the same way. He had driven the Jews out of Arabia ….

Gilbert Achcar wryly observes that the Fuhrer did not point out to his Arab visitors at that meeting that until then he had incited German Jews to emigrate to Palestine, and the Reich actively helped Zionist organizations get around British-imposed restrictions on Jewish immigration.

Achcar also points out that the German version of "Mein Kampf" designates the Arab people as one of the lowest races of humanity, though this section was not included in the Arabic translations of the book. Hitler had told his military commanders in 1939, shortly before the start of the war:

We shall continue to make disturbances in the Far East and in Arabia. Let us think as men and let us see in these peoples at best lacquered half-apes who are anxious to experience the lash.

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

German version of "Mein Kampf" designates the Arab people as one of the lowest races of humanity, though this section was not included in the Arabic translations of the book.

হো হো হো গত সপ্তাহে (মোঃ) হিটলারের এক আশেকে মুরিদান বড় গলা করে চেঁচাচ্ছিলঃ "হিটলারের লেখা তন্ন তন্ন করে ঘাঁটিয়াও নাকি তিনি মুসলমানদের বিপক্ষে একটি কথাও খুঁজিয়া পান নাই", এবার বুঝলুম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

টিউলিপ এর ছবি

আপনার এই কমেন্টটাই আমার আসলে জানার দরকার ছিল। হিটলারের ক্ষেত্রে ইহুদিবিদ্বেষ = মুসলিমপ্রীতি এত সহজ সমীকরণ মনে হয় কাজ করে না, যেটা ফেসবুকে মুমিন মুসলমানের দল প্রচার করার চেষ্টা করছে।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

হাসান মোরশেদ এর ছবি

হিটলার এর বর্ণ তালিকায় ইহুদীদের স্থান 'কালো' এবং আরবদের থেকে উঁচুতে ছিলো। জার্মান আর্যদের প্রথম প্রতিদ্ধন্ধী হিসেবে ইহুদীদের নিকেশ করা তার হিসেবে ছিলো। এই দানবটাকে না থামানো গেলে এরপরে আরব, আফ্রিকান সবাই ই বাটে পড়তো।
আর ইহুদী-ফিলিস্তিনীদের দখল পালটা দখলের ইতিহাস- ফিলিস্তিনিদের মুসলমান হবার ও অনেক আগের।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

টিউলিপ এর ছবি

এই জায়গাটার ইতিহাসই তো যুদ্ধের ইতিহাস। একেকবার একেক সূত্রে। লোকে এত সহজ সমীকরণ কিভাবে মেলায় সেটাই বুঝে পাই না।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

অতিথি লেখক এর ছবি

ফেসবুকে অনেকের মুখেই হিটলার স্তুতি শুনে শুনে বিরক্ত। আগে বুঝানোর চেষ্টা করতাম। অনেক তর্কের পরে হাল ছেড়ে দিয়েছি। এখন এই ধরনের পাবলিক দেখলেই ব্লক।

সবকিছুর মূলেই আসলে আমাদের জানার অভাব। আমরা কোনও কিছুই পুরোপুরি জানি না। স্কুল/কলেজে এসব নিয়ে শিক্ষা দেওয়া হয় না। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে আমাদের দেশে যেমন ছাড়াছাড়া ভাবে রাজাকারদের কথা বলা হয়েছে কিন্তু তাদের সত্যিকারের নৃশংসতা এবং পরিচয় এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে, একই ঘটনা বিশ্ব ইতিহাসের বেলায়ও। শুধু মাত্র স্কুল/কলেজের শিক্ষা অনুযায়ী হিটলার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটা পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছিল এবং হেরে গেছে। অনেক বড় হওয়া পর্যন্ত আমি নিজেও জানতাম না হিটলারের স্বরূপ। ভাবতাম সে তো সারা পৃথিবী জুড়ে একটা দেশ বানাতে চেয়েছিল। বেশ সায়েন্সফিকশন টাইপ ব্যাপার। খারাপ কি?! নিজে নিজে পড়ালেখা এবং ইন্টারনেট ঘাটাঘাটি করে (ইংরেজী সিনেমারও একটা অবদান আছে) হিটলারের আসল রূপ আমার জানতে হয়েছে। কতজন মানুষ আর সেটা করবে?

এছাড়াও ডান ঘেঁষা, মৌলবাদী দল আর মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসার খুব বেশি আমাদের দেশে। সব পরিবারেই দেখা যাবে ২/১ জন আত্মীয় আছেন যারা মাদ্রাসায় পড়ালেখা করেন। এই গোষ্ঠীর কাছে পশ্চিমা সব কিছুই খারাপ আর আরবীয় সবই ভাল। যেহেতু আমেরিকা হিটলারকে খারাপ বলছে, সেহেতু সে নিশ্চয়ই ভাল - এরকম একটা মনভাব কাজ করে এদের মধ্যে। এবং এদের কাছ থেকে আত্মীয় বন্ধুদের মধ্যেও এই ধারণা ছড়িয়ে পরে। আর যেহেতু প্রকৃত ইতিহাসটা অনেকেই ঠিকমত জানে না, তাই বিনা তর্কে এই ধারণাটাই মেনে নেয়।

--
ঘুমকুমার

টিউলিপ এর ছবি

ডায়রি অফ অ্যানা ফ্র্যাংক কিন্তু আমাদের দেশে খুব জনপ্রিয় বইগুলোর একটা। সেই বই পড়া কেউ যদি আবার হিটলারকে নায়ক বানাতে চায়, তাহলে কেমন লাগে? বইটা কী আদৌ তার মনে প্রভাব ফেলেছে?

আর লোকে নিজের দেশের ইতিহাসই ঠিক মত জানে না, ত্রিশ লক্ষ শহীদকে মিথ বলে, আর কোথাকার কোন জার্মানির ইতিহাস!

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ডায়রি অফ অ্যানা ফ্র্যাংক কিন্তু আমাদের দেশে খুব জনপ্রিয় বইগুলোর একটা। সেই বই পড়া কেউ যদি আবার হিটলারকে নায়ক বানাতে চায়, তাহলে কেমন লাগে? বইটা কী আদৌ তার মনে প্রভাব ফেলেছে?

সবিনয়ে দ্বিমত পোষণ করছি। আপনার (কিংবা আমার) পরিচিত গণ্ডীতে বইটি জনপ্রিয় হতে পারে, সবার কাছে নয়। যেমন ধরুনঃ আমার মফঃস্বলের অভিজ্ঞতা বলে কাটতির মাপকাঠিতে ঢাকার বাইরে "জিরো টু ইনফিনিটি" পত্রিকাটির চেয়ে "কিশোর কণ্ঠ" পত্রিকাটির জনপ্রিয়তা (দুঃখজনকভাবে) অনেক বেশি। মন খারাপ

কিংবা মতিভাইয়ের স্লোগানে গলা মিলিয়ে আপনার কথাটাকেই যদি বদলে দেইঃ

"লেকচার্স অফ ডঃ জাকির নায়েক" কিন্তু আমাদের দেশে খুব জনপ্রিয় বইগুলোর একটা। সেই বই পড়া কেউ যদি আবার হিটলারকে নায়ক বানাতে চায়, তাহলে ভালই লাগে! বইটা কী তার মনে দারুণ প্রভাব ফেলেনি?

কেমন হল? শয়তানী হাসি অবাক হবার খুব বেশি কিছু দেখছিনা, তাইনা? চিন্তিত

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

টিউলিপ এর ছবি

তাও ঠিক কথা। আসলে যার সাথে কথা বলে এই ব্লগের সূচনা, সে বইটা পড়েছে জানি। ঐ জন্যই মাথায় ঘুরছিল।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

সমিস্যা কি? আমি যেমনে মন মেজাজ খারাপ থাকলে জোকসের বই হিসাবে "জাকির নায়েক লেকচার্স" পড়ি, উনিও একই পারপাসে "আনা ফ্রাঙ্কের ডায়রি" পড়তে পারেন। হিটলারের আশেকানে মুরিদান যারা আছেন তাঁরা মানুষের দুঃখ-কষ্টের বিবরণ পড়লে আনন্দিত হবেন, এটাই স্বাভাবিক।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

টিউলিপ এর ছবি

ইয়ে মানে, মুজতবা আলীর হিটলার পড়েছেন? বইটা পড়লে কষ্ট হয়, কিন্তু আলীসাহেবের সহজাত রসবোধ সে বইয়ের মাঝেও উঁকি দেয়। তেমনি একটা লাইন মাথায় ঢুকে গেছিল আমার।

বিচারের মুখোমুখি হতে গিয়ে তখনকার অনেক হোমড়াচোমড়া জার্মান নেতাই বলেছিলেন, হিটলার যে এত খারাপ, তা না কি ওনারা বুঝতে পারেন নি। তাইতে ক্ষেপে গিয়ে আলীসাহেব মন্তব্য করেছিলেন, "বটে রে! বুঝতে পারো নি? তবে তোমার আর ঐ মেছুনির মাঝে পার্থক্য কোথায়?"

এরাও মনে হয় পড়াশোনা করেও হিটলার যে খারাপ সেটা বুঝতে পারেন না।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হু, পড়েছি, আলী সায়েব রক্স চলুক

ণূড়া/রুবেল সাহেবদের সাথে মেছুনির পার্থক্য জানতে মুঞ্চায় চাল্লু

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নীড় সন্ধানী এর ছবি

অবাক হইনি পড়ে। বাঙালী বরাবরই এধরণের কিছু কাল্পনিক সমীকরণে বিশ্বাসী। আমার ব্যক্তিগত ধারণা, হিটলার যদি বর্তমান জার্মানীতে থাকতো তাহলে হয়তো ইসরাইলকে মদদ দেয়া দলটির নাম হতো ইঙ্গ-মার্কিন-জর্মন জোট।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

টিউলিপ এর ছবি

ইঙ্গো-মার্কিন-জর্মন জোট অবশ্য আমার মনে হয় না। তবে জোট যা-ই হোক, সাধারন ফিলিস্তিনিদের অবস্থার ইতর বিশেষ কিছু হত না।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

দীনহিন এর ছবি

সময়ের পোস্ট, টিউলিপ। একদম মনের কথাগুলি বলেছেন।

নীচের কথাগুলি যারা হিটলারের রেফারেন্স দিয়া ফিলিস্তিনিদের দুঃখে কাইন্দা বুক ভাসাইয়া ফালাইতেছেন, তাদের উদ্দেশ্যেঃ

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি সামরিক বাহিনির বর্বরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান, পারলে শরনার্থী ক্যাম্পে থাকা মানুষগুলোর জন্য কিছু আর্থিক সহায়তা করুন বা নিয়মতান্ত্রিক পথে আপনার পক্ষে যা যা সম্ভব, তার সবটুকু করুন, আমরা আপনাকে স্যালুট জানাব।

কিন্তু যদি ডেডিক্যাটেড ছাগুর মত হিটলারের রেফারেন্স দিয়ে বলেন, কিছু ইহুদি হিটলার বাঁচিয়ে রেখেছিলেন, ইহুদি কত খারাপ, এবং কেন তিনি তাদের নির্মুল করে দিতে চেয়েছিলেন, তা বিশ্ববাসীকে বোঝানোর জন্য, তাহলে বলতেই হয় আপনার মধ্যে কোন মানবতা নেই, আছে উগ্র জাতিপ্রেম, সাম্প্রদায়িকপ্রেম, আপনার মস্তিষ্ক এখনো বিচরন করছে অন্ধকার পাশবিক জগতে।

আপনি যদি ইহুদি জাতির দিকেই অঙ্গুলি হেলন করেন, তাহলে আরও বড় অঙ্গুলি হেলন করা যায় মুসলিম জাতির দিকে, তাই না?????? দেখুন না, সিরিয়ায় লাখ লাখ মানুষ মেরে সাফ করে দিয়েছে, একাত্তরে তিরিশ লাখ মানুষকে মাত্র নয় মাসেই হত্যা করা হয়েছে, তো এগুলি কারা করেছে????

সুতরাং, উগ্র জাতীয়তাবাদ বিসর্জন দিন, আগে মানুষ হোন, তারপর মানবতা প্রদর্শন করুন!!!!!

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

টিউলিপ এর ছবি

সত্যি কথা স্বীকার করে নিলে বলতেই হয়, ধর্মের নামে বর্তমান পৃথিবীতে যত সহিংসতা চলছে, তার একটা বড় দায়ভাগ মুসলমানদের। সেটা জন স্টুয়ার্ট যতই বলুক না কেন যে ইসলাম এখনো তরুণ ধর্ম, ক্রিশ্চান ধর্ম তার এই বয়সে ডাইনি পুড়াচ্ছিল। আসলে আমাদের টেকনোলজিক্যাল যত উন্নতি হয়েছে, মানবিকতার উন্নতি ততটা হয় নি।

সুতরাং, উগ্র জাতীয়তাবাদ বিসর্জন দিন, আগে মানুষ হোন, তারপর মানবতা প্রদর্শন করুন!!!!!

এইটাই আসল কথা।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

সত্যপীর এর ছবি

মিলিটারি অথোরিটি ফিগারের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের কলিজা নরম। হিটলার, সাদ্দাম, এরশাদ এদের জন্য আমাদের ভালোবাসা অফুরান। হিটলার ইহুদি মারছে, সাদ্দাম শিয়া মারছে। এরা লুক ভালো। কারণ এদের মারা লুকগুলি ভালো না।

হিটলার একটা প্রথম শ্রেণীর সাইকো। সে হাভারা এগ্রিমেন্ট একবার সাপোর্ট করে একবার অপোজ করে। নিজেই জানেনা কি করবে। হাভারা এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী জার্মানির ইহুদিরা প্যালেস্টাইন যাইতে পারবো। একদিক দিয়া ভালো, জার্মানির ইহুদিরা পয়সাকড়ি ফেলায় ভাগতেছে অতএব দেশের ইকোনমিতে কিছু পয়সা ইঞ্জেক্ট করা হইল। তারপরে আবার সে চিন্তা করে, প্যালেস্টাইনে আরব খেদায় ইহুদি ঢুকাইতেছে ব্রিটিশ। এইটাতো আটকাইতে হইব। কী করা যায়।

হিটলার আরব দুনিয়ার প্রতি ভাসা ভাসা ভালোবাসা দেখাইলেও প্যালেস্টাইন আরব হিটলারের প্রতি পূর্ণ প্রেম দেখাইছে। হিটলারের ইহুদিনিধনের গন্ধে তারা তখন অত্যন্ত উত্তেজিত, ব্রিটিশ ব্যাকড ইহুদি স্টেটের বিপক্ষে তারা ধারণা করছিল হিটলারের সাহায্যই উত্তম। ভারতের সুভাষ বসু যেরকম ভাবছিলেন ওই রকমই।

ফিলিস্তিনের আরব লিডার হাজ আল হোসাইনি, জেরুজালেমের গ্র‍্যান্ড মুফতি, ১৯৩৩ সাল থেকে বার্লিনে পালায়ে ছিলেন আর তক্কে তক্কে ছিলেন কিভাবে ইহুদি ঠেকানো যায়। তার সাথে হিটলারের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল,তিনি হিটলারকে কইছিলেন (বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন) তাদের দুইজনের কমন সেট অফ শত্রুজ: ইহুদি, ইংরেজ এবং কম্যুনিস্ট। তিনি নাকি এও বলেছিলেন আরবরা তাদের হয়ে বলকানে লড়তে রাজি আছে। বদলে তিনি হিটলারের সাপোর্ট চান।

হিটলার অবশ্য পাব্লিকলি সাপোর্ট দেয়নাই, তবে নাকি মুফতিকে বলেছিল Germany stood for uncompromising war against the Jews. অর্থাত ইশারাই কাফি হ্যায়। তাই শুনে আরবেরা হইল উত্তেজিত, অনেকটা আমাদের আব্দুন নুর তুষার কিম্বা মজা লস টাইপের কতিপয় বালের পেইজ অ্যাডমিন (এবং সেগুলির লাইকার) দের মত। তাদের কথা হইল ইহুদি মরলেই হইল, হ্যারা খারাপ। (এইখানে পরিষ্কার করা প্রয়োজন আরব নেতারা তখন হিটলারের গ্যাস চেম্বারের পরিকল্পনার কথা জানতেন না। সেই তর্কে তারা যাইতে পারেন যে হিটলার যে এ-ত-তো খারাপ তা তারা বুঝেন নাই। কিন্তু আমরা জানি এইটাও সত্য যে তারা জানত হিটলার ইহুদিনিধনের ব্যাপারে কড়া সিরিয়াস এবং সেই ব্যাপারে তারাও জানায় দিছিলেন হাম সাথ সাথ হ্যায়। নৈতিকতার প্রশ্ন এইখানে তারা এড়াইতে পারেন না)

যুদ্ধের সময় আরব দুনিয়ারে ইশারায় চোখ টিপি দিয়া ল যাইগা বলতেছেন যে হিটলার সেই একই লোক বিশ বচ্ছর আগেই প্যালেস্টাইন রে একরকম সম্মতি দিছেন ইহুদি স্টেট হিসাবে। তখন মনে হয় বিষয় তেমন তলায় দেখেন নাই। ১৯২০ সালে ম্যুনিকে ইহুদি নিয়া পকপক করার সময় কেউ একজন তারে জিগাইছিল ইহুদিদের মানবাধিকারের তাইলে কি হইব। তিনি তখন কইছিলেন Jews should seek their human rights in their own state in Palestine, where they belong.

সুতরাং আমরা নির্দ্বিধায় কইতে পারি হিটলার প্যালেস্টাইনরে নাচাইতেছিলেন। যুদ্ধে জিতলে তিনি আগে ইহুদি নাশ করতেন, তারপরে সম্ভবত মুসলমানের পালা। কিন্তু ব্যাটা যেহেতু বিষ খাইয়া মইরা ভুত হইয়া গেছে অতএব আরব মুসলমানদের এখনো তাদের ভালোবাসা রয়া গেছে হোলসিম সিমেন্টের মতন অটুট। এদিকে আমরা বাংলাদেশে পাইছি ইতিহাসমূর্খ কিছু বয়তল হিটলার প্রেমিক।

..................................................................
#Banshibir.

দিগন্ত এর ছবি

সুভাষ বোসের আরেক কাসিন ক্ষমতা পেয়েছিলেন, সুকর্ণ ... সুকর্ণ দেশ কেমন চালিয়েছিলেন জানার ইচ্ছা আছে। কাছাকাছি হলেও ইন্দোনেশিয়া নিয়ে আমার কোন বিশেষ ধারণা নেই।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অতিথি লেখক এর ছবি

সত্যপীর ভাই, আপনার মন্তব্যের সঙ্গে পূর্ণ সহমত সহকারে কিছু তথ্য যোগ করতে চাই। গ্যাস চেম্বারে ইহুদি নিধনের ব্যাপারে হাজ আমিন আল-হোসাইনি সচেতন ছিলেন। ১৯৪৩ সালে তিনি ফ্রাঙ্কফুর্টে "রিসার্চ ইন্সিটিউট অন দ্য জুইশ প্রব্লেম" সফর করেন। সেই বছরের ২রা নভেম্বর তারিখে (ততদিনে গ্যাস চেম্বার পুরোদমে চালু হয়ে গেছে) তিনি বার্লিনে এক ভাষণে বলেছিলেন, "জার্মানরা জানে কিভাবে ইহুদিদের নির্মূল করতে হয়…তারা ইহুদি সমস্যার সমাধাণ করে ফেলেছে।" ১লা মার্চ ১৯৪৪ তারিখে বার্লিন রেডিওতে তিনি পবিত্র অধিকার রক্ষার্থে লড়াই এবং (যেখানেই দেখা যাবে, সেখানে) ইহুদি নির্মূলের জন্য আরবদের প্রতি আহবান জানান। ২১শে জানুয়ারি ১৯৪৪ তারিখে তিনি নাজি-মিত্র ক্রোয়েশিয়া (যার মধ্যে তখন বসনিয়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল) সফর করেন। সেখানে SS বাহিনীর মুসলিম সদস্যদের উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে দাবী করেন, "ইসলাম এবং নাজিবাদের মূলনীতির মধ্যে ব্যাপক মিল আছে।"

ফেসবুকে যেইসব আবাল ইহুদি হত্যার জন্য হিটলাররে পয়গম্বর মানে, সেইগুলিরে যখন আমিন আল-হোসাইনির এইসব আকামের কথা বলা হয়, তখন তাদের স্টক উত্তর হইল, "দাদার কাজের জন্য কেন নাতি শাস্তি পাবে?" এইটা তাদের মাথায় আসে না যে এই যুক্তির উল্টা পিঠটা হইল, "নাতির কাজের জন্য তাহইলে কেন দাদার খুনরে হালাল করা হইতেসে?" এইসব আবালের সঙ্গে এক সময় তর্ক করতাম, এখন আর করিনা। আর একটা তথ্য জানা দরকারঃ ২য় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে এখন পর্যন্ত কয়টা আরব এবং/অথবা মুস্লিম-প্রধান দেশ ইহুদি হলোকাস্ট-কে নিন্দা জানায়ে সরকারী বিবৃতি দিসে। ইসরায়েল বিরোধিতার সঙ্গে হলোকাস্টের মত একটা অপরাধের নিন্দা জানানোর কোন সম্পর্ক নাই - এই বোধ আরব/মুস্লিমদের মধ্যে এখনও হয় নাই।

তথ্যসূত্রঃ

Elpeleg, Zvi. The Grand Mufti: Haj Amin al-Husseini, Founder of the Palestinian National Movement. London: Frank Cass. 1993. (এটা আমিন আল-হোসাইনির সবচেয়ে বিশ্বস্ত জীবনী; লাইব্রেরিতে পড়ছিলাম, কালেকশনে নাই)।

Fisk, Robert. The Great War for Civilisation (pp. 356-401). New York: Alfred A. Knopf. 2006. (এই বই আমার নিজের কালেকশনে আছে; আপনি যদি অ্যাকুরেট কোট চান, পৃষ্ঠা স্ক্যান কইরে পাঠাইতে পারি)।

Emran

সত্যপীর এর ছবি

দ্বিতীয় বইটার ইপাব পাইছি, চ্যাপ্টার ইলেভেনে দেখলাম মুফতি সাবের ভাষণ। উনি গ্যাস চেম্বারের কথা জানতেন তাইলে। "The Germans know how to get rid of the Jews . . . They have definitely solved the Jewish problem", বার্লিন ১৯৪৩। আপনে ঠিক যেরকমটা লিখছেন। কঠিন অবস্থা দেখা যায়।

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

ছোট্ট একটা জিনিস যোগ করি, (হাজ আল হোসেইনি সম্পর্কে কিছুই জানি না) ১৯৪৩ সালে উনি এই ভাষণ দিছেন মানেই যে উনি গ্যাস চেম্বার ইত্যাদি সব জানেন, এমনটা নাও হইতে পারে। ২য় বিশ্বযুদ্ধ নিয়া যতটুকু পড়সি, হিটলারের গণহত্যা যে কত ব্যাপক ছিলো, সেইটার সঠিক ধারণা পাইতে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পরও ২/১ বছর লাগছে। ইউরোপের বাইরে বা ইউরোপেরও কিছু অংশে গণহত্যার খবর ভাসা ভাসা পাওয়া যাইত, সো অনেকেই পুরা ব্যাপারটা নিয়া সন্দিহান ছিলো। (মনে রাখতে হবে, তখন সবদিকে যুদ্ধের ক্যারাব্যারা, আর সালটা ১৯৪৩, কেবল/ইন্টারনেট আসতে আরো ৫০ বছর)

---দিফিও

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার মন্তব্যের উত্তরে দুটি তথ্যঃ

১। ২০শে জানুয়ারি ১৯৪২ তারিখে বার্লিনের ওয়ান্সী শহরতলিতে একটা উচ্চপর্যায়ের মিটিং হয়, ইতিহাসে যা "ওয়ান্সী কনফারেন্স" নামে পরিচিত। "ইহুদি প্রশ্নের চূড়ান্ত সমাধান"-এর লক্ষ্যে সরকারী বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় এবং সহযোগিতা নিশ্চিত করাই ছিল এই মিটিঙের মূল উদ্দেশ্য। এই মিটিঙের অন্যতম অংশগ্রহণকারী ছিলেন অ্যাডলফ আইখম্যান (বিস্তারিত নিচের লিঙ্কগুলিতে দেখুন)।

২। জার্মান-অধিকৃত পোল্যান্ডের বেলযেক ছিল প্রথম এক্সটারমিনেসন ক্যাম্প; এই ক্যাম্পগুলিতে ইহুদিদের গ্যাস চেম্বারে হত্যা এবং বিশাল চুলায় মৃতদেহ পোড়ান হত। বেলযেক ক্যাম্প চালু ছিল মার্চ ১৯৪২-জুন ১৯৪৩ পর্যন্ত। এখানে শুধু ইহুদি না, পোলিশ এবং রোমানি (জিপ্সি)-দেরকেও হত্যা করা হয়েছিল। যদিও আউশেভিৎয (১৯৪০) এবং মাইদানেক (১৯৪১) বেলযেকের চেয়েও পুরানো, সেগুলির যাত্রা শুরু হয়েছিল লেবার ক্যাম্প হিসাবে (গ্যাস চেম্বার এবং চুলা এগুলিতে পরে ইন্সটল করা হয়)। অন্যদিকে বেলযেকের একমাত্র লক্ষ্য ছিল এক্সটারমিনেসন।

এসব তথ্যের প্রেক্ষিতে বলা যায়, ১৯৪৩ সালের নভেম্বর নাগাদ হাজ আমিন আল-হোসেইনি গ্যাস চেম্বারে ইহুদি নিধনের ব্যাপারে অবগত ছিলেন।

Emran

http://en.wikipedia.org/wiki/Wannsee_Conference

http://en.wikipedia.org/wiki/Adolf_Eichmann

http://en.wikipedia.org/wiki/Extermination_camp

টিউলিপ এর ছবি

আপনার মন্তব্যটা আসলে মূল পোস্ট হওয়া উচিত ছিল। একটা পোস্ট নামায় ফেলবেন না কি ঐ সময়ের ইতিহাস নিয়ে?

আর ভাসুরের নাম মুখে নিলেন না যে? মতিকণ্ঠ তো ঠিকই নিয়েছে চোখ টিপি

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

পৃথ্বী এর ছবি

পল বারম্যানের The Flight of the Intellectuals এর একটা পুরো অধ্যায় আছে হিটলারের মধ্যপ্রাচ্য প্রকল্প নিয়ে, পড়ে টাসকি খেয়ে গিয়েছিলাম। অধ্যায়টা অবশ্যই অনুবাদ করব।


Big Brother is watching you.

Goodreads shelf

টিউলিপ এর ছবি

চলুক তাড়াতাড়ি করে ফেলেন।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

স্যাম এর ছবি

চলুক উত্তম জাঝা!

স্বপ্নহারা এর ছবি

Man's Search for Meaning বইতে Viktor Frankl বলেছেন,

If you want to stay alive, there is only one way: look fit for work. If you even limp, because, let us say, you have a small blister on your heel, and an SS man spots this, he will wave you aside and the next day you are sure to be gassed. Do you know what we mean by a ‘Moslem’? A man who looks miserable, down and out, sick and emaciated, and who cannot manage hard physical labor any longer … that is a ‘Moslem.’ Sooner or later, usually sooner, every ‘Moslem’ goes to the gas chambers.

- এক বন্ধুর কাছ থেকে পেলাম।

একটু চিন্তা করলেই বোঝা যাবে, হিটলার ইহুদি সহ সকল "নিম্ন" বা "অনার্য" জাতেরই শত্রু ছিল... মোজলেম বলে একটা ডিগ্রেডিং শব্দের ব্যবহার মনে হয় তাই বোঝায়। আর ইজরায়েল রাষ্ট্র হিটলারের হিটলারির বাই প্রোডাক্ট হিসাবেই আজকের এই অবস্থায়... আজকে গাজার জন্য হয়তো পরোক্ষভাবে হিটলার দায়ী।

বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে গাজার জন্য মায়াকান্না করা লোকগুলার বেশিরভাগের চরিত্র বুঝতে হলে, ইজারায়েলের জায়গায় হয়তো ইন্দোনেশিয়া বা ইরান বসালেই রেসপন্স ভিন্ন হবে। ফিলিস্তিনিদের জন্য খুব কম লোকই কাঁদছে, কাউকে সেটা খুব কমই ষ্পর্শ করছে- আসল ইস্যু ইহুদি বিরোধিতা- আসল হাইলাইট ইজরায়েল। গাজার জন্য কেঁদে ভাসানো স্ট্যাটাসের ৯৫% ই ফিলিস্তিনের মানুষের জন্য না, ইহুদি বিদ্বেষ-আমেরিকা বিদ্বেষ-ধর্ম-এবং সামাজিক শো অফ এর জন্য।

আমার নিজের দেশের ভিতরের প্যালেস্টাইনে আমরা ইজরায়েলের চেয়ে হাজার গুণ বেশি ভয়ংকর... হিটলার প্রেম সেটাই শেখায়- সেটাই বোঝায়...

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আমার নিজের দেশের ভিতরের প্যালেস্টাইনে আমরা ইজরায়েলের চেয়ে হাজার গুণ বেশি ভয়ংকর... হিটলার প্রেম সেটাই শেখায়- সেটাই বোঝায়...

চলুক ( মন খারাপ )

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

টিউলিপ এর ছবি

সেইটাই - আর সবকিছুর মতই আমাদের মানবিকতাও শর্তের উপরে নির্ভর করে। নিজের দেশে সংখ্যালঘুদের খবর নাই, আদিবাসীদের খবর নাই, গাজার ফিলিস্তিন আর মায়ানমারের রোহিঙ্গা নিয়ে কান্নাকাটির শেষ নাই আমাদের।

এসব দেখে মাঝে মাঝে খুব অসহায় লাগে।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

দিগন্ত এর ছবি

ভারতে হিটলারের আরেক ভক্ত শিবসেনা। কি কারণে মনে হয় সারা পৃথিবীতে দক্ষিণপন্থীরা হিটলারের বিষয়ে একটু দুব্বল হাসি


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

টিউলিপ এর ছবি

মূলনীতিতে মিল আছে যে, ব্রেইনওয়াশ করে চরমপন্থা অবলম্বনই এদের কৌশল।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

হিটলারের ব্যপারে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের ধারণা কেমন হতে পারে সেটার জন্য বেশি দূর যাওয়া লাগবেনা। একটি বহুল প্রচারিত অনলাইন পত্রিকার টেক্সট হুবহু কপি করছি এখানে (শুধু লিঙ্ক দিতে পারতাম কিন্তু শালারা কখন ডিলিট করে দেয় ঠিক নাই, এই মাস্টারপিস হারায় যেতে দেয়া ঠিক হবে না) [মূল লিঙ্ক]

হিটলারকে একটি কারণে দারুন পছন্দ করা যেতে পারে। হিটলারের লেখা যারা পড়েছেন তারা জানেন তার দর্শন চমকে দেওয়ার মত। যেমন হিটলার রক্তের শুদ্ধতায় বিশ্বাসী ছিলেন। হিটলার ব্যাখ্যা করেন স্বগোত্রের পুরুষ স্বগোত্রের নারীর সাথে যৌন সম্পর্ক করবে, এটার ব্যতয় প্রকৃতি পছন্দ করেনা। প্রকৃতি পছন্দ করেনা বলে নিম্ন শ্রেনীর প্রাণীরা তা মেনে চলে।

যেমন ঘরের পুরুষ ইদুর মেঠো মহিলা ইদুরের সাথে যৌনতায় যায় না। এটা প্রকৃতি বিরুদ্ধ। তারা মেনে চলে। কিন্তু মানুষ মানেনা। মানেনা বলেই আর্যরা অনার্যদের বিয়ে করে। জার্মানরা জাপানিদের বিয়ে করে। সাদা চামড়া কালোদের বিয়ে করে। প্রকৃতি এতে ক্ষুব্ধ হয়। এতে তৈরি হয় দুর্বল জাতির। সে জাতি মিশ্র রক্তে স্বকীয়তা হারায়। ধ্বংস হয়। অপেক্ষা কৃত দুর্বল জাতি তৈরি হয়।

হিটলার শুধু রক্তে নয় সংস্কৃতির স্বকীয়তায়ও বিশ্বাসী ছিলেন। আজকে যারা আধুনিকতার নামে বিদেশী ভাষা বা সংস্কৃতি নিয়ে নাচানাচি করে তাদের তিনি তুলোধুনো করেছেন। তার দর্শনটা এমন- কোন জাতি যদি তার সংস্কৃতির মূল উপাদান অন্য কোন বিদেশী সংস্কৃতি থেকে ধার করে তবে তারা ক্রমশঃ সেই সংস্কৃতিতে গ্রাস হয়।

এক দেশ আরেক দেশের নদীর পানি যেমন বন্ধ করে দেয় তেমন ভাবে যদি কখনো সেই বিদেশী সংস্কৃতি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় তবে সেই জাতির সংস্কৃতির ধারা স্তব্ধ হয়ে যায়। তাদের সংস্কৃতি স্টাচু হয়ে যায়। বিনাশ ঘটে। এটা হিটলারের কথা।

তার মতে, সেই জাতি দ্রুত উন্নতি করবে যে তার সংস্কৃতির স্বকীয়তা ধরে রাখবে, সংস্কৃতির লালন করবে। আগ্রাসন রুখবে। আবার সভ্যতাও টিকে থাকে এর ভিত্তিতে। কোন সভ্যতা ঠিক ততদিন দীর্ঘায়িত হয় যতদিন তারা নিজেদের সংস্কৃতিকে দূষণমুক্ত রাখ ততদিন।

হিটলার সবচেয়ে চমকপ্রদ আবিষ্কার হচ্ছে ইহুদি সমস্যা। হিটলার চিহ্নিত করেছিলেন ইহুদী সমস্যা পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ সমস্যা। সেই সমস্যার একমাত্র সমাধান ইহুদী হত্যা। এ জন্য তিনি একটি যজ্ঞ চালান। এই অপারেশন এর নাম ছিল দি ফাইনাল সলুশন অব জিউস প্রবলেম। ইহুদী সমস্যার শেষ সমাধান। বলা হয়ে থাকে তিনি ৬০ লাখ ইহুদী নিধন করেন। যা ওই সময়ের ইহুদীর ৩৭% প্রায়!

ইহুদীরা যুগ যুগ ধরে মার খাওয়া পৃথিবীর চিরন্তন যাযাবর। এরা সর্বত্র বিতাড়িত। নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এরা কৌশলী হয়। চামচামী তাবেদারী বাটপারি নানা চাতুর্যতায় তারা টিকে থাকার সংগ্রাম করে। তারা কচুরিপানার মতো ভেসে বেড়ায়। যেখানেই যায় সমস্যা সৃষ্টিকারী হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের তাড়ানো হয়। এই হচ্ছে তাদের আড়াই হাজার বছরের ইতিহাস।

ইহুদীরা বহু বছর আগে জার্মানিতে প্রবেশ করে। তারা সুদের ব্যবসা করত। কালক্রমে জমি কিনে খাজনার বিনিময়ে জমি ভাড়া দিত। উচ্চহারে খাজনা দিতে গিয়ে মানুষ গরীব হয়ে পড়ল। একসময় খাজনার প্রথার বিরুদ্ধে মানুষ আন্দোলন করে ইহুদিদের সব জমি দখল করে নেয়। ইহুদীরা কিছু বছর বাদে শাসকদের প্রচুর উপঢৌকন এবং উৎকোচ দিয়ে ফিরে আসে। ততদিনে জার্মানে ইন্ডাস্ট্রি কলকারখানা দাড়িয়ে গেছে। মানুষ ইহুদীদের ঘৃণা করতে শুরু করেছে।

সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাওয়া এবং একই সাথে কলকারখানায় নিজেদের আধিপত্য তৈরি করতে তারা একটি কৌশল খুঁজতে থাকে। তখন ইহুদী দার্শনিক কার্ল মার্ক্সের মাধ্যমে মার্ক্সবাদ নামে একটি তত্ত্ব প্রচার করানো হয়। ট্রেড ইউনিয়ন বানানো হয়। ট্রেড ইউনিয়নের নামে প্রভাব খাটিয়ে ধ্বংস করা হয় জার্মান শিল্প কারখানা। মেইন ক্যাম্পে হিটলার এভাবেই বলেছেন মার্ক্সবাদ সম্পর্কে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগ পর্যন্ত খ্রিস্টানরা ইহুদীদের চরম অপছন্দ করতো। ইহুদীদের যন্ত্রনায় বিরক্ত হয়ে একসময় তাদের জন্য ইজরাইল নামে একটি ভুখণ্ডের তৈরি করে খ্রিস্টান রাষ্ট্রগুলো। এটা ইসরায়েলের শানে নুযুল। ইজরাইল ধর্মের ভিত্তিতে গড়া পৃথিবী প্রথম রাষ্ট্র। তাদের সংবিধানে বলা পৃথিবীর যে কোন দেশের ইহুদী এর নাগরিকত্ব নিতে পারবে। পশ্চিমারা নিজেদের ঘাড় থেকে সরিয়ে ইহুদী আপদ মধ্যপ্রাচ্যে গেড়ে দিলো। মধ্যপ্রাচ্য ছয় দশক ধরে জ্বলছে।
সম্প্রতি আলজাজিরার এক ছবিতে এসেছে ইসরায়েলের একটা পাহাড়ে উঠে বসে আছে কিছু ইহুদী। সেখান থেকে গাজার মুসলিম বসতি দেখা যায়। গাজায় মুসলিমদের উপর বিমানে বোমা ফেলা হচ্ছে আর তারা হাত তালি দিচ্ছে। বোমা ফেলার পর গাজার আহত নরনারীদের আর্তচিৎকারের শব্দে তারা উল্লাসে ফেটে পড়ছে, নাচছে। এই হচ্ছে বর্বর ইহুদী।

এটা একটা নমুনা চিত্র মাত্র। হাজার হাজার বছর ধরে বিভিন্ন মানুষের প্রত্যক্ষন ও পর্যবেক্ষণই তাদের চরিত্র সম্পর্কে নেতিবাচক বলে গেছেন। অতএব এগুলো সংকীর্ণবাদী চিন্তা বলে উড়িয়ে দেবার সুযোগ নেই।

ইহুদীদের চরিত্রগত সমস্যার কারণেই একটা সময় আরেকটা 'ফাইনাল সলুশন অব জিউস প্রবলেম' তৈরি হবে না কে জানে। কেউ একজন চাইবে ইহুদীরা সমূলে বিনাশ হোক। এই মুহুর্তে অন্তত মুসলমানরা চাইছে ইহুদী বিনাশ হোক। তাদের মনে দগদগে ক্ষত।

আমার কিছু বন্ধুকে বলতে শুনি, ফিলিস্তিনের উপর হামলা ধর্মের ভিত্তিতে বিবেচনা না করে মানবতার ভিত্তিতে বিবেচনা করতে। তারা ইহুদীদের প্রতি তাদের ভাষায় 'বিদ্বেষ' ছড়ানো নৈতিক মনে করছেন না। এটা স্রেফ ভন্ডামী মনে হয় আমার কাছে। যে রাষ্ট্রই অস্বাভাবিক, যে রাষ্ট্র শুধুমাত্র ধর্মের ভিত্তিতে তৈরি, তাকে ধর্মীয় ভাবে দেখবেন না বলাটা কেমন যেন নয় কি? ইসরাইল রাষ্ট্র মানেই ইহুদী জাতি। ইসরায়েলের সমালোচনা করলে ইহুদী জাতি সত্তা সামনে চলে আসবে। এটাই ঠিক। ইহুদি এবং ইসরাইল এর মাঝে বিভাজন করেন কিভাবে আপনারা। এতটা সুশীল কিভাবে হতে পারেন মাথায় আসেনা।

এই রাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আনেনি। অশান্তি এনেছে। এখানে শান্তি শুধু একভাবেই আসতে পারে তা হলো এর উৎখাত বা অন্য কোথাও স্থানান্তর। ইসরাইলীরা মধ্যপ্রাচ্যের মূল স্রোতের সাথে মিশে যাবে এমনটাও সম্ভব নয়। তাদের আড়াই হাজার বছরের ইতিহাস বলেনা।

শেষের গদ্য: অনেকে জানেন ইসরায়েল বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয় নি। ব্যাপারটা তা না । ১৯৭২ সালের ৭ ই ফেব্রুয়ারি ইসরায়েল তাদের কেবিনেট বৈঠকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। এই মর্মে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তারা একটি চিঠিও পাঠায়। বাংলাদেশ এর উত্তর দেয় নি। উল্টো বঙ্গবন্ধু সরকার ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে অস্বীকার করেছে। তাই আজও আমাদের পাসপোর্টে লেখা থাকে '' ইসরায়েল ছাড়া পৃথিবীর সব দেশ''! বঙ্গবন্ধুর কল্যাণে আমরা আজও বর্বর ইসরায়েলের অস্তিত্বের বিরোধীতা করে স্মারক বয়ে চলছি নিত্য।

* জানোয়ার রুবেল, ইমেইল:

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হুমম, এই লেখাটা এখানে থাকা দরকার ছিল চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

যারা ঠাণ্ডা মাথার খুনি হিটলারকে সমর্থন করে তারাই ISIS এর হত্যাযজ্ঞে নীরব থাকেন তাহলেতো তাঁদের ইসরায়েলী হত্যাযজ্ঞেও চুপ থাকার কথা, আর যদি এখন মুসলমান মারা যাচ্ছে বলে কষ্টে চোখ দিয়ে পানি পড়ে তবে সিরিয়ায় যারা মারা যাচ্ছে তাঁরা কি অমুসলিম?
আসলে এরা না জেনে বুঝে চোখ বন্ধ করে পোষ্ট শেয়ার করে এবং মন্তব্য করে।

অভিমন্যু .
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি

কল্যাণ এর ছবি

হিটলার একটা হিপোক্রিট কুত্তা। ফুলস্টপ। যারা তারে নিয়া নাচে তারাও তাই। ফুলস্টপ। এইটা নিয়া যারা ত্যানা প্যাচায় তারাও তাই - হিপোক্রিট কুত্তা।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।