অবশেষে বিরিয়ানি রেসিপি: পর্ব দুই!

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ৩০/১০/২০১০ - ২:২০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হুম, অনেকেই বুইঝা ফেলছেন, এইটা আসলে ব্লগার হাসিবের অমর পোস্ট "অবশেষে বিরিয়ানি রেসিপি"র সিকুয়েল। সিকুয়েল মুভির যেমন পরিচালক চেঞ্জ হইতে পারে, সেইরকম সিকুয়েল পোস্টেও লেখক চেঞ্জ হইতারে। তবে কপিরাইট নেয়া হয়নাই, তাই আমি কিঞ্চিত চিন্তিত। ঐ লেখার এক ভক্ত মুরীদ হিসাবে আশা করি উনি আমারে ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন দেঁতো হাসি

চলেন বিরিয়ানি রেসিপিতে। গত ১৩ বছর ধইরা এইটারে নিয়া ভালই এক্সপেরিমেন্ট করছি (১০ বছর খালি খায়া গেছি, আর ৩ বছর অনেকবার রানছি আর খাইছি), এখন এইটা, অনেকেই বইলা থাকেন, আমার হাতে বেশ "খোলে"। আপনারাও ট্রাই কইরা দেখতে পারেন, মোটামুটি ফুলপ্রুফ।

আগে ২ টা কথা বইলা নেই। কাচ্চি বিরিয়ানি আর পাক্কি বিরিয়ানির তফাত অনেকেই জানেন---প্রথমটায় কাঁচা মাংস আর চাল একসাথে রান্না হয়, আর ২য় টায় রান্না করা মাংসের সাথে চাল/ভাত দিয়া রান্না করা হয়। আমি কিন্তু সর্বান্তকরণে, মনে-প্রাণে, ধনে-মানে কাচ্চির পক্ষে, সেইটা খাসিই হউক আর চিকেন। কারণ কি? কারণ হইল, কাচ্চির মাংসটা রান্না শেষে যে পরিমাণ রসালো, নরম আর সুস্বাদু থাকে, পাক্কির পক্ষে সেইটা ইমপসিবল। পাক্কির মাংস শুকায়া যায়, চেহারাও হয়া যায় কালো।

২য় কথা বলি। কাচ্চি বিরিয়ানি বানানো কিন্তু আসলে সোজা। হাইসেন না। সোজা, কিন্তু ২ টা কী-পয়েন্ট আছে খেয়াল রাখতে হয়, খেয়াল রাখলেই আপনি জিত্যা গেলেন। ১ম কী পয়েন্ট: চাইল কতদূর সিদ্ধ করবেন। ২য় পয়েন্ট: কী ধরনের হাঁড়ি। এইটা খুব জরুরী, চুলায় করলে তো আরো বেশী। পরে বিস্তারিত বলতেছি।

আসেন আগে চিকেন কাচ্চি বানাই। খুব সোজা। একটা ১০০% লোহা/এলুমিনিয়াম/স্টিলের পাতিল নেন, ফিটিং ঢাকনা সহ। আমরা এইটা ওভেনে বানামু। খেয়াল রাইখেন, হাতল-টাতলে যেন প্লাস্টিক না থাকে। বিদেশে সবার বাড়িতেই ইয়া বড় ওভেন থাকে, সেইটাতে রান্না করলে রান্নাও হবে সুন্দর, পরিশ্রমও কম।

ধাপ ১: ধরেন ১ কেজি একটু বড় টুকরা মুরগী নেন হাড়িতে। ওয়ালমার্টের মুরগী বলেন আর "আ-লা আ-লা" মুরগী বলেন, সবই চলব মানে, দৌড়াইব! এইটাতে দেন দেড় আম্রিকান কাপ ফেটানো দই, এক মুঠ ভাজা পেঁয়াজ (এইটা ইন্ডিয়ান/মিডল ইস্ট দোকানে কিনতে পাওয়া যায়, কিনা নিবেন), ১ প্যাকেট শানের বিরিয়ানী মসলা (সিন্ধী টা বেস্ট, মেমনীটাও দারুণ) (এইটাও ইন্ডিয়ান স্টোরে ), ১ টেবিলচামচ রসুন বাটা (এইটাও শানেরটাই বেস্ট হাসি ) ২ টেবিলচামচ আদা পেস্ট, আধামুঠ ধনে পাতা কুচি, ৬/৭ খান কাঁচামরিচ কুচি করা, আর ধরেন গিয়া ৩ টেবিলচামচ তেল।

এইগুলারে মাখায়ে ফ্রিজে ফেলে রাখেন ১ রাত। মাস্ট না, তবে রাখলে স্বাদ বাড়বে।

২য় ধাপ: বড় পাতিলে চুলায় ১০ কাপ পানি ফুটান। পানি ফুটলে আধা চামচ লবণ, একটুস তেল আর ২/৪টা গরম মশলা ফালায় দেন। ৬ বা ৭ আম্রিকান কাপ পরিমাণ বাসমতি চাল ধুয়া ফুটন্ত পানিতে দেন। দেখবেন পানি ফুটা বন্ধ হয়ে গেছে। আবার একটু পর ফুটতেছে। এখন ক্রিটিক্যাল স্টেপ, পানি আবার ফুটার পর ঘড়ি ধইরা দেড় থিকা ২ মিনিট পর চাল তুইলা পানি ফেলেন। বেশি সিদ্ধ দিলে বিরিয়ানীর চাইল গইলা ঘ্যাঁট হয়া যাইব, তাই সাবধান।

৩য় ধাপ: চিকেনের পাতিলে চাল ঢাইলা দেন। উপরে আরো কিছু পেঁয়াজ ভাজা, ধনে পাতা ছিটান, আর গ্রোসারী থেকে ১ বা ২ ডলারে হলুদ রং (খাওয়ার) কিনবেন। সেইটা ছিটায়ে দেন ১০/১৫ ফোঁটা। ঈমানে বলতেছি, জাফরানের সাথে কোন তফাত পাইবোনা কেউ।

এই হাড়িঁর মুখ বন্ধ করেন, টাইট ফিট না হইলে এক কাজ করেন, এলুমিনিয়াম ফয়েল দিয়া টাইট কইরা ঢাকনা বানান। ১০০% কাজ করবে। এইটারে প্রি-হিটেড ৪০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে ওভেনে দেন। ৫০ মিনিট পর বাইর কইরা ঢাকনা খুইলা খুব তাড়াতাড়ি মাংসটা একটু টেস্ট করেন, আর ১ চামচ কেওড়া ছিটায়া দিয়া ফট কইরা মুখটা বন্ধ করেন। আরো ১০ মিনিট ওভেনে দেন।

সব মিলায়ে আপনার টাইম খরচ হইল (ইন্ডিয়ান স্টোর আপ ডাউন, মাংসমাখা প্লাস চাউল=৫০ মিনিট, আর ওভেনে ১ ঘন্টা)

বাইর কইরা খান, আপনার প্রিয়জনরে খাওয়ান, আর এই বান্দারেও একটু ধন্যবাদ দেন। আর আগের পর্বের লেখক যেমন বইলা গেছেন "পরদিন সকালের জন্য [যেন] কিছু থাকে । বাসি বিরিয়ানির মাজেজাই আলাদা "।

খাসীর কাচ্চি:

আগের মতই, খালি কয়েকটা টা কী-ডিফারেন্স:

১। খাসীর টুকরা খুব বড় কইরেননা, দৈর্ঘ্যে বা প্রস্থে কোনভাবেই যেন আড়াই ইঞ্চি না ছাড়ায়।

২। আদা ২ টেবিল চামচের জায়গায় ৩ টেবিল চামচ দেন।

৩। চাল পানিতে দেওয়ার পর, পানিটা আবার ফুটে ওঠা মাত্রই চাল তুলে ফেলেন, নো ২ মিনিট বিজনেস। কারণ এইটা ওভেনে থাকবে অনেক বেশী ক্ষণ।

৫। মাংসের উপর চাল দেওয়ার পর ১ আম্রিকান কাপ গরম দুধ বা পানি দিবেন। সেইটার স্টীমে চাউল সিদ্ধ হওয়ার জন্য।

৪। ওভেনে টাইম লাগবে পাক্কা দেড় ঘন্টা থেকে পৌনে দুই ঘন্টা। ছোট পিস মাংস হইলে দেড় ঘন্টা, আড়াই ইঞ্চি সাইজ মাংস হইলে ২ ঘন্টা।

বন আপেতি!

কৃতজ্ঞতা:
১। আমাদের সবার খালাম্মা সিদ্দিকা কবীরের বই
২। ভাহশেফ

বি:দ্র: ছবির বিরিয়ানী ১ম পর্ব মতে বানানো, ২ বছর আগে। বিধিমত পাশে এক্সট্রা ঝোলও রাখা হইছে!

--দিফিও


মন্তব্য

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আমার ওভেনে ২৭৫‍‍‌‌ ডিগ্রির বেশী নাই মন খারাপ



অজ্ঞাতবাস

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনে জার্মানীতে না? আপনের ঐটা তাইলে সেলসিয়াস। ২০০/২০৫ ডিগ্রী দিবেন, বিরিয়ানী না হয়া যাইব কই..........

দিফিও

সুমন চৌধুরী এর ছবি
ফাহিম এর ছবি

মাত্রই ইন্ডিয়ান হোটেল থেইকা বিরিয়ানি মাইরা আসলাম। আজকে দেখি চারিদিকে বিরিয়ানির ধুম পরসে...

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

অতিথি লেখক এর ছবি

হুমম, উইকেন্ড এর "আছর" দেঁতো হাসি

হাসিব এর ছবি

আম্রিকান কাপের হিসাব বাদে বাকিটা ঠিকাছে। রান্না হিংসাত্মক ভালো হবার কথা।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি

অতিথি লেখক এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ হাসি

আম্রিকান কাপের হিসাবটা দেওয়ার কারণ হইল আমি প্রথমদিকে বেশ কয়েকবার ধরা খাইছি দেশী কাপ আর [url=http://en.wikipedia.org/wiki/Cup_(unit)]বিদেশী কাপের[/url] হিসাব নিয়া। দেশের কাপ সম্ভবত ২০০ মিলির কম, আর ইউএস কাপ ২৪০ মিলি। অবশ্য বিরিয়ানিতে হয়ত তেমন তফাত করবেনা, পুডিং টাইপ কিছুতে গন্ডগোল হইতে পারে।

---দিফিও

ধুসর গোধূলি এর ছবি

খাড়ান, এইটারেও টেরাই মারুম। মন-মেজাজ ইদানিং মারাত্মক বিলা আছে। আর আমার মন-মেজাজ বিলা থাকলে আমি ভালো-মন্দ খাই, এই কথা নিন্দুকেও জানে।



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

অতিথি লেখক এর ছবি

জানাইবেন কিন্তু কেমন হইল হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

রান্নাতো মনে হইতেছে জটিল হইছে। নাকে গন্ধ পর্যন্ত আয়া পড়ছে। ইয়ে আপনে আম্রিকার কই থাকেন? দেঁতো হাসি

অনন্ত

অতিথি লেখক এর ছবি

আছি আরকি ইস্ট কোস্টে। মাঝামাঝির দিকে আসলে একটা জানান দিয়েন।

--দিফিও

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

বিরিয়ানির পাশে গ্লাসে কী? বোরহানি? ঐটার রেসিপি কই? চিন্তিত
আমি আবার রেসিপি পড়ে কিছু বুঝি না, সাথে স্যাম্পল লাগে! দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অতিথি লেখক এর ছবি

হাঁ বোরহানী, তবে ঐটা নিয়া খুব বেশী রিসার্চ করি নাই। এই দেশে দই এত রকমের, যে কনসিস্টেন্ট রেসিপি ডেভেলপ করা মুশকিল।

আমি এইটা বানাই ঘন দই, "দহি -বড়া-চাট-মশলা" আর কাঁচামরিচ আর লবণ-চিনি আর বরফকুচি ব্লেন্ড করে। খারাপ হয় না।

আর স্যাম্পলের জন্য, ইস্ট কোস্টের মাঝামাঝি এসে একটা জানা দিয়েন দেঁতো হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অতিথি লেখক এর ছবি

যা যা লাগবো লেইখা নিয়া বাজারে যাইতাছি। দেঁতো হাসি
আজকা রান্না কইরা বন্ধুগো তাক লাগাইয়া দিমু! B)

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাগো জন্যই এইটা লেখা। কিরকম হইল জানায়েন।

তুলিরেখা এর ছবি

আপনার কাছে কৃতজ্ঞ।
আমি হেন শর্টকাট রান্নার লোকও আজ রাতে এই চিকেনকাচ্চিবিরিয়ানিটা করার চেষ্টায় লাগবো। কিছু কিছু জিনিস হয়তো লাগাইতে পারবো না, কিন্তু মেইন মেইন পয়েন্টগুলান ঠিকই কভার করবো।
এমন টু দ্য পয়েন্ট রেসিপি আগে পাই নাই, তাই আগে কোনোদিন এ জিনিস রাঁধি নাই। লোকে খাওয়াইলে খাইয়া তাব্ধা খাইয়া রইছি। হাসি
এই পরথম, দেখি কেমন হয়। হাসি
-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ!

লেখা পইড়া বানাইতে উৎসাহী হইছেন শুইনা ভাল লাগল হাসি ফিডব্যাক পাইলে খুশী হমু!

---দিফিও

তারাপ কোয়াস এর ছবি

এই বিরিয়ানী বানানোর একটা মেশিন বাইর হইলে যব্বর হইতো। একদিকে চাইল মাংস মসলা দিমু, অন্যদিকে বিরিয়ানী রেডি হইয়া থাকবো! আফসুস এই ধরনের ভালো আইডিয়ার ভাত নাই। তাই মেশিন না বাইর হওয়া পর্যন্ত আপানার রেসিপিটাই ট্রাই করতে হইবো!! চলুক


love the life you live. live the life you love.

অতিথি লেখক এর ছবি

হাহাহা, মেশিনের আইডিয়া দারুণ!

তবে সত্য কথা হইল, এই জিনিস যদি প্রচুর লোকে প্রায় সময়ই বানাইত, তাইলে মেশিনের কথা কেউ না কেউ চিন্তা করত। যেমন ধরেন গিয়া ব্রেড মেশিন, এইটায় আপনে খালি ময়দা/দুধ/চিনি/লবণ/ঈস্ট ঢাইলা সুইচ চাপবেন, ৩ ঘন্টা পর চমৎকার ব্রেড হাজির। নো মাখানি নো খাটনি। আমি এই মেশিনটা উত্তরাধিকার সূত্রে পাইছি দেঁতো হাসি

---দিফিও

কৌস্তুভ এর ছবি

রেসিপি তথা লেখা ভালা হইসে। মুশকিল, আমার অমন হাঁড়ি নাইকো। সে যা হোক। হাসি

ওই লেখাটায় হাসিব্বাই বলেছেন, ঘি বাদ দিয়ে "ফাকিবাজির রান্নার চিন্তা থাকলে বিরিয়ানি খাবার চিন্তাই বাদ দেয়া উচিত।" আপনার রেসিপিতে ঘি নাই যে বড়? খাইছে

অতিথি লেখক এর ছবি

সসপ্যান টাইপের একটা হাঁড়ি একটা কিনে ফেলেন, কাজে লাগবে আরো অনেক জায়গায়।

২টা পোস্টই মনোযোগ দিয়া পড়ার জন্য ফুলমার্কস! হাসি ঘি নিয়া আমার থিয়োরী হইল---এইটা তখনই সবচেয়ে ভাল "ফোটে" যখন বাকি জিনিসগুলো খুব বেশী মশলাদার না হয়। যেমন প্লেন নরম খিচুড়িতে ঘি পুরা অমৃত! কিন্তু মাংসের দারুণ-কষা-ভুনা কারিতে ঘি খুব একটা খুলবেনা। ঠিক তেমনি, লাড্ডুতে এইটা আবার দারুণ।

আমার বিরিয়ানির যে রেসিপি, সেইটা খুবই মশলাদার, থ্যাংকস টু প্যাকেট মশলা। এইখানে ঘি খুব একটা কাজে দিবেনা। কিন্তু আপনে যদি ফখরুদ্দীনের খাসীর কাচ্চি বা বাংলাদেশী বিয়েবাড়ির কাচ্চি বানাইতে যান, (এইগুলা বেশ হালকা মশলার) তাইলে ঘি ফরজ।

এইটা অবশ্য আমার ব্যাক্তিগত মতামত হাসি

---দিফিও

হাসিব এর ছবি

আমার রেসিপিতে পোলাও আলাদ বানানো লাগে। ঐক্ষেত্রে ঘি ভালো গন্ধ যোগ করে। তাছাড়া আপনার রেসিপিতে পানি ফালায় দেবার একটা ব্যাপার আছে। ঐটা করলে ঘি সব পানির সাথে চলে যাবে।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি

অতিথি লেখক এর ছবি

একমত।

--দিফিও

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আমরা কয়েকজন কোথাও চা খেতে গেলে আলাদা বাটিতে করে চিনি দিতে হতো মামাদের। নতুন কেউ সেটা দেখে আশ্চর্য হয়ে প্রশ্ন করলে জবাব মিলতো, "আরে ভাই, এক কাপ তো খাইই একটু চিনি খাবো বলে!"

বিরিয়ানিতে যদি ঘি-ই দেয়া না হবে তাইলে বিরিয়ানি আর পান্তাভাতের মধ্যে পার্থক্য কী?

আমি তো শুটকির ভর্তাতেও পারলে ঘি মেরে খাই। একটু ঘি খাবো বৈলাই তো ভালোমন্দ খাই, নাকি!



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

অতিথি লেখক এর ছবি

হাসি জয়তু ঘি দেঁতো হাসি

আপনেগো লিগা রেসিপি আপডেট করতেছি---মুর্গায় ৩ চামচ তেলের বদলে আধা কাপ বা পৌনে এক কাপ ঘি দিয়া তারপর করেন। ঘি চপচপা না হয়া যাইব কই!

ফালায় দিলেন মুশকিলে, ঘি-বন্দনা দেইখা আমার তো আজকেই আবার ঘি দিয়া বানাইতে ইচ্ছা করতেছে.......

---দিফিও

ধুসর গোধূলি এর ছবি

কালকে রাতে কী করছি বলি আপনারে। আমার ঘরে তো চুলা জ্বলে বছরে দুই তিনবার। তো ঠিক করবার, পেটের আগুন নেভাতে চুলায় আগুন দেয়া ছাড়া গতি নাই। মিটবল আছে। সেগুলো রান্না করার ধান্ধা। কিন্তু কিচেনের কাবার্ড খুলে দেখলাম তেলের বোতলের হদিস নাই। অর্থাৎ তেল যে কবে তেলহীন হয়ে গেছে, সেই খেয়ালই নাই। কিন্তু পরাজয়ে তো বীর ডরে না। ফ্রিজ থেকে ঘি এর ডিব্বা জিন্দাবাদ, মিছিল দিতে দিতে নিয়ে বেশ খানিক ঘি ঢেলে তাতে আগে মিটবলগুলো ভাজলাম, তারপর আরেকটা পাত্রে আরও বেশি পরিমান ঘি দিয়ে পেয়াজ কসানো শুরু করলাম। তারপর জম্পেশ মশলা দিয়ে মিটবল রানলাম। কী রানলাম জানি না, কিন্তু খাইতে যা হৈছে না, কী আর কমু!

খাড়ান, ভাত খাইয়া আসি। দেঁতো হাসি



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

অতিথি লেখক এর ছবি

ঘি জিনিসটা আসলেই যারে বলে একেবারে লাইফ-সেভার হাসি

তুলিরেখা এর ছবি

যদ্দূর সম্ভব বিশ্বস্তভাবে অনুসরণ কইরা (কিছু কিছু নিরুপায় হইয়া বদলাইছি, কাঁচামরিচের বদলে হ্যালোপিনো কুচি, দইয়ের জায়গায় সাওয়ার ক্রীম এইসব মাইনর মডিফিকেশন আরকি) প্রায় সব পয়েন্ট কভার কইরা বানাইয়া ফেলছি বিরিয়ানি। তারপরে খাইয়া তাব্ধা হইয়া রইছি। পরেরদিন বাসি বিরিয়ানির স্বাদ আরো খুলছিলো। সমস্ত ক্রেডিট দিফিওর পাওনা।

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

আহা বড় আনন্দ লাগল! আর দইয়ের বদলে সাওয়ার ক্রিম শুইনা আমিও তব্দা খাইলাম!! পরে ভাইবা দেখলাম, দই যেমন আমাদের দেশী রান্নায় ঝোলের "ভলিউম" বাড়াইতে আর ঝোলরে "রিচ" করতে ব্যবহার হয়, সাওয়ার ক্রিমও এইখানে ঝোল বাড়ানোর কাজে লাগাইতে দেখছি (চিলি কন কার্নে)।

আপনার বদৌলতে নতুন একটা জিনিস শিখলাম, ট্রাই করতে হবে পরেরবার হাসি

--দিফিও

স্পর্শ এর ছবি

দারুন! চলুক
কিন্তু খাসির বোটকা গন্ধটা কাটবে তো? চিন্তিত
মুরগীরটা ট্রাই দেব ভাবছি।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অতিথি লেখক এর ছবি

থেংকু!

আমি খাসীরটা করার পর গন্ধ পাই নাই, কারণ ত্রিবিধ:

১। আদা বেশী দেওয়া
২। অনেকক্ষণ ম্যারিনেশন (১ রাত)
৩। খাসীর মাংস আগে গরম পানিতে কচলে কচলে বেশ কয়েকবার ধুয়ে নেয়া।

আমি পয়সা বাঁচানোর জন্য মাঝে মধ্যে চিকেনের লেগপিস কিনি, ইয়া বড় বড়, মুরগীর গন্ধ তাতে প্রবল। সেই গন্ধ পর্যন্ত এ বিরিয়ানীতে দূর হয়ে যায়, তাই আপনি খাসীরটা করলেও গন্ধ পাবেননা আশা করি।

--দিফিও

মূলত পাঠক এর ছবি

রেসিপি পড়েই লালেঝোলে এক হলাম। যেইটা সবচেয়ে ভাল্লাগ্লো তা হলো পরিমাণ আর সময়ের মাপ দেওয়াটা। দেশি রান্নার রেসিপিতে প্রায়শই আন্দাজমতো/পরিমাণমতো/মাংসটা ভালো করে সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রাঁধুন, এই সব ফাঁকিবাজি থাকে। সেই দোষ থেকে আপনার রেসিপি সম্পূর্ণ মুক্ত।

যাক, মনে হয় স্যাম্পল টেস্ট করতে যেতে হবে আপনার দিকে একবার।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ ! হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

সদ্য বানাইলাম। দেবদুর্লভ হয়েছিল বলব না, নিজের বানানো আর কতই বা ভাল হবে, কিন্তু খেতে মন্দ হয় নি। আমি করেছিলাম আপনার অর্ধেক পরিমাণ দিয়ে, মানুষ অল্প বলে, তাতেও অনেকটাই হয়েছে, বাসি থাকবে বইকি।

আমার অবজার্ভেশনগুলো:
১. আমি নুন অন্যদের থেকে বেশি খাই না, কিন্তু এইটায় নুন কমই হয়েছিল। পরে দিতে হল।

২. ঝাল বেশি খেতে পারি না; এইটায় প্রায় ফায়ার ব্রিগেড টাইপ অবস্থা। পরের বার থেকে লঙ্কা কম দেব।

৩. এখানে যে দইটা কিনি সেটা 'লো-ফ্যাট প্লেন ইয়োগার্ট'। টক খুবই কম। তবে সেইটা ব্যাপার না, দই ছাড়াও বানিয়ে দেখেছি, মশলাগুলোয় যে খানিকটা তেঁতুল দেওয়া থাকে সেইটা বেশ অপছন্দ লাগে আমার। ম্যারিনেটে অবশ্যই লেবু/দই দিই, কিন্তু বিরিয়ানির সঙ্গে যেন তেঁতুল একেবারেই চলে না আমার মতে। বাড়িতে মা করতেন নিজে জায়ফল-জয়িত্রী এসব মশলা বেটে, সেখানে তেঁতুলের কোনো গল্প ছিল না।
সবচেয়ে খারাপ খেয়েছিলাম একটা 'মালয় বিরিয়ানি মশলা' - গুচ্ছের তেঁতুল আর কারিপাতা সেটায়, বিশ্রী লেগেছিল। যা হোক, এখানে প্যাকেটের মশলা যখন তেঁতুল ছাড়া মিলবে না তখন কি আর করা।

৪. বাড়িতে চালটা আধসেদ্ধ করে তুলে নেবার পর ঘি মাখিয়ে কিছুক্ষণ রাখা হত। সেইটা আপনি একেবারেই বাদ দিয়ে গেছেন, ফলে রান্নাটা অনেক 'স্লিম হয়েছে', খেতেও এমন কিছু খারাপ হয় নি। এটা ঠিক বলেছেন, বাড়িতে কম মশলা দিয়ে করত বলে গন্ধটা খুলত ঘিয়ের। তবে কি, বাঙালির খাওয়াদাওয়ার পর একটু আঙুল দিয়ে ঘি গড়িয়ে পড়লে তবেই 'হ, খাইসি' ভাবটা আসে। হাসি

এ কথা ঠিক, পাক্কি অনেকবার করেছি, এইটা তার চেয়ে বহুগুণে ভাল হয়েছে। মাংস অনেক নরম ছিল।

যাক, ব্রাহ্মণপুঙ্গব বিদেশে বসে নিজেহাতে রামপাখিলিপ্ত কাচ্চি বিরিয়ানি বানাচ্ছে, এইটাই বা কম কি! একটা বড়সড় ধন্যবাদ আপনাকে। দেঁতো হাসি

হাসিব এর ছবি

রামপাখি অর্থ কী?
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি

কৌস্তুভ এর ছবি

মুর্গ, জনাব।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

দেঁতো হাসি দেঁতো হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আহা এই ধরনের একটা ফিডব্যাক পেলে পোস্ট লেখাটা সার্থক মনে হয়! রেসিপিটা ট্রাই করার জন্য প্রথমেই একগাদা থেংকু। এবার চলেন আপনার পয়েন্টগুলায়

১। লবণটা আসলে বাদ দিয়ে গেছিলাম শান মশলায় লবণের উপস্থিতির কথা মাথায় রেখে। হাসিব ভাইয়ের ঐ পোস্টেই প্রথম জেনেছিলাম এটার কথা, তারপর আর সাধাণত বাড়তি লবণ যোগ করতামনা। তবে চাল সিদ্ধের সময় লবণ আধা চামচ-টা কম, এখন মনে হচ্ছে।

২। ঝালের জন্য দুঃখিত দেঁতো হাসি কাঁচামরিচ-টাকে অপশনাল করা দরকার মনে হয়।

৩। আমিও হাতের কাছে "লো ফ্যাট প্লেইন ইয়োগার্ট" টাই পাই, সারা আমেরিকার গ্রোসারিতেই মনে হয় এটাই পাওয়া যায়। একমত, এইটায় টক নাই একটুও। তবে, "সেইরকম" মেজাজে থাকলে, আমি মিডল ইস্টের দোকান থেকে দেড় গুণ দাম দিয়ে গ্রিক দই কিনি, "লাইভ কালচার" সহ, সেটা অনেক ঘন, আর টক। তবে দই এর প্রকারভেদে খুব মোটাদাগের তফাত হবে না মনে হয়।

আর তেঁতুলের কথা বললেন, আমি কিন্তু সাধারণত তেঁতুল দেখিনাই বিরিয়ানী মশলায়। আপনি আলু-বোখারার বা ড্রাইড প্লাম এর কথা বলছেন নাতো? এইটা দেশের বিয়েবাড়িতে আজকাল খুব চলে, গত ১০/১৫ বছরে মনে হয় এটার জনপ্রিয়তা আরো বেড়েছে। শানের সিন্ধি বিরিয়ানি মিক্সে এটা আছে।

৪।হুম, ঘি টা এখন বড় ভাবাচ্ছে, এটাকে বিরিয়ানিতে ঢোকানোর উপায় নিয়ে ভাবছি। ঘি চপচপে আঙুলের কথা শুনে মনটা বড় উতলা।

একটা খুব স হজ উপায় হতে পারে- মুরগি মিক্সে ৩ চামচ তেলের বদলে আধা কাপ-পৌনে এক কাপ ঘি দেয়া। করে দেখেছি, বেশ একটা ঘি চপচপে ভাব এসেছে।

তবে, যাকে বলে "আসলি তারিকা", সেটা একটা দারুণ জিনিস। এইটা বাসায় করা প্রায় অসম্ভব, তবে শুনতেও মজা:

বিরিয়ানি দমে বসানোর আগে, এক টুকরা কাঠ কয়লা আগুনে গনগনে লাল করে, সেটাকে একটা অর্ধেক-ঘি-ভর্তি ছোট বাটিতে ডোবাতে হবে। খুব তাড়াতাড়ি এই কয়লা সহ বাটিকে বিরিয়ানির হাঁড়িতে ঢুকিয়ে ঢাকনা দিতে হবে ২০ মিনিটের জন্য। ততক্ষণে কাঠকয়লার ধোয়াঁ ২ টা কাজ করবে, ঘি আর ঘি এর গন্ধ ছড়িয়ে দেবে বিরিয়ানিময়, আর সাথে দেবে বেশ একটুখানি পোড়া স্বাদ আর গন্ধ।

কেমন লাগল? দেঁতো হাসি :D

ফিডব্যাকের জন্য আবারো ধন্যবাদ!

--দিফিও

কৌস্তুভ এর ছবি

অ, বুঝছি। আমাদের এখানের দোকানে শানের সিন্ধী মশলাটা রাখে না। আমি অন্যান্য কোম্পানীর মশলা কিনেছি আগে, সেগুলোয় তেঁতুল থাকত আমি কনটেন্ট-এ পড়েছি। এবার যেটা কিনেছিলাম ওটা শানের, কিন্তু সিন্ধী না। তবে দেখা হয়নি তেঁতুল কি আলুবোখরা আছে কি না, আপনি যা বলছেন তাও হতে পারে।

বাড়িতে ফাইনাল স্টেজে ঘি-মাখা আধসেদ্ধ চাল দিত, কাচ্চিতেও সেটা করলেই হবে নিশ্চয়ই। মুরগি-মিক্সেও দেওয়া যেতেই পারে।

'আসলি তরিকা' তো জটিল! তবে কি, কাঠকয়লায়, বা খাবারদাবার পুড়ে একেবারে কালো হয়ে গেলে, ওতে নানারকম কার্সিনোজেন চলে আসে। তাই খাবারে মিশে না যায়, সাবধানে থাকতে হবে, যেমন আপনি বাটিতে করে দিতে বলছেন।

জবাব দেওয়ার জন্য থ্যাঙ্কু!

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

লেখাটা পড়ে একটু উতলা হলাম।

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ খাবার--কাচ্চি বিরিয়ানি।
সাত সাতটি বছর প্রবাসবন্দি থাকার পর ২০০৮ এ বাংলাদেশে যাবার সুযোগ হলো। গিয়েই ঘোষণা দিলাম--একটি বিয়ের নেমন্তন্ন চাই, কাচ্চি খাই না কত্তো বছর!
শিশুসাহিত্যিক ছড়াকার আমীরুল ইসলাম দাওয়াত যোগাড় করলো। তার ভাস্তির বিয়ে। বিডিআর দরবার হলে একটি রাউন্ড টেবিলে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, আহমাদ মাযহার, শিরীন বকুলসহ আমরা কয়েকজন। আমি তো হামলে পড়লাম কাচ্চির ওপর। আহারে কী যে জাদু এই কাচ্চিতে! সায়ীদ স্যার বললেন, তুমি তো দেখি পাগল হয়া গ্যালা!
না, পাগল আমি হই নি। কিন্তু প্রায় সেন্সলেস হয়ে পড়েছিলাম। অতিরিক্ত কাচ্চি ভক্ষণ আমাকে শুইয়ে ফেল্লো। তিন-চারটে চেয়ার একসঙ্গে জোড়া দিয়ে শুয়ে থাকলাম ফ্যানের তলায়(এসি থাকার পরেও)। মাযহার কিছুক্ষণ হাওয়া করলো। কিন্তু আমি তো যাই যাই। বেশ কিছুক্ষণ পর মাযহার কোত্থেকে নিয়ে এলো গরম এক কাপ চা। সেই চা পান করে ফিরে পেলাম নিজেকে, তরতাজা।
আহা রে কাচ্চি!

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

অতিথি লেখক এর ছবি

আহা রে কাচ্চি! এইটা আসলেই দুনিয়ার সেরা খাবারের দাবীদার, কোনো সন্দেহই নাই। তার উপর বাংলাদেশের কাচ্চি এখন পুরাই নিজস্ব একটা স্টাইল, আফসোস কেউ এইটাকে এখনো মশলা প্যাকে ঢোকানোর কথা চিন্তা করলোনা। মার মার কাট কাট করে বিক্রি হত মন খারাপ

আর চায়ের কথাতেও খুব কাজের একটা কথা উঠেছে---বিরিয়ানি খাবার পর, মুখের ভারী ভাব দূর করতে, হালকা লিকার চায়ের তুলনা নেই! আমি তো এইভাবেই আর্ল গ্রে নামক এক চায়ের প্রেমে পড়ে গেলাম---সে আরেক কাহিনী!

অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

---দিফিও

ভ্রান্ত পথিক [অতিথি] এর ছবি

ইস ! কাচ্চি রান্নার যদি মেশিন থাকতো !

অতিথি লেখক এর ছবি

হুমম, তাইলে আর এইটা নিয়া এত গবেষণা করা লাগত না হাসি

তবে যতদিন না মেশিন আসতেছে, ততদিন এক কাজ করা যায়---ভাল বিরিয়ানী বানায় এমন কারো সাথে গভীর দোস্তি পাতানো। 'আখেরে ফায়দা হবে' দেঁতো হাসি আর নাহলে বিয়েবাড়ি/কমিউনিটি সেন্টারের মালিকের সাথে দোস্তি থাকলে আর কী লাগে খাইছে

--দিফিও

শরতশিশির এর ছবি

ভাই দিফিও,

আপনার পোস্ট দেখে খুব ভাল লাগল, সেই সাথে হাসিব ভাইয়েরটাও।

পোলাও আগে রাঁধলেও কাচ্চি বিরিয়ানি করার সময় আর সুযোগ বেশ ক'বছর হয়ে উঠেনি। এখন তাই ইচ্ছেটা চাগাড় দিয়ে উঠেছে। দেখি, এই শুক্রবারেই একবার চেষ্টা করে দেখবো।

আমি আপনার কাছে একটা অনুরোধ রাখছি, গ্যাস আভেন ছাড়া (দেশে তো আর গ্যাস আভেন সবাই ব্যবহার করেন না) গ্যাসের চুলোয় রান্না করলে কী কী স্টেপ মডিফাই করতে হবে? সময়ই বা কত লাগবে (দম দেওয়া সহ)? নতুন কিছু (যেমন হাঁড়ির মুখ মারতে হয়, স্টিম বের না হওয়ার জন্যে) পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে কি?

জানাবেন আশা করি। আপনার রেসিপি অনেক ইউজার-ফ্রেন্ডলি মনে হলো, তাই এটুকুন আবদার করে গেলাম।

ধন্যবাদ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
আমি দেখতে চাই না বন্ধু তুমি
কতখানি হিন্দু আর কতখানি মুসলমান
আমি দেখতে চাই তুমি কতখানি মানুষ।

কৌস্তুভ এর ছবি

এই প্রশ্নটা আমিও করতে যাচ্ছিলাম, ভালই হল আপনি করে ফেললেন।

গ্যাসে তলা ধরে যাবার সম্ভাবনা বেশি থাকে বোধহয় - অন্তত আমি তাই দেখি...

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ পড়ার জন্য!

ইলেকট্রিক বা গ্যাসের চুলায় করলে সবচেয়ে বড় যে ঝামেলা হতে পারে, তা হল তলা ধরে যাওয়া বা তলায় পুড়ে যাওয়া (কৌস্তুভ যেমনটা বললেন)।

এটা এড়ানোর জন্য প্রাথমিকভাবে ২ টা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে:

১। হাঁড়ির তলা বেশ মোটা আর ভারী হতে হবে।

২। আঁচ কখোনোই মিডিয়ামের বেশী দেওয়া যাবেনা।

এটায় সময় একটু কম লাগবে, প্রায় ৩০/৪০ মিনিটের মত।

আর মোটা তলার হাঁড়ি না থাকলে আরেকটা উপায় আছে, যেটা আমি ট্রাই করিনি, তবে কাজ করার কথা।

৩। বিরিয়ানির হাঁড়ি ১০ মিনিট উচ্চ তাপে চুলায় দিয়ে তারপর একটা লোহার বা এলুমিনিয়ামের বড়, ছড়ানো তাওয়া/ফ্রাইপ্যান চুলায় দিয়ে তার উপর বিরিয়ানির হাঁড়ি চড়ান। এবার আরো ২০/২৫ মিনিট মত।

ধন্যবাদ আবারো!

---দিফিও

দুর্দান্ত এর ছবি

স্লুরুপ!

ঈমানে বলতেছি, জাফরানের সাথে কোন তফাত পাইবোনা কেউ।

আসল জাফরান খাইলে এই কথা কইতেন না বস। আরেকটা কথা, একই খাবারে জাফরান আর কেওড়া একসাথে দিলে দুইটার একটারো হদিস পাওয়া যাবেনা।

অতিথি লেখক এর ছবি

মন খারাপ ঠিকোই বলছেন, এই দেশে তো খালি স্পেনিশ গুলা পাওয়া যায়, সেইটায় খালি রংএর কারবার, খুশবু নাই তেমন।

অর্জিনাল জাফরান খাইতে মঞ্চায়...........

---দিফিও

সুমন চৌধুরী এর ছবি

এগুলা খাওয়া ভালো না। কোলেস্টেরল বাড়ে ....



অজ্ঞাতবাস

মূলত পাঠক এর ছবি

হে দিফিও,

অবশেষে বানালাম কাচ্চি বিরিয়ানি, এক বন্ধুর সাথে, দুজনে মিলে, চার জনের জন্য। আগে 'পাক্কি' বিরিয়ানি বানিয়েছি অনেক বারই, ফাঁকিবাজি বা দমপুক্ত, প্যাকেটের মশলা দিয়ে বা একেবারে একটা একটা মশলার উপকরণ বেছে নিয়ে। কিন্তু কাচ্চির কথা ভাবলে ভয় ছিলো যদি মাংস সুসিদ্ধ না হয়, ফলে বানানো হয়ে ওঠে নি কখনো। অবশেষে হলো, এবং আপনাকে কী বলে ধন্যবাদ দেবো ভাবছি, সে এক অতি খোলতাই ব্যাপার হলো!

বানালাম পাঁঠা দিয়ে, এছাড়া বাসমতি চাল ছিলো, প্যাকেটের বিরিয়ানির মশলাই দিয়েছি, কেশর দুধে গুলে ঢেলেছি ওপর দিয়ে, এবং সময়াভাবে ম্যারিনেট করাও হয় নি। কিন্তু আপনার দেওয়া প্রণালী মানা হয় নি একটা মেজর জায়গায়, এবং সম্পূর্ণ ভুলবশতঃ, সেটা হলো এই যে এই বিরিয়ানিতে কোনো রকম তেল বা ঘি দিতে ভুলে গেছিলাম, একমাত্র পেঁয়াজ ভাজার মধ্যে যতটুকু মিশে ছিলো সেটা ছাড়া। কী আশ্চর্য, তাতেও বিরিয়ানি যা নামলো সে এক চমৎকার ব্যাপার। চেটেপুটে খেয়ে আর রাতে আপনাকে মন্তব্য করতে পারি নি, ভুঁড়ি আগলে চিৎ হয়েছিলাম, এখন সক্কালে বিছানা থেকেই থাংকু'টা জানালাম!

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ, ধন্যবাদ দেঁতো হাসি

আর তেল ছাড়াও যে জিনিসটা ভাল হল সেইটা তো দারুণ! যদিও তেল-ঘি সহ বিরিয়ানীটাই মজার, তবু কেউ যদি ক্যালরি নিয়ে দোনোমনায় থাকে, তাহলে তাকে বলব যে একেবারে কম তেলেও এটা ভালই হবে!

আবারো ধন্যবাদ।

--দিফিও

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

গতকাল আমি আর আনন্দী মিলে রান্না করলাম। আপনার রেসিপি মেনে। আহা খেতে যা হয়েছে তা লেখার ভাষা নেই।

রেসিপি আর খুঁটিনাটির জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

কাল প্রচুর খেলাম। আজ বাসি বিরিয়ানির স্বাদ আরো খুলেছে। সুপ্রচুর খেয়ে এখন দুপুরে বিরিয়ানিঘুম (ভাতঘুমের বিরিয়ানি ভার্সান) দিব। হাসি


------------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব ভাল লাগল হাসি
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ!

--দিফিও

দ্রোহী এর ছবি

আমার একটা ইচ্ছাপূরণ মেশিন আছে। সে মেশিনের কাছে কোন কিছু খাবার ইচ্ছা প্রকাশ করাটাই যথেষ্ট। হাঁস-মুরগী, চাল-ডাল, ইলিশ-পুলিশ কোনকিছু ঢুকানোর চিন্তা করা লাগে না। এমনিতেই খাবার চলে আসে।

দেঁতো হাসি


কাকস্য পরিবেদনা

সাফি এর ছবি

ইয়ে মানে দ্রোহীদা, ঠিকানাটা একটু দিয়েন আপনের। মেশিন এর উপরে একটা পেপার লেখবাম চাই, কিছু এক্সপেরিমেন্ট করে

ধুসর গোধূলি এর ছবি

লাইনে আইয়ে ঠাকুর।

আমি এই লাইনে বিশিষ্ট সমালোচক, বিধায় মেশিন প্রদত্ত দাওয়াতপ্রাপ্ত হৈছি হাণ্ডিপাতিলমাজন শর্ত প্রযোজ্যে। তবে মেশিনপক্ষ হৈতে আমার হাণ্ডিপাতিলমাজন শর্ত শিথিল করা হৈছে, কারণ তাঁর হাণ্ডিপাতিলমাজনের বান্ধা মানুষ আছে বৈলা! দেঁতো হাসি



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

ক্যানণ কার্ণেগী, পার্থ, অষ্ট্রেলিয়া এর ছবি

ভাই দিফিও,

আপনার পোস্ট পড়ে কি বলব, আমপাব্লিকের মতো আমারও কাচ্চিব্রিয়ানীপাকিচ্ছা জাগ্রত হলো, ইচ্ছাটা বেশ তীব্রই বটে। সেকারণে প্রথমেই লেখায় উত্তম ঝাঁঝা। তবে আমার পরিস্হিতি একটু বেশি সেনসিটিভ, সেকারণে বেশ ক'দিন ঘাপটি মেরে আছি। এই পোষ্টে আসি-যাই, আর মন্তব্য দেখি। আসলে (আকালমন্দের মত!!) ব্যাচেলর সমাজের পরীক্ষার ফলাফলের অপেক্ষায় ছিলাম। অপেক্ষার ফল মধুর বোধ হইতেছে (একটু গুরুচন্ডালী করলাম, সেও এই ব্রিয়ানীর সম্মানেই)। সবাই যে হারে রান্নার পর আঙ্গুল চাকুম-চুকুম করছে, সে শব্দ ও আওয়াজ পরিস্কার দিব্যদৃষ্টিতে দেখতে পারছি। আজ মনস্থির করলাম, অনেক অপেক্ষা হলো, এবার আউগানো যাক!

বেশী সেনসিটিভিটির কারণ বলছি, আমার বউয়ের বানানো পাকিব্রিয়ানী অলরেডী এখানকার বাঙালী সার্কেলে বহুলসমাদৃত। তারা তাই খেয়েই বহুত খুশ, বহুত বাহবা, সাথে আমিও। কিন্তু আসলি জিনিসের কথা কি আর ভোলা যায়! আপনার পোষ্ট পড়েই বউকে বল্লাম "এবার আমি আসল কাচ্চি বানাবো"। আর যায় কোথা, সে নতুন চ্যালেন্জ যোগ করলো, এবার কুরবানির ব্রিয়ানী আমার ভাগে। বহুত টেনশন হচ্ছেরে ভাই। তাই রান্নার আগে আমার দুইখান কতা ছিল এট্টু জিগাই, সময় পেলে জবাব দিয়েন -

১. প্রথম ক্রিটিক্যাল পয়েন্টে, চাল যখন সিদ্ধের পর তুলে ফেলার কথা বলেছেন, তখন কি গরম পানি থেকে তুলে ফেলে ঝাঝরিতে পানি ঝরিয়ে ফেলতে হবে? না শুধু তুলে অন্য পাত্রে রাখলেই হবে? দুইটাতে চালের সাথে পানির পরিমাণ বেশ আলাদা হবে, তাই জিগাইলাম।
২. কাচ্চি ওভেনে তোলার সময় চালটা কি মাংসের সাথে মাখানো লাগবে না শুধু উপরে ঢেলে দিলেই হবে?
৩. ঢাকনা যদি টাইট-ফিট না হয়, তাহলে কি ঢাকনার বদলে শুধু আ্যলুমিনিয়াম ফয়েলের কথা বলেছেন, না ঢাকনার পাশ দিয়ে ফয়েল দিয়ে লক করার কথা বলেছেন? ঢাকনা বাংলাদেশী ষ্টাইলে ময়দার বেল্ট দিয়ে সীল করলে কেমন হয় দেখেছেন নাকি?
৪. আমি ব্যক্তিগত ভাবে কাচ্চির আলুর বিশেষ ভক্ত। আলু দিতে চাইলে কখন, কিভাবে দেওয়া যায়?
৫. গরুর কাচ্চি কখনো করেছেন কি? বোধহয় খাসির মতই হবার কথা তাইনা?

আপনার রেসিপিটা এমনিতেই বহুত খুব। অনেকেই আমার মত একগাদা খুটিনাটি প্রশ্ন না করেই দিব্যি রান্না করে ফেলেছেন দেখলাম। তাদের থেকেও জবাব আশা করছি।

অগ্রীম ধন্যবাদ। ঈদের আগে জবাব পেলে সাহস পেতাম আরকি!

--ক্যানণ কার্ণেগী

দিফিও [অতিথি] এর ছবি

আহা এরকম একজন মনোযোগী পাঠক পেয়ে খুবই খুশী হইলাম! আর বিরিয়ানি বানানোর পিছনের যা কাহিনী দিলেন, তার পর তো আর বসে থাকা যায় না! এই নেন আমার জবাব প্লাস আরো কিছু টিপস:

১। অবশ্যই ঝাঁঝরিতে পানি ঝরাবেন। সবচেয়ে ভাল হয়, পানি ঝরিয়ে চালটা একটা ছড়ানো থালায় রাখলে। অনেকসময় দেখেছি, ঝাঁঝরিতে রেখে দিলে নিচের দিকের চালগুলো গরমে বেশী সিদ্ধ হয়ে গেছে!

২। ওভেনে তোলার সময় মাখানো লাগবেনা, নামানোর পর আধা-মাখা করবেন।

৩। ঢাকনা ছাড়াও এলুমিনিয়াম ফয়েলে প্রায় ৯৯% সীল করা সম্ভব, ফয়েলের লেভেল হাঁড়ির মুখের লেভেলের একটু নিচে দেন, তারপর ভাল করে সাইডগুলা মুড়ে দেন। ময়দার বেল্ট দিয়ে হয়ত ১০০% করা সম্ভব, কিন্তু ১% এ স্বাদের তফাৎ খুবই সামান্য হবে, (যদি আদৌ হয়) আর তার জন্য আরো আধা ঘন্টা খাটতে ইচ্ছে হয়নি।

৪। আমিও কাচ্চির আলুর ভক্ত! জটিলতা এড়াতে রেসিপিতে দেই নাই হাসি আলু একটু বড় পিস করে, আগে তেলে হালকা আঁচে ভেজে নেবেন, হালকা বাদামী করে, তাতে মোটামুটি আধা সিদ্ধ হবে। এই আলুতে জাফরান রং মাখিয়ে (অপশনাল) মাংসের উপরে দিন, তার উপর যথারীতি চাল দিয়ে ওভেনে।

তবে একটু সাবধান করি, প্রথমবার করার সময়, ২ টা জিনিস খেয়াল রাখাটাই বেশ কষ্টের (মাংস সিদ্ধ আর চাল সিদ্ধ) তার সাথে আলু দিলে কিন্তু পুরা থ্রী ভ্যারিয়েবল ইকুয়েশন! সলভ করতে গিয়ে প্যাঁচও লাগতে পারে। এই ইকুয়েশন পরের বিবাহ বার্ষিকীর জন্য রেখে দিলেও খারাপ হয় না দেঁতো হাসি

৫। গরুরটা করেছি, খাসীর মতই, মাংসের পিসের সাইজ বুঝে টাইম সেট করবেন।

আরো কয়েকটা কথা:

আমার এটা বিধিমত কাচ্চি বটে, কিন্তু ঠিক দেশী বা ঢাকাই কাচ্চি নয়, স্বাদটা একটু আলাদা হবে। পার্ফেক্ট ঢাকাই কাচ্চি বানানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আপনার যদি ক্লোজ-টু-ঢাকাই-কাচ্চি বানানোর ইচ্ছা হয়, তাহলে:

১। শান সিন্ধী বিরিয়ানি মিক্সের বদলে, শুধু "শান বিরিয়ানি মাসালা" বলে একটা আছে, ওটা ব্যাভার করুন। তাতে কিছু এক্সট্রা গরম মশলা যোগ করুন (ধরেন ৫/৬ টা করে আস্ত গোলমরিচ, লবঙ্গ, দারচিনি এই)

২। অতি অবশ্যই ঘি দেবেন। মাংসে দেন যথারীতি ৩ টেবিল চামচ ঘি, আর পানি ঝরানো চালটা ১ টা পাতিলে কমসে কম ৫ টেবিল চামচ গরম ঘিতে মিনিট দুয়েক নাড়াচাড়া করে তারপর আগের নিয়মেই হাঁড়িতে দিন।

গুড লাক, এন্ড গডস্পীড!

ক্যানণ কার্ণেগী, পার্থ, অষ্ট্রেলিয়া এর ছবি

অনেক অনেক ধইন্যাপাতা ব্রো। সত্যিই কালকের আগে জবাব আশা করিনাই। আপনার সহানুভূতির সম্মানে আন্তরিক ঈদের দাওয়াত দিলাম (জানি আপনি অন্যপ্রান্তে থাকেন)। এ্যাটলিষ্ট কাচ্চি হলো না ঘ্যাট হলো জানিয়ে যাবো।

থ্রী ভ্যারেয়েবল ইকুয়েশনের ভয়ে এবার আলু ছাড়াই করি, বউ খুশি হবে আলু পছন্দ না শুনে চোখ টিপি । পরেরবার দেখমুয়ানে।

থ্যাংকস এগেইন।

মূলত পাঠক এর ছবি

কয়েকটা কথা যোগ করি:

১) আলু আদ্ধেক করে কেটে নুন মাখিয়ে কম আঁচে ঘিয়ে ভাজতে পারেন ৫-১০ মিনিট (আলুর মাপ অনুযায়ী)। তারপর ভাতের সাথে দিয়ে দিলে খেতে চমৎকার হবে। তেলেও ভাজা যায়, তবে ঘিয়ে ভাজলে সুগন্ধী হবে যেহেতু আলু সরাসরি মশলা পাচ্ছে না সে জন্য।

২) মাংস আর ভাত না মেশানোই উচিত, এতে রান্নার হিসেবটা ঠিক থাকবে, উপরন্তু ভাতটাও কাদাকাদা হবে না। বাঙালি বিরিয়ানি ঐ রকমই হওয়া উচিত, হায়দ্রাবাদির থকথকে ভেজা ভাত খেতে আমার অন্তত বিশেষ ভালো লাগতো না।

৩) মাংসটা অন্য পাত্রে মেখে রেখে ওভেনে দেওয়ার আগে বিরিয়ানি-রান্নার পাত্রে তলায় তেল বা ঘি এক চামচ সামান্য গরম করে ভালো করে মাখিয়ে নিয়ে তারপর মাংসটা দিলে তলা ধরে যাবার সম্ভাবনা কম থাকে।

৪) জাফরান দুধে গুলে ভাতের ওপর দিয়ে ঢালার সময় কিছু কিছু অংশে যদি না ঢালেন তাহলে ভাতের অংশটা কিছুটা সাদা ও কিছুটা রঙিন হয়, এতে খাঁটি বিরিয়ানির চেহারাটা আসে। ঢালার আগে জাফরানটা দুধে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে পারলে রঙটা আরো ভালো খোলে। আমি রান্নার শুরুতেই কেওড়া দেওয়ার পক্ষে, এতে গন্ধটা ভালো করে মেশে এবং তীব্রভাবে কোনো কোনো অংশে পাওয়া যাওয়ার সমস্যাটা থাকে না।

৫) ভাজা পেঁয়াজটা একটু বেশি দিলে স্বাদ আরো ভালো হয়। পেঁয়াজ ভাজতে গিয়ে অল্প পুড়ে গেলে চিন্তার কিছু নেই, রান্নার সময় বাষ্পে সেটা নরম হয়ে খেতে ভালোই থাকে।

৬) পাত্র সিল করা গুরুত্বপূর্ণ, তবে আমি ময়দা ব্যবহার করি নি। ফয়েলে মুড়ে একটু সন্দেহ হচ্ছিলো যদি ফাঁক থাকে, তাই একটা ভারী চ্যাপ্টা বেকিং ট্রে তার ওপর চাপিয়ে দিয়েছিলাম। ফলাফল সুস্বাদুই হয়েছে।

ক্যানণ কার্ণেগী, পার্থ, অষ্ট্রেলিয়া এর ছবি

আরে আপনার রেসিপিটাতো কমেন্টস সহ একটা 'এপিক পিস' -এ পরিণত হচ্ছে দেখি। নাহ্ এখন অনেক বেশি কনফিডেন্ট বোধ করছি।

আমি কেবল আপনাকে ভাজা পেঁয়াজের কথা জিজ্ঞেস করবো কিনা ভাবছিলাম, কালকে এম্নিতেই একগাদা প্রশ্ন করেছি। এছাড়া একটু চিন্তা লাগছিলো শুধু ফয়েলের কভার ভেতরের ভ্যাপার প্রশার ধরে রাখতে পারবে কিনা। আমিও তাহলে একটা কিছু চাপা দেবো সসপ্যানের উপর। আলুর ক্ষেত্রেও আপনার বিকল্প মেথডটাই এবার ফলো করবো তাহলে। প্রশ্নের আগেই উত্তর পেয়ে ভালো লাগলো। তার সাথে এখন মনে হচ্ছে রান্নার পার্টিক্যুলারস এর ব্যাপারে আপনি অনেক বেশি ডিটেইল্স খেয়াল রাখেন (আমারও এই ব্যাপারে একটু বদনাম আছে বন্ধুমহলে এবং ফ্যামিলিতে, বাট হ্যাটস অফ টু ইওর ডিটেইল্স)।

এখানে বৃদ্ধাঙ্গুলি বা তারা প্রদর্শনের যোগ্যতা নাই, তাই কমেন্টে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গেলাম।

অতিথি লেখক এর ছবি

সেদিন রান্না করার জন্য বাজার করেও পাতিলের অভাবে রান্তে পারি নাই। এখন ঈদ উপলক্ষ্যে এই লেখাটা খুইজা বের কইরা ফর্মুলা অনুযাই ট্রাই মারতাছি। হাউসমেটরা সবাই উপহাসের দৃষ্টিতে চাইয়া রইছে! চিন্তা কইরেন না। এত কমেন্টস পইড়া কফিডেন্স চইলা আইছে! খাইয়া জানামুনে কি রানলাম। B-)

-কমল

আব্দুর রহমান এর ছবি

আমি খুব সন্দেহবাতিকগ্রস্ত মানুষ, কাউকেই সহজে বিশ্বাস করতে মন চায় না। তবে ভেবে দেখলাম, আপনি একটা চাপাবাজি পোস্ট দিলেও দিতে পারেন, কিন্তু এতগুলো মানুষ তো আর একযোগে মিথ্যা বলবেনা।

তার ফলাফল হচ্ছে, গত এক সপ্তাহে মোট চারবার কাচ্চি রান্না করেছি আপনার রেসিপি অনুসারে। লাগাতার কাচ্চি খেয়েই যাচ্ছি। তাই ধন্যবাদ জানিয়ে গেলাম।

------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।