যানজট নিরসনে তাহলে প্রতিদিন হরতালই কি সেরা সমাধান?

শামীম এর ছবি
লিখেছেন শামীম (তারিখ: শনি, ২৫/১২/২০১০ - ৮:১৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ইদানিংকালে যানজট নিরসনে অর্থমন্ত্রী মহোদয়ের বেশ কিছু বক্তব্য আমাকে বিষ্মিত করেছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে, উনি অর্থমন্ত্রী - যোগাযোগ মন্ত্রী নন!

এর মধ্যে একটি হল প্রাইভেট কারে ৫ জন ছাড়া চলা যাবে না। আহা ... ... এতে সঙ্গিযাত্রী হিসাবে কিছু বেকারের নিশ্চিত কর্মসংস্থান হবে। বাসা থেকে ৫ জন বের হল। বাচ্চা স্কুলে নামার পর ৫ জনের কোটা পূরণ করার জন্য সেখান থেকে একজন সঙ্গিযাত্রী উঠবে গাড়িতে (ঘন্টা হিসাবে মজুরি দিতে হবে) .... এভাবে শেষজন নামার আগ পর্যন্ত লোক অফিসে নামবে সঙ্গিযাত্রী উঠবে। ফেরার পথেও একই রকম কাহিনী। সঙ্গিযাত্রী বা প্রক্সি/ডামি যাত্রী হিসেবে কর্মসংস্থানের ফলে কিছু লোকের হয়তো বেকারত্ব দুর হবে (ছিনতাই বৃদ্ধির আশংকাও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না), তবে উৎপাদনশীলতা বাড়বে না, বরং অতিরিক্ত ভারবহন করার কারণে জ্বালানী খরচ বাড়বে।

নির্দিষ্ট আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকা না থাকলে এই রকম ব্যবস্থাটা (যার টেকনিক্যাল নাম কার-পুলিং car pooling) মানুষের ভোগান্তি আরেকটু বাড়ানো ছাড়া আর কোন কাজে আসবে বলে মনে হয় না। যানজট বেশি হয় অফিস টাইমে, অর্থাৎ, অফিস শুরু এবং ছুটির সময়ে। তখন হঠাৎ করে (খুব কম সময়ের ব্যবধানে) বিপুল সংখ্যক লোক রাস্তায় নেমে আসে। নির্দিষ্ট আবাসিক এবং বাণিজ্যিক এলাকা থাকলে দেখা যায় যে একই আবাসিক/বাণিজ্যিক এলাকা থেকে ৪/৫জন লোক ৪/৫টা গাড়ি ব্যবহার করে একই বাণিজ্যিক/আবাসিক এলাকায় যাচ্ছে। যাত্রা শুরু এবং গন্তব্যস্থল একই হওয়াতে এরা ৪/৫টি গাড়ির বদলে একটি গাড়ি দিয়েই যাতায়াত করতে পারে, যার ফলে রাস্তা থেকে কিছু গাড়ি কমে গিয়ে যানজট কমাতে সাহায্য করে।

ঢাকায় আমার জানামতে নির্দিষ্ট সময়ে এরকম নির্দিষ্ট যাতায়াতের জন্য কার শেয়ারিং বা কার পুলিং খুব ভালভাবেই বিদ্যমান। অফিসের কর্মকর্তা যাত্রাপথে অন্য সহকর্মীদেরকে তার গাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে, এটা খুবই সাধারণ একটা ব্যাপার। কিন্তু এক বাসা থেকে বের হওয়া ৪ জনের গন্তব্য ভিন্ন হলে তখন কী হয়? বাড়ির একজন সিটি কলেজের সিনিয়র শিক্ষিকা, ওনাকে কলেজে নামিয়ে তারপর ছেলে আর ছেলের বউয়ের অফিস মিন্টো রোডের পাশের রাস্তায় (ওল্ড এলিফ্যান্ট রোড); এরপর কনসালট্যান্ট কর্তার ৩/৪টি কর্মস্থলের যে কোনো একটিতে (ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট / মগবাজারের কনস্ট্রাকশন ফার্ম/ মনিপুরিপাড়ার কনস্ট্রাকশন ফার্ম / মহাখালি / অন্য কোনো অফিস)। এরকম একটা কর্মঠ ও কর্মব্যস্ত পরিবারের অতি প্রয়োজনীয় গাড়ি চালাতে তবে এরপর থেকে প্রথমে উল্লেখ করা সঙ্গিযাত্রী বা ডামি যাত্রী ছাড়া পথ খোলা থাকবে না। আর তা না করতে চাইলে হয় ক্যাব বা রিক্সা ... ... যা যানজট কমাবে কীভাবে সেটা বুঝি না।

বিদেশের কিছু কিছু শহরে কার পুলিং সফলতার সাথে প্রযুক্ত হয়েছে .... .... প্রশ্ন হল কীভাবে?
এসব শহরে পরিকল্পিত ভূমির ব্যবহার প্রযুক্ত হয়েছে, ফলে নির্দিষ্ট আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকা গড়ে উঠেছে। এছাড়া ঐ আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকা যুক্ত করে এমন নির্দিষ্ট রাস্তা আছে। আসা এবং যাওয়ার জন্য দুইপাশে নির্দিষ্ট লেন ছাড়াও রাস্তার মাঝ বরাবর একটা অতিরিক্ত বিশেষ লেন আছে। এই লেনে নির্দিষ্ট কিছু জায়গা ছাড়া গাড়ি প্রবেশ করতে পারে না। এই লেনটির বিশেষত্ব হল, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এটি দিয়ে আবাসিকের দিক থেকে অফিসের দিকে আর দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত উল্টাদিকে (অফিস-আবাসিক) চলাচলের জন্য খোলা থাকে। অর্থাৎ যেদিকে চাহিদা বেশি সেদিকে সেবা দেয়। এই লেন ব্যবহার করে অনেক দ্রুত যাওয়া যায়, কিন্তু শর্ত সাপেক্ষে এটা ব্যবহার করা যায়। বাস কিংবা কমপক্ষে ৪জন যাত্রী আছে এমন কার বিনা বাঁধায় এই লেন ব্যবহার করতে পারে। অন্যরা ব্যবহার করতে চাইলে উচ্চমাত্রায় টোল দিয়ে করতে পারে। অর্থাৎ কার পুলিং করলে বিশেষ কিছু সুবিধা পাওয়া যাবে ... ... ... "পেটে খেলে পিঠে সয়', ঢাকায় প্রাইভেট কারের জন্য এমন কোন সুবিধার ব্যবস্থা আছে কি? আর, প্রাইভেট কারের বদলে পাজেরো (পাবলিক না হয় নির্লজ্জ্ব মন্ত্রী বা এমপিদের মত বিনাট্যাক্সে নাই কিনলো) ব্যবহার করা শুরু করলে তখন নিয়মটা কেমন হবে?

এরপর আরেকটা উদ্যোগের কথা জেনে হাসবো নাকি কাঁদবো তা এখনো বুঝে উঠতে পারিনি। এটা হল জোড় আর বেজোড় সংখ্যার প্রাইভেট কার বিষয়ক। অন্যান্য গাড়ির মতই ১০০% ট্যাক্স দিয়ে কেনা এই গাড়িগুলোর দোষ হল, এরা সংখ্যায় বেশি। তাই একদিন জোড় সংখ্যা বিশিষ্ট ও অন্যদিন বেজোড় নম্বরবিশিষ্ট কার রাস্তায় চলাচল করতে পারবে। যাদের একটি মাত্র গাড়ি তারা তাহলে বাকী কর্মদিবসগুলোতে কীভাবে যাতায়াত করবে? এমনতো নয় যে যথেষ্ট পরিমান গণপরিবহন ব্যবস্থা করা সত্বেও দুষ্টু মানুষ ওগুলো ব্যবহার না করে শুধু শুধু গাড়ি বের করে রাস্তায় যানজট বাড়াচ্ছে। বরং অকার্যকর এবং অনুপযোগী গণপরিবহন ব্যবস্থায় অতীষ্ট হয়েই স্বল্প আয়ের এই দেশেও, মানুষ এক প্রকার বাধ্য হয়েই, অন্য দেশের চেয়ে আড়াইগুন দামে প্রাইভেট কার কিনছে। নাহলে কোন মধ্যবিত্তের ঠেকা পড়েছে যে বেতন দিয়ে ড্রাইভার নিয়োগ দিয়ে, এদের তেল/পার্টস্ চুরি ও মোবাইল হারানো সহ্য করে, রিক্সার ঘষা খেয়ে, ২/৩ ঘন্টা গ্যাসের জন্য সিরিয়াল ধরে গাড়ি চালানোর?

ট্যাক্সির ধারণাটাই হল যাত্রী এতে উঠে কোথায় যেতে হবে যাত্রী তা বলবে - শহরের যে কোনো জায়গায় যেতে এরা বাধ্য ... ... অথচ ঢাকায় ক্যাব/ট্যাক্সিকে গন্তব্যে যাবে কি না সেটা জিজ্ঞেস করতে হয় আগেই, এবং ওরা সেখানে যেতে চায় না; আবার গেলেও ৬০ টাকার ভাড়া ১৫০টাকার কমে যায় না। আর এখানে প্রাইভেট কার ব্যবহারকারীদেরকেও ঠেলে দিলে আরও কী তুঘলকী কাণ্ড ঘটবে তা কল্পনা করা দুরূহ।

গণপরিবহণ ব্যবস্থা উন্নত না করলে এবং ট্রিপ ডিমান্ড না কমালে যানজট কমানোর উদ্যোগগুলো সফল হবে না - এটা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার হয় না। গণপরিবহণ প্রসঙ্গে গত ২২শে ডিসেম্বর রাতে দেশ টিভিতে সোজাকথা নামক টক-শোতে আমন্ত্রিত অতিথি জনাব মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া সাহেব (শুরু থেকে দেখিনি বলে ওনার পদমর্যাদা জানা হয়নি) সরকারের তরফ থেকে যে সকল উদ্যোগের কথা জানালেন সেগুলোকে আমার চমৎকার এবং সঠিক মনে হল। উনি বলেছিলেন যে, পর্যায়ক্রমে (১০-১৫ বছর) তিনটি রুটে MRT / মেট্রো ট্রেন চালু করা হবে। দেশের বিদ্যূৎ ব্যবস্থা, ভূতত্ব এবং খরচ বিবেচনা করে এগুলো যতদুর সম্ভব মাটির উপরে এবং উড়াল লাইনে (স্কাই ট্রেন) করা হবে। সামান্য কিছু জায়গায় হয়তো স্থানাভাবে বাধ্য হয়ে পাতালে যেতে হতে পারে। তাহলে সিঙ্গাপুর বা ওসাকা/টেকিওর মতই কিছু উপরে আর কিছু নিচে হচ্ছে। আর, ব্যাংককের মতই রাস্তার ডিভাইডার থেকে কলাম তুলে উপরে লাইন হবে। MRT করতে প্রচুর অর্থ লাগবে, যা নিঃসন্দেহে আমাদের উপর বিরাট ঋনের বোঝা চাপিয়ে দেবে।

তবে আগামী বছরেই যা হবে সেটা হল কিছু কিছু রুটে BRT বা বাস রেপিড ট্রানজিট। এটাতে উপরোল্লিখিত কার পুলিং লেনের মতই বাস চলাচলের জন্য রাস্তায় বিশেষ সুরক্ষিত লেন আলাদা করা হবে। এখানে চলাচলের জন্য সুপরিসর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস আনা হবে (কোরিয়া বা ভারত থেকে এবার যেগুলো আসছে সেগুলো নয়)। বাসে ওঠা-নামা করার জন্য প্ল্যাটফর্ম এমন হবে যেন অতি দ্রুত ওঠা/নামা যায় (মেট্রো'র মতই)। বিভিন্ন ক্রসিংএ ও সিগনালে এই বাসগুলো অগ্রাধিকার পাবে। ফলে বাসে যাতায়াত হবে আরামদায়ক এবং প্রাইভেট গাড়ির চেয়ে দ্রুততর। সারা ঢাকাতে এই সুবিধা ছড়ানোর জন্য দুই তিনটি প্রাইভেট কম্পানিকে লিজ দেয়া হবে। এজন্য পরিবহন কম্পানিগুলো একিভূত করার জন্য কাজ চলছে। MRT'র তুলনায় কম যাত্রী বহন করলেও BRTতে খরচ সেই তুলনায় অনেক কম হবে।

ট্রিপ ডিমান্ড কমানোর প্রসঙ্গে চমৎকার একটা উদ্যোগ ছিল এলাকাভিত্তিক ভিন্ন ভিন্ন দিনে সাপ্তাহিক বন্ধের আইডিয়াটা। এখন পর্যন্ত আমি এই উদ্যোগের সুফল ভোগ করছি। এছাড়া অনলাইনে বিভিন্ন ফলাফল প্রকাশের কারণেও ট্রিপ ডিমান্ড বা যাতায়াত চাহিদা কমেছে। এভাবে অফিসের কাজে প্রযুক্তির ব্যবহার যত বাড়বে (ভিডিও কনফারেন্সিং ইত্যাদি, অনলাইন বুকিং, অনলাইন আবেদন পত্র জমা দেয়া ইত্যাদি) ততই যাতায়াতের প্রয়োজনীয়তা কমে তা যানজট কমানোতে সাহায্য করবে।

এরকম যৌক্তিক কাজকর্মগুলো এ বিষয়ে পেশাদারগণ যাতে দক্ষভাবে করতে পারে সেটা নিশ্চিত করলেই মন্ত্রী মহোদয় সকলের অকুন্ঠ সমর্থন পাবেন। যানজট বিষয়ে সরকারের আন্তরিকতা বুঝাতে অযথা উদ্ভট কাজকর্ম করার প্রয়োজন নাই। নাহলে দেখা যাবে আজ প্রাইভেট কার বন্ধ করার পর উৎসাহিত হয়ে পরবর্তীতে সরকার-ই প্রতিদিন হরতাল না ডেকে বসে।

শেষে বাংলাদেশ সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে প্রাপ্ত, জাতীয় স্থল পরিবহন নীতিমালা, এপ্রিল ২০০৪ হতে ঢাকা মহানগরীর জন্য নীতিমালা অংশটি আপনাদের জন্য সংযুক্ত করলাম। এতে চমৎকার দিক নির্দেশনা আছে।

=============================================
এইটা পড়ার আগেই বলি, এটা ডাউনলোড করতে পারবেন এখানে ক্লিক করে (মাত্র ৪১৫ কিলোবাইট)। তবে ওটার বাংলা লেখাগুলো কোনোভাবেই ইউনিকোডে আনতে না পেরে শেষে টাইপ করে ফেললাম।

৯. ঢাকা মহানগরীর জন্য নীতিমালা

৯.১ পরিকল্পনা এবং কার্যক্রম

৯.১.১ সরকার ঢাকা নগরীর পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শক্তিশালী করবে।

৯.১.২ গণপরিবহনের উন্নতি, যানজট হ্রাস ও পরিবেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করবে। এ ব্যবস্থাসমূহের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে:
১. মহানগরীর জন্য দীর্ঘমেয়াদী আধুনিক গণ-পরিবহন ব্যবস্থার পরিকল্পনা প্রণয়ন
২. অধিক সংখ্যায় সুপরিকল্পিত বাস রুট চালু;
৩. গণ-পরিবহন ব্যবস্থায় উচ্চমানের যানবাহন ব্যবহার এবং সার্ভিসের মান বৃদ্ধি;
৪. বেসরকারী খাতের বাস অপারেটরদের অংশগ্রগণের জন্য নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি;
৫. বাস সার্ভিসকে অগ্রাধিকার প্রদান;
৬. সব ধরণের যানবাহন থেকে দূষণ হ্রাস;
৭. সড়কের উপর পার্কিং এবং সড়কের অনধিকার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ;
৮. ট্রাফিক ব্যবস্থারনার উন্নয়নে ব্যাপকভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণ;
৯. ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার;
১০. পদযাত্রীদের জন্য উন্নততর সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি;
১১. গণপরিবহন ব্যবস্থার মূল্যায়ন;
১২. সকলের জন্য বিশেষ করে দূর্ঘটনা প্রবণ (vulnerable) সড়ক ব্যবহারকারীদের জন্য উন্নততর নিরাপত্তা ব্যবস্থা;
১৩. পরিবেশগত সুরক্ষা ব্যবস্থা; এবং
১৪. উন্নত ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা।

৯.২ অযান্ত্রিক যানবাহন

৯.২.১ প্রধান প্রধান গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রিক্সা চলাচল পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা হবে। অপ্রধান সড়কে চলাচলকারী রিক্সাকে কেবল প্রধান প্রধান সড়কের নির্ধারিত স্থানেই ক্রসিং করতে দেয়া হবে।

৯.২.২ সড়ক সংযোগস্থল (intersection) উন্নতিকরণের কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। সড়ক সংযোগস্থলের ধারণ ক্ষমতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে বজায় রাখার স্বার্থে সড়ক ও ফুটপাথের সন্ধিস্থল (curb side) রিক্সামুক্ত করা হবে।

৯.২.৩ শহরতলীর যেসব এলাকায় বাস নেটওয়ার্ক অপেক্ষাকৃত স্বল্প এবং/অথবা চলাচল কম সে সব এলাকায় ফিডার সার্ভিস হিসেবে রিক্সা ব্যবহার হবে।

৯.২.৪ আগামী ১০ বছরে রিক্সার ট্রিপ অর্ধেকে কমিয়ে আনা হবে।

৯.৩ অটো রিক্সা

৯.৩.১ ২-স্ট্রোক থ্রি-হুইলার যানবাহনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে ঢাকায় ৪-স্ট্রোক সিএনজি অথবা পেট্রোল চালিত অটো-রিক্সা ব্যবহার নিশ্চিত করা।

৯.৩.২ প্রধান প্রধান গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সমূহে অগ্রাধিকার ভিত্তিক বাস সার্ভিস প্রবর্তনের পর ঐসব রুটে পর্যায়ক্রমে অটো-রিক্সা চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা।

৯.৩.৩ কেবলমাত্র বাস এবং রেল পরিবহনের ফিডার সার্ভিস হিসেবে অটো-রিক্সা ব্যবহার উৎসাহিত করা।

৯.৩.৪ চূড়ান্ত পর্যায়ে অটো-রিক্সা চলাচল বন্ধ করা।

৯.৪ প্রাইভেট কার

৯.৪.১ জরুরী সার্ভিস সমূহের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা (যেমন সড়ক পার্শ্বে পণ্য বোঝাই-খালাসের জন্য সাময়িক বিরতিস্থল নির্ধারণ) রেখে সড়কের উপরে পার্কিং নিয়ন্ত্রণের জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা।

৯.৪.২ পুরাতন ঢাকা এবং এরূপ অন্যান্য যে সকল স্থানের সড়ক কার ব্যবহারের জন্য অনুকুল নয় সে সকল স্থানে শুধু পায়ে চলার ব্যবস্থা প্রবর্তনের কার্যক্রম গ্রহন করা।

৯.৪.৩ ২০২২ সালে ঢাকার প্রাইভেট কারের ব্যবহার মোট যান্ত্রিক যানবাহন ট্রিপের ৩০% এর মধ্যে সীমিত রাখা।

৯.৫ ট্রাক

৯.৫.১ সকল নতুন বাণিজ্যিক ও শিল্প স্থাপনার জন্য সড়কের বাইরে ট্রাকে পণ্য বোঝাই-খালাসের প্রয়োজনীয় সুবিধা গড়ে তোলা।

৯.৫.২ ঢাকার রাস্তায় দিনের বেলা ট্রাক চলাচলের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ভবিষ্যতে পর্যালোচনা করা।

৯.৫.৩ কন্টেইনার ট্রাকে মালামাল ট্রান্সশিপমেন্টের জন্য নতুন সুবিধাদি সৃষ্টি করা।

৯.৬ রেলওয়ে

৯.৬.১ জয়দেবপুর-নারায়নগঞ্জ লাইনে রেল কমিউটার সার্ভিস প্রবর্তন।

৯.৬.২ ২০১২ সালের মধ্যে কমিউটার রেল সার্ভিসের মাধ্যমে দৈনিক ২,০০,০০০ যাত্রী পরিবহনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ।

৯.৬.৩ গণ-পরিবহন (Mass Transit System) পরিকল্পনা প্রণয়ন, পাতাল, এলিভেটেড ও সার্কুলার রেলওয়ে ব্যবস্থা প্রবর্তন, পরিবহন সেক্টরে প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগীতায় সমীক্ষা পরিচালনা করা।

৯.৭ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা

৯.৭.১ ঢাকা মহানগরীর জন্য একটি পূর্নাঙ্গ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা প্রণয়ন।

৯.৭.২ ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন কারিগরি কৌশল প্রবর্তন।

৯.৭.৩ পদযাত্রীদের জন্য উন্নততর সুবিধাদি এবং একই গ্রেডে নিরাপদ ক্রসিং সুবিধার জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিক কর্মসূচী প্রণয়ন।

৯.৭.৪ ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাদি, বিশেষত: ঝুঁকিপ্রবণ সড়ক ব্যবহারকারীগণের (vulnerable road users) বিষয় অন্তর্ভুক্তকরণ।

৯.৭.৫ কোন নতুন উন্নয়ন কার্যক্রম গ্রহণের পূর্বে ট্রাফিকের প্রতিক্রিয়া নিরূপণের (traffic impact assessment, TIA) সমীক্ষা করা এবং সে মতে এর জন্য প্রয়োজনীয় সকল সুবিধাদি সৃষ্টি করা।

৯.৮ প্রাতিষ্ঠানিক উন্নতি

৯.৮.১ সাধারণভাবে ডিটিসিবি'র ভূমিকা হবে সমন্বয়কারীর। তবে একে নিম্নবর্ণিত বিষয়ে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা প্রদানের ক্ষমতা প্রদানের মাধ্যমে শক্তিশালী করা হবে-
১. প্রকল্পের ভৌত (physical) বাস্তবায়ন
২. প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার নির্ণয়
৩. যৌথ দায়িত্ব সম্পন্ন প্রকল্পের সমন্বয় সাধন

৯.৮.২ ডিটিসিবি'র বিশেষ দায়িত্ব হবে যাত্রীর চাহিদা যথাযথভাবে পূরণের লক্ষ্যে একটি নিরাপদ, দক্ষ ও আধুনিক বাস রুট নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করা। রুট ইজারা (route franchising) ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য ডিটিসিবি নিজস্ব কৌশল বা পদ্ধতি উদ্ভাবন করবে।
=============================================


মন্তব্য

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

মাননীয় মন্ত্রীমহোদয়ের সমীপে আমার আকুল আবেদন (প্রস্তাবনা বললে যদি গুস্তাকি হয়ে যায়)-

১. আপনি সচিবালয়ে আসার পথে আরও ৪জন মন্ত্রীমহোদয়কে আপনার গাড়িতে তুলে আনবেন এবং ফেরার সময় ড্রপ করবেন।

২. আপনার গাড়ি জোড়সংখ্যাবিশিষ্ট হলে বেজোড় সংখ্যার দিনে আপনি হোন্ডা বা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে চড়বেন। (ডেনমার্কের অর্থমন্ত্রীকে নিজের চোখে দেখেছি বাইসাইকেল চালিয়ে অফিসে যেতে। আপনি বয়ষ্ক মানুষ, তাই আপনি হোন্ডায় বা সিটিং সার্ভিসে চড়েন)।

গুস্তাকি মাফ হোক।

======================================
অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

শামীম এর ছবি

উদাহরণ সৃষ্টি করার মত মুরুব্বি থাকলে কি আর এই অবস্থা হয় .... ... এজন্যই কবি দূঃখ করে বলেছিলেন "আমাদের দেশে কবে সেই ছেলে হবে ... ..."
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

হিমু এর ছবি

ঢাকায় যেটা করা জরুরি, সেটা হচ্ছে পসিবল সব রুটে বাস চালু করে ক্রমশ প্রাইভেট গাড়ির জন্য পরিসর চিবি দিয়ে ছোটো করা। যেমন শুধু প্রাইভেট গাড়ির জন্য একটি লেন রাখলে এরপর সবাই বাপবাপ করে বাসে চড়বে। তবে বাসগুলো তো আগে নামাতে হবে।

ঢাকায় আরেকটা কাজ করা জরুরি, সেটা হচ্ছে তথাকথিত ভিআইপিদের রাস্তায় নামার সুযোগ সীমিত করা। ২০১১ সাল নজদিক, বর্তমানে সব ধরনের মিটিং ভিডিও কনফারেন্সে সারা সম্ভব, কাজেই সে পদ্ধতিতে মিটিং সেরে রাস্তা থেকে দূরে থাকতে হবে। ভিআইপিরা রাস্তায় নামলেই জাম লেগে যায়। আর বিমানবন্দরে যে কোনো ধরনের সংবর্ধনা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আইন চাই, সেই আইনের বাস্তবায়ন দেখতে চাই।



বুকে BOOK রেখে বরাহশিকার ♪♫ কালাইডোস্কোপ

শামীম এর ছবি

এখন উইকিলিকসের ভয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার বাদ দেয়ার চিন্তা করছে কি না সেটাই ভাববার বিষয় ....
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

মাহফুজ খান [অতিথি] এর ছবি

ধন্যবাদ, এমন একটি সময়োপযোগী লেখা দেওয়ার জন্য। আমদের কর্তাব্যক্তিরা এমন হাস্যকর কথা বলবেন সেটা খুবই স্বাভাবিক, ইনারা অন্যকে নকল করতে গিয়ে নানা উদ্ভট কর্ম আগেও করেছেন (ডে লাইট সেভিংস) এবং ভবিষ্যতেও করবেন। তবে একটা কথা সত্যি যে ঢাকা শহরে প্রাইভেট কারের সংখ্যা যাঞ্জট সৃষ্টিতে এক বিরাট ভুমিকা পালন করছে। আমাদের অপ্রতুল ও সঙ্কির্ন রাস্তা ঘাট, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থা, রিক্সা, এবং সকল প্রকারের যানবাহন চালকদের বেয়াড়াপনাতো আছেই। সত্যি যদি ঢাকায় দ্রুতগতীর গনপরিবহনের ব্যাবস্থা করা যায় তবে মানুষ নিশ্চয় সেগুলো ব্যবহার করবে। আবার একবার কেবল কিছু বাস কিনে রাস্তায় নামিয়ে দিয়েই খালাস, এই রকম হলে বিপদ। বি আর টি সির ভল্ভো দুতলা বাসগুলো কিন্তু আমরা ভালই ব্যবহার করেছি, কিন্তু এখন রাস্তায় ঐ বাস গুলো খুব একটা দেখা যায় না।
আরেকটা ব্যাপার শুধু বিমানবন্দর কেন, পল্টন ময়দানে রাস্তা আটকে মিটিং করাও নিষিদ্ধ করা উচিৎ।
সর্বোপরি ঢাকা মহানগরীতে ট্রাফিক ব্যাবস্থা উন্নয়নের যে সকল কর্ম পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে সেগুলু বাস্তবায়িত হলে আমার মনে হয় এই অবস্থার সত্যি উন্নয়ন সম্ভভ।

শামীম এর ছবি

সুচিন্তিত মন্তব্যে একমত।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

দ্রোহী এর ছবি

মাথায় গোবর না থাকলে মন্ত্রী হওয়া যায় না।


কাকস্য পরিবেদনা

শামীম এর ছবি

ভাই, লুঙ্গির গিট্টু আর পায়জামার (মতান্তরে সালোয়ারের) ফিতা ধরে টানাটানি করাটা রিস্কি ব্যাপার। তবে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের কিছুটা বিশ্রাম নেয়া দরকার বলে মনে করি। (যদিও, প্রাইভেট কার + ড. ইউনুস নিয়ে ওনার বক্তব্যগুলো শীতকালের উপযোগী ছিল/হচ্ছে)
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

আব্দুল্লাহ এএম এর ছবি

শামীম সাহেব,

আপনি কি মুহিত সাহেবের বক্তব্য পুরোপুরি শুনেছিলেন? ট্রাফিক সমস্যা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অত্যন্ত যৌক্তিকভাবেই তিনি কিছু কথা বলেছেন। আমি যতটুকু শুনেছি, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সবার জন্য সহজলভ্য হওয়া সাপেক্ষে প্রাইভেট কারের চলাচল সীমিত করার সম্ভাব্য কিছু উপায় বলেছেন মাত্র। তবে জোর দিয়ে বলেছেন, ঢাকায় এখন পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিষ্টেম বলতে কিছু নেই, আগে সে ব্যাবস্থাটি চালূ করতে হবে, সে ব্যাপারে সরকার অনেকগুলো বাস আনছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
প্রসংগত উল্লেখ্য- প্রাইভেট কারের চলাচল অনেক শহরেই নিয়ন্ত্রিত এবং সীমিত, উদাহরন হিসেবে হংকং সিংগাপুরের কথা বলা যায়। তবে সেসব শহরে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিষ্টেম অত্যন্ত উন্নত। ঢাকার ক্ষেত্রে বাস্তবতা হলো রাস্তায় প্রাইভেট কারের সংখ্যা নিয়ন্ত্রন করতে না পারলে উন্নত পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিষ্টেম প্রবর্তন করা অসম্ভব একটি ব্যাপার।

দ্রোহী এর ছবি

ভাই,

গরীবেরে হংকং, সিংগাপুর দেখায়ে কী লাভ বলেন?

ঢাকা থেকে এক কোটি লোক অন্যত্র সরায়ে নেন। তখন জনপ্রতি একটা করে প্রাইভেট কার নিয়ে বাইর হইলেও কোন সমস্যা হইব না।

পুরা দেশের দশ ভাগের একভাগ লোক এক শহরে এসে ঠাসাঠাসি করলে ব্যক্তিগত হেলিকপ্টার দিয়াও চলাফেরা করলেও কামের কাম কিছু হইব না।


কাকস্য পরিবেদনা

শামীম এর ছবি

ওহ্ তাই বলেন ... ... তাহলে তো ভাল।

আমি সাংবাদিকদের সরবরাহকৃত দুই একটা সংবাদ দেখে ধরা খাইছি বলে মনে হচ্ছে। শুধু শুধুই ব্লগ টাইপ করে মরলাম .... ... গরররর
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

গাড়িগুলোকে থামিয়ে দিয়ে রাস্তাগুলোকে চালিয়ে দিলে কেমন হয়? নাহলে তো হরতালই একমাত্র ও অব্যর্থ সমাধান বলে বোধ হচ্ছে!
-----------------------------------
যে মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ — কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে;

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ইদানিংকালে যানজট নিরসনে অর্থমন্ত্রী মহোদয়ের বেশ কিছু বক্তব্য আমাকে বিষ্মিত করেছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে, উনি অর্থমন্ত্রী - যোগাযোগ মন্ত্রী নন!
আমাদের দেশে প্রায় সবখানেই যেখানে যে বিষয়ে অভিজ্ঞ লোকের থাকার কথা সেখানে সেই লোক নাই। আর নিজের কাজের জায়গা বাদ দিয়ে অন্যের স্থানে মত দিতে সবাই ভীষণ ভালোবাসি।

যাক গে, পলিসি মেকার না হলেও ঢাকার জানজটের ভুক্তভোগী হিসেবে এ বিষয়ে দুইটা কথা বলাটা নিজের জায়গার কাজের মধ্যে পড়ে ধরে নিয়ে বলি হাসি -

১) উন্নতমানের পাবলিক বাস সার্ভিস লাগবে প্রচুর পরিমাণে, সম্ভাব্য সব রুটে, প্রতি ঘন্টায়। হিমু ভাইয়ের পয়েন্টে একমত। অ্যাডিশনাল বক্তব্য- এই বাস সার্ভিসের টাইমটেবল যাতে অন্য যানের কারণে বাধাপ্রাপ্ত না হয় তার জন্যে অন্য যানবাহন (পাব্লিক ট্রান্সপোর্ট যেমন- সিএনজি, টেম্পু, ট্যাক্সি; এবং ব্যাক্তিগত গাড়ি) কমিয়ে আনতে হবে। সিএনজি জিনিসটা একেবারেই তুলে দেয়ার পক্ষপাতি আমি। একই রাস্তায় বিভিন্ন স্পিডের আর ধরণের (হালকা থেকে ভারি) যানবাহন চললে জানজট নিরসন হবেনা।

২) আমার অব্জারভেশন বলে, একটা বিশাল জ্যাম লাগে একটা বা দুইটা মাত্র বাচ্চাকে স্কুলে পৌঁছে ও স্কুল থেকে ফেরত আনতে। আইন করা উচিত, কোন বাচ্চা নিজের বাসার পাঁচ মিনিটের বেশি হাঁটা দূরত্বের স্কুলে পড়তে পারবে না। (অবশ্যই এর জন্যে আগে প্রয়োজন একই শিক্ষামানের বিপুল পরিমাণ সরকারী স্কুল স্থাপন)। আপাতত এইখানে কারপুলিং বেশি কার্যকরী মনে হয়, (রোধ সম্ভব - জ্বালানির অপব্যবহার, জ্যাম সৃষ্টি, পরিবেশদূষণ, ইত্যাদি)।

৩) ঢাকার ভেতরে কোন রকম ইন্ডাস্ট্রি, গার্মেন্টস রাখা যাবে না।
দ্রোহীদাকে কোট করছি -

ঢাকা থেকে এক কোটি লোক অন্যত্র সরায়ে নেন। ... পুরা দেশের দশ ভাগের একভাগ লোক এক শহরে এসে ঠাসাঠাসি করলে ব্যক্তিগত হেলিকপ্টার দিয়াও চলাফেরা করলেও কামের কাম কিছু হইব না।
ঢাকাকে বাঁচাতে হলেই ইমিডিয়েট ডিসেন্ট্রালাইজেশনের বিকল্প নাই।

৪) আবাসিক এলাকার মধ্যে কোন রকম স্কুল/শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান আর মার্কেট বা অফিস থাকা যাবে না। ধানমণ্ডির প্রায় পুরোটাই, বনানী -১১ বিশেষভাবে দ্রষ্টব্য। (বনানী-১১ পুরাই বুটিক/রেস্টুরেন্ট রোড হয়ে গেছে, এই দোকানগুলো বনানীরই তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ কোন রাস্তায় শিফট করা উচিত, যেই রাস্তায় গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ হবে যাতে শপিং-এ আসা মানুষ গাড়ি ঢুকিয়ে যানজট বাড়াতে না পারে)। আবাসিক এলাকার মাঝে রিকশা ছাড়া অন্য কোন পাবলিক পরিবহন রাখা যাবে না। (রিকশা কোনমতেই অন্য কোন সময়ে বড় রাস্তায় চলতে পারবে না, কারণ বড় রাস্তায় থাকবে ভালো বাস সার্ভিস!)

৫) সরকারি আমলা আর বড় অফিসের হোমরা-চোমরা কর্তাদেরকেও পাবলিক ট্রান্সপোর্টই (একেএ - ভালো বাস সার্ভিস) ব্যবহার আইন করে প্রয়োগ করতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার ট্যাক্সের টাকায় কেনা ও জ্বালানিতে চালানো বিশালাকৃতির ফাঁকা গাড়ি (উচ্চপর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদেরকে আনতে যাবার ও ফেরত রেখে আসার সময়) দেখতে দেখতে ক্লান্ত।

ধন্যবাদ। লেখা ভালো লেগেছে। হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

শামীম এর ছবি

এই ব্লগ লেখার বেশ আগে থেকেই ভুক্তভোগী হিসেবে ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর বেসিক আইডিয়া এবং তত্বগুলোর যেগুলো আমার মনে ধরে, সেগুলো নিয়ে একটা বড় লেখা শুরু করেছিলাম (এগুলো আমার পাঠ্য ছিল)।

এই জানুয়ারীতেই কয়েক পর্বে নামানোর আশা রাখি। সকলে আরেকটু জানলে সুবিধা হল মাঠে টাল্টিবাল্টি দেখলেই অন্যদের কলম/কীবোর্ডও গর্জে উঠবে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

তানভীর এর ছবি

নীতিমালায় তো ভালো ভালো কথা লেখা আছে। বাস্তবায়নেই যত গণ্ডগোল। জনবহুল শহরে ছোট গাড়ি ডিসকারেজ করাই উচিত। তবে তার আগে বা তার সাথে গণপরিবহন ব্যবস্থারও উন্নয়ন ঘটাতে হবে। সেগুলো না করে সরকারের বরং উড়াল পথ বানানোতেই উৎসাহ বেশি।

শামীম এর ছবি

থিওরিটিক্যাল ব্যাপারে বাঙালি সবসময়ই ভাল - এর ১০% দক্ষতাও যদি তা প্রয়োগে দেখাতে পারতো ... ... ...
(আমাদের দেশে কবে সেই ছেলে হবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে।)
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।