বাংলাদেশকে প্রদেশে ভাগ করার প্রস্তাব ও কিছু টুকরো ভাবনা

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: শনি, ২৮/০৭/২০০৭ - ৬:২১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

..

ফেরদৌস কোরেশীর নতুন দল গঠন নিয়ে আগ্রহী হওয়ার তেমন কোনো যুক্তিযুক্ত কারন ছিলোনা । সামরিক শাসকদের ছত্রছায়ায় এর আগে ও রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে । এদের মধ্যে দুটো দল কয়েক মেয়াদে দেশ শাসন ও করেছে। একটি আবার দু মেয়াদের জন্য 'গনতান্ত্রিক' ভাবে নির্বাচিত ছিলো ।

তবু দল ঘোষিত হবার পর তাদের প্রকাশিত মেনিফেস্টো ও দেখলাম পত্রিকা মারফত । গতানুগতিক কথাবার্তা । কেবল একটা বিষয় মনোযোগ আকর্ষন করলো-এই দল বাংলাদেশকে কয়েকটি প্রদেশে ভাগ করার প্রস্তাবনা রেখেছে ।

প্রস্তাবনা যে নতুন তাও ঠিক না । জেনারেল এরশাদ ও একবার বাংলাদেশকে আটটী প্রদেশে ভাগ করার প্রস্তাব করেছিলেন । গনআন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত না হলে হয়তো বাস্তবায়নের চেষ্টা ও করতেন ।

যদি ভুল না হয়, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এর মেনিফেষ্টো'তে ও বাংলাদেশ কে বিভিন্ন প্রদেশে ভাগ করার প্রস্তাবনা আছে (কমরেড ভাস্কর নিশ্চিত করতে পারেন)

বাংলাদেশের মতো মাত্র ৫৬ হাজার বর্গমাইলের একটা দেশকে প্রদেশে ভাগ করার যৌক্তিকতা কি? যে যুক্তি দেখানো হয় তাহলো প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরন এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা কার্যকর করন ।
এসবের জন্য দেশকে প্রদেশে ভাগ করা কতোটুকু প্রয়োজনীয় ?

বাংলাদেশ ভূ-খন্ড নিজেই একটা প্রদেশ ছিলো পাকিস্তান নামক রাস্ট্রের । পাকিস্তানে এখনো বেশ কয়েকটা প্রদেশ আছে । অনেকগুলো প্রদেশ আছে ভারতে । পাকিস্তান ও ভারতের প্রাদেশিক বাস্তবতা আর বাংলাদেশের বাস্তবতা কি এক?

পাহাড় ও সমতলের আদিবাসী ছাড়া বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রায় সকল অঞ্চলের মানুষই নিজেকে বাংগালী বলেই পরিচয় দেন । বিভিন্ন ডায়ালেক্ট এ একই ভাষাতেই কথা বলেন । আচার আচরন,জীবন যাপন,মুল্যবোধ ও প্রায় একই ।

তবে আরো গাঢ় বিবেচনায়,সাংস্কৃতিক ভিন্নতা ভাবনার ভিন্নতা ও কিন্তু আছে ।
যেমন,সিলেটের লোকজন নিজের প্রথম পরিচয় 'সিলেটী' বলতে সহজবোধ করেন । তারা মনে করেন সিলেটের নিজস্ব সংস্কৃতি আছে, নিজস্ব একটা মুল্যবোধ,ইতিহাস ঐতিহ্য ও একটু ভিন্নতর এমনকি নিজেদের প্রায় বিলুপ্ত একটা বর্নমালা ও আছে । সিলেটীরা মনে করেন দেশের বৈদেশিক আয়ের বড় অংশটা তারা উপার্জন করেন ,কিন্তু সেই হিসাবে রাষ্ট্রের কাছ থেকে তারা যথাযোগ্য সুবিধা পাননা । অনেক বয়স্ক জনকে আমি ইতিহাসের একটা অংশ নিয়ে কথা বলতে দেখেছি- একটা দীর্ঘ সময় সিলেট আসলে বাংলার অংশই ছিলোনা । ছিলো আসাম প্রদেশের প্রধান শহর । অনেক বৃটিশ আমলের লোকজন এখনো নন-সিলেটী বোঝাতে 'বেংগলী' শব্দ ব্যবহার করেন ।
এ ছাড়া দেশবিভাগের সময় পুর্বপাকিস্তানের অন্য অংশ যেভাবে পাকিস্তানের অংশ হয়ে গিয়েছিলো সিলেট সেভাবে হয়নি সেটা ও অনেকে মনে করিয়ে দেন । তারা মনে করিয়ে দেন যে , একমাত্র সিলেটিরাই গনভোটের মাধ্যমে নিজেরা সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে পেরেছিল তারা ভারতে থাকবে নাকি পাকিস্তানের অংশ হবে ।
ঠিক একই রকম গৌরব,ক্ষোভ,ইতিহাস,বোকামী,অহংকার নিশ্চয়ই আছে বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের মানুষের নিজেদের অঞ্চল নিয়ে ।

যা হোক, এসব ভিন্ন আলোচনা । আমি অঞ্চলভেদে এই ভিন্নতাকে সম্মান করি । আমি সিলেটী বলেই আমি বাংলাদেশী । আরেকজন চট্রগ্রামের বলেই সে বাংলাদেশের । সিলেটের,চট্রগ্রামের,বরিশালের,নোয়াখালীর,ময়মনসিংহের সংস্কৃতি নিয়ে বাংলাদেশের সংস্কৃতি ।এইসব বিভিন্নতা ও বৈচিত্র বাদ দিলে বাংলাদেশের নিজস্ব বলতে কিছু থাকেনা আর ।

কিন্তু বৈচিত্র ও বিচ্ছিন্নতা কোন অর্থেই এক নয় । এমন কোনো রাজনৈতিক কিংবা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত রাস্ট্রের জন্য মঙ্গলময় নয় যা বৈচিত্রকে বিচ্ছিন্নতার দিকে ঠেলে দিতে পারে ।

হয়তো আমি যা ভাবছি,তা বাড়াবাড়ি । কিন্তু ভারতে আসাম ও বিহার প্রদেশের মানুষের মাঝে যে ঘৃনা দেখেছি,বিচ্ছিন্নতা দেখেছি মেঘালয় ও পশ্চিম বংগের মানুষের মাঝে, পাকিস্তানের পাঞ্জাব,সিন্ধু ও বেলুচিস্তানের মাঝে যে অবিশ্বাস- আমি চাইনা আমার ছোট্ট লাল সবুজের বাংলাদেশে সেই অভিশাপ নেমে আসুক, তা সে দেশকে প্রদেশে ভাগ করার নামেই হোক - বাংগালী পাহাড়ী বিচ্ছিন্নতার নামেই হোক- কিংবা মুসলিম অমুসলিম বিভাজনের মাধ্যমেই হোক ।

***
***

আগ্রহী পাঠকের জন্য সিলেট রেফারেন্ডাম এর কিছু তথ্য


মন্তব্য

কেমিকেল আলী এর ছবি

মগজ হাটু থেকে পায়ের তলায় আসলে যা হয় আরকি

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ছোট্ট লাল সবুজের বাংলাদেশে অহেতুক বিভাজন চাই না।
_________________________
'আজকে না হয় ভালোবাসো, আর কোন দিন নয়'

হাসান মোরশেদ এর ছবি

বিষয়টা হয়তো খুব ছোট পর্যায়ে ।
কিন্তু অনেক দিন থেকেই বিভিন্ন ফোরাম থেকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এটাকে আলোচনায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে ।

অলৌকিক হাসানের মতোই আমি সন্দেহ করি এর উদ্দেশ্য নিয়ে । ক্ষোভ কিংবা আঞ্চলিক উন্নাসিকতা কমবেশী সব এলাকাতেই আছে । এটা শুধু আমাদের দেশেই নয় । বৃটেনে ও ইংল্যন্ড,স্কটল্যান্ড,আয়ারল্যন্ডের লোকজন এক এক জন নিজেকেই সেরা মনে করে, অন্যদের একটু খাটো মনে করে । এমনকি পাশাপাশি দুই কাউন্টির লোকের মধ্যে ও এরকম আছে ।

কিন্তু প্রদেশের ভাগ করার মাধ্যমে আঞ্চলিকতা কে বিচ্ছিন্নতায় ঠেলে দেয়ার মতো উস্কানী থাকতেই পারে ।

-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

স্থানীয় সরকারের প্রক্রিয়া শুরু হইছে ১৮৩০ এ। এখনো শেষ হয় নাই। তবে হবে একদিন না একদিন....
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

হাসান মোরশেদ এর ছবি

স্থানীয় সরকার প্রক্রিয়ার জন্য দেশকে প্রদেশে ভাগ করাটা খুব জরুরী বলে মনে করেন নাকি? @সুমন চৌঃ

-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

না।
তবে বিকেন্দ্রিকরণের শ্লোগান যারা সবচাইতে জোরে দিছে এই পর্যন্ত মানে রাজদন্ড হাতে লইয়া..বিষয়টা ঠিকঠাক মতো হইলে তাদেরই সাড়ে সর্বনাশ। জলপাইরা যা করে সেইটা হৈল ট্রাফিক আইল্যান্ড ভাইঙ্গা সিগনাল আবার সিগনাল ভাইঙ্গা আইল্যান্ড।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

কারুবাসনা এর ছবি

বুঝছি, আজ আর কিছু মাথায় আসছে না!অলস সময়।


----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।


----------------------
বিড়ালে ইঁদুরে হলে মিল, মুদির কিন্তু মুশকিল ।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

দ্বিকক্ষ নিয়ে পরীক্ষা করা যায়। MPর কাজ আইন করা, কিন্তু আমাদের দেশে MPদের কাজ অন্য রকম হয়ে গেছে। ব্যাপারটা প্রায় cultural এখন। উচ্চকক্ষ আইন প্রস্তাব ও খসড়া নিরূপণ করুক। নিম্নকক্ষ তার উপর ভোটাভুটি করুক। যথেষ্ট ভাগ আছে, আবার প্রদেশ বানানোর মানে নেই অহেতুক।

অচেনা এর ছবি

হাটুর মগজের আলতু ফালতু চিন্তা।

হাসান মোরশেদ
শিমুলের প্রস্তাব মত বই পাচ্ছি নিশ্চয়ই সামনের বইমেলায়।

-------------------------------------------------
আমি ভালবাসি বিজ্ঞান
আমি ঘৃণা করি জামাত॥

দিগন্ত এর ছবি

আমার মনে হয় প্রাদেশিকতা খুবই জরুরী বাংলাদেশের জন্য। আশাকরি আজকের মধ্যে আমি আপনাকে আরেকটা ব্লগ লিখে কারণটা বোঝাতে পারব।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

ভাস্কর এর ছবি

৭০ দশকীয় জাসদের প্রস্তাবনায় এইরম কোন প্রস্তাবনা ছিলো না...এইটা ক্ষয়াটে জাসদের প্রস্তাবণা ছিলো এরশাদ আমলের মাঝামাঝি...যখন রব সাহেব তার লগে যোগ দিছিলো, শোনা কথা সিরাজুল আলম খান এই তত্ত্বের প্রবক্তা বইলা দাবী করেন...তার একটা পুস্তিকা দেখছিলাম বছর কয়েক আগে এই বিষয়ে।

প্রাদেশিক বিভাজন নিয়া যেই ভয় দেখাইলেন হাসান মোরশেদ, সেইটা শাসন ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ না করলেও ভালো সম্ভাবনা নিয়াই থাকে। আমিতো ৯০ দশকের মাঝামাঝি থেইকা জানি সিলেটে বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রচারণা ছিলো...এখনো বিয়াশাদীর টাইমে আমার আত্মীয় স্বজনরে দেখি অমুক এলাকার মেয়ে ভালো না, তমুক এলাকার ছেলেরা দুই বিয়া করে টাইপ কথা কইতে। এই সব আচরণ আসলে ক্ষুদ্রজাতিসত্ত্বার সংঘাতের মতোনই অবস্থান করে।

প্রাদেশিক বিভাজনের বিষয়টা আসে প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণ আর দ্বিস্তর বিশিষ্ট পার্লামেন্টের চিন্তা থেইকা। এইটা করলে খারাপ হইবো নাকি ভালো হইবো এইটা চিন্তার করনের একটা মার্ক্সীয় মেথড আছে। এইটা করলে কার লেইগা ভালো হইবো, কিভাবে ভালো হইবো, কিসের উদ্দেশ্যে এই ভালো হওয়া হওয়ি...এই প্রশ্ন করনের মধ্য দিয়া আগানো।

যদি প্রদেশে ভাগ করলে এলাকাগুলিতে স্বতন্ত্র অর্থনৈতিক প্যাটার্ন করন যায়...স্বতন্ত্র আর্থ-সামাজিক প্যাটার্ন করন যায় তাইলে কি সেইটা সংঘাতের নিমিত্ত হয়?

এই সমাজে যাই হোক না ক্যান সেইটার বড় উদ্দেশ্যই থাকে বুর্জোয়াগো স্বার্থরক্ষা...আমি তাই বুর্জোয়াগো একনায়কতন্ত্রের টাইমে একটা উন্নয়ন মডেল নিয়া খুব ভাবাবেগ দেখাইতে পারি না।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

হাসিব এর ছবি

আম্লিগ বিএম্পির ভাগাভাগির পর ৩০০ সিটে ওগো আসন পাওনের কোন সম্ভাবনাই ওরা দেখতেছে না । রুম আরেকখান বাড়ায়া, দেশটারে কাইটা কুইটা আটভাগ কইরা তবুও যদি দুই একখান কপালে জোটে এচিন্তায় এইসব প্রস্তাব আসে । নিজেরা যদি ক্ষমতা বলয়ের কাছে কোনদিন না যাইতে পারে আর দলটা যদি আদর্শিক না হয় তাহলে এগুলা ছাড়া দল টিকায়া রাখন যাইবো না ।


আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

পলিটিক্স। নির্বাচনী আসনগুলো নাকি কাটছাট করবে। প্রদেশে ভাগ করে প্রাদেশিক সরকারটাইপ কিছু করে কোনো একটা প্রদেশে হয়তো সামরিক (সিনোনিম, জামাত) ক্ষমতায় বসানোর চিন্তা কাজ করতে পারে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

হাসিব এর ছবি

ঐটাই কইতেছিলাম । লুটপাটের ভাগ ওগোরো দরকার ।


আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে

হিমু এর ছবি

প্রাদেশিক ব্যবস্থায় আসলে গাছেরটা খাওয়ার দলবলগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তলারটা কুড়ানোর দলগুলি লাভবান হবে। তাদের পিঠে হাত বোলানোর চেষ্টা যদি থাকে, তাহলে তো সব পরিস্কার। উদাহরণ, উত্তরবঙ্গে সামরিক স্বৈরশাসক এরশাদের বিপুল জনপ্রিয়তা, সেখানে সে প্রাদেশিক কেষ্টবিষ্টু হয়ে বসতে পারে।

বাংলাদেশে প্রাদেশিক বিভক্তির আগে প্রয়োজন প্রতিনিধিদের দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করা। তাহলেই চলবে। দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদও কার্যকরী হতে পারে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

সুমন চৌধুরী এর ছবি

হিমুর প্রথম প্যারা ঠিকাছে

.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

অমিত আহমেদ এর ছবি

স্থানীয় সরকার দরকার আমাদের সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। তবে তার জন্য প্রদেশে ভাগ করার তেমন কোন যৌক্তিকতা নেই।


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

ঝরাপাতা এর ছবি

আঞ্চলিকতার যে প্রভাব সেটা আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে সহজাত। প্রদেশে ভাগ করলে সেটা বেড়ে যাবে তেমনটা আমার মনে হয় না। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণটাই সবচেয়ে বেশি জরুরী। তাই স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় একটা ভারসাম্য আনয়নের চেষ্টা করা যেতে পারে। কোটা ব্যবস্থা (যদিও এতে দ্বিমত থাকতে পারে)এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।


রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

কিছু জরুরী পয়েন্ট উঠে এসেছে মন্তব্য-আলোচনায় ।
দেশকে প্রদেশে ভাগ করার দাবী কোনো মুল ধারার রাজনৈতিক দলের নয় । বারবার এই দাবী সামনে আনছে বিভিন্ন সময়ের সামরিক বাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠা কিংবা টিকে থাকা গনবিচ্যুত রা । উদ্দেশ্য ভালোই ব্যখ্যা করেছেন হিমু ।

বিভিন্ন প্রদেশে ভাগ করলে,সমগ্র দেশভিত্তিক দলগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হবে,লাভবান হনে আঞ্চলিক দলগুলো । দেখা যাবে- রংপুরের 'রংগীলা লাঙ্গল পার্টি', সিলেটের ' আমরা হক্কল সিলেটী লীগ',নোয়াখালীর 'নিখিল নোয়াখাইল্যা দল' রাই আঞ্চলিকতার দোহাই দিয়ে প্রাদেশিক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে । তারপর এইসব ভাংগাচোরাদের দিয়ে জোড়াতালির কেন্দ্রীয় কোয়ালিশন ।
এরকম কোয়ালিশনগুলোকে নিয়ন্ত্রন কিংবা এদের উপর ছড়ী ঘুরানো তুলনামুলক ভাবে সহজ ব্যাপার ।

আরো খারাপভাবে ভাবলে, জেলা কিংবা বিভাগ থেকে প্রদেশ, তারপর প্রদেশ থেকে নিজেদের দেশ- এরকম বিচ্ছিন্নতাবাদ উসকে দেয়ার কলাকৌশল ও প্রয়োগ হতে পারে কোন দূর ভবিষ্যতে ।

জাতীয়তাবোধকে দানা বাঁধতে না দিতে নানা মডেলের বিভাজনপ্রক্রিয়া চলে আসছে শুরু থেকেই । হয়তো শেষে এটা ও একটা প্রক্রিয়া হয়ে উঠতে পারে ।

-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।