'Apocalypto'::ইতিহাসের বিকৃতি,আগ্রাসনের ফ্যান্টাসী

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: রবি, ০৮/০৬/২০০৮ - ৭:২২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

.
মেল গিবসনের এই মুভি শুরু হতে পারতো তার শেষের দৃশ্য থেকে ।
মুভির নায়ক 'মায়া' তরুন জাগুয়ার পো হাঁটুভেংগে বসে সমুদ্র তীরে । আহত,বিধ্বস্ত সে । ক্ষতবিক্ষত,রক্তাক্ত হয়ে দীর্ঘ পথ ছুটে এসেছে আক্রমনকারীদের হাত থেকে নিজেকে এবং তার স্ত্রী ও সন্তানদের বাঁচানোর জন্য । কিন্তু শেষ পর্যন্ত বোধ করি আর সম্ভব নয় , তাড়া করে আসা ঘাতকেরা নিঃশ্বাস ফেলছে তার ঘাড়ের উপর ।
এই ঘাতকেরা ও তার স্বজাতি 'মায়া' । কিন্তু ঘাতকের দল এবং জাগুয়ার পো অবাক বিস্ময়ে দেখে তাদের সমুদ্রে বিশাল জাহাজ নোঙ্গর করা । সেই জাহাজ থেকে ছোট নৌকায় করে তীরের দিকে এগিয়ে আসছে সুশোভন সাদা চামড়ার মানুষেরা । তাদের কারো হাতে ক্রশ,কারো হাতে তরবারী ।

এইক্ষনে আক্রান্ত ও আক্রমনকারী দুপক্ষই কিংকর্তব্যবিমুঢ় । সামনে অচেনা পক্ষ । জাগুয়ার পো সিদ্ধান্ত নেয় তার জংগলে ফিরে যাবার,নতুন জীবন শুরু করার ।

এই শেষ দৃশ্যের আগের পুরোটা সময় জুড়ে দেখা যায় মায়াদেরই দু পক্ষ । এক পক্ষ নগর থেকে এসে জংগলবাসী মায়াদের বন্দী করে নিয়ে যায়,সেখানে সূর্যদেবতাকে খুশী করার জন্য বন্দীদেরকে উৎসর্গ করা হয় । এই উৎসর্গ পর্ব বড়বেশী রক্তাক্ত,বিভৎস ।
দে্বতার সন্তুষ্টির জন্য নরহত্যার প্রচলন অন্যদের মতো মায়াদের মধ্যে ও ছিলো । কিন্তু মেল গিবসন তার মুভিতে মায়াদের যে দৃশ্যপট রচনা করেন সেখানে কেবল ঐ বর্বরতা,নৃশংসতাই ঠাঁই পায় । অন্য কিছু নয় । একেবারেই নয়

অথচ খ্রীষ্টের জন্মের প্রায় ২৫০০ বছর আগে যে সভ্যতার গোড়াপত্তন,তিনহাজার বছর ধরে যারা টিকে থাকলো সদর্পে; জ্যোতির্বিদ্যা,প্রকৌশল ও স্থাপত্যকলায় যাদের দক্ষতা এখনো বিশেষজ্ঞদের কৌতুহলের বিষয়, যারা নিজেদের জন্য শক্তিশালী বানিজ্য ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পেরেছিল সে 'মায়া' দের কোন চিহ্নই নেই অস্কার বিজয়ী এই নির্মাতার মুভিতে ।

'প্যাসন অব দ্যা ক্রাইষ্ট' এর নির্মাতা গিবসন এরকম ম্যাসেজ দিতে চান যে মায়ারা যখন নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত তখন ইউরোপীয়ানরা জাহাজ ভর্তি হয়ে সেখানে গেছে ক্রুশ হাতে যীশুর মহান বানী শোনাতে ।

অথচ কি নিদারুন মিথ্যাচার, ইতিহাসের চরম বিকৃতি ।
স্পেনিয়ার্ডরা ল্যাটিন আমেরিকায় যাবার ৩০০ বছর আগেই মায়া নগরগুলোর পতন ঘটতে থাকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে( ঐতিহাসিক ও প্রত্নতত্ববিদরা এখনো পতনের কারন বিষয়ে একমত নন) । নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ নয় বরং মায়ারা ব্যাপক হারে প্রান হারায় স্পেনিয়ার্ডদের হাতেই । উপনিবেশ সময়ের প্রথম ১০০ বছরেই নিহত হয়েছিল মায়াদের ৯০% । পরিকল্পিত ভাবে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল বসন্ত,হাম,ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো সংক্রামক ব্যাধি ।

'মায়া' রা তবু টিকে গিয়েছিল, প্রান বাঁচানোর তাগিদে ছড়িয়ে পড়েছিল পুরো ল্যাটিন আমেরিকা জুড়ে । বর্তমানে গুয়াতেমালা ও বলিভিয়ায় 'মায়া' রাই সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী এবং তাদের মধ্য থেকেই রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হচ্ছেন ।
কিন্তু ইতিহাস মনে রাখে যে, 'মায়া' রা প্রথম বার গনহত্যার শিকার হয়েছিল মধ্যযুগে ইউরোপিয়ানদের হাতে, আর সবশেষে গুয়াতেমালার গৃহযুদ্ধের সময় ইউরোপিয়ানদেরই দুধভাই আমেরিকানদের হাতে ।
প্রথমবারে ও ক্রুশহাতে যীশুর চেলারা তরবারীর সহগামী হয়েছিলেন,দ্বিতীয় গনহত্যায় ও চার্চ ও ক্যাথলিক মিশন একই ভূমিকায় ।

তবু মেল গিবসন ইশ্বরপুত্র যীশুর পুনরুত্থানের স্বপ্নে বিভোর থেকে পর্ণোগ্রাফিক ফ্যান্টাসী তৈরী করেন ।


মন্তব্য

নুশেরা তাজরীন এর ছবি

খুব ভাল একটা কাজ হয়েছে, হাসান। অজানা অনেক কিছু জানলাম। ধন্যবাদ।

তারেক এর ছবি

দেখেছিলাম মুভিটা... শেষ দৃশ্যে মহা শক্তিধর প্রতিপক্ষের সামনে অসহায় লেগেছিল ওদের...

'প্যাসন অব দ্যা ক্রাইষ্ট' এর নির্মাতা গিবসন এরকম ম্যাসেজ দিতে চান যে মায়ারা যখন নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত তখন ইউরোপীয়ানরা জাহাজ ভর্তি হয়ে সেখানে গেছে ক্রুশ হাতে যীশুর মহান বানী শোনাতে ।

নমস্য মেল গিবসন ! দেঁতো হাসি
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

নিঘাত তিথি এর ছবি

"এপোক্যালিপ্টো" দেখা শুরু করার পর চালিয়ে যাওয়াটা কঠিন হয়ে পড়েছিলো ক্রমাগত নৃশংস, ভয়াবহ দৃশ্যর কারনে। এবং এই নৃশংসতা বাস্তবিকই পুরো সিনেমা জুড়ে "মায়া"দের দুই দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। এই সম্পর্কে কোন ইতিহাস পড়া নেই আমার, তাই পুরোটা দেখে গিয়েছি কোনক্রমে...শেষ পর্যন্ত কি হয় দেখার উদ্দেশ্যে। যদি ইতিহাস বলে যে "নিজেদের মধ্যে যুদ্ধ নয় বরং মায়ারা ব্যাপক হারে প্রান হারায় স্পেনিয়ার্ডদের হাতেই । উপনিবেশ সময়ের প্রথম ১০০ বছরেই নিহত হয়েছিল মায়াদের ৯০% । পরিকল্পিত ভাবে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল বসন্ত,হাম,ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো সংক্রামক ব্যাধি ।", তাহলে এই ঘটনার কিছু এই মুভিতে আসা উচিত ছিলো।

একই সংগে অবাক হচ্ছি এই প্যারাটা পড়ে, " খ্রীষ্টের জন্মের প্রায় ২৫০০ বছর আগে যে সভ্যতার গোড়াপত্তন,তিনহাজার বছর ধরে যারা টিকে থাকলো সদর্পে; জ্যোতির্বিদ্যা,প্রকৌশল ও স্থাপত্যকলায় যাদের দক্ষতা এখনো বিশেষজ্ঞদের কৌতুহলের বিষয়, যারা নিজেদের জন্য শক্তিশালী বানিজ্য ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পেরেছিল সে 'মায়া' দের কোন চিহ্নই নেই অস্কার বিজয়ী এই নির্মাতার মুভিতে । " কেন এরকম কোন কিছুই দেখানো হলো সেটা তো সত্যিই বিস্ময়!

তবে আবার ভাবছি, একটা গল্পে বা মুভিতে সমস্ত ইতিহাস নিয়ে আসা সম্ভব নয়, বা হয়ত উদ্দেশ্যও থাকে না, বরং কোন একটি বিশেষ বিষয়ের উপরের ফোকাস করা হয়। হয়ত সার্বিক দিকগুলো না তুলে ধরে কেবল "মায়া"দের নিজেদের মাঝের দ্বন্দ্ব-সংঘাত এবং যুদ্ধ করে টিকে থাকার প্রাথমিক ধারণা দেয়াটাই এই মুভির উদ্দেশ্য। হতেও পারে।
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

এনকিদু এর ছবি

প্রথম যখন মায়াদের সাথে স্প্যানিশ conquistador দের আনুষ্ঠানিক দেখা হয়, মায়াদের পক্ষ থেকে এসেছিল তাদের নৃপতিস্থানীয় কেউ, পালকিতে চড়ে । আর ঘোড়ায় চড়ে এসেছিল স্প্যানিশরা । তাদের দলের সামনে ক্রুশবাহী পাদ্রী । পাদ্রী পিছনে ঢাল তলোয়ার ও বন্দুক হাতে যোদ্ধার দল ।

পাদ্রী বাইবেল এগিয়ে দিল মায়াদের নেতার দিকে । নেতা বইটি গ্রহন করলেন । উল্টে পাল্টে দেখলেন । কী এই জিনিস ? এটা কোন শিল্পকর্ম না, কোন সুকৌশলী যন্ত্রও না । তিনি জিনিসটাকে একেবারেই অপ্রয়োজনীয় মনে করে ছুঁড়ে ফেলেদিলেন । সাদা রঙের এই জাতির বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে তার জানা হয়ে গেছে ।

কিন্তু স্প্যানিশদের কাছে এই আচরনের অর্থ হল " খ্রীষ্ঠের অপমান " । গুলির করে সবগুলো 'জংলী'কে সেখানেই মেরে ফেলা হল ।

এই ঐতিহাসিক ঘটনা জানার পর কার কেমন মনোভাব হবে জানিনা । তবে আমার কাছে মনে হয় সাদা রঙের এই জাতিটার সম্পর্কে মায়াদের নেতার আন্দাজে ভুল ছিলনা ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

হিমু এর ছবি

মায়াদের ক্ষেত্রে এমনটা হয়েছিলো কি না জানি না, তবে ফ্রান্সিসকো পিজারো আর ইনকা সম্রাট আতাহুয়ালপার মধ্যে প্রায় এমনটাই ঘটেছিলো। পিজারো একশো সাতষট্টি (সম্ভবত) জন স্প্যানিয়ার্ড ভাড়াটে যোদ্ধা নিয়ে সেদিনের যুদ্ধে আতাহুয়ালপার লক্ষাধিক সেনাকে পরাজিত করেন আর আতাহুয়ালপাকে জীবিত বন্দী করেন মূলত বারুদ, ঘোড়া আর ইস্পাত দিয়ে। আতাহুয়ালপার সেনারা ঘোড়া সেই প্রথম দেখেছিলো চোখে, তাদের অস্ত্র ছিলো ব্রোঞ্জের, যা ইস্পাতের ধারে কাছেও না, আর লুকানো কামান থেকে ছোঁড়া গোলার প্রচন্ড শব্দেই আতাহুয়ালপার দেহরক্ষীরা হাল ছেড়ে দিয়েছিলো। সেই আমলে পিস্তল বা বন্দুকের চেয়ে দ্রুত ও নিখুঁত অস্ত্র ছিলো তলোয়ার বা ছুরি, সেটা ব্যবহার করেই পিজারোর দলবল সেদিন প্রায় দশ হাজারের মতো ইনকা সেনাকে হত্যা করেছিলো। আর মড়ক পরবর্তীতে ইনকাদের সমৃদ্ধ সভ্যতার প্রায় পুরোটাই পরাভূত করে।

মায়াদের ওপর বেশ বিস্তৃত তথ্য পাওয়া যাবে জ্যারেড ডায়মন্ডের "কোল্যাপ্স"-এ। স্পেনীয় উপনিবেশের আগ্রাসনের আগে সেখানে বেশ বড় যুদ্ধ পরিস্থিতির চিহ্ন পাওয়া গেছে (দুর্গের প্রাচীরব্যবস্থার ক্রমবর্ধমান সংস্কার ও মজবুতকরণ দেখে এই উপসংহারে আসা হয় সাধারণত)। আর মায়ারা অনেক গোষ্ঠীতে বিভক্ত ছিলো, মূলত তাদের এলাকার ভূতাত্ত্বিক গঠন এবং ভারবাহী পশুর অভাবে। ভারবাহী পশুর অভাবে কোন বড়সড় ক্যাম্পেইন চালিয়ে সমস্ত জনপদকে কেন্দ্রীয় শাসনের অধীনে আনতে পারেনি কোন মায়া নৃপতি। যুদ্ধে যদি সৈনিকের খাবার মানুষকে বহন করতে হয়, তাহলে সেই যুদ্ধে সৈন্যরা খুব বেশিদূর যেতে পারে না। এ কারণেই মায়া রাজ্যগুলি ছিলো ছোট ছোট। এই গোষ্ঠীবিভক্তির সুযোগ পরে ঔপনিবেশিক শক্তিও নিয়েছে। তবে মায়াদের ক্রমশ শক্তিহ্রাসের মূল কারণ হিসেবে ভূগর্ভস্থ পানিস্তরের অবনমনকে চিহ্নিত করা হয়। ইয়োরোপীয়দের বহন করা মড়ক তাদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

দুর্দান্ত এর ছবি

এরনেন্দেজ দ্য কর্দোবা হলেন প্রথম কঙ্কিস্তাদোর যিনি মায়াদের সংস্পর্শে আসেন ১৫১৭ সালে। ঐ মোলাকাতে আসলে মায়রাই এক হাত দেখিয়ে দিয়েছিলেন স্প্যানিয়ার্ডদের। জন বিশেকের দল থেকে শুধু দ্য কর্দোবা আর এক সংগী জান নিয়ে ফিরেছিলেন।

এই এরনেন্দেজের দলেরই কেউ সর্বপ্রথম কাগজে লেখা কিছু মায়াদের সামনে পড়েছিলেন। কিন্তু তা বাইবেল ছিল না, তা ছিল এল রেকেরিমিয়েন্তো বা ফার্দিনান্দ আর হুয়ানার শাহী ফরমান - অবাক হবার কিছু নেই, কঙ্কিস্তাদোরের কাছে আসমানের খোদার চাইতে কোরনা দাস্পানিয়ার কদর ই বেশী ছিল।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ম্যুভিটা দেখিনি, দেখবো পেলেই।

'মায়া'দের একটা কথা জানলাম সেদিন। তারা বিশ্বাস করতো দুইহাজার বারো সালের ডিসেম্বর মাসের তেইশ তারিখ হবে পৃথিবীর শেষদিন।

মায়া'দের ব্যাপারে যৎসামান্য যতোটুকুই জেনেছি, আশ্চর্য হয়েছি। এখন '২৩' সংখ্যার গ্যাড়াকলে পড়ে যদি আসলেই পৃথিবী সেইদিন ধ্বংস হয়ে যায় তাইলে তো কাম সারছে। 'কমেট ইমপ্যাক্ট' একটা ম্যুভি আছে, সেইটা দেখার পর থেকে তারিখটা মাথার ভেতরে গেঁথে গেছে। কে জানে, হয়তো ঐ তারিখেই ঝপাত করে একটা মসৃণ এস্টেরয়েড বাংলাদেশ বরাবর এসে টুং করে খোঁচা মেরে দিলো!

দুঃখিত দাদা, ধান ভানতে শিবের গীত গেয়ে ফেলার জন্য। আসলে ব্যাপারটা যাচাই করার সুযোগ পাচ্ছিলাম না। মায়াদের নিয়ে সিনেমাটার কথা বলাতে পেয়ে গেলাম। মেল গিবসন নিশ্চয় মায়া'দের এরকম চমকপ্রদ বিষয়ের মতো আরও অনেক আশ্চর্য ব্যাপারগুলোও এড়িয়ে গেছেন!
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এই ছবি দেখে মেল গিবসনকে আমার ডেভিড লিযেনের সার্থক উত্তরসূরি মনে হয়েছে
যার কাজই হলো পৃথিবীর বিভন্ন দেশের মানুষকে ফাঁকা এবং ফাঁপা হিসেবে দেখিয়ে সাদাদেরকে উদ্ধারকর্তা হিসেবে দেখানো

০০০০

বৃটিশ কাউন্সিল সারা পৃথিবীতে এরকম কিছু ছবি দেখায়
যার মূল উদ্দেশ্য হলো সাদা বৃটিশদের সবকিছুর উপসংহার এবং গন্তব্য হিসেবে দেখানো

দ্রোহী উদ্দেশ্যমুলকভাবে অফলাইনে এর ছবি
ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

'প্যাসন অব দ্যা ক্রাইষ্ট' এর নির্মাতা গিবসন এরকম ম্যাসেজ দিতে চান যে মায়ারা যখন নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত তখন ইউরোপীয়ানরা জাহাজ ভর্তি হয়ে সেখানে গেছে ক্রুশ হাতে যীশুর মহান বানী শোনাতে ।

এই কথাটি গুমরে মরছিল ছবিটা দেখার পর থেকে। হাসান মোরশেদকে অশেষ কৃতজ্ঞতা।
একাত্মতা মাহবুব লীলেনের এই মন্তব্যের সঙ্গে,
[b]
যার কাজই হলো পৃথিবীর বিভন্ন দেশের মানুষকে ফাঁকা এবং ফাঁপা হিসেবে দেখিয়ে সাদাদেরকে উদ্ধারকর্তা হিসেবে দেখানো

কারণ ফাঁকা না থাকলে তো ইওরোপীয়দের উপনিবেশায়ন বৈধ হয় না। ভারতবর্ষের বেলাতেই তারা এভাবেই দেখিয়েছে যে, এটা ছিল এশিয় বর্বরতার এক খনি। ভুত-প্রেত-ডাকু-সাধু-ম্যালেরিয়া-সতীদাহ দেখায় কিন্তু দেখায় না, অশোকের মৌর্য কিংবা মগধ কিংবা ভারতের নগর রাষ্ট্রগুলোর গণতান্ত্রিকতা কিংবা মুঘল আমলের সেক্যুলারিটি ও উতকর্ষতা। এবং ভুলিয়ে দেয় বাংলার প্রথম ‌'রেঁনেসাঁস' সুলতানী আমলের চৈতন্য-আলাওল-মঙ্গল কাব্য ও ময়মনসিংহ গীতিকা হয়ে পরের লালন পর্যন্ত প্রসারিত ধারাকে।
এবং খেয়াল করা দরকার যে এই মেল গিবসনের ছবিটি তখনই তৈরি হচ্ছে যখন, ল্যাটিন আমরিকার ভূমিপুত্রদের উত্থান ঘটছে এবং
গুয়াতেমালা ও বলিভিয়ায় 'মায়া' রাই সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী এবং তাদের মধ্য থেকেই রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হচ্ছেন ।

হাসান মোরশেদকে ধন্যবাদ, তাঁর গভীর পর্যবেক্ষণ শেয়ার করা জন্য।
................................................................................
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে। আমাদের মা আজো লতাপাতা খায়।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

আরণ্যক সৌরভ (অফলাইনেই থাকি সবসময়) এর ছবি

সবার রং একরকম।
হলিউড থেকে সাদা পূর্বপুরুষদের ছোট আর বর্বর করে দেখানো কোন মুভ্যি বেরিয়েছে?

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

তা তো সামান্য হলেও আছেই। স্টিভেন স্পিলবার্গের অ্যামিস্ট্যাড কিংবা ডান্সিং উইথ দ্য উলভস। এগুলো দাপুটে ধারার ছবি, সমালোচনা তত জোরালো নয়। তবে এর বাইরে, ল্যাটিন ও আফ্রিকান শাদারা কিছু ছবি বানিয়েছে। মনে পড়লে জানাচ্ছি।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

বিধান রিবেরু এর ছবি

চলচ্চিত্রটি নির্মানের দিক থেকে অসাধারণ তবে বিষয়ের দিক থেকে প্রাচ্যবাদীতার দ্বারা আক্রান্ত। আর এদিকটি গোচরে আনার জন্য হাসান মোরশেদকে ধন্যবাদ।

বিধান রিবেরু

দিগন্ত এর ছবি

"পরিকল্পিত ভাবে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল বসন্ত,হাম,ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো সংক্রামক ব্যাধি "
- এই তথ্যের সাথে দ্বিমত প্রকাশ করছি। এমনিতে লেখা দারুণ লেগেছে। ফারুক ওয়াসিফের ওপরের মন্তব্যও পরিপূরকের কাজ করেছে।


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

ল্যাটিন আমেরিকার ইতিহাস তেমন জানিনা, তবে উত্তর আমেরিকাতে স্মলপক্স চাদর ব্যবহার করার ডকুমেন্টেশান আছে। যতদূর মনে পড়ে, অস্ট্রেলিয়াতেও এবোরিজিনিদের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্য ব্যাধির ব্যবহার করা হয়েছিল (সূত্র হিসাবে রবার্ট হিউজসের The Fatal Shore দেখতে পারেন)।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

দিগন্ত এর ছবি

কয়েকটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা আমি জানি কিন্তু সেগুলো নিয়মিত ভাবে ব্যবহৃত হয়েছে বলে আমার মনে হয় না। হলে আমাদের এখানেও ব্যবহার হতে পারত। আমরাও তো এককালে উপনিবেশই ছিলাম ...


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

আপনার দ্বিমতের সাথে একমত হতে পারলাম না দিগন্ত ।
মায়া'দের ইতিহাস ও স্পেনিয়ার্ড উপনিবেশ নিয়ে ঘাঁটলে দেখা যায়, যুদ্ধ করে মায়াদের ততোটা পরাভূত করতে পারেনি স্পেনিয়ার্ডরা যতোটা করেছিল স্মলপক্স ছড়িয়ে দিয়ে ।
১৫১৭ তে যখন প্রথম স্পেনিশরা ঐ এলাকায় যায় সে সময়ে মায়া জন সংখ্যা ছিল প্রায় ৭ মিলিয়ন । কিন্তু মাত্র এক বছরের মাথায় ৯০% মায়া মারা যায় সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে ।

আমি এই মুহুর্তে বইয়ের রেফারেন্স দিতে পারছিনা(স্মৃতিশক্তি গেছে) । স্পেনিয়ার্ডদের কৌশল ছিল এরকমঃ তারা জাহাজ ভরে আক্রান্ত গরু নিয়ে গিয়েছিল,তারপর অধিকৃত এলাকায় জলাশয় খনন করে গরু ছেড়ে দিতো ।
সেই জলাশয়ের পানি থেকে ছড়িয়ে পড়তো সংক্রামক ব্যাধিগুলো ।

কিছু রেফারেন্স নেটে পাওয়া যায়ঃ
lingk 1
link2


হলে আমাদের এখানেও ব্যবহার হতে পারত। আমরাও তো এককালে উপনিবেশই ছিলাম ...

এটা ও খুব জোরালো যুক্তি নয় । সময় ও পরিস্থিতি ভেদে উপনৈবেশিক কৌশলে ভিন্নতা দেখা যায় । আমাদের এখানে আগ্রাসন ঘটেছে মায়াদের প্রায় ২৫০ বছর পরে । আর আমাদের এদিকে তো কার্যকর কোন প্রতিরোধই গড়ে উঠেনি ।
দেখুন, আফ্রিকাকে দখলের পর লাখে লাখে দাস বানিয়ে পাঠিয়েছে আমেরিকায় কিন্তু ভারতীয়দের কিন্তু দাস বানিয়ে পাঠায়নি । কারন আফ্রিকানদের দিয়ে যে কাজ করানো হয়েছে ভারতীয়রা তার উপযুক্ত ছিলোনা ।

-------------------------------------
বালক জেনেছে কতোটা পথ গেলে ফেরার পথ নেই,
-ছিলো না কোন কালে;

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

দিগন্ত এর ছবি

আমার দ্বিমতের একটা কারণ আছে। ষোড়শ শতকে ইউরোপিয়দের জ্ঞান এতদূর এগিয়েছিল বলে আমার মনে হয় না যে তারা স্বচ্ছন্দে বায়োটেররিসমের মত অস্ত্র ব্যবহার করবে। বায়োটেররিসম ব্যবহার করতে হলে একটা ব্যাপার মাথায় রাখা দরকার - যে অস্ত্রে দুশমনকে ঘায়েল করব, সে অস্ত্রে নিজে মরলে কিন্তু হবে না। এবং তার বাহক (এখানে গরু - ভেক্টর) সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। ১৫২১ সালে জাহাজে করে স্মলপক্স-আক্রান্ত গরু বয়ে এনে মেক্সিকানদের আক্রমণ করার ব্যাপারটা আমার কাছে সে জন্যই অবিশ্বাস্য ঠেকছে। ভেবে দেখুন, জাহাজে করে ওরা কিন্তু নিজেদের মৃত্যুদূতও বয়ে নিয়ে আসছে। জাহাজেই একবার ছড়িয়ে পড়লেই ... আত্মঘাতি হামলার চেয়েও ভয়ানক।

আর যদি মারণাস্ত্রের কথাই বলেন তাহলেও দুটো ব্যাপার থাকে। ইউরোপিয়রা সবথেকে ভয় পেত প্লেগকে - আনলে গরুর জায়গায় বেশ কিছু ইঁদুর আনত তাহলে। আর মেক্সিকানরা যে স্মলপক্সে এত হারে মারা পড়বে, সে ঘটনা আপনি-আমি পরে বসে আলোচনা করছি বটে, এটাও ষোড়শ শতকের ইউরোপিয়দের জানা থাকার কথা নয়। আমার তো ধারণা, স্মলপক্স বা প্লেগকে অধিকাংশ ইউরোপিয় তখনও ঈশ্বরের অভিশাপ বা কোনো ডাইনির অপচেষ্টা বলেই ভাবত - অনেক ক্ষেত্রেই স্মলপক্সের সাথে ডাইনি পুড়িয়ে মারার ঘটনা পাওয়া যায় (ওই একই সময় কিন্তু উইচক্র্যফট চরমে ওঠে)।

ভারতেও স্মলপক্সের ব্যাধি বয়ে আনা হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু তাতে আলাদা কিছু হবার কথা নয়, কারণ উপমহাদেশে স্মলপক্স নতুন কিছু নয়, বিবর্তনে মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও প্রতিরোধক্ষমতা জন্মে গেছে। এখানেই অস্ট্রেলিয়া বা মেক্সিকোর সাথে ভারতের তফাত। ভারতেও প্রথম ইউরোপিয়রা আসে ওই একই সময়ে ... ষোড়শ শতকে।

আমি উইকি ও অন্যান্য সাইটে পড়লাম যে স্মপ্লপক্সের ব্যাধি বয়ে আনা হয়েছিল নিজেদের অজ্ঞাতেই, আমার কাছে সেটাই বেশী গ্রহণযোগ্য ঠেকেছে।


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

আমার মত= হাসান +ফারুক+মাহ্বুব লীলেন

'মায়া' রা প্রথম বার গনহত্যার শিকার হয়েছিল মধ্যযুগে ইউরোপিয়ানদের হাতে, আর সবশেষে গুয়াতেমালার গৃহযুদ্ধের সময় ইউরোপিয়ানদেরই দুধভাই আমেরিকানদের হাতে ।
প্রথমবারে ও ক্রুশহাতে যীশুর চেলারা তরবারীর সহগামী হয়েছিলেন,দ্বিতীয় গনহত্যায় ও চার্চ ও ক্যাথলিক মিশন একই ভূমিকায় ।

তবু মেল গিবসন ইশ্বরপুত্র যীশুর পুনরুত্থানের স্বপ্নে বিভোর থেকে পর্ণোগ্রাফিক ফ্যান্টাসী তৈরী করেন ।

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

স্নিগ্ধা এর ছবি

মেল গিব্‌সন আর কোন কিছু করলেই আমি অবাক হই না - যেদিন থেকে জানি যে মেল গিব্‌সনের পারিবারিক পরিবেশ এমন যে তার বাবার জন্য আলাদা আরো রক্ষণশীল, কট্টর ক্যাথলিক চার্চ আছে, একাধিক conspiracy theory 'র প্রচারক, এবং বাবা-ছেলে ঘোর ইহুদীবিদ্বেষী। হলোকস্ট নিয়ে অন্যান্য যে কোন genocide এর তুলনায় অনেক বেশী মনোযোগ দেয়া হয়েছে, যথেষ্ট রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ও হয়েছে - কিন্তু তার মানে এই হওয়া উচিৎ না যে 'ইহুদী' ধর্মধারী যে কোন মানুষকে তার অন্য কোন জাতভাই কি করেছে সেই অপরাধে ঘৃণা করা।

খেকশিয়াল এর ছবি

মায়াদের সম্পর্কে জানিনা তেমন কিছুই, হাসান মোরশেদ ভাইইয়ের কথায় নড়ে উঠলাম, পড়তে হবে আমার অনেক !

-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

রায়হান আবীর এর ছবি

আমার অন্যতম প্রিয় একটা সিনেমা। লেখাটা অসাধারণ লাগলো।

---------------------------------

শিক্ষানবিস এর ছবি

ইতিহাস বিকৃতির দিকটা বাদ দিলে সিনেমাটি ভাল লেগেছিল। মায়াদেরকে এভাবে দেখানো মোটেই ঠিক হয়নি। হলিউডের "300" সিনেমাটিতেও একই কাজ করা হয়েছে। প্রাচীন পারস্যবাসীদের অতি বর্বর হিসেবে দেখানো হয়েছে। এজন্যই এ ধরণের মুভিগুলো চূড়ান্ত খ্যাতি অর্জন করতে পারে না।

রায়হান আবীর এর ছবি

আসলেই। আমরা যখন দেখেছি, তখন তো এই ইতিহাস জানতাম না। তাই সিনেমাটি ভালো লেগেছিল খুব। মায়াদের প্রতি এসেছিল তীব্র বিতৃষ্ণা। যাই হোক সিনেমা সম্পর্কে ভালো লাগাটা কমেনি এখনও, কিন্তু মায়াদের সম্পর্কে জানতে পারলাম।

---------------------------------

kraken এর ছবি

এই ধরণের ছবির প্রযোজকদের মূল উদ্দেশ্য থাকে ব্যবসা করা, প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরা না। আর শুধু প্রডিউসারদের দোষ দেই কেন? দর্শকরাও তো ভিন্ন কিছু না।

রিডলী স্কট-এর গ্ল্যাডিয়েটর একটি ব্যবসা সফল ছবি, কিন্তু ইতিহাসের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এই ছবিটির তেমন কোন গুরুত্ব নেই।

অথচ, আরেকটি ছবি আলেক্সান্ডার - অসাধারণ একটি ছবি। এক বিশাল ব্যক্তিত্ব, বিরাট পটভুমি, বিশাল মহাদেশ - এই সব কিছু নিয়ে এই ছবিটি। ইতিহাসের প্রতি অনেকটাই সৎ, অথচ ব্যবসা সফল হয়নি একদমই।

আবার রিডলী স্কটের আরেক ছবি, ক্রুসেড নিয়ে কিংডম অব হেভেনও ব্যবসা করেনি।

দর্শকরা চায় ব্রেভহার্ট বা গ্ল্যাডিয়েটর টাইপের মারদাঙ্গা ছবি।

জটায়ু এর ছবি

হাসান ভাই নমস্কার আর অনেক ধন্যবাদ...যদিও গিবসন এর প্রতি কিঞ্চিৎ দূর্বলতা আছে স্বীকার করছি( কেন জিগ্গেস করলে বলতে হবে কম বয়সে ব্রেইভ হার্ট ছবিটা দেখে ওর অভিনয় খুব ভাল লেগে যায় বা বলতে পারেন কিছুটা ইমোশনাল হয়ে যাই,এবং সেটাই মাথায় রয়ে গেছে)......কিন্তু আপনি তো ভাই আমার চোখ খুলে দিলেন......সত্যই কত কম জানি...

দুর্দান্ত এর ছবি

সব কথাই মানলাম। কিন্তু মায়া সভ্যতার রক্তপিপাসুতাকে অতিরঞ্জন (পান-টি ক্ষমা করবেন) করা হয়নি বলেই ধারনা।

আরেকটি কথা এই ছবিটির চিত্রনাট্যটি কিন্তু এসেছে এক ইরানীর (যদিবা সে এখনো ওয়ান হিট ওয়ান্ডার) কাছ থেকে - সেই হিসবে এই ছবির কিছু দায় দায়িত্ব অ-সাদা অ-পশ্চিমাদের ওপরো বর্তানো উচিত।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

সেই সময়ের আদিবাসী যে কোন গোত্রের ক্ষেত্রে রক্তপিপাসুতা খুব অস্বাভাবিক কিছু নয় কিন্তু প্রশ্ন হলো, যাদের আরো বহুক্ষেত্রে ইর্ষনীয় সাফল্য ছিলো তাদের সেসবের ছিটেফোঁটা না দেখিয়ে কেবল রক্তপিপাসুতা প্রদর্শন করা কতটুকু মার্জনীয়?
দায়টা আলাদাভাবে সাদা-অসাদা হিসেবে দেখছিনা । উদ্দেশ্যমুলক ভাবে বিকৃতি ঘটানো হয়েছে এটাই বড় কথা ।
আর সাদাদের সব আগ্রাসনেই তো কিছু কিছু অসাদা সাহায্যকারী হিসেবে ছিলো সবসময়ই
-------------------------------------
বালক জেনেছে কতোটা পথ গেলে ফেরার পথ নেই,
-ছিলো না কোন কালে;

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

কৃতজ্ঞতা সর্বজনাব সকলে হাসি
ব্রেভহার্ট দেখার পর আমি ও গিবসন্রের মহাভক্ত ছিলাম কিন্তু পরে যখন জেনেছি ভদ্রলোক এভাঞ্জেলিক খ্রীষ্টান এবং তিনি ও তাঁর পরিবার সমগ্র মানবজাতিকে এক খ্রীষ্টিয় সংঘ হিসেবে দেখতে সচেষ্ট-( স্নিগ্ধা ও তাই জানিয়েছেন) সেদিন থেকেই তার সবকিছুকে আমি সন্দেহ করি (যেমন করি মুসলিম ব্রাদারহুড কিংবা হিন্দু মহাসভা)কে ।

লিখতে ভুলে গিয়েছিলাম তার আরেক মিথ্যাচার । দিগন্তের মন্তব্য নিয়ে ভাবতে গিয়ে এটা মনে পড়লো । মুভিতে দেখানো হয়েছে, স্পেনিয়ার্ডরা ঐ অঞ্চলে যাওয়ার আগেই মায়ারা সংক্রামক ব্যধিতে আক্রান্ত অথচ ইতিহাস বলে স্পেনিয়ার্ডরাই জীবানু নিয়ে গিয়েছিল যা ৯০% মায়াদের মৃত্যুর কারন ।

-------------------------------------
বালক জেনেছে কতোটা পথ গেলে ফেরার পথ নেই,
-ছিলো না কোন কালে;

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সাইফ সামির এর ছবি

এই লেখাটি দেখতে পারেন-

[url= http://www.somewhereinblog.net/blog/writer74blog/28809770]**মুভি রিভিউ** অ্যাপোক্যালিপ্টো: দি প্যাশন অফ দি মায়া[/url]

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।