অনুবাদ প্রচেষ্টা - ফেভার ব্যাংক নিয়ে কোয়েলিয়োর দ্য জাহির-এর দুটি পৃষ্ঠা

যুধিষ্ঠির এর ছবি
লিখেছেন যুধিষ্ঠির (তারিখ: বুধ, ২৯/০৭/২০০৯ - ৩:১৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পাওলো কোয়েলিয়োর দ্য জাহির উপন্যাসটির মাত্র দুটো পৃষ্ঠা অনুবাদের সাহস দেখালাম। একে তো লেখালেখিই বের হতে চায় না, তায় এটা আবার প্রথম অনুবাদ প্রয়াস। তাই দু'পৃষ্ঠার বেশী গেলাম না। এতে দুটো সুবিধা। এই দু'পৃষ্ঠাতেই একটা সম্পূর্ণতা আছে, ফেভার ব্যাংকের ধারণাটা বুঝতে পারা যায় বাকি উপন্যাস না পড়েই। তাছাড়া এতে করে পুরো উপন্যাস অনুবাদের কমিটমেণ্ট এড়ানোটাও সহজ হয়। চোখ টিপি

একটু প্রাককথন। এই অংশটুকুতে লেখক ফেভার ব্যাংকের ধারণা দিচ্ছেন। এটি উপন্যাসের মূল চরিত্রের লেখালেখির ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের সময়ের কথা, যখন তিনি প্যারিসের লেখক সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চেয়ে পারস্পরিক পিঠ চাপড়ানোর প্রয়োজনীয়তাটা বুঝে উঠছিলেন।

আমি প্যারিসে চলে এসেছিলাম মূলত এখানকার ক্যাফেগুলোর লোভে। এখানকার লেখকেরা আর এর সংস্কৃতি আমাকে সবসময়ই টানতো। কিন্তু এখানে এসে হতাশ হয়ে দেখলাম সেই প্যারিস আর নেই। ক্যাফেগুলোর চেয়ার-টেবিলে সৌখিন পর্যটকদের গাদাগাদি ভীড়। সেই কতযুগ আগে কোন এক মহাত্মা এই ক্যাফেতে আড্ডা দিয়ে দিয়ে এটাকে বিখ্যাত করে গিয়েছিলেন, তাদের ছবি দিয়েই দেয়ালগুলো এখনো ভর্তি। লেখক যারা আছেন তারা প্রায় সবাই লেখার স্টাইল নিয়ে বেশী চিন্তিত, বিষয়বস্তুর গভীরতা নিয়ে কেউ ভাবেন না। স্বকীয়তা প্রকাশের বিরামহীন চেষ্টা আছে, কিন্তু শেষমেষ এরা সবাই খুবই সাধারণ। সবাই যার যার নিজের গণ্ডীতে আটকা পড়ে আছেন।

এখানে এসে আমি খুব তাড়াতাড়ি একটা চলতি ফরাসী কায়দা শিখে যাই। রঁভোয়ে লা'সেঁস্যু। নতুন ফরাসী শেখা লোকের কাছে যার আক্ষরিক মানে হলো, লিফটটাকে ফেরত পাঠিয়ে দিন। কথাটা আসলে বলা হয় পারস্পরিক পিঠ চাপড়ানো বোঝাতে। প্যারিসের সাহিত্য জগতে যার মানে দাঁড়ায়, আমি আপনার বই নিয়ে ভালো ভালো কথা বলবো, আপনি আমার বই নিয়ে সুন্দর সুন্দর মন্তব্য করবেন - এভাবে আমি আর আপনি মিলেই একটা নতুন সংস্কৃতির, একটা বিপ্লবের, চাইকি একটা আপাত: নতুন দর্শনেরই সূচনা করে ফেলবো। আমরা অন্য কারো সমালোচনার ধার ধারবো না। আমাদের লেখা অন্যেরা না বুঝলে আমাদের কষ্ট হবে। কিন্তু আগের দিনের সব জ্ঞানীগুনী লেখক-শিল্পীদের সবার কি সেই একই পরিণতিই হয়নি? বেঁচে থাকতে ওদের কেউ বোঝেনি। সমসাময়িকদের কাছে গুরুত্ব না পাওয়াটাতো আসলে যে কোন লেখকের মহান হবার প্রক্রিয়ারই একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এসব লেখকরা তাই নিচে নামার পর লিফটটা উপরে পাঠিয়ে দিতে থাকেন। এদের কেউ কেউ প্রথমে সামান্য কিছু সাফল্যও পান। কারণ লোকজন যা বুঝে উঠতে পারে না সেটা নিয়ে শুরুতেই প্রকাশ্যে মন্তব্য করার মত সাহস দেখায় না। এই ফাঁকিবাজিটা কিন্তু পাঠকরা খুব তাড়াতাড়িই ধরে ফেলে। অন্তর্জালের কল্যানে আজকালতো নিরীহদর্শন কয়েকটা শব্দ দিয়েই পৃথিবীটা বদলে দেয়া যায়। প্যারিসের সাহিত্য জগতে এভাবেই একটা সমান্তরাল ধারা শুরু হয় - নতুন লেখকরা যেখানে নিজেদের বোধ্য করে তোলার সংগ্রামে ব্যস্ত থাকেন। আমি এদের সাথেই যোগ দেই।

আমরা যে ক্যাফেতে বসে আড্ডা দেই সেগুলোর নাম কেউ জানে না। যেমন চেনে না এই আমাদের, নতুন লেখকদের। নবীন লেখকদের এই সমান্তরাল ধারায় আমার সাহিত্যচর্চা শুরু হয়। আমি এখানে আমার লেখার নতুন স্টাইল নিয়ে কাজ করি একা। একজন প্রকাশক বন্ধু এ সময় আমাকে প্যারিসের সাহিত্য জগতে টিকে থাকার ব্যাপারে পরামর্শ দিতে থাকেন। ওর কাছেই আমি ফেভার ব্যাংকের ধারণাটা প্রথম শিখি।

- তো এই ফেভার ব্যাংকটা কি একটু বুঝিয়ে বলুন দেখি।

- আপনি তো সেটা জানেনই। সবাই জানে।

- হয়তো। কিন্তু ধারণাটা এখনো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।

- একজন মার্কিন লেখক আসলে প্রথম এই ধারণাটার কথা বলেছিলেন। এটা পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যাংক। আপনি আপনার জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রেই এটার গুরুত্ব টের পাবেন।

- বুঝলাম। কিন্তু আপনি জানেন আমি কোন দেশ থেকে এসেছি। আমাদের ঐতিহ্যে সাহিত্যের কোন স্থান ছিলো না। আমি মানুষের কোন উপকারটা করতে পারবো?

- আপনি কোথা থেকে এসেছেন সেটা এখানে একেবারেই গুরুত্বপূর্ণ নয়। দাঁড়ান, একটু বুঝিয়ে বলি। দেখুন আমি জানি আপনি একজন উঠতি লেখক। প্যারিসের সাহিত্য জগতে হয়তো একদিন আপনি খুব প্রভাবশালী একজন মানুষ হবেন । আমি এটা বুঝতে পারি, কারণ একদিন আমিও আপনার মত উচ্চাভিলাষী, সৎ আর স্বাধীনচেতা ছিলাম। এখন আমার আর সেই উদ্যম নেই। কিন্তু আমি এখনই সবকিছু শেষ বলে মেনে নিতে রাজী না। সেজন্যই আমি আপনাকে সাহায্য করতে চাই। ক্ষমতা আর খ্যাতির এই খেলা আমি আরও কিছুদিন খেলে যেতে চাই, এখনই অবসর নিতে চাই না।

আমি যেটা করবো সেটা হলো আমি আপনার অ্যাকাউণ্টে কিছু কিছু করে জমা রাখা শুরু করবো। টাকা-পয়সা না, বুঝতেই পারছেন, জমা রাখবো কিছু পরিচিতি আর যোগাযোগের উৎস। মানে এর ওর সাথে আপনাকে পরিচয় করিয়ে দেব। আপনার জন্য কয়েকটা দরজা খুলে দেবো। আপনার লেখার প্রশংসা করবো। আপনার জন্য আমি কিছু উপার্জনের ব্যবস্থা করে দেবো, না বেআইনী কিছু না। আপনি জানবেন আমার কিছু পাওনা আছে আপনার কাছে। কিন্তু বিনিময়ে আমি কিছু চাইবো না আপনার কাছে -

আমি বলে উঠি, "এবং, তারপর একদিন...!"

- ঠিক! এইতো বেশ ধরতে পেরেছেন! তারপর একদিন, আমি হয়তো আপনার কাছে একটা উপকার চাইবো। আপনি চাইলে আমাকে "না" বলতে পারেন, কিন্তু আপনি তো জানেন যে আমার কাছে আপনার কিছু দেনা আছে। আমি যা চাই আপনি যদি সেটা আমার জন্য করেন, আমি আপনাকে সাহায্য করে যেতে থাকবো। অন্যেরা জানবে যে আপনি একজন সৎ আর বিশ্বাসী মানুষ। হয়তো তারাও আপনার অ্যাকাউণ্টে জমা রাখা শুরু করবে - বাড়বে আপনার পরিচিতি আর যোগাযোগের সঞ্চয়। বুঝতেই পারছেন, এ পৃথিবীতে সবচেয়ে দরকারী জিনিস ওগুলো। একদিন এই অন্য সঞ্চয়ীরাও আপনার কাছে কিছু চাইবে। তারা আপনার অ্যাকাউণ্টে অন্য জমাকারীদেরকেও জানবে, চিনবে, সম্মান করবে। এভাবেই একদিন আপনার নাম সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে যাবে একজন বিরাট প্রভাবশালী মানুষ হিসেবে।

- কিন্তু... আপনি যেমন বললেন, আমি তো চাইলে আপনাকে পাল্টা উপকারটা নাও করতে পারি।

- তা অবশ্যই পারেন। ফেভার ব্যাংকে বিনিয়োগে অন্য যে কোন ব্যাংকের মতই ঝুঁকি আছে। আমি সেটা জানি। আপনি তো ভাবতেই পারেন যে আমি আপনার উপকার করেছি কারণ আপনার সেটা প্রাপ্যই ছিলো। আপনি মনে করেন আপনি আর সবার চেয়ে অনেক বেশী প্রতিভাবান ছিলেন, তাই সবাই এমনিতেই আপনার উপকার করতো। সবাই আসলে এভাবেই ভাবে। তবে তাই যদি হয় তো ঠিক আছে, ভালো কথা, আমি আপনার সৌভাগ্য কামনা করবো। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ দেবো। তারপর আমার অন্য একটা অ্যাকাউণ্টের মালিককে বলবো আমার ওই কাজটা করে দিতে। আপনাকে আমি একটি কথাও বলবো না। কিন্তু, সেদিন থেকে সবাই জানবে আপনি বিশ্বস্ত নন। সেদিন থেকে আপনার প্রভাব আর খ্যাতি কমতে থাকবে। আপনার জীবন নিম্নগামী হতে থাকবে। আপনি গন্তব্যে না পৌঁছে আধাপথে থেমে থাকবেন। আধাসুখী আর আধাদু:খী হয়ে আপনার জীবন কাটবে। না হতাশ না পরিপূর্ণতা, না গরম না ঠাণ্ডা। আপনি হয়ে থাকবেন কুসুম গরম। জানেন তো, অল্প গরম খাবার খেতে কখনোই সুস্বাদু হয় না।

এবার আমি যা বোঝার বুঝে যাই।

প্রকাশক সাহেব আমার ব্যাংকে ফেভার সঞ্চয় করতে থাকেন। আমি ঠকি। আমি ভুগি। আমি শিখি। আমার বইগুলো ফরাসী ভাষায় অনুবাদ হয়। আমার মত একজন আগন্তুককেও প্যারিসের বিদগ্ধ সমাজ গ্রহণ করে নেয় । এটাই প্যারিসে থাকার মজা। ওদের চোখের সামনেই আমি হয়ে উঠি বিরাট সফল এক লেখক! দশ বছরের মধ্যে সীন নদীর পাশে আমার একটা বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেণ্ট। পাঠকদের দারুণ ভালোবাসা। সমালোচকদের তীব্র ঘৃণা। এভাবেই চলতে থাকে। আসলে এই সমালোচকগুলো কিন্তু আমাকে দারুণ পছন্দই করতো একটা সময়। আমি ছিলাম ওদের ভাষায় "ভুল বোঝা এক প্রতিভা"। কিন্তু যেই না আমার বইয়ের বিক্রি এক লাখ কপি ছাড়ালো, ভুল বোঝা-টোঝা, আর প্রতিভা-টতিভা সব রাতারাতি মূল্যহীন হয়ে গেলো ওদের কাছে!

আমি কিন্তু ফেভার ব্যাংকে আমার ঋণ নিয়মমতো শোধ করে যেতে থাকি। প্যারিসের সাহিত্যিক সমাজে আমার প্রভাব বাড়তে থাকে। আমি অন্যের অ্যাকাউণ্টে উপকার জমা করি, বিনিময়ে উপকার চেয়ে নেই। এভাবে একদিন অবাক হয়ে খেয়াল করি, এই ফেভার বাজারের একসময়ের ঋণবুভুক্ষু আমি ধীরে ধীরে একজন বড় বিনিয়োগকারী হয়ে গেছি।

পাদটীকা:
১। অনুবাদ করেছি উপন্যাসটির ইংরেজী অনুবাদ থেকে। মূল পর্তুগীজ থেকে অনুবাদ করেছেন মার্গারেট কস্টা। মূল ভাষা থেকে অনুবাদ না করার আমি ঘোর বিরোধী - তবুও সহজ শুরু হিসেবে এইটুকু করলাম। পাঠকরা এটাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি।
২। জাহির শব্দটার আসল উচ্চারণ বাংলায় লেখার কোন উপায় নেই। পরশুরাম হয়তো এভাবে Zাহির লিখতেন।


মন্তব্য

স্নিগ্ধা এর ছবি

আমিও ফেভার ব্যাঙ্কে কিছু বিনিয়োগ করি - আফটার অল

আমি আপনার বই নিয়ে ভালো ভালো কথা বলবো, আপনি আমার বই নিয়ে সুন্দর সুন্দর মন্তব্য করবেন
মানে বই এর জায়গায় পোস্ট হবে আর কি, কিন্তু মোদ্দা ব্যাপারটা এইই না ? দেঁতো হাসি

সিরিয়াসলি বলি - অনুবাদটা খুবই ভালো হয়েছে, আসলেই হাসি

যুধিষ্ঠির এর ছবি

অনুবাদ ভালো লেগেছে জেনে খুশী হলাম। শেষের "আসলেই"টা দিয়ে অবশ্য একটু চিন্তায় ফেললেন হাসি

আমিও একটু সিরিয়াসলি বলি, আসলে বইয়ের জায়গায় পোস্ট হওয়াটাই মোদ্দা ব্যাপার মনে হয় না। কারণ কমিউনিটি ব্লগিং-এর ক্ষেত্রে পারস্পরিক পিঠ চাপড়ানোটা তো কিছুটা জরুরী আর বিল্ট-ইন একটা ব্যাপার মনে হয়। অন্যদিকে বইয়ের ক্ষেত্রে তো ওটা সরাসরি বইয়ের অর্থনৈতিক সাফল্যের সাথে জড়িত - এণ্ড-রেজাল্টটা একটু হয়তো ভিন্ন?

স্নিগ্ধা এর ছবি

"আসলেই" বলার কারণ, অনুবাদের প্রশংসাটা যে জেনুইন, আমার ফেভার ইনভেস্টমেন্ট নয়, সেটাকে প্রতিষ্ঠিত করা হাসি

হ্যা, বই আর ব্লগের ব্যাপার তো অবশ্যই আলাদা। অর্থনৈতিক সাফল্য ছাড়াও এখনও বোধ হয় বইকে ব্লগের চাইতে বেশি মর্যাদা দেয়া হয়, অতএব সেক্ষেত্রে পিঠ চাপড়ানোর ব্যাপারটাও আরও সিরিয়াসলি আসে।

শুরুতে ঐ ফাজলামিটা না করে পারিনি বলেই পরে "আসলেই"টা লাগিয়েছিলাম হাসি

যুধিষ্ঠির এর ছবি

ঠিক আছে। ফেভার ব্যালান্সের স্টেটমেণ্ট পেয়ে যাবেন শিগগিরই। হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধর্ম্মপুত্র, আপনার এই অনুবাদ প্রচেষ্টা দেখে ভীত। কারণ, আপনি এখন থেকে নিয়মিত লেখা না দেবার একটা শক্ত অজুহাত দাঁড় করালেন। অনুবাদের মত অসহ্যকর, থ্যাঙ্কলেস কাজ করা কতটুকু কঠিন তা জীবনে যখনই অনুবাদ করার চেষ্টা করেছি তখনই বুঝেছি। তাই আমি আপনার ব্যাপারে আরো ভীত।

ফেভার ব্যাংকের ব্যাপারে পাওলো আপনাকে খুব বেশি নতুন কথা শোনাতে পারবে বলে তো মনে হয় না। আপনি নিজে চেষ্টা করলেই এই বিষয়ে ঢাউস সিরিজ নামিয়ে দিতে পারবেন।

যাক সে সব, একবারে দুই পাতা করে না ধরে এক অধ্যায় করে ধরুন তাহলে পাঠকরা উপকৃত হন, আর লেখকের নিজের কাজও আগায়। ভাষা সাবলীল, পড়তে অনুবাদের আড়ষ্টতা চোখে পড়েনি। দয়া করে চালিয়ে যান, এই ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার টার্গেট রাখুন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

নতুন করে ভীত হবার কিছু নেই। অজুহাত আগে যা দিতাম এখনও তাই দিতে থাকবো দেঁতো হাসি । অনুবাদের কাজটা কষ্টকর সন্দেহ নেই। কিন্তু ভালোই এনজয় করেছি করতে গিয়ে। বইটা আবার পড়তে গিয়ে আবার নতুন করে এস্থারের প্রেমে পড়ে গিয়েছি।

তবে আপনি জানেন লেখালেখি আমার জন্য ন্যাচারাল না - তাই প্রচুর সময় লাগে। দু'পৃষ্ঠাতে লেগেছে তিন দিন। এই হারে পুরো উপন্যাসটা করতে গেলে এক ডিসেম্বরে হবে না। তাই ওই কমিটমেণ্টে যাবো না। সমকালীন আমেরিকান ছোট গল্প-টল্প অনুবাদের ইচ্ছে আছে। তাতে করে মূল ভাষা থেকে অনুবাদ না করার খেদটা থাকবে না। দেখি। উৎসাহের জন্য ধন্যবাদ।

আপনি দেখি আপনার প্রোফাইল বদলে নিজেকে মূলোদা হিসেবে দাবী করছেন! ঘটনা কি? পাণ্ডবের চীন দর্শন বন্ধ করার অধিকার আপনাকে কে দিলো? মূলত লেখক থেকে পাঠক হতে চাওয়ার এই হীন প্রয়াসের তীব্র নিন্দা জানাই।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এক ডিসেম্বরে না হলে দুই, পাঁচ বা সাত ডিসেম্বর লাগুক, ক্ষতি নেই যদি কাজটা হয়। অনেকগুলো বৎসর তো গেছে না হয় যাবে আরো কিছু। অপেক্ষায় আছি। মাঝে ছোট গল্প আসতে পারে। আসলেই ভালো।

আমি প্রফাইল বদলে মূলোদা হইনি। আমার এই স্টেটমেন্ট মূলত পাঠকের আগমণের আগেই করা।

চীন দর্শন লেখার সময় অনেকেই ছবি দাবী করেছেন, যা আমার পক্ষে দেয়া সম্ভব না। চীনের মজার গল্পও আমি দিতে পারবো না। বিশেষতঃ চীন (তাইওয়ান) প্রবাসী মামুন হক এই ব্যাপারে লেখা শুরু করার পর তার লেখা পড়ে আমি আর উৎসাহ বোধ করছিনা। অনেকে অতন্দ্র প্রহরীর কাছেও চীনের টাটকা গল্প শুনতে চেয়েছেন। এক ব্লগে তিন জন চীন নিয়ে লেখা শুরু করলে তো মুশকিল।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

পাণ্ডব'দা, দরকার হলে আমি লিখব না, তাও আপনি লেখেন। আপনার 'পাণ্ডবের চীন দর্শন' আমার ভীষণ প্রিয় একটা সিরিজ হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমি কবে লিখব না লিখব সে ভেবে আপনি চুপ করে বসে থাকবেন তাতো হয় না। আপনি বরং আপনার টাটকা অভিজ্ঞতাগুলো লিখে ফেলুন। সেগুলো পড়তে পড়তে, মন্তব্য করতে করতে হয়তো আমার পরবর্তী পর্বটা লেখা হয়ে যাবে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

তো শুরু যখন করেছেন, শেষটাও করে ফেলুন... আমরা পড়ি... ধন্যবাদ আর পিঠ চাপড়াচাপড়ির বিনিময়ে একটা উপন্যাস পড়ে ফেলার আশা তো করতেই পারি তাই না? চোখ টিপি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

যুধিষ্ঠির এর ছবি

কথা দিতে পারি না। দেখি। আমার লেখা অত্যন্ত ধীরগতির। এত সময় লাগে যে নিজেই ধৈর্য হারিয়ে ফেলি। একটা সুন্দরী সেক্রেটারী পেলে তাকে দিয়ে লেখিয়ে নিতাম। চোখ টিপি

পোস্ট তো দিলাম, আমার পাওনা অভিনন্দন কই?

আরিফ জেবতিক এর ছবি

লেখক যারা আছেন তারা প্রায় সবাই লেখার স্টাইল নিয়ে বেশী চিন্তিত, বিষয়বস্তুর গভীরতা নিয়ে কেউ ভাবেন না। স্বকীয়তা প্রকাশের বিরামহীন চেষ্টা আছে, কিন্তু শেষমেষ এরা সবাই খুবই সাধারণ। সবাই যার যার নিজের গণ্ডীতে আটকা পড়ে আছেন।

ফেভার ব্যাংক পড়া নাই , তবে উপরের লাইনগুলো চমৎকার লাগলো।
আপনার অনুবাদটা ভালো লেগেছে।

পুরোটা অনুবাদের মাধ্যমেই পড়ব এই আশা করছি।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

অনুবাদ ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। হ্যাঁ, ওই লাইনগুলো আমারও প্রিয়। পুরোটা অনুবাদ করতে পারবো কি না জানিনা। তবে উৎসাহের জন্য অনেক ধন্যবাদ!

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

বিষয়টা বেশ ইন্টারেস্টিং। আর জিনিসটা একেবারে নতুন হলেও অনুবাদ পড়ে যেহেতু একটা ধারনা পেয়েছি তাই বলতেই হচ্ছে অনুবাদটা ভালো হয়েছে। ও হ্যাঁ, বিষয়বস্তুটা কিন্তু অনুবাদের জন্য বেশ কঠিন মনে হলো। সে কাজ যখন সাফল্যের সাথে শুরু করেছেন, শেষটাও দেখতে চাইবো।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

ধন্যবাদ প্রকৃতিপ্রেমিক! হ্যাঁ বিষয়টা বেশ ইণ্টারেস্টিং আমার কাছেও। জানা বিষয়, কিন্তু আমি কোয়েলিয়োর লেখাতেই প্রথম এমন খোলাখুলি রেফারেন্স পাই ফেভার ব্যাংকের বিষয়ে। শেষ করার আগে আসলে তো বইটা শুরু থেকে শুরু করতে হবে, কারণ আমি মাঝের দুটো পৃষ্ঠা অনুবাদ করেছি। দেখি আলসেমি কাটিয়ে কদ্দুর কি করতে পারি।

পুতুল [অতিথি] এর ছবি

আপনার অনুবাদ অসাধারণ!

যুধিষ্ঠির এর ছবি

কারো কাছে "অসাধারণ" লাগবে আশাই করতে পারিনি! ধন্যবাদ পুতুল! ভালো লেগেছে জেনে খুব আনন্দিত হলাম।

জাহেদ সরওয়ার এর ছবি

আপনার এই দুই পৃষ্টার অনুবাদরে পুরস্কার স্বরূপ পুরা বইটা অনুবাদ করার দায়ভুক্ত করা হলো।

*********************************************
আমার আত্মা বোমায় দু'হাত উড়ে যাওয়া কোনো আফগান শিশুকন্যা।

*********************************************

যুধিষ্ঠির এর ছবি

হা হা। এই মণিহার আমায় নাহি সাজে...

আগ্রহ নিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।