বই প্যাচাল

নীড় সন্ধানী এর ছবি
লিখেছেন নীড় সন্ধানী (তারিখ: সোম, ১৩/০৮/২০১২ - ১:৩৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সাধ সাধ্যের বর্ডার লাইনে যাদের বসবাস তাদের জন্য কোন শখই সহজপাচ্য থাকে না। বইকেনা ব্যাপারটাও আমার জন্য সহজ ছিল না।

সাধারণতঃ হাইস্কুল/ইন্টার বয়স থেকে বইপত্রের রোমাঞ্চকর জগত ব্যাকুল হয়ে ডাকতে থাকে স্থায়ী আসন গাড়ার জন্য। স্থায়ী আসন মানে বই কিনে একের পর এক ভাঁজ করে বুক শেলফে সাজিয়ে রাখা। হাইস্কুল থেকে বই পড়ার নেশা চাপলেও সংগ্রহে রাখার মতো বই সাজিয়ে রাখার শখটা আমাকে তীব্রভাবে ডাক দিতে শুরু করেছিল ভার্সিটির শুরুতে যখন পরিবারের সাধ আর সাধ্যের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধটা সবেমাত্র শুরু হয়েছিল। ফলে বাবা-মার হোটেলে অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-শিক্ষা-চিকিৎসা সহ সব মৌলিক অধিকারের বন্দোবস্ত থাকলেও 'আউট বই' কেনার কোন বাজেট ছিল না। বই কেনার জন্য বিকল্প ব্যবস্থার উপর নির্ভর করতে হতো। যেভাবে দিন মজুরেরা এক দিনের আয় দিয়ে আজকের খাবারটুকু ম্যানেজ করে সেভাবে বই কেনার ব্যবস্থা হতো কয়েকদিনের রিকশা ভাড়া কিংবা বাজার খরচ থেকে বাঁচিয়ে।

আমার বই নেশার মূল আসামীকে ধরতে একটু পেছনে যাই।

আগ্রাবাদ সরকারী কলোনী হাইস্কুলের দক্ষিণ কোনার ছোট্ট লাইব্রেরী ঘরটা যেদিন ছাত্রদের জন্য খুলে দেয়া হলো সেদিন আমার জগতে নতুন একটা পৃথিবী যুক্ত হয়েছিল। তখন আমি ক্লাস সেভেনে। লাইব্রেরী কার্ডে প্রথম যে বইটির নাম উঠলো, সেটি ছিল 'থ্রি মাস্কেটিয়ার্স'। কার্ডে নাম লিখে যত্নের সাথে বইটা যখন হাতে নেই, সেই অনুভুতির রোমাঞ্চ এখনো শিহরণ জাগায় শরীরে। বইগুলো কাঁচের আলমারিতে তালাবদ্ধ থাকতো। কাঁচের আড়াল থেকে একেকটা বই আমার হাতে লোভনীয় কেকের মতো লাগছিল। একেকটা বই হলো একেকটা এডভেঞ্চার। যে কোন স্কুলে 'আউট বই'য়ের একটা লাইব্রেরী অতি অপরিহার্য অঙ্গ। নিজের হাতে বই যোগাড় ওটাই প্রথম হলেও বাবার হাত দিয়ে বই কেনা শুরু হয়েছিল আরো দুই ক্লাস আগে।

সময়কে আরো দুবছর পিছিয়ে নেই।

ক্লাস ফাইভে কি সিক্সে বাবা আমাকে বইয়ের দোকান চিনিয়েছিল প্রথম। চট্টগ্রাম নিউমার্কেটের দোতলায় সিঁড়ির পাশেই ইংরেজী এল শেপের বড়সড় একটা দোকান ছিল। সেই দোকানে কয়েকটা অনুজ্জ্বল টিউবলাইটের আলোয় কিছু বই কেমন একটা ঝিমধরা ঘ্রান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো কাঠের তাকগুলোতে। মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত বিস্তৃত সেই তাকগুলোর মাত্র তিন চারটি তাক বাচ্চাদের নাগালে। তার মধ্যেই আমার এডভেঞ্চারের রাজ্য। ওই দোকানটি আমার ভীষণ প্রিয় ছিল। যদি আমাকে নস্টালজিক স্মৃতির কোন প্রতিযোগিতা করতে বলা হয়, তাহলে আমি বইঘর নামের সেই দোকানটির কথাই বলবো সবার আগে। আমার সর্বকালের সেরা বইয়ের দোকান। কেন যেন ছেলেবেলার প্রিয় জিনিসগুলো কোন প্রতিযোগিতায় কখনোই হারে না।

সেই দোকানটিতে অদ্ভুত একটা নীরবতা কাজ করতো। যেরকম নীরবতা থাকে প্রাচীন উপাসনালায়গুলোতে, ঠিক সেরকম নীরব প্রাচীনগন্ধী এক নীরবতার আশ্রয় ছিল বইঘরে। আমি সেই নীরবতাকে ভালোবাসতাম। কৈশোরে বা তারুণ্যের সূচনায় যতবার নিউমার্কেটে গিয়েছি ততবার অবশ্যই বইঘরে একবার পা দিয়েছি। বই না কিনলেও বইয়ের ঘ্রান নিয়ে ফিরে এসেছি।

'বইঘর' থেকে কেনা প্রথম দুটো বই (আবিষ্কারের নেশায়, নানান দেশের ছেলেমেয়ে) আমার স্কুলের এক সহপাঠি পড়তে নিয়ে আর ফেরত দেয়নি। আমার সেই প্রথম কোন বই হারানো। বন্ধুটি বই ফেরত দিচ্ছে দেবে করতে করতে একসময় স্কুলই ছেড়ে চলে যায়। আমি শোকটা ভুলতে পারিনি বহুকাল। তারো প্রায় দুই যুগ পর একদিন সেই বন্ধুটির সাথে রাস্তায় দেখা। দুজনে হাত মিলিয়ে চেনা অচেনার বিস্ময় প্রকাশ করতে করতে কথা বলছি, কিন্তু আমার প্রথমেই মনে পড়ে গেল সেই বই দুটোর কথা। খুব ইচ্ছে হলো জিজ্ঞেস করি, বই দুটো মেরে দিয়েছিল কেন, কিংবা এখনো আছে কিনা? কিন্তু জিজ্ঞেস করা হলো না। এখন আমার হাজার বইয়ের মেলা, তবু শৈশবের সেই বই দুটোর শোক ভুলতে পারি না।

বই কেনা আমার জন্য কেন সহজ ছিল না সেটা বলছি। যখন সত্যিকার অর্থে বই কেনার নেশায় পেয়ে বসেছে তখন আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু, সেই সাথে অভাবের দিনেরও। সামর্থ্য ছিল না নতুন বই কেনার। বই কেনা প্রায় বিলাসিতা তখন। তাই খুঁজে খুঁজে পুরোনো এডিশানের বই কিনতাম সস্তায়। বইয়ের এই ব্যাপারটা খুব ভালো লাগতো। বর্তমানমূল্য বলে কিছু ছিল না। যে দামে প্রকাশিত, সেই দামেই বইটা কেনা যেতো। মনে আছে ১৯৬৮ সালে প্রকাশিত ৫ টাকা দামের মোটা একটা বই একই দামে কিনেছিলাম 'কারেণ্ট বুক সেন্টার' থেকে ১৯৮৮ সালে।

'বইঘর' ছাড়াও তখন যাওয়া শুরু করেছি নিউমার্কেটের/আশেপাশের আরো কয়েকটা দোকানে। 'কারেণ্ট বুক সেন্টার' তাদের অন্যতম। 'লাইসিয়াম' নামের একটা দোকান ছিল একতলায়। বিজ্ঞানের বইসহ বিদেশ থেকে প্রকাশিত বইপত্র পত্রিকা পাওয়া যেত। রিডার্স ডাইজেস্টের দিকে জুলজুল করে তাকিয়ে থাকতাম কিন্তু উচ্চমূল্যের জন্য কিনতে পারতাম না। ভাবতাম যদি কোনদিন বড়লোক হই তবে অবশ্যই রিডার্স ডাইজেস্ট পত্রিকাটির প্রত্যেকটা সংখ্যা কিনে ফেলবো।

'লাইসিয়াম' বাদে আরো দুটি দোকান 'মনীষা', আর 'উজালা'য় মাঝে মধ্যে উঁকি দিতাম। 'কারেন্ট বুক সেন্টার' ছিল নিউমার্কেটের রাস্তার উল্টোদিকে জলসা সিনেমার নীচে । সবচেয়ে বেশী বই কালেকশান ওই দোকানেই।

মননশীল বই পছন্দে নিউমার্কেট এলাকার পরে আন্দরকিল্লা। যদিও আন্দরকিল্লা মূলত পাঠ্যবইয়ের আড়ত, তবু ওখানেও কয়েকটা ভালো দোকান খুঁজে পেয়েছিলাম। 'কথাকলি' ছিল অন্যতম। ছোট্ট দোকানটিতে মজার সব বই। কালজয়ী উপন্যাস থেকে গুরুগম্ভীর তত্ত্বের বই সবকিছু ছিল। তারপর খোঁজ পাই 'বুক সিন্ডিকেট' নামে প্রাচীন একটা দোকান। জামে মসজিদের উল্টোদিকে দোতলায়। সেখানেও বিরল কিছু বই পাওয়া যায়। জামে মসজিদ মার্কেটে 'সুপ্রীম' নামের একটা দোকানেও ভালো কালেকশান ছিল। বই কেনার চেয়ে বইয়ের ঘ্রান নিতেই যেন দোকানগুলোতে ঢুঁ মারা হতো বেশী।

বই কেনা নিয়ে একটা ভুলতে না পারা একটা ঘটনা।

ভার্সিটিতে সেকেণ্ড ইয়ারে পড়ছিলাম বোধহয়। হাত একদম খালি। বই কেনা দূরে থাক, বইয়ের দোকানে যাবার বাসভাড়াও নেই। আমার বাসা আগ্রাবাদে। বইয়ের দোকানগুলো নিউমার্কেট আর আন্দরকিল্লায়। বাবার কাছে হাত পাতার মতো অবস্থা নেই। সেদিন দুপুরে খাবার পর বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবছিলাম কি করা যায়। তাকের ওপর সাজিয়ে রাখা ইন্টারের পরিত্যক্ত বইগুলোর দিকে চোখ গেল। ফিজিক্সের একটা বই আ্ছে প্রায় নতুন। হোয়াইট প্রিন্টের বইটা বেশ ভারী। দেড়শো টাকায় কেনা।

একাডেমিক বইপত্রের প্রতি আমার আজন্ম বিরাগ। পরীক্ষা শেষ হবার পরপরই কটকটিওয়ালার ঝুড়িতে যায়। এটা যায়নি চেহারা সুন্দর বলে। হঠাৎ একটা বুদ্ধি খেললো মাথায়। বইটা নামিয়ে একটা পলিথিনে ভরে চুপি চুপি ঘর থেকে বেরিয়ে পড়লাম। সোজা আন্দরকিল্লা। জামে মসজিদের উল্টোদিকের ফুটপাতে পুরোনো বইয়ের দোকান। সেখানে গিয়ে দরদাম করে দেড়শো টাকার ফিজিক্স বইটা বিশ টাকায় গছিয়ে দিলাম। কী আনন্দ, বিশ টাকার মূল্য অনেক তখন। হাঁটতে হাঁটতে নিউমার্কেট এসেছি।

উজালায় ঢুকে খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ একটা বইয়ের দিকে চোখ গেল। "বাংলাদেশের ছোটগল্প"। গত একশো বছরের কালেকশান। এমন লোভ লাগলো এখুনি কিনে ফেলতে চাই। কিন্তু দাম দেখে থমকে গেলাম। চল্লিশ টাকা। নিরাশ হয়ে বইটি রেখে দোকানের বাইরে চলে আসি। কিন্তু জায়গাটা ছেড়ে নড়তে পারছি না। যদি কেউ এসে বইটা নিয়ে যায়। অনেকদিন আগের পুরোনো সংস্করন, বাজারে পাওয়া যাবে না এখন।

কি করি এখন? টাকা তো নাই। ছোট্ট একটা সম্ভাবনা উঁকি দিল। নিউমার্কেটে শাড়ির দোকানে চাকরী করে এক আত্মীয়। তার কাছে যাওয়া যায়? এক দোকান কর্মচারীর পকেটে নগদ বিশ টাকা কি থাকবে? অবাক হবার কিছু নেই। আশির দশকের সেই সময়ে পকেটে পাঁচ টাকা থাকলেও নিজেকে স্বচ্ছল মনে হতো। সাহস করে তার কাছে গিয়ে লজ্জিত ভঙ্গিতে বললাম সমস্যার কথা। সেই মহানুভব আত্মীয় কোত্থেকে যেন ২০ টাকার বন্দোবস্ত করে দিল এবং আমি বইটা কিনে বাসায় ফিরতে পারলাম। কী যে অসাধারণ সেই অনুভূতি! বইটার দিকে তাকিয়ে আজো সেই রোমাঞ্চ অনুভব করি।

আরো কিছুদিন পর আবিষ্কার করলাম একটা পুরোনো বইয়ের দোকান - অমর বই ঘর
নূপুর সিনেমার পাশেই দোতলায় ঘুপচিঘরের মধ্যে দোকানটা। আহ তখন সেই দোকানে ঢুকলে মনে হতো আমি উনিশ শতকের কোন পুরোনো নগরীতে চলে গেছি। যে নগরীতে আকাশ থেকে পাতাল পর্যন্ত বইতে ছাওয়া। একবার ঢুকলে দু ঘন্টার কমে বেরুতে পারতাম না। কঠিন এক নেশা। লোভ হতো রিডার্স ডাইজেস্টের প্রতি। এমনকি পুরোনো সংখ্যা হলেও। এই পত্রিকাটির পুরোনো সংখ্যাগুলোও একেকটা ক্লাসিক। অমর বইঘরে পুরোনোগুলো বিক্রি করতো অর্ধেক দামে। কিন্তু রিডার্স ডাইজেস্ট কেনার সামর্থ্যে কুলোতো না তাও।

ক'বছর পর পেয়ে যাই আরেকটা বই খনি। নূপুর সিনেমার অন্যপাশে একটা মিষ্টির দোকান ছিল- পূরবী সুইটস, সেই দোকানটার আড়ালে দেখি একটা বইয়ের দোকান হা করে বসে আছে, লোকজন কেউ নেই।

আমি দোকানটায় ঢুকে রীতিমত হতভম্ব। দোকানটি খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বই বিক্রি করে। কিন্তু হতভম্ব হয়েছি ধর্মীয় বইয়ের পাশাপাশি বিরল সব বিখ্যাত ইংরেজী বই থরে থরে সাজানো দেখে। সাথে আছে রিডার্স ডাইজেস্টের পুরোনো বেশ কিছু কপি। ইংরেজী উপন্যাসের দিকে দামের কারণে কোনদিন হাত বাড়াইনি। এগুলো দেখে সভয়ে তাকাতে দোকানী কাছে এসে অভয় দিয়ে বললো, এই বইগুলো বিশেষ হ্রাসকৃত মূল্যে বিক্রি করছেন। ইংরেজী বই আর ম্যাগাজিনগুলো এক মিশনারীর কাছ থেকে সংগৃহিত, যিনি দীর্ঘকাল চট্টগ্রাম বাস করছেন(দুঃখের বিষয় ভদ্রলোকের নাম ভুলে গেছি)। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যার বিশেষ ভূমিকা ছিল। পাকিস্তানী সেনাদের হুমকির মুখেও বাংলাদেশ ছেড়ে যাননি তিনি। তাঁর নিজের লেখা বইও আছে এ ব্যাপারে। ঘরে স্থান সংকুলান না হওয়ার কারণে সম্ভবত কিছু বই বিক্রি করে দিয়েছেন।

দোকানী রিডার্স ডাইজেস্টগুলো পাঁচ টাকা মূল্যে বিক্রি করবেন বলাতে আকাশের চাঁদ হাতে পেলাম। পরদিন বাবার কাছ থেকে টাকা যোগাড় করে বিরাট সংখ্যক ইংরেজী উপন্যাস আর রিডার্স ডাইজেস্টের বস্তা সংগ্রহ করে ফেলেছিলাম ওখান থেকে। দোকানীর সাথে কথা হয়েছিল বইয়ের মালিকের সাথে একদিন দেখা করবো। একজন বিদেশী নাগরিক হিসেবে তাঁর মুক্তিযুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলবো। কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠলো না। কারণ একদিন দোকানটা বন্ধ হয়ে গেল। দোকান বন্ধ হবার সাথে সেই সুত্রটাও হারিয়ে গেল। সেই দোকানীর কাছেই ওই ভদ্রলোকের যোগাযোগের সুত্রটা ছিল।

চট্টগ্রাম শহরের পরিধি বেড়েছে গত দুই দশকে। সেই হিসেবে বইয়ের দোকান তেমন বাড়েনি চট্টগ্রামে। গত ক'বছরে মাত্র কয়েকটা নতুন দোকান যুক্ত হয়েছে। তার মধ্যে বিশদ বাঙলা, বাতিঘর, নন্দন সবচেয়ে জনপ্রিয়। 'কারেন্ট বুক সেন্টারে' যাওয়া কমে গেছে অনেক। নিউমার্কেট এলাকার ঘিঞ্জি আর যানজট পেরিয়ে ওখানে যাওয়া কঠিন হয়ে যায়। তবে 'কারেণ্ট বুক সেন্টার' আমার বই সংগ্রহের অন্যতম প্রিয় জায়গা হয়ে থাকবে সবসময়। কারেন্ট বুক সেন্টারের মালিক শাহীন ভাইয়ের আন্তরিকতার কথাও ভোলার মতো নয়। বই নিয়ে এরকম সুরসিক আড্ডাবাজ মানুষ পাওয়া ভার। বাবার তৈরী করা এই প্রতিষ্ঠানের হাল ধরে রেখেছেন এখনো।

বইকে হারাতে পারে তেমন প্রযুক্তি কি আবিষ্কার হয়েছে? কেউ কেউ বলে হয়েছে টেলিভিশন, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের সামনে লোকের ভীড় বেড়েছে ঠিকই। কিন্তু এত এত প্রযুক্তির ভীড়ে, নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিতে আজো ভালোবাসি। আমার ধারণা এই ভালোবাসার কোন বিকল্প সৃষ্টি হয়নি।

একটা সময় গেছে যখন বই কিনে গোগ্রাসে গেলার অনেকদিন পর আরেকটা বই কিনতে পারতাম। এখন বই কেনা হয় অনেক, কিন্তু পড়ে শেষ করা যায় না। বেড়ে যাচ্ছে আধপড়া বইয়ের সংখ্যা। বয়স বেড়ে যাচ্ছে, সময় কমে যাচ্ছে, শেষবেলায় অনেকগুলো না পড়া বই রেখে যেতে হবে হয়তো। John Burrough-র আশংকা আমার মধ্যেও। “I still find each day too short for all the thoughts I want to think, all the walks I want to take, all the books I want to read, and all the friends I want to see.”


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব ভাল লাগল। চট্টগ্রামের বই পড়ুয়াদের জন্য অনেক তথ্য বহুল লেখা।

একটা সময় টাকা ছিল না কিন্তু বই কিনতে ব্যকুল হতাম, এখন টাকা হয়েছে বইও কেনা হয় কিন্তু পড়া হয়না। আগে একদিনে এটা বই পড়ে শেষ করে ফেলতাম।।আর এখন একটা বই কিনলে কবে পড়ে শেষ করতে পারবো নিজেও জানি না।

ধন্যবাদ।

কামরুজ্জামান স্বাধীন

নীড় সন্ধানী এর ছবি

কথাটা বাস্তব এবং সত্য!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অতিথি লেখক এর ছবি

'কারেণ্ট বুক সেন্টার', 'মনীষা', 'উজালা' 'অমর বই ঘর' - চট্টগ্রামে আমারও জন্ম, বেড়ে উঠা। কাজেই লেখায় পাওয়া নাম গুলো নস্টালজিক করে দিল। খুব পড়ুয়া কখনো ছিলাম না, কিন্তু বইয়ের দোকানের কোন জাদু আছে বোধ হয়। অমর বই ঘর আমার কাছেও এই পৃথিবীর কোন দোকান বলে মনে হতনা- গুপ্তধন উদ্ধারের মত লাগত যখন বই খুঁজতাম। নিউ মার্কেটের দোকানগুলোতে ঘুরতাম। ঘুরতাম আন্দরকিল্লা, চকবাজারের বইয়ের দোকানগুলোতে। পাবলিক লাইব্রেরী, সিটি কর্পোরেশন লাইব্রেরী।
মন্তব্য করতে গিয়ে অদ্ভুত একটা চিন্তা আসল। বই আমি তেমন পড়তাম না, তাহলে বইয়ের জগতে কেন ঘুরতাম? একটা উত্তর পেলাম। বইয়ের প্রেমে পড়লে ও প্রেম করার সাহস হয়তো ছিলনা। তাই টাঙ্কি মেরে গেছি..... নিজেকে তো চিনি কিছুটা...

‌‌‍----এ ইউসুফ

নীড় সন্ধানী এর ছবি

অমর বই ঘর আমার কাছেও এই পৃথিবীর কোন দোকান বলে মনে হতনা- গুপ্তধন উদ্ধারের মত লাগত যখন বই খুঁজতাম।

ভালো বলছেন তো! হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

babunee এর ছবি

খুব ভাল লেগেছে আপনার এই লেখাটা।আমি সচলের নিয়মিত পাঠক। মন্তব্য করলেও কখনও তা দেখতে পাইনা। এই লেখাটা পড়ে মনে পড়ে গেল স্কুলে থাকা কালে পাশের একটা বই এর দোকান থেকে দল বেধে গিয়ে বই চুরি করে এনে পড়ে আবার তা ফেরত দিয়ে আসার কথা। আহা সেই দিন গুলি । এখনো হাতে নতুন বই পেলে মনটা ভাল হয়ে যায় আর চেষ্টা থাকে কখন সেটা পড়ে শেষ করবো । অফিস এ কাজের ফাঁকে লাঞ্চ এর সময় গোগ্রাসে শেষ করি।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

মন্তব্য প্রকাশিত হলে দেখতে পাওয়ার কথা। এটা নিশ্চয়ই দেখছেন।

বই চুরি করে আবার ফেরত! এত ভালো মানুষ দুনিয়াতে আছে তাইলে? অ্যাঁ

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

শুধুমাত্র চট্টগ্রাম বইঘর আর তার প্রকাশনা নিয়ে বিস্তারিত স্বতন্ত্র পোস্ট চাই।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

লিখতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু বইঘরের আগেই তার প্রকাশনার যবনিকাপাত ঘটেছিল। আমার বিশদ কিছু জানা হয়নি আর।তাই লিখতে পারছি না।
বইঘর প্রকাশিত অনেক বই সংগ্রহ করেছিলাম। ওদের আরেকটা প্রকাশনা সংস্থা ছিল পাশাপাশি, নাম মনে আসছে না এই মুহূর্তে। বাংলাদেশে ওই সময়ে ওরকম মান সম্পন্ন প্রকাশনা দ্বিতীয়টি ছিল না বোধহয়। অসাধারণ কিছু অনুবাদ বই ছিল।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নৈষাদ এর ছবি

চলুক
শৈশবে যখন মাঝে মধ্যে চিটাগাং যেতাম, কারেন্ট বুক সেন্টার ছিল আকর্ষণের কেন্দ্র। তখন ‘আনন্দমেলা’ পাওয়া যেত সেখানে (পাহাড়ের চুড়ায় আতঙ্ক সিরিজ চলছে তখন)। নিউমার্কেটের লাইসিয়াম দোকানটা দেখা হয়নি, মধ্য নব্বইয়ে যখন প্রায় দুই বছর চিটাগাং ছিলাম, তখন যাওয়া হত মিমি সুপার মার্কেটের লাইসিয়ামে।

বুক সিন্ডিকেটে যাওয়া হত ক্যাচ-ক্যাচ শব্দ করা কাঠের সিড়ি বেয়ে দোতালায়... বিশাল এক ভান্ডার। নব্বই দশকের পর আর যাওয়া হয়নি।

আরেকটা বইয়ের দোকান, আপাত ছোট হলেও খুব পছন্দের ছিল – আগ্রাবাদে ‘জ্যাকস...’। আমার অগ্রজ এক মারাত্মক পড়ুয়া সেই নব্বই দশকের গোড়ার দিকে ‘স্যাটানিক ভার্সেস’ যোগাড় করেছিল। জানিনা এখনও দোকানটা আছে কিনা?

নীড় সন্ধানী এর ছবি

বুক সিন্ডিকেটে যাওয়া হত ক্যাচ-ক্যাচ শব্দ করা কাঠের সিড়ি বেয়ে দোতালায়...

এই শব্দটা কানে শুনতে পেলাম যেন। খুব মিস করি মন খারাপ

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তারেক অণু এর ছবি

অসম্ভব ভাল লাগল। কি মমতাময় সব স্মৃতি।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

হ্যাঁ এই স্মৃতিগুলো খুব মায়াময় হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তিথীডোর এর ছবি

আপনার লিভিং রুমে যে বিশা-ল বুকশেলফ দেখে এসেছি ভাইয়া... বাপস!
হিংসা!! ম্যাঁও

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ওটার সাইজ যখন আমার সমান ছিল তখন আমি অনেক বই পড়তাম, ওটা আমারচে বড় হয়ে যাবার পর আমি ছোট হয়ে গেছি দেঁতো হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

স্যাম এর ছবি

প্রিয় শহর চট্টগ্রাম - অনেক কিছু জানলাম!
(আজ পড়া শুরু করেছিলাম আপনার পোস্ট দিয়ে - শেষও এখানে হাসি )

নীড় সন্ধানী এর ছবি

পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ স্যাম! আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সত্যপীর এর ছবি

রিডার্স ডাইজেস্টের পুরান সংখ্যাগুলি আসলেও খনি একেকটা।

দারুন ভালো লাগল পোস্ট।

..................................................................
#Banshibir.

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আমি ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত যোগাড় করতে পেরেছিলাম, ওই আমলের টেকি বিজ্ঞাপনগুলো আজকের যুগে খুব ইন্টারেষ্টিং হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

শীতের ছুটিতে চিটাগাং গেলেই নানুর সাথে লাইসিয়াম, কারেন্ট বুক সেন্টারে ঢুঁ মারা হতো। নানু নেই, বইয়ের প্রতি টানটা এখনো আছে। অনেক পুরোনো কথা মনে পড়ে গেলো এই লেখা পড়ে। মন খারাপ

বিশদ বাঙলায় গিয়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম গত ঈদে। খানিক লিখেওছিলাম তা নিয়ে নিজের ব্লগে

নীড় সন্ধানী এর ছবি

বিশদ বাংলায় যাই গত পাঁচ ছবছর ধরে। আজকাল বই সংগ্রহের জন্য ওটা প্রিয় জায়গা। বিশদ বাঙলা নিয়ে আমিও লিখবো লিখবো করে লেখা হয়ে ওঠেনি। দারুণ লিখেছেন আপনি হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সুমাদ্রী এর ছবি

নীড়'দা, ' প্রমা বুক সেন্টার', দোস্ত বিল্ডিং এর নীচ তলায়, কি বন্ধ হয়ে গেছে এখন? আন্দরকিল্লা জামে মসজিদের উল্টোদিকে ছিল ' তাজ লাইব্রেরি '। ওটার কি হাল এখন? বাতিঘরের দীপংকর দা কিংবা বিশদ বাংলা'র আলম ভাইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এরকম কোন বইয়ের দোকানে গেলে মনে হয় যেন স্বর্গে চলে এসেছি। আপনি একটানে চট্টগ্রামকে চোখের সামনে নিয়ে এলেন। কতদিন চেরাগীর আড্ডায় যাইনা। ' প্রথমা ' যদিও প্রথম আলোর প্রকাশনা ওখানে ভালো কিছু বই আছে। ভালো থাকবেন।

অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

দোস্ত বিল্ডিং এর নীচ তলায় একটা ভালো বইয়ের দোকানের কথা শুনেছিলাম। ওটাই প্রমা বোধ করি। যাওয়া হয়নি ওদিকটায় তেমন। তাই আছে কিনা বলতে পারছি না। তাজ লাইব্রেরীর কথা মনে আছে। আন্দরকিল্লায় তো অনেক ভাংচুর হয়েছে রাস্তা সম্প্রসারণ কাজে। তাজের সাইনবোর্ড চোখে পড়েনি। প্রথমা'য় গিয়েছিলাম গত বছর। দোকানটা সুন্দর করেছে, কিন্তু গিয়ে দেখি নতুন চকচকে বই সব। আমাকে টানে পুরোনো মলাটের বই, তাই আর যাওয়া হয়নি। হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

Muhammad_asaduzzaman এর ছবি

কঠিন লিখেছেন , অসম্ভব ভালো লেগেছে আপনার স্মৃতিচারণ ।
আমার ছোটবেলার এক বই কেনার ঘটনা বলি, মনে পড়লে এখনো হাসি -
তখন ক্লাস ৫ শেষ করেছি মাত্র , থাকি ফরিদপুর এ ।তিন গোয়েন্দার নতুন বই এসেছে দোকানে, বারমুডা ট্রায়াঙ্গল ।দুই সপ্তাহ ধরে টিফিনের পয়সা বাচিয়েও কিছু হলনা , শুরু করলাম মা দোকানে পাঠালে ১ কেজির ৮৫০ গ্রাম কেনা ;প্রধানত আলু বা অন্য সবজি।দোকানদার সরু চোখে তাকাত কিন্তু আমি নিরুপায় ।৩ পোয়া কিনলে মা ঠিক ধরে ফেলবে ।এত্ত সব করেও ৩ টাকা বাকি থেকে গেল।
এর ভিতর মাসের চুল কাটানোর সময় চলে আসল, তখন ৮ টাকা নিত।সেলুনে ঢোকার আগমুহুর্তে দেখি বাজারের কোনায় ড্রেনের উপর তক্তা পেতে তার উপর চেয়ার দিয়ে একলোক ৫ টাকা করে চুল কাটছে !!!!
মনে হলো চাদ হাতে পেয়ে গেছি.একটি কদমছাটের বিনিময়ে অবশেষে হাতে পেলাম বইটি ।

আসাদ

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আপনার অভিজ্ঞতা তো বেশ মজার! কদমছাটের বিনিময়ে বই। এটা নিয়ে একটা চমৎকার লেখা তৈরী করে ফেলতে পারেন কিন্তু! দেঁতো হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

শিশিরকণা এর ছবি

এখন রিডার্স ডাইজেস্ট কেনার সামর্থ্য হয়েছে, কিন্তু সেই সময়ও নাই পড়ার, আর মানও পড়ে গেছে মনে হয়। নাকি আমেরিকান এডিশনটাই জঘন্য। সেবার রহস্য পত্রিকা কি অনেকটা ডাইজেস্টের আদলের পত্রিকা? পুরনো আমলের রহস্য পত্রিকা গুলো এক একটা দারুন কালেকশান। এত সমৃদ্ধ পত্রিকা বোধহয় আর দেখিনি।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এখন রিডার্স ডাইজেস্ট কেনার সামর্থ্য হয়েছে, কিন্তু সেই সময়ও নাই পড়ার, আর মানও পড়ে গেছে মনে হয়।

কথাটা আরও কেউ কেউ ভাবছে দেখে ভালো লাগলো। হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সত্যপীর এর ছবি

নাকি আমেরিকান এডিশনটাই জঘন্য

ক্যানাডিয়ানটা পড়লে তো তইলে বমি কইরা দিবেন। আমি আরো বিরক্ত হয়া ক্যানাডিয়ান পড়াই বন করে দিসি, মাঝেমধ্যে আমেরিকানটা পড়ি। আজাইরা রেসিপি আর আব্জাব স্টোরি দিয়া পাতা ভরায় রাখে আজকাল।

..................................................................
#Banshibir.

শিশিরকণা এর ছবি

আমার তো খুললেই মনে হয় কুত্তা বিলাই উদ্ধারের কাহিনী দিয়ে ভরা। উহু আহা! তবে ## Things your "xxxx" won't tell you " সেকশনটা ভালা পাই।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

মন মাঝি এর ছবি

চলুক

আচ্ছা, 'অক্সিজেন'-এ কি কোন বইয়ের দোকান আছে এখন? কিম্বা অক্সিজেন থেকে বায়েজিদ বোস্তামীর মধ্যকার রাস্তায়?

****************************************

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ওই রাস্তাটাকে আমি বইবিহীন রাস্তা বলেই তো জানতাম। ইয়ে, মানে...
ওদিকে যাতায়াত নেই তেমন, তাই বলতে পারছি না।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নিলয় নন্দী এর ছবি

উইকি কী বলছে দেখুন: Bibliomania can be a symptom of obsessive–compulsive disorder which involves the collecting or even hoarding of books to the point where social relations or health are damaged.
এই ব্যারামেই আজন্ম ভুগলাম। যাঁরা ভোগেন তাঁরা জানেন এর মাহাত্ম্য। ইয়ে, মানে...
৯৬ আর ৯৮ -এ চট্টগ্রাম গিয়ে ওই পুরনো বইয়ের দোকানগুলো খুঁজে খুঁজে বের করেছিলাম। মনে হয়েছিল কোন স্বপ্নও বোধহয় এত লোভনীয় হতে পারে না।
লেখা (গুড়) হয়েছে।

ছেলেবেলার প্রিয় জিনিসগুলো কোন প্রতিযোগিতায় কখনোই হারে না।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আমি যে একটা ব্যারামে ভুগছি এটা জানতে এত যুগ চলে গেল? ওঁয়া ওঁয়া

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তানভীর এর ছবি

আমার প্রথম লাইব্রেরি ছিলো চট্টগ্রামের 'ফুলকি'। এদের একটা ছোটখাটো লাইব্রেরি ছিলো, কিন্তু ভালো ভালো বই ছিলো। আর বই কেনা হতো নিউমার্কেটে গেলে 'বইঘর' থেকে বা কখনো 'কারেন্ট বুক সেন্টার'। তখন পাঠ্যবই কিনতাম আন্দরকিল্লার একটা দোকান থেকে (নামটা ঠিক মনে পড়ছে না- পাঠক বন্ধু লাইব্রেরি চিন্তিত )। খুবই আন্তরিক এদের ব্যবহার ছিলো। চট্টগ্রাম পাবলিক লাইব্রেরিতেও কিন্তু বইয়ের ভালো কালেকশান আছে/ছিলো। কলেজিয়েট স্কুলে থাকার সময় এখানে যেতাম মাঝে মাঝে। মোটামুটি 'নিষিদ্ধ বই' সব পাবলিক লাইব্রেরি থেকেই আমার পড়া হয়েছে। তখন লাইব্রেরি বিল্ডিংটাও নতুন করে বানানো হয়েছিলো। 'অমর বইঘরে' যেতে খুব একটা ভালো লাগত না কেনো জানি। তখন 'লাইসিয়াম'-এর একটা শাখা ছিলো বোধহয় মিমি সুপার মার্কেটের একতলায়- আমাদের বাসা থেকে কাছে। কিন্তু এরা বইয়ের দাম বেশি রাখত। আমি এ সময় মুফতে বই পড়তে পেতাম আমাদের পাড়ার বিচিত্রা লাইব্রেরি থেকে। লাইব্রেরির সিঁড়িতে বসে আমরা আড্ডা দিতাম আর মালিকের সাথে খাতির করে 'সেবা'র নতুন বই এলে চটপট পড়ে ফেলতাম। এছাড়া মেহেদিবাগে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের একটা লাইব্রেরি ছিলো। এখান থেকেও চাঁদা দিয়ে বই পড়া যেত। আরো কতোভাবেই যে বইয়ের আনাগোনা ছিলো। চট্টগ্রাম আসলেই বইবান্ধব একটা শহর।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

চট্টগ্রাম পাবলিক লাইব্রেরীর কথা মনে করিয়ে দিলেন? চট্টগ্রামের পাবলিক লাইব্রেরীগুলো নিয়ে একটা লেখা তৈরী করবো ভাবছি। যখন মুসলিম হলের একপাশে পাবলিক লাইব্রেরীটা ছিল, তখনকার কথা মনে আছে? ওই জরাজীর্ণ লাইব্রেরীটার স্মৃতি আমার কাছে এখনো প্রিয়।

ফুলকি এখন অনেক চকচকে। ছয় তলা দালান হয়ে গেছে। তবে লাইব্রেরীটা আছে কিনা জানিনা। আমার মেয়ের পড়ার, গানের, আঁকার ইসকুল ওটা এখন। হাসি

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

অতিথি লেখক এর ছবি

ভাল লাগল লেখাটা। ঝাঁ করে একটানে আবার ফিরিয়ে নিয়ে গেলো শৈশবে - রাজশাহীর বইপত্র, গ্রন্থমেলা, প‌্যাপিরাস, বীণাপানি বুক ডিপো বা সূচীপত্রকে ঘিরে আমার স্মৃতি যেন পরতে পরতে মিলে গেলো চট্টগ্রামের বইঘর, কারেন্ট বুক সেন্টার, লাইসিয়ামের সাথে।
-অয়ন

ওডিন এর ছবি

কেনো এতো ভালো লাগলো এই লেখাটা? আমাদের অনেকের গল্প একই রকম বলে? হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।