অমৌলিক পেশা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ২৮/১২/২০১০ - ১:০৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

স্কুলজীবনে কতবার যে জীবনের লক্ষ্য মার্কা রচনা লিখতে হয়েছে মনে নাই। তবে এটা ঠিক যে জীবনে যা হতে চেয়েছি* কখনই সেটা লিখি নাই। বেশিরভাগ সময় পরীক্ষার খাতায় ডাক্তার, শিক্ষক, বা সাংবাদিক এই ধরণের মহৎ এবং মৌলিক পেশাজীবী হতে চেয়েছি। ডাক্তারি, শিক্ষকতা, বা সাংবাদিকতার মধ্যে 'মহৎ' অংশটুকু নিয়ে কারো দ্বিমত থাকবে বলে মনে হয় না, কিন্তু 'মৌলিক' শুনে কেউ কেউ ভ্রু কুঁচকে তাকাতে পারেন। জীবিকার আবার মৌলিক অমৌলিক কী? এর মধ্যে ভ্যাজাল চলে নাকি? জ্বী চলে, আজ কাল তাও চলে। এ যুগে খিচুড়ি টাইপের অনেক নতুন কর্মসংস্থান তথা পেশার উদ্ভব হয়েছে। একটা ছোট্ট উদাহরণ দেই। মনুষ্য মস্তিষ্কে প্রায় ১০০,০০০ মাইল লম্বা রক্ত বাহিকা (blood vessel) রয়েছে। সূক্ষ্মতম বাহিকা ক্যাপিলারীর (Capillary) পরিধি মাত্র ৮ মাইক্রো মিটার, যেখানে কিনা আমাদের একটা চুলের পরিধি ২০ থেকে ৪০ মাইক্রোমিটার পর্যন্ত। সবথেকে চওড়া ক্যাপিলারী একটা পিনের মাথার সমান হবে বড়জোর। কখনো সখনো এইসব সূক্ষ্ম ক্যাপিলারীর দেয়ালে চিড় ধরতে পারে। সেই চিড়ে রক্ত জমে অস্বাভাবিক স্ফীতি (এনারিজম, aneurysm) দেখা দেয়। এনারিজম ফেটে রক্ত ক্ষরণ শুরু হলে স্ট্রোক বা আরও মারাত্মক অবস্থায় পড়তে পারে মানুষ। যেই উদাহরণ দেওয়ার জন্য এতো বিদ্যা কপচালাম এখন সেটা শুরু করি, মনে করেন একজন রোগীর উপসর্গ দেখে ধারনা করা হল যে তার এনারিজম থাকতে পারে বা কোন একটাতে ফাটল ধরেছে। সুতরাং সিটি স্ক্যান করা হল এবং ডাক্তার সাহেবকে বামদিকের মত একটা ছবি ধরিয়ে দেওয়া হল। nf500843.fig2 চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চোখ কম্পিউটারের সাহায্য নিয়ে সমস্যার জায়গাটা খুঁজে বের করে ফেলার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু যদি না পারে? যদি একটা ক্ষত চিহ্নিত হয় কিন্তু আরেকটি লুকিয়ে থাকে? মানুষের চোখের উপর যদি ভরসা না করা যায় তাহলে সমস্যা সমাধান করার একটা মাত্র উপায় হচ্ছে কম্পিউটারের আরও সাহায্য নেয়া। মানে কম্পিউটারকে চিনাতে হবে এনারিজমের আকার, আকৄতি, সম্ভাব্য অবস্থান এই সব। এখন ডাক্তাররা নিজেরাই যদি এইসব ডাক্তারি বিদ্যা গণকযন্ত্রকে শিখাতে যায়, তাহলে তো তাদের নিজেদের আগে গণকের ভাষা (computer programming) শিখতে হবে। কিন্তু প্রোগ্রামিং শেখাও তো একেবারে সহজ নয়। দুনিয়ার তাবৎ ডাক্তার-কবিরাজদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, সবাই তো আর ড. মেহদী হাসান খান না। এই বিপদ থেকে উত্তরণের একটা সহজতর রাস্তা হচ্ছে কিছু প্রকৌশলীকে ডাক্তারির শুধুমাত্র অ আ ক খ যদি শেখানো যায়। তারা মানবশরীরকে একটা যন্ত্র হিসাবে দেখবে। কোন যন্ত্রাংশের কী করা উচিত, কিভাবে তাদের চিহ্নিত করা যায় এইসব এলগরিদম নিয়ে ভাববে। শুরুতেই যে অমৌলিক পেশাজীবীদের কথা বলেছিলাম, এই বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হচ্ছে তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। অমৌলিক বা হাইব্রিড নাম দিয়েছি কারণ এই প্রজাতির মুখের ভাষা চিকিৎসকের কিন্তু চিন্তা করে প্রকৌশলীদের মত করে।

এরকম আরও বহু প্রজাতি আছে শুধুমাত্র ডাক্তারি আর ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মিশ্রণে তৈরি। বায়োমেড, বায়োইঞ্জিনিয়ারিং-এর একটা শাখা মাত্র। উইকিপিডিয়াতে সব শাখা প্রশাখা সম্পর্কে আরও ভালো জানতে পারবেন[১]। একই ধরণের মিশ্রণ করা হয়েছে বায়োলজি আর স্ট্যাটিস্টিক্স নিয়েও। তবে বায়োস্ট্যাট নিয়ে কৌস্তুভ ভালো বলতে পারবে। যাই হোক, এইসব ইন্টারডিসিপ্লিনারী সাবজেক্ট পশ্চিমা দেশগুলোতে বেশ জনপ্রিয়। হবেই না বা কেন? ২০০৮ সালে ইউ এস লেবার ডিপার্টমেন্ট প্রকাশ করে পরবর্তী ১০ বছরে সবচেয়ে দ্রুত বিস্তার লাভকারী ত্রিশটি পেশা[৩]। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই হাইব্রিড শাখাগুলো প্রথম দশের মধ্যেই আছে। এগুলো তো গেলো কিছু বাঁধাধরা হাইব্রিড শাখা, কিছু কিছু ইউনিভার্সিটি আবার কাস্টম ডিগ্রি পর্যন্ত অফার করে। কাস্টম ডিগ্রিতে কোন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন অনুযায়ী সিলেবাস ডিজাইন করা হয়। এরকম ডিগ্রির কথা আমি প্রথম শুনেছিলাম একজনের ব্যাপারে যে কিনা জন্স হপকিন্স মেডিক্যাল স্কুল থেকে মেডিক্যালের ইতিহাস নিয়ে পড়ছে এবং তাকে MBBS ডিগ্রি দেওয়া হবে। পরে গুগল সার্চ করে দেখি আরও বেশ কিছু স্কুলে কাস্টম ডিগ্রির সুবিধা দিয়ে থাকে।

এখন আসি সব থেকে আসল কথায়, যে কারণে এই লেখা লিখতে বসলাম। এতক্ষণ যা বললাম সবই ছিল ভূমিকা মাত্র। উন্নত দেশগুলোর ইউনিভার্সিটি বর্তমান বা ভবিষ্যৎ প্রয়োজন অনুযায়ী কত সুবিধা দিচ্ছে। সেখানে আমরা কতটুকু করার চেষ্টা করছি? বাংলাদেশের কয়েকটা ইউনির ওয়েবে সার্চ করে দেখলাম, নর্থ সাউথ ছাড়া আর কোনটাতে বায়োটেক জাতীয় কোন সাবজেক্টের নাম গন্ধ খুঁজে পেলাম না। তারা যদি পড়িয়ে থাকে কিন্তু নিজেদের ওয়েবসাইট ঠিকমত আপডেট না করে থাকে তাহলে অন্য কথা। সেক্ষেত্রে অবশ্যই আমাকে জানাবেন, আমার মনের দুঃখ কমবে। আমি শুধু বায়োটেকের জন্য চিন্তিত না, আমার চিন্তা হচ্ছে যে আমরা কতটুকু সামনের দিকে আগানোর চেষ্টা করছি সেটা নিয়ে। আমাদের শুরু করাটাই এতো দেরিতে হয়ে যায় যে বাকী পৃথিবী আরও অনেকদূরে এগিয়ে যায় ততদিনে। যেই আবিষ্কার অন্যরা আগেই করে ফেলেছে, সেটা পুনরুৎপাদন করে 'আমরাও পারি মনোভাব' নিয়ে সন্তুষ্ট থাকি। আমাদের দেশ যদি বদলাতে হয় নতুন প্রজন্মের শিক্ষা/প্রশিক্ষণ হতে হবে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে। এই গুরু দায়িত্বটা অতি অবশ্যই নিতে হবে দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে। সরকারীভাবে একটা পলিসি করে দিতে পারে। আমাদের দেশের সমস্যা অন্যদের সাথে নাও মিলতে পারে। আমাদের হয়ত এমন কিছু হাইব্রিড সাবজেক্ট প্রয়োজন হবে যা অন্য কোন দেশে প্রয়োজন পড়েনি। এই রিসার্চটুকু হয়ত সরকারীভাবে করা যেতে পারে, কিন্তু আসল শিক্ষার ভার আমাদের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর।

-রু

[১]http://en.wikipedia.org/wiki/Bioengineering
[২]http://www.bls.gov/news.release/ecopro.nr0.htm
[৩]http://www.bls.gov/news.release/ecopro.t07.htm
[৪] ছবিসুত্রঃ http://img.medscape.com/fullsize/migrated/500/843/nf500843.fig2.gif

* তিন গোয়েন্দার ঘড়ির গোলমাল বইয়ে একজন সোয়াভ আর্ট থিফ ছিল, নাম খুব সম্ভবত শ্যোঁপা। পুলিশের হাতে প্রমান থাকা সত্ত্বেও তাকে ধরা যেত না। আমার জীবনের লক্ষ্য ছিল এইরকম একটা ক্যারেক্টার হওয়া। বাংলা ভাষায় 'চোর' হতে চেয়েছিলাম।


মন্তব্য

বাউলিয়ানা এর ছবি

সেখানে আমরা কতটুকু করার চেষ্টা করছি? বাংলাদেশের কয়েকটা ইউনির ওয়েবে সার্চ করে দেখলাম, নর্থ সাউথ ছাড়া আর কোনটাতে বায়োটেক জাতীয় কোন সাবজেক্টের নাম গন্ধ খুঁজে পেলাম না।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যন্ড বায়োটেকনোলজি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ বাউলিয়ানা। কোন কারনে আমি শাহজালালের ওয়েবে যেতে পারিনা। আপনার দেওয়া লিঙ্ক থেকেও পারছিনা।
-রু

guest_writer rajkonya এর ছবি

বাহ!, ঢাবিতেও তো ''জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যন্ড বায়োটেকনোলজি'' বিভাগ রয়েছে!

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার জানা ছিল না। পড়ার জন্য ধন্যবাদ, রাজকন্যা।
-রু

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

চাকুরীর বাজারে একটা টার্ম প্রচলিত আছে - "ডাবল ব্যারেল"। এর মানে হচ্ছে দুইটা ভিন্ন জাতের বিষয়ে ডিগ্রীধারী। আজকাল বাংলাদেশে সবাই নিজের লাইনের বাইরে একটা করে এমবিএ ডিগ্রী অর্জনের চেষ্টা করেন। আমার পরিচিত এক নিউরোসার্জনকে পর্যন্ত মার্কেটিং-এ এমবিএ ডিগ্রী নিতে দেখেছি। চাকুরী জীবনে মানুষকে অনেক সময় এমন এমন সব অবস্থায় পড়তে হয় যখন তাকে নিজের লাইনের বাইরের কোন বিষয়ে পড়াশোনা করা ছাড়া গতি থাকেনা। এভাবে লাখ লাখ অমৌলিক কম্বিনেশন তৈরি হয়। এটি নতুন কিছু নয়।

কয়েকদিন আগে একজন নামকড়া আইনজীবি আমাকে জানালেন আগামীদিনের বাংলাদেশে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ডিগ্রিধারী বার-এট-ল'দের বেশ চাহিদা হবে। কনস্‌ট্রাকশন ব্যবসা ও রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা'র ব্যাপক বিস্তৃতি এর কারণ। আমাদের দেশে এই অমৌলিক পেশাটি নতুন হলেও অন্য অনেক দেশে এটা নতুন নয়।

আমার এক বন্ধু আছেন যিনি এম-ফার্ম + এমবিএ(মার্কেটিং) + বার-এট-ল - অমৌলিক পেশার চুড়ান্ত!



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার এক বন্ধু আছেন যিনি এম-ফার্ম + এমবিএ(মার্কেটিং) + বার-এট-ল - অমৌলিক পেশার চুড়ান্ত!

আপনার বন্ধুকে আরও একটি ডিগ্রি নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
-রু

অপছন্দনীয় এর ছবি

বাংলাদেশে অত দেখিনি, তবে এখানে আমাদের এক প্রফেসর আছেনঃ বি এসসি (কেমিক্যাল এঞ্জিনিয়ারিং) + বি এ (গ্রীক মিথোলজি) + এম এসসি (সাইকোলজি) + এম এড (কগনিটিভ লার্নিং বা ওই জাতীয় কিছু, ঠিক মনে নেই)+ পি এইচ ডি (কম্পিউটার সায়েন্স) এবং লোকটা বদ্ধ পাগল।

হিসেবে দেখা যায় তার পোস্ট সেকেন্ডারী এডুকেশনের সময়কাল সেকেন্ডারী পর্যন্ত সময়ের চেয়ে বেশী।

রু [অতিথি] এর ছবি

এরকম একজন মানুষের কথা শুনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।

ফ্রুলিক্স [অতিথি] এর ছবি

আমার জানামতে বর্তমান ডাক্তারী ডিভাইসগুলোও তো কম্পিউটার প্রোগ্রামারের হাত ধরে।

জার্মানীতে মেডিক্যাল ইনফোরমেটিস নামে একটি সাবজেক্ট দেখেছি। পরিচিত ২/১ জন পড়তেছে। শুনেছি খুব ডিমান্ড।

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ, ফ্রুলিক্স। -রু

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

হ, আমার একটা ফাইন আর্টস ডিগ্রি দরকার!

অতিথি লেখক এর ছবি

চেষ্টা চালায় যান। -রু

মহসীন রেজা [অতিথি] এর ছবি

ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভে ( ইউডা) " Biotechnology and Genetic Engineering" ও " Molecular Medicine and Bio-informatics" পড়ানো হয় বলে জানি।

অতিথি লেখক এর ছবি

জানা ছিল না। ধন্যবাদ। -রু

মাহবুব রানা এর ছবি

এই যুগে কয়টা একাডেমিক ডিসিপ্লিনকে মৌলিক/অমৌলিক এরকম ভাগ করা যায়? প্রয়োজনের তাগিদে সব বিষয়ইতো এখন এখান-থেকে-একটু-ওখান-থেকে-একটু নিয়ে 'হাইব্রিড'।

আমাদের দেশ যদি বদলাতে হয় নতুন প্রজন্মের শিক্ষা/প্রশিক্ষণ হতে হবে ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন বিষয়ের সিলেবাস যথেষ্ট সমৃদ্ধ বলেই তো আমার মনে হয়। দেশের চাকরির বাজারের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে প্রতি নিয়ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নানান পারমুটেশন/কম্বিনেশন করে নতুন নতুন বিষয় খোলা হচ্ছে। দেশে এমন কোনো চাকরি কি আছে যার চাহিদা কোনো সাব্জেক্ট মেটাতে পারছে না?

অতিথি লেখক এর ছবি

দেশের চাকরির বাজারের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে প্রতি নিয়ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নানান পারমুটেশন/কম্বিনেশন করে নতুন নতুন বিষয় খোলা হচ্ছে।
আমার ঠিক এই জিনিশটাই জানার প্রয়োজন ছিল। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কতখানি রিসার্চ করা হয় নতুন বিষয় খোলার ব্যাপারে।
বর্তমানে বিদ্যমান সব চাকরির প্রয়োজনীয়তা মিটতে পারে, কিন্তু আমরা অনেকটা পুনরুৎপাদন করার ক্ষমতা নিয়ে সন্তুষ্ট হয়ে আছি বলে মনে হয়। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
-রু

অতিথি লেখক এর ছবি

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে বায়োটেকনোলজি পড়ানো হচ্ছে ১৯৯৭ সাল থেকে। এক্ষেত্রে সম্ভবত খুবিই বাংলাদেশে প্রথম ।
-অভাজন

অতিথি লেখক এর ছবি

জানা ছিলনা। পড়ার জন্য ধন্যবাদ। -রু

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বলে একটা সাবজেক্ট আছে বুয়েটে। অনেকেই একে বিবিএ আর ইঞ্জিনিয়ারিং এর মিশ্রণ বলেন।

আপনার লেখার শেষাংশ পড়ে মজা পেলাম। শোঁপা ফ্রেঞ্চ একজন চিত্রচোর ছিলো, ইন্টারেসটিং ক্যারেকটার। ঘড়ির গোলমাল ছাড়াও কাকাতুয়া রহস্য-তে শোঁপার সাথে প্রথম পরিচয় ঘটে তিন বন্ধুর।

_________________________________________

সেরিওজা

রু [অতিথি] এর ছবি

আমি ১০০% শিওর ছিলাম না কাকাতুয়া রহস্যতেও একই ভিলেন ছিল কিনা, তাই ওটা আর উল্লেখ করিনি। মনে করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

কুষ্টিয়ার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে Biotechnology & Genetic Engineering বিভাগ রয়েছে...http://en.wikipedia.org/wiki/Islamic_University

tofayel71@gmail.com

রু [অতিথি] এর ছবি

ধন্যবাদ। -রু

সাদাকালোরঙ্গিন এর ছবি

আপনার কথার সাথে একমত। মাল্টিডিসিপ্লিনারী কোর্সগুলো এখন একটা শক্তিশালী ধারা হয়ে উঠেছে। এখন আর নিউটনের মত আপেলগাছের নিচে বসে ভেবে ভেবেই নতুন কিছু আবিষ্কার করা যায়না। এখনকার ল্যাবগুলোতে তাই বায়োফিজিসিষ্ট, বায়োকেমিষ্ট, ন্যানোবায়োটেকির জয়জয়কার। আমার কোর্সেই আমি এমন দেখি। আমি নিজেও এমন অমৌলিক বিষয় নিয়ে পড়ছি যেখানে ন্যানোফিজিক্স ও বায়োটেক একাকার হয়ে গেছে। এত সংকটের ভীড়ে আমার তড়িৎকৌশলের ডিগ্রীখানা মাঝে মাঝেই নিজের পরিচয় ভুলতে বসে।

রু [অতিথি] এর ছবি

পড়ার এবং মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

শামীম এর ছবি

আমার নিজেরই মাইক্রোবায়োলজি এবং আরো কিছু বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও জ্ঞান দরকার। এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ সিভিল, মাইক্রোবায়োলজি, ইকোনমিকস (ইমপ্যাক্ট এসেসমেন্টের জন্য), কম্পিউটার প্রোগ্রামিং (মডেলিংএর জন্য), হাইড্রোজিওলজি -- ইত্যাদি জানা দরকার। আফসোস ...

বাইরের দেশে বিল্ডিং সার্ভিসেস নামে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট + পোস্টগ্র্যাজুয়েট কোর্স আছে, যেটা আমরা একটা ৩/৪ ক্রেডিটের কোর্সে কিছুটা পড়ি/পড়াই। এটাতে পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ছাড়াও ভবনের প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেশন, তড়িৎব্যবস্থা, বজ্রনিরোধক, লিফট, ইন্টারনেট, কেবলটিভি সিকিউরিটি সিস্টেমের নেটওয়র্ক সব একসাথে থাকে।

মেকাট্রনিক্স নামে একটা ডিগ্রি অফার করে ওয়ার্ড ইউনিভার্সিটি।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

রু [অতিথি] এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আমার পোস্টটা আসলে ভুল লাইন আর লেংথে করা হয়ে গেছে। পোস্টের ফোকাস পয়েন্ট হয়ে দাড়িয়েছে বায়োমেড সাবজেক্ট। আমার ইচ্ছা ছিল কাস্টমাইজড ডিগ্রি, যেগুলো কিনা একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য (যেটার আপনার নিজের কাজের ব্যাপারে উল্লেখ করেছেন) বা আমাদের দেশের চাহিদা অনুযায়ী তৈরি হবে, তার গুরুত্ব তুলে ধরা। আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।
-রু

কৌস্তুভ এর ছবি

ঠিক কথা, খিচুড়ি লাইন জিন্দাবাদ! আমাদের ইউনিতে একটা আলাদা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ বিভাগই আছে, তার মাথায় বড় বড় প্রফেসররা আছেন, যাঁদের কাজ বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের মধ্যে সংযোগ এবং কোলাবরেশন বাড়ানো। এবং তারা মোটামুটি সফলও। আমাদের সোশাল সায়েন্সেস ডিপু-র এক প্রফেসর আছেন, তাঁর স্ট্যাট-এর থিয়োরি আমি আমার জেনেটিক্সের কাজে লাগাচ্ছি।

এর একটা চিন্তার দিকও আছে কিন্তু। যারা দুই-তিনটে সাবজেক্টে এক-দেড় বছরের মাস্টার্স করেই নিজেকে এই ফিল্ডগুলোর সংযুক্তি করানোর উপযুক্ত মনে করে ফেলে, তাদের ক্ষেত্রে কিন্তু অনেক জায়গাতেই অল্পবিদ্যা ভয়ঙ্করী হয়ে দাঁড়ায়। তারা নতুন শেখা বিষয়গুলোকে অ্যালগোরিদমিক-ভাবে প্রয়োগ করে, পেছনের চিন্তাভাবনাটুকু আর করে না।

এই যেমন, ডাক্তাররা আগে ডাকতেন স্ট্যাট-ওয়ালাদের, তাঁদের ডেটা নিয়ে নাড়াচাড়া করে রেজাল্ট দিতুম আমরা। এখন ব্যাপারটা আরো সহজ করার জন্য ডাক্তাররা নিজেরাই স্ট্যাট শিখতে আসছেন, যাতে নিজেদের দরকারটুকু নিজেরাই মিটিয়ে নিতে পারেন। তাঁদের স্ট্যাট শেখা মানে কিন্তু স্রেফ একটা সফটওয়্যারে ফেলে রিগ্রেশন আর টেস্টিং করা। এদিকে প্রবাবিলিটি যে ১-এর কম হতে হয়, সেটুকুও গেছেন ভুলে। এঁরাই আবার যখন 'ইজি স্ট্যাটিস্টিক্স ফর ডক্টরস' বই লেখেন, তখন পুরো পোপোক্যাটেপেটল অবস্থা হয়।

আর সাইটেশনের জন্য এই ন্যান, ধনেপাতা-ফ্লেভারড মিঠাই। হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

এখন ব্যাপারটা আরো সহজ করার জন্য ডাক্তাররা নিজেরাই স্ট্যাট শিখতে আসছেন, যাতে নিজেদের দরকারটুকু নিজেরাই মিটিয়ে নিতে পারেন। তাঁদের স্ট্যাট শেখা মানে কিন্তু স্রেফ একটা সফটওয়্যারে ফেলে রিগ্রেশন আর টেস্টিং করা। এদিকে প্রবাবিলিটি যে ১-এর কম হতে হয়, সেটুকুও গেছেন ভুলে। এঁরাই আবার যখন 'ইজি স্ট্যাটিস্টিক্স ফর ডক্টরস' বই লেখেন, তখন পুরো পোপোক্যাটেপেটল অবস্থা হয়।

পুরোপুরি একমত। মিঠাই মজার ছিল। -রু

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

মাল্টিডিসিপ্লিনারি পাত্থর! চোখ টিপি

যেকোন ডাক্তারি যন্ত্রই মূলত অ্যাপ্লাইড ফিজিসিস্টদের তৈরি। হাসি ইসিজি, ইইজি মেশিনের সিগ্ন্যাল প্রসেসিং, সিটিস্ক্যান বা এমারাই যন্ত্রের ইমেজ প্রসেসিং-এর জটিল প্রোগ্রামিং-এর আগেই, অনেক সিম্পল একটা স্টেথোস্কোপ-এর কথা ধরলেই দেখা যায় শব্দ, মেকানিকাল ওয়েভ অ্যাম্পলিফিকেশন আর বাস্তব প্রয়োগ সহজ সুন্দর একোটা যন্ত্রে, কত্ত বিশাল কাজ করে দিচ্ছে!

রাবি-তে ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ পড়ায় Biophysics & Biomedical Instrumentation বহুদিন ধরেই, এখান থেকে পাশ করা অনেকেই দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল বা বিভিন্ন মেডিকাল ইন্সট্রুমেন্ট সরবরাহকারী বিদেশী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন। KUET-এও যতদূর জানি বায়োমেডিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং (নাম সামান্য ভিন্ন হতে পারে) ডিপার্টমেন্টের কার্যক্রম শুরু হয়েছে সম্প্রতি।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অতিথি লেখক এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। -রু

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।