পার্থক্য শুধু ১ ইঞ্চি!

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ২৩/০৬/২০১৫ - ১:৪৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কখনও কোথাও কিছু লিখিনি , এই প্রথম এমন জায়গায় লিখবার জন্য বসলাম , ভাবিনি নিজের কথা কোথাও এইভাবে লিখতে হবে। শুরুতেই যেহেতু অনভিজ্ঞ তাই দোষত্রুটি থাকলে আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি হয়ত সব গুছিয়ে বলতে পারব না।

অনেকখানি সাহস সঞ্চয় করে অনেকটা রাগ আর জেদের বসে কীবোর্ডের সামনে বসা এই ভেবে যে হয়ত আমি-ই শুধু এই অবস্থার শিকার নই।
আমি বাংলাদেশের এক স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্যই স্নাতক পাশ ইঞ্জিনিয়ার।এই দেশের নিয়ম অনুযায়ী বিবাহ উপযুক্ত মেয়ে।এই "উপযুক্ত" শব্দটি আমার কাছে এখন হাস্যকর আর মূল্যহীন মনে হয়।কেন??? ভালো প্রশ্ন,কিন্তু উত্তরটি খুব-ই অপছন্দের হবে অনেকের কিংবা হাস্যকর , যা স্বাভাবিক।তাদের উদ্দেশেই আমার এই লেখা , শুধু তাদের কাছে কারন জানতে চাওয়া।

অনেকেই দ্বিতীয় প্যারাটি পড়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে আবারো সেই ফর্সা - কালোর আজন্ম বিতর্ক শুরু হবে।তাদের হতাশ করে বলতে হয় যে , নাহ! আমার কারনটি বড়ই উদ্ভট আর হাস্যকর , যা আমার কাছে মনে হয়। আমি শিক্ষিত সম্ভ্রান্ত মধ্যবিত্ত পরিবারের মোটামুটি সুন্দরী ভালো স্বভাবের মেয়ে-ই বলা যায়। তাহলে উপযুক্ত নই কি করে বলি?

আল্লাহ্‌ আমাকে প্রায় সব দিয়েছেন , বঞ্চিত করেছেন কিংবা বলা যায় পরীক্ষা নেয়ার জন্য যে আমি কত টুকু সহ্য করতে পারি তা জানতেই আমাকে সুন্দর করে ছোট্ট করে বানিয়েছেন, যার জন্য আমি পত্রিকার "পাত্রী চাই" বিজ্ঞাপনের প্রথম শর্তেই বাদ পড়ে যাই , "উচ্চতা"।আমি বামন নই , আমি লম্বাও নই , বড়ই উদ্ভট, আমার শুধু নেই ১ ইঞ্চি সেই সুউচ্চ ৫ ফুট কে ধরতে।অনেকেই ভাবছেন এই আর এমন কি?! "এই এমন কি" টাই আমার জীবনটাকে বিষিয়ে তুলেছে , আমার মা-বাবা কে সীমাহীন চিন্তার সাগরে ফেলে দিয়েছে , মানুষের কটাক্ষ করা কথা শুনতে বাধ্য করছে , তা সে আমার আত্মীয় হোক আর অপরিচিত ব্যক্তি।

"এই এমন কি" আমার জীবনের অনেক গুলো মূল্যবান বছর কেঁড়ে নিয়েছে , কেঁড়ে নিয়েছে কাউকে পছন্দ করবার অধিকার , কিংবা কারো আমাকে পছন্দ করবার সুযোগ। তারপরও যে একজন আমাকে আমার এইসব না দেখে আমার কাছে এসেছিলো জীবনের কোন এক সময়ে , তার চলে যাওয়ার কারনও এই।তার মা-বাবা চায়নি তাদের ছেলে একটা খাটো মেয়ে বিয়ে করুক। তাই কয়েক বছরের এক সাথে দেখা স্বপ্ন গেল খুব-ই সুন্দর করে কর্পূর বাতাসে যেমন করে উড়ে যায় , তেমনি গেল উড়ে। যদি বলেন যে হয়ত তারা সম্পর্ক মানেনি , নাহ! তারা আমার পরিবারের কিংবা অন্যকিছুর ব্যাপারে কিচ্ছু বলতে পারেনি , কারন আমার পরিবার সব দিক দিয়েই ভালো ছিল , নিজের বলে এইভাবে বলছি না , সত্তিকার অর্থেই। তাদের না মানার কারন শুধু এই একটাই ছিল। আমার পরিবার আমাকে একটি সুযোগ দিয়েছিল যা ছিল আমার কাছে অকল্পনীয় , আমার পছন্দের মানুষকে নিজের করবার সম্মতি ।কিন্তু তা কি বিচ্ছিরি ভাবে শেষ হয়! এই সবকিছু ভুলে সামনে এগিয়ে যাওয়া মোটেই সহজ ছিল না।তবুও আমি আমার পরিবারের দিকে তাকিয়ে নিজের চোখের কোণের অশ্রু মুছে সব তাদের হাতে ছেড়ে দেই।

এই শুরু হল খেলা। পুতুল খেলা। এক এক ঘটক আসে , তাদের সামনে আমার শো-অফ , তাদের চা-পানি , "বকশিশ" নেবার খেলা। এক এক জন আসে আমাকে দেখে , আর আমার ছোট বেলায় আমার নিজের নাম শোনবার চেয়ে বেশি শোনা কথাটি "আপনি আর ভাবি তো লম্বা আপনাদের মেয়ে এমন কি করে হল?" পুনরাবৃত্তি করে। আমার বাবা-মা সব বোঝায় , তারপর তারা তাদের জাদুর থলি থেকে এক একটা স্বর্ণ পায়রা বের করে। নমুনা?

আমার থেকে ১০-১২ বছরের বড় কোন লোক যার অন্তত ঐ বয়সে ১-২ বছরের বাচ্চা থাকবার কথা , নয়তো এক্কেবারেই অশিক্ষিত বলতে গেলে।আমার সমপর্যায়ের কারো টা যদি আমার হাতে ভুলেও আসে তাহলে ছোঁ মেরে নিয়ে বলে যে এরা তোমাকে পছন্দ করবে না।কারন জিজ্ঞেস করলে ঐ এক জিনিস-ই আওরায়। তারপরও আব্বু জোর করে বললে তারা ঐ ছেলের পরিবারকে আমার বায়োডাটা দেখায়।তারা আমার পরিবারের- আমার পড়াশোনার - আমার ঐ জিনিসটুকু বাদে যা আছে তার ভূয়সী প্রশংসা করে, সর্বোপরি "না" করে দেয়।কারন?! তাদের ভাষায়,"মেয়ের সব-ই ভালো কিন্তু মেয়ে তো খাটো কিভাবে হয় বলেন তো" , তা তাদের ছেলে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি-ই হোক আর ১০ ইঞ্চি!!! আমি সবার জন্যই খাটো!

মাসের পর মাস এগুলো দেখছি।আমি ক্লান্ত।আমি হতাশ।আমি বিরক্ত।নিজেকে নিয়ে বিব্রত।আর আমার বাবা-মা চিন্তায় অস্থির তারা এখন কি করবেন।মেয়ে বিয়ে তো দিতে হবে নাহলে সমাজ কি বলবে?! সবার টা দেখি , সবার শুনি।কিন্তু কাকে কি বলব বুঝি না , কি করব জানি না। মনে অনেক পরশ্ন আমার এই শিক্ষিত পরিবারের বাবা-মা আর তাদের সুশিক্ষিত ছেলেদের কাছে...

ভালো কথা তোমরা বাংলাদেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলে কিন্তু তোমরা নিজেদের শিক্ষিত কেন বল??? কি হিসেবে বল??? যদি তোমরা জীবন সঙ্গী বেছে নেবার ক্ষেত্রে ঐ মানুষ টার থেকে তার শরীর নিয়ে বেশি বিশ্লেষণ করো! মানুষটার স্বভাব চরিত্র শিক্ষা দিক্ষা তোমাদের কাছে কোন মূল্যই কি পায় না??? তোমরা কি আসলেই জীবনসঙ্গী চাও , নাকি ঘর সাজানোর শো-পিস??? যদি শো-পিস চাও , বাজার থেকে কিনে আনো।আমার মতো আর কত মেয়ে এমন সব তুচ্ছ কারনে কটাক্ষ করবে তোমরা??? আর সমাজকে আর এসব ছেলের শ্রদ্ধেয় মা-বাবাকে বলতে চাই যদি না পারেন চিন্তা বদলাতে, তবে বিয়ের প্রথা বিলীন করে দিন আমার মতো মেয়েদের যাতে আমরা অন্তত শান্তিতে বাঁচতে পারি নিজের মতো করে। বিনা দোষে কালা পানি কয়েদিদের মতো অবস্থা আর নিজের মনের ইচ্ছার বিসর্জন দিয়ে কেন বাঁচতে হবে আমাদের???

সর্বোপরি মন্তব্বকারিদের উদ্দেশে: ভাইয়া-আপুরা এইখানে মন্তব্য করে কি লাভ হবে বলেন? শেয়ার করতে পারেন যাতে আপনার মতো অন্যদের মাঝেও এই তুচ্ছ ব্যাপারটি বোধগম্য হয় কিনা,দেখেন নিজের ভাইদের বিয়ে সময় এইসব এড়াতে পারেন কিনা...

ধন্যবাদ সকলকে ধৈর্য ধরে আমার লেখাটি পড়বার জন্য হাসি

ছবি: 
24/08/2007 - 2:03am

মন্তব্য

তিথীডোর এর ছবি

(বড়সড়) শরীর না থাকলে মেয়েমানুষের আর দাম কী? আপনি এই জিনিস এখনো ধরতে পারেননি!
ধুরো মিয়া!

বাই দা ওয়ে, আরো দুই পাতা যোগ করার ছিলো।

ক) স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ ইঞ্জিনিয়ার হয়েও বিয়েভাবনা নিয়ে এখনি এমন ক্লান্ত কেন? এমএস করুন, পারলে পিএইচডি করতে ঘুরে আসুন দেশের বাইরে থেকে। নয়তো দেশেই চাকরি নিন বা পড়ুন আরো। জীবন তো ফুরিয়ে যায় নি।

খ) এই লেখা শেয়ার যারা দেবেন বা 'কালো তা সে যতোই কালো হোক' টাইপের ব্লগটগ যারা খুব হৈ হৈ করে শেয়ারটেয়ার দেন, নিজের ভাইদের বিয়ের সময় ঐসব আপু-ভাইয়ারাও টিপিক্যাল আচরণ-ই করবেন, করেন বা করেছেন।
নিজের ভাই, নিজের বন্ধু, নিজের চাচা/মামা/দেবরের জন্য পাত্রীসন্ধানের সময় আমরা সবাই টিপিক্যাল হয়ে যাই বলেই অবস্থা বদলায় না।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

পারিবারিক সমস্যার জন্যই এত তাড়াহুড়ো আপু , নয়তো আজকাল কোন মেয়ে চায় নিজের কিছু না করে আরেক জীবনে পা দিতে... চেষ্টা যে করিনি বুঝাতে তা নয় , কিন্তু পরিস্থিতির কাছে অনেক সময় অনেক অকাট্য যুক্তি থাকলেও হার মানা লাগে , আমার হয়েছে এই দশা। আমার মা-বাবার দুইজনের দিক দিয়ে আমি-ই প্রথম মেয়ে যে এতো দূর এসেছে , তাই একা বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়ার মতো মানসিকতার আবির্ভাব এখনও আসেনি , যার অধিকাংশ কারন-ই দূর করবার ক্ষমতা নেই আমার , মানুষ আপনজনদের কাছে সবচেয়ে দুর্বল।

অতিথি লেখক এর ছবি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনি গ্র্যাড কমপ্লিট করেছেন আর নিজের ভাবনা, নিজের জীবন নিয়ে বাবা-মার সাথে ঠিককরে কথা বলতে পারেন না! তাদেরকে আপনার লাইনে নিয়ে আসতে পারছে না! অ্যাঁ

পরিস্থিতি মেনে নেয়ার সংস্কৃতিটা খুব খারাপ, খুবই খারাপ।

আপনাকে খুব কড়াকরে কিছু কথা বলা উচিৎ। এত ধৈর্য্য নেই। আমার ধারণা আপনার বর একটা পার্সোনালিটিল্যাস পাবলিক হবে, যেমন আপনি নিজে! (ধারণা!)

areef Areef.Hassan@gmail.com এর ছবি

লেখাটা একটু অগোছালো মনে হলেও আপনার বক্তব্যটি বোঝা গেছে। আপনার সাথে সমব্যথী হবার মতো ভনিতাটা নাই বা করি। আর এতো হতাশ হবার কোনো কারণ দেখি না আপু। কিছু মনে করবেন না একটা কথা বলি, আপনার বিয়ে করতেই হবে অথবা এখনই করতে হবে এত তাড়াহুড়োর কি বিশেষ কোনো কারণ আছে? আপনার ক‌্যারিয়ারের দিকে মনোযোগ দিলে হয়না? কোথাও পোস্ট গ্রাজুয়েট এ ঢুকে যান বিশেষ করে দেশের বাইরে কোথাও। আপনার খুঁজতে হবেনা যার দরকার আপনাকেই খুঁজে নিবে। নিরন্তর শুভ কামনা রইলো! ভালো থাকুন সব সময়!

লিপটন এর ছবি

ধন্যবাদ আপু,আপনার লিখা টা ভালো লাগছে। এটা যে শুধু মেয়েদের ক্ষেত্রেই হচ্ছে এমনটি নয়। "সবই ঠিক আছে, ছেলেটা একটু লম্বা হলে ভালো হতো। ছেলে লম্বা না হলে মেয়ের সাথে মানাবে না।" এই মানানো বলতে কি বুঝায় এইটাই বুঝলাম না। প্রবাসে থাকার কারণে পাত্রীর খোজ কমই আসছে , আর আসলেও তাদের ঐ একই ঘ্যানঘ্যানানি। আপনার মতো করে বলতে হচ্ছে পাত্র ৫.৪' লম্বা , ফর্সা ,ইঞ্জিনিয়ার এরপরও শ্রদ্ধেয় পাত্ত্রীর বাবা মায়েদের চাওয়ার শেষ নাই হাসি বিয়ে চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন..পড়াশুনার জন্য বাইরে চলে আসতে পারেন। ... একলা জীবন অনেক সুন্দর !অনেক !!

তিথীডোরের "(বড়সড়) শরীর না থাকলে মেয়েমানুষের আর দাম কী?" কোটেশনটা ভালো ভাবে নিতে পারছি না দুঃখিত !!

মেঘলা মানুষ এর ছবি

@ লিপটন: সার্কাজম (Sarcasm) বলে একটা শব্দ আছে, সেটাও মাথায় রাখুন।

মরুদ্যান এর ছবি

আমি প্রথমে ভাবসি লিপ্টন সার্কাজমের ট্রাই করতেসে অ্যাঁ হাহাহা

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

মণি এর ছবি

প্রায়ই মেয়েরা কেমন বর চায় জানতে গেলে লম্বা-চওড়া হতে হবে বলে।সেটাতে সমস্যা নেই ?সেখানে তো কেউ সেই মেয়ের অশিক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তোলে না ?

হিমু এর ছবি

আপনার ক্ষোভটা বুঝতে পারছি। আপনি সারা জীবন ধরে যেসব যোগ্যতা অর্জন করেছেন, সেগুলো তুচ্ছ হয়ে যাচ্ছে আপনার নিয়ন্ত্রণে নেই এমন একটা ফ‌্যাক্টরের কাছে, যেটার খুব বেশি গুরুত্ব থাকা অনুচিত বলে আপনি মনে করছেন।

কয়েকটা ছোটো পর্যবেক্ষণ:

১. বিরামচিহ্নের পর স্পেস দিতে হয়।

২. আপনি আর ভাবি তো লম্বা আপনাদের মেয়ে এমন কি করে হল?, এই কথাটার মাঝে একটা ফ্যাক্ট লুকিয়ে আছে, যে চর্চার জন্যে আপনি সম্ভাব্য পাত্রদের তিরস্কার করছেন, সেটি আপনার বাবাও চর্চা করেছেন।

একটা ছোটো প্রশ্ন, আপনি নিজে কি চার ফুট লম্বা কোনো ছেলেকে বিয়ে করবেন? অবচেতনে উচ্চতা আপনার এবং আপনার বাবা-মার কাছেও কিন্তু একটা ফ‌্যাক্টর, যে কারণে আপনার তিরস্কারের পাত্ররা সবাই আপনার চেয়ে লম্বা।

এমন একটা পদ্ধতি বেছে নিন, যেখানে স্পেক শিটের বদলে আপনার সঙ্গেই কোনো মানুষের সরাসরি এতো হাবভাব হবে যে গজফিতার আর দরকার পড়বে না। শুভকামনা।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ আপনার পর্যবেক্ষণের জন্য। আপনার দ্বিতীয় কথাটির উত্তর আমার বাবা ছেলে হিসেবে অ্যাভারেজের চেয়ে কম কিন্তু বেশি কম না, আমার মা লম্বা। আমার দাদা ছিলেন ৬ ফুট , দাদী ছিলেন ৫ ফুট ১ ইঞ্চি। আমি হয়েছি দাদীর মতো খানিকটা। জেনেটিক্স যদি বুঝে থাকেন তো আপনি আপনার ছোট প্রশ্নের উত্তর-ও পেয়ে যাবেন এর মাঝে আশা করছি।

হিমু এর ছবি

আমার ছোটো প্রশ্নের উত্তর আপনি দিতে না চাইলেও কোনো সমস্যা নেই। আমি জেনেটিক্স অাবছা আবছা বুঝি, তাই ধরে নিচ্ছি আপনি জেনেটিক্সের ঘাড়ে বন্দুক রেখে নেতিবাচক উত্তর দিচ্ছেন। সেক্ষেত্রে যাদের বকা দিচ্ছেন, আপনিও তাদের দলেই তো পড়লেন। আপনার বকা খাওয়া ছেলেরাও হয়তো আপনার মতো করেই জেনেটিক্স বোঝে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আবছা বুঝেন দেখেই ধরে নিয়েছেন যে আমার কথাটি নেতিবাচক , পুরো যদি বুঝতেন তাইলে ধরতেই পারতেন যে দুই পক্ষের সামঞ্জস্য রাখবার ব্যবস্থা হতো। আমার বকা খাওয়া গুলো বোঝেনা দেখেই তো আমার এই লিখতে বসা ভাই!

হিমু এর ছবি

আপনার বর আপনার চেয়ে খাটো হলে দুই পক্ষের সামঞ্জস্য আর থাকবে না বলছেন? তার স্বভাব চরিত্র শিক্ষাদীক্ষার কোনো মূল্যই দেবেন না? শুধু শরীরটা বিশ্লেষণ করবেন?

মন মাঝি এর ছবি

চলুক

****************************************

মরুদ্যান এর ছবি

ম্যাঁও

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

আপনার লেখাটি পড়ে পরিচিত কিছু মানুষের গোপন বেদনা নতুন করে উপলব্ধি করছিলাম।

মন্তব্য বিভাগে এসে মনে হচ্ছে, শুধু দু:খের গান শোনাতে আপনি আসেননি। এসেছেন ক্ষোভ প্রশমনের জন্য। মৃদু সমালোচনার জবাবে আপনার বক্তব্য কর্কশ হয়ে উঠতে চাইছে। গরিবের সামান্য পরামর্শ, অন্যের জ্ঞানের গভীরতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার আগে তার জানাশোনার পরিমাণটি জেনে নেয়া ভালো।

আপনার সকল সমস্যা দূর হোক, শুভকামনা।

অতিথি লেখক এর ছবি

ছেলেদের প্রতিও একি ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি আছে, তবে আমার মনে হয় মেয়েদের ভোগান্তির তুলনায়, তা বেশ খানিকটাই কম। আমি প্রচুর খাটো ছেলে আর তার পরিবার কে জানি, যারা নিজের ছেলের জন্য লম্বা মেয়েই খোঁজে, কিন্তু মেয়েরাতা করেনা, সেটা মেয়েরা খুব ভাল সে জন্য নয়, সেটা এই সমাজের বাস্তবতা, এক্টা খাটো এবং কাল মেয়ে তার উল্টো বৈশিষ্ট্য এর ছেলে খুজলে, তার বিয়ের জন্য পাত্র খুঁজে পাওয়া এক প্রকার অসম্ভব। সবারই মানসিকতা পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে, তবে তার মানে এই ক্ষেত্রে ছেলে আর মেয়েদের সমস্যা কে পরিমানগত দিক থেকে সমান দেখা ভুল, গুনগত দিক থেকে ভাবলে হয়তো ঠিক আছে।
অনন্যা

হাবিব এর ছবি

গল্পে উপন্যাসে যাই থাকুক না কেন বাস্তব জীবনে ছেলেরা সুন্দর চেহারার ও সুন্দর গরনের (গায়ে মাংস আছে, হাতালে নরম অনুভূত হয়) মেয়ে পছন্দ করে/ প্রেমে পরে/ বিয়ে করতে চায়। ভারতীয় উপমহাদেশের ছেলেরা ফর্সা চামড়া পছন্দ করে (এজন্য তামিল মুভিতে সব চরিত্রে কালো চেহারার লোক থাকলেও নায়িকাকে পাউডার দিয়ে সাদা বানানো হয়)

মেয়েরা লম্বা ছেলে পছন্দ করে, নিজের চেয়ে এক হাত খাটো কোনো ছেলেকে পছন্দ করে/ প্রেমে পরে/ বিয়ে করতে চায় এমন ঘটনা খুব কমই ঘটে। বিয়ের ক্ষেত্রে ছেলের আর্থিক বিষয়টি অনেক বড় করে দেখে।

সুন্দর চেহারার একটি ছেলে যদি কালো কোনো মেয়ের সাথে রাস্তা দিয়ে হেটে যায় তখন লোকজন এমন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে যে ছেলেটির ভালবাসা উবে যায়, সাহস হারিয়ে ফেলে।

যে গুটি কয়েক লোক সমাজের চিরাচরিত নিয়মের উল্টোটি করে তাদেরকে অনেক হেয় প্রতিপন্ন হতে হয়। বাক্তিগত অভিজ্ঞতা ও নিজের চোখে দেখা অন্যদের ঘটনা থেকে আমার এই মূল্যায়ন [হাবিব]

মন মাঝি এর ছবি

একটা কৌতুহলঃ আপনি কি একটা সাড়ে তিন ফুটি ছেলেকে বিয়ে করবেন - "স্বভাব চরিত্র শিক্ষা দিক্ষা"-য় সে যদি আপনার সমকক্ষ হয়?

****************************************

আয়নামতি এর ছবি

আপনার উচিৎ হবে নিজের মন কী বলে সেটা শোনা। সেটা যদি বিয়ের প্রতি অনীহা হয় বাবা মা কে বুঝিয়ে বলুন। পৃথিবীর সবাইরে ঘর সংসার করতেই হবে এমন কথা কই লেখা আছে? এরকম হুড়ুম ধুড়ুম বিবাহের চিন্তা বাদ দিয়ে ক্যারিয়ারটাবুলেট প্রুফ করে ফেলুন। তারপর দেইখেন কত্তজনে 'ম্যারি মী' সাইনবোর্ডে নিয়ে সামনে এসে দাঁড়ায়। বুদ্ধি তো ভালই দিলাম নাকি!

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

ক্লাস নাইন টেনে পড়ার সময় বিষয়গুলো কষ্ট দিত। তারপর থেকে হাসি পেতো। আর এখন উঁচু জুতার বদলে ডকটরস চয়েস। আমার মেয়ে এখন ঘাড়ের পাশে দাঁড়িয়ে বলে, মা, তুমি এ্যাতে ছোট ক্যানো? ক্লাস ফাইভের মতো? আমি তখন ওর সাথে মজা করি, মা, আমার পেটটা অনেকবড় তাই ওখানে তোমাকে ঢুকিয়ে রাখতে পেরেছিলাম। ছোট হওয়াতে সমস্যা হয় নাই।
আর এখন আমার মেয়ে বলে, মা, বাবার খালি না, আর না কে হ্যাঁ করাই তোমার কাজ, তাই না মা?
শরীর, কণ্ঠস্বর, গায়ের রঙ ছেলেমেয়ে উভয়ের জন্যই বিয়ের সময় আশেপাশের মানুষ, অভিভাবকদের কাছে বড় ইস্যু হওয়া দেখতে দেখতে বড় হয়েছি। আপনি চাইলেই, এমন উচ্চতায় যেতে পারেন যেখানে মই দিয়েও কেউ ধরতে পারবে না। এই মন খারাপগুলো পাত্তা দিলে কষ্ট বাড়বে। ঝেড়ে ফেলুন, দেশের বাইরে যাবার দরকার নেই, দেশে থেকেও ছেলে বা মেয়ে হিসেবে এমন কিছু করা যায় যখন আয়নামতির কথামতো

দেইখেন কত্তজনে 'ম্যারি মী' সাইনবোর্ডে নিয়ে সামনে এসে দাঁড়ায়।

শুভকামনা রইল। আপনার শারিরীক গড়নের জীবনটাকে মুঠোতে নিয়ে একদিন দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াবার গল্প লিখবেন, সেই প্রত্যাশা রইল।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

মাসুদ সজীব এর ছবি

পারিবারিক বিয়েতে কিছু ট্রেডিশনাল বিষয় থাকে বাঙালির।
ছেলেদের ক্ষেত্রে মেয়ের বয়স কম, দেখতে সুন্দরী (অবশ্যই ফর্সা), মোটামুটি লম্বা।
মেয়েদের ক্ষেত্রে ছেলের শিক্ষাগত যোগ্যতা, চাকরি/ব্যবসা (যত মোটা অংকের বেতন পায় পাত্রী তত সহজলভ্য হয়)।

একটা বিষয় লক্ষ্য করলে দেখবেন দুজনের চাওয়া কিন্তু অভিন্ন নয়, বরং পুরোপুরি বৈসাদৃশ্যে ভরপুর। শিক্ষিত থেকে অশিক্ষিত আমাদের সমাজের সব স্তরেই এই চর্চা বিরাজমান। প্রেম ছাড়া একজন বড় ডিগ্রীধারী মেয়ে যেমন বেকার কোন ছেলেকে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করবে না তেমনি দেখতে সুন্দরী না হলে একটা ভালো চাকরি করা ছেলেও সুন্দরী নয় এমন মেয়ে কে বিয়ে করবে না (যদি না অর্থের লোভ না করে)। সুতরাং এ জয়-পরাজয়ের খেলা চলবেই যতদিন না পর্যন্ত মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি আরো উদার না হয়।

আপনি সদ্য পাশ করা আপনার লক্ষ্য রাখুন আরও ভালো জায়গায় নিজেকে নিয়ে যাওয়ার। ভালোবেসে কেউ যদি পাশে দাঁড়ায় তাহলে হাত ধরুন না হলে বিরহে বসে থাকার কোন অর্থ নেই। জীবন বিরহের জন্যে নয়, জীবন উপভোগের, জীবন দায়িত্বের। জীবন কে নানা ভাবে উপভোগ করা যায়, কাজের মাধ্যমে, সৃষ্টির মাধ্যমে। সেই চেষ্টা করুন। শুভ কামনা।

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

মাসুদ সজীব ভাইয়ের মন্তব্যে (Y)।
তবে একটু যোগ করি, যেহেতু আমাদের দেশে 'বিয়ের বয়সে' অবিবাহিত/ অবিবাহিতা থাকবার ক্ষেত্রে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের ভোগান্তি ও চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি, তাই 'অযোগ্য' ছেলে দের তুলনায় 'অযোগ্য' মেয়েরা অনেক বেশি হয়রানির মধ্য দিয়ে যান, কারণ আমাদের দেশে শুধু মাত্র ছেলে হওয়াটাই একটি গুন বলে বিবেচিত হয়।
অনন্যা

পদ্মাচর এর ছবি

এই আগুনে পুড়িয়ে খাবো আমার আলুখানি

কল্যাণ এর ছবি

অফ যা

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

আবদুর এর ছবি

আমার মনে হয় আপনার একটু ধের্য্য ধরা উচিত, আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি
১) আমার এক আত্মীয়া যিনি উচ্চতায় খাটো, রঙ্গে কালো, পড়া-লেখায় নাম লিখতে পারে এমনতর বেগুণে গুণান্বিত। উনার প্রায় বছর দশেক দেখা-দেখি নামক উপদ্রব শেষে বিয়ে হয়েছে, উপরওয়ালার ইচ্ছায় ভালোঘর এবং ভালো পাত্রের সাথে। উনি কখনো এই নিয়ে মন খারাপ করেননি, বা উনার পরিবার ও সত্যি অর্থে কখনো এই নিয়ে মাথা ব্যথা করেননি।

২) আমার ভাতিজি যে কিনা উচ্চতায় সাড়ে পাঁচ ফুট, রঙ্গে ফর্সা, পড়া-লেখায় মাস্টার্স, সরল অর্থে সুপাত্রি । তার বিয়ের ব্যাপারেও একটা সমস্যা দেখা গেল মেয়ের নাকি বয়স বেশি! আচ্ছা বলুনতো ১৬ বছরে কি মাস্টার্স ডিগ্রী নেয়া যায়!? আমাদের সমাজটা সত্যি দারুন!
এধরণের সমস্যা হাজারটা পাবেন।

আপনার ভাই আছে কিনা জানিনা, যদি থাকে আপনি বলুনতো আপনার ভাইকে এমন কাউকে বিয়ে করাবেন কিনা? বিশেষত যেখানে অনেক বিকল্প পাওয়া যায়।
অন্য কথায় বলা যায় নিজের উপর আস্থা থাকলে আসলে কোন সমস্যাই সমস্যা নয়।
শুভ কামনা রইল।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি নিজে ছোট্টখাট্ট, সোজা কথায় বাইট্টা। তাতে কী-ই বা এমন হলো বলুন তো? নিজের প্রতি বিশ্বাস আর আস্থা রাখুন-বিয়ের চিন্তা আপাতত নাই বা করলেন।

অফ টপিক-আমার বন্ধুকে দেখেছি শহরের সবচাইতে নামকরা কলেজের শিক্ষক হয়েও বারবার এই বিয়ের ব্যাপারে হতাশ হয়ে যেতে, কান্নাকাটি করতে। তারপর যেই না সে সরকারি চাকুরিতে জয়েন করল গতবছর, প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে-মাস দুয়েক পরই কত কর্মকর্তা হাজির দেঁতো হাসি । একটাই জীবন, বিয়ে না করলে কী-ই বা এমন হবে? আর করলেও আগে নিজের ক্যারিয়ারটা ঠিকঠাক করুন, সব ঠিক হয়ে যাবে। শুভকামনা।

দেবদ্যুতি

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

যদিও পরিস্কার করে কিছু বলেন নি, তবুও মনে হচ্ছে আপনি বা আপনারাও পাত্রের জন্য একটা মানদণ্ড স্থির করে রেখেছেন। এবং সেটা সনাতনী ধারার বাইরে কিছু নয়। আপনি যদি এখন থেকে পঞ্চাশ বছর আগের একটা সময়েও জন্ম নিতেন, তা হলে আপনার জন্য কিঞ্চিৎ উদ্বিগ্ন হওয়া যেত, কিন্তু আপনার পরম সৌভাগ্য যে আপনি জন্মেছেন তুলনামূলক ভাবে অনেক অনুকূল একটা সময়ে। যে কারনে একজন তথাকথিত লম্বা পাত্র আপনাকে বিয়ে করতে এগিয়ে আসছে না, সম্ভবত সেই একই কারনে আপনিও একজন বেঁটে ছেলেকে হিসেবের মধ্যে আনতে চাইছেন না। সনাতনী ভাবনায় একজন মেয়ের জন্য একজন উচ্চশিক্ষিত এবং সচ্ছল পাত্র প্রয়োজন, কিন্তু আপনার তো এ ক্ষেত্রে প্রথা ভাঙ্গার সুযোগ আছে। অনেক শিক্ষিত ছেলে যেমন এমন স্ত্রী কামনা করে, যে সংসার দেখে শুনে রাখবে, বাচ্চা কাচ্চা যথাযথ ভাবে লালন পালন করবে, একজন শিক্ষিত মেয়ে হিসেবে আপনার সামনেও এর উল্টোটা পছন্দ করার অপূর্ব সুযোগ রয়েছে। আপনার পছন্দসই উচ্চতাবিশিষ্ট, শরীর স্বাস্থ্য চেহারা সুরত ভাল, চলনসই স্মার্ট, হয়ত কবিতা বা সঙ্গীতেও আগ্রহ আছে, শুধুমাত্র লেখাপড়ায়(আপনার তুলনায়) এবং আয় উপার্জনে লবডঙ্কা- এমন একটা অসহায় পাত্রের দায়িত্ব তো আপনি অবলীলায় গ্রহন করতে পারেন! ভেবে দেখুন, হেলায় সুবর্ণ সুযোগ হারাবেন না।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার এত ক্ষোভ মন খারাপ কেন!! আমি নিজের কালো, বেটে, ৫'-২'' পুরো না, এবং মুটিয়ে গেছি। এবং আমারও বিয়ের বয়স হয়েছে, মানে স্নাতক সম্পন্ন হয়েছে। তবে এখন বিয়ে করবো না বলে এই ধরণের ঘটনা ঘটা শুরু হয় নাই। তবে আমি রেডি আছি এমন ঘটনা আমার সাথে ঘটবে। এবং সত্যি বলতে কিছুটা খুশিও। প্রকৃতি আমার দেহে এত সব ফিল্টার বসিয়ে দিয়েছি যে আমার কপালে দেহ লোলুপ স্বামী জোটার কোনও সম্ভাবনা নাই। আর যদি কেউই না জোটে সেটাও আমার জন্য কোনও সমস্যা না। হাসি

নাবিলা

নীলকমলিনী এর ছবি

বিয়ে করতেই হবে কেন? শুধু বাবা মা না, মনে হচ্ছে আপনি নিজেও বিয়ের জন্য অস্থির হয়েছেন। এত পড়া লেখা করে তাহলে হলো টা কি? এরেঞ্জ ম্যারেজ হলে এইরকম নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যপারের মধ্যে দিয়ে যাওয়া কোন আশ্চর্য বিষয় নয়। বাবা মা কে বাবা মার কাজ করতে দিন, আপনি নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেস্টা করুন, বলতে চাচ্ছি শক্ত করে দাঁড়াতে। আপনাকেও যদি খাটো আর লম্বা ছেলের চয়েস দেয়া হয় আপনি কোনটা পছন্দ করবেন? আমার তো মনে হয় সব দোষ আপনার বাবা মার। উনারা যদি নিজের মেয়েকে সমাজ কি ভাবছে বলে বার বার ই ছেলে পক্ষ কে দেখিয়ে বেড়াচ্ছে সেখানে ছেলে পক্ষের আপনার উচ্চতার জন্য বাদ দিতে বাঁধা কোথায়। বাবা মা কে আপনার লেখাটি মন্তব্য সহ পড়তে দিন। এমন অনেক ছেলে আছে যে শুধু আপনাকেই চাইবে অন্য কিছু নয়। সেই ছেলেটির সাথে আপনার এখনো দেখা হয়নি।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল লাগল আপনার লেখাটি পড়ে । চারআনা যোগ করি আপনার কথার সাথে । হয়ত আপনার কষ্টের অথবা আমার ক্ষোভের কিছুটা লাঘব হবে। কষ্ট করে মানুষ হওয়া নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে আমি। একটি স্বনামধন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে প্রথম শ্রেনির কর্মকর্তা হিসেবে প্রায় তিন বছর ধরে কর্মরত। আমার ভাল মানুষ ব্যাবসায়ী পিতার জীবনে অর্জিত জাগতিক সম্পদ খুবই কম।

চাকুরিতে প্রবেশ করার প্রায় এক বছর পর আমার বিয়ের জন্য টুকটাক কথাবার্তা আরম্ভ হয়। আমার দিক থেকে একটাই চাওয়া ছিল- আমার হবু জীবনসঙ্গী যেন অন্তত স্নাতক পাশ হয়। অন্যকোন কিছু ভেবে নয় –সারাটা জীবন যার সাথে থাকব তার সাথে যেন জৈবিক প্রয়োজনের জন্যই না থাকি, একটি চমৎকার গল্প/কবিতা/ব্লগ পড়ার পর আমার অনুভূতিটুকু যেন তার সাথে ভাগ করে নিতে পারি, কখনও আমি না থাকলে অথবা সে নিজের পরিচয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চাইলে সে যেন তার জীবন কে সুন্দর করে সাজিয়ে নিতে পারে সেই ভেবে।

বেশ কয়েকটি পরিবারের সাথে কথা বলার পর প্রতিবারই দেখি আলোচনা একটা পয়েন্টে এসে থেমে যায়ঃ- আমাদের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা। আগেই বলেছি আমার পিতার জাগতিক সম্পদ খুবই কম, রাতারাতি তা বৃদ্ধিও পাবেনা। আমার পরিবার থেকে সব সময় অন্যায় করা বা ঘুষ নেয়াকে ঘৃণার চোখে দেখার জন্যই শেখানো হয়েছে এবং আমার চাকুরিতে তার সুযোগও নেই, তবে চাকুরিতে প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধাগুলো সঠিকভাবে ব্যাবহার করতে পারলে মধ্যবয়সের পর সাছন্দ্যপূর্ণ জীবন যাপন করা সম্ভব। এগুলো জানার পরও প্রতিবারই পাত্রীর পরিবার পিছিয়ে যায় এই ভেবে যে আমাদের পরিবারে এসে তাদের মেয়েকে যদি তাদের পরিবারের মতই কষ্টের জীবন যাপন করতে হয় তাহলে মেয়েকে এত এত পড়ালেখা করিয়ে কি লাভ হল ?

যে পরিবারের সাথে কথা সবচেয়ে বেশী এগিয়েছিল সেই পরিবারের প্রধান আমাকে ফোন করে দুইটা শর্ত দিয়েছিলেন তাদের মেয়েকে আমার জীবনসঙ্গী করে পাবার জন্য ১। বিয়েতে ___ টাকা কাবিন এবং ___ ভরি স্বর্ণ দিতে হবে। ২। বিয়ের পর বাবা মাকে ছেড়ে আলাদা বাসা নিতে হবে। আমি শুধু বলেছিলাম আপনার শর্ত আপনার মেয়ে অথবা আমার কারও জন্যই সম্মানজনক নয়, জানিনা তিনি বুঝেছিলেন কিনা আমার কথা নাকি আমার অক্ষমতাকে মনে মনে উপহাস করেছিলেন।

আমার বিয়ে নিয়ে এই ঘটনাগুলোর পর আমার উপলব্ধি হল জীবনকে পরিপূর্ন ভাবে অনুভব করা বা তাকে সার্থক করে তোলার জন্য বিয়েটা অত্যাবশ্যকীয় কিছু নয় অর্থাৎ দুজন মানুষের মনের মনের মিল না হলে শুধু সমাজের কথা চিন্তা করে বিয়ে করার কোন মানেই হয় না। আর ছোট্ট একটা সিধান্ত নিয়েছি, বিয়ে করতে হলে নিজের উপার্জনের থেকে আমার পরিবারের জন্য খরচ করার পর যতটুকু সঞ্চয় করতে পারি তা দিয়েই করব। আমার পরিবার অথবা অন্যকারো থেকে এক পয়সার সাহায্যও আমার বিয়ের জন্য আমি নেব না।

একদিন আপনার পরিবারের খুব আনন্দের একটা গল্প এই সচলায়তনেই পড়ব এই প্রত্যাশায় আপনার জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা রইল।

আমি তোমাদের কেউ নই

কল্যাণ এর ছবি

আপনার লেখাটা পড়লাম, সেই সাথে মন্তব্যগুলোও। ভেবেছিলাম কিছু লিখব না, কিন্তু না লিখে পারা যাচ্ছে না।

আমার এর পরের কথাটা খুব রুড হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আপনার লেখাটা পড়ার পর শুধু মনে হচ্ছে আপনার স্নাতক পাশের সার্টিফিকেটটা ছিড়ে একটা পলিথিন ব্যাগে করে আপনার শিক্ষিত ও সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্যদের হাতে দিয়ে দিন, তারপর ফুলটাইম ঘটকের সামনে বসে পড়ুন।

আশা করি আপনার সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে আপনার শিক্ষা আর মেধা কাজে লাগানোর মত মনোবল আপনি যোগাড় করে নিতে পারবেন। লেখালিখি চলুক।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

মরুদ্যান এর ছবি

চলুক

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আপনার নিজের যে যোগ্যতা আর উচ্চতার বর্ননা দিয়েছেন তাতে আমার মনে হয়েছে আপনার সমস্যাটা এমন গুরুতর কিছু না। আপনি একটু বেশী চিন্তা করছেন মনে হয়েছে। এরকম সমস্যা তো ছেলে মেয়ে উভয়ের হতে পারে। হতাশ হবার দরকার নাই। যেহেতু যোগ্যতা আছে, আত্মবিশ্বাসটা চাঙা রাখুন। হয়তো ঠিক মানুষটির দেখা পাননি বলেই এখনো আপনার কাছে ব্যাপারটা জটিল মনে হচ্ছে। এর চেয়ে অনেক বেশী জটিল সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের অনেক মানুষ জীবন কাটাচ্ছে। পরিবারকে বিয়ের ব্যাপারে আপাতত 'না' করে দিয়ে ক্যারিয়ারের দিকে মন দেন।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ইয়ে... শিরোনাম দেখে ভেবেছিলাম ডঃ আসিফ নজরুলকে নিয়ে পোস্ট বুঝি। চোখ টিপি
যাকগে, পোস্ট-মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য সবকিছু পড়ে মনে হচ্ছে নীরবতাই হিরণ্ময়! ইয়ে, মানে...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

মরুদ্যান এর ছবি

হো হো হো

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

মরুদ্যান এর ছবি

২ টা প্রশ্ন, যদিও মনে হয় উত্তর পামু না।

১) আপনি কত ইঞ্চি চান?
২) এই পর্যন্ত কতজন কে রিজেক্ট করসেন? ইঞ্চির বিচারে?

ঘটকের দোষ নাই, আপনার কাছ থেকে পছন্দসই বায়োডাটা যেমন ছোঁ মেরে নিয়ে যায় আপনাকে রিজেক্ট করবে বলে, এমন অনেকের কাছ থেকেও আপনার টাও ছোঁ মেরে নিয়ে যায় আপ্নারা রিজেক্ট করবেন বলে। এ্যরেঞ্জড ম্যারিজ করতে চাইলে গায়ের চামড়া মোটা করেন।

নাহলে ঐ যে তিথী বলল, বিয়া ছাড়াও জীবনে অনেক কিছু আছে।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

মেঘলা মানুষ এর ছবি

এবার টপিকে ফিরে আসি, আমাদের সমাজটা এমনই। ছেলের পরিবার খোঁজে সুন্দরী মেয়ে, মেয়ের পরিবার খোঁজে টাকাওয়ালা ছেলে। এই দুই পক্ষই 'বেঠিক'। মনের সমন্বয় (বা compatibility) নিয়ে মাথা ঘামানো খুব একটা হয় না। মানুষ কে কেমন? আরেহ! সেটা একরকম হলেই হয়, খালি দেখা হয় বাহ্যিক সৌন্দর্য আর টাকা!

"পাত্র কবিতা লেখে? এইসব কবি টবি দিয়া আমার দরকার নাই, আমার দরকার টাকাপয়সাওয়ালা জামাই"
"মেয়ে খুব ভালো ছবি আঁকে? আর্টিস্ট দিয়া কি করব, সুন্দরী না হইলে?"

মন খারাপ

মেঘলা মানুষ এর ছবি

মতিকন্ঠের পুরোনো সংবাদটাই চোখের সামনে ভেসে উঠল। আপনি পারেনও বটে।

ফাই সিদ্ধি এর ছবি

মনে হচ্ছে আপিন পড়ালেখা করেছেন সুন্দর,লম্বা স্বামী পাবার জন্য।পড়ালেখার উদ্দেশ্য আত্তনিরভরশীল হওয়া, উন্নত স্বামী পাওয়া নয়--আপনার এই বিষয়টি বোঝা উচিত

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।