বাধ্যতামূলক স্বেচ্ছাসেবা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৩/০১/২০১১ - ৩:৫৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

তর্ক করা যেতে পারে 'বাধ্যতামূলক স্বেচ্ছাসেবা' বলে কিছু থাকতে পারে কিনা। আক্ষরিক অর্থে হয়ত পারে না, কারণ শব্দ দুটো পরস্পরবিরোধী। বাধ্যতামূলকই যদি হবে তাহলে স্বেচ্ছাসেবা হল কীভাবে? মানলাম। মেনে নিয়ে নতুন একটা নাম দিলাম 'বাধ্যসেবা'। এরপরেও কথা থেকে যায়, এই বাধ্যসেবা কে কাকে দিবে, কেনই বা দিবে, কখন-কীভাবে দিবে, আবার কখন দেওয়া উচিত হবে না। অনেক কিছুই জানার আছে এই বিষয়ে। একটা একটা করে তাহলে জানা শুরু করি।

কে কাকে বাধ্যসেবা দিবে: বাংলাদেশের মানুষ বাংলাদেশকে বাধ্যসেবা দিবে। মানুষের দলটাকে বেশ সংকীর্ণ করে বলা যায় উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা এই কাজটা করতে পারে অনায়াসে। প্রতি বছর আনুমানিক ৫ থেকে ৭ লাখ পরীক্ষার্থী এইচ এস সি পরীক্ষায় বসেন। সেই হিসাবে বলা যায় প্রায় ১০ থেকে ১৫ লাখ শিক্ষার্থী দেশব্যাপী উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাঙ্গনে ছড়িয়ে আছেন। এই শিক্ষিত, শৃঙ্খলাবদ্ধ ছেলেমেয়ের দলটিকে কাজে লাগানো যায় দেশের এবং নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নের লক্ষ্যে। এর জন্য তাদের লেখাপড়ার পাশাপাশি ব্যয় করতে হবে মাসে মাত্র ২০ থেকে ২৫ ঘণ্টার মত সময়। তারা নিয়মিত পড়ালেখা করবে, এর পাশাপাশি আড্ডাবাজি আর টিভি দেখার থেকে একটুখানি সময় ধার করে সেটা বরাদ্দ করবে অন্য মানুষের সাহায্যার্থে।

আমরা যদি বছরে ১০ লাখ কর্মী পাই যারা টুকটুক করে অন্য আরেকজনের উপকার করতে এগিয়ে আসছে, তাহলে আমাদের দেশের ভোল পাল্টে যাবে কয়েক বছরের মধ্যেই।

কেনই বা দিবে: বাধ্যসেবা থেকে যে শুধু সমাজ বা দেশ উপকৃত হচ্ছে তা কিন্তু নয়, বরং সবচেয়ে বেশি উপকার পাচ্ছে সেই শিক্ষার্থী নিজেই। এই উঠতি বয়সে একজন অনুভব করার সুযোগ পাচ্ছে যে তার সামান্য অবদান সমাজে কত মূল্যবান। আমরা লেখাপড়া করি নিজের জ্ঞানলাভের জন্য, চাকরী বা ব্যবসা যেটাই করি না কেন তার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে নিজ চাহিদা পূরণের প্রবৃত্তি। যেকোনো সেবামূলক কাজ মানুষকে এই একচোখা দৃষ্টিকোণ থেকে বের করে আনে। তার নিজস্বত্বাকে অন্য একটি রূপে দেখতে শেখায়। অন্যের জন্য কিছু করতে পারার আত্মতুষ্টি লাভের সুযোগ সবসময় পাওয়া যায় না। সুযোগটা নাহয় কলেজগামী ছেলেমেয়েদের করে দেওয়া হোল। ওরা কাজ করুক, নিজেদেরকে নতুনভাবে চিনতে শিখুক। সাথে আরও বুঝে নিক কোন কর্মক্ষেত্রে সে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে বেশি, এতে করে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে পারবে আরও ধীরচিত্তে।

কখন-কীভাবে দিবে: কখন দেওয়া হবে সেটা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। কীভাবে দেওয়া হবে সেটার উত্তরে বলা যায়, সেবামূলক কাজ হতে পারে বিভিন্ন আঙ্গিকে। সাধারণভাবে ভাবলে প্রথমেই মাথায় আসে স্কুলে পড়ানো বা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে সেবা দান। এগুলো তো থাকবেই, সাথে আরও অনেক ক্ষেত্রেই তরুণ দলটি অবদান রাখতে পারে। উদাহরন্স্বরুপ উল্লেখ করা যেতে পারে নিচের খাতগুলো:

  • প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষা প্রদান
  • বয়স্ক শিক্ষা প্রদান
  • প্রতিবন্ধী স্কুলে বা বাসার পরিবেশে পড়ালেখায় সাহায্য করা
  • বিভিন্ন এক্সট্রা কারিকুলাম (নাচ, গান, খেলাধুলা, কম্পিউটার শেখানো ইত্যাদি) সাহায্য
  • হসপিটাল এবং স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে কাজ করা
  • শহর নগর পরিষ্কার (চিকা পরিষ্কার করা মার্কা কাজ)
  • গাছ লাগানো এবং তাদের পরিচর্যা
  • বৃদ্ধাশ্রমে সময় দেওয়া
  • এতিমখানায় সময় দেওয়া
  • সরকারী নথিপত্র কম্পিউটারে ভুক্তিকরন
  • পর্যটন শিল্পে অবদান
  • দমকল বাহিনীতে অবদান

শেষ কথা: বাধ্যতামূলক স্বেচ্ছাসেবার অপব্যবহার যেন না হয় সেদিকে আবার কড়া নজর রাখতে হবে। সরকারী বা বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠান চাকরীযোগ্য পদে সেবাকর্মীদের দিয়ে আবার না করিয়ে নেয়। আবার এটাও দেখতে হবে যে বাধ্যতামূলক বলে কারো উপর খাড়ার ঘা যেন মেরে বসা না হয়, কিছু ব্যতিক্রমের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। শারীরিক কারণে হয়ত অনেকে সেবাকাজে যোগ নাও দিতে পারেন। কিংবা সেবা নয় নিজের বা পরিবারের প্রয়োজন মিটাতে অনেকে এই বয়সেই পেশাবৃত্তির সাথে জড়িত, তাদেরকেও এই নিয়মের বাইরে রাখা যেতে পারে। সর্বোপরি মনে রাখতে হবে যে বাধ্যসেবা দেশ, সমাজ এবং নতুন প্রজন্ম এই তিনের উন্নয়নের জন্যই ভাবা হচ্ছে। একটা সমন্বিত প্রয়াস যেমন দেশের কল্যাণ বয়ে আনবে, অন্যের জন্য নিঃস্বার্থভাবে করতে পারার আনন্দ তরুণ প্রজন্ম একটু হলেও অনুভব করতে পারবে।

-রু


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

এ ব্যাপারে কিছু আলোচনা হয়েছিলো সচলে। এখানে দেখতে পারেন। এই পদ্ধতি চালু করা গেলে এর সুফল আমরা নিঃসন্দেহে পেতাম। শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারলে ভালো হতো।

রু (অতিথি)  এর ছবি

আপনার লিঙ্কটার জন্য ধন্যবাদ। লেখার আগে আমি গুগলায়তনে খুঁজেছিলাম 'স্বেচ্ছাসেবা', 'স্বেচ্ছাসেবক', আর 'volunteer' শব্দ দিয়ে। কোন প্রাসঙ্গিক পোস্ট আসেনি। 'জনসেবা' শব্দটা মাথায় আসেনি। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

ru (অতিথি)  এর ছবি

উপরের কমেন্টে ভুল বলেছি। গুগলায়্তনে খুঁজিনি, এখন চেক করে দেখ্লাম ওটাতে আসে। ডিফ্ল্ট ("লেখা") অপ্শনে খুঁজেছিলাম।

অপছন্দনীয় এর ছবি

করতে পারলে খুবই ভালো হয় কিন্তু আমাদের আশেপাশে এমন প্রচুর মানুষ আছেন কিছু কিছু কাজ করতে যাঁদের "জাত যায়"। বাধ্যতামূলক কিছু চালু করার আগে এই "জাত যাওয়া" মননশীলতা পরিবর্তন করতে পারলে হয়তো সবই সম্ভব। অবশ্য এটাও হতে পারে যে বাধ্যতামূলক সেবাপ্রদান চালু করলে মননশীলতা ধীরে ধীরে পরিবর্তন হয়ে যাবে - তবে সেটার সম্ভাবনা কম।

উচ্চমাধ্যমিক ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে দিনে এক দুই ঘণ্টা জনসেবায় খরচ করা কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়, কিন্তু যেখানে "ভালো ছাত্র" মানে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দক্ষ মুখস্থবিদ, সেখানে এই ব্যবস্থা করতে গেলে কিছুসংখ্যক 'শিক্ষানুরাগী' অভিভাবকের রোষানলে পড়তে হতে পারে।

নটরডেম কলেজের সান্ধ্য স্কুলে ছাত্ররা ক্লাস নিতে পারে জানতাম। তবে পরিচিতর মধ্যে কেউ এই কাজ করেছে বলে মনে পড়েনা।

অতিথি লেখক এর ছবি

জাত যাওয়া মার্কা মনোভাব একদিনে যাবে না। সেবামূলক যেকোনো কাজের সাথে পরিচিত হয়ে উঠলে কাজের মর্যাদা করতে শিখবে।

উচ্চমাধ্যমিক ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে দিনে এক দুই ঘণ্টা জনসেবায় খরচ করা কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়, কিন্তু যেখানে "ভালো ছাত্র" মানে বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দক্ষ মুখস্থবিদ, সেখানে এই ব্যবস্থা করতে গেলে কিছুসংখ্যক 'শিক্ষানুরাগী' অভিভাবকের রোষানলে পড়তে হতে পারে।

রোষানলে পড়লেও বৃহত্তর স্বার্থে সেটা উপেক্ষা করতে হবে।
নটরডেম কলেজের সান্ধ্য স্কুলে ছাত্ররা ক্লাস নিতে পারে জানতাম। তবে পরিচিতর মধ্যে কেউ এই কাজ করেছে বলে মনে পড়েনা।
নিজের গরজে অনেকে হয়্ত করবে না। কিন্তু একটা ব্যবস্থা কাঠামো তৈরী করা গেলে বেশিরভাগ ছেলে মেয়েই উত্সাহী হবে বলে আমার বিশ্বাস। ধন্যবাদ।
-রু

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ব্যাপারটি চমৎকার। সহপাঠিরা সেবা দিয়ে এসেছে। তাদের কাছে সেই গল্প শুনলে হিংসা হয় মাঝে মাঝে।

আমাদের দেশে এই কাজটি করতে গেলে দুভাবে করা যেতে পারে,
যদি কোনরকম ভাতা না দেয়া হয় তাহলে সেবা দেয়ার নিয়ম হোক পড়াশোনা চলাকালেই। আর যদি ভাতা দেয়া হয় তাহলে পড়াশোনার কোন একটা পর্যায়ে নির্দিষ্ট সময় পড়াশোনা/কাজ বন্ধ রেখে সেবা দেয়া যেতে পারে।

আমার দেশে ঘরের খেয়ে উপার্জন/পড়াশোনা বন্ধ রেখে বছরখানেক ধরে সেবা দেয়াটা কিছুটা অবাস্তব মনে হচ্ছে। অন্তত আমার ঘাড়ে এই নিয়ম চাপালে আমি সেটা পছন্দ করতাম না। অন্তত ভরন-পোষন যদি এর সঙ্গে দেয়া যায় তাহলে সেটাতে কোন আপত্তি থাকে না বরং আগ্রহ বাড়ে। আমার দেশে যেহেতু ভাতা দেয়াটা বিরাট একটা যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা আছে তাই পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে (ধরা যাক সপ্তাহে ৬ ঘন্টা) সেবা দেয়ার নিয়ম চালু করলেই বোধ হয় ভালো।

আইন না হলে বোধহয় কেউ কাজটা করতে চাইবে না। ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা বলি, আমি নিজে ভেবেছিলাম আমরা সব বন্ধুরা পাশ করে ৬ মাস বিনা পয়সায় সেবা দেব কিছু হসপিটালে। আমার বেশিরভাগ সহপাঠীই এরকম কিছুতে রাজি হয়নি। আমরা যে কয়জন রাজি হয়েছিলাম তাদেরকে হাসপাতালগুলো (তিনটিতে কথা বলেছিলাম) কাজ দিতে চায়নি।

[অ.ট. লেখাটা একটা ইংরেজি লেখার অনুবাদ মনে হচ্ছে। তাই কি?]

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাতা ব্যবস্থার কথা আমি ভাবিনি। আমাদের দেশে এটা আসলেই সুবিধা হবেনা, আপনিও যেটা বললেন। কারো যদি নিজের/পরিবাবের প্রয়োজনে আয় করতে হয়, তাহলে তাকে এই নিয়মের বাইরে রাখা যেতে পারে। এটা মূল লেখাতেও আমি উল্লেখ করেছি।
শুধু এক বছর কেন, দুই বছরও করা যায়। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। এই অভিজ্ঞতার মূল লক্ষ্য হচ্ছে ছাত্র ছাত্রীদের বোঝানো যে তারা কত মূল্যবান, তারাই দেশের সম্পদ।
লেখাটা অনুবাদ না। আপনি অন্য কোনো লেখার সাথে মিল খুঁজে পেলে দয়া করে সুত্রটা জানিয়ে বাধিত করবেন, কৌতুহলবশত জানতে চাচ্ছি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
-রু

শেহাব- এর ছবি

আমরা পাশ করে ফেলার পর জাফর ইকবাল স্যার ডিপার্টমেন্টে এরকম একটা এক্সপেরিমেন্ট করেছিলেন। পদাধিকার বলে উনি কোন একটা প্রোগ্রামের আহ্বায়ক বা পরিচালক কিছু একটা ছিলেন। তো সম্মানী হিসেবে ৫০,০০০ টাকা পেয়েছিলেন। ওনার ভিউ ছিল উনি নাকি তেমন কোন কাজ না করেই এই টাকাটা পেয়েছিলেন। তবে এটা সরাসরি ডোনেট না করে উনি ওই সময় যারা ফাইনাল ইয়ারে ছিল তাদের মধ্য থেকে ১০ জন কে দায়িত্ব দিয়েছিলেন সম্ভবত অন্য ডিসিপ্লিনের ছেলেমেয়েদের জন্য আমাদের ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে যে সব প্রোগ্রামিংয়ের কোর্স অফার করা হয় তার সাথে এক্সট্রা ল্যাব বা ওয়ার্কশপ জাতীয় কিছু করানোর জন্য। এর বিনিময়ে উনি টাকাটা ওদের ভাগ করে দিয়েছিলেন। উনি বোধহয় ওদের ইনফরমালি টিচিং এসিসট্যান্ট বলতেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

শুনে ভাল লাগলো। পড়ার জন্য ধন্যবাদ। -রু

অতিথি লেখক এর ছবি

শুনে ভাল লাগলো। পড়ার জন্য ধন্যবাদ। -রু

অতিথি লেখক এর ছবি

হুম, ঠিক বলেছেন। তবে সেই সেবার জন্যে উপযুক্ত পরিবেশ আগে দরকার। আমরা বন্ধুরা স্কুলে থাকতে এরকম কিছু করতে গেছিলাম একবার। কিন্তু অকালপক্ক ভেবে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিল তারাই যাদের এতে উপকার হত। এ জিনিসটায় মর্মাহত হয়ে পরে অনেক কাজের উৎসাহ হারিয়ে ফেলি।

তবে আমার হয়ে কেউ বাধ্যসেবার মাধ্যমে পরীক্ষাগুলো দিয়ে দিলে মন্দ হত না। চোখ টিপি আমি শুধু ইচ্ছামত বই পড়তাম নিজের মত। জোর করে তাহলে আর মুখস্ত সিস্টেম দ্বারা মস্তিষ্কক্ষরণ করতে হত না। মন খারাপ

-অতীত

অতিথি লেখক এর ছবি

তবে আমার হয়ে কেউ বাধ্যসেবার মাধ্যমে পরীক্ষাগুলো দিয়ে দিলে মন্দ হত না। চোখ টিপি আমি শুধু ইচ্ছামত বই পড়তাম নিজের মত। জোর করে তাহলে আর মুখস্ত সিস্টেম দ্বারা মস্তিষ্কক্ষরণ করতে হত না। মন খারাপ

বাধ্যসেবার এহেন অপব্যবহার করলে লাঠিসোটা নিয়ে আমি সবার আগে রাস্তায় নামতাম এইগুলা বন্ধ করার জন্য। ভাল থাকবেন।
-রু

ফাহিম হাসান এর ছবি

সাধু উদ্যোগ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রকে সবসময়ই দেখা যায় দরিদ্র ছাত্রদেরকে পড়াতে (গ্রন্থাগারের পিছনে)।
অনেকদিন ধরেই এই কার্যক্রম চলছে - কিন্তু সীমিত আকারে।

অন্তত বাসার কাজের ছেলে/ মেয়েকে পড়াশোনা শেখানোর একটা তাগিদ সবার অনুভব করা উচিত।

অতিথি লেখক এর ছবি

অন্তত বাসার কাজের ছেলে/ মেয়েকে পড়াশোনা শেখানোর একটা তাগিদ সবার অনুভব করা উচিত।
একমত। পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। -রু

স্পর্শ এর ছবি

খুব গুছিয়ে বলেছেন। আসলেই একটা দারুণ ব্যাপার হতো এমন করা গেলে। আর অন্যকে সাহায্য করলে, বা নিজে কোনো কমিউনিটি ওয়ার্ক করলে নিজের জীবনটাকেই মূল্যবান মনে হয়। অনেকে হয়তো নিজে থেকে সেবামূলক কিছু শুরু করবে না। কিন্তু একবার এর স্বাদ পেয়ে গেলে চালিয়ে যাবে সাগ্রহেই।

চমৎকার লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

অতিথি লেখক এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ। -রু

হাসিব এর ছবি

জার্মানিতে সবার বাধ্যতামূলকভাবে সামাজিক কাজ অথবা সেনাবাহিনীতে কাজ করতে হয় স্কুল শেষ হবার পর। উপযুক্ত ভাতা ও সুবিধাসহ বাংলাদেশেও এই কাজ শুরু করা যেতে পারে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাতা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সুবিধা হবে বলে মনে হয় না। আরেকটা ব্যাপার হোল যে যখন ভাতা দেওয়া হবে, পোলাপানের ইন্সেন্টিভ বদলে যাবে, সেবাদানের মনোভাব খুবই গৌণ হয়ে পড়বে। ধন্যবাদ। -রু

বইখাতা এর ছবি

খুব ভাল আইডিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়ার সময় এরকম একটি কাজে যোগ দিতে গিয়েও নানা কারণে যোগ দেয়া হয়নি। আইডিয়া বাস্তবায়িত করা গেলে ভালই হবে।

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এখনো কিন্তু সময় আছে, শুরু করতে পারেন। -রু

স এর ছবি

স্কুলে স্কাউটিং করার সময় এই রকম কিছু কাজ করেছি। খুব অল্প পরিসরে হতো, হয়তো স্কুল মাঠের ময়লা পরিস্কার, শীতের সময় গরম কাপড় সংগ্রহ ইত্যাদি। এতে দেশের কোন উন্নয়ন বা দেশ অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হতো কিনা কখনো চিন্তা করে দেখিনি। তবে সবাই যখন একসাথে কাজ করতাম খুব ভালো লাগতো। নিজেদের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা থাকতো কে কত বেশি কাজ করতে পারলাম তা নিয়ে। মাঠ পরিস্কার করার পরে যদি মাঠে আবার ময়লা দেখতাম খুব খারাপ লাগতো। স্কুলের ৬০০ থেকে ৬৫০ ছাত্রের মধ্যে ৪০-৫০ জন এই ধরনেরর কাজে অংশ নিতাম। সবাই মিলে মাঠ পরিস্কার করলে, কেউ হয়তো মাঠ ময়লা করতো না। বাংলাদেশের সবাই যদি এই কাজ করে তাহলে বাংলাদেশ ও কোনদিন ময়লা হবেনা।

অতিথি লেখক এর ছবি

মাঠ পরিস্কার করার পরে যদি মাঠে আবার ময়লা দেখতাম খুব খারাপ লাগতো।.... সবাই মিলে মাঠ পরিস্কার করলে, কেউ হয়তো মাঠ ময়লা করতো না। বাংলাদেশের সবাই যদি এই কাজ করে তাহলে বাংলাদেশ ও কোনদিন ময়লা হবেনা।

আমি ঠিক এটাই তুলে ধরতে চাচ্ছিলাম। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। -রু

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

একটা কাঠামোর মধ্যে করা গেলে ভালো হয়। এটাকে একটা সামাজিক আন্দোলনেও রূপ দেওয়া সম্ভব। কিন্তু সদিচ্ছ এবং সময় প্রয়োজন। স্কুল জীবনে স্কাউট থাকাকালীন এরকম কিছু কাজ করতাম। তবে আজকালকার কাব বা স্কাউটরা আর দেখি সেসব কাজ করেনা। মাঝে মাঝে আমাদের নিয়ে যাওয়া হতো হোন্ডা আর গাড়ির হেডলাইটের উপরের অংশে কালো পেইন্ট লাগানোর কাজে। উৎসাহের সাথে করতাম। বা ৩ জন চড়া রিক্সা থামিয়ে বিনীতভাবে একজনকে নেমে যেতে বলতাম।

জাত গেলো জাত গেলো বলে, একি আজব কারখানা ......................

জাত যাওয়ার ভয়ে তটস্থ থাকলে কিন্তু কিছুই হবে না। উদ্যোগ থাকলে এইসব স্বেচ্ছাশ্রম সম্ভব বলেই আমার মনে হয়। পক্ষান্তরে সরকার একটা সোস্যাল মবিলাইজেশন ফ্রেমওয়ার্ক করে বিষয়টাকে প্রাতিষ্ঠানিক আকারও দিতে পারে।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অতিথি লেখক এর ছবি

পক্ষান্তরে সরকার একটা সোস্যাল মবিলাইজেশন ফ্রেমওয়ার্ক করে বিষয়টাকে প্রাতিষ্ঠানিক আকারও দিতে পারে।

এখানেও স্বদিচ্ছা একটা ব্যাপার আছে। আপনাকে ধন্যবাদ। -রু

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।