আবোল-তাবোল কথা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ০৮/০৪/২০০৮ - ৪:৫৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মাঝখানে বেশ কিছুদিন সচলায়তন থেকে দূরে ছিলাম। ইচ্ছাকৃত বা অভিমানবশত নয়। অফিস-বাসার নানান ঝামেলার কারনেই মূলত এই বিরতি। তার চেয়েও বড় কথা গ্রামীনফোনের পি১ প্যাকেজ ব্যবহার করতাম। গতমাস শেষে বিল এতই বেশি আসল যে অফিস থেকে পাওয়া আমার বিশাল অংকের লিমিটও (সাধারণত যেটা শুধু কথা বলে আমার পক্ষে শেষ করা মোটামুটি অসম্ভব একটা ব্যাপার) ছাড়িয়ে গেল। এ মাসে তাই পি২ নিয়ে নিব ভাবছি। বিজনেস সলিউশন প্যাকেজের আওতাভুক্ত হবার কারণে বেশ কিছুটা ছাড়ও পাওয়া যাবে। এখনো অবশ্য এটা নিয়ে কিছু করা হয়নি কারণ যে গ্রামীনফোনের যে ভদ্রলোক আমাদের অফিসের এই বিষয়টা দেখাশোনা করেন, উনার সম্পর্কে বিগত প্রায় কয়েকমাস যাবত খুবই খারাপ কথা শুনে আসছি। উনি নাকি খুবই দায়িত্বজ্ঞানহীন একজন লোক, কোন কাজই নাকি তিনি সময়মত করেন না। হাজারটা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তারপরও কেন তিনি তার দায়িত্বে বহাল আছেন, বিশেষ করে কিভাবে, এই প্রশ্ন অনেকের মনেই জাগতে পারে। আর অনেকের মতই উত্তরটা আমারও অজানা। আরো মজার বিষয় হল মাত্র গত সপ্তাহে আমি জানতে পারলাম যে গ্রামীনফোনের ওই ভদ্রলোক আমার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ এবং পছন্দের সহকর্মীর শ্যালক! বিষয়টা জেনে কিছুটা অবাক হয়েছিলাম এবং পরে আমার সহকর্মীকে জিজ্ঞেসও করেছিলাম তার ব্যাপারে। উনিও কিছুটা হেসেই ব্যাপারটা উড়িয়ে দিলেন। যাহোক কি প্রসঙ্গ থেকে কি প্রসঙ্গে চলে এলাম!

গত শনিবারে একটা মুভি দেখলাম। অ্যাটনমেন্ট। শুরুটা বেশ আকর্ষণীয় মনে হলেও মাঝখানে কিছুটা ছন্দপতন ঘটেছিল বলা যায়। তবে শেষ দশ মিনিট ছিল পুরোপুরি অসাধারণ! অনেকদিন পর এরকম একটা হৃদয়ছোঁয়া মুভি দেখলাম। মানুষের সামান্য কোন একটা ভুলের কারণে যে তার জীবন কতটা বদলে যেতে পারে এবং সেই পরিবর্তনের ধাক্কা তার আশেপাশের মানুষের জীবনেও যে কি প্রকটভাবে পড়তে পারে, তার এক অসামান্য চিত্রায়ন ঘটেছে এই মুভিতে।

কাহিনীর সূত্রপাত বারো বছর বয়সী এক কিশোরীকে কেন্দ্র করে, লেখালেখির প্রতি যার খুবই ঝোঁক। ঘটনাক্রমে বড় বোনকে তার প্রেমিকের সাথে আপাতদৃষ্টিতে খুবই সাধারণ অন্তরঙ্গ মুহুর্তে দেখতে পারাটা খুব দাগ কাটে মেয়েটির মনে। কিশোরী বয়সের অসতর্ক ভুলে দৃশ্যটাকে সে অন্যভাবে নেয় এবং এরপর আরেকটি ছোট্ট ভুলের কারণে সে প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে ছেলেটির নামে মিথ্যা একটা অপবাদ দেয়। পরবর্তীতে ছেলেটিকে যুদ্ধে যেতে হয়, তার ভালবাসার মানুষটিকে পেছনে ফেলে। সেই ঘটনার পর বড় বোনও কখনো ক্ষমা করতে পারেনা এই মেয়েটিকে। কিশোরী বয়সের সেই ক্ষনিকের মায়া, অসাবধান ভুল এবং ছোট্ট একটি নির্জলা মিথ্যা কিভাবে এই তিনজনের জীবন আমূল বদলে দেয় তারই এক অনবদ্য কাহিনী দেখতে পারা যায় এই মুভিটাতে। তৎকালীন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী সময়ে পারস্পরিক সম্পর্কের টানাপোড়েন পরিচালক নিপুন দক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন। আর কাহিনীর একদম শেষে আছে দারুন এক চমক যা কোনভাবেই আন্দাজ করা যায় না আগে এবং নিঃসন্দেহে স্পর্শ করে তা দর্শকহৃদয়।

আজ সকালে অফিসে আসার পথে রেডিও ফুর্তিতে একটা মেসেজ পাঠিয়েছিলাম। আর.জে. অপুর মর্নিং শো তে। নিজের নাম পরে শুনতে পেরে বেশ অন্যরকম লাগছিল।

সামনের মাসের শুরুতে নেপাল বেড়াতে যাওয়ার একটা সুযোগ আছে। ভাবছি যাব কিনা। কখনো দেশের বাইরে বেড়াতে যাইনি, খুবই যাওয়ার ইচ্ছা আছে। পরিকল্পনা এখনো পুরোটা শেষ হয়নি, দেখা যাক কি হয়।

কিছুদিন আগে রাস্তায় একটা দৃশ্য দেখে খুব ভাল লেগেছিল। ছোট্ট একটা মেয়ে তার ছোট্ট ভাইকে নিয়ে ফুটপাতে আপনমনেই খেলছিল। সিগন্যালে গাড়ি বেশ অনেকক্ষণ থেমে থাকায় দেখছিলাম ওদের কান্ডকলাপ। বেশ লাগছিল দেখতে। চারপাশের কোনদিকেই যেন ওদের কোন খেয়াল নেই। যেন নীরবে অভিযোগ জানিয়ে চলেছে চারপাশের যান্ত্রিক দুনিয়াটাকে।

গ্রামীনফোনের ওই ভদ্রলোকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এখন, দেখা যাক কি হয়। আবোল-তাবোল কথার তো কোন শেষ নেই, পরে আবার না হয় বলা যাবে খানিকটা!

অতন্দ্র প্রহরী


মন্তব্য

অদৃশ্য ভগবান এর ছবি

অ্যাটোনমেন্ট সিনেমাটা আমিও দেখব ...

অতিথি লেখক এর ছবি

সিনেমাটা আপনার খুব ভাল লাগবে বলেই আমার বিশ্বাস। তাড়াতাড়ি দেখে ফেলেন।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- কালকে দেখলাম গোল্ডেন কম্পাস। দেখার পর কেমন লাগলো বুঝলাম না! অ্যাটনমেন্ট দেখার ইচ্ছা রৈলো।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

রায়হান আবীর এর ছবি

গুরু গুরু গোল্ডেন কম্পাসটা আমার কাছে ভালো লেগেছিল বেশ।। এইটার সিকুয়েল হবে।
---------------------------------
এভাবেই কেটে যাক কিছু সময়, যাক না!

স্বপ্নাহত এর ছবি

গ্রামীন নিয়া ভাই যে কি বিপদে আছি।এমনিতেই ছাত্র মানুষ।মাস শেষেই হাজার টাকা ঢালতে বড় কষ্ট লাগে। মন খারাপ

আপনার বর্ণনা পড়ে ছবিটা দেখার খায়েশ হইলো।দেখা যাক কদ্দুর কী করা যায়।

ভালৈয়াছেন তাইলে??

---------------------------
দুঃখ সুখের স্পর্শ নীরে
সাঁতরে বেড়াই;
নিঃসংগ এক,নিঃসংগ মেঘ।

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

চমৎকার পাঁচমিশালী আবোল-তাবোলের বর্ণনা পড়ে একটা উক্তি মনে পড়লো: "ছোট বোনের সাথে প্রেম করে, মেজো বোনকে নিয়ে পালিয়ে বড় বোনকে বিয়ে।" মুভিটা সার্চ দিবো। অনলাইন পাওয়া যায় কিনা দেখি।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

রায়হান আবীর এর ছবি

জীবনটাই আবোল তাবোল।
তয় কথা হইলো গিয়া কথা সেটা না। আইইউটির ছোটভাইদের একটা গ্রামীণের টাকা ভরা মাগনা সিম কবে পাঠাবেন? হাসি
---------------------------------
এভাবেই কেটে যাক কিছু সময়, যাক না!

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

হুমম ।

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ভালাইছেন তাইলে মন খারাপ
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।