ওলামা লীগের ১০ দফা সমাচার ও শত্রুমিত্র বিবেচনা

হাসিব এর ছবি
লিখেছেন হাসিব (তারিখ: রবি, ০৫/০৪/২০১৫ - ২:২৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবি এসেছে বছর দুই আগে। এখনও পর্যন্ত তাদের এই মধ্যযুগীয় বর্বর দাবিনামা থেকে সরে আসার কোন লক্ষণ দেখা যায়নি। আজকে আওয়ামী ওলামা লীগসহ ১২-১৩টি ধর্মীয় সংগঠন যাদেরকে সরকারঘেষা বলে মনে করা হয় তারা একটি মানববন্ধন করেছে। রেকর্ডের সুবিধার্থে দাবিনামাগুলো এখানে টুকে রাখা হলো।

১. পাঠ্যপুস্তকে হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত নবী-রসুল আলাইহিমুস সালাম, হযরত উম্মুল মু'মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, হযরত সাহাবায়ে কিরাম রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, হযরত ওলীআল্লাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনানের জীবনী মুবারক অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
২. মইত্যা রাজাকার নিজামী, কামারুজ্জামানসহ সব যুদ্ধাপরাধীদের দ্রুত ফাঁসী বাস্তবায়ন ও অবিলম্বে জামাত-শিবির নিষিদ্ধ করা এবং ইসলামের নামে ফায়দালোভী সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা।
৩. হরতাল অবরোধের নামে এদেশের শিক্ষার্থীদের জীবন নষ্ট করা চলবে না।
৪. কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী বক্তব্য যুক্ত পাঠ্যপুস্তক বাদ দিযতে হবে প্রচলিত শিক্ষানীতি বাতিল করতে হবে। সরকারের ভিতর ঘাপটি মেরে থাকা নাস্তিক মন্ত্রীদের বাদ দিতে হবে।
৫. পাঠ্যপুস্তক থেকে মওদুদী লেখাসমুহ এবং পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিদ্বেষী হিন্দুদের লেখাসমূহ প্রত্যাহার করতে হবে।
৬. মুক্তমনা ও মুক্তচিন্তার নামে ইসলাম অবমাননাকারী নাস্তিকদের মৃত্যদন্ডের আইন করতে হবে।
৭. এদেশের ৯৮ ভাগ জনসাধারণ মুসলমান। কাজেই এদেশের শিক্ষানীতি হবে সম্পুর্ন ইসলামিক।
৮. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্দা বিরোধী বক্তব্য দেয়া যাবে না। অবিলম্বে পর্দা বিরোধী মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাহার করতে হবে।
৯. বিয়ের নুন্যতম বয়স ১৬ বা ১৮ নির্দিষ্ট করা যাবে না, সুন্নতি বাল্যবিবাহ বিরোধী সব আইন প্রত্যাহার করতে হবে।
১০. আসামসহ ভারতে বিভিন্ন প্রদেশে মুসলিম নির্যাতন বন্ধে সরকারকে চাপ দিতে হবে।
১১. চাকরীর ক্ষেত্রে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠি মুসলমানদের নিয়োগ আনুপাতিকহারে করতে হবে। হিন্দুদের ৬০% বা তারও বেশি নিয়োগ দিয়ে বৈষম্য করা যাবে না। প্রশাসনকে হিন্দুকরণ চলবে না।

এই মানববন্ধনে ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী বলেন,

স্বঘোষিত ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক ব্লগাররা ধর্মব্যবসায়ীদের হাতে ইস্যু তুলে দিচ্ছে। এরা ইসলাম ধর্ম অবমাননা করে আসছে, যা তসলিমা নাসরীন, সালমান রুশদী, দাউদ হায়দারকেও হার মানিয়েছে। তাই মুক্তমনা ও মুক্তচিন্তার নামে ইসলাম অবমাননাকারী এসব নাস্তিকদের মৃত্যুদণ্ডের আইন করতে হবে।
..
শিক্ষানীতি ২০১০ দ্বারা কৌশলে ইসলাম শিক্ষা তুলে দেওয়া হয়েছে। শিশু শ্রেণি থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ শ্রেণি পর্যন্ত ধর্মীয় শিক্ষার নাম দেওয়া হয়েছে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা। বোঝানো হয়েছে ইসলাম ধর্মের মধ্যে নৈতিকতা নেই, তাই আলাদাভাবে নৈতিকতা শেখাতে হবে। এই শিক্ষানীতিতে একাদশ শ্রেণির মানবিক, ব্যবসা ও বিজ্ঞান শাখায় ইসলাম শিক্ষা বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়েছে, এটা ইসলাম শিক্ষা নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র ও দেশের ৯৮ ভাগ মুসলমানের দেশকে ধর্মহীন করার আরেকটি কূটকৌশল।”

জোটের এক নেতা বলেন,

চারুকলার নামে সঙ্গীত, নাটক, নৃত্যানুষ্ঠান, নৃত্য একাডেমি করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বেহায়াপনায় ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান বলেন,

প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দু ও নাস্তিকদের লেখার পরিমাণ ৭১ ভাগ, যার মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আত্মপরিচয় ভুলিয়ে হিন্দুধর্মে প্রবেশ করানো হচ্ছে।

তিনি আরোও বলেছেন,

বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৬ বা ১৮ নির্দিষ্ট করা করা যাবে না, সুন্নতি বাল্য বিবাহবিরোধী সব আইন প্রত্যাহার করতে হবে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে এই ঘটনা বেশ শেয়ার হচ্ছে দেখে মনে হলো এই বিষয়ে তাদের আমলনামার কিছু অংশ তুলে ধরা উচিৎ। আওয়ামী ওলামা লীগের এই অপতৎপরতা নতুন কিছু নয়। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে তারা জাতীয় প্রেসক্লাবে একই ধরণের কিছু দাবিনামা তুলে ধরে।

সেখানে তারা বলে,

মুসলমানের ধর্মীয় অধিকার ক্ষুন্নকারী বোরকা ও পর্দা বিরোধী শিক্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা ও পর্দার উপর আঘাতকারী যেকোন পদক্ষেপ নিষিদ্ধ করা, ৯৭ ভাগ মুসলমান ও তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপর হিন্দুদের পূজা চাপিয়ে দেয়া বন্ধ করা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নামে আনুপাতিক হারে প্রশাসনেও সরকারের সর্বত্র মুসলমানদের বঞ্চিতকরণ বন্ধ করা, ৯৭ ভাগ মুসলমানের দেশে হিন্দু তোষণ বন্ধ করা, দুর্গা ও মন্দিরের ছবিযুক্ত জাতীয় পাসপোর্ট বাতিল এবং বাংলাভিশনসহ বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও ফেসবুকে মুসলিম-অমুসলিম নারী-পুরুষের অনৈতিক সম্পর্ক গড়ার আহবানে নাটক, ভিডিও তৈরী ও প্রচারকারীদের গ্রেফতারের দাবি।

পর্দা প্রসঙ্গে তাদের বক্তব্য ছিলো এরকম,

যে পর্দাকে সম্মান করার কারণে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্থপতি ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু নিজে সব সময় ফুলহাতা পাঞ্জাবী পরিধান করেছেন, যে পর্দাকে সম্মান করার কারণে ও জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে ফুলহাতা জামা পরিধান করেন, নারীটিজিং বন্ধে আইন প্রণয়ন করেন, প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশ প্রদান করেন, সে খাছ পর্দা তথা বোরকার বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের এদেশীয় ঘৃণ্য এজেন্টরা বোরকার তথা পর্দার বিরুদ্ধে অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ!
আজকে অতি দুঃখজনক হলেও সত্য যে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা, রাজউক কলেজের অধ্যক্ষ, ঢাবি, রাবি, জবি ইত্যাদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কিছু মুসলমান নামধারী শিক্ষক হাইকোর্টের কথিত বিচারকের ভূমিকায় কিছু মুসলমান নামধারী, মুসলমানের মৌলিক ধর্মীয় অধিকার পালনে বাধা সৃষ্টি করছে। নিরুৎসাহিত করছে। বেপর্দাকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে। (নাঊযুবিল্লাহ!)

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাতে সরস্বতী পুজা উদযাপন প্রসঙ্গে তাদের বক্তব্য,

সাম্প্রদায়িক হিন্দু মহল প্রচার করছে সবার জ্ঞানের মালিক নাকি তাদের কথিত ‘সরস্বতী দেবী’ (নাউযুবিল্লাহ) তাই তারা প্রকাশ্যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কথিত ‘সরস্বতী পূজা’ উদযাপনের উস্কানিমূলক দাবি তুলেছে। তাছাড়া মুর্তি পূজাকে “ধর্ম যার যার উৎসব সবার” নাম দিয়ে মুসলমানদেরও পূজা করার আহবান করছে এবং চাঁদাও চাইছে এ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী । যা সব মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাতের শামিল। যে কারণে এবার সারাদেশে হাজার হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তারা পূজার আয়োজন করেছে। শুধু নীলফামারী জেলায়ই তারা ৪০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূজার আয়োজন করেছে।
বক্তারা বলেন, এ সাম্প্রদায়িকগোষ্ঠী শুধু সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই নয় বরং তারা এখন ইসলামী ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলোতেও পূজা অর্চনা করা শুরু করেছে। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, কুষ্ঠিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, ডিমলা ইসলামীয়া ডিগ্রি কলেজসহ আরো অনেক ইসলামী প্রতিষ্ঠানে তারা পূজা শুরু করেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে কিছু দিনপর তারা মসজিদ-মাদরাসায়ও পূজা শুরু করতে চাইবে। যা চরম উস্কানীমূলক ও মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের শামিল।

বক্তারা বলেন, হিন্দুরা তাদের মন্দিরে পূজা করতে পারে কিন্তু তাই বলে তাদেরকে মুসলমানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূজা করবে কেন?
বক্তারা বলেন, হিন্দুদের মন্দিরে বা প্রতিষ্ঠানে মুসলমানদের তো নামায-কালাম বা ইসলামী অনুষ্ঠান করতে দেয়না। বরং নামায-কালাম তো দূরের কথা তাদের বাসাবাড়ীতে কোন মুসলমান প্রবেশ করলে তাকে অচ্যুত, অস্পৃশ্য মনে করে গোচনা দ্বারা তাদের বাসাবাড়ী পবিত্র করে। তাছাড়া তারা তো মুসলমানদের ধর্মীয় অনুষ্টান যেমন শবেবরাত, শবে ক্বদর, রোযা, ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করেনা তাহলে মুসলমানরা হিন্দুদের ধর্মীয় পূজায় অনুষ্টান দূর্গা পূজা, স্বরস্বতী পূজায় অংশগ্রহণ করবে কেন?

সুতরাং ৯৭ ভাগ মুসলিম জনগোষ্ঠীর সরকারকে অবিলম্বে মুসলমানদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেকোন বিধর্মীদের পূজা বন্ধ করা এবং কথিত উৎসবের মোড়কে মুসলমানদের পূজা করার আহবান জানানো নিষিদ্ধ করতে হবে।

এই একই গ্রুপ ২০১৩তে গণজাগরণের শুরু থেকেই "ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক ব্লগারদের নিষিদ্ধ" ও "চূড়ান্ত শাস্তির ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে আসছে।

সূত্রঃ আমার দেশ (২৪শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩)

এই জোটে ১৩টি দল আছে খবরগুলো প্রকাশ। এরা এই বইমেলাতে রোদেলা প্রকাশনী নিষিদ্ধ করার দাবিতেও মানববন্ধন করেছে। এই মানবন্ধনে "যেকোন ক্ষেত্রে ইসলামবিরোধী সব প্রকাশনা বন্ধ" করার দাবি ছাড়াও "ভারতে মুসলমানদের উপর নির্যাতন বন্ধকরণ, ভারতীয় টিভি চ্যানেল ও অশ্লীল বিলবোর্ড বন্ধকরণ, বাংলাদেশে ভারতীয় সেনাদের স্মরণে কথিত স্মৃতিসৌধ বানানো বাতিল, বিটিআরসি কর্তৃক টু'জি এবং থ্রি'জি'র তরঙ্গ অবিশাস্য কমমূল্যে নিলাম করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে চক্রান্তকারী বিদেশীদের সিএইচটি কমিশনকে নিষিদ্ধসহ বিদেশীদের অবাধ যাতায়াত বন্ধের দাবী" ছিলো।

এ বছরের শুরুতে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সাহার নিয়োগ ও জাতীয় সংসদে সরস্বতি পুজার আয়োজনের বিপক্ষে এই জোট অবস্থান নেয়। জোটের নেতা মাওলানা মোঃ আবুল হাসান শেখ সেখানে বলেছিলেন,

কয়েকদিন পূর্বে মুসলিম প্রধান এদেশে একজন হিন্দু বিচারপতি নিয়োগ করা হয়েছে। তাছাড়া সম্প্রতি দেশের আইন প্রণয়নকারী সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংসদে হিন্দুদেরকে পূজার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডে 'সরকার হিন্দু তোষণ করছে' বলে বিরোধীরা ব্যাপক প্রচারণার সুযোগ পেয়েছে।

তিনি আরোও বলেন,

২০১৩ সালের পুলিশের এসআই পদে নিয়োগে ১৫২০ জনের মধ্যে হিন্দু নিয়োগ দেয়া হয়েছে ৩৩৪ জন। ২০১১ সালে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইতে নিয়োগের ৯৩ জনের মধ্যে হিন্দু নিয়োগ করা হয়েছে ২৩ জন। সম্প্রতি ৬ষ্ঠ ব্যাচে সহকারি জজ পদে নিয়োগ দেয়া ১২৪ জনকে, এর মধ্যে ২২ জনই হিন্দু। এসব বিতর্কিত সিদ্ধান্তে মুসলমান দেশে মুসলমানদের প্রতি ব্যাপক বৈষম্যের দাবিই দৃঢ় হচ্ছে।

সংসদে পূজার সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। হিন্দু প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে অব্যাহতি দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের নতুন মুসলিম প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দিতে হবে।

গত বছর এপ্রিলে বাংলাদেশ আওয়ামী ওয়ামা লীগ প্রথম আলো নিষিদ্ধ করার দাবির সাথে মাদ্রাসার বইতে কিছু পরিবর্তন সম্পর্কে তাদের বক্তব্য তুলে ধরে। সে প্রসঙ্গে তারা বলে,

মাদ্রাসার মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে জর্জ হেরিসনের ছবিসহ ‘দি কন্সার্ট ফর বাংলাদেশ’ লেখাটির মাধ্যমে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা গিটার বাজিয়ে গান গাওয়া শিখবে কি? এবং পঞ্চম শ্রেণীর বইয়ের প্রচ্ছদে এক নারীর ছবি দেওয়া আছে সে মাথায় কাপড় দেওয়া, কিন্তু তার পিঠ দেখা যায়। এসব বিষয় পরিবর্তনের সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের পরিবর্তনকে মূলত ইসলামীকরণ বলা যায় না।

বিডিনিউজ২৪ সাম্প্রদায়িক, কুপমন্ডুক এই আওয়ামী ওয়ামা লীগ সম্পর্কে আওয়ামী লীগের বক্তব্য জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, “আওয়ামী লীগের অনুমোদন ছাড়া কোন সংগঠনের বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।” আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে এই দলের অফিসিয়াল অস্তিত্ব নেই। এ সত্ত্বেও দুটো বিষয় লক্ষ্যনীয়

১. এরা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ঠিকানাটি তাদের লেটারপ্যাডে ব্যবহার করে। যদিও সেখানে এই দলটির কোন রুম নেই বলে জানিয়েছে বিডিনিউজ।
২. বিডিনিউজের খবর অনুযায়ী, এই কার্যালয়ের সামনে গত জানুয়ারি মাসে ওলামা লীগের সভায় সরকারের মন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তা, প্রধান অতিথি ইত্যাদি ভূমিকায় দেখা গেছে। আওয়ামী লীগের হরতাল বিরোধী কর্মসূচীগুলো তাদের আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের করতে দেখা গেছে।

সরকারে থাকা দলের প্রধান কার্যালয়ের সামনে থেকে মিছিল বের করতে যে কোন দল ইচ্ছে করলেই পারবে না। একটা নির্দিষ্ট বোঝাপড়া দরকার এজন্য।

আওয়ামী লীগের হানিফ ওলামা লীগ সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন। অস্বীকার করলেও এদের কাজকর্মের দায় আওয়ামী লীগ নেবে না বা তাদের দাবির প্রতি আওয়ামী লীগের সমর্থন নেই এরকম কথাও তিনি বলেননি। বক্তব্যের কথা বাদ দিলেও ওলামা লীগ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের ঠিকানা ব্যবহার করে, তাদের মিছিল মিটিঙে অংশ নেয় একথা সত্য। এই দুটো বিষয়ে আওয়ামী লীগের বক্তব্য কী? এই দলগুলোর সাথে আওয়ামী কতোটুকু সম্পর্ক রাখে এবং তাদের বক্তব্য, কর্মসূচী কতোটা ধারণ করে সেই বিষয়েও তারা তাদের অফিসিয়াল (কোন জমায়েতে কোন রেন্ডম নেতার বক্তৃতা নয়) বক্তব্য দিক। আমাদেরও শত্রু মিত্রের রেখাটা আরো একটু পরিস্কার হোক।


মন্তব্য

সাইদ এর ছবি

আওয়ামী লীগ কি আবার আওয়ামী মুসলিম লীগে ফিরে যাচ্ছে ??
বৃহত্তর জামাতে ইসলাম এর পর আওয়ামী মুসলিম লীগ। বাহ্‌ দেশ এগিয়ে যাচ্ছেযাচ্ছে

নজমুল আলবাব এর ছবি

দেঁতো হাসি

ক্রমশঃ প্রকাশ্য থিকা একবারে হয়ে যাওয়াই ভালো। আগে বাড়ো।

মুসলমানের দ্রুত বর্ধন দেখা যায়। ৯৮ ভাগ হয়ে গেছে। সাব্বাশ।

রাখ-ঢাক নাই। এইটাও ভালো লাগলো। দুনিয়াতেই কচি জিনিস চায়। সুন্নতি বাল্যবিবাহ নিয়া উল্টাপাল্টা বলা নিষেধের কঠোর দাবী জানাইলাম।

দেঁতো হাসি

হাসিব এর ছবি

বহু রকমের অশ্লীল জিনিসের প্রদর্শনী হয় ঢাকা শহরে। ওলামা লীগের ৯ নাম্বার দাবিটা অশ্লীলতর। ওরা সুন্নতি বয়স বলতে কী বোঝে? ৮? নাকি ৯?

মরুদ্যান এর ছবি

সম্ভবত ৮। আই এস আট বছর বয়স হলেই বিয়ে দেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

হাসিব এর ছবি

তথ্যটার সোর্স থাকলে দিয়েন।

মরুদ্যান এর ছবি

এখানে বলা আছে ৯। গতকাল নির্ঝর মজুমদার বলেছে আই এস এর ম্যাগাজিন দাবিকে নাকি বলা আছে ৮। আমি দাবিক দেখিনাই নিজে।

http://www.telegraph.co.uk/news/worldnews/middleeast/syria/11392894/Isils-manifesto-for-women-Marriage-at-nine-a-sedentary-life-and-two-years-maternity-leave.html

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

হাসিব এর ছবি
নজমুল আলবাব এর ছবি

৯ নাম্বার দাবী এইটা। সমঝদারের জন্য ইশারাই কাফি হইবার কথা। আপনে বুজদিল, বুড়বক। এজন্য বুঝেন নাই।

হাসিব এর ছবি

আপনি এবং মরুদ্যান দুইজনেই ভুল!

মরুদ্যান এর ছবি

এদের কাছে ৬-৭-৮-৯ কোন কিছুই ব‌্যাপার না। লোয়ার থ্রেশোল্ড নাই কোন, শুধু হাইয়ার থ্রেশোল্ড আছে- ৯ । উপরে লিংক দ্রষ্টব‌্য।

আর এই বেটা মইরা গেসে মাস কয়েক আগে।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

নজমুল আলবাব এর ছবি

ওর মরার খবর কই পাইলেন?

মরুদ্যান এর ছবি

টুইটারে চোখ রাখলেই হবে। আমেরিকার বম্বিংয়ে মরসে এই লোক। মেইনস্ট্রিম মিডিয়াতেও আসছিল এই খবর। ইরাকি বাহিনী লাশের ছবিও আপলোড করসে।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

সুবোধ অবোধ এর ছবি

Narrated 'Aisha: that the
Prophet married her when she
was six years old and he
consummated his marriage
when she was nine years old,
and then she remained with
him for nine years (i.e., till his
death).
— Sahih al-Bukhari , 7:62:64

লাইনে আসুন।

মরুদ্যান এর ছবি

এইমাত্র জানতে পারলাম, এই ছবিটা একটা প্রোপাগাণ্ডার অংশ, হোক্স। টুইটারে আর ফেসবুকে আই এস এর প্রপাগাণ্ডার বিরুদ্ধে কে বা কারা একটা ভিডিও থেকে স্ক্রিন শট নিয়ে মিথ‌্যা ক‌্যাপশন নিয়ে ছেড়ে দিসে। আসল ভিডিওর লিংক এইখানে।
https://www.youtube.com/watch?v=STidtelO6ZQ

ভাবতে ভাল লাগছে বাচ্চাটা বিয়ের হাত থেকে বেঁচে গেসে অন্ত:ত। কিন্তু এটা মিথ্যা না যে আই এস বাল্যবিবাহ প্রমোট করে।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

প্রথম কথা, সুন্নত বলতে একজন সাধারণ মুসলমান কি বোঝে? অতি সাধারণ ধারণা হচ্ছে, মুহাম্মদ তার ব্যক্তিগত জীবনযাপণে যে সকল ধর্মীয় ও সামাজীক রীতি পালন করেছেন, তাই-ই সুন্নত। দেখা যাক বিয়ের সুন্নতি বয়স হিসাবে হাদিসে কি আছে,

"ফারওয়া ইবন আবু মাগরা (র) ....... আয়েসা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী যখন আমায় বিবাহ করেন, তখন আমার বয়স ছিল ছয় বছর। তারপর আমরা মদিনায় এলাম ...... সেখানে আমি জ্বরে আক্রান্ত হলাম...... সুস্থ
হওয়ার পরে...... আমি একদি আমার বান্ধবীদের সাথে দোলনায় খেলা করছিলাম। তখন আমার মাতা উম্মে রূমান আমাকে উচ্চস্বরে ডাকলেন।..... তারপর আমাকে ঘরের ভিতর প্রবেশ করালেন। সেখানে কয়েকজন আনসারী মহিলা
ছিলেন। তাঁরা বললেন, তোমার আগমন কল্যানময়, বরকতময় এবং সৌভাগ্যময় হউক। তাঁরা আমার অবস্থান ঠিকঠাক করে দিলেন, তখন ছিল পূর্বাহ্ন। হঠাং রাসূলুল্লাহ (সা)- এর আগমন আমাকে সচকিত করে তুলল। তাঁরা আমাকে
তাঁর কাছে সোপর্দ করে দিলেন। সে সময় আমি নয় বছরের বালিকা।" (বুখারী শরীফ, ষষ্ঠ খন্ড, ক্রম: ৩৬১৯/ পৃ: ৪১৮ ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ কতৃক প্রকাশিত)।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমাদের বিবর্তনচক্রঃ

মুসলমান --> মুসলমান বাঙালী --> বাঙালী মুসলমান --> বাঙালী --> বাঙালী মুসলমান --> মুসলমান বাঙালী --> মুসলমান।

চক্র সম্পূর্ণ হয়েছে; প্রপৌত্রের ঔরসে জন্ম নিচ্ছে প্রপিতামহ।

Emran

ইয়ামেন এর ছবি

ধুর আপনারা কেউ আসল ব্যাপারটা ধরতেই পারতেসেন না। আমি তো জিনিস্টাকে ইতিবাচক বলে মনে করতেসি। বুঝাই যাচ্ছে এরা সবাই চরম উদাস ভাইয়ের রিসেন্ট ব্লগ পোস্টগুলা পড়ে অনুপ্রানিত হয়ে এখন হেফাজত/ওলামা/জামাত মিলমিশ করে থাকতে চাচ্ছে। সম্পুরক খবর দেখেন নাই, কত্তগুলা জামাত/বিএনপি/ডিপজল একলগে আওয়ামী লীগে জয়েন করসে?
মিলমিশ ভাইসব, মিলমিশ! সবাই লাইনে আসেন।

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...

হাসিব এর ছবি
তানিম এহসান এর ছবি

দল করলেই যদি আদি চরিত্র ঠিক হয়ে যেত তাহলে ভালই ছিল!

মাসুদ সজীব এর ছবি

৯০ ভাগ থেকে ৯৮ ভাগ মুসলমান কিভাবে হলো? স্বপ্নে?

দাবির সাথে একত্না প্রকাশ করেনি বাংলাদেশ কওমিলীগ? মালাউনের লেখা জাতীয় সংগীত নিষিদ্ধ করা এখন সময়ের দাবি চোখ টিপি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

হাসিব এর ছবি

ওটা হতে বেশিদিন বাকি নাই। এই লক্ষ্যে ওলামা দল লীগ সবাই নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

কালা কাউয়া এর ছবি

হেফাজতে ইসলাম যখন নারায়ণগঞ্জ ক্রস করতেছিল - তখন তাদের এত্তগুলা মিনারেল ওয়াটার খাওয়াইছিল কে? শফি হুজুরকে কুটি কুটি টাকার জমি দিছে কে? রামুতে স্থানীয়
আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জামাত ভাই ব্রাদারের মত একসাথে বৌদ্ধদের সাইজ করেছিল বলে শোনা যায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

৯ নাম্বার পয়েন্টটা বালু লাগিচ্চিল। কিন্তু আমি যে নিকে কইরে পেলেচি!

- ভোরের বৃশ্চিক।

হাসিব এর ছবি

আপনি আইনত চাইট্টা নিকাহ করতে পারেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

তাহলে যাই। ব্যানার ধরে দাঁড়িয়ে থাকি গিয়ে... গড়াগড়ি দিয়া হাসি

-ভোরের বৃশ্চিক।

অতিথি লেখক এর ছবি

সচরাচর টিভি দেখি না, সেদিন হঠাৎ করে একাত্তর টিভি-র টক শো-তে দেখি, এক ভদ্রমহিলা বলছেন-“এদেশের নিরানব্বই ভাগ মানুষ মুসলমান, সেই দেশে আপনাদের আওয়ামী লীগ মানেই তো ধর্মহীনতা”। আহা রে, এবার বোধহয় দুর্নাম ঘুচল আওয়ামী লীগের!

দেবদ্যুতি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

সোভিয়েতস্কি কৌতুকভে একটা কৌতুক পড়েছিলামঃ

মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত হত্যাকান্ডের এক ঘন্টা আগে পলিট ব্যুরোর সদস্যদের ডেকে পাঠালেন ব্রেজনেভ। বললেনঃ

- কায়রো আর মস্কোর সময়ের পার্থক্য ক'ঘন্টা কে বলতে পারবে? একটু আগে জিহান সাদাতকে ফোন করে আনোয়ার সাদাতের হত্যাকান্ডে গভীর শোক জানিয়েছি। অথচ জিহান বলল আমি ভুল করেছি। আনোয়ার সাদাত নাকি প্যারেডে হাজিরা দেবার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

৯৮% এর পরিসঙ্খ্যান দেখে এই জোক মনে করা কি খুব উগ্রতা হয়ে যাবে? চিন্তিত

বাই দ্য ওয়ে, ২ নাম্বার দাবির সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত। কিন্তু, সব মানে সবচোখ টিপি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

কৌতুকটা প্রথমবার পড়ে তো কিছুই বুঝলাম না, চিন্তিত । একটু পরে কিন্তু বুঝে ফেললাম চাল্লু । দুই নম্বর দাবিটাও আরেকবার পড়ে এলাম-সহমত।

দেবদ্যুতি

মাসুদ সজীব এর ছবি

৯৮% মুসলমান তো পাপিস্তানে? তাইলে কি দেশটারে এরা এখনো পাপিস্তান মনে করে চিন্তিত

এমন প্রশ্ন করলে কি উগ্রতা হয়ে যাবে? উগ্রতা পরিহার করতে চাই, মিলেমিশে থাকতে চাই চোখ টিপি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আফগান মুজাহেদীনরা যখন দখলদার সোভিয়েতদের হঠাতে সক্ষম হয় তখন তারা মোটামুটি দেড় ডজন দলে বিভক্ত। সেখানে পাশতুন, তাজিক, হাযারাদের আলাদা আলাদা দল ছিল। শিয়া, সুন্নীদের আলাদা আলাদা দল ছিল। প্রো-মার্কিনী, প্রো-পাকিস্তানী, প্রো-ইরানীদের আলাদা আলাদা দল ছিল। মাওবাদীদেরও খান তিনেক আলাদা আলাদা দল ছিল, কিন্তু গুলবুদ্দীন হিকমাতিয়ারের দল তাদেরকে ১৯৮৯ সালের আগেই নিকেশ করে দিয়েছিল।। ক্ষমতায় আসার পর দেড় ডজনদের মধ্যে হানাহানি শুরু হলো। দেড় ডজনদের ধারণাতে ছিল না ঐ সময়ে তালিবানরা গোকূলে বাড়ছে। তারপর কী হলো, আর এখন পর্যন্ত কী চলছে সেটা সবাই জানেন।

আফগানদের প্রসঙ্গ টানলাম এই জন্য যে, চোখ-কান খোলা রেখে ঘটনাবলী লিঙ্ক-আপ করতে না পারলে এবং পরিস্থিতি ফোরকাস্ট করতে না পারলে ভবিষ্যতে বড় ধাক্কা খেতে হয়। দেশ বড় ধাক্কা খেলে বা বড় বিপদে পড়লে বড় বড় নেতারা পার পেয়ে যাবেন। তারা সে রাস্তা খোলা রাখেন। ছোটখাটো নেতা-কর্মীরা কচুকাটা হবেন। আর আমাদের মতো সাধারণ মানুষ উলুখাগড়ার পরিণতি লাভ করবেন।

২০০৫ সালের ১৭ই অগাস্ট সারা দেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলার ঘটনায় এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, যারা গোকূলে বাড়ছে তারা ধারণাতীত রকমের সংঘ-বদ্ধ এবং শক্তিশালী। সিপিবির জনসভা, উদিচীর অনুষ্ঠান, আওয়ামী লীগের জনসভা, রমনার বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, ময়মনসিংহের সিনেমা হল, সিলেটের মাজার - কোন ঘটনার বিচার সম্পন্ন হয়ে দোষীদের চিহ্নিত ও শাস্তি প্রদান করা হয়নি। আজ পর্যন্ত এতসব কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড, ফাইনান্সার, গডফাদারদেরকে চিহ্নিত করা যায়নি। এই ব্যর্থতার ফল হিসেবে এখন প্রতি নিয়ত জঙ্গীদের হামলা দেখতে হচ্ছে। তারা এখন অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি সংগঠিত। সাধারণ মানুষের একাংশের মধ্যে তাদের গ্রহনযোগ্যতাও তৈরি হয়ে গেছে।

বিএনপি যদি ভেবে থাকে এদের সহায়তায় তারা আবার ক্ষমতায় যাবে, তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করে। বিএনপিকে ভোটে জিতেই ক্ষমতায় যেতে হবে। এবং এরা বিএনপিকে ব্যবহার করলেও সুযোগ পেলে বিএনপিকে ঠিকই নির্মূল করে দেবে। এদের ভোট বিএনপির বাক্সে যায় না। বিএনপিকে নিজের জনপ্রিয়তার জোরেই জিততে হবে।

করুণ অবস্থা হচ্ছে আওয়ামী লীগের। এই দলের নেতাদের একাংশের ধারণা তাদের নিজেদেরকে আরো বেশি ধার্মিকদের দল হিসেবে দেখাতে হবে। তাই তারা কখনো খেলাফত মজলিসের সাথে চুক্তি করে, আবার কখনো হেফাজতে ইসলামকে সুবিধা দেয়। আওয়ামী লীগ নিজের ইতিহাস ঘাঁটলে অন্তত দুটো সত্য দেখতে পাবে। এক, এই দলটা যতবার জিতেছে ততবার নিজের জনপ্রিয়তার জোরে ভোটে জিতে ক্ষমতায় গেছে। দুই, আওয়ামী লীগের কোন সহযোগীর ভোট বা প্রতিপক্ষের শত্রুর ভোট আওয়ামী লীগ পায়নি। জামায়াত-খেলাফত-হেফাজত-হিজবুত-নেজামে ইত্যাদি ভোট কোন কালেই নৌকা মার্কায় পড়বে না।

তদন্তে রহস্য উদঘাটনে ব্যর্থতা আর বিচার সম্পন্ন করার ব্যর্থতার পাশাপাশি নিজেদের সাংগঠনিক ব্যর্থতার ফলে আওয়ামী লীগের ভেতর বেনোজল ঢুকেছে। অবশ্য আওয়ামী লীগে এমন জিনিস সব আমলেই ছিল। পুরনো কথার আর পুনরাবৃত্তি করলাম না। আওয়ামী লীগের আরেকটি সাংগঠনিক ব্যর্থতা হচ্ছে এই বেনোজল দ্রুত চিহ্নিত করে তা নির্মূল করতে না পারা। পার্টি এদের বিরূদ্ধে পদক্ষেপ না নেয়ায় অনেকে বুঝে বা না-বুঝে এদের পক্ষে সওয়াল করার জন্য দাঁড়িয়ে যায়। ফলে এদের আরো পোয়াবারো হয়। এখন এই স্টেজ চলছে।

রাজনীতির ভিত্তিতে আদর্শটা থাকতে হয়। এবং নিজের নেতা-কর্মীদের সেই আদর্শে প্রশিক্ষিত করতে হয়। রাজনীতিতে ইস্যুভিত্তিক কর্মসূচীর দরকার আছে। তবে আদর্শটাকে বিস্মৃত হয়ে শুধু ইস্যুর ওপর জোর দিলে আদর্শের জায়গাটা নড়বড়ে হয়ে যায়। তখন বিভীষণরা সংগঠিত হয়ে আঘাত হানে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হাসিব এর ছবি

গত দুই সপ্তাহ আমি আনসারুল্লাহ স্টাডি করলাম। এদের তুলনায় আগের গ্রুপগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনাটাইপ। এই গ্রুপটা পাকিস্তানি আল কায়েদার (মিডল ইস্টের আল কায়েদার সাথে এদের কিছু পার্থক্য আছে মনে হলো) আদলে তৈরি। এরা পাকিস্তানি আল কায়েদা বলে এরা ইসলামিক স্টেট সমর্থন করে, দেশে হেফাজতকে সমর্থন দেয়, জামাত শিবিরকে সমর্থন না দিলেও তাদের হেদায়েত করে।

আনসারুল্লাহ আগের গ্রুপগুলো থেকে অনেক বেশি সংহত। আগের গ্রুপগুলো কয়েকজন নেতা (যেমন বাংলা ভাই) কেন্দ্র করে চলতো। আনসারুল্লাহও এরকম নেতা কেন্দ্র করে চলে, তবে এদের এক নেতা ধরা পড়লে অন্য নেতার অভাব হয় না। কারণ সেটা গ্লোবাল আল কায়েদা নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত। আল কায়েদার প্রযুক্তি, নেটওয়ার্ক, লিটারেচার সমস্তটাই তাদের হাতে আছে এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর বঙ্গানুবাদ হয়ে গেছে। এগুলো নেটে আছে ও একটা সেল পুলিশের হাতে ধরা পড়লেও আরেকটা সেল তৈরি হয় খুব সহজে ও কম রিসোর্স ব্যবহার করে। এদের হাতে গজালি দিয়ে গুপ্তহত্যা থেকে শুরু করে কামানের গোলা ছোড়ার টিউটোরিয়াল মজুদ। নেট নিরাপত্তার জন্য তাদের ম্যানুয়ালগুলো বাংলায় এই বিষয়ে লেখা যেকোন লিটারেচারকে টেক্কা দিতে পারবে। এইসব দেখে অন্য সব চরমপন্থী গ্রুপগুলোর জিহাদিরা আনসারুল্লাহর হয়ে কাজ করতে শুরু করেছে।

জেএমবি যেভাবে নিয়ন্ত্রন করা গেছে সেভাবে আনসারুল্লাহ নিয়ন্ত্রন করা যাবে না। বাংলাদেশের পুলিশ তাদের সাথে টেক্কা দিতে পারবে বলে মনে হয় না। কথা হচ্ছে এর বিস্তার ও প্রতিরোধে আওয়ামী লীগ তাত্ত্বিকভাবে দুর্বল অবস্থানে আছে। তাদের নেতাদের হেফাজত তোষণ, ওলামা লীগ পোষা ইত্যাদির দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক প্রভাব সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। তাদের কর্মীরা যেহেতু নেতায় বলছে সেহেতু সেইটাই ঠিক এবং এই বিষয়ে কোন কথা তারা শুনতে রাজি না। দলের ভেতরে চিন্তার চর্চা শুরু করতে না পারলে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ আগাতে পারবে না। তাদেরকে ইনকামবেন্ট ইফেক্টের ওপর দিয়ে ইলেকশন জিততে হবে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

চলুক


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মরুদ্যান এর ছবি

গুগল সার্চ দিলেই পাওয়া যাচ্ছে নাকি? আমাদের দেশের সিকিউরিটি এজেন্সি গুলাতে কারা কাজ করে জানতে মঞ্চায়। একজন কে চিনি এন এস এ'র অনেক সিনিয়র পজিশনে আছে, জাজ করা ঠিক না। তাকে আমার একজন সরকারি আমলা ছাড়া তেমন কিছু মনে হয়নাই। আরেকটা ব্যাপার ভুলে গেলে চলবেনা আমাদের পুলিশ/ আর্মি তেও কিন্তু আমাদের দেশের মানুষেরাই কাজ করে, তাই ধর্মের ব্যাপারে গোঁড়ামি তাদের মধ্যেও থাকার কথা। তাই 'নাস্তিক' ব্লগার নিধনে তাদের যে মৌন সমর্থন নাই সেটা মনে হয় ধরে নেয়া ঠিক হবে না।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

স্বপ্নের ফেরিওয়ালা  এর ছবি

আহারে,দেশ থেকে ইসলাম উঠে যাচ্ছে উনারা চেস্টামেস্টা করে অনেক কষ্টে ৯৮% করতে যাচ্ছেন।
আমাদের কোন কথাই আর আটকায় না চোখ টিপি

হাসিব এর ছবি

এইটা বলার সময় তাদের মধ্যে একধরণে অসুস্থ্য উল্লাস দেখতে পাই।

ইয়ামেন এর ছবি

" জামায়াত-খেলাফত-হেফাজত-হিজবুত-নেজামে ইত্যাদি ভোট কোন কালেই নৌকা মার্কায় পড়বে না। "

এত সহজ একটা জিনিস যেটা বারেবার প্রমানিত হয়েছে তারপরেও যদি আওয়ামী লীগের কিছু নেতারা বুঝতে না চায় তাহলে আর কি বলার আছে! যতদিন হাছান (উইথ এ 'ছ') মাহমুদের মত শফি হুজুরের ন্যাওটাকে ক্যাবিনেটে রাখা হবে এমন জিনিস চলতেই থাকবে!

--------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

সব বেদনা মুছে যাক স্থিরতায়
হৃদয় ভরে যাক অস্তিত্বের আনন্দে...

অতিথি লেখক এর ছবি

এইসবে অবাক হওয়ার কী আছে? আওয়ামী লীগ এখন তার সবকটা দরজা খোলা রাখছে। দেশে ইসলামের সুবাতাস বইলে সে ইসলামিস্ট হয়ে যাবে, যথেষ্ট অঙ্গ সে ইতোমধ্যেই হাজির করে রেখেছে। দেশে সমাজতান্ত্রিক বাতাস যদি ভুলেভালেও জোর পায় তাহলে, আদতেতো আওয়ামী লীগ সমাজতান্ত্রিক একটা দলই। অঙ্গ খোলার দরকার নেই। আর নিজেইতো আছে মাঝখানটাতে।

কিন্তু কে বোঝাবে এ ভাবে বাঁচা যায় না, সব কূল রাখা যায় না। রাখতে গেলে বরং নদীতে পড়ে ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।

স্বয়ম

রানা মেহের এর ছবি

নারী প্রগতি আর ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি
এরকম প্যাথলজিক্যাল লেভেলের ঘৃণা এরা কীভাবে পুষে রাখতে পারে,
এই জিনিস গবেষনার বিষয় হওয়া উচিত।

ছাত্রলীগ আর ওলামালীগ থাকলে আওয়ামীলীগ ডোবার জন্য
বেশিকিছু লাগবেনা

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

এক লহমা এর ছবি

"নারী প্রগতি আর ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি ... ... ... হওয়া উচিত।"
চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

এক লহমা এর ছবি

বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষ কি হয় এই "আওয়ামী ওলামা লীগসহ ১২-১৩টি ধর্মীয় সংগঠন যাদেরকে সরকারঘেষা বলে মনে করা হয়"-এদের আর তা না হলে হেফাজতে ইসলামের সমর্থক?

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

চরম উদাস এর ছবি

একেই বুঝি বলে ... ওলামামার বাড়ির আবদার

অতিথি লেখক এর ছবি

একেই বুঝি বলে ... ওলামামার বাড়ির আবদার

হে: হে:
ট্রোল

অতিথি লেখক এর ছবি

মাদ্রাসার মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে জর্জ হেরিসনের ছবিসহ ‘দি কন্সার্ট ফর বাংলাদেশ’ লেখাটির মাধ্যমে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা গিটার বাজিয়ে গান গাওয়া শিখবে কি? এবং পঞ্চম শ্রেণীর বইয়ের প্রচ্ছদে এক নারীর ছবি দেওয়া আছে সে মাথায় কাপড় দেওয়া, কিন্তু তার পিঠ দেখা যায়। এসব বিষয় পরিবর্তনের সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের পরিবর্তনকে মূলত ইসলামীকরণ বলা যায় না।

এখন কি শফি হুজুর আর ওলামামালীগের মামারা নিজেরাই বই লিখিবেন? বইতে কি থাকবে
হিজাব আর চিপা প্যান্ট পরিহিত রমনীর ছবি? ( সহি ইসলামি পোজে)
রকেট লাঞ্চার হাতে লাদেন ছাব?
চাঁদে সাইদী ( মতান্তরে চুইদী) ছাবের ছবি?
এগুলা। নাস্তিক পাঠ্যবই এর উপর লানত। ছ্যা ছ্যা । সমস্ত বইই দ্রুত উপরোক্ত ইসলামীকরনের দাবি জানাচ্ছি।
যেমনঃ বইয়ের নাম বদলিয়ে ইসলামী নামকরন
লাইনে আসুন- কাতারে খাড়া হোন। ইত্যাদি। দেঁতো হাসি

কিরো

তাহসিন রেজা এর ছবি

নয় নাম্বার কমেন্টে প্রবল ভয়ে কান্নায় ভেঙে পড়া মেয়েটার ছবি দেখে আমার বুকটা কেমন হাহাকার করছে।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”

অলীক জানালা _________

এক লহমা এর ছবি

হ্যাঁ

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মরুদ্যান এর ছবি

মন খারাপ কৈরেন না। ছবিটা ভুয়া। আই এসের প্রপাগাণ্ডার বিরুদ্ধে আরেকটা প্রপাগাণ্ডা। মিথ্যার বিরুদ্ধে মিথ্যা। ডাউনসাইড: এগুলা দেখে কিছু লোকের আই এসের প্রতি ভালবাসা বাড়বে আরো।

মজার ব্যাপার হইল, এই জিনিস টিভি নিউজেও দেখাইসিল একবার এইখানে। প্রপাগাণ্ডার শক্তি আসলেই মারাত্মক। আমাদের দেশে জামাত এটা ভালমতই বুঝে আর করে।

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

'সুন্নতি' বাল্যবিবাহ,
'ছহী' পর্দা,
বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার ৯৭%-৯৮% ইসলাম ধর্মাবলম্বী।

নতুন শিখলাম!

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

সম্ভবতঃ আওয়ামী লীগ নিজেকে অলরাউণ্ডার দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। নিজেদের একটা টিম বানিয়ে জামাত বা অন্য ইসলামী দলগুলো যা বলতো তাদের দিয়ে বিরোধী দলের অবস্থানও নিজেদের ভেতর তৈরী করে নেয়ার অপচেষ্টা বলে মনে হয় এটাকে। কিন্তু এই খেলাটা দিয়ে দেশকে শেষ পর্যন্ত কোন দিকে ঠেলে দেয়া হবে তার ধারণা নাই। জাতিকে অনেক বেশী দামে মূল্য পরিশোধ করতে হবে একসময়।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।