দু'লাখ টাকার গাড়ী ও ইজ্জতালী সরকার সমাচার

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: সোম, ০৮/০৬/২০০৯ - ৬:০৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গতকাল দুই লাখ টাকার একটা চেক পাইছি। একটা গাড়ী কিনবো ভাবতেছিলাম। হাসতেছেন? ব্যাটা পাগল নইলে মাতাল। বাংলাদেশে দুই লাখ টাকায় টেক্সীও মেলে না, আবার গাড়ীর শখ। পোলাও খাবা স্বপ্নেই খাও। নইলে ধোলাই খালের চোরাই মার্কেটে যাও। পাইলেও পাইতে পারো ঘষামাজা টয়োটা নিশান।

মেজাজ খারাপ করে কোন লাভ আছে? তারচেয়ে দুকলম হেঁকেই কইলজা ঠান্ডা করি।

যাদের নিজের গাড়ী হাঁকাবার সামর্থ্য আছে তাদের তেমন অসুবিধে নেই। যদিও তাদেরও মাঝেসাজে পাবলিক গাড়ীতে যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু যাদের প্রতিনিয়ত পাবলিক বাসে, সিএনজি টেক্সিতে যাতায়াত করতে হয়, তারা প্রত্যেকদিন কতঘন্টা যাতায়াত হয়রানিতে ব্যয় করে সেটা হিসেব করলে আমাদের জাতীয় আয়ের বিরাট অপচয় হিসেবে দেখা যাবে।

ধরা যাক একজন মানুষের কর্মক্ষমতা ১০০। তার মধ্যে সে ৫০ ব্যয় করে জীবিকার পেছনে। ১০ ব্যয় করে পরিবারের পেছনে। ১০ নিজের অন্যন্য কাজে। বাকী থাকে ৩০। এটা সঞ্চয়। বই পড়া, গান শোনা, শখের কাজ করা, সামাজিক কাজ, সৃষ্টিশীল কাজ করা। এটা অবসর বিনোদন বিশ্রাম ঘুমের জন্য। প্রতিটা মানুষের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য এই অবকাশটুকুর প্রয়োজন আছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, বেশীরভাগ নাগরিক এই অবকাশ থেকে বঞ্চিত।

এই ৩০ ভাগের অধিকাংশই রাস্তার বিড়ম্বনায়ই চলে যায়। বাসা থেকে কর্মক্ষেত্রে যাতায়াতে প্রচুর শক্তি সামর্থ্য সময় অপচয় করতে হয়। এটা নিজের জন্য রাখা ৩০ ভাগ থেকে নিয়ে আরো হাত বাড়ায় কর্মসময়, পরিবারের সময় ও অন্যান্য খাতের সময়ের দিকে। কোনকিছুই ঠিকমতো করা যায় না। রাস্তার বিড়ম্বনায় আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিরাট একটা অংশ নষ্ট হয়ে যায়।

নিজের গাড়ী নেই, অফিসে আসা যাওয়া বাদে অন্যসব যাতায়াত পাবলিক গাড়ী বা টেক্সীতে করতে হয়। ট্রান্সপোর্ট বা পরিবহন বিষয়ে আমি এমনিতেই একটু খুঁতখুঁতে, কিন্তু বাংলাদেশে এই খাতে সবচেয়ে বেশী বিশৃংখলা, সবচেয়ে বেশী নৈরাজ্য। তাই বিড়ম্বনাটা বেশীই পোড়ায় আমাকে। অন্যান্য দেশে যা দেখেছি তার সাথে তুলনা করলে জ্বলুনিটা আরো বেশী হয়। অন্যরা পারলে আমরা পারিনা কেন। টাকা নেই বলে? টাকা নেই, এটা একটা কারন বটে, কিন্তু সম্পূর্ন কারন নয়। "এটা যুগ যুগ চলে এসেছে, তোমার বাপদাদারা আরো বেশী কষ্ট করেছে, তোমার করতে অসুবিধে কী, সুতরাং হতে দাও"- এই মানসিকতা আমাদেরকে পরিবর্তনের দিকে যাত্রাপথে প্রথম বাধা। যতই ডিজিটাল পরিবর্তনের কথা বলা হোক না কেন।

একটা আইটেম নিয়ে লিখি আপাততঃ। সিএনজি টেক্সী। একটা সিএনজি টেক্সীর দাম কতো? সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ পর্যন্ত কিনতে দেখেছি। শুনেছি ভারতে এই টেক্সীর দাম এক লাখেরও কম। বাংলাদেশের জন্য দামী মডেল বানায় কিনা জানিনা। টয়োটাকে দেখেছি বাংলাদেশের মতো গরীব দেশের জন্য আলাদা মডেল তৈরী করতে, সস্তা ব্র্যান্ড, পারলে চারটা চাকা দিয়েই পাঠিয়ে দেয়। আমি অফিসের জন্য একবার গাড়ীর এলসি খুলতে গিয়ে এসব নিয়ে ফ্যাকড়া করেছিলাম টয়োটার সাথে। যাই হোক ওই সিএনজি টেক্সীগুলো ক্রেতার কাছে পৌঁছাতে পৌঁছাতে এটা কয়েক লাখ টাকা দাম হয়ে যায়। রহস্যটা কি আমার কখনো জানা হয়নি। এটা নিশ্চয়ই কোন যুক্তিসঙ্গত কারনে হয়। নইলে সরকারে এত বাঘা বাঘা বানিজ্যবিশারদ আছে তারা ব্যবস্থা নিত। কোন হাউকাউ তো দেখি না।

শুনেছি জাপানে নাকি ১৯৯৯ মডেলের গাড়ী ২ হাজার ডলারে কেনা পাওয়া যায়। শোনা কথা। আমি কখনো জাপান যাইনি, তাই শোনা কথা নিয়েই একটু নাড়াচাড়া করি। ভাবছি জাপানের ২ হাজার ডলারের গাড়ী বাংলাদেশে যাতে ২ লাখে পাওয়া যায় সেই ব্যবস্থা করা সরকারের জন্য কতটা কঠিন, কতটা ব্যয়বহুল? এটা বলছি, কারন রাস্তায় তিন চাকার যে সিএনজি টেক্সীগুলো চলে তার চেয়ে কম দাম দিয়ে যদি আরো ভালো গাড়ী পাওয়া যায়, তাহলে আমরা আমাদের রাস্তা থেকে তিন চাকার অনিরাপদ গাড়ীগুলো বিদায় করে চার চাকার ভালো গাড়ী চালাবো না কেন? তিন চাকা আর চার চাকার মধ্যে পার্থক্যটা নিশ্চয়ই খুলে বলতে হবে না।

আমরা কার স্বার্থে তিন চাকার গাড়ী দিয়ে রাস্তাগুলোকে আবর্জনায় পরিনত করছি। টেক্সীক্যাব হিসেবে চালানোর জন্য সরকার নতুন গাড়ী ছাড়া অনুমতি দেয় না। নতুন গাড়ী কিনতে হলে সস্তার জন্য ভারতীয় গাড়ী আনতে হয়, যেগুলো দুবছরও টেকে না। আর ভালো গাড়ী আনতে জাপানে যেতে হয় যার দাম পড়ে অনেক বেশী। যদি দশ লাখ টাকা দিয়ে টয়োটার ২০০৮ মডেলের একটা টেক্সীক্যাব না এনে পাঁচটা ১৯৯৯-২০০০ মডেলের গাড়ী আমদানীর সুযোগ দেয়া হয় তাহলে কতটা বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হয় আর কতটা নগর শৃংখলা সৌন্দর্যে ভুমিকা রাখে। এটা আমার মাথায় আসে, সরকারের মাথায় আসে না কেন?

টেক্সীক্যাব হিসেবে চালানোর জন্য নতুন গাড়ী আমদানী কার স্বার্থে করা হয়? একই দামে বা আরো কম দামে মজবুত জাপানী রিকন্ডিশনড গাড়ী আমদানী করা গেলেও কার স্বার্থে তিন চাকার অনিরাপদ তিন চাকার গাড়ী এনে ভর্তি করে ফেলা হয়? এটা কী যাত্রীস্বার্থ রক্ষা করছে, নাকি চালক স্বার্থ, নাকি মালিক স্বার্থ? সিএনজি টেক্সী ও প্রাইভেট কার নিয়ে সরকারের নীতিগুলো বিশেষ কিছু কোম্পানীর সুবিধাপ্রাপ্তির দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করে না? সরকারের উপর নাভানা, টাটা, প্যাসিফিক মোটরস এর মতো প্রতিষ্ঠানের প্রভাব কি জনকল্যানের চেয়েও শক্তিশালী?

বাজেট ঘোষনার মাত্র কয়েকটা দিন বাকী। গাড়ী আমদানী নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর দারুন ব্যস্ত। আগামী বাজেটে নাকি গাড়ীর উপর কর বেড়ে যাবে। প্রশ্ন আউট হয়ে গেছে। তাই গরুর বাজারের মতো সবাই হৈ হৈ করে গাড়ী কিনছে। পত্রিকায় পড়লাম এই হৈ হৈ এর কারনে জাপানের বাজারে ৫০০০ ডলারের এলিয়ন-প্রিমিও গাড়ী ১৬০০০ ডলারে চড়েছে। তবু বাংলাদেশীরা হুলস্থুল কিনছে। বিশ্বের ১৬০টি দেশ জাপানী রিকন্ডিশন গাড়ী আমদানী করে। বিশ্বমন্দায় অন্য সব দেশ আমদানী কমিয়ে দিলেও বাংলাদেশেই গাড়ী আমদানী বৃদ্ধি পেয়েছে দারুনভাবে।

এতে জাপানীরা অবাক-খুশী হলেও আমি হতে পারলাম না। কারন আমি চেয়েছিলাম ২০০০ ডলারের একটি গাড়ী কিনতে। কিন্তু ইজ্জতালী সরকার আমাকে এত কম টাকা দিয়ে গাড়ী কিনতে দিয়ে জাপানের কাছে লজ্জায় পড়তে চায় না। রেকর্ড পরিমান বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উপচে পড়ছে কিনা!!


মন্তব্য

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

৩ চাক্কা না থাকলে ঝুঁকিবিহীন ছিনতাই কীভাবে হবে!

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

বন্যরানা এর ছবি

শুনেছি জাপানে নাকি ১৯৯৯ মডেলের গাড়ী ২ হাজার ডলারে কেনা পাওয়া যায়।

২ হাজার ডলার বা তার আশেপাশের দামে গাড়ি তো হরহামেশাই দেখি used car দোকানগুলোতে। এমনকি আমি যেটি ব্যবহার করি ওটির দামও এরকমই (রোড পারমিট সহ কিন্তু)। বাংলাদেশের খেলা দেখছি বলে ডিটেলস লিখতে পারছি না।

জি.এম.তানিম এর ছবি

সেমি অফটপিকঃ শহরে ট্রাফিক জ্যাম কমাতে চার চাকা তিন চাকার গাড়ি কমানো যেতে পারে। কিন্তু ভালো পাবলিক ট্রান্সপোর্টের অভাবে সেটা করা তেমন সম্ভব হচ্ছে না।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

জাপানে ২০০০ ডলারের কমেও পাওয়া যায় ১৯৯৯ মডেলের গাড়ী ... ভাগ্য ভালো হলে বিনা পয়সাতেও মেলে চোখ টিপি ... ফিটনেস করাতে ৫০০ ডলারের মতো যাবে আর কি

টোকিও টু চিটাগাং পরিবহনে যায় গাড়ীপ্রতি ১ হাজার ডলার ... হয়তো বিশাল পরিমাণে নেয়া হলে এই খরচটাও আরো কমানো সম্ভব ... জাপানী রিকন্ডিশনড গাড়ীর ফিটনেস আর গ্যাসোলিন মাইলেজ দুটোই সিএনজি ট্যাক্সি/ভারতীয় লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ির চেয়ে ভালো হবে ... সরকার অবান্তর ট্যাক্স বসিয়ে একে নিরুৎসাহিত করে শুধুই কিছু ব্যবসায়ীর স্বার্থ দেখার জন্য
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

শামীম এর ছবি

একটু যোগ করি:
মজার ব্যাপার হল জাপানে পুরাতন গাড়ীর ক্ষেত্রে ১০০০+ সিসির গাড়ি সস্তা আর ১০০০ সিসির কম গাড়ীর দাম বেশী। কারণ রোড ট্যাক্স। ছোট গাড়ীর রোড ট্যাক্স ৪০০০ ইয়েন/বছর যেখানে বড় গাড়ীর ৩৯,৫০০ ইয়েন। তাই পাব্লিকের কাছে ছোট গাড়ীর ডিমান্ড বেশী - দামও বেশী।

কি বস ... ঠিক বলি নাই?
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ঠিক বলেছেনশামীম ভাই। প্লাস, ছোট গাড়ীর ইনস্যুরেন্স প্রিমিয়াম বড় গাড়ীর অর্ধেক আর মহিলারা ছোট গাড়ী পছন্দ করেন -- এসব কারণেও ছোট গাড়ীর চাহিদা মাঝারী গাড়ীর চেয়ে বেশী।

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ধন্যবাদ জ্বীনের বাদশা, আপনার তথ্যগুলো কাজে লাগবে হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

আরিফ জেবতিক এর ছবি

যেহেতু মধ্যবিত্তের জন্য মোটরসাইকেল একটা প্রয়োজনীয় ও সাশ্রয়ী পরিবহন হতে পারে তাই আমি এখানে একটা মোটর সাইকেলের দাম নিয়ে রাফ একটা হিসাব দেই।

একটা চাইনিজ মোটর সাইকেল (১০০ সিসি)র দাম-৩৮০ ডলার =২৬,৬০০ টাকা ।

কিন্তু মান্যবর সরকার বাহাদুর এর উপর ট্যাক্স নেন ৮২% =২১,৮১২ টাকা।
তারপর রয়েছে ১৪% হারে এলসি চার্জ যা ব্যাংক কেটে নেয়। সম্ভবত পৃথিবীর সবচাইতে উচ্চ হার এটি , যা প্রতিটি মোটর সাইকেলে যোগ করে =১,০০০ টাকা ।

বিআরটিএতে প্রতিটি মোটর সাইকেলের সনদ নিতে হয় ( ফিক্সড প্রাইস)=২,০০০ টাকা ।

পরিবহন খরচ ৬,০০০ টাকা ( পোর্ট টু গোডাউন টু ডিলার শপ ) ।
ডিলার কমিশন ৭ ,০০০ টাকা ।

তাহলে খরচ এসে দাড়ায় = ৬৪,৪১২ টাকা ।
এছাড়াও বিআরটিএ , পোর্ট ও ব্যাংকে ঘুষ দিয়ে থুয়ে তারপর আমদানীকারক তাঁর নিজের লাভ করে ।
ডিলারদের কাছে বাকী পড়ে থাকে কমপক্ষে ২০ কোটী টাকা। এটারও ইন্টারেস্ট হিসাব করে আমদানীকারক।

এভাবে ২৬ হাজার টাকার মোটর সাইকেল ৭৫ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকায় চলে যায় গানিতিক নিয়মে।

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

উপসসস্ !!!!!!!!!!!

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌চমৎকার একটা উদাহরন দিয়েছেন আরিফ। এই গানিতিক জাল থেকে উদ্ধার পেতে সরকার বাহাদুরকে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে হবে, যদি সরকার নিজেই কোন একটা জালে আটকা না থাকে। এখন কেন যেন মনে হয় সরকার(আগের-পরের সবগুলো) দীর্ঘদিন ধরে জালে আটকা। জনকল্যানমূলক সিদ্ধান্ত নেবার স্বাধীনতা সরকারের নেই।

আপনি উপরে যে হিসেবটা দিলেন সেই শুভংকরের হিসেবেই নড়বড়ে সিএনজি টেক্সী বিক্রি হয় মজবুত জাপানী গাড়ীর চেয়ে বেশী দামে। আমি সদাশয় সরকারকে বলতে চেয়েছিলাম যেই টাকাটা এখন সিএনজির পেছনে যাচ্ছে সেটা গাড়ীর পেছনে গেলে জাতি কতটা লাভবান বা কতটা ক্ষতিবান হবেন যাচাই করে দেখুন। তারপর সিদ্ধান্ত নিন।

লাওস ভিয়েতনাম কম্বোডিয়া আমাদের চেয়ে অনেক বেশী ধনীদেশ না। কিন্তু ওদের রাস্তাঘাট আর আমাদের রাস্তাঘাটের তুলনা করা যায় না, এত বেশী পার্থক্য। আমাদের দেশ গরীব, তাই আমরা রাস্তাঘাটে হাগবো, আমাদের রাস্তাঘাট বিশৃংখল থাকবেই- অরাজকতার প্রতি এই সহনশীলতা আমাদের থামিয়ে রেখেছে আর পেছনে ফেলে দিচ্ছে ক্রমাগতঃ।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

কীর্তিনাশা এর ছবি

সহমত

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

দরকারী একটা প্রসঙ্গ। আপনার হতাশাটা বুঝতে পারি, একই অভিজ্ঞতা আমারও হয়েছে দেশে থাকার সময়টাতে।

একটা জিনিস একটু ব্যাখ্যা করার দরকার আছে। পুরনো/ব্যবহৃত/সেকেণ্ডহ্যাণ্ড গাড়ি আর রিকণ্ডিশণ্ড গাড়ির মধ্যে পার্থক্য আছে। জাপানে থাকার অভিজ্ঞতা নেই, তবে ওখানকার ব্যবস্থা যদি আম্রিকার মত হয়, তাহলে আমার অনুমান হচ্ছে ওই দু'হাজার ডলারের গাড়িটা হল "পুরনো" গাড়ি। রিকণ্ডিশণ্ড গাড়ির দাম স্বাভাবিকভাবেই একটু বেশি হবার কথা।

আম্রিকার প্রেক্ষাপটে একটু বিস্তারিত বলি - সম্ভবত: জাপানের সাথে মিলবে। পুরনো গাড়িগুলো এক বা একাধিক মালিকানায় ছিলো, টুকিটাকি মেরামত হয়েছে, ছোটখাট কিছু সমস্যা হয়তো আছে (অটোম্যাটিক উইণ্ডোটা কাজ করে না বা ছোটখাটো ডেণ্ট আছে এ জাতীয়) কিন্তু গাড়িটা চলে। পুরনো গাড়ি বিক্রি হয় অ্যাজ-ইজ অবস্থায়, আপনি দেখে শুনে যাচাই করে কিনবেন। এই গাড়ির মালিকের পূর্ণ স্বাধীনতা অছে গাড়িটা তারা কি কণ্ডিশনে বিক্রি করতে চান বা কত দাম রাখতে চান। এই গাড়িগুলোর দাম তুলনামূলক ভাবে অনেক কম হবে।

বাংলাদেশে যে রিকণ্ডিশণ্ড গাড়িগুলো যায় সেগুলো কিন্তু ঠিক ওইরকম পুরনো গাড়ি না। এগুলোও এক বা একাধিকবার হাতবদল হয়েছে, কিন্তু রিকণ্ডিশন করার জন্য এদের মেজর ওভারহলিং করা হয়। ইনজিন থেকে শুরু করে প্রতিটি যন্ত্রাংশ ভালোমত পরীক্ষা করা হয়, বদলে দেয়া হয় দরকারমত। গাড়ির বডিতে যেকোন ডেণ্ট বা রংএর সমস্যা থাকলে সেগুলো ঠিক করা হয়। মোটকথা একটি রিকণ্ডিশণ্ড গাড়ি প্রায় নতুন গাড়ির মত হবে - এটিতে কোন সমস্যা বা খুঁত থাকবে না। একটি গাড়িকে কি কি কাজ করার পর কোন ধরণের কণ্ডিশনে থাকে তাকে "রিকণ্ডিশণ্ড" বলা যাবে সেই গাইডলাইনটা ঠিক করে দেয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো - অনেকসময় মেরামতের কাজগুলো করা হয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সরাসরি তত্বাবধানে। স্বাভাবিকভাবেই এই গাড়িগুলোর দাম অনেক বেশি হয়ে যায়। তারপরতো বাংলাদেশের ট্যাক্স বা অন্যান্য জটিলতার কারনে দাম আরো বেড়ে যায়।

আমরা যদি ওই পুরনো বা কিছুটা অকেজো গাড়িগুলো দেশে নিয়ে ধোলাইখালের মেকানিকদের দিয়ে মেরামত করিয়ে বাজারে ছাড়তে পারি, তাহলে হয়তো বাংলাদেশে দু'লাখ টাকায় চলনসই পুরনো গাড়ি পাওয়া যেতে পারে।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ বিস্তারিত মন্তব্যের জন্য। ‍‌আপনার মন্তব্যটা অনেকের ভাবনার খোরাক জোগাবে। আমাকেও যুগিয়েছে।

যতটুকু বুঝি জাপানের ধোলাইখাল থেকে আমদানীকৃত গাড়ীও ভারতের নতুন গাড়ীর চেয়ে টেকসই হবে।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

বিপ্লব রহমান এর ছবি

ওরে বাবা! এতো কাণ্ড!

এরচেয়ে আমার পা-জেরো, মানে ইয়ে... শ্রীচরণই ভালো। দেঁতো হাসি


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

মুশফিক এর ছবি

আমরা হলাম আম জনতা মানে ছোটলোক। আমরা গাড়ি অথবা মটরসাইকেল কিনব আর রাজাকে খাজনা দিবনা তা হবে কেন?সরকারের মন্ত্রিমহোদয় ও এমপি রা হলেন রাজা(প্রধান মন্ত্রি) বাহদুরের লোকজন তারা অই খাজনার ভাগ পাবেন ও ঘাজনা না দিয়ে গাড়ি কিনবেন আর আমাদের রক্ত পানি করা টাক্সের টাকা লুটেপুটে খাবেন এটাইতো রাজতন্ত্রের রীতি! বাংলাদেশে আসলে রাজতন্ত্র চালু আছেনা? জাস্ট এখানে ৫ বছর পর পর রাজা বদল হয়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।