আর্চেস ন্যাশনাল পার্ক

যুধিষ্ঠির এর ছবি
লিখেছেন যুধিষ্ঠির (তারিখ: শুক্র, ২৮/০৮/২০০৯ - ৩:১৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

খুব ছোটবেলায়, হয় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক-এর পাতায় না হলে উইণ্ডোজের স্ক্রীন সেভারে, প্রথম ডেলিকেট আর্চের ছবি দেখি। তখন নামটা জানতাম না। আর কোন বৃত্তান্তও না। তখন থেকে ভেবেছি একদিন বড় হয়ে এই জায়গাটায় যেতেই হবে। তো একদিন বড় হয়ে খোঁজ খবর করতে গিয়ে দেখি নামধাম না জেনে এমন জিনিসের খোঁজ বের করাটা বেশ কঠিন কাজ (প্রাক-উইকিপিডিয়া যুগের কথা)। ছবি-টবি এঁকে, নানান অঙ্গভঙ্গী করে জ্ঞান...খুব ছোটবেলায়, হয় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক-এর পাতায় না হলে উইণ্ডোজের স্ক্রীন সেভারে, প্রথম ডেলিকেট আর্চের ছবি দেখি। তখন নামটা জানতাম না। আর কোন বৃত্তান্তও না। তখন থেকে ভেবেছি একদিন বড় হয়ে এই জায়গাটায় যেতেই হবে। তো একদিন বড় হয়ে খোঁজ খবর করতে গিয়ে দেখি নামধাম না জেনে এমন জিনিসের খোঁজ বের করাটা বেশ কঠিন কাজ (প্রাক-উইকিপিডিয়া যুগের কথা)। ছবি-টবি এঁকে, নানান অঙ্গভঙ্গী করে জ্ঞানী বন্ধুবান্ধবদের বুঝিয়ে সুঝিয়ে অবশেষে জানলাম, মোর্মনদের দেশ ইউটাহতে যে আর্চেস ন্যাশনাল পার্ক আছে, এই নয়নমোহিনী শিলাবিন্যাসের বসবাস সেখানেই। আরও একটা মজার ব্যাপার জানা গেলো, ইউটাহ সহ আমেরিকার আরও তিনটা অঙ্গরাজ্য (কলোর‌্যাডো, অ্যারিজ়োনা, নিউ মেক্সিকো) যে বিন্দুতে এসে মেলে, সে জায়গাটার নাম হলো ফোর কর্নারস। এটা আমেরিকার একমাত্র জায়গা যেখানে চারটা অঙ্গরাজ্য এসে এক বিন্দুতে মেলে - এ ব্যাপারটা উদযাপনের জন্য এখানে একটা মনুমেণ্টও আছে। এই বিন্দুটা থেকে মোটামুটি ১৫০ মাইল ব্যাসার্ধের একটা বৃত্ত আঁকলে তার মধ্যে চমৎকার কিছু প্রাকৃতিক চমকের জায়গা পড়বে - আর্চেস ন্যাশনাল পার্ক তার মধ্যেই একটা।

আজকের ব্লগ সেই পার্কের কয়েকটা ছবি আপনাদের দেখানোর জন্য।

একটা কথা। ছবিগুলো তোলা আজ থেকে সাত বছর আগে, যখন ডিএসএলআর ক্যামেরার স্বর্ণযুগ শুরু হয়নি। আমাদের ৩৫মিমি ক্যামেরাটা নেহাৎ খারাপ ছিলো না। এই ছবিগুলো তুলেছি নাইকন এন-৬৫ আর একটা ২৮-৮০ মি.মি. জুম লেন্স দিয়ে। তবে ফোটোগ্রাফির জারিজুরি এখানেই শেষ। এসএলআর ব্যবহার করতে জানতাম না। এখনও যে ঠিক শিখেছি, তাও নয়। তাছাড়া সচলায়তন ছিলো না বলে এখানকার প্রকৃতিপ্রেমিক বা মুস্তাফিজ ভাইদের মত ঘাঘু ফটুরেদের টিপসও পাওয়া যায়নি। তাই সব ছবিই "অটো" মোডে তোলা হয়েছে। তারপর সেটা ছিলো চাকরী জীবনের শুরুর সময়, ভ্রমনের বাজেট ছিলো টাইট। সেইসাথে ক্যামেরা কিনতে গিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউণ্ট নড়বড়ে হয়ে গিয়েছিলো। তাই ছবিগুলো প্রিণ্ট করা হয়েছিলো ওয়াল-মার্টের সস্তা ওয়ান-আওয়ার ফটো সারভিস থেকে, ৪" x ৬" সাইজে। সেখানে ওদের ম্যাস-প্রডাকশন মেশিনে ছবির মানের এক দফা অবনতি ঘটেছে। বাকি ক্ষতিটা হয়েছে সেই ছোট ছবিগুলো থেকে আমার বাসার পুরনো এইচপি স্ক্যানার দিয়ে স্ক্যান করার সময়।

যাহোক, ছবির বিষয়বস্তুগুলোই লেখার জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তাই চলুন আমরা জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ছবির মান-টান নিয়ে বেশি টানাহ্যাঁচড়া না করি।

যাওয়ার পথটা বেশ লম্বা। আমাদের তখনকার বাড়ি শিকাগো থেকে প্লেনে সল্ট লেক সিটি - সাড়ে তিন ঘণ্টার পথ। এখানে এয়ারপোর্ট থেকে একটা গাড়ি ভাড়া করে হাইওয়ে-১৯১ ধরে ১৮০ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে নেমে গিয়ে গ্রীন রিভার শহর। ওখানে রাত কাটিয়ে আবার একই রাস্তা ধরে আরও ৭০ মাইল পার হয়ে মোয়্যাব। এই ছোট্ট শহরটার পাশেই আমাদের গন্তব্যের পার্কটা।

প্রথম ছবিটা হাইওয়ে-১৯১ এর পাশেই তোলা, মোয়্যাব শহরে ঢোকার একটু আগে। তার পরের দুটো ছবি পার্কে একটু ঢুকে গিয়ে। তিন নম্বর ছবিটার জায়গাটার নাম সম্ভবত: পার্ক অ্যাভেনিউ। নামের ইতিহাসটা ভুলে গেছি। পুরো ফোর কর্নারস এলাকা জুড়েই এমন লাল শিলার পাহাড়ের ছড়াছড়ি।

এক
Red rock formation near Arches National Park

দুই
Road to the Arches - Arches National Park

তিন
Park Avenue - Arches National Park

চার নম্বর ছবিতে স্কাইলাইন আর্চ। কেন যেন মনে হলো ছবিটা সাদাকালোতে ভালো লাগবে।

চার
Skyline Arch - Arches National Park

পাঁচ নম্বরটা হলো সেই বিখ্যাত ডেলিকেট আর্চ। সূর্যাস্তের সময়ে তোলা ছবি। পেছনে দিগন্তজুড়ে লা স্যাল পর্বতমালা। ডেলিকেট আর্চের এই ছবিটা তুলতে হলে মাইল দেড়েক রাস্তা হাইক করে যেতে হয়। পার্কের গাইডবুকে এখানকার হাইকিং ট্রেইলগুলোর স্কেল বলা আছে - সহজ, মাঝারী আর কঠিন। এই ট্রেইলটাকে কঠিন গ্রুপে ফেলা আছে। দেড় মাইলে এলিভেশন বেড়ে যায় ৫০০ ফুটের মত - অর্থাৎ প্রায় পঞ্চাশ তলা বিল্ডিংএ হেঁটে ওঠা। গাইডবুকে বলা আছে প্রত্যেক হাইকারের জন্য যেন দুই লিটার করে পানি নেয়া হয় দেড়-দেড় তিন মাইল যাওয়া আর ফিরে আসার জন্য। এটাও বলা আছে সূর্যাস্তের সময় এই পার্কের ছবি সবচেয়ে ভালো ওঠে। আর যেহেতু জায়গাটা মরুভূমি এলাকা, তাই সূর্যাস্তের পর ফিরে আসার সময় গনগনে গরম একটা দিন হঠাৎ করে বেশ ঠাণ্ডা হয়ে যেতে পারে - তাই শীতের কাপড়ও সঙ্গে নিতে। এই ট্রেইলটার শেষ দুশো গজ যেতে হয় খুব সরু একটা পাহাড়চুড়ার মত জায়গা দিয়ে, একপাশে ঢালু হয়ে নেমে যাওয়া খাদের মত - ভয়ে গা শিরশির করে। আমরা বাঙ্গালীর মেদ-ভুড়ি-কি-করি শরীর নিয়ে দুজনের জন্য চার লিটার পানি, ক্যামেরা-ট্রাইপডের ভারী ব্যাগ, আর শীতের কাপড়ের বোঝা নিয়ে এক ঘণ্টা হেঁটে ওপরে উঠে গিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে ভালোই বুঝলাম কেন এটাকে কঠিন ট্রেইল বলা হয়। তবে তারপর সূর্যাস্তের আলোয় ডেলিকেটের মায়াবী সোনালী শরীর দেখার পর মনে হলো এর জন্য জান বাজী রাখাই যায়। আপনাদের দুর্ভাগ্য কাঁচা হাতে তোলা ছবিটা সেই অপার্থিব সৌন্দর্যের কণামাত্রও দেখাচ্ছে না।

পাঁচ
Sunset at Delicate Arch - Arches National Park

শেষ ছবিতে অতীত আর ভবিষ্যৎ একসাথে, পাশাপাশি। ছবিতে ডেলিকেট আর্চের বামে যে শিলাবিন্যাসটা দেখা যাচ্ছে সেটাকে ভূতাত্বিক পরিভাষায় "ফিন" বলে। এই ফিন আকৃতির একটা শিলাবিন্যাসই হাজার-লক্ষ বছর ধরে ক্ষয় হয়ে হয়ে একটা আর্চে পরিণত হতে পারে। ডেলিকেটের বাম দিকের স্তম্ভটার ঠিক মাঝামাঝিটা ক্ষয়ে গিয়ে বেশ চিকন হয়ে গেছে। যে কোন মাঝারী আকারের ভূমিকম্প হলেই এটা ভেঙ্গে পড়ে যেতে পারে। তখন হয়তো পাশের ফিনটা ক্ষয়ে ক্ষয়ে ডেলিকেটের মত আরেকটা আর্চ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের প্রজন্ম-প্রজন্ম ধরে অপেক্ষায় থাকতে হবে। তাই ফটুরেরা, যেতে চাইলে এখনই সময়!

ছয়
Delicate Arch - Arches National Park

(ছবিগুলো ফ্লিকারে গিয়ে দেখলে আর্চেস-এর আরও কিছু ছবি, আর ইউটাহ'র আরেকটা দুর্দান্ত জায়গা, ব্রাইস ক্যানিয়ন ন্যাশনাল পার্কের কয়েকটা বোনাস ছবি দেখতে পাবেন)


মন্তব্য

মৃত্তিকা এর ছবি

সুন্দর বর্ণনা সেই সাথে দারুণ ছবিগুলো, বিশেষ করে ৫ নং আর ৬ নং খুবি সুন্দর!
__________________________________________
সামনে যদি যাবি ওরে, থাক-না পিছন পিছে পড়ে।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

ধন্যবাদ। ভালো লেগেছে জেনে খুশী হলাম।

হিমু এর ছবি

ছবিগুলি চমৎকার! তিন নাম্বারটাও সাদাকালোতে ভালো দেখাবে মনে হচ্ছে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

যুধিষ্ঠির এর ছবি

ধন্যবাদ। ঠিক, তিন নম্বরটাও ভালোই লাগছে সাদাকালোতে।

Park Avenue - Arches National Park

সাইফ তাহসিন এর ছবি

বস, জটিল সব ছবি, আমি মনে করেছিলাম এগুলো স্ক্রীন সেভার বা ডেস্কটপ ব্যাকগ্রাউন্ড। গুরু গুরু

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

যুধিষ্ঠির এর ছবি

ধন্যবাদ, সেইফ/সাইব্বাই!

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

ঈর্ষা হইতেসে দাদা! দক্ষিণ ইউটাহ - কানাব, জায়োন, আর্চেস, ব্রাইস - এইসব দেখার শখ বহুদিনের! কবে যে হইবো। আপনার ছবি সেরাম হইছে। ঐ অঞ্চলে গিয়া পচা ছবি তোলা মোটামুটি সগীরা গুনাহ।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

যুধিষ্ঠির এর ছবি

হা হা! এরকম সগীরা গুনাহ আমার বেশ কিছু আছে। যে কারণে ব্রাইস ক্যানিয়নের ছবিগুলো দিতে পারলাম না। ছবি তুলতে না জেনে এরকম জায়গা ঘুরতে যাওয়া উচিৎ না আসলে। কিন্তু আমি কি আর তখন জানতাম একদিন সচলায়তন হবে!

এনকিদু এর ছবি

সুন্দর ছবির জন্য ধন্যবাদ আপনাকে ।

---

আমরা বাঙ্গালীর মেদ-ভুড়ি-কি-করি শরীর নিয়ে...

বাঙ্গালী হইলেই ভুড়ি থাকতে হবে ? এই বাজে স্টেরিওটাইপটা থেকে কি বেরিয়ে আসা যায়না ? সবাই রণদার মত হয়না কেন বুঝিনা ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

যুধিষ্ঠির এর ছবি

ধন্যবাদ। স্টেরিওটাইপ থেকে তো চাইলেই বের হওয়া যায়!

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

খুবই সুন্দর জায়গা। এসএলআর ক্যামেরা দিয়ে এতবছর আগের ছবি তুলে স্ক্যান করার পরেও মনে হচ্ছে যেন গতকাল ডিএসএলআর দিয়ে তোলা ছবি! এত ভাল ছবি তুলে বিনয়ের অবতার হয়ে আমার নাম উল্লেখ করলেন-- এখন লজ্জায় আমার মাথা কাটা যাওয়ার অবস্থা।

যাই হোক, ডেলিকেট আর্চের দৈর্ঘ-প্রস্থ কত? ছবির এই এক বিরাট সীমাবদ্ধতা-- স্কেল বোঝা যায়না। দেখি কোনদিন সুযোগ এলে দেখতে যাবো। আপনার বিশাল অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে এরকম দুই চারটা প্রকাশ করলে আমাদের জানার পরিধি একটু বাড়বে হাসি
...............................
নিসর্গ

যুধিষ্ঠির এর ছবি

ধন্যবাদ। ছবিগুলো তোলাতে আসলেই আমার কোন কৃতিত্ব নেই - আমি শুধু ফ্রেমবন্দী করেছি, আর অটো মোডে শাটার টিপেছি।

এই আর্চটা ৫২ ফুট উঁচু। দৈর্ঘ-প্রস্থের বিস্তারিত তথ্য উইকির লিঙ্কটাতে পাবেন। আসলে ছবি ওঠানোর সময় আনুপাতিক আকার বোঝানোর জন্য রেফারেন্স হিসেবে কিছু একটা রাখার বুদ্ধিটা আগে মাথায় আসেনি। তবে ছয় নম্বার ছবিটাতে নীচে বামদিকে কিছু মানুষের ছবি দেখতে পাবেন, সেটা থেকে একটা ধারণা হবে এর আকার সম্পর্কে।

মামুন হক এর ছবি

দুর্দান্ত সব ছবি ধর্ম্মপুত্র, মনটাই ভালো করে দিলেন!!

যুধিষ্ঠির এর ছবি

ধন্যবাদ, মামুন! জেনে খুশী হলাম।

স্বপ্নাহত এর ছবি

মামুন ভাইয়ের মন ভাল হইসে। আর আমার হইসে খারাপ মন খারাপ

ছবিগুলা অসাধারণ। আফসোস আর দীর্ঘশ্বাস বাড়ানোয় এক শতে এক শ।

---------------------------------

তবে যে ভারি ল্যাজ উঁচিয়ে পুটুস্‌ পাটুস্‌ চাও?!

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

যুধিষ্ঠির এর ছবি

কোনটা হইলে আমার প্রিয় ছড়াকার বেশি ছড়া লিখবেন, নিয়মিত? মন ভালো হইলে না কি মন খারাপ হইলে? যদি শেষেরটা হয়, তাইলে দাঁড়ান, আরও ছবি পোস্টাইতেসি। হাসি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ছবিগুলা খুবই সুন্দর।
কতো সুন্দর সুন্দর জায়গা যে দেখা বাকি.. জীবনেও দেখা হবে না মন খারাপ

তা, এবার আপনার কাছ থেকে নিয়মিত ছবি-ব্লগ আশা করা যেতে পারে কি? হাসি

যুধিষ্ঠির এর ছবি

ধন্যবাদ। আমি তো নিয়মিতই লিখি এখন! আপনি জানেন আমার মোট ব্লগের সংখ্যা এখন ছয়!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনি তাহলে মাঝে মাঝে ব্লগও লেখেন চোখ টিপি

ছবিগুলো এতোবছর আগের তোলা তা বোঝার সাধ্য নাই... খুব সুন্দর... তবে আমারও মনে হচ্ছিলো আর্চের সাইজটা যেন বুঝতে পারছি না। ছবি দেখে মনে হচ্ছে ছোট সাইজের কিছু একটা...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

যুধিষ্ঠির এর ছবি

ধন্যবাদ নজরুল! আমি মাঝে মাঝে ব্লগ লিখি শুধু তাই না, আর মাত্র শ'খানেক লিখলেই আপনার সমান পোস্ট হয়ে যাবে আমার। দেইখেন, একদিন আমিও!

মূলত পাঠক এর ছবি

আহা কী সব ছবি! কবে যে যাবো! লম্বা ছুটি শেষ এদিকে।

ফোটো-বিশেষজ্ঞ না হলেও পোস্ট-প্রসেসিং নিয়ে একটু জ্ঞান দিই: ১, ২, ৫, ৬ ছবিগুলোতে কনট্রাস্ট বাড়ালে বেশি ভালো লাগবে। কনট্রাস্ট বাড়ালে ছবির রঙও একটু গাঢ় হবে, তাই রঙ আলাদা করে বাড়াতে হবে না। ১, ২ নং ছবিকে ৩-এর সাথে তুলনা করলেই ব্যাপারটা পরিষ্কার হবে।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

আপনি এ দেশেই থাকেন, তাই আপনার এসব জায়গায় যাওয়া জরুরী - তাতে সচলেরা ভালো কিছু ছবি আর লেখা পাবেন। আমিও সগীরা গুনাহর হাত থেকে বাঁচি।

আসলে ছবি তোলার এ-বি-সি-ডি যাওবা একটু শিখেছি এখন, আমি পোস্ট-প্রসেসিং একেবারেই পারি না। এই ছবিগুলোতে স্ক্যান করার পরে শুধু কনট্রাস্টটাই একটু বাড়িয়েছি সব ছবিতে, রং বা অন্য কিছু নিয়ে কিছু করা হয়নি, জানিও না আসলে কিভাবে রং বাড়াতে হয়।

১, ২ এর সাথে ৩ এর পার্থক্যটা ধরতে পারছি। কিন্তু ১, ২, ৫, ৬ তে এর চেয়ে কনট্রাস্ট বাড়ালে ছবি ডিসটর্টেড হয়ে যাচ্ছিলো - হয়তো কিভাবে কনট্রাস্ট ঠিকভাবে বাড়ানো যায় সেটাই জানি না মন খারাপ

মূলত পাঠক এর ছবি

আপনি কি পিকাসা বা অ্যাডোবে ব্যবহার করছেন এই কাজে? আমি আই-ফোটো দিয়ে করলাম, এই রকম হলো।

ছবি

আমার গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের ছবি বেশ ফ্ল্যাট এসেছিলো, এই সব না করে উপায় ছিলো না।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

বাহ, এখন তো ছবিটা অনেক ভালো দেখা যাচ্ছে! আমি পিকাসা ব্যবহার করছিলাম। পিকাসার অপশন দিয়ে এতটুকু শার্পনেস আনা যায়নি। দেখি, আইফোটো তো উইণ্ডোজের জন্য পাওয়া যাবে না, অ্যাডোবিটা এইবার শিখে ফলতে হবে। অনেক ধন্যবাদ।

মূলত পাঠক এর ছবি

শার্পনেসটা আমার ধারণা হাই-কনট্রাস্টের জন্যই আসছে। মূল ছবিকে পিকাসা দিয়ে মডিফাই করলাম, এবার দেখুন আই-ফোটোর সাথে তুলনা করে।

পিকাসাপিকাসা

যুধিষ্ঠির এর ছবি

আমার কাছে অবশ্য আপনার আই-ফটোর কপিটাই বেশি ভালো লাগলো। পিকাসার এই কপিটাতে রংগুলো কেমন যেন কৃত্রিম লাগছে।

যাকগে, অনেক কিছু শিখলাম! ধন্যবাদ!

দময়ন্তী এর ছবি

অপুর্ব সব ছবি৷ চলুক
---------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

যুধিষ্ঠির এর ছবি

ধন্যবাদ, দময়ন্তী। ভালো লেগেছে জেনে খুশী হলাম।

অমিত এর ছবি

ব্রাইস আর জাইওন (না কি জিওন !) ক্যানিয়ন পর্যন্ত যাওয়া হয়েছিল, আর্চেস-এ যাওয়া হয় নি।
আপনি শিকাগো থাকেন না কি ? গত সপ্তাহেই যাওয়া হয়েছিল, ডেভন স্ট্রিটে বেশ খাওয়া দাওয়া হল।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

মার্কিনীরা বোধহয় জ়াইয়ন-ই বলে।

হ্যাঁ, আমি শিকাগোর সাবার্বে থাকি। বারো বছর ধরে ডেভনে খেতে খেতে ক্লান্ত এখন। আপনি কি বেড়াতে এসেছিলেন?

অমিত এর ছবি

বেড়াতে

উজানগাঁ এর ছবি

ভাই, আপনি অনেক বড়মাপের কামেল লোক। ছবিলেখা অনেক ভালো হয়েছে। হাসি

যুধিষ্ঠির এর ছবি

হা হা, "বড়মাপের কামেল লোক" কথাটা একমাত্র আপনার ক্ষেত্রেই খাটে! আপনার ভালো লেগেছে সেটা আমার কাছে বিরাট একটা ব্যাপার! ধন্যবাদ।

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

ইশশিরে! কবে যে যেতে পারব! খুব সুন্দর হয়েছে! মনে হয়না এতো আগে তোলা।

---------------------------------------------------
আয়েশ করে আলসেমীতে ২৩ বছর পার, ভাল্লাগেনা আর!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

ধন্যবাদ, বালিকা।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধর্ম্মপুত্র, আপনার ছবি নিয়ে পূর্বজন্মে যা কিছু আজেবাজে কথা বলেছিলাম তার সব ফিরিয়ে নিলাম। দণ্ডকারণ্য যে শুধু ইট-কাঠের নগর নয় বরং বিশাল প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার তা আপনার কাছেই শুনেছিলাম। এর কিছু প্রমাণ আগে পেয়েছি, আজ আরো ভালোভাবে তা প্রমাণিত হল। ছবি কেন খারাপ হলে তা নিয়ে বিশাল বৃত্তান্তে না গিয়ে ওখানে যাবার আর ওখানকার বর্ণনা আরো বেশি পেলে ভালো হত। কারণ, সচলে এত বড় বড় ফটুরেরা আছেন যে সেখানে নবীশরা নিশ্চিন্ত মনে ছবি পোস্টাতে পারে। আর আপনার কাছ থেকে গল্পটাই শুনতে না পেলে চলবে কী করে?

ব্লু রিৎস পাহাড় আর শ্যানানডোয়া নদীর ছবি আর সেখানে ঘোরার গল্পগুলো এবার বাজারে ছাড়ুন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

যুধিষ্ঠির এর ছবি

আপনি আমার ছবি নিয়ে আজেবাজে বলেছিলেন নাকি! পুরোপুরি ভুলে গেছি! মনে হচ্ছে আপনার কথা শুনে ঠিকমতো মেজাজ খারাপ করিনি... নাহলে তো ভুলে যাওয়ার কথা না। কি বলেছিলেন আবার বলুন তো দেখি - এইবেলা পুষিয়ে দেই। হাসি

ভাই রে, আপনার মত সুন্দর করে যদি গল্প বলার ক্ষমতা যদি থাকতো, তাহলে কি আর ব্লু রিজ পাহাড় আর শেনানডোয়াহ নদীর গল্প বলার জন্য অনুরোধ করতে হত! লিখতে পারি না বলেই তো ছবি-টবি দিয়ে ফাঁকিবাজী করার চেষ্টা করি।

সিরাত এর ছবি

আমিও পয়েন্ট-এ্যান্ড-শুট করবার চাই। দেখি কার থেকে ক্যামেরা ধার নেয়া যায়।

ছবি ভাল লাগলো।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।