আসেন সুন্দরবনকে ধ্বংস করি।

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ১৯/০৭/২০১৬ - ৯:০১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে সেই অঞ্চলের বায়ু দূষণ এবং ইকোসিস্টেম এর এসিডিফেকেশন এর জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসবে গণ্য করা হয়।[১] কয়লা নির্ভর থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট এ কয়লা পোড়ানোর পর যেই অবশিষ্টাংশ থাকে তার শতকরা ১৫ থেকে ৩০ ভাগ থাকে ফ্লাই এশ।[২] সাধারণত এই ফ্লাই এশ কোন নির্দিষ্ট ল্যান্ডফিল এ ডাম্পিং এর ব্যবস্থা থাকতে হয়। ল্যান্ডফিল সেই ধরণের জায়গা যেইখানে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়েস্ট একরকম মাটিতে কোন কিছু পুতে ফেলার মত ফেলে দেয়া হয়, এবং পরবর্তীতে ভাল মাটি দিয়ে তা ঢেকে দেয়া হয়। এই ফ্লাই এশ এর পার্টিকেল মানুষ এবং পশুপাখির স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলার পাশাপাশি [৩,৪] গাছপালারও স্বাভাবিক জীবনপ্রণালীর কার্যক্রম ব্যাহত করে।[২] মূলত যেইসব ল্যান্ডফিল কিংবা ল্যাগুন এ এই ফ্লাই এশ ডিসপোজ করা হয়, তা বাতাস কিংবা পানির সাথে ধুয়ে ছড়িয়ে পড়া সহ, অতীব ধীরে ধীরে মাটির পোরাস (Porous) সারফেস ভেদ করে ছড়িয়ে পড়ে (Leachate generation) পরিবেশ দূষণের সৃষ্টি করে।[২] মূলত যেই ধরনের কয়লা পোড়ানো হয় সেই কয়লাতে বিভিন্ন ধরণের বিষাক্ত উপাদান যেমন আর্সেনিক (AS), ক্যাডমিয়াম (Cd), ক্রোমিয়াম (Cr), কপার (Cu), লেড (Pb), নিকেল (Ni) এবং জিঙ্ক (Zn) বিভিন্ন অনুপাতে থাকে।[৫] মূলত এই সকল বিষাক্ত উপাদানের উপস্থিতির জন্য, ল্যান্ডফিল কিংবা ল্যাগুনে ডিসপোজ করা এই বটম এশ সেই অঞ্চলের স্থলভাগ এবং জলভাগের ইকোসিস্টেম এবং ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে; এই গবেষণায় আরও পাওয়া যায় যে, যেই এলাকায় এই বটম এশ ডিসপোজ করা হয় তা নিকটস্থ নদীর পানি দূষণের জন্যও দায়ী। [৬] একটি এক হাজার মেগা ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন একটি প্রচলিত বিদ্যৎ কেন্দ্রের প্রতিদিন ১২ হাজার টন এর কয়লার প্রয়োজন হবে এবং তা হতে প্রতি বছর প্রায় ১,০০০,০০০ টন ওয়েস্ট উৎপাদন হবে। [৭] উল্লেখ্য প্রতিবছর এই ওয়েস্ট ডিসপোজাল এর জন্য পর্যাপ্ত ল্যান্ডফিল এর প্রয়োজন হবে।

রামপালের প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পশুর নদীর অববাহিকায় অবস্থিত এবং সুন্দরবন থেকে তার দূরত্ব মাত্র ১৩ কিলোমিটার। সুতরাং এই কথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বটম এশ কিংবা ফ্লাই এশ এর ল্যান্ডফিল ডিস্পোজাল থেকে নিকটস্থ পশুর নদী দূষণের স্বীকার হবেই এবং সেই সাথে তা স্থল ও জলভাগের ইকোসিস্টেম তথা বাস্তু-সংস্থান এর উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সিঙ্গুরাওলি এলাকায় যেই কয়লা নির্ভর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে, সেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশেপাশের এলাকার মাটিতে ক্যাডমিয়াম (Cd), নিকেল (Ni), লেড (Pb) এবং আর্সেনিক (AS) এর উপস্থিতির পরিমাণ নির্ণয় এর জন্য একটি গবেষণা করা হয় – বর্ষা পূর্ব এবং বর্ষা পরবর্তী সময়কালের ভিত্তিতে।[৭] গবেষণায় দেখা যায় যে, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২-৪ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে মাটিতে বৃষ্টি পূর্ববর্তী মওসুমে Cd, Ni, Pb এবং As এর সর্বোচ্চ পরিমাণ পাওয়া যায় যথাক্রমে ০.৬৯, ১৩.৬৯, ১৭.৭৬ এবং ৩.৫১ মিলিগ্রাম/কেজি, এবং যার পরিমাণ বৃষ্টি পরবর্তী মওসুমে পাওয়া যায় যথাক্রমে ০.৭৭, ১৩.৪৫, ১৭.৯১ এবং ৩.৮৭ মিলিগ্রাম/কেজি। যদিও ৮ কিলোমিটার দূরে এই উপাদানগুলার পরিমাণ কমে গিয়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ০.৩৫, ১১.৩৯, ১৫.৪৪ এবং ২.৪৯ মিলিগ্রাম/কেজি। [৭] যেহেতু প্রস্তাবিত রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র পশুর নদীর অববাহিকাতে অবস্থিত এবং ভৌগলিকগত দিক থেকে বাংলাদেশ অধিক বৃষ্টিপ্রবণ সুতরাং এই ধরনের বিষাক্ত উপদানগুলো যে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে তা সুন্দরবন অবধি যে পৌছাবে না তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারে না। গবেষণায় এইটা স্পষ্টত বলা আছে যে, বৃষ্টি এবং বৃষ্টি পরবর্তী মওসুমে এই ধরনের বিষাক্ত উপাদানের ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।[৭] ভারতের উড়িষ্যার একটি তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের এলাকার মাটি পরীক্ষা করে দেখা যায় টপ সয়েল এর দূষণের জন্য এই ফ্লাই এশ এর উপরিউক্ত বর্ণিত উপাদানগুলাই দায়ী। [৮] ভারতের কোলাঘাট এর অন্যতম বৃহত্তম কয়লা নির্ভর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশেপাশের এলাকার টপ সয়েল এবং বিভিন্ন স্তরের মাটি পরীক্ষা করে সেইখানে Mo, As, Cr, Mn, Cu, Ni, Co, Pb, Be, V, Zn – এই ধরনের বিভিন্ন ভারী ধাতব এর সন্ধান পাওয়া যায়, এবং যার উৎস ছিল ডিস্পোজাল পন্ড এ ডিসপোজ করা এই ফ্লাই এশ।[৯] বিশেষত B, As, Se, Mo, V, Al and Cd – ফ্লাই এশে পাওয়া এই উপাদান গুলোকে খুবই বিপদজনক হিসবে গণ্য করা হয় যদি তা গাছের টিস্যুতে জমা হয়। উল্লেখ্য যে, এই ধরনের উপাদানগুলো খুব সহজেই গাছ এবং তার টিস্যুতে জমা হতে পারে।(১০-১৬)সুতরাং রামপালের কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে সেই বিদ্যু কেন্দ্রের আশেপাশের এলাকার মাটিতে এই ধরনের ভারী ধাতব এর উপস্থিতি যে পাওয়া যাবে এবং তা যে সেই এলাকার মাটিকে দূষিত করবে – তা কোনভাবেই বাতিল বলে উড়িয়ে দেয়া যায় না।

ফ্লাই এশ এর পার্টিকেল খুবই সূক্ষ ধরনের হয়ে থাকে যা কিনা তাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য বাতাসের সাথে মিশে থাকতে সাহায্য করে। বাতাসে একটি নির্দিষ্ট মাত্রার আর্দ্রতা থাকলে এই ফ্লাই এশ সাধারণত গাছের পাতা, এবং ফলের বাহিরের আবরণের সাথে লেগে থাকে যা কিনা গাছের পাতা এবং ফলের জন্য ক্ষতিকর। [২] একটি গবেষণায় দেখা গেছে গ্রীন বিন, টার্নিপ, পাতাকপি এবং টমেটো জাতীয় গাছের উপর এক ধরনের ছোট বাদামী স্পট পড়ে।[১৭] যদি গাছের পাতার উপর ফ্লাই এশ এর এই সূক্ষ কণার পুরু আস্তরণ কোনভাবে জমে যায় তাহলে তা ট্রান্সপায়ারেশন এর হার ব্যাহত করে, [১৮,১৯] গাছের পাতার উপর আপতিত সূর্যের আলোর প্রবেশের হার প্রতিহত করে ফটোসিন্থেসিস এর হার কমিয়ে দিবে।[২] ফ্লাই এশের উপস্থিতির জন্য মাটির যেই গুণগত পরিবর্তন হবে তা একটি বাস্তুসংস্থান এর মাইক্রোবিয়াল এক্টিভিটি এবং গাছপালার শিকড় এর বৃদ্ধির উপর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে।[২] মূলত, ফ্লাই এশ থেকে যেই উচ্চ মাত্রার এলকালাইন পি এইচ এবং ভারী মৌল বের হয় তার মূলত গাছের শিকড় এবং রাইজোস্ফিয়ার (Rhizosphere) এর উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে। মাটির পি এইচ যদি পেড়ে যায় তাহলে তা এপ্লাইড এবং ইন্ডিজেনিয়াস সয়েলর এর নাইট্রোজেন(N) এর পরুমাণ কমিয়ে দেয়। ফলশ্রুতিতে সয়েলে থাকে বিভিন্ন মাইক্রোব এর নাইট্রোজেন ফিক্সেশন প্রসেস (নাইট্রোজেন থেকে এমোনিয়া রূপান্তর) ব্যাহত হওয়া সহ উদ্ভিদ এর বৃদ্ধির হার মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হয়।[২] ফ্লাই এশ এর জন্য উদ্ভিদের নডুলেশন প্রক্রিয়াও ব্যাহত হয়।[২০] সুতরাং প্রস্তাবিত রামপালের কয়লা নির্ভর বিদ্যু কেন্দ্রের ফ্লাই এশ থেকে যেই দূষণ ছড়িয়ে পড়বে তার বিরূপ প্রভাব আশেপাশের উদ্ভিদ এবং নিকটবর্তী সুন্দরবনের উদ্ভিদসমূহের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।আর সেই সাথে ফাইন ফ্লাই এশ ডাস্ট যে আশেপাশের এলাকার বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ যে হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। উল্লেখ্য যে, ভাল কোয়ালিটির কয়লা মেটালার্জিকাল ইন্ডাস্ট্রিতেই বেশি ব্যাবহার করা হয়, আর এই ধরনের কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অতি সস্তা এবং নিম্ন মানের কয়লাই সাধারণত ব্যবহার করা হয়ে থাকে।[২১]
সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে আনুমানিক এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, প্রস্তাবিত রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকা, পশুর নদী এবং মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে নিকটবর্তী সুন্দরবন এর মাটি মারাত্মক ভাবে দূষণের স্বীকার হবে এবং সেই সাথে ঐ এলাকার উদ্ভিদ এবং জলজ বাস্তুসংস্থানের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে।

রেফারেন্সঃ
[১] Zhao, Yu, Shuxiao Wang, Lei Duan, Yu Lei, Pengfei Cao, and Jiming Hao. "Primary air pollutant emissions of coal-fired power plants in China: Current status and future prediction." Atmospheric Environment 42, no. 36 (2008): 8442-8452.
[২]Gupta, D. K., Rai, U. N., Tripathi, R. D., & Inouhe, M. (2002). Impacts of fly-ash on soil and plant responses. Journal of Plant Research, 115(6), 401-409.
[৩]Borm, P. J. (1997). Toxicity and occupational health hazards of coal fly ash (CFA). A review of data and comparison to coal mine dust. Annals of Occupational Hygiene, 41(6), 659-676.
[৪] Page, A. L., Elseewi, A. A., & Straughan, I. R. (1979). Physical and chemical properties of fly ash from coal-fired power plants with reference to environmental impacts. In Residue Reviews (pp. 83-120). Springer New York.
[৫] Querol, X., Juan, R., Lopez-Soler, A., Fernandez-Turiel, J., & Ruiz, C. R. (1996). Mobility of trace elements from coal and combustion wastes. Fuel, 75(7), 821-838.
[৬] Shende, A., Juwarkar, A. S., & Dara, S. S. (1994). Use of fly ash in reducing heavy metal toxicity to plants. Resources, conservation and recycling, 12(3), 221-228.
[৭] Agrawal, P., Mittal, A., Prakash, R., Kumar, M., Singh, T. B., & Tripathi, S. K. (2010). Assessment of contamination of soil due to heavy metals around coal fired thermal power plants at Singrauli region of India. Bulletin of environmental contamination and toxicology, 85(2), 219-223.
[৮] Praharaj, T., Tripathy, S., Powell, M. A., & Hart, B. R. (2003). Geochemical studies to delineate topsoil contamination around an ash pond of a coal-based thermal power plant in India. Environmental geology, 45(1), 86-97.
[৯] Mandal, A., & Sengupta, D. (2005). Radionuclide and trace element contamination around Kolaghat Thermal Power Station, West Bengal- Environmental implications. Current Science, 88(4), 617-624.
[১০] Townsend WN, Hodgson DR (1973) Edaphalogical problems associated with deposits of pulverized fuel ash. In: Hutnik RJ, Davis G (eds) Ecology and reclamation of devastated land, vol 1. Gordon and Breach, New York, pp 45–46
[১১] Hodgson DR, Buckley GP (1975) A practical approach towards the establishment of trees and shrubs on pulverized fuel ash. In: Chadwick MJ, Goodman GT (eds) The ecology of resource degradation and renewal. Blackwell, Oxford, pp 305–329
[১২] Adriano DC, Page AL, Elseewi AA, Chang AC, Straughan I (1980) Utilization and disposal of fly-ash and other coal residues in terrestrial ecosystems: a review. J Environ Qual 9:333–334
[১৩] El-mogazi D, Lisk DJ, Weinstin LH (1988) A review of physical, chemical and biological properties of fly-ash and effects on agricultural ecosystems. Sci Total Environ 74:1–37
[১৪] Inouhe M, Ninomiya S, Tohoyama H, Joho M, Murayama T (1994) Different characteristics of roots in the cadmium-tolerance and Cd binding complex formation between mono and dicotyledonous plants. J Plant Res 107:201–207
[১৫] Singh SN, Kulshreshtha K, Ahmad KJ (1997) Impacts of fly-ash soil amendment on seed germination, seedling growth and metal composition of Vicia faba L. Ecol Eng 9:203–208
[১৬] Rai UN, Tripahti RD, Singh N, Kumar A, Ali MB, Pal A, Singh SN (2000) Amelioration of fly-ash by selected nitrogen fixing blue green algae. Bull Environ Contam Toxicol 64:294–301
[১৭] Singh N, Yunus M (2000) Environmental impacts of fly-ash. In: IqbalM, Srivastava PS, Siddiqui TO (eds) Environmental hazards: plant and people. CBS, New Delhi, pp 60–79
[১৮] Fluckiger W, Oertli JJ, Fluckiger-Keller H (1979) Relationship between stomatal diffusive resistance and various applied particle sizes on leaf surfaces. Z Pflanzenphysiol 91:173–175
[১৯] Krajickova A, Majstrick V (1984) The effect of fly-ash particles on the plugging of stomata. Environ Pollut Ser A 36:83–93
[২০] Martensson AM, Witter E (1990) Influence of various soil amendments on nitrogen fixing soil microorganisms in a long term field experiment, with special reference to sewage sludge. Soil Biol Biochem 22:977–982
[২১] Mishra, U. C. (2004). Environmental impact of coal industry and thermal power plants in India. Journal of environmental radioactivity, 72(1), 35-40.


মন্তব্য

তোফা এর ছবি

খুব সুন্দর লিখেছেন ভাই। কিন্তু কয়েকটা প্রশ্নঃ

(১) সুন্দরবন এলাকায় তো ঘনঘন বৃস্টি হয়। ফ্লাই এশ কিভাবে গাছের পাতায় লেগে থাকবে?

(২) ফ্লাই এশ কি ১৩ কিমি দুর পর্যন্ত অতিক্রম করতে পারবে নাকি তার আগেই মাটিতে পড়ে যাবে?

(৩) কয়লা দিয়ে চালান বিদ্যুত কারখানায় শুনেছি ইলেকট্রষ্টাটিক প্রিসিপিটেটর কিংবা পার্টিকেল ফিল্টার দিয়ে ফ্লাই এশ আটক করে বটম এশের সংগে একসাথে বাইর করা হয়, যাতে ফ্লু গ্যাসের সাথে ফ্লাই এশ বাইর না হয়। আপনি কি নিশ্চিত যে রামপাল কারখানায় এই প্রযুক্তি ব্যাবহার করা হবে না?

(৪) কয়লা বিদ্যুত কারখানার ছাই নাকি সিমেন্ট উতপাদনে ব্যাবহার করার কথা। এতে কি ক্ষতি কমার কথা না?

আরিফিনসন্ধি এর ছবি

চমৎকার তথ্যসমৃদ্ধ লেখা, বৈজ্ঞানিক সূত্র থাকার জন্য লেখাটি আরো ভালো লেগেছে চলুক
আজকেই ওয়াশিংটনপোস্টে সুন্দরবন নিয়ে আরেকটা লেখা এসেছে

........................................................
গোল্ড ফিসের মেমোরি থেকে মুক্তি পেতে চাই
শুধু আমি না, আমার সাথে পুরো জাতি

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

ভয়াবহ ব্যাপার! আপনার নিবন্ধটি পড়ে বুঝতে পারলাম সুন্দরবন ধ্বংস হতে খুব বেশী একটা দেরী নাই, যেহেতু সরকার এটা করবেই করবে বলে ধনুর্ভাঙ্গা পণ করে বসে আছে। কি আর করা, এই সুযোগে বরং আনুষঙ্গিক আরও কিছু বিষয় আপনার কাছে জেনে নেই-
* এই ছোট্ট একটি নিবন্ধেই দেখি আপনি ২১টি বই/গবেষনা পত্রের উল্লেখ করেছেন, এর সবই কি আপনি নিজেই পড়েছেন, নাকি অন্য কোন নিবন্ধে উদ্ধৃত হয়েছে, যেখান থেকে আপনি উদ্ধৃত করেছেন? আপনি কি পরিবেশ বিজ্ঞান বা এ জাতীয় কোন বিষয়ে পড়াশুনা করেন/করেছেন?
* কয়লা বিদ্যুত প্রকল্প যে পরিবেশ এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীকূলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, সে বিষয়টি আপনি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, ধন্যবাদ! সুতরাং এটা কি আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি না যে, এটা শুধু সুন্দরবন নয়, বাংলাদেশের যে কোন স্থানের জন্যই ভয়াবহ মাত্রায় ক্ষতিকর? কারন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র রামপালে বসালে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে, আর রংপুরের কাউনিয়ায় বসালে সেখানকার মানুষ ও পশুপাখি ধ্বংস হয়ে যাবে। আর যাই হোক, মানুষের জীবন তো সুন্দুরবনের চেয়ে মুল্যহীন নয়।
* যতদূর জানি দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ায় বেশ বড়সড় একটা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে। অত্যন্ত আশঙ্কা সহকারে জানতে চাচ্ছি- সেখানকার মাটিতে আর্সেনিক, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম, কপার, লেড, কী পরিমান বৃদ্ধি পেয়েছে? সেখানকার জীব বৈচিত্রের কতটুকু ধ্বংস সাধন হয়েছে? এ বিষয়ে কোন গবেষণা আছে?
* আমাদের কি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া উচিত নয় যে, বাংলাদেশে আর যাই হোক, কোন কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপন করা সম্ভব নয়? যদি তাই হয়, তাহলে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর জন্য কোন ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা উচিৎ কিংবা কি উপায়ে এই বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো যায়, সে বিষয়ে কোন গবেষণা আছে কি?

অতিথি লেখক এর ছবি

* ছোট নিবন্ধে ২১টির কম টিকা/রেফারেন্স উদ্ধৃতি দেওয়া দিতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা আছে কি?
* লেখক সব "না পড়েই লিখেছেন কিনা" এমন মনে হওয়ার কি কোন সুস্পষ্ট কারণ আছে কি?

নাকি অন্য কোন নিবন্ধে উদ্ধৃত হয়েছে, যেখান থেকে আপনি উদ্ধৃত করেছেন?

* এইটা নিজেই একটু ঘেঁটে দেখা যায়, নয় কি?
* লেখক কি বিষয়ে অধ্যয়ন করেন, বা কি বিষয়ে গবেষণা করেন তা কি খুব প্রাসঙ্গিক?

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আপনার পরিচয়টা ঠিক বোঝা গেল না। আপনি কি স্বয়ং এই নিবন্ধটির লেখক, নাকি লেখকের হয়ে অন্য কেউ, সে বিষয়ে খানিকটা ধোঁয়াশার সৃষ্টি হল। যাই হোক, ধরে নিচ্ছি আপনিই লেখক।

অনেক বেশী রেফারেন্স থাকলে একটা সমস্যা হল- পাঠকদের মধ্যে কেউ যদি নিজে সেসব একটু দেখে নিতে চান, সেটা একটু মুশকিল হয়ে যায়। আমার মনে হয়, আপনি যে লিখতে চেয়েছেন, তার জন্য এত বেশী রেফারেন্স না হলে অসুবিধা ছিল না।
আপনি সব না পড়েই লিখেছেন, আমি সেরকমটা ধরে নেই নি। আমি শুধু জানতে চেয়েছি আপনি নিজেই সবগুলো পড়েছেন কি না। যদি আপনি নিজেই সব পড়ে থাকেন, তাহলে আপনার লেখাটি পাঠক হিসেবে আমার কাছে আরও গুরুত্ববহ হয়ে ওঠে, এই আর কি।
লেখক কি বিষয়ে অধ্যয়ন করেন বা কি বিষয়ে গবেষণা করেন, আমার দৃষ্টিতে তা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। কারন যার লেখা পড়ছি, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাঁর কতটুকু গভীরতা, সেটাও জানার বিষয়।

আমি চারটি তারকাচিহ্নিত প্রশ্ন করেছি, আপনি সেসবের মধ্যে শুধু প্রথম প্রশ্নটি বিবেচনায় নিয়েছেন। কেন? বাকিগুলো কি আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে না?

নাম নাই  এর ছবি

জনাব আব্দুল্লাহ এ, এম,
আপনারা কাছে আমার কাছে প্রশ্ন হল আপনার প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা কোন বিষয়ে এবং সেটা কোন স্তর পর্যন্ত? আমার কাছেও প্রশ্নটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ । কারন, কেউ যখন বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ লেখেন, এবং সেখানে সূত্র ব্যবহার করেন, তার মনে হচ্ছে এই সূত্রটা তাকে Hypothesis তৈরি করতে সহায়তা করে, কাজেই এখানে ধরে নেওয়া হয় উনি সবগুলো পরেই লিখেছেন।

আর সূত্র কয়টি উল্লেখ করবেন, সেটা মূলত নির্ভর করে নিবন্ধটি original research article নাকি review হিসেবে প্রকাশিত হবে। যেহেতু সচলায়তন কোন বৈজ্ঞানিক জার্নাল না, কাজেই এখানে লেখকের স্বাধীনতা আছে কয়টি সূত্র উনি ব্যবহার করবেন,

আপনি হয়তো বৈজ্ঞানিক জার্নাল এ সাথে তেমন পরিচিত নন, তাই আপনার কাছে এই বিষয়টা পরিষ্কার নয়।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

কী বলতে চেয়েছেন কিছুই তো বোঝা গেল না। দয়া করে পরিস্কার করে শুদ্ধ বানানে লিখবেন।

এটা কি একটা বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ?
এটা কি একটা original research article? নাকি review?

আমি বৈজ্ঞানিক জার্নাল এর সাথে তেমন পরিচিত না হলে কি মন্তব্য করা কিংবা কোন প্রশ্ন করা নিষেধ? তাহলে এখানে এটা প্রকাশ করেছেন কেন?

নাম নাই  এর ছবি

আপনার প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা কোন বিষয়ে এবং সেটা কোন স্তর পর্যন্ত?

না এটা original research article, না review, এটাকে বলে পপুলার আর্টিকেল, কিন্তু সূত্র সাধারণত কয়টি ব্যবহার করা হয় প্রবন্ধের রকমভেদে, সেটা বোঝানো হচ্ছে। জনপ্রিয় বিজ্ঞান সাময়িকীগুলোতে এই ধরনের নিবন্ধ প্রকাশ হয় হরহামেশা। যদি নাম দরকার হয়, তাহলে জানাবেন। তবে তার আগে আপনার প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা কোন বিষয়ে এবং কোন স্তরে সেটা আমি জানতে আগ্রহী। কারণ উলুবনে মুক্তো ছড়ানোর মত কাজে আমি সময় দেই না হাসি

আপনার প্রশ্ন করতে নিষেধ কেউ করে নি। এটা পপুলার আর্টিকেল হিসাবে এখানে প্রকাশ করা হয়েছে, বাই দ্য ওয়ে, আমি কিন্তু এর লেখক নই, শুধু আপনি অতিমাত্রায় আগ্রহী দেখে লিখলাম

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আমার শিক্ষা দীক্ষা সাধারন স্তরের, আপনার মত বৈজ্ঞানিক স্তরের কেউ আমি নই, তাই সেটা উল্লেখ করার কোনই মানে হয় না। আমার উদ্দেশ্যে যদি কোন সারগর্ভ সন্দর্ভ ছুঁড়ে মারেন, সেটা অবশ্যই উলুবনে মুক্তো ছড়ানোই হবে। তবে সচল যেহেতু আমাকে এখানে অতিথি হিসেবে রেজিস্ট্রেশন দিয়েছে, সেহেতু এতটুকু আশ্বস্ত আপনি হতে পারেন যে সচলে প্রকাশিত পপুলার আর্টিকেলগুলো পড়ে বোঝার ক্ষমতা অন্তত আমার আছে।
আমি লেখকের উদ্দেশ্যেই শুধু প্রাসঙ্গিক কিছু বিষয় জানতে চেয়েছিলাম, তাঁর হয়ত আগ্রহ নেই কে তাঁর লেখা পড়লো আর কী বলল সে বিষয়ে। কিন্তু আপনার মত অতি উচ্চ স্তরের একজন বিজ্ঞজন এভাবে অপাত্রে ঘি ঢেলে কেন শুধু শুধু তাঁর অতি মুল্যবান সময় এভাবে নষ্ট করতে আগ্রহী হলেন বুঝতে পারছি না।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখে তারপর আপনি মুক্তো ছড়াবেন? না রে ভাই, আমি আপনাদের মত বৈজ্ঞানিক কিসিমের কিছু নই, আপনার মুক্তো সযত্নে জমিয়ে রাখুন। কিন্তু একটি মুক্তব্লগে এমন কিছু আপনার কেন লিখতে হবে, যা আপনার মত অতি উচ্চশিক্ষিত(?) পণ্ডিত ছাড়া আর কেউ বুঝতে পারবে না?
আর আমি কতিপয় প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করেছিলাম লেখকের উদ্দেশ্যে, আপনার কাছে কিছু জানতে চাই নি।

সত্যপীর এর ছবি

তবে তার আগে আপনার প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা কোন বিষয়ে এবং কোন স্তরে সেটা আমি জানতে আগ্রহী। কারণ উলুবনে মুক্তো ছড়ানোর মত কাজে আমি সময় দেই না

..................................................................
#Banshibir.

নাম নাই  এর ছবি

@ সত্যপীর,
রেফারেন্সের সংখ্যা বিষয়টা মনে হয় আমি যথেষ্ট পরিষ্কার এবং সহজ করে বুঝিয়েছি, এখন কাউকে যদি অ , আ, ক, খ থেকে কি করে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ লেখে সেটা বোঝাতে হয় তাহলে আমি নিশ্চিত আইনস্টাইনও বিবাগী হয়ে যেতে পারে চিন্তিত

সত্যপীর এর ছবি

সম্পাদনা: এইমাত্র বুঝলাম আপনি এর লেখক নন, কেবল এক মন্তব্যকারী। আমি ভাবলাম পাঠক বুঝতে পারছেনা দেখে চামে তার ডিগ্রীর হিসাব নিচ্ছেন। আচ্ছা যাক।

..................................................................
#Banshibir.

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

সত্য দা,
তয় বৈজ্ঞানিক তত্ত্বকথা বইলা কথা, সেইটা যদি সকল নজু মফিজরা এত সহজেই বুইঝা যায়, তাইলে আর বৈজ্ঞানিক হইয়া সুখ কুতায়?
নাসিরুদ্দিন হোজ্জার কথা মনে আছে তো? তিনি এমনি চিঠি লেইখা দিতেন যে কার সাধ্য সেটার পাঠোদ্ধার করে, পায়ে ব্যাথা না থাকলে নিজেরই গিয়া সেই চিঠি পইড়া বুঝাইয়া দিয়া আসা লাগতো।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

লেখক তার নাম লিখতে ভুলে গেছেন। নাম থাকলে ভালো হতো। সেই সঙ্গে যদি লেখকের কর্মক্ষেত্র অথবা উচ্চশিক্ষার/গবেষণার বিষয় সম্পর্কে জানা যেতো তাহলে আলোচনার সুবিধা হতো। তবে সেসব না হলে যে আলোচনা বন্ধ হয়ে যাবে তা নয়।

প্রথমেই বলে রাখি, আমি রামপাল কয়লা-বিদ্যুৎ প্রকল্পের পক্ষে কথা বলছি না। কিন্তু বিপক্ষে বলার মতো শক্ত যুক্তিও আমার কাছে নেই। শুধু "দুষণ হবে" বক্তব্যটিকে আমি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের বিরোধিতা করার জন্য যথেষ্ঠ যুক্তি হিসেবে মানতে রাজি নই। সেই সঙ্গে বলে রাখি, ভয়াবহ, মারাত্মক, অনেক, দারুণ ইত্যাদি 'পরিমাপের অযোগ্য' বিশেষণ বিজ্ঞানে খুব গ্রহনযোগ্য নয়। সেইসঙ্গে শুধু ক্ষতিকর উপাদানের 'মাত্রা বেশি' টাইপের কথাও 'সকল ক্ষেত্রে' খুব যৌক্তিক নয়। যেমন কেউ যদি বলে, কলা খাওয়া মারাত্মক ক্ষতিকর [যদি কলা খেয়ে তার খোসা জনবহুল পাহাড়ী রাস্তায় ফেলে রাখা হয়। খোসায় পা পিছলে খাদে পড়ে সেটা মৃত্যুর কারণ হতে পারে]। তাহলে সেই কথাটি শব্দার্থে সত্যি হলেও বাস্তবে গ্রহনযোগ্য নয়। ওই কথা শুনে কলা খাওয়া বন্ধ করাও যৌক্তিক নয়। সেইজন্য, ভালো-খারাপের তুলনামূলক বিচার করে গ্রহনযোগ্য পথের হদিশ দেয়াটাই বৈজ্ঞানিক।

বলে রাখা ভালো, পরিবেশ দূষণ ইত্যাদির যে আশংকা রয়েছে, সে নিয়ে আমি চিন্তিত। আমি সুন্দরবনের কাছের মানুষ, আমার একটা আবেগি পক্ষপাতও রয়েছে সুন্দরবনের প্রতি। কিন্তু সেই আবেগ সরিয়ে লেখাটার সরমর্ম কেমন লাগলো সেই কথা বলি।

আপনি প্রথম লাইনে বলছেন, কয়লা নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে সেই অঞ্চলের বায়ু দূষণ এবং ইকোসিস্টেম এর এসিডিফেকেশন এর জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসবে গণ্য করা হয়। (Zhao, 2008)
আপনি শব্দচয়নে সতর্ক হলে এই বাক্যটি 'পুরোপুরি' সত্যি হতো। Zhao (2008) আসলে বলেছে কয়লা-ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র "has been considered as a very important source of" বায়ু দূষণ এবং ইকোসিস্টেম এর এসিডিফেকেশন। দুটো কথায় কিন্তু পার্থক্য আছে। এতোকাল কাদের সিদ্দিকী মুক্তিযোদ্ধা ছিলো, বা তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে জেনে এসেছি' কথার সঙ্গে 'সে মুক্তিযোদ্ধা' টাইপ অপরিবর্তনশীল ধ্রুব তথ্যের যেরকম পার্থক্য আছে, সেরকম। আমার এই কথা বলার কারণ হচ্ছে, Zhao (2008) এর প্রবন্ধে যেসব গবেষণার তথ্যের উপর ভিত্তি করে প্রথম লাইনটি লেখা হয়েছে সেই তথ্য ২০০০ সালের পূর্বের। একইসঙ্গে আপনি জেনেশুনেই এই প্রবন্ধের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা তথ্য এড়িয়ে গেছেন। সেই তথ্য হচ্ছে কীভাবে 'আধুনিক প্রযুক্তি' ব্যবহার করে, উপযুক্ত নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ক্ষেত্রে দূষণ সহনীয় পর্যায়ে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। এবং কীভাবে optimistic situation can be achieved through reasonable control policies! এই গবেষণাটি কিন্তু খুব সাম্প্রতিক এবং এটা ভবিষ্যতের সম্ভাব্যতার কথা বলছে। আমার মনে হয়, Zhao (2008) এর গবেষণাটি বিবেচনায় নিলে আপনার এই লেখাটি অনেকটা গ্রহনযোগ্যতা হারাবে। তবে আপনি সতর্ক থেকেছেন। পেপারটি পড়েছেন কিন্তু তার বক্তব্য যেটুকু আপনার লেখার পক্ষে যায় সেটুকু উল্লেখ করেছেন। এটি আপনার ২ নং রেফারেন্স।

তবে আমি গুরুত্ব দেবো আপনার ৭ নাম্বার রেফারেন্স Agrawal (2010) এর উপর। আপনার লেখায় ৩টি অংশের মাঝের অংশটি প্রায় পুরোটাই এই গবেষণার উপর ভিত্তি করে লেখা।

এই পেপারটি আমার কাছে খুব দুর্বল লেগেছে। তারা একটি অঞ্চলের মাটিতে খনিজের পরিমাণ নির্ণয় করে একটা পেপার প্রকাশ করছে, অথচ ওই অঞ্চলের মাটিতে উল্লেখিত খণিজগুলোর উপস্থিতি সাধারণভাবে/প্রাকৃতিকভাবে কেমন তা কোথাও বলেনি। আবার দেখেন, যে এলাকার দুষণ নিয়ে এই প্রবন্ধ সেই এলাকা এশিয়ার সবচে দুষিত বাণিজ্যিক অঞ্চলগুলোর একটি। এইখানে ১১টা খোলা (open cast) কয়লাখণি আছে, ৫টা কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে। আপনি এর সঙ্গে বাংলাদেশের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে তুলনা করে তুলনা করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করলে তো সে গ্রহনযোগ্য হবেনা!

এখানে তারা ৪টি বিষাক্ত খনিজের (ক্যাডমিয়াম, সীসা, নিকেল, ও আর্সেনিক) পরিক্ষা করে বলছে, বৃষ্টির পর সেগুলোর পরিমাণ মাটিতে বেশি হচ্ছে। ক্যাডমিয়ামের ক্ষেত্রে দেখেন, সেই বেশির পরিমান (২ কিমির ভেতর) গড়ে ০.০৯ মিগ্রা/কেজি। যেখানে দুইক্ষেত্রেই এই পরিমাপের স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন (SD) হচ্ছে ০.১৪ মিগ্রা/কেজি! এই তথ্য পছন্দ হচ্ছে এবার আপনার? নিকেলের ক্ষেত্রে এই বেশির পরিমাণ ০.০১ মিগ্রা/কেজি যার SD হচ্ছে ১.১৯ এবং ১.৩৩ মিগ্রা/কেজি! এই তথ্য নিয়ে কেউ যদি দাবী করে বৃষ্টির পরে মাটিতে নিকেলের পরিমাণ বাড়ছে, তাহলে তার বক্তব্য কতটা গ্রহনযোগ্য? আমি নিজে এই বিষয়ের শিক্ষার্থী নই বলে বলতে পারছি না বৃষ্টির পর মাটিতে নিকেলের ঘণত্ব ০.০৮৩ ভাগ বৃদ্ধি কতটা গুরুত্বপূর্ণ, আপনার (অথবা মূল প্রবন্ধের লেখকদের) সেটা বলা উচিত ছিলো হয়ত।

আমি এইটুকু কেবল উদাহরণের জন্য বলছি। এবং আমি জানি এই কথাটুকু বলাই সব তথ্যের প্রতি সুবিচার নয়। কিন্তু মন্তব্যের ঘরে এরচে বিস্তারিত ব্যাখ্যা/আলোচনা করাও কঠিন।

আপনার লেখাটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার তথ্য থেকে নিংড়ে নিয়ে লেখা। অথচ আপনি নির্মোহ নন। Agrawal (20018) পেপারটিকে খুব শক্ত করে উপস্থাপন করেছেন আপনি, আর এখানেই বলছে, ধাতবের ঘণত্ব ৪ কিমি পর থেকেই কমে যাচ্ছে আর ৮ কিমি পর থেকে substantially কমে যাচ্ছে [সেই কম মানে কতটা সহনশীল সেই আলোচনা তারা করেনি যদিও!]। এই তথ্য স্লোভাকিয়া আর তুরস্কের গবেষণার সঙ্গেও মানানসই।

আপনি লেখার প্রথমেই বলছেন, কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিবেশকে অ্যাসিডিক করে ফেলতে পারে। আবার শেষে বলছেন, ফ্লাই অ্যাশ অ্যালকালাইন। কোনটা সত্যি? [আপনি বলছেন, "ফ্লাই অ্যাশ থেকে অ্যালকালাইন পিএইচ বের হয়ে..."। ধারনা করছি আপনি বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী নন। পিএইচ কোনো পদার্থ নয় যে সেটা বের হবে। পিএইচ হচ্ছে অ্যাসিডিটি/অ্যালকালিনিটি পরিমাপের একক।]
এই প্রশ্নটির জবাব আমি দিয়ে দেই, আপনার দেয়া রেফারেন্স থেকেই জেনেছি, কয়লার উপাদানের উপর দূষণের প্রকৃতি নির্ভর করে। ফ্লাই অ্যাশ সাধারণভাবে অ্যালকালাইন, তবে অ্যাসিডিক হতে পারে। এর মানে হচ্ছে, কয়লার মান নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

ফ্লাই অ্যাশ প্রাণি এবং উদ্ভিদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সত্যি। কিন্তু আপনি উল্লেখ করছেন না, যে এটাকে নিয়ন্ত্রনের রাখার উপায় রয়েছ, ফিল্টার করার উপায় রয়েছে, ইতিবাচকভাবে ব্যবহারের সুযোগও রয়েছে। আপনার ২ নাম্বার রেফারেন্সে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি, পানি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি ক্ষেত্রে ফ্লাই অ্যাশের দারুণ কিছু ইতিবাচক দিকের উল্লেখ আছে। আপনি কিন্তু সেসব এড়িয়ে গেছেন!

দেখুন, পার্শপ্রতিক্রিয়াহীন শিল্পায়নের যুগে আমরা এখনো পৌঁছাইনি। আমি নিজে আশা করি বাংলাদেশ নিরাপদ শক্তি/জ্বালানি উৎপাদনের দিকে মনোযোগী হোক এবং সেই ক্ষেত্রে সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠুক। কিন্তু সেই আশা করেও বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে আমি একট হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করার পক্ষে কথা বলতে গিয়ে দশবার ভাবি। আমি জানি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র হলে তার প্রভাব পরিবেশের উপর পড়বেই। কিন্তু সেই প্রভাবের সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদার কথাও বিবেচনায় রাখুন। আবেগি নয়, সঠিক তথ্য দিন কীভাবে কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের ক্ষতি করছে। সে থেকে বাঁচার উপায় আছে কিনা। যতটুকু ক্ষতি হবে তা পুষিয়ে নেয়া যাবে কিনা। বিকল্প ব্যবস্থা কী আছে! আমি নিজে এতোকাল এই বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা করিনি। আপনার এই লেখার সূত্রে খানিক পড়লাম। যা মনে হলো, কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ম মেনে সতর্কভাবে চালালে তা খারাপ কিছু না। অন্তত অন্য অনেকরকমের শিল্পায়নের চাইতে বেশি কিছু না।

ঢাকার বাতাসের সীসার পরিমাণ জানেন? এর পেছনে দায়ী আমাদের যানবাহন আর কলকারখানা, জানেন তো? ২ কোটি মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এর কারণে। আপনি একদিনও বাসে/গাড়িতে চড়া বন্ধ করেছেন?

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার মন্তব্যটা ভালো হয়েছে(আমি পোস্টের লেখক নই) ৭ নং পেপারটা পড়ে দেখলাম। সংক্ষেপে বলতে গেলে আপনি বলতে চাইছেন যে "ক্ষতি হতে পারে, এটুকু দেখানোই যথেষ্ট নয়, কতটুকু ক্ষতি হতে পারে, সেটাও দেখেশুনে, তারপরই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ"। আপনার অবস্থান যৌক্তিক মনে হয়েছে।

তবে আপনার শেষ প্যারার যুক্তিটা বুঝিনি। সুন্দরবনের দুষণ-সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণামূলক লেখায় পোস্ট-লেখক ব্যাক্তিগত জীবনে কী ধরনের যানবাহন ব্যাবহার করেন, ঢাকায় থাকেন না অন্য কোথাও, সেটার সম্পর্ক কী?
আমার অনুমান, আপনি লেখককে "শুধু মুখেই পরিবেশবাদী, কাজে নাই" এই ধরনের কোনো দলভুক্ত করতে চাইছেন, আমার অনুমান ঠিক হলে সেটা আসলে নির্মোহ আলোচনার পথে বাধা তৈরী করে।

--কৌতুহলী

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনার কথা সত্যি, আমি বলতে চেয়েছি, ক্ষতি হতে পারে, এটুকু দেখানোই যথেষ্ট নয়, কতটুকু ক্ষতি হতে পারে, সেটাও দেখেশুনে, তারপরই সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ। ক্ষতি থেকে বাঁচার উপায় আছে কতটুকু সেটাও দেখতে হবে। কারণ শিল্পায়ণ হলে দূষণ হবেই। শিল্পায়ণ বন্ধ করলে দেশ থেমে থাকবে।

তবে এই কথাগুলো ৭নং পেপারের প্রেক্ষিতে বলা নয়। ওই পেপারটি খুব দুর্বল লেগেছে আমার কাছে। ওটার ভিত্তিতে দুষণ বিচার করতে গেলে শব্দচয়নে খুব সতর্ক থাকতে হবে। এবং আমার আপত্তি লেখকের একপেশে উপস্থাপনেও

শেষের কথাটি যদি লেখকের ব্যক্তিগত পছন্দ টেনে এনে আলোচনায় বাধা তৈরি করে থাকি, তবে সেজন্য আমি দুঃখিত। আমি চাই লেখক এবং অন্যরাও আলোচনা করুন। আমার কোথায় ভুল হচ্ছে সেটা বুঝি। তারপর নিশ্চিত হয়ে একটি পক্ষে কথা বলি। শেষের কথাটি বলার উদ্দেশ্য ছিলো এটা বোঝানো যে, ঢাকা শহরের যানবাহন কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রের চাইতে বেশি দুষণ করছে। কিন্তু আমরা থেমে নেই। থেমে থাকা সমাধানও নয়। প্রয়োজনটা বুঝতে পারছি বলেই আমরা থেমে নেই। কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষেত্রেও প্রয়োজন আর লাভ-ক্ষতি সবটুকু বিবেচনায় এনে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

হাসান রাহমান  এর ছবি

কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্রের পক্ষে বিপক্ষে কোন যুক্তি নিয়ে আমার এই মুহূর্তে মাথা ব্যাথা নেই, বুঝলাম সবচেয়ে আধুনিক, সবচেয়ে সেরা পদ্ধতি ব্যবহার করে দুষন কমিয়ে ফেলা হবে। আমি তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম এটা সম্পূর্ণ ঠিক।

আমার চিন্তার যায়গা হলো এই যে পরিমান কয়লা ওখানে আসবে প্রতিদিন অথবা একটা নির্দিষ্ট সময়ে, এই কয়লা গুলো কিভাবে আসবে? যতটুকু বুঝি সেগুলো সুন্দরবনের ভিতর দিয়েই আসবে। যদি তাই হল তাহলে এখানেই অনেকগুলো কথা চলে আসে। ১, এই নৌ-যান গুলোর তেল, নৌযান থেকে ছিটকে পড়া কয়লা, এইগুলোর বর্জ্য কই যাবে? পানিতেই তো, এর ফল কি হবে? ২। এই নৌযান গুলোর শব্দের প্রভাব কি হবে? বন্য প্রাণীদের উপর? যখন মংলা থেকে আন্ধারমানিক, তাম্বুলবুনিয়া, দুধমূখি, সুপতি হয়ে বলেশর দিয়ে নৌকা চলত তখন এর প্রভাবে বন্যপ্রাণীরা ঐ অঞ্চল ছেড়ে চলে গিয়েছিল। এখন কেউ বলতেই পারে তাতে কি! আচ্ছা তাতে কি সেটার ব্যাখ্যা অনেক লম্বা, প্রায় সব বন্যপ্রানিরাই নিজেদের সীমা মেনে চলে, এক দল অন্যদলের অথবা এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির এলাকায় প্রবেশ করলে এঁদের মাঝে বিবাদ দেখা দেয়, এবং রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষে কোন এক পক্ষ হেরে যায়। তাতে করে এঁদের সংখ্যা কমে, বাড়ে না। ৩। তো কি হলো বন্য প্রাণী কমলেই কি, বন থাকলেই তো হল, বনই তো ঝড় থেকে বাচায়, জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করে, অক্সিজেন দেয়। না বন্যপ্রাণী না থাকলে আর বন থাকে না। কেন থাকেনা, এর কারন অনেক জটীল। পুরো সিস্টেম নির্ভর করে একজন আরেক জনের উপর। এটাকে পল এলরিখ খুব সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন, যে সব প্রজাতি হলো প্লেন এর প্রপেলার এর মত, একটা দুইটা এমনকি হয়তো তিনটা ভেঙে গেলেও হয়তো প্লেন উড়তে পারবে, কিন্তু আর হয়তো একটা ভেঙে গেলেই পুরো প্লেন মূখ থুবড়ে পড়বে। এখন সুন্দরবন নির্ভর করে নানা প্রজাতির প্রানীর উপর। কেউ গাছের বীজ ছড়ায়, কেউ বা অন্য ক্ষতিকর প্রাণীকে মেরে পুরো ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখে। যে কোন বন থেকেই আসতে পারে ভবিষ্যতের এন্টি বায়োটিক, আসতে পারে নানা রকমের নতুন জীন, যা হয়তো আমাদের ভবিষ্যতকে পালটে দিতে পারে। ৪। এতগুলো নৌকা ওখান দিয়ে চললে তাতে করে বন্যপ্রানি পাচার হবার ভয় থেকেই যাচ্ছে। রাতের অন্ধকারে নৌকা ঠেকিয়ে কিছু বাঘ তুলে নেয়া খুব বেশী কোন ঘটনা না। একটা মৃত বাঘ থেকে আয় করা সম্ভব হাজার দশেক থেকে হাজার পঞ্চাশেক ডলার। যা এঁদের জন্য অনেক টাকা। ৫। সুন্দরবনের ঐ কুয়াশাময় এলাকা দিয়ে নৌযান চললে দুর্ঘটনা ঘটতে বাধ্য, এবং অতীতে ঘটেছে। আবার এরকম ঘটনায় পুরো সুন্দরবনে ছড়িয়ে পড়বে তেল, কয়লা এবং নানা বিষাক্ত দ্রব্য। তার ফল ভাল হবেনা বলেই ধারনা। আমেরিকাতে তো অজস্র কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে তার কতগুলো ওদের জাতীয় ঐতিহ্য এবং প্রকৃতির ঐতিহ্যের কাছে,ইয়েলস্টোন, গ্র্যান্ড টেটন এমনকি গ্রেট স্মোকি'র কত কাছে এরকম বিদ্যুৎ কেন্ত্র আছে? আমি যতটুকু জানি নেই। এখন আমাদের দেশের আছেই এই এক দুইটা অঞ্চল।

বঙ্গবন্ধুই বাঘ শিকার বন্ধ করেছিলেন, বাঘ এর ছবি টাকায় জলছাপ হিসাবে বসিয়েছিলেন, আমরা পৃথিবীর ৩য় দেশ হিসাবে বাঘ শিকার বন্ধ করেছিলাম। আমরা যখন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ১৯৭৪ করেছিলাম পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশেই সমতুল্য আইন ছিলনা। আর হয়তো ১০০ বাঘ আমাদের অংশের সুন্দরবনে আছে, এদের সংখ্যা যদি ৫০ এর নিচে নেমে আসে সেখান থেকে যদি আমরা একদিন এঁদের সংখ্যা হাজারেও ওঠাতে পারি তাও ভয়ঙ্কর হুমকি থেকেই যাবে। কারন কোন স্তন্যপায়ী প্রানীই এর নিচে নেমে গেলে দেখা দেয় জেনেটিক ড্রিফট, যেমনটা ঘটেছিল রাশিয়ার বাঘের ক্ষেত্রে, এবং আফ্রিকার চিতার ক্ষেত্রে। এখন রাশিয়াতে বাঘ আছে প্রায় ৫৫০, কিন্তু জেনেটিকাল ভায়াবল মাত্র ১৮টা, এঁদের বাঁচিয়ে রাখতে হয় প্রায় স্পেশাল ব্যবস্থায়, যে কোন সময় এঁরা নাই হয়ে যেতে পারে অল্প কোন দুরঘটনায়। কিছুদিন আগে ক্যানাইন ডিস্টেম্পারে মড়ক লেগেছিল এঁদের, পরে নানা ব্যবস্থায় অনেক কষ্টে টেকানো গেছে এঁদের। কারন জেনেটিক ড্রিফট এর ফলে এঁদের মাঝে মারাত্মক রকমের সমস্যা দেখা দেয়। ইনব্রিডিং এর ফলে এঁরা যে কোন রোগ কিংবা আগুনের সামনে অসহায় হয়ে পড়ে।

সুন্দরবনে আরো বেশ কিছু বিপন্নপ্রায় প্রানীর বাস, যেমন মাস্কড ফিনফুট, মদনটাক, শকুন, এমনকি কিছু মাছরাঙা আছে যারা বৈশ্বিকভাবে বিপন্ন।

বলাই যায় মানুষ আগে, আমি যদিও মানবকেন্দ্রিক পৃথিবীর পক্ষের মানুষ নই, তাও মেনে নিলাম, কিন্তু কথা হলো মানুষের টিকে থাকার জন্যই এই প্রাণী আর বনভুমি দরকার

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

তাহলে মূল সমস্যা কয়লা পরিবহনের রুটে? এটা বদলালেই সমস্যা মিটে যায়?

সুন্দরবনের যে সমস্যাগুলোর কথা বলেছেন, তার অনেকটা কয়লা পরিবহন হওয়ার আগে থেকেই রয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে শুধু কয়লা পরিবহন বন্ধ করলেই কাজ হবেনা। অন্য শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।

প্রসঙ্গত, বন থেকে অ্যান্টিবায়োটিক আসে না। আর 'জিন আসা' কথাটা বুঝতে পারিনি।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

হিমু এর ছবি

আমেরিকাতে তো অজস্র কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে তার কতগুলো ওদের জাতীয় ঐতিহ্য এবং প্রকৃতির ঐতিহ্যের কাছে,ইয়েলস্টোন, গ্র্যান্ড টেটন এমনকি গ্রেট স্মোকি'র কত কাছে এরকম বিদ্যুৎ কেন্ত্র আছে? আমি যতটুকু জানি নেই।

সুন্দরবনের কাছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র না করার পেছনে অনেক যুক্তিই দেওয়া যায়, কিন্তু আপনি যেটা দিলেন সেটা প্রযোজ্য না, কারণ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র সাধারণত কয়লার উৎসের কাছে, কিংবা কয়লা পরিবহন অবকাঠামোর কাছে বানানো হয়। আপনি যে উদাহরণ দিলেন, সেগুলো একটাও কি খনি কিংবা জলবন্দরের কাছে অবস্থিত?

বরং আপনি তুলনা করতে পারেন ক্রিস্টাল রিভার এনার্জি কমপ্লেক্সের সাথে। এটা ফ্লোরিডার সাইট্রাস কাউন্টিতে, ক্রিস্টাল নদীর মোহনার কাছে। এর পাশেই ক্রিস্টাল রিভার প্রিজার্ভ স্টেইট পার্ক। গুগল ম্যাপে দিলাম আপনার দেখার সুবিধার জন্যে:

সুন্দরবনের যে কোনো ক্ষতি যেহেতু অপূরণীয়, তাই এই উদাহরণগুলো সামনে থাকুক বা না থাকুক, আমাদের প্রশ্ন করে যাওয়া উচিত। কিন্তু সেগুলো অ্যাপোক্যালিপ্সু জুজুর ভয় দেখিয়ে করলে উচিত প্রশ্নগুলোও একসময় উপহাসের শিকার হয়।

হিমু এর ছবি

২ গিগাওয়াটের কয়লাচালিত কট্যাম পাওয়ার স্টেশন ইংল্যাণ্ডের ট্রেন্ট ভ্যালিতে একেবারে কৃষি এলাকার মাঝখানে তৈরি করা। ১৯৬৯ সাল থেকে এটা চলছে। গুগল ম্যাপে এর আশপাশের ১০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের এলাকাটা একটু দেখুন। কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নিঃসন্দেহে পরিবেশ দূষণ করে, কিন্তু আপনি যে অ্যাপোক‌্যালিপ্সু বর্ণনা দিলেন, সেটা খাটলে ট্রেন্ট ভ্যালি এতোদিনে বন্ধ্যা হয়ে পড়তো।

আপনি চাইলে ইন্দোনেশিয়া, তাইওয়ান বা চীনের কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোও গুগল ম‌্যাপে পরখ করে দেখতে পারেন, ওগুলোও দীর্ঘ সময় ধরে কৃষিঘন বা অরণ্য এলাকার মাঝে/পাশে চলছে।

মায়া কাজল এর ছবি

লেখার বিষয়বস্তুটা ভালো লাগলো।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভদ্রলোক যেভাবে আমি অন্যদের চেয়ে বিজ্ঞান ভালো বুঝি + প্রশ্নগুলো মোটামুটি পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন তাতে আমার মনে প্রশ্ন আসলেও তা করতে ইচ্ছে করছেনা।

এখনো নিজের নাম (সেটা 'নীল পরী' হলেও) প্রকাশ না করাটা বিরাট সন্দেহজনক। চোখ টিপি

- মাসুম।

অনুসন্ধানী আবাহন এর ছবি

সমস্যা হচ্ছে এনাদের "তথ্যবহুল" লেখার বিপরীতে সরকারী ছাইপাঁশ ছাড়া আর কিছু জনগন পাচ্ছে না। আমরা শুধু নেগেটিভ মতামতই শুনে যাচ্ছি, সোশাল মিডিয়া বা প্রিন্ট মিডিয়ায়। সরকারও একেবারে, "আমরা বলছি ক্ষতি হবে না, ব্যাস হবে না" মনোভাবে কাউন্টার দিচ্ছে, যা আমাদের মধ্যে আরো বেশি সন্দেহের সৃষ্টি করছে। আমরা আমাদের মনে ওঠা প্রশ্নের সহজ সদুত্তর পাচ্ছি না।

যাঁরা জানেন এবং বোঝেন, তাঁরা যদি ফ্যাক্ট এবং উদাহরণ সহ লেখালেখি করতেন, তাহলে আমরা আসলেই জানতে পারতাম হয়তো, যে আশঙ্কা এবং বাস্তবতার মধ্যে অনেকখানি ফারাক আছে। আমাদের মত সাধারণের পক্ষে সায়েন্টিফিক আর্টিকেল, রিসার্চ জার্নাল বা ফ্যাক্টশিট খুঁজে বের করে, পড়ে, বোঝা খুব একটা ফিজিবল নয়। এদিকে নেগেটিভ প্রচারণা আমরা সহজে বুঝতে পারছি। ফল হচ্ছে এটা, আমরা আশঙ্কাকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিপক্ষ মনোভাবের দল ভারি করছি।

এই যে হিমু ভাই, এনার্জি প্রোডাকশন নিয়ে পড়াশুনা করেন, উনি সহজ ভাষায় কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইনস এন্ড আউটস নিয়ে লিখতে পারেন বা অনার্য দা পরিবেশের উপরে প্রভাব নিয়ে বিশ্লেষণী লেখা উপস্থাপন করতে পারেন। আপনাদের মত যাঁরা আছেন, তাঁরা যদি আমাদেরকে আশঙ্কামুক্ত হতে সাহায্য করেন, তাহলে জনমত ঘুরতে বাধ্য। আপনারা ৩/৪ বছর আগে এগুলো নিয়ে লিখেছেন কিন্তু সেসমস্ত লেখা এখন কোথায় হারিয়ে গ্যাছে, যদিও খুব ঝামেলা, খুঁজে বের করতে পারি আমরা, যারা সেগুলো পড়েছি। কিন্তু প্রতিনিয়ত এত নতুন নতুন নেগেটিভ লেখার বিপরীতে পুরোন লেখা দিয়ে লড়া যায় না। অনুগ্রহ করে আপনারা লিখুন, আবার লিখুন। জনমতের তোয়াক্কা না করে সরপকার যে কোন কিছুই করতে পারে, কিন্তু কেন শক্তিশালী বিপরীত জনমত থাকবে? সচলায়তন থেকে আমরা কম কিছু শিখিনি বা জানি নি, এগিয়ে আসুক সচলায়তন আবারো আমাদের জানাতে। আপনারা তো সোশাল মিডিয়ায় লিখবেন না, আমরাই নাহয় ছড়িয়ে দেবো লেখাগুলো।

হিমু এর ছবি

সদুত্তরগুলো সরকারের তরফ থেকেই আসতে হবে।

অনুসন্ধানী আবাহন এর ছবি

সরকার তো আ বাঞ্চ অফ শিটহেডস, গায়ের জোরে চাপিয়ে দেয়া ছাড়া এদের মাথায় কিচ্ছু খেলে না। হয় সুপরামর্শ দেবার কেউ নেই, নাহয় সুপরামর্শ নিয়ে এদের ফোবিয়া আছে। কিন্তু একচুয়াল ফ্যাক্টস তো জানতে হবে। কেউই যদি না জানায়, আমাদের এয়ারহেডেড জনতা তো "বাঁচাও সুন্দরবন" নিয়েই পড়ে থাকবে, গ্ল্যামার বেশি বলে

হিমু এর ছবি

কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র কিন্তু বাংলাদেশে এরই মধ্যে একটা আছে, বড়পুকুরিয়া। ২০০৬ সাল থেকে এটা চলছে। যারা সুন্দরবনের ১৩ কিলোমিটার দূরে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে উদ্বিগ্ন, তারা একটু কষ্ট করে বড়পুকুরিয়ার আশেপাশে গিয়ে "পরিবেশের ক্ষয়ক্ষতি" নিজের চোখে দেখে আসতে পারেন। কিংবা গুগল আর্থ দিয়েও খালি চোখে যতটুকু দেখা যায় দেখে নিতে পারেন। এটাও কৃষিজমির মাঝখানে।

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আরও আগে কাপ্তাই ছাড়া বাংদেশের অন্য প্রায় সকল বিদ্যুৎকেন্দ্রই ছিল কয়লা বিদ্যুতকেন্দ্র। জিয়া- এরশাদের আমলে সেখান থেকে সরে গিয়ে তুলনামুলকভাবে অনেক ব্যয়সাপেক্ষ গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের চল শুরু হয়। তখন হয়ত ভাবা হয়েছিল- মাটির নিচ থেকে বিনে পয়সার গ্যাস তুলবো, আর বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে থাকবো, কি আছে জীবনে। তো সেই সকল কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র গুলো আমাদের পরিবেশের কি ক্ষতি করে গেছে, সেই পরিসংখ্যান বের করে দোষীদের মরণোত্তর বিচারের ব্যবস্থা করা যায় না?

হিমু এর ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তের ঠিক পশ্চিমে মুর্শিদাবাদের ফারাক্কায় পদ্মা নদীর ভারতীয় অংশের পশ্চিম পাড়ে রয়েছে এনটিপিসিরই ২১০০ মেগাওয়াটের আরেকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, ফারাক্কা সুপার থার্মাল পাওয়ার স্টেশন। বাংলাদেশের অন্যতম বড় আমের বাগান এলাকা কানসাট এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২৫ কিলোমিটারের মধ্যেই। ১৯৮৬ সাল থেকে এই কেন্দ্র চলছে।

রামপালের কারণে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে গেলে আমাদের এটাও মেনে নিতে হবে যে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দেড়গুণ বড় এই ফারাক্কা কেন্দ্রের কারণে গত ৩০ বছরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ধ্বংস হয়ে গেছে।

গুগল আর্থে দেখে নিতে পারেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

পৃথিবীর আর কোথায় ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের চিপায় কয়লা-বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে তার একটু ঠিকুজি দিন প্লিজ। আরো সাধারণ প্রশ্চেন, সুন্দরবনের সাথে রাম-শ্যাম-যদু-মধু এলাকার কৃষিজমির পার্থক্য কোথায়? এতো এতো সফল উদাহরণ থাকার পরেও? ভারত কেনো তাদের সুন্দরবনে এটা করার অনুমতি দেয়নি?? ভারতীয় সুপ্রিমকোর্ট দেখি খুবই বোকা! গুগল ম্যাপ দেখতে জানেনা??

হিমু এর ছবি

ম্যানগ্রোভপাগলা ভাইয়া, একটু কষ্ট করে ওপরে গেলে দেখবেন হাসান রাহমানের মন্তব্যের জবাবে ক্রিস্টাল রিভার এনার্জি কমপ্লেক্সের ম্যাপ দিয়েছি। জ্বি ভাইয়া, ওটা ম্যানগ্রোভ ফরেস্টের একেবারে মাঝখানে লিটারালি ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সাফ করে বানানো। ঐটার উত্তর দক্ষিণ পূর্ব তিন দিকে ম্যানগ্রোভ রিজার্ভ, পশ্চিমে মেক্সিকো উপসাগর। জ্বি ভাইয়া, ঐটা বহু বছর ধরে চলছে। জ্বি ভাইয়া, ম্যানগ্রোভ ফরেস্টও ঐখানে বহু বছর ধরেই টিকে আছে।

এইবার একটু কষ্ট করে বলেন তো ভাইয়া, বাংলাদেশের ভেতরে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কারণে আশেপাশের ফ্লোরা নষ্ট হলো না, ফারাক্কা কয়লাখনির কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফ্লোরা নষ্ট হলো না, ক্রিস্টাল রিভার এনার্জি কমপ্লেক্সের কারণে সাইট্রাস কাউন্টির ম্যানগ্রোভ নষ্ট হলো না, খালি সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কারণেই আপনার শেষ রাতের ঘুমে সুন্দরবন নষ্ট হয়ে যায় কেন?

অতিথি লেখক এর ছবি

পৃথিবীর অনেক জায়গাতেই কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পে ইহুদীদের পুড়িয়ে মারা হতো ভাইয়া। কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প থাকলেই সেটা জায়েজ হয়ে যায়না ভাইয়া। আপনার আম্রিকার সবচেয়ে অশিক্ষিত অঞ্চলগুলার একটা ফ্লোরিডার বনে-বাঁদাড়ে থাকা কোল প্ল্যান্ট কি কি অপরূপ সুবিধা দিচ্ছে সেগুলোও দেখতে হয় ভাইয়া।

A coalition of clean air advocates announced this week a settlement setting deadlines for the U.S. Environmental Protection Agency to limit haze-causing air pollution from aging power plants and factories in Florida. The settlement, lodged on July 20, 2012 in federal court, requires the EPA to finalize haze cleanup measures for the state in two phases, the first by November 15, 2012, and the second by July 15, 2013. The steps are required by the Clean Air Act to clear polluted skies in the nation’s largest and most scenic national parks, wilderness areas, and wildlife refuges.

এইটাও পড়তে পারেন ভাইয়া।

আরো তথ্য চাইলে লজ্জা না করে জানিয়ে দেবেন ভাইয়া। গুগল করতে পয়সা লাগেনা ভাইয়া।

এইসব নিউজ আম্রিকার মেইন্সট্রিম মিডিয়ায় কেনো আসেনা সেইসব জিজ্ঞেস করে আবার লোক হাসাবেন না ভাইয়া।

সুন্দরবনে করলে কি কি সমস্যা হবে জানতে চান ভাইয়া? তার আগে আমার প্রশ্নের উত্তরটি খোঁজার চেষ্টা করুন ভাইয়া। ভারত কেনো ফারাক্কা-বারাক্কা তে করলেও নিজেদের সুন্দরবনের অংশে কোল প্ল্যান্ট করতে দেয়নি ভাইয়া? এই উত্তর পেলেই আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন ভাইয়া।

হিমু এর ছবি

ম্যানগ্রোভপাগলা ভাইয়া, এত খোঁজাখুঁজি করে আপনি শেষমেশে পাইলেন কতিপয় উকিলের সাথে ইপিএর এক বোঝাপড়ার খবর (যেটা কি না আবার The settlement must undergo public comment and receive court approval before it becomes final, তবে আপনি মনে হয় একটা কিছু জবাব খুঁজে পাওয়ার উত্তেজনায় এটা আর খেয়াল করতে পারেন নাই, বা পড়লেও বোঝেন নাই) , যেটার লক্ষ্য হচ্ছে পুরানা বুড়াধুড়া কারখানার কারণে সৃষ্ট হেইজ (ধোঁয়াশা) কমানো। ঐটার সাথে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ধ্বংস হওয়ার কী সম্পর্ক?

আপনি তো ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট ধ্বংস হওয়ার দুশ্চিন্তায় জারেজার। আমি আপনাকে উদাহরণ দেখালাম, ১৯৬৬ সাল থেকে ঐ বিদ্যুৎকেন্দ্র চলছে। ফ্লোরিডার লোক নাহয় আপনার চোখে অশিক্ষিত, ফ্লোরিডার ম্যানগ্রোভ ফরেস্টও কি অশিক্ষিত যে শিক্ষার অভাবে সে এখনও কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্রের মাঝখানে টিকে আছে? একটু জানাবেন ভাইয়া। ঐ ম্যানগ্রোভ গত ৫০ বছর ধরে টিকে থাকলে সুন্দরবন কেন ধ্বংস হয়ে যাবে, এটাও একটু জানাবেন ভাইয়া। যদি কারো বদদোয়ায় ধ্বংস হয়, তাহলে তার নাম জানাবেন ভাইয়া।

আম্রিকার মেইনস্ট্রিম মিডিয়া এতো খারাপ যে এদের সুমতি দেওয়ার জন্য কয়েক বছর আগে আনুদাস পাল আর কয়েক মাস আগে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম শিক্ষাদান সফরে গিয়েছিলেন শুনেছিলাম। ওনারা কিছু বক্তৃতা-বিবৃতিও দিয়েছিলেন, তারপরও কাজ হয় নি। সে কথা আমি জানি ভাইয়া। এসব প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলে যদি উত্তর দিতে গিয়ে আপনাকে দুই ঘণ্টা গুগল সার্চ করতে হয়? না ভাইয়া, তা হয় না।

ভারত কেনো ফারাক্কা-বারাক্কা তে করলেও নিজেদের সুন্দরবনের অংশে কোল প্ল্যান্ট করতে দেয়নি ভাইয়া? এই উত্তর পেলেই আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন ভাইয়া।

একটু আগে বললেন ভারতের সুপ্রিম কোর্টের কথা। আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে ভারতে কে বা কাহারা সুন্দরবনে আগে কোল প্ল্যান্ট করতে গিয়েছিলো, কিন্তু ভারতীয় আনুদাস পালেদের তীব্র বিপ্লবের মুখে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট সেটা হতে দেয় নি। এরকমই কি ঘটেছিলো ভাইয়া? ঘটে থাকলে তথ্যসূত্র প্লিজ। একটু মেইনস্ট্রিমের কাগজের লিঙ্কই দিয়েন, আনুদাসপালডটকম দিলে কিন্তু বিশ্বাস করবো না। আগে পড়ে দেখি ঘটনা কী ঘটেছিলো, তারপর আপনার প্রশ্নের উত্তর আমিও খুঁজবো।

সেইসাথে আপনার জন্যে আমার তরফ থেকে প্রশ্ন, ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের ওপর এতো প্রগাঢ় ভক্তি কেন ভাইয়া? ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের গোনিধন নিষেধ আইন আপহোল্ড করেছে, আপনি যদি সেটা দেখিয়ে নিউমার্কেটে গরু জবাই নিষিদ্ধ করতে চান, ব্যাপারটা কি ঠিক হবে? কিংবা ধরেন ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট যে আন্তনদীসংযোগ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়ে রায় ঠুকেছে, সেটার সপক্ষেও কি আপনি বিপ্লবে নামবেন? একটু কষ্ট করে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যান না ভাইয়া। দরকার হলে আমাকে যে গুগলের লিঙ্কটা দিয়েছেন, ওটা দিয়ে বিচারকদের জব্দ করে দেবেন নাহয়?

অতিথি লেখক এর ছবি

জ্বি ভাইয়া। ঠিকই বলেছেন। ভারতের জাস্টিসরা এক্কেবারে পচা, কিচ্ছু জানেনা, গুগল ম্যাপে সার্চও করতে পারেনা। দেখেন না, নয়াচর সুন্দরবন থেকে কত্তো দূরে, তাও দুষ্টু জাস্টিসরা কোল প্ল্যান্ট করতেই দ্যায় না।

Green Tribunal says no to thermal power plant at Nayachar

বিস্তারিত রায় পড়ে দ্যাখেন ভাইয়া, কিচ্ছু না জেনে ক্যানো পরিবেশের এবং ম্যানগ্রোভ এলাকার ক্ষতি হবে সেগুলো আইন আর রেফারেন্স সহও লিখেছে ভাইয়া।


আম্রিকার সরকারও কিচ্ছু জানেনা ভাইয়া। তাই তারা শক্ত আইন বানাচ্ছে যাতে ধীরে ধীরে ওদের কোল প্ল্যান্টগুলো বন্ধ হয়ে যায় ভাইয়া।

একমাত্র আমাদের স্মার্ট সরকার আর বিচারকরাই পরবর্তী সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কোল প্ল্যান্ট বানানোর রাস্তা সাফ করছে ভাইয়া। খরচের পরিমাণ আর সেই খরচে সমান মাপের রিনিউয়েবল এনার্জি সম্ভব কিনা সেইটা তো অনেক দূরের বিষয় ভাইয়া। তাই আসুন গুগলে আরো বিভিন্ন দেশের প্ল্যান্ট খুঁজে খুঁজে সেগুলো আপ্লোড করি ভাইয়া। পরিবেশ-পরিচিতি-সমাজ দিয়ে আর কি ইবা হবে ভাইয়া।

হিমু এর ছবি

ধন্যবাদ ভাইয়া। আমার আশা ছিলো আপনি শুধু সার্চই করেন না, পেস্ট করার আগে নিজে খানিকটা পড়েও দেখেন। কিন্তু ধন্য আশা কুহকিনী! আপনি একটা কিছু খুঁজে পেয়ে এতো উত্তেজিত হয়ে পেস্ট করে সটকে পড়ছেন যে সেটার ভেতরে যে আপনার কথার বিপক্ষে জিনিসপত্র ঠাসা, সেটা আর খেয়াল করছেন না। নাকি আংরেজি পড়ে বুঝতে সমিস্যা ভাইয়া? লজ্জার কিছু নেই।

এইবার আসুন আমরা আপনার দেওয়া লিঙ্ক থেকে তথ্যগুলো পড়ে বোঝার চেষ্টা করি।

"The National Green Tribunal (NGT) on Wednesday disallowed a proposed thermal power plant at Nayachar in East Midnapore district owing to geomorphology of the island and lack of clearance from the Ministry of Environment and Forests."

ভারতের একটি ট্রাইব্যুনাল নয়াচরে এই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হতে দেয় নি কারণ,

(১) নয়াচরের জিওমর্ফোলজি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উপযোগী নয়,
(২) পরিবেশ ও বন মন্ত্রক এটার ছাড়পত্র দেয় নি।

কেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রক এটার ছাড়পত্র দেয় নি? রায়ে ট্রাইবুনাল উল্লেখ করেছেন,

"The NGT bench also noted that the affidavits of the Ministry of Environment and Forest and Climate Change on Coastal Regulation Zone (CRZ) criteria prohibit any such construction within a specified distance from the waterline."

এখন আপনাকে বুঝতে হবে কোস্টাল রেগুলেশন জোন বা উপকূলীয় নিয়ন্ত্রণ অঞ্চল কাকে বলে। ভারতের ১৯৮৬ সালের এনভায়রনমেন্ট প্রটেকশন অ্যাক্ট বা পরিবেশ রক্ষা আইনে এই উপকূলীয় নিয়ন্ত্রণ অঞ্চলের সংজ্ঞা দেওয়া আছে এভাবে [সূত্র]:

"As per the notification, the coastal land up to 500m from the High Tide Line (HTL) and a stage of 100m along banks of creeks, estuaries, backwater and rivers subject to tidal fluctuations, is called the Coastal Regulation Zone(CRZ)."

অর্থাৎ, সর্বোচ্চ জোয়ারসীমার ৫০০ মিটারের মধ্যে এলাকা অথবা খাঁড়ি ও নদীর তীরের ১০০ মিটারের মধ্যে এলাকা, যেখানে জোয়ারভাটার কারণে পানি বাড়ে কমে, সেটাকে বলে উপকূলীয় নিয়ন্ত্রণ এলাকা।

এর আবার চারটা ভাগ আছে। সিআরজেড ১ হচ্ছে [আগের সূত্র দ্রষ্টব্য]:

"CRZ-1 these are ecologically sensitive areas these are essential in maintaining ecosystem of the coast. They lie between low and high tide line. Exploration of natural gas and extraction of salt are permitted"

আপনার দেওয়া পিডিয়েফে কিন্তু পরিষ্কার করে বোঝানো আছে, নয়াচর দ্বীপে যেখানে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিলো, সেটা সিআরজেড ১। ভারতের আইনে কোনো পক্ষ এই ক্লাসিফিকেশনে থাকা অঞ্চলে লবণ তুলতে পারবে, গ্যাসের সন্ধান চালাতে পারবে, কিন্তু কোনো বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে পারবে না।

কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য State Coastal Zone Management Authority (SCZMA) নয়াচরকে রিক্লাসিফিকেশন করার জন্যে মন্ত্রকে দৌড়ঝাঁপ করে। সিআরজেড ১ থেকে সিআরজেড ৩ বানাতে পারলেই কিন্তু সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র বানানো সম্ভব, আইনে সেটাই বলা আছে। সে অনুযায়ী পরিবেশ ও বন মন্ত্রকও সায় দিয়েছিলো। তারা আগের সিআরজেড নোটিফিকেশনকে ধামাচাপা দিয়ে নতুন সিআরজেড নোটিফিকেশন ইস্যু পর্যন্ত করে। কিন্তু নতুন নোটিফিকেশনে বলা হয়েছিলো, SCZMAকে নতুন কোস্টাল জোন ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান প্রণয়ন করতে হবে। মামলার শুনানি পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ SCZMA সেটা প্রণয়ন করে নি। ফলে রিক্লাসিফিকেশনও আর হয় নি। কাজেই ট্রাইবুনালের হাত পা বাঁধা, তারা নয়াচরকে আগের সিআরজেড ১ ধরে নিয়ে সেখানে বিদ্যুৎকেন্ত্র স্থাপন নিষেধ করেছেন।

তবে রায়ের মুড়োতে এটা থাকলেও ল্যাঞ্জায় বলা আছে, "If re-classification of Nayachar Island is approved by the MoEF & CC considering the new CZMP by the State Coastal Zone Management Authority, the applicants will be at liberty to approach this Tribunal afresh." মানে রিক্লাসিফিকেশন হয়ে গেলে এ নিয়ে আবার মামলা মোকদ্দমা চলবে। ব্যাপারটা পুরোপুরি মীমাংসিত নয়।

এবার আসুন দেখি মামলাটা কারা করেছিলো।

"Thirteen fishermen’s cooperative society had filed a writ petition before the Calcutta High Court seeking an order against setting up of the power plant claiming that it violated CRZ norms and that it would cause an environmental hazard."

এই জেলেদের সমবায় সমিতিগুলো আপত্তি জানিয়েছে, কারণ তারা নয়াচরে মাছ ধরে খান। সেখানে তারা ব্র্যাকিশ ওয়াটার অ্যাকুয়াকালচার, সোজা কথায় লোনাপানির ঘের করেছেন। বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সেগুলোতে ব্যাঘাত ঘটবে।

রায়ের পিডিয়েফটা পড়লে দেখতেন, "সুন্দরবন" শব্দটা ব্যবহৃত হয়েছে কেবল এক জায়গায়, বাদীরা নিজেদের আরজি জোরালো করার জন্যে সুন্দরবনকেও নয়াচরের পাশাপাশি বিপন্ন দাবি করেছেন। আদালত সুন্দরবন নিয়ে কোনো মন্তব্যই করেন নি।

রায়ের মূল অংশ পড়লে দেখতেন, ট্রাইবুনাল আলোচনা করেছেন নয়াচরের ম্যানগ্রোভ নিয়ে, সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ নিয়ে নয়। নয়াচর যদি সিআরজেড ১ এলাকা হয় (জোয়ার আর ভাটার মধ্যবর্তী এলাকার মাঝে), সেখানে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে আইনেই বাধা আছে।

এখন আপনি যদি এইটুকু বুঝে থাকেন, একটু কষ্ট করে খোঁজ নিয়ে এসে বলেন,

(১) রামপাল সিআরজেড ১ ক্যাটাগরির (জোয়ারভাটার মধ্যবর্তী কোনো এলাকা) এলাকা কি না।
(২) যে রায়ে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভের কোনো ক্ষতির সম্ভাবনার কথাই বলা হয় নি, বলা হয়েছে কোথাকার কোন উত্তর মেদিনীপুরের এক চর নয়াচরের ম্যানগ্রোভের কথা, সে রায় না পড়ে, না বুঝে, "ভারতের আদালত ক্যান ঐখানে করতে দিলো না" বলে কুমীরের ছানার মতো দেখানোটা ধান্ধাবাজি বলে মনে করেন কি না।

আমৃকাকে কখন গালি দেন আর কখন ভালোবেসে তার কোলে চড়েন, ভেবে থই পাই না। যাই হোক, ২০০৬ সালে আমৃকার কয়লাচালিত ইনস্টলড ক্যাপাসিটি ছিলো ২২৭১০০ মেগাওয়াট। জ্বি ভাইয়া, দুই লক্ষ সাতাশ হাজার একশো মেগাওয়াট। সেখান থেকে তারা এক দেড় হাজার মেগাওয়াট ছেঁটে ফেলে দিলেই কী এসে যায়? তাদের সাথে আপনি করছেন বাংলাদেশের তুলনা?

আনুদাস পালকে একটু বলবেন তো ভাইয়া, পারলে যেন চীনকেও উনি একটু বকে দেন। দুনিয়ার এক লম্বর কয়লাপোড়ানো জাতি বলে কথা। তবে ফান্ডিং বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে বকা দেওয়ার দরকার নেই।

রামপালের বিকল্প ১৩২০ মেগাওয়াটের নবায়নযোগ্য শক্তিচালিত প্ল্যান্ট নিয়ে আরেকটু গুগল করে এসে পরিকল্পনা আর খরচের মাপজোকটা একটু দিয়েন ভাইয়া। ১৩২০ পর্যন্ত যেতে না পারলে ১ মেগাওয়াটের হিসাবই দিয়েন।

অতিথি লেখক এর ছবি

যাক অনেকগুলো জিনিষ পরিষ্কার হলো। ধন্যবাদ "নাম নাই" অতিথি লেখক আপনার কন্সেন্ট্রেশান ক্যাম্প টাইপের উষ্কানিমূলক মন্তব্যগুলোর জন্যে। এই কারণেই পুরনো ক্ষুরধার, যৌক্তিক, বিশ্লেষণী হিমুর মন্তব্য পাওয়া গেলো। আমার আর আপনার মতো আবাল আমজনতা যারা কোন বিষয়ের খুব বেশি গভীরে না গিয়ে হাউকাউ করি তাদের জন্যেই এই হিমুকে দরকার।

হিমুকে ধন্যবাদ দিবো না কারণ তিনি ধন্যবাদের আশায় এত কষ্ট করে মন্তব্য করেন না। তাই আপ্নাকেই, জ্বি "কন্সেন্ট্রেশান ক্যাম্প" ভাইয়া, আপ্নাকেই অসংখ্য ধন্যবাদ দিচ্ছি।

ফারাসাত

Sufi Abdullah এর ছবি

ব্যাপক বিনোদন! অতিথি, আপ কাব জায়েগা? নাকি অলরেডি চলে গেছেন?

অতিথি লেখক এর ছবি

পৃথিবীর অনেক জায়গাতেই কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পে ইহুদীদের পুড়িয়ে মারা হতো ভাইয়া। কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প থাকলেই সেটা জায়েজ হয়ে যায়না ভাইয়া।

"গডউইন'স ল" ইন অ্যাকশন!

Emran

মন মাঝি এর ছবি

হে হে - আমাদের 'ভাইয়া' আসলে Straw Man Fallacy-তে এক্সপার্ট (এই উদাহরণটাও মৌলিকভাবে স্ট্র ম্যানের নমুনা)। এটা কখনও "গডউইন'স ল-র রূপ নেয়, আবার সুবিধা মতো অন্য কোনো রূপ নিবে। হাসি

****************************************

কামরুল এর ছবি

সরকার চরম বোকামি করছে! কেন যে চীনা কোম্পানিকে কাজটা দিল না!তাইলেই আনুদাসরা একে পরিবেশবান্ধব বলে সার্টিফাই করত।

তন্ময়  এর ছবি

লেখাটা যথেষ্ট পরিমাণ বিপথে চালিত করে। কারণ, ইআইএ রিপোর্টেই নির্গত গ্যাসের দূষণের মাত্রা সম্পর্কে বলা আছে এবং তা কত দূরত্বে কি পরিমাণ প্রভাব ফেলবে তাও বলা আছে। ফ্লাই এশ এর দূষণ কমানোর জন্য ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক প্রিসিপিটেটর ব্যবহার করা হয়, যার থিউরিটিক্যাল এফিশিয়েন্সি ৯৯%। এছাড়া সালফার, নাইট্রোজেনের যে দূষণের কথা বলা হচ্ছে, তা নির্ভর করে কয়লার সালফার কনটেন্ট এর উপর। সালফার কনটেন্ট এর তারতম্য হলে বা সুন্দরবনের বাড়তি নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করলে ডিসালফারাইজেশন ইউনিট বা ডিনাইট্রিফিকেশন ইউনিট গুলো সচল করে দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। আর এই ফিল্ট্রেশন ইউনিটগুলো প্রকল্প প্রস্তাবেই রাখা হয়েছে। মানে সুন্দরবনের করমজল পয়েন্টে যদি SO2 ১০ পিপিএম হয়। তবে তা থিউরিটিক্যালি ৯০-৯৫% পর্যন্ত কমানো যাবে, ডিসালফারাইজেশনের মাধ্যমে। এভাবেই সাম্প্রতিক সময়ের কয়লা বিদ্যুৎগুলো চলছে। আমেরিকাতে ১৯৯৫-২০১১ সালে প্রায় ৬৭% বিদ্যুতকেন্দ্রে ডিসালফারাইজেশন ইউনিট রেট্রোফিটিং করা হয়, মানদন্ড অনুসরণের তাগিদে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।