বুয়েটে গণিত চর্চা!!

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ২৮/০১/২০০৯ - ১১:৩৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বুয়েটের MATH Dept নিয়ে সবার কম বেশি বাজে অভিজ্ঞতা আছে। আমি যখন বুয়েটে ঢুকি তখন ধরে নিয়েছিলাম একটা বিষয়ে A+ পাবই সেইটা হল MATH. CTতে ভালই মার্কস পাওয়ায় ধরে নিলাম এই বিষয় নিয়ে কম ভাবলেও হবে। তখন আমি নির্জন ভাই-এর কাছে C শিখতাম। উনি বলছিলেন টার্ম ফাইনালে দেখবা MATH-এর মজা!! আমিতো বুঝি নাই কি মজা! যখন টার্ম ফাইনাল আসলো তখন বুঝলাম কি মজার কথা বলছিলেন উনি!! যেই math কোনোদিন করাই নাই এবং বই-এর সবচেয়ে কঠিনতম math যেইটা সমাধান দেখে ৩বার প্রাকটিস না করলে পারা অসম্ভব সেইগুলা আসছে ইয়ে, মানে... তো সে যাত্রা বেঁচে গেলাম B+ পেয়ে। তারপর থেকে শুরু হল math-এর বাঁশ!! জীবনের শেষ math কোর্সে কোনোমতে ল্যাগ ঠেকাইছি D পেয়ে।সেই কোর্সে সব মিলায় ২২ জন ল্যাগ!!

আমার প্রশ্ন হচ্ছে math-এর শিক্ষকরা এইভাবে পড়ায় কেনো? একটা চোথা নিয়ে ক্লাসে অাসবেন তারা। ওটা দেখে সবকিছু করাবেন। Differtial Equation ক্লাসে ম্যাডাম CTতে একটা সমস্যা দিয়ে বলেছিলেন তোমাদেরতো এই অঙ্ক করতে করতে মুখস্হ হয়ে যাওয়ার কথা!! অামার কাছে ভাবতেই অবাক লাগে যে স্কুল কলেজ জীবনে math মুখস্হ করি নাই কিন্তু বুয়েটে এসে করা লাগতেছে!! সিনিয়র যারা ছিলেন তারাও বলেন math মানে মুখস্হ!! কি মজা!! মাঝেমধ্যে ভাবার চেষ্টা করি বুয়েটে math মুখস্হ কি অাজীবন চলতে থাকবে???
-------------
উদ্ভ্রান্ত পথিক



মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

অন্যদের কথা বলতে পারছিনা তবে আপনার কাছে আমার অনুরোধ রইল
যা-ই শেখেন বুঝে শেখেন নয়ত ঔ A+ এর কোন মুল্য থাকবেনা।আমাদেরকে ছোট বেলা থেকে শেখানো হয় বইয়ের সব লেখা গিলে পরীক্ষার হলে বমি করে দিয়ে আসতে ... যে কারণে আমারা পড়ালেখা করে বেহুস হয়ে গেলেও দেশের কাজে আসতে পারছিনা...

ধন্যবাদ আপনার লেখার জন্য...

(জয়িতা)

অতিথি লেখক এর ছবি

হা হা হা হা হা হা.........
পথিক ভাই, কেন হাসছি বুঝছেন নিশ্চয় ?! আমি তো ভাই আবার Math Olympiad ও করছি ! আমিও শুরু করছি B+ দিয়ে ! এখন আর লজ্জা করেনা !! পরীক্ষা চলছে, ১টা পরেই ঐ মহান বিষয়ের পরীক্ষা !! এই সময়ে আপনার এই বিষয়ে পোস্ট !!! খুব ই মজা লাগল দেখে !!! থামেন একটু হাসি ...
হা হা হা হা হা হা.........

(অর্ঘ্য)

অতিথি লেখক এর ছবি

CSE নাকি???
--------------
উদ্ভ্রান্ত পথিক


স্বপ্নাদিষ্ট এর ছবি

অনিক ভাই, আগে ভাগে নির্জন স্যারের সাথে সি শিখা ভালু না দেঁতো হাসি

-স্বপ্নাদিষ্ট
=======================
যে জাতি নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করে না, আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেন না।

পাঠক এর ছবি

হো হো হো গড়াগড়ি দিয়া হাসি

বেনামা এর ছবি

আগে আগে দেশ ছাড়াও ভালো না হে স্বপ্না...

স্বপ্নাদিষ্ট এর ছবি

কে রে ভাই?

-স্বপ্নাদিষ্ট
=======================
যে জাতি নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করে না, আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেন না।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় একটা জিনিস ভালো, তাহলো নিয়ম ঠিক থাকলে রেজাল্ট হোক বা না হোক,কিছু মার্ক্স পাওয়া যায়। কিন্তু বুয়েটের সেমিস্টার পরীক্ষায় অনেক টীচারই এই জিনিসটা ফলো করেন না। Differential equation না কোন একটা সাবজেক্টে যেন একবার A+ এক্সপেক্ট করে বুয়েট জীবনের একমাত্র B পেয়েছিলাম, কোনো এক সুন্দরী ম্যাডাম পড়াতেন। হাসি

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সুমন চৌধুরী এর ছবি

তোমর জীবনের সব চিপাতেই কি কোন না কোন সুন্দরী ম্যাডাম জড়িত?



অজ্ঞাতবাস

রায়হান আবীর এর ছবি

ম্যাথ কোর্স সব শ্যাষ। দেঁতো হাসি

=============================

অতিথি লেখক এর ছবি

আমারও শ্যাষ। দেঁতো হাসি
-------------
উদ্ভ্রান্ত পথিক


সবজান্তা এর ছবি

বুয়েট জীবনে আমার প্রথম ক্লাস ছিলো ইন্টেগ্রাল-ডিফারেনশিয়াল ক্যালকুলাসের। স্যারের নাম ছিলো মামুন মোল্লা। সৌভাগ্যজনক ভাবে স্যার অসম্ভব রকমের ভালো মানুষ ছিলেন, উনার কাছে অংকের উত্তরের চেয়ে প্রসিডিওর বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তাই উনার প্রথম ক্লাসটেস্টে দু'টোর একটা অংকও উত্তর না মেলাতে পারলেও শুধু নিয়ম ঠিক করে শেষ অবধি গিয়েছি বলে আঠারো পেয়েছিলাম।

তবে এর বাইরে বুয়েটের ম্যাথ ডিপার্টমেন্টের অবস্থা বেশি ভালো না। আমাদের পারশিয়াল ডিফারেনশিয়াল ইকুয়েশন পড়াতেন বয়স্ক এক স্যার। উনি ক্লাসে অত্যন্ত প্রগতিশীলতার ভেক ধরে থাকতেন, বলতেন ক্লাসটেস্ট হবে ওপেন বুক। ক্লাসটেস্টে এমন এক বিশাল অংক দিলেন যে ওপেন বুকের দিকে তাকাতে গেলেই যে কারো অংক ভুল হবে, খাতার থেকে চোখ তোলাই দায় হল। যাই হোক, আমরা ভাবলাম এই রসিকতা শুধু ক্লাসটেস্টেই থাকবে। কিন্তু আমাদের সব আশাতে পানি ঢেলে তিনি টার্ম ফাইনালেও এই অংক দিলেন, এবং একটা দিলেন না... এমন তিনটা অংক দিয়ে এক সেট বানিয়ে তারপর দিলেন।

তারপর থেকেই আমি উনার ফ্যান।


অলমিতি বিস্তারেণ

এনকিদু এর ছবি

মামুন মোল্লা স্যার সম্ভবত আমাদের বুয়েটের ইতিহাসে একমাত্র গনিত শিক্ষক যাকে ছাত্ররা আড়ালে গালা-গালি করেনাই । নামে মোল্লা হলেও, লোকটা স্বাভাবিক ছিলেন । এবং আসলেই শিক্ষক হিসেবে বেশ ভাল । উনি যেই কোর্সটা নিয়েছিলেন সেটায় কিছু শিখেছিলাম । গ্রেডের কথা বাদ দে । শিখতে পারাটাই আসল ।

আর তুই যেই পার্শিয়াল ডিফেরেন্সিয়াল স্যারের কথা বললি, আমাদেরও মনে হয় সেই স্যার ছিল । ক্লাসে এসে কোট খুলে চেয়ারে ঝুলিয়ে দিতেন । সোজা করে বাকা করে সোজা করে বাকা করে এই টাইপ ডায়লগ দিতেন ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

এনকিদু এর ছবি

বুয়েটের ম্যাথ শিক্ষা নিয়ে আমাদের কম্পিউটার কৌশলের অন্যতম সেরা ছাত্র নাসা ভাইয়ের একটা গল্প মনে পড়ে গেল । কনটেস্ট টিমস এর ইয়াহু গ্রুপে সম্ভবত এই গল্পটা বলেছিলেন নাসা ভাই ।

প্রথম সেমিস্টারে যথারীতি ম্যাথে খারাপ করার পর পরের সেমিস্টার থেকে নাসা ভাই গুনে গুনে বিশটা 'অংক' শিখে পরীক্ষা দিতে যান আর প্রত্যেক পরীক্ষায় A+ পান ।

একবার ম্যাথ ক্লাসে স্যারকে জিজ্ঞেস করা হল বেছে বেছে বাজে (মাত্রাতিরিক্ত কঠিন) প্রশ্ন গুলোই কেন পরীক্ষায় করা হয় ? স্যার বললেন ভাল ছাত্ররা যেন পারে সেই জন্য । দ্বীতিয় প্রশ্ন ছিল, কিন্তু প্রতি বছর ঘুরেফিরে একই প্রশ্ন করা হয় কেন ? স্যার বললেন, যেন খারাপ ছাত্ররাও পাস করতে পারে ।

এরপর নাসা ভাইয়ের প্রশ্ন ছিল, মাঝারি ছাত্রদের কি হবে ? যারা গনিত বুঝে কিন্তু এই বিশ্রী সমস্যা গুলো সমাধান করতে পারেনা খুব একটা ।

উত্তরে, কবি নীরব ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

রাগিব এর ছবি

এইচএসসি পর্যায় পর্যন্ত গণিত খুব ভালো লাগতো ... কলেজে ওঠার আগেই উপরের ক্লাসের বইয়ের ক্যালকুলাস পড়ে ফেলেছিলাম এক সময়। কিন্তু যতটুকু অংক পারতাম, বুয়েটের গণিত কোর্সগুলো করার ফলে মাথা থেকে সব গায়েব হয়ে গেছে। ফুরিয়ার ট্রান্সফর্ম কেনো করেছি, করার সময়ে কিছুই বুঝিনি, বোঝানোও হয়নি। (মালেক স্যার নিয়েছিলেন ক্লাস, আমরা সবাই চোথার দ্বারস্ত হয়েছিলাম)। কেনো একটা অংক করছি সেটা না জেনে করার ফলটা এটাই ... অংকের প্রতি বিতৃষ্ণা জন্মে যায়।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

অতিথি লেখক এর ছবি

ফুরিয়ার ট্রান্সফর্ম না পড়েই টার্ম ফাইনাল দেওয়া হইছিলো। অাজ অবধি শেখা হয় নাই!!
---------------------------
উদ্ভ্রান্ত পথিক


সবজান্তা এর ছবি

ভাই মনে হয় সিগন্যাল প্রসেসিং কিংবা ইলেক্ট্রিক্যাল/ইলেক্ট্রনিকসের লাইনে ছিলেন না।

আমাদের জীবন কয়লা করে ফুরিয়ার শিখতে হল ডি এস পি পড়ার সময়।


অলমিতি বিস্তারেণ

রায়হান আবীর এর ছবি

ইয়া মাবুদ, এইবার ডিএসপি, আর কন্ট্রোল সিস্টেম।

=============================

সবজান্তা এর ছবি

অল আই ক্যান সে, পলিথিন বান্ধো ম্যান দেঁতো হাসি


অলমিতি বিস্তারেণ

রায়হান আবীর এর ছবি

লোহা দিয়ে ব্যরিকেড বানাইলে কেমন হয়? শয়তানী হাসি

=============================

Sabih omar এর ছবি

কোন আশা নাই, বায়তুল মোকাররমের খতিবের কাছে গিয়া তওবা করে আসো এইবেলা।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই মনে হয় সিগন্যাল প্রসেসিং কিংবা ইলেক্ট্রিক্যাল/ইলেক্ট্রনিকসের লাইনে ছিলেন না।

ভাইয়া ফুরিয়ার এই টার্মেও অাছে ডাটা কমিউনিকেশনে!!! কিন্তু যেই স্যার পড়ান তিনিও বিশিষ্ট চোথাবাজ (যদিও ইনি CSEএর লোক!!) তবে ভালো দিক একটাই যা পড়ায় তাই দেয়। নিজে কম পারেতো চোখ টিপি
-------------
উদ্ভ্রান্ত পথিক


FunnyGiyani এর ছবি

এইখানে একটা সুচিন্তিত বক্তব্য পেশ করি .. বিভিন্ন বিন্যাসের(transform) একটা গাণিতিক উদেশ্য হলো তথ্যের শৃঙ্খলা(entropy) বাড়ানো ...

রেনেট এর ছবি

ভাগ্য ভালো বুয়েটে চান্স পাই নাই দেঁতো হাসি
---------------------------------------------------------------------------
If your father is a poor man, it's not your fault ; but If your father-in-Law is a poor man, it's definitely your fault.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

এনকিদু এর ছবি

আপনি হয়ত কৌতুক করে বলেছেন কথাটা । কিন্তু যদি আমাদের মত এইসব অভিজ্ঞতা আপনার থাকত তাইলে এই লাইনটাই ভিন্ন সুরে গাইতেন । আপনার উপর মা-বাবার অনেক আশীর্বাদ আর স্রষ্টার বিশেষ অনুগ্রহ আছেরে ভাই, বুয়েটে পড়া লাগে নাই ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

অমিত আহমেদ এর ছবি

তুমুল স্মৃতিচারণ চলছে মনে হয়।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

স্পর্শ এর ছবি

কমপ্লেক্স ভেরিয়েবল এর মত অসাধারণ একটা সাবজেক্ট মনে হত আরবী ক্লাসের মত। এক ম্যাডাম এসে তুমুল গতিতে বোর্ডে লেখা স্টার্ট করতেন। ক্লাসের সব চেয়ে ঝানু ক্লাসনোট তুলনেওয়ালাও তার সাথে তাল রাখতে পারত না।
এই হল কমপ্লেক্স ভেরিয়েবল ক্লাস।

বুয়েটে ম্যাথ যা কিছু শিখেছি নিজে নিজে। নাইলে ডিস্ক্রিট ম্যাথ, কনক্রিট ম্যাথ ক্লাসে।

ডিফারিয়েন্সিয়াল ইকুয়েশনের সিরিজ সলুশন নামের একটা সাবজেক্ট ছিল। একটা সাদামাটা ইকুয়েশন কে সমাধান করে ভয়াবহ বিশ্রী দেখতে(আসলে সুন্দর বুঝতামনা তাই বিশ্রী) সমাধানে নিয়ে যাওয়া লাগত। বেসেল ফাংশন কি কাজে লাগে সে উত্তর পাইনি। তখন উইকিপিডিয়া ও এত উন্নত ছিলনা।

তবে এখনকার স্টুডেন্টদের সুবিধা আছে। উইকিপিডিয়ার সাহায্যনিতে পারে তারা। তাহলে অন্তত ফুরিয়ার, ল্যাপলাস ট্রান্স্রর্ম কি কাজে লাগে সেটা জেনে নিতে পারে।
....................................................................................
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

টোকাই এর ছবি

হিজাব পরা ম্যাডামটা নাকি??
আমাদেরও ছিল..... উনার হাতের নোট দেখে দেখে বোর্ডে তুলাটা শিল্পের পর্যায়ে ফেলা যায়। আমি মুগ্ধ হয়ে খালি তাকায় থাকতাম..... নোট আর কিছু তোলা হয় নাই।
ফলাফলঃ C- বা এই টাইপ কিছু একটা !!
দেঁতো হাসি :D

ইমরুল কায়েস এর ছবি

১। ওয়ান ওয়ানে থাকতে পার্শিয়াল ডিফারেন্সিয়ালের চ্যাপ্টারের সবচেয়ে বড় আর কঠিন অংকটা মুখস্ত করছিলাম । জানতাম আসবে আর বুঝে বুঝে করার চেয়ে মুখস্ত দিলে তিনভাগের একভাগ সময়ে দেয়া যাবে । অংকটা আসছিল আর ঐ কোর্সে গ্রেডও ভাল পাইছিলাম ।

২। টু-টু তে একটা ম্যাথ ছিল কমপ্লেক্স ম্যাথ । খাইষ্টা এক ম্যাডাম পড়াইত । ক্লাসে এসে এক ব্লাকবোর্ডের এক পাশ থেকে শুরু করে অন্যপাশ পর্যন্ত লিখত , পুরোক্লাসেই এরকম চলত । ক্লাসনোট তোলারই টাইম পাওয়া যাইত না । ক্লাসটেষ্টে দিত এমন সব অংক যেগুলো রেফারেন্স বইয়ের কোনটার কোন অংকের সাথেই মিলত না । পি,এল নীলক্ষেতে গিয়ে কমপ্লেক্স ম্যাথের নানান বই খুঁজছিলাম । দেখি ক্লাসটেষ্টের সব প্রশ্নগুলো একটা বাংলা বই থেকে দেওয়া । বইটা কিনে এনে অন্য রেফারেন্স বইগুলোর সাথে কোপায়া পড়াশুনা করে পরীক্ষা হলে গিয়ে দেখি সবগুলা অংকই আনকমন,এই নিয়মের কোন অংকই আগে করিনি । হয়ত ম্যাডাম নতুন কোন বইয়ের খোঁজ পেয়েছেন ! অংক করিতেছিলাম আর মনে মনে হাসতেছিলাম , কারন জানতাম এগুলো একটা হচ্ছে না । সেবার কমপ্লেক্স এর সাথে পরিসংখ্যান ছিল বলে ভরসা। গ্রেড খুব একটা ফল করেনি ।

এই হল বুয়েটে গণিতের অবস্থা ।
......................................................
কোকিলের ঘরে কাক হয়ে বাঁচি

সবজান্তা এর ছবি

কমপ্লেক্স ভ্যারিয়েবল আমাদের পড়াতেন এক স্যার। উনি কশি'র নামকে উচ্চারণ করতেন "কুশি" বলে, সেই থেকে উনার নাম কুশি দেঁতো হাসি

তা সেই স্যার এমনিতে খুব শান্ত, চুপচাপ। সুন্দর হাতের লেখায় ধীরে ধীরে পুরো বোর্ড জুড়ে লিখেন - আমরা কিছু বুঝি না তো কী, তুলতে তো পারি ! এদিকে ক্লাসটেস্টে উনার দেওয়া শমস সিরিজের বই থেকে অংক করে মিলাতে পারি না। হঠাৎই এর মধ্যে এক ছেলে আবিষ্কার করলো, স্যার আসলে অন্য একটা বই থেকে হুবহু অংক তুলে দেন। এরপর থেকে কমপ্লেক্সে আর সমস্যা নেই। কিন্তু এই সাবজেক্টের লেজ ছিলো ভেক্টর এনালাইসিস - যেই স্যার নিতেন উনি নিঃসন্দেহে পৃথিবীর বিরক্তিকর মানুষগুলির মধ্যে একজন। একদমই বোঝাতে পারতেন না ( কিংবা হয়তো আমাদের অনেকেরই মেধা কম, তাই বুঝতাম না )। এর ফলশ্রুতিতে টার্ম ফাইনালে ভয়াবহ ধরা খেলাম এই সাবজেক্টে। ক্লাস টেস্টে ষাটে ষাট নিয়ে গিয়ে, কমপ্লেক্সের পার্টে ১০৫ এ ১০৫ ( এ'টা নিশ্চিত কারণ এবারও অংক দিয়েছিলেন সেই বই থেকে, প্রতিটা অংক আমাদের অনেকবার করা, সবার উত্তর মিলেছে বইয়ের সাথে) নিয়েও, সারফেস ইন্টেগ্র্যালের প্যাঁচে পরে, এ মাইনাস পেলাম।

সে জীবনের বড় করুন কাহিনী চোখ টিপি


অলমিতি বিস্তারেণ

শামীম এর ছবি

ইশ্ পুরা আমার মনে কথাটা পোস্টে এসেছে।

বুয়েটের ম্যাথ ডিপার্টমেন্টের কথা মনে আসলেই প্রথমে কয়েকটা গালি চলে আসে। এরা দাড়ি কমার জন্য নাম্বার কাটতো। মাঝে মাঝে মনে সন্দেহ দানা বাঁধতো যে কোর্সের উদ্দেশ্য দাড়ি, কমা ইত্যাদি ঠিকমত দিতে পারা শেখা না সমস্যা সমাধান করা শেখা!!

আর, যেটা আমারও ঘটেছে: চ্যাপ্টারের ৩৩টা অংকের মধ্যে ৩২টা চোখা ছাড়াই সলভ করতে পেরেছি; ৩৩ নংটার পেছনে ২দিন মোট ১২-১৩ ঘন্টা ব্যয় করেও সমাধান করতে পারি নাই। তারপর চোথা দেখে বোঝা গেল এটার জন্য এমন একটা সাবস্টিটিউট ধরতে হয় যেটা কারও উর্বর মস্তিষ্কে আসবে না। ভাবলাম যে সাবস্টিটিউট মুখস্থ করতে বুয়েটে পড়তে আসি নাই ... ... তাই বাদ।

কিন্তু দেখা গেল সেইটাই পরীক্ষায় দিল। এখনও ভাবি, ঐ কোর্সগুলোর উদ্দেশ্যটা কী ছিল!!!!! যত্তোসব ... ... ...

(নিজেও মাস্টারি করি)
=============
একজন প্রকৌশলী আর একজন ম্যাথমেটিশিয়ানের গল্পটাই যা সান্তনা:

দুইজনকে একটা ঘরের এক প্রান্তে দাঁড় করিয়ে বলা হল ঐপাশের দেয়ালের সামনে একটা দাগ পর্যন্ত যেই দূরত্ব বাকী আছে ৫ মিনিট পর পর প্রতিবার সেই অবশিষ্ট দূরত্বের অর্ধেক অতিক্রম করতে পারবে। দাগের ঐ পাশে বিরাট পুরষ্কার (হট ললনা)।

১০ মিনিট পর ঐখানে গিয়ে দেখা গেল ইঞ্জিনিয়ার ইতিমধ্যেই কক্ষের ৩ চতুর্থাংশ দূরত্ব পার হয়েছে। আর অংকবিদ মুখ গোমড়া করে স্টার্ট লাইনেই দাঁড়িয়ে আছে। কারণ জিজ্ঞাসা করতেই বললো যে, কোন কালেই ঐ প্রান্তে পৌঁছানো সম্ভব না। শুধু শুধু কষ্ট করে আগানোর অর্থহীন। মন খারাপ
তাহলে প্রকৌশলী বাবাজি কেন আগাইলেন? ---- জানি এটা থিওরীটিকালি অসীম সময়ের ব্যাপার কিন্তু প্র্যাকটিকালি আর কয়েক ধাপেই আমি পুরষ্কারের সাথে অর্থপূর্ণ কোন কাজ করার মত দূরত্বে চলে আসবো। চোখ টিপি খাইছে

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

এনকিদু এর ছবি

কমপ্লেক্স ভ্যারিয়েবলের ঐ ম্যাডামকে আমরা বলতাম " মিস বাংলাদেশ ইন দি ইয়ার নাইনটিন সিক্সটি নাইন " ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

Rayhan Khan এর ছবি

আরো হতাশা মন খারাপ :(

ওয়ান ওয়ানে ম্যাথ টার্ম ফাইনালের আগের দিকে এতোটাই হতাশ হয়ে গেসিলাম যে পরীক্ষার আগের রাতেও বসে বসে নোট লিখসি,ফিফা খেলসি। ম্যাথ মুখস্ত করা আমার দ্বারা হবে না মন খারাপ

স্বপ্নাদিষ্ট এর ছবি

ম্যাথ মুখস্ত করা আমার দ্বারা হবে না

চলুক

-স্বপ্নাদিষ্ট
=======================
যে জাতি নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করে না, আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেন না।

জনৈক বুয়েট ছাত্র এর ছবি

ওয়ান ওয়ান এর একটা ম্যাথ পরীক্ষায় ৯৬ নম্বর ছেড়ে দিয়েও B পাইসিলাম। আর একটা তিনদিন পড়ে A। এই ম্যাথ ডিপার্টমেন্টকে আমি প্রথমেই চিনে ফেলসি। চাল্লু

বিদ্রোহী-৪৬২ এর ছবি

আসছে সামনে কমপ্লেক্স আর পরিসংখ্যান ................ আশীর্বাদ চাই সবার কাছে

হাহাহিহি এর ছবি

হাহাহাহা... আমি ম্যাথ অলিম্পিয়াড করেছি... ২ বার রানার আপ, ১ বার চ্যাম্পিওন... চোখ টিপি কিন্তু বুয়েটে আসার পর এখন পর্যন্ত ৩টা ম্যাথ কোর্সে B+, A-, B পাইছি... খাইছে এই টার্মেও আছে, এখন পর্যন্ত অন্ধকারই দেখতেছি ইয়ে, মানে...

রক্ষণশীল-বিপ্লবী এর ছবি

ভাই, আমিও এককালে ম্যাথ অলিম্পিয়াডে গুতাগুতি করছিলাম। সেও ম্যাথ ছিলো, আর বুয়েটেও ম্যাথ পড়ায়... হায়রে...

কালো কাক এর ছবি

ম্যাথ কোর্স ড্রপ করতে চাইসিলাম প্রথম টার্মে । মন খারাপ
সবগুলো ম্যাথ কোর্সের মাঝে সবচেয়ে কঠিন লেগেছিলো ল্যাপ্লাস। আর সেই কোর্সে আমি এ+ , কারণ মহান শিক্ষক। ক্লাসে কয়েকটা প্রব্লেম করে দিতেন, সেগুলোই ক্লাস টেস্টে , সেগুলোই ফাইনালে দেঁতো হাসি

নুসায়ের এর ছবি

লেভেল ১ / টার্ম ১ এর ম্যাথ এর প্রথম ক্লাশ টেষ্টের খাতা ফেরত দেওয়ার পর দেখি ২০ এ পাইছি ১৪। পাশের পোলাটার সাথে মিলায়া দেখি মেথড, উত্তর সবই এক। অরে দিছে ২০ এ ২০, আমারে ১৪। গেলাম স্যারের কাছে, আমারে কয় তোমার নিয়ম আর উত্তর ঠিক আছে, কিন্তু 'সব লাইন ঠিক মতোন ব্যাখ্যা কইরা লেখ নাই, মাত্র ২ পৃষ্ঠায় কইরা ফেলছ, অর খাতা দেখ, অয় ৪ পৃষ্ঠা লিখছে'।

প্রসংগতঃ উল্লেখ করি, উনি ম্যাথ ডিপার্টমেন্টের সবচেয়ে ভালো শিক্ষক (আমার পাওয়া) ছিলেন। বাকিদের কথা যত কম মনে করা যায় তত ভালো।

হিমু এর ছবি

ম্যাথের ক্লাস টেস্টে মৃদু লৈঙ্গিক বৈষম্যের শিকার ছিলাম আমরা। ছয়+ছয় বারো মার্কের ক্লাস টেস্টে একটার উত্তর দিয়ে আমি পেলাম ছয়, আমার বন্ধু, ধরা যাক তার কাল্পনিক নাম রেজওয়ান, পেলো আট। রেজওয়ান ফল দেখে দৌড়ায় এসে আমাকে বলে, তুই কি অঙ্কটঙ্ক পারস? নেতিবাচক উত্তর পেয়ে সে বললো, অর্ধেক অ্যান্সার করে দুই-তিন মার্ক বেশি পাওয়ার কায়দা জানস? আবারও নেতিবাচক উত্তর পেয়ে সে জানালো, খাতার ওপর সে শুধু রেজওয়ান লিখে হালকা+আবছা+কেবললুলচোখেদ্রষ্টব্য একটা "এ" বসিয়ে সেটাকে রেজওয়ানা বানিয়ে দিয়েছে। ফলাফল, ছয় অ্যান্সার করে আট পাওয়া যায়। তবে সব স্যারের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটে না, জানালো রেজওয়ান। আমাকেও নামের শেষে যথোপযুক্ত স্বরবর্ণ যোগ করে এই প্রপঞ্চের সুফল ভোগ করতে উসকানি দিয়েছিলো হতভাগা। আমি রাজি হইনি। তাকে অশ্লীল ভাষায় বকাবকি করেছিলাম। তখন রেজওয়ানের সুপরামর্শ শুনলে আমার রুগ্ন সিজিপিয়ে এক্টু হলেও বাড়তো।

ল্যাম্বডা এর ছবি

বুয়েটের ম্যাথ ডিপার্টমেন্টে আমি আমার ইনিংস শুরু করছিলাম কমপ্লেক্স ভেরিয়েবেলের ২ টা class test এ ০ পাইয়া(একই দিনে ২ টা ct এর নাম্বার দিসিল)।এই টার্মেও ইনিংস শুরু করসি লিনিয়ার অ্যালজেবরায় ০ পাইয়া। দেখা যাক কি হয়।

guest writer এর ছবি

বুয়েটে আমার দেখা সবচেয়ে জঘন্য ম্যাথস এর শিক্ষক হলেন

জ্বীনের বাদশা চোস্তাফিজ


এই ভদ্রলোক এর দ্বারা নিপীড়িত হয়েছেন বোধহয় সকল ডিপার্টমেন্টের ছাত্র-ছাত্রীই।
ম্যাথস ডিপার্টমেন্টের আরেক কলংক হলেন

রেহানা নাসরিন

স্বপ্নাদিষ্ট এর ছবি

এই ভদ্রলোক এর দ্বারা নিপীড়িত হয়েছেন বোধহয় সকল ডিপার্টমেন্টের ছাত্র-ছাত্রীই।

আমি উনার কমপ্লেক্স কোর্স এ এ+ পাইছিলাম চাল্লু

-স্বপ্নাদিষ্ট
=======================
যে জাতি নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করে না, আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেন না।

পাগলা এর ছবি

1-1 এ মুখস্ত কইরা কমপ্লেক্স অ্যান্ড ভেক্টর অ্যানালাইসিসে A+ পাইসিলাম। বাকি সবগুলাতে গ্রেড টাইনা নামাইসে খালি।
গত টার্মে ODE+PDE তে ক্লাস টেস্টে মার্কস ৫৫ নিয়া গেসিলাম। টার্ম ফাইনালে ফুল আনসার করলাম। গ্রেড আসলো A-।
এইবার লিনিয়ার অ্যালজেব্রাতে আরো জটিল এক স্যার পাইসি। উনি সম্পূর্ণ সঠিক অংক থেকেও পার্শিয়াল মার্কস কেটে রেখে দেন।
এই বুয়েটে এসেই আমি প্রথমবারের মত বুঝতে পারসি ম্যাথ কেবল বোঝার জিনিস না। এখানে মুখস্ত করার মতন অনেক কিছুই আছে।

স্বপ্নাদিষ্ট এর ছবি

গত টার্মে ODE+PDE তে ক্লাস টেস্টে মার্কস ৫৫ নিয়া গেসিলাম।

আমি ৪ ক্রেডিট এর ওডিই-পিডিই তে ৭৮ নিয়া গিয়ে বি+ পাইছিলাম শয়তানী হাসি

-স্বপ্নাদিষ্ট
=======================
যে জাতি নিজের ভাগ্য নিজে পরিবর্তন করে না, আল্লাহ তার ভাগ্য পরিবর্তন করেন না।

Abeer এর ছবি

আমার নেক্সট পরীক্ষা টাই ম্যাথ। হা হা হা। পরীক্ষা দেয়ার শখ মিটে গেছে।

নবীন সূর্য এর ছবি

ফেল করলে করুম , মুখস্ত করতে পারুম না ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।