প্রবাসের কথোপকথন - ১৮

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি
লিখেছেন ইশতিয়াক রউফ (তারিখ: শনি, ২৭/০৬/২০০৯ - ৭:৪৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

– বোর্ডিং পাস আর আইডি দেখাও।
: লাঠিতে ভর দিয়ে হাঁটা পঙ্গু, অথর্ব মানুষ আমি। এত জায়গায় আইডি দেখালাম, এখন প্লেনের দুয়ারে এসেও ঝামেলা করতে হবে, তাই না? কত যে ঘাঁটাতে পারো তোমরা!

– এই ছোকরা, ফেলে চলে যাবো কিন্তু তাহলে। আমি মানুষ খুব খারাপ।
: আচ্ছা দেখো, দেখো। হুঁ, আমি জানি সিট কোথায়। বেছে বেছে সামনের দিকের আইল সিট নিয়েছি। এখন এই নরাধমকে দেখতে দেখতে যেতে হবে তোমার।

– দেখা যাবে কী হয়। এ কী, লাঠি হাতে রেখেছো কেনো? ওটা কোথাও সরিয়ে রাখতে হবে। কষ্ট করে উপরে তুলবার দরকার নেই। আমি আমার কোট ক্লজেটে রাখছি। প্লেন থামলে এনে দেবো।
: তথাস্তু। এই নাও। তোমাদের প্লেনে তো সামনের দিকেও অনেক আওয়াজ দেখছি।

– ব্যাপার না। এই ব্রাউনিটা একটু চেখে দেখো তো। আজকের বিশেষ খাবার এটা। বয়ফ্রেন্ডের জন্য কিছু নিয়ে যাবো কিনা ভাবছি।
: ভুল মানুষকে দিলে। আমি চিনি বেশি খাই। এক কাপ চায়ে চার-পাঁচ চামচ পর্যন্ত নিয়ে ফেলি। অন্য কাউকে দাও।

– কেউ তো নিচ্ছে না দেখি। তা তুমি এমন বেজার মুখ করে বসে আছো কেনো? ঝামেলা হয়েছে কোনো?
: নাহ, তেমন কিছু না। ট্রাভেল কিট-এ আমার সবকিছু থাকে, তবুও কী সব নিয়মের জন্য একটা একটা করে বের করে জিপলক ব্যাগে ঢুকাতে হল। এবারে দেখলাম নেল-কাটার, সেফটি-রেজার, ইত্যাদি নিতে দিচ্ছে। আমার একটা ৭ আউন্সের কৌটায় কয়েক ফোঁটা আফটার-শেভ ছিলো, সেটা নিতে দিলো না। বলে, কৌটার ভেতরে যতটুকুই থাকুক, কৌটার আকার ৩ আউন্সের বেশি হতে পারবে না। যন্ত্রণার শেষ নেই।

– মন খারাপ কোর না। কী ড্রিংক নেবে তুমি? বাড়তি একটা কোক রেখো তাহলে। তোমার দুস্থ অবস্থার সম্মানে।
: চিয়ার্স টু অ্যাফারমেটিভ অ্যাকশন!

– কেনো, এমনিতে কি বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়া যায় না? যাক, কাজে নামি আমি এবার।
: তা তো অবশ্যই। তোমার গৎবাঁধা কথাগুলো বলে নাও। আমি পালাচ্ছি না।

– উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি মেমফিস থেকে গ্রিন্সবোরো পর্যন্ত এই ফ্লাইটে। আমাদের আনুমানিক যাত্রাকাল সাড়ে ছয় ঘন্টা…
: সে কী? টিকেট তো বলছে দেড় ঘন্টা!

– গত ফ্লাইটের কথা ভুলে গেছো? মিসিসিপি’র উপর ঝড়-বাদলা হওয়ায় গত ফ্লাইটে আমাদের আকাশে চক্কর দিতে হয়েছে আড়াই ঘন্টা। এক ঘন্টার ফ্লাইটের জন্য আড়াই ঘন্টা বাড়তি দেরি হওয়ায় তোমরা সবাই বিরক্ত, তাই এবারে আমি একটু বেশি করে বলে দিলাম আর কি।
: গড ফরবিড। মনে হয় না এমনটা হবে এবার। এদিকের আকাশ পরিষ্কার দেখলাম রওনা দেওয়ার আগে।

– সিট বেল্ট ও ইমার্জেন্সি বিষয়ক খুঁটিনাটিগুলো মেনে চলার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আমার পক্ষে যদি আপনাদের এই যাত্রা কোনভাবে আনন্দদায়ক করা সম্ভব হয়, তবে নিঃসংকোচে জানাবেন। আপনাদের মনোরঞ্জনের জন্য আমি যেকোন কিছু করতে প্রস্তুত। এনিথিং টু মেইক ইয়োর ফ্লাইট এনজয়েবল অ্যান্ড কমফোর্টেবল… উইদিন রিজন। আই ডোন্ট ডু ফুট মাসাজ; নট এনিমোর। সো, ডোন্ট অ্যাস্ক। একটু পর তোমাদের আমি কিছু খাবার দেবো। তারপর সময় করতে পারলে গল্প শোনাবো, আর সবশেষে থাকবে গান।
: বিমানবালা বেশ রসিক দেখছি। আপনি তো মনে হয় অনেক ঘুরে বেড়ান। সব সময়ই কি এমন?

– সব সময় না। তবে এই জন তো অনেক বেশিই খোশ মেজাজে আছে মনে হয়। বাকি পথ আরামে কাটলেই হয়। তুমি ছাত্র?
: জ্বী, আমি ভার্জিনিয়া টেকে গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট। তড়িৎকৌশলের ছাত্র। আপনিও কি গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট?

– নো, বাট আই হ্যাভ আ বিয়ার্ড! আমি কর্নেল থেকে পাশ করেছিলাম। আমিও একই বিষয় নিয়ে পড়েছি। প্রায় বিশ বছর আগের কথা। আমার এখন নিজের ব্যবসা আছে একটা। বিছানা বানাই। ঐ যে, পার্টনার ফোন করেছে।
: কর্নেলে আমার খুব কাছের এক বন্ধু পড়ে, প্রশংসা শুনেছি খুব। কান তো বন্ধ রাখা যায় না, তাই তোমার ফোনের কথাবার্তা কিছুটা শুনে ফেলেছি বলে দুঃখিত। তোমার ব্যবসা ভালই চলছে মনে হলো। এই মন্দার মধ্যেও তো বেশ লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছো।

– আমি অসুস্থ আর প্রতিবন্ধীদের জন্য বিছানা, হুইল-চেয়ার, ইত্যাদি বানাই। ব্যবসার ধরনটাই এমন যে এটার উপর মন্দা তেমন প্রভাব ফেলতে পারে না। আমরা মূলত ডিজাইনের কাজটুকু করি। প্রতি ইউনিটে বেশ ভালই লাভ থাকে।
: ভালই তাহলে। এবারেও কি বিজনেস ট্রিপ ছিলো?

– উহু, এটা ছিল এমনি বেড়াতে যাওয়া। এক সপ্তাহ ফ্লোরিডায় ছুটি কাটিয়ে এলাম।
: বেশ ভালোই তাহলে। প্লেন মনে হচ্ছে একটু পরেই ছাড়বে। আমাদের আগে যা লম্বা লাইন দেখতে পাচ্ছি! দেড় ঘন্টার ফ্লাইট হওয়ার কথা। এখন দেখি ছাড়তে ছাড়তেই দেড় ঘন্টার উপর হয়ে গেল ভিড়ের কারণে। বিমানবালা আসছে আবার, কিছু বলবে মনে হয়।

– জরুরি কোনো কাজে ব্যস্ত না থাকলে একটা প্রশ্ন করতাম আপনাকে।
: না, ব্যস্ত নই। বলে ফেলো। আমার লাঠি ফেরত দেবেন?

– না, তোমাকে না। তোমার পাশের ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করছিলাম।
: বলুন কী প্রয়োজন। কোনো সমস্যা হয়নি তো?

– আপনি কি আপনার স্ত্রী সহ এসেছেন?
: জ্বী, আমার স্ত্রীও এই প্লেনেই আছেন।

– আপনি চাইলে তাঁর সাথে বসতে পারেন। আমি সিট বদলে দিতে পারি আপনাদের সুবিধার্থে।
: সে-কষ্ট করতে হবে না। আমি বেশ আছি। ধন্যবাদ।

– ঠিক আছে তাহলে। আপনার স্ত্রী বলছিলেন, তাই জিজ্ঞেস করছিলাম। আমি অন্য দিকে যাই তবে। প্রয়োজন পড়লে জানাবেন…
: আপনার স্ত্রী ডাকলেন, তবু গেলেন না?

– আমার স্ত্রী আছে, তবে আমার ছেলে সহ। যে-ভদ্রমহিলার কথা বিমানবালা বলছিলো, তিনি আমার স্ত্রী নন। বিমানবালা ভুল করে আমাকে ডাকছিলো। ভদ্রমহিলা সুন্দরী বেশ। পাশে বসতে পারলে মন্দ হতো না, কী বলো?
: তাহলে তো মিস করে ফেললে। চলে যেতে। স্ত্রী জিজ্ঞেস করলে বলতে, বিমানবালার ভুল।

– স্ত্রীর সামনে এই কাজ করা যায় নাকি? বাসায় গেলে তো আমাকে নাইনটি ডে’স, নো ইন্টারেস্ট প্রোগ্রামে ফেলে দেবে। ক’দিন পরেই ২৫ বছর পূর্তি।
: হাহ হাহ, মনে হয় না এই বয়সে এসে এমন ব্যাপারে সুযোগ নেবে তুমি।

– তা আর বলতে। যাক, ভালো লাগলো তোমার সাথে কথা বলে। আমার কার্ড রাখো, কখনও দেখা হবে আবার।
: না হলেই ভালো। তোমার কাজের যা ধরন, তাতে দেখা না হওয়াই সুলক্ষণ।

– আই’ল কাট ইউ আ ডিল, তবে আশা করি আসলেই দেখা হবে না আর।
: আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। আমাকে তো চিনবে না, তবু পারলে ওদিকটায় বেড়াতে যেয়ো, ভালো লাগবে। বিমানবালা এবারে কী বলে শুনে দেখি।

– আমাদের সাথে এই ফ্লাইটে থাকবার জন্য অনেক ধন্যবাদ সবাইকে। আমার আতিথেয়তা যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তবে মন খুলে উপহার দিতে পারেন। আই ওনলি এক্সেপ্ট ডায়মন্ড নেকলেস, গোল্ড ব্রেইসলেট, অ্যান্ড রুবি রিংস। তোমাদের গল্প বলতে গিয়েছিলাম, কিন্তু দেখতে পেলাম তার আগেই অনেকে ঘুমিয়ে গেছো। তাই সে-চেষ্টা আর করলাম না। আই ডিড সিং ফর ইউ, দো। আই স্যাং সোলো। পারহ্যাপ্স সো লো দ্যাট ইউ ডিড নট হিয়ার মি। শুভ হোক তোমাদের বাকি দিন।


মন্তব্য

অনিকেত এর ছবি

যথারীতি---তুমুল লেখা---

সাইফ তাহসিন এর ছবি

পাঙ্খা

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

শঙ্খচিল [অতিথি] এর ছবি

এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম!
পড়ার পর মনে হচ্ছে, আরেকটু থাকলে ভাল হত। শেষ চিনাবাদামটা খাবার পর যা মনে হয়, বা এটাই কি ছোটগল্পের স্বাদ "শেষ হইয়াও হইলনা শেষ"
"ওয়াইজ মেনদের" মত বলতে ইচ্ছে হচ্ছে "ছেলেটার লেখার হাত ভাল"!!ঃ-)

রায়হান আবীর এর ছবি

পড়ার পর মনে হচ্ছে, আরেকটু থাকলে ভাল হত।

আমারও ঠিক এই কথাটাই মনে হলো ...

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ধন্যবাদ পড়বার জন্য। আকারে বেশি বড় হয়ে যাওয়ার ভয়েই ছোট রেখেছিলাম।

দ্রোহী এর ছবি

এইটা কি ভার্জিনিয়া টু লুইজিয়ানা? নাকি উল্টা পথের গল্প?

যথারীতি কোপানি লেখা।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

এটা লুইজিয়ানা টু ভার্জিনিয়া। নিউ অর্লিয়েন্স টু মেমফিস আসবার সময় বৃষ্টির জন্য দেরি হয়েছিলো। বাকিটুকুর কাহিনী এটা। মেমফিস টু গ্রিন্সবোরো।

আপনি তো সব লেখাই ভালো পান। আমি ভেবে দেখলাম, আপনার সেই থিউরি আমার বেলায়ও কিছুটা খাটে। খাইছে

দ্রোহী এর ছবি

আমার তো অনেকগুলা থিওরী!!!!!!!! কোনটার কথা কও?

"মুখ খ্রাপ লুকজন ভালু" এইটা?

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

উহু, "স্থানবিশেষ আলোর মুখ দেখলে লেখার খেই হারিয়ে যায়।" চোখ টিপি

আগে এমনটা হত না, আপনি বলার পর খেয়াল করা শুরু করলাম, আর তাতেই ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। খাইছে

শামীম রুনা এর ছবি

হুম.....চমৎকার.....!

_________________________________________________________
খাতার দিকে তাকিয়ে দেখি,এক পৃথিবী লিখবো বলে-একটা পাতাও শেষ করিনি।

_________________________________________________________
খাতার দিকে তাকিয়ে দেখি,এক পৃথিবী লিখবো বলে-একটা পাতাও শেষ করিনি। ( জয় গোস্মামী)

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ধন্যবাদ। হাসি

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

চলুক

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বিমানবালারা কি আসলেই এমন হয়? আমার কপালে তো জীবনে এমন ঘটনা ঘটলনা! খালি রোবট-সুন্দরী বা মাস্টারণী টাইপ বিমানবালারা জোটে। তারা হয় প্রতি কথার উত্তর ধমক দিয়ে দেবার চেষ্টা করে, অথবা শুনতে পায়নি এমন ভাব করে, অথবা পানি চাইলে রুটি এনে দেয় এমন কাজ করে। বিভিন্ন রকম ঘোষনায় তারা কোন ভাষায় কী যে বলে তাও বুঝতে পারি না।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ডোমেস্টিক ফ্লাইটের অ্যাটেন্ডেন্টরা ভালই হয়। ঝামেলা শুধু ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইটে যাওয়ার সময়। তখন চলে যাচ্ছেতাই ব্যবহার। ওগুলোকে মন চায়...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমার অবশ্য দেশে এবং দেশের বাইরের ডোমেস্টিক ফ্লাইটের অভিজ্ঞতা ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইটের অভিজ্ঞতার মতই।

এটারেই বলে কপাল। যার জোটে তার বাড়ির কাছেই জোটে, যার জোটেনা সে আটলান্টিক পাড়ি দিলেও তার কপালে জোটেনা।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমি এবারে পেয়েছিলাম খুব ভালো বিমানবালা। একবার ইন্ডিয়ানাপোলিস থেকে প্লেনে চড়ে পেয়েছিলাম আমার চেয়েও বাচাল এক বিমানবালা। তিনি তো আগের রাতের NFL স্কোর এবং কোন্‌ এক খেলোয়াড়ের সর্বশেষ ইনজুরি রিপোর্ট পাওয়ার আগে প্লেন ছাড়তেই দেবেন না! মহা যন্ত্রণা ছিল। তায় আবার ইনি যে এদেশী গেছো মেয়ে, তা না। আমাদেরই মত দেসি মানুষ, হয়তো ৪/৫ বছর হয় আমেরিকা এসেছেন। তবে, তিনিও মানুষ ভালো ছিলেন। বেশ ভালো।

খারাপ দেখেছি বাঙালি বিমানবালাগুলোকে। সেগুলো নিয়ে কথা বাড়ালেই মুখ খারাপ হয়ে যায়, তাই আগালাম না আর। খাইছে

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

চলুক

দময়ন্তী এর ছবি

বা: !
-----------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

সিরাত এর ছবি

কিছু অংশ কনটেক্সটের অভাবে মিলাতে একটু কষ্ট হচ্ছিল, বিশেষ করে প্রথমাংশ। তাছাড়া লেখা তো দারুনই। হাসি

দেশচিন্তা দে কিছু এবার।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

একটা লোকাল প্লেনে ওঠার সময় থেকে শুরু। উঠেই বিমানবালার সাথে টুকটাক কথাবার্তা। তিনি নিজের কাজে গেলে পাশের ভদ্রলোকের সাথে কিছুক্ষণ আলাপ। এরপর আবার বিমানবালা, এবং আবার সেই ভদ্রলোক।

পারিপার্শ্বিক বিবরণ ইচ্ছা করেই দূরে রাখি। সংলাপে যেটুকু চলে আসে, তার বাইরে কিছু বলি না। বলতে গেলেই মনের ভেতরের চিন্তা চলে আসে। এটা তো মনের কথা মনে রেখে শুধুই মুখে বলা কথাগুলোর সিরিজ।

এই অভিজ্ঞতাগুলো সবার সাথে কম-বেশি মিলে যায়। সে-কারণেই বিবরণ না দেওয়ার এই বাড়তি স্বাধীনতাটুকু নেওয়া।

পর্দার অন্তরালে একটা দেশচিন্তা আছে। শেষ হোক...

যুধিষ্ঠির এর ছবি

বাহ, চমৎকার! আমার এয়ারলাইনে কাজ করার দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দিলেন। ষষ্ঠর সাথে কিঞ্চিত একমত হতে হচ্ছে - সহস্রাধিক ফ্লাইটে চড়ার অভিজ্ঞতায় এত দারুণ ফ্লাইট অ্যাটেনড্যাণ্ট পাইনি কখনো। ভালো সহযাত্রী পাওয়াটাও ভাগ্যের ব্যাপার আসলে। "ছেলেটার লেখার হাত ভালো!" হাসি

সিরাত এর ছবি

সহস্রাধিক ফ্লাইট? কন কি!

যুধিষ্ঠির এর ছবি

হ্যাঁ, কাজ আর লং ডিসট্যান্স রিলেশনশিপ দুটোর কারণেই।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ভালো-মন্দ যেমনই হোক না কেন, কিছু না কিছু তো অভিজ্ঞতা জমেছেই তাহলে আপনার। সেগুলো জানার ইচ্ছা রইলো।

খারাপ অ্যাটেন্ডেন্ড তো প্রচুর পেয়েছি। কী দরকার অযথা সেই খারাপ স্মৃতিগুলো মনে রাখার? তারচেয়ে এই সুন্দর, সুখকর অভিজ্ঞতাটাই থাকুক মনে। হাসি

মামুন হক এর ছবি

দুর্দান্ত!

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

হাসি

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সবাইকে ধন্যবাদ। হাসি

মুস্তাফিজ এর ছবি

দুর্দান্ত!

ফাটান্তিস!

...........................
Every Picture Tells a Story

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

থ্যাঙ্কুন্তিস!

আজমীর এর ছবি

আরে ইশতি, তোমার লেখা পড়তে পড়তে মনে এসে গেল পুরানো এক মহিলা পুলিশের সাথের কাহিনী ... ওই মহিলা আমাকে স্টার বাক্সের হট চকলেট খাওয়ায় ... আমি নিউ জার্সিতে গাড়ির কাজ করতে দিয়ে বাইরে এসে খেতে গিয়ে দেখি টাকার থলেটা গাড়ির মাঝে ফেলে এসেছিলাম, আর গাড়ি যন্ত্র দিয়ে আকাশে তুলে রেখেছে ... এই কথাটাই বলে ফিরে আসব, এমন সময় আমার পিছনে দাঁড়ানো পুলিশ মহিলা আমাকে থামিয়ে শুধু যে হট চকলেট খাওয়াল, তাই না, সে আমাকে সিগারেট খাওয়ায় এবং বেশ জমিয় আড্ডাও মারে ... ভুলেই গিয়েছিলাম সেই ঘটনা ... তোমার লেখা পড়তে গিয়ে মনে পড়ল ... ধন্যবাদ এই লেখার জন্য ... কারণ এটার কারণেই ওই স্মৃতিটা মনে পড়ে গেল

আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.

আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ওরে! এই কাহিনী তো জানতাম না!! দারুণ!! যাক, লেখা সার্থক তাহলে। তোমার লেখা কিন্তু এখনও খেলাপির খাতায়...

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ইশতির এরকম "হঠাৎ শুরু" করার ধরনটা এবার লেখা বুঝতে ততটা কষ্ট দেয়নি। ভালো হয়েছে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

মাস্টার মানুষের হাতে ফাঁকিবাজিটা ধরা পড়েই গেলো। সূচনা না লিখে ঝুপ করে মূল অংশে চলে গেলে খাটনি কম পড়ে... খাইছে

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এটা ইশতি স্টাইল, তা বুঝে গেছি হাসি

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

বিমানে যে কবে চড়বো, তবেই বুঝতে পারবো বিমানবালা'রা কেমন। ততদিন শুধু আফসোস করতে হবে।

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

আমার কথাও তাই...

লেখা বুঝতে সমস্যা হয়নি...দারুন উপভোগ্য...

--------------------------------------------------
একটি কথার দ্বিধাথরথর চূড়ে ভর করেছিল সাতটি অমরাবতী...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

রানা মেহের এর ছবি

প্লেইন জার্নিটার মতো ছোট হয়ে গেল এতো ভালো লেখাটাও ইশতি
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

প্লেনে চড়ার স্বপ্ন আমারও অনেক ছিল, পান্থদা। এখন শখ মিটে গেছে। উড়তে মজা লাগে, কিন্তু উঠার আগে এত রকম যন্ত্রণা, আর নামার পর এত রকম হাঙ্গামা!

বালিকাকে ধন্যবাদ। বোধগম্য রাখার চেষ্টা তো সবসময়ই থাকে, তবু কোন কোন দিন ব্যাটে-বলে হয় না।

রানাপু, পুরনো কথোপকথনগুলো বের করে দেখলাম। আকারে কিন্তু এবারেরটা আগেরগুলোর সমানই। তবে এবারে লঘু সংলাপ অনেক ছিল। হয়তো সেকারণেই ছোট লেগেছে। ফুরুৎ হয়ে গেছে আর কি। পরে কখনও পুষিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা রইলো।

অতিথি লেখক এর ছবি

শুধু ঝরঝরে নয়,,একদম আলোকিত ঝলমলে গদ্য,,
পাঠ করে একটা পূর্ণতার রেশ পেলাম!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।