পোলাগুলির কি দোষ!

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ০৫/০৫/২০১৫ - ২:৪০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বৈশাখী মেলায় আড্ডাবাজির ফাঁকে ফাঁকে তন্ময় যে রঙ্গিন সাজে পরীর মত দেখতে হওয়া মেয়েগুলির দিকে তন্ময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেনি, তা নয়! এরপর রাতে টিভির নিউজটা স্বভাবতই বুকের মাঝে ভীষন ক্ষত সৃষ্টি করল, চোখের সামনে ভেসে উঠতে লাগল, দিনের বেলা দেখা সেই স্বপ্নের পরীদের বিবস্ত্র করছে কতগুলো জানোয়ার! পরীদের আর্তচিৎকার ছড়িয়ে পড়ছে আকাশের বিশাল শুণ্যতায়!

হঠাৎই কানে বাজল উঠল ষাটোর্ধ চাচার বাঁজখাই কন্ঠ, "উচিত শিক্ষা হইছে! হায়া-লজ্জা কোনডাই নাই মেয়েছেলেগুলির! বৈশাখ আইলে এইগুলির বেলেল্লাপানা সীমা ছাড়ায় যায়!" চাচার কথায় বিবমিষা আগেও এসেছে, এবারও এল এবং সামলেও নিল! সে যে চাচার মত হয়নি এই কি পরম সৌভাগ্য নয় তন্ময়ের?

পরদিন সকালে অফিস ক্যান্টিনে শোরগোল শুনতে পেয়ে কান খাড়া করল তন্ময়। সিনিয় কলিগ শিহাব ভাই গলা যতটা পারা যায় চড়িয়ে বলছিলেনঃ “আল্লাহ্‌র বিচার! এর আগেও হুজুররা সাবধান করছিল।” শিহাব ভাইকে বেশ হর্ষোৎফুল্ল দেখাচ্ছিল! উপস্থিত সিংহভাগ অফিস কলিগই মনে হল, আল্লাহর এই বিচারে বেশ তৃপ্ত ও সন্তুষ্ট! স্বস্তির নিঃশ্বাস সর্বত্র!

তন্ময় সাহস করে শিহাব ভাইকে জিজ্ঞাস করলঃ "আচ্ছা, যাদের হাত দিয়ে আল্লাহ্‌র এই বিচার কার্য সম্পন্ন হইল, সেই বীরপুঙ্গবগণের জন্য একখানা দোয়া মাহফিলের আয়োজন করলে কেমন হয়, ভাই?"

কড়া ধমক খাবে ধরে নিলেও শিহাব ভাই গলা নামিয়ে বললেনঃ “পোলাগুলির কি দোষ? এমন উগ্র পোশাক পইড়া ঢ্যাং ঢ্যাং কইরা ঘুইরা বেড়াইব, আর পোলাগুলি কিছু করলেই দোষ?”

দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে এরপর কাজে মুখ গুঁজল তন্ময়, যদিও মন দিতে পারল না, চোখের সামনে ভেসে ভেসে বেড়াতে লাগল সেই দৃশ্য.... বৈশাখি সকালে দেখা পরীর মত মেয়েগুলি কতগুলি পশুর শক্ত থাবার মধ্যে হাশফাশ করছে একটু দমের আশায়!

বাসায় ফেরার পথে চায়ের দোকানে দেখা হয়ে গেল পাড়াতো ভাই হারুনের সাথে। হারুন এখন সরকারী ছাত্র সংগঠনের ডাকসাইটে নেতা। হাই-হ্যালো পর্ব শেষ হলে তন্ময়ই তুলল বৈশাখের লজ্জাকর ঘটনাটির কথা। সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠির ছাত্র সংগঠন কিভাবে দেখছে এই ঘটনাকে, তা তো জানাই আছে! কৌতূহলি ছিল সরকারী ছাত্রসংগঠনের অবস্থান নিয়ে, তারা কি পারবে ক্যাম্পাসে ঘটে যাওয়া এই লজ্জাজনক ঘটনার বিরুদ্ধে গড়ে তুলতে কোন দুর্বার ছাত্র আন্দোলন??? এর আগে শামসুন্নাহার হলের কলঙ্কে যেভাবে ফুঁসে উঠেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর, আবার সেরকম হবে এবার??? ”

"তুমি কি মনে করবা, জানি না, তবে খুব দরকার ছিল এমন একটা ঘটনার। মেয়েগুলি আসলেই বেপরোয়া হইয়া যাইতেছিল! এমনকি ইন্ডিয়ান পোষাকও আর তাগো পছন্দ হইতেছিল না, এক্কেবারে পশ্চিমাগো মত শার্ট-প্যান্ড ফিন্দা আরম্ভ করছিল! পুলাগুলির কি দোষ, কও? বেহায়া মাইয়াগুলিই তো কচি কচি পুলাগুলির মাথা নষ্ট করে!"

তন্ময় আর তর্কে গেল না, শুধু এইটুকু বুঝল স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি দাবী করা এই কিসিমের কিছু ছাত্রনেতার প্রগতিশীলতা শুধু বঙ্গবন্ধুর জন্ম-মৃত্যু দিবসেই সীমাবদ্ধ, প্রগতিশীলতার ‘প’ও পোন্দায় না ইনারা! আর এই কারণেই কিনা, মৌলবাদী ছাত্রনেতাদের সাথে প্রায়ই তাই তাদের সহজ অদবদলের খবর শুনা যায়!!

রাতে বাসায় ফিরে পরিবেশটা ভাল লাগল না! কেমন থমথমে অবস্থা! ইতিমধ্যে কঠোর সিদ্ধান্ত জারি হয়ে গেছেঃ আগামীবছর থেকে পয়লা বৈশাখ বন্ধ! বিশেষ করে, বাসার কোন মেয়ে ঐদিন ঘর থেকে বের হবে না।
ড্রইং রুমে এক প্রতিবেশীনি আন্টি মাকে ফিসফিসিয়ে বলছিলেনঃ “পুলাগুলির কি দোষ? মাইয়াগুলিই হারামি! নিজের ইজ্জতের দিকে খেয়াল রাখবি না?”

আর টিকতে না পেরে ফেইসবুকে ঢুকল, অন্তত এ জায়গাটা নিজের! ঢুকেই সুজনের স্ট্যাটাস চোখে পড়লঃ "মেয়েগুলির সম্মতিতেই এই অবাধ যৌনক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়, কিছু আতেল বাম বিষয়টা নিয়ে হুদাই পানি ঘোলা করতেছে! অথচ কে না জানে, কিছু মেয়ে বাহিরই হয় পোলাগো লগে ফস্টি-নস্টি করার লাইগা!” গা গুলিয়ে এল তন্ময়ের! ভার্সিটিতে সুজন ছিল ওর ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের একজন!

তবে সুজন কেন, পুলিশের যে বিবৃতি নিউজে দেখাল, তাতেও কেমন যেন কৌতুকের গন্ধ, মিডিয়ার চাপে ভিডিও ফুটেজ বের করা হলেও কিছু ফুটেজ পুলিশের হাতেই থাকল শুধু, তারপরও যেগুলো রিলিজ হল, তাতে যে দৃশ্য ফুটে উঠল, তা ভীড়ের সময় নারী-পুরুষের অতি স্বাভাবিক চাপাচাপি বই তো কিছু নয়!!! ছেলেগুলির কি দোষ? ভীড়ের মধ্যে ছেলেগুলির গায়ে মেয়েগুলি লেগে লেগে গেলে ছেলেগুলির দোষ?

প্রক্টর মহোদয়ও তেমন দোষ খুঁজে পাচ্ছেন না! বিষয়টি খুবই সাধারণ একটা ঘটনা! আসলেই নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠানে কিছু নারীকে উত্যক্ত করলে তা নিয়ে দেশ মাত করার কি আছে! সবই আতেল বামের কাজ!

দুইটা ছেলেকে হাতে-নাতে ধরিয়ে দিলেও পুলিশের সাধ্য হয়নি তাদের ধরে রাখার! পুলিশ কি করবে? ধৃত ছেলেদুইটার শরীর তন্ন তন্ন করে সার্চ করেও যে তারা কোন দোষ খুঁজে পায়নি!

তাও, মেয়েগুলির ভাগ্য ভাল, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা, স্পীকার, সংসদ উপনেতা সবাই নারী বলেই হয়ত এই যাত্রা আর তাদের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হচ্ছে না! নারী হয়েও তিনারা কিছু ‘অসভ্য নারী’কে প্রশ্রয় না দিয়ে নারী ক্ষমতায়নের নজিরবিহীন নজির সৃষ্টি করেছেন বৈকি!
ভীষন অস্থিরতায় ভুগতে থাকে তন্ময়!এত এত গুনী-জ্ঞানি, সমাজের মাথা - সবাই নিশ্চিন্ত, সবাই নিশ্চিত, কতগুলি কোমলমতি ছেলে কতিপয় উগ্র মেয়ের কারণে খানিক বিগড়েছে, সেই কারণে ছেলেগুলিকে কি আসলেই দায়ী করা যেতে পারে?

তন্ময়ও শেষমেষ যেন বিশ্বাস পাল্টাতে শুরু করে, আসলেই তো, ছেলেগুলির কি দোষ, যখন ছেলেগুলির পাশে আছেন চাচা, প্রতিবেশিনী আন্টি, অফিসের শিহাব ভাই, ছাত্রনেতা হারুন ভাই, বোজম ফ্রেন্ড সুজন, থানার ওসি, ভিসি, প্রক্টর, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, স্পীকার, সংসদ উপনেতা সহ পুরো সমাজটাই? আর ছেলেগুলিও এদের বই তো অন্য কারো নয়!

আর তন্ময় নিজেও তো একটা ছেলে, নাকি?

''সকালে অফিস ডাকছে-সব লোক, সমস্ত লোক
চান করছে খেতে বসে ন'টায় দশটায়
নিশ্চিন্ত প্রথায়/নিশ্চিন্ত প্রথায়/
রাতে বাড়ি ফিরে এসে কেউ দেখবে না
পর্বতপ্রমাণ মাটি, বিষমাটি, উঠে গেছে তাদের থাকার জায়গায়/
লোকগুলো কোথায়?/ লোকগুলো কোথায়?/ লোকগুলো কোথায়?'' (জয় গোস্বামী, মহানগর, ২০০৩)

।।।।।।।।।।।।।।।

অন্ধকুপ


মন্তব্য

ঈয়াসীন এর ছবি

চলুক

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

সমাজের নিয়ম আর ধর্মের দোহাই দিয়ে সবচেয়ে বেশি অপরাধ সংঘটিত হয়। সমস্যা হলো এই ধরণের অপরাধের ক্ষেত্রে মূল অপরাধী সবসময়েই সমাজের নিয়ম আর ধর্মের ঢালের পেছনে চলে যায় আর ভিক্টিমকে বারবার ক্ষত-বিক্ষত করে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আয়নামতি এর ছবি

চলুক
লেখা দিয়ে অতি বাস্তব ছবি দেখালেন রে ভাই। মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

বাস্তবের ছবি তুলে আনা সহজ, আয়নামতি, কিন্তু এমন এক জঘন্য বাস্তবের ঘেরাটোপে বন্দী হয়ে জীবন কাটানো কি যে দুঃসহ !

'হাঁটতে বড় কষ্ট, রাস্তা চেপে থাকে
বুকের ওপর।' (ধরিত্রী এখন নগ্ন, আন্তোনিও মাচাদো)

।।।।।।।

অন্ধকূপ

সুবোধ অবোধ এর ছবি

গতকাল এক বেকুবের সাথে অনেকক্ষণ তর্ক করলাম। ফলাফল শুণ্য!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

পোলাগুলো যদি ঠিক কাজ করে থাকে তাহলে আমরা বরং কয়েকটা কাজ করিঃ

১। পোলাগুলোকে সনাক্ত করে তাদেরকে গণসংবর্ধনাসহ রাষ্ট্রীয়ভাবে পুরস্কার দেবার জন্য দাবী তুলি।
২। তাদের বাবা-মাকে এমন সন্তান জন্ম দেবার আর এমন সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য রাষ্ট্রের তরফ থেকে ধন্যবাদ দেবার জন্য দাবী তুলি।
৩। ধর্ম ও সমাজ রক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য পোলাগুলোর মঙ্গল কামনা করে ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে বিশেষ প্রার্থনা আয়োজনের দাবী তুলি।
৪। রাস্তায় রাস্তায় বিলবোর্ড লাগিয়ে সেখানে "মেয়েরা উলটাপালটা পোশাক পরে বাইরে বের হলেই তাকে বিবস্ত্র করা হবে ও শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করা হবে" এমন সাবধানবানী দেয়ার দাবী তুলি।
৫। টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সারা বছর ধরে খবরের আগে পরে ও প্রাইম টাইমে ঐ দিনের ঘটনার ফুটেজ বার বার প্রদর্শন করে মেয়েদের উদ্দেশ্যে সাবধানবানী প্রচারের দাবী তুলি।

যারা 'পোলাগুলো ঠিক কাজ করেছে' বা 'পোলাগুলার দোষ নাই' বলে/মনে করে, কিন্তু উপরের দাবীগুলোর সাথে একমত না, তারা যেন আয়নায় বার বার নিজের চেহারা দেখে নিশ্চিত হয়ে নেয় সে কি এখনো মানুষ আছে নাকি কোন মনুষ্যেতরতে পরিণত হয়েছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে, পান্ডবদা, পচনের ইঙ্গিত প্রায় সর্বত্র! সত্য যে, কোন বাবা-মা-ই তার সন্তানকে মেয়েদের শ্লীলতাহানীর মত নোংরা কাজে অনুমোদন দেন না; কিন্তু আবার এই বাবা-মা-চাচা-মামার সুশীতল আশ্রয়ে বড় হওয়া অনেক সন্তান ছোট থেকেই শিখে নেয় যে, একটি মেয়ে পর্দায় মুড়ে চলা-ফেরা না করলে সে খারাপ, সে নষ্ট! আর এভাবেই নিছক পোশাকের কারণে, রুচি-অভ্যাসের ভিন্নতার কারণে, বা চিন্তা-ভাবনা-দর্শনের ভিন্নতার কারণে কাউকে ভীষন অশ্রদ্ধা করতে শিখে যায় সন্তানটি ছোট থেকেই! যেমন, ধরুন, একটি লোক শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ার কারণেই, তা যতই সে বিদ্বান-মর্যাদাবান হউক না কেন, ঐ সন্তানের ঠাট্রা-মস্করা-বিদ্রুপের পাত্র বনে যায়!! তো, একটি মেয়ের পোশাকের স্বাধীনতা আছে, তার ইচ্ছেমত চলা-ফেরার স্বাধীনতা আছে, কাজের স্বাধীনতা আছে - এইগুলিই তো স্বীকৃত নয় ঐ পারিবারিক শিক্ষায়, বরং যে মেয়েরা পর্দা করে না, যে মেয়েরা ঘরের ভিতর নিজেকে বন্দী করে রাখে না, সে মেয়েগুলি 'খারাপ জাতের', তারা 'নিকৃষ্ট, 'নষ্ট', 'অভিশপ্ত'- এহেন মনোভাবনা একসময় বিকৃতিতে রুপান্তরিত হয়ে বাবা-মায়ের প্রিয় সন্তানকে ইভিলে পরিণত করে!

সুতরাং, এরূপ পরিবারে বেড়ে উঠা সন্তানদের কাছ থেকে আমরা আর কি আশা করতে পারি? অথবা, এই সন্তানদের নষ্ট হওয়ার পেছনে পরিবার থেকে রপ্ত করা আজন্ম অশ্রদ্ধার শিক্ষনই কি দায়ী নয়?

এমন নয় যে, ইভ টিজিংয়ের ঘটনা অন্য দেশে, অন্য সমাজে ঘটে না। কিন্ত বৈশাখের শ্লীলতাহানী এবং তার পরে সান্নিধ্যে আসা বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষন এই বার্তাই দেয় যে, ঘটে যাওয়া ঘটনাটি নিছক কিছু ছেলের বিকৃত যৌনাকাংঙ্খার ফসল নয়, বা, সমাজের অতি বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়; বরং এর শিকড় সমাজের অনেক গভীরে প্রথিত সাম্প্রদায়িক শিক্ষায়! আমি গল্পের ছলে আর সত্যি অভিজ্ঞতাগুলোর আলোকে এই কথাটাই বলতে চেয়েছি হয়ত!

সবশেষে, আপনাকে কৃতজ্ঞতা জানাই, কারণ, আপনার আলোচনা ব্লগটিকে সমৃদ্ধ করেছে নিঃসন্দেহে!

অতিথি লেখক এর ছবি

ঐ ঘটনার পর থেকেই আমি আমার আশেপাশের মানুষজনের মাঝে কে ভাল আর কে পশু সেটা উপলব্ধি করতে পাচ্ছি।

রাসিক রেজা নাহিয়েন

রানা মেহের এর ছবি

আমার ধারনা যারা এই কাজগুলো করেছে পহেলা বৈশাখে তারা নিজেরাও ভাবেননি সমাজের কাছ থেকে এরকম ঢালাও সমর্থন পাবেন। আশার কথা হলো তন্ময়রাও নেহায়েত কম নয়, তারাও চুপ করে বসে নেই।

্সমাজ এবং পরিবার হল কিছু মডারেট মুসলমানদের মতো, তারা নিজেরা চাপাতি হাতে বের হয়না। কিন্তু অভিজিৎ দা অথবা ওয়াসিক খুন হয়ে যাবার পর বলে, এরকম করে লিখলো কেন?

তবে পরিবর্তন আসবে একদিন। এই তন্ময়দের হাতে ধরেই আসবে।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

মাসুদ সজীব এর ছবি

বর্ষবরণের দিনে নারীর উপর যৌন নির্যাতনে শত-শত ভন্ড প্রগতিশীলদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। শাহবাগ, অভিজিৎ হত্যা, পয়েলা বৈশাখ, প্রতিটি ঘটনা ভন্ড প্রগতিশীলদের মুখেশ একে একে খুলে দেয়। চারপাশে এত মুখোশধারী ভন্ড, এত অমানুষ দেখে কিন্তু আমাদের হতাশ হলে চলবে না। কবি আসাদ চৌধুরীর কবিতা ‘বারবারা বিডলার কে’ থেকে সাহস আর অনুপ্রেরণা খুঁজি।

বিবেকের জংধরা দরোজায় প্রবল করাঘাত করি
অন্যায়ের বিপুল হিমালয় দেখে এসে ক্রুদ্ধ হই,
সংগঠিত হই জল্লাদের শাণিত অস্ত্র
সভ্যতার নির্মল পুষ্পকে আহত করার পূর্বে,
সংগীত ও চিত্রকলাকে ধ্বংস করার পূর্বে
ছাড়পত্রহীন সূর্য কিরণকে বিষাক্ত করার পূর্বে
এসো বারবারা বজ্র হয়ে বিদ্ধ করি তাকে।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

শাব্দিক এর ছবি

"আচ্ছা, যাদের হাত দিয়ে আল্লাহ্‌র এই বিচার কার্য সম্পন্ন হইল, সেই বীরপুঙ্গবগণের জন্য একখানা দোয়া মাহফিলের আয়োজন করলে কেমন হয়, ভাই?"

এইটাই বাকি আছে।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

চরম উদাস এর ছবি

পরিবর্তন আসবে নিশ্চয়ই একদিন। তার আগ পর্যন্ত এই নিয়ে লিখে যান, সবাইকে জানিয়ে যান।

অতিথি লেখক এর ছবি

পরিবর্তন আসবে নিশ্চয়ই একদিন।

আসলেই। না আসলে এই সভ্যতার মৃত্যু ঘটত অনেক আগেই। পৃথিবীর ইতিহাস বলে প্রগতিশীলতার জয় অনিবার্য। তবে কথা হচ্ছেঃ
'খোলসের ভেতর-দেয়ালে
আমরা বাড়ছি দিনে দিনে/
আমরা কবে ডিম ফুঁড়ে বেরুবো?
আর কতকাল চলবে তা'-এর ওম?' (যিনি তা' দিচ্ছেন, গুন্টার গ্রাস)
।।।।।
অন্ধুকূপ

মরুদ্যান এর ছবি

উত্তম জাঝা!

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।