জাহান মণি, সোমালি জলদস্যু আর বড়দিনের আগুন

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি
লিখেছেন যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (তারিখ: শনি, ২৫/১২/২০১০ - ৬:৫৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

টিভিতে নিয়মিত অনুষ্ঠান প্রচারের মাঝেই নিচ দিয়ে ব্রেকিং নিউজ টা দেখলাম, ঢাকা শহরে আজকে রাতে আবার আগুন। ক্ষিলক্ষেতের কয়েল ফ্যাক্টরিতে কেমিকেল বিস্ফোরণে ইতিমধ্যেই নিহত পাঁচজনের লাশ উদ্ধার, আর ফায়ার ব্রিগেডের অন্তত ৬টি ইউনিটের তখনো আগুন নেভানোর প্রচেষ্টার আপডেট নিয়ে বিডিনিউজে কিছু নতুন তথ্য পাই কিনা দেখতে ঢুকেই হেডলাইনে চোখে পড়ল -
মুক্তিপণ দিয়ে সোমালি জলদস্যুদের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে বাংলাদেশি নাবিকদের উদ্ধারের পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

আজকে ২৫শে ডিসেম্বর, ঠিক ২০ দিন আগে সোমালি জলদস্যুদের হাতে হাইজ্যাক হওয়া বাংলাদেশী জাহাজ এমভি জাহান মণিকে নিয়ে ঠিক কী ঘটছে তা জানতে ইচ্ছা হচ্ছে।
এমভি জাহান মণি একটি বাংলাদেশী জাহাজ, যার ক্রিউরাও বাংলাদেশী। জাহাজটি অপারেট করে ব্রেভ রয়াল শিপিং ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড (BRSML) ২, ৩। (যদিও প্রথম আলো লিখছে জাহাজের মালিক এস আর শিপিং) । বিবিসি জানাচ্ছে জাহান মণি এবার ইন্দোনেশিয়া থেকে ৪৩,০০০ টন (প্রথম আলোর মতে ৪১,০০০টন) নিকেল আকরিক বহন করে গ্রীসে নিয়ে যাচ্ছিল। জাহাজের মালিক ব্রেভ রয়ালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানকে ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস বলছে - Mohammed Shajahan, owner of leading mild steel producing company KSRM। আমি অনলাইনে KSRM-এর সন্ধান না পেলেও ব্রেভ রয়ালের একটা ওয়েবসাইট খুঁজে পেলাম, তবে এখানে বলা হচ্ছে সাইটটি একদম সম্প্রতি রিলিজ হয়েছে, আর তেমন কোন প্রয়োজনীয় তথ্য দেয়া নেই।

এমভি জাহান মণিতে ক্রিউ আছেন ২৫ জন, আর আছেন চিফ ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রী৪, ৭। ৫ ডিসেম্বর বিকেলে ভারতীয় উপকূলের প্রায় ৫৫০ মাইল দূরত্বে অপহৃত হবার পরে ৮ তারিখের প্রথম আলোর সংবাদ জানাচ্ছে -

আরব সাগরের ভারতীয় উপকূলে জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি জাহান মণির মালিক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আজ বুধবার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ডেকে নেওয়া হয়েছে। সেখানে মন্ত্রীসহ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক হয়। এতে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল বজলুর রহমানসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

একই সংবাদে আরো বলা হচ্ছে -

ঢাকার বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে জাহাজটির সর্বশেষ অবস্থান এবং কীভাবে জাহাজ ও নাবিকদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা যায়, তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। কিন্তু আলোচনায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

অপহরণের তিনদিন পরে তখনো জাহাজটি সোমালিয়ার পথে ছিল আর জলদস্যুদের তরফ থেকে কোন যোগাযোগ করা হয় নাই।

সংবাদে আরো জানানো হয় -

জাহাজের উপগ্রহ ফোন-ফ্যাক্সসহ অবস্থান নির্ধারকযন্ত্র (এলআরআইএস) এখনও সচল আছে। এই এলআরআইএসের সাহায্যে জাহাজটির গতিবিধির ওপর জাহাজের মালিক প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং থেকে নজর রাখা হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রায়ই ওই জাহাজের উপগ্রহ ফোন ব্যস্ত পাওয়া যাচ্ছে। এতে মনে হচ্ছে, জলদস্যুরা কারও সঙ্গে ফোনে কথা বলছে। তবে এসআর শিপিং কিংবা অন্য কোনো নম্বর থেকে টেলিফোন করা হলেও ওই প্রান্তে কেউ ফোন ধরছেন না।’

এর পরে অপহরণের প্রায় এক সপ্তাহ পরে ১২ ডিসেম্বর জাহাজের সাথে সর্বপ্রথম যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব হয় জাহাজের স্যাটেলাইট ফোনে। সংবাদে বলা হচ্ছে -

এ সময় জাহাজের ক্যাপ্টেন ফরিদ আহমেদ এবং প্রধান প্রকৌশলী মতিউল মাওলার স্ত্রী রুখসানা গুলজারের সঙ্গে কথা হয়।
জাহাজের মালিক মো. শাহজাহান বলেন, জাহাজের ক্যাপ্টেন ও প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রী গুলজার তাঁকে জানিয়েছেন, তাঁরা সবাই সুস্থ আছেন। জলদস্যুরা তাঁদের সঙ্গে ভালো আচরণ করছে। তাঁদের খাওয়া-দাওয়া এবং নামাজ আদায়ের জন্য ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।
জাহাজের ক্যাপ্টেন ফোনে জানিয়েছেন, জাহাজে বর্তমানে ২০-২৫ জন জলদস্যু আছে। তারা সবাই কৃষ্ণাঙ্গ।

এরই মাঝে এপি জানাচ্ছে ১০ তারিখে অপহৃত হয় আমারিকার অপারেটেড লাইবেরিয়ান কার্গো জাহাজ এমভি পানামা ২৩ জন ক্রিউ নিয়ে, আবারো ভারতীয় উপকূলের প্রায় ৫৫০ মাইল দূরে। আর ১১ তারিখে অপহৃত হয় লাইবেরিয়ান মালিকানার পানামান কার্গো জাহাজ, এমভি রেনুয়ার। (জাহাজের নামও বিভিন্ন দেশের নামে, মালিকানাধীন দেশ, আর অপারেট করে যে দেশগুলো সবার নাম নিয়ে বেশ কনফিউজিং হওয়ায় উইকির ১০ নম্বর রেফারেন্স দেখতে অনুরোধ রইল)।

১৪ই ডিসেম্বর সংবাদে জানানো হয় যে জলদস্যুরা প্রায় ৬২ কোটি টাকা, বা ৯০ লক্ষ মার্কিন ডলার মুক্তিপণ দাবি করেছে। প্রথম আলো জানাচ্ছে

নাবিকদের স্বজন ও অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, সোমালিয়ার জলদস্যুরা নিজেদের মোবাইল ফোন থেকে জাহাজের অন্য নাবিকদের বাংলাদেশে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করে দিচ্ছে। তারা মুক্তিপণের অর্থ দ্রুত পৌঁছে দিতে তাঁদের মাধ্যমে স্বজনদের চাপ দিচ্ছে। জলদস্যুরা ৯০ লাখ মার্কিন ডলার (৬২ কোটি টাকা) মুক্তিপণ চাইছে বলে জাহাজের নাবিকেরা তাঁদের স্বজনদের জানান।

সূত্র জানায়, জলদস্যুরা নাবিকদের সঙ্গে তেমন খারাপ আচরণ করছে না। তবে ২৬ জন নাবিককে একটি কক্ষে আটকে রেখে সশস্ত্র পাহারা দিচ্ছে। সবাইকে অল্প অল্প শুকনা খাবার দেওয়া হচ্ছে। জাহাজে আর মাত্র পাঁচ দিনের খাবার ও জ্বালানি আছে। খাদ্য ও জ্বালানি শেষ হলে বন্দীদের মুক্তি দেওয়া কঠিন হবে বলে জলদস্যুরা সতর্ক করে দিচ্ছে।

রোববার রাতে ময়মনসিংহের উর্মিলা শারমিন তাঁর স্বামী জাহাজের দ্বিতীয় প্রকৌশলী আবুল বাশারের সঙ্গে কথা বলেন। প্রায় ১০ মিনিটের আলাপে বাশার তাঁকে জানান, মুক্তিপণের ৯০ লাখ মার্কিন ডলার জলদস্যুদের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে জাহাজ মালিক ও সরকারকে জানাতে বলেছেন। দ্রুত টাকা না দিলে বিপদ হবে বলেও তিনি জানান।

জাহান মণির ইঞ্জিন ক্যাডেট শাহরিয়ার রাব্বীর (২২) মা বিলকিস রহমান বলেন, ‘রোববার আমার ছেলে টেলিফোন করে অনেক কান্নাকাটি করেছে। মুক্তিপণের টাকা দ্রুত জলদস্যুদের হাতে তুলে দিতে অনুনয়-বিনয় করেছে। না হলে দস্যুরা তাদের ওপর নির্যাতন করবে।’ তিনি বলেন, জলদস্যুদের মোবাইল ফোন থেকে ছেলে তাঁকে ফোন করেন।

আমাদের ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি জানান, জাহাজের নাবিক ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরবড়ালীর এমদাদ হোসেন রোববার রাতে তাঁর স্ত্রী আলেয়া আক্তারের সঙ্গে কথা বলেছেন। জলদস্যুরা মোবাইল ফোনে কথা বলতে তাঁকে পাঁচ মিনিট সময় দেয়। তিনিও ৯০ লাখ মার্কিন ডলার মুক্তিপণ চাওয়ার বিষয়টি আলেয়াকে জানিয়ে বলেন, তাঁরা এখন সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে বন্দী। ২৬ জনকে একটি কক্ষে রাখা হয়েছে।

কিন্তু আত্মীয়-স্বজনদের সাথে ফোনে যোগাযোগের পরে চাঞ্চল্য বাড়তে থাকে, আটকে পড়া নাবিকদের দেশে থাকা আত্মীয় পরিজনেরা আরো অস্থির হতে থাকেন। তাঁরা সরকারকে এই সমস্যার দ্রুত সমাধানে অনুরোধ জানাতে থাকেন। ১৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেন অপহৃত নাবিকদের স্বজনেরা।

মানববন্ধন থেকে এমভি জাহান মণির নাবিকদের উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। মানববন্ধনে বিলকিস রহমান সাংবাদিকদের বলেন, চার-পাঁচ দিন পর জাহাজের খাবার শেষ হয়ে যাবে। এ সময়ের মধ্যে সরকার ও জাহাজের মালিককে তাঁদের উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে তাঁরা বাঁচতে পারবেন না।
জাহাজের তৃতীয় কর্মকর্তা কামরুল হোসেনের স্ত্রী মিনা পারভীন চোখ মুছতে মুছতে বলেন, গত রোববার সন্ধ্যায় ফোন করে তাঁর স্বামী শুধু দোয়া করার জন্য বলেছেন। দেড় মিনিট পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মায়ের সঙ্গে ছেলে মইন হাসানও বাবাকে উদ্ধারের আকুতি জানাতে মানববন্ধনে অংশ নেয়। - ১৫ ডিসেম্বর, প্রথম আলো

সোমালিয়ান জলদস্যুদের এই জাহাজ অপহরণের ঘটনা গুরুতরভাবে ঘটছে আজকে প্রায় ছয় বছর ধরে। উইকিপিডিয়ায় ধারাবাহিকভাবে ২০০৫ থেকে ২০১০ পর্যন্ত অপহৃত জাহাজের তালিকা, মুক্তিপণ ও তাদের মুক্তিলাভের ইতিহাস তালিকাবদ্ধ করা আছে১০-১৩। দেখা যাচ্ছে, মুক্তিপণ দেয়া সাপেক্ষে এক সপ্তাহের কম সময় থেকে শুরু করে কয়েক মাসের মধ্যে, সাধারণত এক বছরের কম সময়ের মাঝে অপহৃত জাহাজকে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে ক্রিউ সহ, ক্যাজুয়ালিটির হার সে হিসেবে বেশ নিম্ন। মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে এক থেকে কয়েক মিলিয়ন।

অপহৃত জাহজের মাঝে ইউরোপিয়ান, এশিয়ান জাহাজ সর্বাধিক হলেও ইতিমধ্যেই আমেরিকান কিছু জাহাজও অপহৃত হয়েছে। আবার কিছু জাহাজের অপহরণ জাহাজের ক্রুদের সাহসিকতা আর অ্যান্টি-পাইরেসি ট্রেনিং থাকার কারণে সফল হয়নি। এরকম একটা হল ডেনিশ মালিকানাধীন Maersk Alabama যাতে ছিল ২১ জন আমেরিকান ক্রিউ। অপহরণের চেষ্টা চালানো হয় মোগাদিসুর প্রায় ৪০০ মাইল পূবে, ৮এপ্রিল, ২০০৯। এটা ছিল সেই সপ্তাহের অপহৃত ষষ্ঠ জাহাজ! তবে ক্রিউদের সকলেরই ছিল অ্যান্টি পাইরেসি ট্রেনিং, যেখানে তারা হালকা অস্ত্র চালনা থেকে শুরু করে ফার্স্ট এইড সবরকম ট্রেনিং পেয়েছিলেন। শুরুতে জাহাজ জলদস্যুদের দখলে চলে গেলেও, চিফ এঞ্জিনিয়ার মাইক পেরির নেতৃত্বে জাহাজ দখলের প্রথম অবস্থাতেই ক্রিউরা এঞ্জিনরুমের দখল রেখে অবস্থান নেন। ক্যাপ্টেন রিচার্ড ফিলিপস অবশ্য বন্দী হন জলদস্যুদের হাতে। এঞ্জিনরুমের দখল না থাকা জাহাজ নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে, জলদস্যুদেরকে আক্রমণ শুরু করেন ক্রিউরা। একসময় জলদস্যুদের নেতাকে বন্দী করে ক্যাপ্টেনের সাথে বন্দী বিনিময় প্রক্রিয়া চালাবার চেষ্টা করলেও তা কেঁচে যায়। কিন্তু অনেকটাই অ্যাকশন থ্রিলার সিনেমার মতো করে একসময় জাহাজের পূনর্দখল নিয়ে নেয় ক্রিউ, আর ইতিমধ্যেই কাছে থাকা ইউ এস ডেস্ট্রয়ার USS Bainbridge চলে আসে উদ্ধারে। ক্যাপ্টেনকে জিম্মি করে পালিয়ে যায় জলদস্যুরা। ১২ এপ্রিল ইউএস নেভি সিলস আর মেরিন কর্পসের সহায়তায় উদ্ধার পান ক্যাপ্টেন ১১, ১৪। (উইকি এও বলেছে যে এই কাহিনি নিয়ে কেভিন স্পেসির প্রোডাকশনে নাকি একটা সিনেমা বেরুবার কথা ছিল এই ২০১০)!

প্রতি বছর অপহরণের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে, আর অপহৃত জাহাজগুলো খনিজ পদার্থ থেকে শুরু করে খাদ্য বা যাত্রীবাহীও। ইউরোপিউওন ইউনিয়ন, ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন, ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম থেকে শুরু করে আমেরিকান সরকার এ ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করে চলেছে। সর্বশেষ অপহৃত হয়েছে ২০ ডিসেম্বর ইউ এ ই অপারেটেড পানামার কার্গো জাহাজ ওরনা। ২০১০-এ অপহৃত অধিকাংশ জাহাজই এখনো মুক্তি লাভ করে নাই। এপি বলছে এখন সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে বন্দী আছে প্রায় ৫০০ ক্রিউ আর ২০টির উপরে জাহাজ। দেখা যাচ্ছে এ ব্যাপারে সোমালিয়ান সরকার কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আর এভাবে আমাদের দেশের জাহাজ অপহরণের ঘটনা একেবারেই প্রথম। সে হিসেবে এই পুরো ঘটনাটি নিয়ে আমাদের মিডিয়া তুলনামূলকভাবে যেন অনেক বেশি নির্লিপ্ত। সঠিক আপডেট জানা যাচ্ছে না, আর সরকার বা জাহাজ মালিক কর্তৃপক্ষ আসলে ঠিক কী করতে চাচ্ছেন? বা আন্তর্জাতিক মহলের সাহায্য নিয়ে পুরো বিষয়টি আরো দ্রুত নিষ্পন্ন করা যাচ্ছে না কেন? ২৪ ডিসেম্বরের বিডিনিউজের সংবাদটির দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যাচ্ছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সাথে আলোচনায় তারা উপদেশ দিয়েছে, জলদস্যুদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে মুক্তিপণ কমিয়ে এনে তা দিয়ে জিম্মিদেরকে মুক্ত করতে –

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ঢাকাকে বলেছে, জলদস্যুরা এই সময় অল্প পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে নাবিকদের ছেড়ে দিতে পারে।
কারণ এই সময়টায় তারা সাধারণত আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্র আরো বলেছে, জলদস্যুদের একমাত্র উদ্দেশ্য হচ্ছে মুক্তিপণ আদায় করা। তারা বাংলাদেশি নাবিকদের সঙ্গে ভালো আচরণ করছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরো গত ১৫ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ মিশনকে এই পরামর্শ দেয়।

তার মানে কি দাঁড়ায় আসলে? আমেরিকাও পরোক্ষভাবে জলদস্যুবৃত্তিই সাপোর্ট করছে? আচ্ছা, আমেরিকা আমাদেরকে টাকা দিয়ে দিতে বলেছে, বেশ, আমাদের সমস্যাটার দিকে দেখি তাহলে, এসব ক্ষেত্রে মুক্তিপণ আসলে কাদের দেবার কথা? দেখা যায়, কখনোই সুস্পষ্টভাবে এগুলা জানা না গেলেও, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা হয় মালিক পক্ষ, দেশ না। তবে দেশ নিশ্চয়ই সেইসব ট্র্যান্সাঙ্কশন যেন ঠিকমত ঘটে, দেশের নাগরিকেরা যাতে দেশে অক্ষত ফিরে আসতে পারেন তা দেখে। এখন পুরনো ইতিহাস থেকে দেখা যাচ্ছে, মুক্তিপণ হাতে পেলে সোমালি জলদস্যুরা তাদের জিম্মিদেরকে জাহাজসহ ছেড়ে দেয় বটে, বা জিম্মিদের নিহত হবার ঘটনা তুমুনামূলকভাবে কম হলেও আগে এমন ঘটেছে। কিন্তু তার আশায় থেকে ঠিক কতটা বিলম্ব করতে থাকা যুক্তিযুক্ত? সোমালি জলদস্যুরা বেশ ভালো মতোই অস্ত্রে সজ্জিত১৫, আর তাদের রণকৌশলও ফেলনা নয়। বিশেষ করে তারা যেভাবে সফলতার সাথে ক্রমান্বয়ে জাহাজ দখল করে মুক্তিপণ আদায় করে চলেছে।

আজকে ক্ষিলক্ষেতের আগুনের ঘটনাটা আবার অনেক মন খারাপ করে দিল। নিমতলি থেকে এই বছরের শেষ পর্যন্ত শুধু ঢাকাতেই বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটল এটা দিয়ে মোট কয়টা এবছর? আছে এমাসেই নরসিংদির মুখোমুখি রেল দুর্ঘটনা থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম ইপিজেডের ঘটনা। বছরের আর বাকি পাঁচটা দিন... আজকে সারা বিশ্বে একটা উৎসবের দিন... এমনটা চাওয়া হয়ত খুব ভুল যে সোমালিয়ার নিম্নআয়ের যে জনগোষ্টি তারা রেহাই পাবে দারিদ্রের হাত থেকে আগামি বছরেই, কিন্তু এই জলদস্যুবৃত্তির আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধান করতে এক বছরের বেশি কি লাগা উচিত একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর? আর এটা আশা করার স্পর্ধা হয়ত করাই যায় যে, বছর শেষ হবার এই পাঁচদিনের মাঝেই ২৫ জন ক্রিউ ও ১ জন সাধারণ নাগরিকসহ জাহান মণি দেশে ফিরে আসবে নিরাপদে?

তথ্যসূত্রঃ
১) বিডিনিউজ
২) বিবিসি
৩। রয়টার্স
৪) এপি
৫) ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস
৬) http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-12-24/news/114365
৭) http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-12-24/news/115356
৮) http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-12-24/news/115659
৯) http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-12-24/news/115947
১০) উইকিপিডিয়ায় সোমালি জলদস্যু দ্বারা ডিসেম্বর ২০১০-এ অপহৃত জাহাজের তালিকা
১১) উইকিপিডিয়ায় ২০০৯-এ অপহৃত জাহাজের তালিকা
১২) উইকিপিডিয়ায় ২০০৮-এ অপহৃত জাহাজের তালিকা
১৩) উইকিপিডিয়ায় ২০০৫-২০০৭ পর্যন্ত অপহৃত জাহাজের তালিকা
১৪) উইকিতে MV Maersk Alabama অপহরণ আর্টিকেল
১৫) উইকিপিডিয়া


মন্তব্য

কৌস্তুভ এর ছবি

আমার যতদূর মনে পড়ছে ভারত একবার সেনার সাহায্য একটা জাহাজ ছাড়িয়ে এনেছিল। আমেরিকাও এক-আধবার জলদস্যুজাহাজ ডুবিয়েছে বলেই মনে হয়। এই সোমালি জলদস্যুদের ধরে উত্তমমধ্যম না দিলে কিছুই হবে না, মুক্তিপণ দিয়ে দিয়ে কতদিন চলবে?

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

এটা মনে হয় এমভি আবুল কালাম আজাদ ছিল, ২০০৯-এরই জানুয়ারিতে।
আমেরিকা বেশ কবারই নিজেদের ক্রিউ আলা জাহাজ উদ্ধার করেছে, বা জলদস্যুদের আক্রমণ প্রতিরোধ করেছে সফলভাবে। উইকির তালিকা দেখলে বেশ ভালো একটা সিনোপ্সিস পাওয়া যাচ্ছে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

তাসনীম এর ছবি

এই পুরো ঘটনাটি নিয়ে আমাদের মিডিয়া তুলনামূলকভাবে যেন অনেক বেশি নির্লিপ্ত।

এটা আমিও লক্ষ্য করেছি। তোমার এই পোস্ট এই বিষয়ে যেকোন মিডিয়ার চেয়ে তথ্যবহুল।


মুক্তিপণ দিয়ে সোমালি জলদস্যুদের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে বাংলাদেশি নাবিকদের উদ্ধারের পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের একটা নীতি ছিল যে তারা সন্ত্রাসীদের সাথে কোনো "ডিল" করে না, কিন্তু বাস্তবে এই ডিল তারা হরদম করছে আর অন্যদের করতেও উৎসাহিত করছে। হয়ত ওরা অঙ্ক কষে দেখেছে যে একটা সামরিক অভিযান চালাতে যা খরচ তারচেয়ে বরং টাকা দিয়ে দেওয়াই সস্তা...পুঁজিবাদ বলে কথা।

ক্ষিলক্ষেতের আগুনের ঘটনাটা তোমার ব্লগ থেকেই জানলাম। অগ্নি দুর্ঘটনাতে খুব প্রিয় একজনকে হারিয়েছি, এই সব খবর শুধু সেই দুঃসহ স্মৃতিগুলোই বের করে আনে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ তাসনীম ভাই।

যুক্তরাষ্ট্রের একটা নীতি ছিল যে তারা সন্ত্রাসীদের সাথে কোনো "ডিল" করে না, কিন্তু বাস্তবে এই ডিল তারা হরদম করছে আর অন্যদের করতেও উৎসাহিত করছে। হয়ত ওরা অঙ্ক কষে দেখেছে যে একটা সামরিক অভিযান চালাতে যা খরচ তারচেয়ে বরং টাকা দিয়ে দেওয়াই সস্তা...পুঁজিবাদ বলে কথা
চলুক একদম একমত। আমিও এই কথাগুলো লিখতে গিয়েছিলাম। কিন্তু আপনার মতো এত সুন্দর করে বলতে পারতাম না তাই লেখা হয় নাই।

ক্ষিলক্ষেতের আগুনটা স্রেফ বছর শেষের আরেকটা আগুনই তো! এমন আর কী বলেন? ইদানীং দুপুর বা রাতের খাবারের সময় টিভিতে কোন একটা চ্যানেলের প্রচারিত খবর ছাড়া থাকে, আর মাঝে মাঝে অনলাইন নিউজপেজ গুলোতে চোখ বোলানোর বদভ্যেস হয়েছে একটা, তাই বাজে খবরগুলো আমারই আগে চোখে পড়ে মনে হয়। নিমতলির আগুনের খবরটাও অনলাইন থাকা ঢাকার অনেক বন্ধুকে আমিই আগে জানিয়েছিলাম। খারাপ খবরের ডিপো হয়ে যাচ্ছি মনে হয়। আজকাল কেউ কেউ আমার অতি সাধারণ/আলতু-ফালতু বিভিন্ন স্ট্যাটাস দেখেও দেখি জিজ্ঞেস করছেন - আজকে আবার কী হল দেশে? মন খারাপ

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

তানভীর এর ছবি

তথ্যবহুল পোস্ট চলুক

তবে একটু সমালোচনাও করি। সোমালিয়রা কেন জলদস্যু হলো সে বিষয়ে আলোকপাত না করায় পোস্টটা একটু একপেশে হয়ে গেছে। পড়তে তাই অনেকটা ইজরায়েলি পত্রিকায় প্যালেস্টাইনিদের হামলার বিবরণের মতো হয়ে গেছে। ওরা হেন করেছে, তেন করেছে, ওরা এত বড় সন্ত্রাসী- কিন্তু কেন তারা সন্ত্রাসী সে বিষয়ে কোনো বাতচিত নাই। অবশ্য এগুলো জানা কথা, তাই বাতচিতের প্রয়োজনও নাই।

সোমালিয়রা একদিনে জলদস্যু হয় নি। গরীব দেশ হওয়ার সুবাদে দিনের পর দিন সোমালিয়ার উপকূলে বিদেশী জাহাজ তেজস্ক্রিয় দ্রব্য নির্গত করে গেছে। তাদের মৎস্যসম্পদ লুন্ঠন করেছে। নিঃস্ব সোমালিয় জেলেরা একদিন রুখে দাঁড়িয়েছে। তাদের জলদস্যু নাম আমরা দিয়েছি। কিন্তু যে জাহাজগুলো (এবং তার মালিক দেশগুলো) তাদের সীমানায় নিয়মিত তেজস্ক্রিয় দ্রব্য ফেলে যাচ্ছে, তাদের সম্পদ লুট করছে- যেগুলোকে লুন্ঠনের মাধ্যমে নিজের দেশ বাঁচাতে, জীবিকা বাঁচাতে এইসব সোমালিয় জেলেদের দস্যুতায় হাতেখড়ি - তাদের কী নাম? তারা তো সব মহান গণতন্ত্র কিংবা আরো কোনো মহান তন্ত্রমন্ত্রের সেবক!

আপনি লিখেছেন- কিন্তু এই জলদস্যুবৃত্তির আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধান করতে এক বছরের বেশি কি লাগা উচিত একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর?

এরা যে সমাধান করবে, এদের কি সেই মুখ আছে! সমাধান হলে এসব তেজস্ক্রিয় দ্রব্য তো নিজের দেশেই ফেলতে হবে।

বাংলাদেশের যে জাহাজটি এদের হাতে পড়েছে তার নাবিকদের জন্য আমার সহানুভূতি রয়েছে। কিন্তু যাদের কারণে এসব ঘটনা ঘটে চলেছে তাদেরই আসলে মুক্তিপণের অর্থ দেয়া উচিত। সোমালিয় জলদস্যুদের কাজ অবশ্যই সমর্থনযোগ্য নয়। তবু মাঝে মাঝে অবস্থা দেখে মনে হয় এইসব অনাচারেরও প্রয়োজন আছে। আমি যদি সোমালিয়ার কোনো জেলে হতাম, এরকম পরিস্থিতিতে জলদস্যু হতে হয়ত পিছপা হতাম না।

সোমালিয়ার জলদস্যুতা নিয়ে উইকি নিবন্ধটি পড়ে দেখতে পারেন।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

কিন্তু আসল ঘটনা হচ্ছে সোমালিয়ার জলদস্যুতা সোমালিরা নিয়ন্ত্রণ করেনা।

======================================
অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ধন্যবাদ তানভীর ভাই।

আমি কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের এই প্রথমবারের মতো ছিনতাই হওয়া জাহাজ, তাতে আজকে ২০ দিন ধরে জিম্মি ২৬ জন বাংলাদেশী নাগরিক, মুক্তিপণ, এদেরকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্যে মালিক বা সরকার পক্ষের কী অবস্থান, আর আমাদের সুযোগ্য মিডিয়ার অবস্থানটা কী, তা বোঝার চেষ্টাতেই এই পোস্টটা লিখেছি।

কাজেই হ্যাঁ, পোস্টটা একপেশেই। কারণ আমার উদ্দেশ্য ছিল সোমালি জলদস্যুদের ইতিহাস তুলে ধরা নয়, আমাদের জাহাজ আর বন্দী নাগরিকদের নিয়ে আসলে কী ঘটছে তা নিয়ে অন্য সবাই কী ভাবছেন তা আলোচনায় উঠে আসুক সেটা।

সোমালি জলদস্যুদের সম্পর্কে দেয়া আপনার উইকিলিঙ্কটা আমি নিজেই রেফারেন্সে ব্যবহার করেছি (১৫ নং দ্রষ্টব্য)।

সোমালিয়রা একদিনে জলদস্যু হয় নি।
আর নিচে রাতঃস্মরণীয় ভাইয়ের করা -
কিন্তু আসল ঘটনা হচ্ছে সোমালিয়ার জলদস্যুতা সোমালিরা নিয়ন্ত্রণ করেনা।
ঠিক কথা।

আমি নিজেও সোমালিয়ার ইতিহাস, বর্তমান অবস্থা আর সোমালি যে জনগোষ্ঠী এই দস্যুবৃত্তিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে, বা পড়ছে তা নিয়ে সংক্ষেপে লিখব ভেবেছিলাম, কিন্তু সংবাদ কোট আর আমার যে দিকে ফোকাস করার ইচ্ছা ছিল তা নিয়ে লিখতে গিয়ে দেখলাম এই পোস্টটা এমনিতেই অনেক বড় হয়ে গেছে। বরং এগুলো নিয়ে কখনো আলাদাভাবে পোস্ট দেব সময় পেলে, তা করতে গেলে আমার নিজেরো আরো পড়ালেখা করা দরকার এ ব্যাপারে। তবে আপনিও কিন্তু এ ব্যাপারে পোস্ট দিতে পারেন একটা। আমার জানার আগ্রহ আছে এ ব্যাপারে। একই অনুরোধ রইল রাতঃস্মরণীয় ভাইকেও।

গত সপ্তাহখানেক ধরেই খাবার টেবিলের আলোচনায় বাবার সাথে বিষয়টা উঠছিল, আমি আসলে জেনেইছি তার কাছে, মিডিয়ায় খবরটা চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল। আর খেয়াল করার পর থেকেই মিডিয়ার দায়সারা (ভুলভ্রান্তিগুলো আর নাই তুলি, সেতো যেমন আলু পেপারের জন্মলগ্ন থেকেই ট্রেডমার্ক) রিপোর্টিং বেশ বিরক্তই লাগছে। সমস্যাটা কোন্‌খানে? মালিক পক্ষ চাচ্ছেনা এটা পাবলিসাইজড হোক নেগেটিভ পাব্লিসিটির ভয়ে? নাকি সরকার উদ্যোগী হতে গরজ করছেনা? কালকে রাতে ক্ষিলক্ষেতের অগ্নিকাণ্ড দেখে মন খারাপ হলো, আর মেজাজ এমনিতেই খারাপ, বিডিনিউজে খবরটা দেখলাম, আমাদের দেশের পলিসি কী হবে তাতো বড় ভাই আমেরিকা বলেই দিয়েছেন, এখন এ বিষয়ে আসলে কী ঘটছে তা জানতে মন চাইল। সারা রাত পুরনো খবর আর বিভিন্ন লিঙ্ক টিঙ্ক ঘেঁটে এটা দাঁড় করালাম। মিডিয়ার অনাগ্রহ দেখে মনে হলো সবাই আদৌ জানে কিনা ঘটনাগুলো? তাই এই পোস্ট। আর সচলায়তনের পাঠকেরাও যদি এখানে মন্তব্যে আলোচনা করেন, তাদের চিন্তাভাবনাগুলো শেয়ার করেন ভালো হবে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অতিথি লেখক এর ছবি

তথ্যবহুল পোস্ট চলুক

সময় করে পুরোটা পড়বো।

---আশফাক আহমেদ

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

বছর দুয়েক আগে অংশ নেয়া একটা কুইজশোর কথা মনে পড়ে গেলো। প্রশ্নে উদ্ধৃত করা হয়েছিলো একজন জলদস্যুর সাক্ষাৎকার, যিনি বলেছিলেন- " এ কাজে পয়সা আছে, তাই এ কাজ করি। "

আপনার লেখাটা চমৎকার গোছালো হয়েছে। শ্রমসাধ্য লেখা।

তানভীর ভায়ের মন্তব্য পড়ে আবার বুক্যানিয়ারদের কথা মনে পড়ে গেলো।

_________________________________________

সেরিওজা

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ধন্যবাদ সুহান।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

ধন্যবাদ এই তথ্যবহুল লেখাটার জন্যে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই আইফোনে পড়েছিলাম তবে তখন মন্তব্য করতে পারিনি ব্যাস্ততার জন্যে।

আমি খবরটা জানতে পারি ৭ তারিখে এক সাবেক সোমালি সহকর্মীর (সে একজন সিকিউরিটি এ্যানালিষ্ট) মেইল থেকে-

From: Ixxxxx
Date: Tue, Dec 7, 2010 at 1:18 PM
Subject: It's Dxxxx
To:

Dear Axxx.

It's quite some time now since we have not contacted. Am still in Galkacyo with NSP/DRC. Galkacyo is tense. I just wanted to say you hello and may be share with you some inform regarding a Bangladesh hijacked ships by Somali pirates, now heading to Garacad coast of eastern Mudug.

Thanks wth regards.

Dxxxx

(মেইলের নাম-ঠিকানাগুলো একটু বদলে দিলাম, ক্ষমাপ্রার্থী)

আমার মন্তব্যের উদ্দেশ্য হচ্ছে পাইরেসির সাথে আমেরিকার সংশ্লিষ্ঠ ভূমিকা কি তা নিয়ে। আগেও দু'একটা লেখায় আমার কিছু কিছু অভিজ্ঞতা সংক্ষিপ্ত আকারে মন্তব্যে এসেছে। একটা ব্লগও দিয়েছিলাম, পড়তে পারেন, সোমালি জলদস্যু এবং ওরা চার হতভাগা।

মূলতঃ সোমালিয়ার জলদস্যুতা নিয়ন্ত্রণ হয় বাইরে থেকে। আমি এটা ভ্যারিফাই করার জন্যে দলিলপত্রের খোঁজ করিনি। গোটা সোমালিয়ার মানুষ যা বিশ্বাস করে আমি তা আর ভ্যারিফাই করার প্রয়োজন অনুভব করিনি। আমেরিকার এন্টি টেরোরিজম কর্মকান্ড মূলতঃ এই অঞ্চলে নিয়ন্ত্রিত হয় জিবুতি থেকে। সামরিক মহড়া এবং অভিযানগুলোও জিবুতি থেকে পরিচালিত হয়। এবছরের মাঝামাঝি হঠাৎ করে বসাসো বন্দর কাশিমে প্লেন থেকে নেমেই দেখলাম ইউএস নেভির বিশাল এক ফ্রিগেট সাগরে ভাসমান। আমি আগেই শুনেছিলাম যে ইউএস নেভি গালফ অব এডেন এবং রেড সি তে এন্টি পাইরেসি মুভমেন্ট শুরু করেছে। আমাকে নিতে আসা আমাদের সিকিউরিটি অফিসার (রিটায়ার্ড কর্ণেল, দেশে বিদেশে কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন) একটা গালি দিয়ে বললেন যে ওরা এসেছে পাইরেসিকে সহায়তা করতে। কারণ ওদের উপস্থিতির পর পাইরেসির হার বেড়ে গেছে। কথাটা একেবারে ফেলে দেওয়ার মতো না, অন্ততঃ পাইরেসির হার দেখলে ত'ই দেখা যায়। যাহোক, ইউএস আর্মি সোমালিয়া সরকারকে চাপ দিয়ে কোষ্টাল শহর বসাসোতে "এন্টি পাইরেসি ক্যাপাসিটি বিল্ডিং সেন্টার" নামে ঘাঁটি স্থাপন করছে। এতে আমার ক্ষতি হয়েছে যে আমার কুক পালিয়ে যেয়ে ওখানে আরও বেশি বেতনে চাকরি নিয়েছে।

সোমালিয়ায় প্রচুর আমেরিকান সন্দেহজনকভাবে বিশাল নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে ঘোরাফেরা করে। এরা কি করে তা কাউকে বলেনা। মূলতঃ পাইরেটস দলের লোকেরা এদের প্রোটেকশন দেয়। এরা আর্মার্ড গাড়িতে ঘোরে আর সাথে থাকে কমপক্ষে ২০ জনের বাহিনী যারা সরাসরি বা পরোক্ষভাবে পাইরেসির সাথে জড়িত। স্থানীয় মানুষের ধারণা অবশ্য এই যে এরা সোমালিয়ার খনিজ সম্পদ লুটপাটের ধান্ধায় আছে। অন্তর্কলহে সোমালিরা এখন এতোই দ্বিধা-ত্রিধা-চতুর্ধাবিভক্ত যে এসব নিয়ে মাথা ঘামানোর আর কেউ নেই। অনেকবছর আগে বিশ্বখ্যাত সিগারেট প্রস্ততকারক ফিলিপ মরিসের বাবা ডেভিড মরিস সোমালিয়ায় মাইনিং করতে যেয়ে খুন হয়েছিলেন এবং তার লাশের হদিস পর্যন্ত মিলেছিলো না। তখন সোমালিদের মাঝে ঐক্য ছিলো। সোমালিয়ার সাম্প্রতিক ফেনোমেনা হচ্ছে জলদস্যুদের সাথে আল-শাবাবের ঐক্য। আবার পুন্টল্যান্ড সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা পিআইএস আমেরিকার অর্থায়ণে চলছে। সবমিলিয়ে অবস্থা এমনই জটিল যে একটা কনক্লুশানে আসা খুবই দুরুহ যে আমেরিকা কার কার সাথে আছে আর কার কার সাথে নেই।

আমি বিরাট বড় এক পাইরেটের প্রতিবেশি ছিলাম। একরাতে ভাগযোগ নিয়ে ঘন্টাব্যাপী বন্দুকযুদ্ধ বাসার বারান্দায় দাঁড়িয়ে দেখেছি। প্রশাসন অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে। গতমাসের প্রথমদিকে পুন্টল্যান্ডের ফিসারিজ মন্ত্রীকে পাইরেটরা গারাদ শহরে ২ দিন বন্দী করে রেখেছিলো আর ৬টা টেকনিক্যাল ভেহিকল কেড়ে রেখেছিলো। গারাদ হচ্ছে একমাত্র শহর যেখানে জলদস্যুরাই সর্বেসর্বা। গরীব মানুষের কাছে তারা খুবই জনপ্রিয় দানশীলতার কারণে।

আমি কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করছি আমাদের বন্দীরা যেনো অবলম্বে মুক্তি পান। সৃষ্টিকর্তা তাদের প্রতি করুনা করুন।

======================================
অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ লেখাটা পড়ে এই তথ্যবহুল মন্তব্যটা করবার জন্যে। আমি আশা করছিলাম হয়ত সচলায়তনের লেখক পাঠকদের মাঝে কেউ কেউ থাকবেন যারা এই জলদস্যুবৃত্তি সম্পর্কে নতুন তথ্য শেয়ার করবেন। আপনার পুরনো পোস্টটা আগে চোখ এড়িয়ে গেছিল, বা তখন আগ্রহই হয় নাই দেখার, আসলে নিজেদের গায়ে আঁচ না লাগলে আমরা কদাচিৎই আগ্রহী হই বিভিন্ন জিনিস লক্ষ্য করতে। এখন একটানে পড়ে আসলাম। অনেক নতুন ধরণের বিষয় জানা হল!

আমার আবার লর্ড অফ ওয়ার সিনেমাটার কথা মনে হলো। সারা পৃথিবীর সব চেয়ে বড় গুণ্ডাটা হলো আমেরিকা। আমি যা দেখছি তা হলো ইউএস নেভি আমেরিকান ক্রিউবাহী জাহাজের প্রতিই শুধু সহায় হচ্ছে পাইরেসি রোধে। সব দেশের জন্যে কই এন্টি পাইরেসি সহায়তা প্রদান করছে? আর আমেরিকা তো বলেই দিয়েছে আমাদের জন্যে টাকা দিয়ে দেয়াই উত্তম, তাও যত দ্রুত নেগোসিয়েশন করে হয় ততো দ্রুত। সেটাও আবার জানিয়েছে ১৫ তারিখ, মানে তারপরেও আরো ১০ দিন চলে গেছে!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

রাতঃস্মরণীয় ভাই, এই বিষয়গুলো নিয়ে একটু লিখেন। কয়দিন পরপর সোমালিয়ার জলদস্যুরা আলোচনায় আসছে। তাহলে ব্যাপারটা বুঝতে সুবিধা হয়।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

জানি অনেক কিছুই কিন্তু একটু সময়াভাব যাচ্ছে। এধরণের লেখা লিখতে গেলে একটু পড়াশোনা করে জানা জিনিসও ঝালিয়ে নিতে হয়। তাছাড়া দু'একজন রিসোর্স পারসনের সাথেও একটু কথা বলে নিতে চাই। চেষ্টা করে দেখি এমন কারো সাথে একটা টেলিফোন আলাপ রেকর্ড করা যায় কিনা। অনেক ক্ষেত্রে দেখেছি ইন্টারনেটে পাওয়া তথ্য বাস্তবের সাথে জায়গায় জায়গায় ডিফার করে। আপনার কথায় মোটিভেশন পেলাম, ধন্যবাদ। কয়েকটা দিন একটু সময় দেন ভাই।

======================================
অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন ধৈর্য্য ধরতে।
আর ২৫ তারিখে বাংলাদেশ অভিমুখে ইউএই থেকে ছেড়ে আসা থাই জাহাজ এমভি থর নেক্সাস সর্বশেষ জলদস্যু শিকার।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

এই প্রথম বাংলাদেশী পতাকাবাহী জাহাজ জলদস্যুতার স্বীকার হলেও এরা জলদস্যুতার স্বীকার প্রথম বাংলাদেশী নন। এর আগেও কয়েকবার বিদেশী পতাকাবাহী জাহাজে বাংলাদেশী নাবিকরা সোমালি জলদস্যুদের দ্বারা অপহৃত হয়েছিলেন।

She said the average release time of hijacked ship in 2008 was 43 days, while it was 90 days in 2009, but it rose to 143 days in 2010. "Given the trend, it may go up in 2011 and we request everybody to have patience."

পরিসংখ্যান ঠিক আছে ধরে নিলেও বিবেচনায় রাখতে হবে যে খাবার ফুরিয়ে যাওয়ার পরের দিনগুলোতে নাবিকদের কি মানবেতর অবস্থায় কাটাতে হয়। কোনও দিন একবেলা খাবার আবার কোনও দিন তা'ও না।

যদি মুক্তিপণ দিয়েই অপহৃতদের উদ্ধার করতে হয় তাহলে দেরি কেনো? আর বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখতে হবে যে মুক্তিপণ যেনো কোন অবস্থাতেই ভূল জায়গায় চলে না যায়। এক্ষেত্রে এর আগে যারা এই মুক্তিপণ বিষয় ডিল করেছেন তাদের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে। পুন্টল্যান্ড সরকার এই বিষয়ে সবথেকে ভালো ভূমিকা রাখতে পারে বলে আমার বিশ্বাস। তাদের সাথে কূটনৈতিক পর্যায়ে যোগাযোগ করারও যেতে পারে।

======================================
অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো, সেইতো তোমার আলো।
সকল দ্বন্ধ বিরোধ মাঝে জাগ্রত যে ভালো, সেইতো তোমার ভালো।।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

পরিসংখ্যান ঠিক আছে ধরে নিলেও বিবেচনায় রাখতে হবে যে খাবার ফুরিয়ে যাওয়ার পরের দিনগুলোতে নাবিকদের কি মানবেতর অবস্থায় কাটাতে হয়।

যদি মুক্তিপণ দিয়েই অপহৃতদের উদ্ধার করতে হয় তাহলে দেরি কেনো? আর বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখতে হবে যে মুক্তিপণ যেনো কোন অবস্থাতেই ভূল জায়গায় চলে না যায়

সেটাই

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

পোস্ট আর মন্তব্যগুলা আগ্রহ বাড়ায়া দিল এই বিষয়ে। ধন্যবাদ।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হ্যাঁ, এখন আমারো আগ্রহ বেড়েছে এ বিষয়ের নিউজ ফলো করার। আগে সেভাবে খেয়াল করতাম না।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

দ্রোহী এর ছবি

এই বেশ ভাল আছি।

auto








কাকস্য পরিবেদনা

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হে হে হে! দ্রোহীদা, কথায় বলে না ignorance is bliss? ঐ আর কী!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

ওডিন এর ছবি

দ্রোহী ভাইকে ধিক্কার মুখের কথা কেড়ে নেয়ার জন্যে। দেঁতো হাসি

জোকস অ্যাসাইড, আমি খুব অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম আমাদের পত্রিকাগুলোর কেমন জানি একটা নির্লিপ্ত নির্লিপ্ত ভাব- যেন এ আর এমন কি? খিলক্ষেতের আগুন আর রূপগঞ্জে হাটুবাহিনীর তান্ডবের ব্যপারেও একইরকম দায়সারা কাজ দেখা গেছে। মনে হয় মানুষ হিসেবে আমরা অনেক শস্তা হয়ে গেছি। মন খারাপ

খেটেখুটে এইরকম তথ্যবহুল একটা লেখা দেয়ার জন্যে ধন্যবাদ।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

জীবনটা সস্তা না?? বল কী?! (আঁতকে ওঠা)

খিলক্ষেতের আগুন আর রূপগঞ্জে হাটুবাহিনীর তান্ডবের ব্যপারেও একইরকম দায়সারা কাজ দেখা গেছে।

পড়বার জন্যেও ধন্যবাদ।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

বাউলিয়ানা এর ছবি

খুব কাছের আত্মীয় সজন জাহাজী হয়ে দেশে বিদেশে ঘুরেন। ভয় লাগে মাঝে মাঝে- কার কপালে যে কী আছে!

দেশে সতভাবে উপার্জনের যে কয়টি উপায় আছে, তার মধ্যে এই জাহাজীরা বোধহয় এক নম্বরে থাকবেন। আশা করি সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সবাই এই পেশার প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করবেন।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আপনার পরিচিতজনেরা নিরাপদে থাকুন।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

এটাকে পোস্টের আপডেট মন্তব্য হিসেবে রাখতে চাচ্ছি - কেউ এর 'জবাব' হিসেবে মন্তব্য না করলে বাধিত হব।

৩০ ডিসেম্বর ২০১০: আজকের প্রথম আলো আর ডেইলি স্টারে আছে ২৮ ডিসেম্বর সাড়ে ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মুক্তিপণ দিয়ে রেহাই পাওয়া গত ৮ মে এডেন উপসাগর থেকে অপহৃত হওয়া জার্মান ফ্ল্যাগবাহী কেমিকাল ট্যাংকার এমটি মেরিডা মার্গারিট-এর কথা। এই জাহাজের ২২ জন ক্রিউয়ের মাঝে, আট মাস ধরে বন্দী হয়ে ছিলেন দুই বাংলাদেশী - জাহাজের চিফ অফিসার এবং সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার।

আজকের প্রথম আলোতেই আরেকটি সংবাদ আছে পাইরেসি নিয়ে। সেখানে ২৬ ডিসেম্বর অপহৃত হওয়া বাংলাদেশের রপ্তানি করা জার্মানির পতাকাবাহী এমভি ইএমএস রিভার এবং ২৫ দিনের উপরে আটকে থাকা জাহান মণির কথা এসেছে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।