বাবা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ১৯/০৬/২০১১ - ১০:৪৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাবা-কে নিয়ে দীর্ঘ একটা লেখা লিখবার ভাবনা মাথায় ঘুরছে অনেক দিন থেকেই। ভেবেছিলাম হয়তো লিখবো কি করে বাবার কাঁধটাকে পেয়ারা গাছ বানাতাম, বাবার হাঁটুতে বসে সুরেলা কন্ঠের তিল-ওয়াত শুনতাম সেই অবুঝ সময় গুলিতে, আর বাবা গা-ভর্তি পাউডার দিয়ে ঘর থেকে বের হবার পর সেই পাউডারে স্লিম কাটতাম, কিংবা বাবার পাঞ্জাবির পকেট থেকে কিভাবে 'চিজ' আবিষ্কার করতাম । কিন্তু একবারও পেরে উঠছিনা। আমার দুর্বলতাটা কাটিয়ে উঠতে পারছিনা।

বাবার মৃত্যুর খবর পেয়েছিলাম খুব ক্রিটিক্যাল একটা মুহূর্তে। আমার পরীক্ষা ছিলো। যেমন করে সবসময় দূরে থাকা সন্তানকে পিতা/মাতার মৃত্যুর খবর দেয়া হয় আমাকেও তেমনটাই দেয়া হয়েছিলো-বাবা অসুস্থ্য আর আমাদের তাই দেখতে চান এখনই। আমার বুঝে গিয়েছিলাম শুনেই তবু সেই জীবনের সবচেয়ে দীর্ঘতম যাত্রাটির প্রতি মুহূর্তে প্রার্থনা করেছিলাম অসুস্থতাটুকুই যেন সত্যি হয়।

সেদিন আমি বাড়ির মূল ফটকে গাড়ি থামা মাত্রই অসহনীয় অনাকাঙ্খিত সেই ভীড় আর কোলাহলে চেতনাহীন হয়ে গিয়েছিলাম। যেই কান্নাটুকু বুকে চেপে আমি বারবার চেষ্টা করছিলাম খুব স্বাভাবিক থাকবার , আমি কখনো ভাবিনি সেটা আমার জীবনময় সঙ্গী হয়ে যাবে।

আমি খুব স্পষ্টভাবে আমার জীবন-কে দুভাগ করতে পারি। বাবার মৃত্যুর দিন থেকে জীবনের দ্বিতীয় খন্ডটুকু শুরু হয়েছে। এই অংশটুকু আমাকে প্রতিনিয়ত শেখাচ্ছে, অনেক সহায় থাকলেও বাবাহীন আমি কতটা অসহায়।

প্রথম ক'টা মাস বাবার কথা মনে করলে আমি খেতে, চলতে পারতাম না। সমস্ত দুনিয়া ক্রমাগত অন্ধকার হয়ে জীবনযাপন তুচ্ছ মনে হতো। একটা সময় ধাক্কা খেতে শুরু করলাম, নিজেকে অনেক বোঝালাম ভুলে থাকতে হবে। ভুলে থাকলে ভালো থাকার চেষ্টা দেয়া যায়, ভুলে না থাকতে পারলে অসুস্থ্য হয়ে যাই। কিংবা কি জানি হয়তো ভুল বল্লাম, ভুলে থাকার চেষ্টাটাই অসুস্থ্যতা।

আমার বাবা-কে পূর্ন বয়স্ক হয়েও তাঁর বাবা-মায়ের জন্যে অঝোরে কাঁদতে দেখেছি। তখন মাঝে মাঝে ভাবতাম কেন বাবা এতো অবুঝের মত কাঁদছেন। কিন্তু আমি এখন জানি এই কান্না সমস্ত জীবনের। কখনো সশব্দে, কখনো নীরবে।

আপনি হয়তো এখনো সেই সৌভাগ্যবানদের একজন যে কিনা বাবার গলা জড়িয়ে ধরতে পারেন। তাঁর সাথে চড়া গলায় তর্কে অংশ নিতে পারেন। তাঁর কাছে আবদার করে কিছু চাইতে পারেন। তাঁকে অনুযোগের কথা জানাতে পারেন। আপনাকে বলছি, আমি পারি না। আমি সেই সব দূর্ভাগা-দের একজন যে কিনা আর সমস্ত জীবনে পারবো না। আমি যেমন আগে বুঝিনি, আপনিও হয়তো হারাবার আগ-মুহূর্ত পর্যন্ত বুঝতে পারবে না কি চীরস্থায়ী এই শুন্যতা বুকের ভেতরে তৈরি হয় বাবাকে হারিয়ে।

হয়তো খুব পোষাকী এই বাবা দিবসের আনুষ্ঠানিকতাটুকু, হয়তো একেবারেই পশ্চিমা সংস্কৃতির অনুসরণ। তবু একবার এই দিনতেই বাবা-কে বলুন বাবা তোমাকে ভালোবাসি। কিংবা একটা ফোন দিয়ে খোঁজ নিন তাঁর, অথবা একটু আলাদা করে তাঁকে নিয়ে কিছু ভাবুন।

আর লিখতে পারছি না। পৃথিবীর সব বাবাদের জন্য শুভেচ্ছা আর ভালোবাসা।


মন্তব্য

বন্দনা- এর ছবি

ভিতরটা একদম ছুঁয়ে গেলো।

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

.............

নজমুল আলবাব এর ছবি

মায়া ছড়ানো একটা লেখা।
সকল বাবার জন্য শুভকামনা

ফাহিম হাসান এর ছবি

লেখার মাধ্যমে খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন আপনার অনুভূতিগুলো। শুভেচ্ছা রইল।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

মনে দাগ কেটে গেল আপনার লেখাটা। আসুন বাবাকে নিয়ে লেখা একটি কবিতা পড়ে পৃথিবীর সকল বাবার জন্য ভালোবাসা জানাই।

আসলে আমার বাবা ছিলেন নিম্নমানের মানুষ
নইলে সরকারী লোক, পুলিশ বিভাগে চাকরি কোরেও
পুলিশী মেজাজ কেন ছিলনা ওনার বলুন চলায় ও বলায়?
চেয়ার থেকে ঘরোয়া ধূলো, হারিকেনের চিমনীগুলো মুছে ফেরার মতোন তিনি
আস্তে কেন চাকরবাকর এই আমাদের প্রভু নফর সম্পর্কটা সরিয়ে দিতেন?
থানার যত পেশাধারী, পুলিশ সেপাই অধীনস্থ কনেস্টবল
সবার তিনি এক বয়সী এমনভাবে তাস দাবাতেন সারা বিকেল।
মায়ের সঙ্গে ব্যবহারটা ছিল যেমন ব্যর্থপ্রেমিক
কৃপা ভিক্ষা নিতে এসেছে নারীর কাছে।
আসলে আমার বাবা ছিলেন নিম্নমানের মানুষ
নইলে দেশে তাঁর ভাইয়েরা জমিজমার হিশেব কষছে লাভ অলাভের
ব্যক্তিগত স্বার্থ সবার আদায় কোরে নিচ্ছে সবাই
বাবা তখন উপার্জিত সবুজ ছিপের সুতো পেঁচিয়ে মাকে বোলছেন, এই দ্যাখোতো
জলের রং এর সাথে এবার এই সুতোটা খাপ খাবেনা?
আমি যখন মায়ের মুখে লজ্জা ব্রীড়া, ঘুমের ক্রীড়া
ইত্যাদিতে মিশেছিলুম, বাবা তখন কাব্যি কোরতে কম করেননি মাকে নিয়ে
শুনেছি শাদা চামেলী নাকি চাপা এনে পরিয়ে দিতেন রাত্রিবেলা মায়ের খোপায়।
মা বোলতেন বাবাকে তুমি এই সমস্ত লোক দ্যাখোনা?
ঘুষ খাচ্ছে, জমি কিনছে, শনৈঃ শনৈঃ উপরে উঠছে,
কত রকম ফন্দি আটছে কত রকম সুখে থাকছে,
তুমি এসব লোক দ্যাখোনা?
বাবা তখন হাতের বোনা চাদর গায়ে বেরিয়ে কোথায়
কবি গানের আসরে যেতেন মাঝরাত্তিরে
লোকের ভীড়ে সামান্য লোক, শিশিরগুলি চোখে মাখাতেন।
এখন তিনি পরাজিত, কেউ দ্যাখেনা একলা মানুষ
চিলেকোঠার মতোন তিনি আকাশ দ্যাখেন, বাতাস দ্যাখেন
জীর্ণ শীর্ণ ব্যর্থ চিবুক বিষন্ন লাল রক্তে ভাবুক রোদন আসে,
হঠাৎ বাবা কিসের ত্রাসে দুচোখ ভাসান তিনিই জানেন।
একটি ছেলে ঘুরে বেড়ায় কবির মতো কুখ্যাত সব পাড়ায় পাড়ায়
আর ছেলেরা সবাই যে যার স্বার্থ নিয়ে সরে দাঁড়ায়
বাবা একলা শিরদাঁড়ায় দাঁড়িয়ে থাকেন, কী যে ভাবেন,
প্রায়ই তিনি রাত্রি জাগেন, বসে থাকেন চেয়ার নিয়ে
চামেলী হাতে ব্যর্থ মানুষ, নিম্নমানের মানুষ।

(আবুল হাসান, "চামেলী হাতে ব্যর্থ মানুষ")

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

মৌনকুহর. এর ছবি

অনেক সহায় থাকলেও বাবাহীন আমি কতটা অসহায়

হৃদয় ছুঁয়ে গেল......... মন খারাপ

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

লেখকের নামটা না জানলে আসলে মন্তব্য করতে একটু সংকোচ বোধ করি। তার পরও আপনার লেখাটা হৃদয় ছোঁয়া। মন্তব্য করতে চেয়েছিলাম না কিন্তু না করেও আর পারলাম না। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

আমার অবশ্য পিতাকে নিয়ে ব্যাক্ত করার মতো কোনও অনুভূতি নেই। বা থাকলেও আমি তা প্রকাশ করিনা কখোনোই, বিভিন্ন সঙ্গত কারনে। আমরা একই শহরে বসবাস করি কিন্তু কেউ কারো খবর রাখিনা। কথাবার্তা হয় কালেভদ্রে তা'ও ফোনে। আর সবথেকে বড় কথা আমি তাকে বাবা ডাকিনা বহু বছর হয়ে গেলো। কথোপকথোন হয় সম্বোধন ছাড়াই। আমি দুনিয়ার কাউকেই আর বাবা ডাকিনা। না, মিথ্যে বলবোনা, বাবা ডাকি একমাত্র ছোট্ট রাফিনকে। তিনি মানুষ হিসেবে বেশ বড় মাপের, বীর মুক্তিযোদ্ধা, দানশীল, শিক্ষানুরাগী, কৃষকদরদী, ইত্যাদি। কিন্তু বাবা হিসেবে তিনি কতটা বড় তা নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে। এই প্রশ্নের উত্তর তিনি কোনও দিন দিতে পারবেন না, সে ক্ষমতা তার নেই। তিনি শুনেছি আমার জন্যে খুবই ফিল করেন। কিন্তু আমার যখন তার এই ফিলিংসের প্রয়োজন ছিলো, তখন তিনি তা করেছিলেন না।

দুঃখিত, কিছু নেতিবাচক কথা বলে ফেললাম। ক্ষমা করবেন।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ছোটো,
তোর কষ্টটা আমি বুঝি। কষ্টকে জয় করেই তো অমৃতের সন্ধান। ব্যবধান ঘুচিয়ে ফেল। কদিনের এই জীবনে সময় বড় মূল্যবান সম্পদ। অভিমানের কুহেলিকায় কেন তা নষ্ট করবি। তুই বুড়ো বাবার জোয়ান ছেলে। এক হিশেবে তোরই তো উচিত সব শ্যাওলা সরিয়ে ভালোবাসার দীঘিতে লালপদ্ম ফোটানো। করুণাময় তোদের দুজনারই মঙ্গল করুণ।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

কবি-মৃত্যুময় এর ছবি

রোমেল ভাইয়ের সাথে সহমত। রাতঃস্মরণীয় ভাই, "এক হিশেবে আপনারই তো উচিত সব শ্যাওলা সরিয়ে ভালোবাসার দীঘিতে লালপদ্ম ফোটানো।" অভিমান ভুলে অগ্রসর হোন।

কল্যাণ হোক।

 লেখক/লেখিকা এর ছবি

কালরাতে ভীষণ ইমোশোনাল অবস্থায় লেখাটা লেখা। অনেকগুলি বানানের ত্রুটি, শব্দের ওলোটপালোট চোখে পড়ছে, একবারও রি-রিড না করেই পোস্ট করে দিয়েছিলাম। যেমন স্লিম এর জায়গায় হবে 'স্লিপ'। বাবা প্রচণ্ড ঘামতেন, যে কারণে পুরো বছর জুড়েই প্রায় গা ভর্তি করে পাউডার লাগাতেন। কেন যেন পারফিউম ব্যবহার করতেন না। তাঁর পারফিউম ছিলো ন্যাচারাল। কেমন? আমাদের বাসার বাগানভর্তি করে তখন ফুলের বাগান ছিলো। বাবা তাঁর পাঞ্জাবীর পকেটে সবসময় নার্গিস, বেলি, কিংবা গন্ধরাজের একটা ফুল রেখে দিতেন। এটা নিয়ে আম্মা অবশ্য একটু বিরক্ত ছিলেন।
বাবা পাউডার লাগানোর পরে ফ্লোরজুড়ে সাদা হয়ে থাকতো, আমি সেই ফ্লোরে স্লিপ কাটতাম ছোটবেলায়।

বাবা সমসময় পাঞ্জাবী পরতেন। আর বাসায় ফেরার পরে জীভে এক ধরনের শব্দ করে বলতেন- মা আজকে আপনার জন্যে একটা চিজ নিয়ে এসেছি।
ছোটবেলায় বাবার পাঞ্জাবির পকেট হাতড়ে কয়েন খুঁজে বের করা ছিলো অন্যতম রুটিনমাফিক কাজ।

হয়তো আরেকটু গুছিয়ে লিখতে পারলে লেখাটা আরো সাবলিল হ'তো পড়তে। ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
যারা ইতিমধ্যে পড়েছেন, মন্তব্য করেছেন আপনাদের ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিভঙ্গির জন্য কৃতার্থ হয়ে রইলাম।

কৌস্তুভ এর ছবি

সুন্দর লেখা। লেখকের নাম না দেওয়ার অনুযোগটা তাও জানিয়ে রাখলাম।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

কৌস্তুভ ভাই, সচলত্বে অভিনন্দন!

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

কৌস্তুভ এর ছবি

আরে, ধন্যবাদ!

মন মাঝি এর ছবি

পোস্ট-লেখকের নাম নেই। তাতে অবশ্য বিশাল কোন পার্থক্য হয়নি - কারন এই লেখাটা আমারও হতে পারত কিম্বা আরো অনেকেরই - কারন এই অনুভূতি আর কষ্টের মধ্য দিয়ে আমরা অনেকেই গিয়েছি।

লেখক বলেছেন তিনি জীবনটাকে দুইভাগে ভাগ করতে পারেন। আমারও একই অনুভূতি হয়েছিল (আমার ক্ষেত্রে এখন অবশ্য ত্রিখণ্ড হয়ে গেছে)। আমারও মনে আছে আমি কিভাবে বাবার মৃত্যুর খবর পেয়েছিলাম। রাত সাড়ে ৩-টায় হাসপাতাল থেকে হঠাৎ ছোট ভাইয়ের ফোনকলঃ "...ভাইয়া...আব্বা..."। 'আব্বা...' বলার পরই ওর গলাটা ধরে গিয়েছিল, আর কোন শব্দ বেরোয়নি, কিছু বলতে পারেনি। স্রেফ দু'টি মাত্র শব্দ... কিন্তু বুঝতে আর কিছুই বাকি থাকেনি। দু'টি মাত্র অমোচনীয়, অবিস্মরনীয়, অমোঘ শব্দে তৎক্ষণাৎ জীবনটা চোখের সামনে দ্বিখণ্ড হয়ে গেল। ৮ বছর পরেও এখনো স্পষ্ট কানে বাজে ঐ শব্দ দু'টি। সাথে সাথে বাসা থেকে ছুটে বেরিয়েছি হাসপাতালের উদ্দেশ্যে, অনেকটা লেখকের মতই প্রার্থনা করতে করতে যে এটা যেন অসুস্থতার একটা তুলনামূলক খারাপ টার্নের বেশি কিছু না হয় - যদিও ভালভাবেই বুঝতে পারছিলাম আসলে কি হয়েছে।

মায়ের মৃত্যু, এমনকি আক্ষরিক অর্থেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগটা আমার হাতেই মাথা রেখে। বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল পৃথিবীর আহ্নিক গতিটা হঠাৎ করেই থেমে গিয়ে সমস্ত পৃথিবীটা যেন হঠাৎ করে একদম স্থির হয়ে গেছে।

অনেকদিন খুব কষ্ট হয়েছে। কিন্তু এখন খানিকটা ধাতস্থ হয়েছি। এখন নিজের কথা ভাবি। এই একই পরিণতি তো আমারও হবে - খুব বেশি তো আর বাকি নেই। দেখতে দেখতেই পেরিয়ে যাবে সময়টা। তবু মাঝে মাঝে এই ভেবে খারাপ লাগে যে, যে প্রিয়জনদের হারিয়ে এত কষ্ট পেয়েছি - তাদের আর কখনো দেখতে পাব না - মাঝে মাঝে তাদেরকে স্বপ্নের মত মনে হয়। মাঝে মাঝে প্রকৃতির এই নিষ্ঠুর রসিকতাটা খারাপ লাগে যে - যাদের সাথে আর কোনদিন দেখা হবে না, যাদের আর সম্ভবত কোনই অস্তিত্ব নেই এই বিশ্বব্রম্মাণ্ডের কোথাও, যাদের কথা ভেবে কষ্ট পেয়ে আর কোনই লাভ নেই কারো - তবু সেইসব চিরতরে হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জনদের কথা ভেবে কেন কষ্ট হয় খামাখা !

****************************************

অতিথি লেখক(শান্তিপ্রিয়) এর ছবি

পড়ে কান্না পেয়ে গেল; গাল দিয়ে গড়িয়ে পড়া জল দুটো বলে গেল দুটো শব্দঃ ভালবাসি বাপি!

আপনার অনবদ্য লেখায় আপনার বাবার প্রতি আপনার অনুভুতি মনে করিয়ে দেয় আমার বাবাকে।

তিথীডোর এর ছবি

চলুক চলুক

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মর্ম এর ছবি

এত কাছের মানুষ ওরা, কত স্মৃতি ওদের সাথে, তবে ওগুলো নিয়ে লেখা কেন কঠিন একটা কাজ সেটা এখনো বুঝতে পারি না।

যেখানেই আছেন, ভাল থাকুন আপনার বাবা- পরম করুনাময়ের কাছে এই দোয়া।

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

অনিকেত এর ছবি

অসাধারণ লেখা---
পৃথিবীর সব বাবারা ভাল থাকুক, পৃথিবীর সব সন্তানেরা তাদের ছায়ায় পাক নিরংকুশ আশ্রয়!!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।