মহীশুরের বাঘ, পর্ব-তিন

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
লিখেছেন সবুজ পাহাড়ের রাজা (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৩/০২/২০১২ - ১:২১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মহীশুরের বাঘ (আগের পর্বগুলো)

প্রথম এ্যাংলো-মহীশুর যুদ্ধে নিজেদের পরাজয় ব্রিটিশরা সহজে হজম করতে পারেনি। তাই, তারা সুলতানের বিপক্ষে সুযোগ পাওয়া মাত্র তা কাজে লাগাত। মহীশুরের মালাবার উপকূলে বিদ্রোহ চলছিল। ব্রিটিশরা অস্ত্র-প্রশিক্ষণ-রসদ দিয়ে সাহায্য করে আসছিল এই সব বিদ্রোহীদের। সুলতান হায়দার আলী দেখলেন, মালাবারের বিদ্রোহ দমন করতে হলে, ব্রিটিশদের সেখান হতে তাড়াতে হবে। তাই, ১৭৭৮ সালে হায়দার তাঁর অনুগত চিরাক্কালের রাজা রাম ভার্মাকে পাঠালেন মালাবারের কাছে ব্রিটিশদের বন্দর টেলিচ্চেরি/থলেশ্বরী দখল করবার জন্য। কিন্তু উত্তর মালাবারের কান্নুর এলাকার (কাত্তায়াম) বিদ্রোহী রাজা কেরালা ভার্মা ব্রিটিশদের সাথে একত্রিত হয়ে চিরাক্কালের রাজা রাম ভার্মাকে পরাজিত করেন। ১৭৭৯ সালে আবার মহীশুর অনুগত চিরাক্কাল বাহিনী ব্রিটিশদের থলেশ্বরী বন্দর দখল করার জন্য অভিযান করে। সে কাহিনী আগামী পর্বে বলবো।

ব্রিটিশ আর ফরাসী তখন পরস্পরের চরম প্রতিদ্বন্দ্বী। আজীবনের প্রতিদ্বন্দ্বী ফরাসীদের সাথে সুলতানের সুসর্ম্পক ব্রিটিশরা ভালো চোখে দেখেনি। আমেরিকায় তখন চলছিল স্বাধীনতা যুদ্ধ। এই যুদ্ধে ফরাসীরা আমেরিকার পক্ষে অংশ নেয়। এতে ব্রিটিশরা ফরাসীদের উপর চটে যায়। ভারতবর্ষেও দেখা দেয় এর প্রভাব।

‘তৃতীয় মারাঠা মহীশুর’ যুদ্ধে নিজাম-মারাঠা সম্মিলিত বাহিনী পরাজিত হয় হায়দার-টিপুর কাছে। মহীশুর বাহিনী কর্নাটক পর্যন্ত বিশাল সালতানাত প্রতিষ্ঠা করে। অন্যদিকে, চুক্তিভঙ্গকারী বিশ্বাসঘাতক ব্রিটিশদের শায়েস্তা করার জন্য ১৭৭৮ সালে হায়দার-টিপু ‘ব্রিটিশদের প্রতিদ্বন্দ্বী ফরাসীদের’ ও ডাচদের সাহায্যে মহীশূর নৌবাহিনী সংগঠিত করে।

হায়দার-টিপু ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি নিচ্ছেন আর ফরাসীরা এতে সরাসরি সাহায্য করছে-এই খবর ব্রিটিশদের কানে গেলে তারা ফরাসী ও মহীশুরের উপর প্রতিশোধ নেবার উপায় খুঁজতে থাকে। ১৭৭৯ সালের শুরুর দিকে ব্রিটিশরা মারাঠা-নিজামের সাথে মৈত্রী চুক্তি করে। এরপর মহীশুরকে দুর্বল করার জন্য মালাবার উপকূলে বিদ্রোহে সাহায্য করে কিন্তু মহীশুর মালাবারের এই বিদ্রোহ বড় হবার আগেই শেষ করে দেয়। অন্যদিকে, আজন্মের প্রতিদ্বন্দ্বী ফরাসীদের শায়েস্তা করার দুটো ছুতো পেয়ে যায় ব্রিটিশরা-এক) ফরাসীরা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে মহীশুর সুলতানকে সাহায্য করছে। খ) ফরাসীরা আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আমেরিকানদের সাহায্য করছে। এই প্রেক্ষিতে, ১৭৭৯ সালে ব্রিটিশরা ফরাসীদের পন্ডিচেরীর মাহী পোর্ট ধ্বংস করে দেয়। মাহী পোর্ট হায়দার আলীর কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল; কারন, মহীশুর যেসব ফ্রেঞ্চ সামরিক সরন্জাম আমদানি করতো, তার সবই এই বন্দর দিয়ে আসতো। এই বন্দরে নিরাপত্তার জন্য সুলতানের সৈন্যও ছিল; ব্রিটিশরা বন্দর ধ্বংসের সময় সুলতানের সৈন্যও হত্যা করে। এই ঘটনাগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে জন্ম দেয় দ্বিতীয় এ্যাংলো-মহীশুর যুদ্ধের (১৭৭৯-১৭৮৪)।

দ্বিতীয় এ্যাংলো-মহীশুর যুদ্ধ ছিল ভারতে সংঘটিত ব্রিটিশ-ভারতীয় যুদ্ধগুলোর মধ্যে অন্যতম রক্তক্ষয়ী। এই যুদ্ধে অংশ নেবার জন্য খোদ ব্রিটেন ও ফ্রান্স হতে ভারতে সৈন্য আসে। ১৭৮০ সালের জুন-জুলাইয়ে চতুর হায়দার পুত্র টিপু ও করিম খানকে নিয়ে ভারতের পূর্ব উপকূলের পূর্বঘাট পাহাড়ী এলাকা দিয়ে তামিলনাড়ুর ব্রিটিশ লক্ষ্যবস্তুতে আক্রমন করতে থাকেন।


পূর্বঘাট পাহাড়ী এলাকা (ছবি: অর্ন্তজাল)

এরপর, মহীশুর বাহিনী উত্তর কর্নাটকের ব্রিটিশ স্থাপনায় অভিযান পরিচালনা করে। আগস্টে স্কটিশ বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ অফিসার হেক্টর মুনরো মাদ্রাজ হতে রওনা দেন হায়দারকে ধরাশায়ী করার জন্য। এসময় হায়দারের কাছে খবর আসে হায়দ্রাবাদ হতে কর্নেল উইলিয়াম বেইলি সৈন্য নিয়ে আসছে মুনরোর সৈন্যদের সাথে যোগ দেবার জন্য। হায়দার ভাবলেন, মুনরো আর বেইলির একত্রিত ব্রিটিশ বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করা কঠিন হবে। তাই, হায়দার পুত্র টিপুকে পাঠালেন কর্নেল বেইলির সৈন্যদের বিরুদ্ধে, যাতে তারা মুনরোর সৈন্যদের সাথে একত্রিত না হতে পারে। তিন হাজার সৈন্য নিয়ে টিপু রওনা দিলেন।
এদিকে, মুনরো সৈন্য নিয়ে অবস্থান করছিলেন মাদ্রাজ থেকে একশো মাইল উত্তরে কান্জিভরমে। হায়দার বাহিনী নিয়ে এগিয়ে গেলেন কান্জিভরমে।
বেইলি বুঝতে পারলেন, সময়মতো মুনরোর পাশে গিয়ে দাঁড়াতে না পারলে মহা বিপদ। তাই, যত দ্রুত সম্ভব বেইলি এগিয়ে চললেন।


কর্নেল উইলিয়াম বেইলি ও হেক্টর মুনরো (ছবি: যথাক্রমে Robert Edge Pine ও David Martin)

২৫ আগস্ট, ১৭৮০, দুপুরের দিকে, বেইলি সাড়ে আট হাজার সৈন্যসহ কাটালাইয়া নদী তীরে এসে পৌঁছান। রাতের জন্য এই নদী তীরেই তাঁবু খাটান। রাতে প্রবল বৃষ্টি নামল আর সাথে উপরি হিসেবে এলো বন্যা। আটকে পড়লেন বেইলি। টানা আটদিন আটকে থাকার পর ০৩ সেপ্টেম্বর বেইলি রওনা দেন কান্জিভরমের দিকে। কান্জিভরমের দশ-পনেরা মাইল দূরে পেরামবাক্কাম নদী পার হবার পর হঠাৎ করে টিপুর মহীশুরী রকেট আর কামানের আক্রমনে ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলো বেইলির সৈন্যবাহিনীর সামনের অংশ। হতভম্ব হয়ে গেলেন বেইলি। দ্রুত সৈন্যদের চর্তুভূজ ফরমেশানে সাজিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন। এদিকে,কান্জিভরমে পর্যাপ্ত পরিমাণ সৈন্য রেখে হায়দার আলীও যোগ দিলেন টিপুর সাথে। হায়দার আলী তাঁর অশ্বারোহী বাহিনী নিয়ে সামনের দিক থেকে আক্রমন করেন বেইলির সৈন্যদের। মুহুর্তে ভেঙে গেলো ব্রিটিশ সৈন্যদের ফরমেশান। হায়দারের অশ্বারোহী বাহিনী আর টিপুর রকেট-কামানের আঘাতে নাস্তানাবুদ হলেন বেইলি। কোন উপায় না দেখে অবশেষে ১০ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পন করলেন বেইলি।


টিপুর রকেটের আঘাতে লন্ড ভন্ড ব্রিটিশ বাহিনী (ছবি: Charles Hubbell)

এদিকে বেইলির পরাজয়ের খবর শুনে চিন্তিত হলেন মুনরো। সিদ্ধান্ত নিলেন পিছু হটে মাদ্রাজ ফিরে যাবার। কারন, এই অবস্থায় মহীশুর বাহিনীর বিরুদ্ধে একা যুদ্ধে যাওয়া আত্মহত্যার শামিল।

ইতিহাস ব্রিটিশদের এই পরাজয়কে মনে রাখবে। ইতিহাসে এই যুদ্ধকে বলা হয় পেরামবাক্কামের যুদ্ধ। ভারতবর্ষে এটা ব্রিটিশদের সবচেয়ে লজ্জাজনক ও ভয়াবহ পরাজয়। এ যুদ্ধে ব্রিটিশদের তিন হাজার সৈন্য মারা যায় ও পাঁচ হাজার সৈন্য বন্দী হয়। বেইলি ও বন্দী সৈন্যদের মহীশুরের রাজধানী শ্রীরঙ্গপত্তমে পাঠানো হয়।


পেরামবাক্কামের যুদ্ধ (ছবি: টিপুর গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদের দেয়ালে আঁকা ম্যুরাল)

নভেম্বরের শুরুর দিকে হায়দার আলী উত্তর কর্নাটকের ব্রিটিশ স্থাপনাগুলো আক্রমন করেন। আর এখানেই ভুল করেন হায়দার আলী। হায়দার আলী চাইলেই পেরামবাক্কামের যুদ্ধের পর ব্রিটিশদের থেকে মাদ্রাজ কুঠি দখল করে নিতে পারতেন। সেসময় ব্রিটিশদের থেকে মাদ্রাজ কুঠি দখল করে নিলে দক্ষিণ ভারতে হয়তো চিরদিনের মত ব্রিটিশ আগ্রাসন বন্ধ হয়ে যেতো। কিন্তু হায়দার মাদ্রাজ দখল না করে ০৩ নভেম্বর উত্তর কর্নাটকের ভেল্লোরে ছোট একটি ব্রিটিশ কুঠি দখল করেন। আর এই সুযোগ ও সময়টাই কাজে লাগায় ব্রিটিশরা। ব্রিটিশরা মাদ্রাজের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে। সৈন্য বাহিনী নতুন করে সংগঠিত করে।
আরও একটা দু:সংবাদ অপেক্ষা করছিল মহীশুরের জন্য; আইরিশ বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেফেট্যানেন্ট জেনারেল আইরে বাংলা হতে বিশাল বাহিনী নিয়ে নিয়ে মাদ্রাজ আসছেন।

(মহীশুরের বাঘ, পর্ব-চার)

পাদটীকা

  • ১. হায়দার ব্রিটিশদের থলেশ্বরী বন্দর আক্রমন করলে, ব্রিটিশরা রাজা কেরালা ভার্মার কাছে সাহায্য চায় এবং বিনিময়ে প্রতিশ্রুতি দেয়, ব্রিটিশরা তাকে মহীশুরের বিপক্ষে স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহায্য দেবে কিন্তু এই ব্রিটিশরাই ১৭৯২ সালে তাদের স্বাধীনতা হরণ করে। ব্রিটিশরা ভারতীয়দের আভ্যন্তরীণ কোন্দল খুব ভালো করেই কাজে লাগিয়েছিল।
  • ২. ডাচরা তখন ব্রিটিশ প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধে ডাচরা ব্রিটিশদের বিপক্ষে আমেরিকানদের সাহায্য করে এবং ফরাসীদের মত তারাও ভারতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে মহীশুরকে সাহায্য করে।

মন্তব্য

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

মহীশুরের বাঘ সিরিজের গত দু'পর্বের মন্তব্য থেকে দুটো বিষয় চোখে পড়ে-
০১।
হায়দার-টিপু কি ভারত উপমহাদেশীয় নাকি বিদেশী?
আমি আমার দৃষ্টিকোন হতে উত্তর দিলাম।
হায়দার আলী-টিপুকে আমি বিদেশী বলতে পারি না। কারন, হায়দার-টিপু দুজনের জন্ম-বেড়ে উঠা-মৃত্যু সব এই ভারত উপমহাদেশের বুকে। হায়দারের পূর্বপুরুষ আরব-পারস্য-তুর্কি-আফগান নাকি, ভারত উপমহাদেশীয় ধর্মান্তরিত ব্যক্তি সেটা নিয়ে বিতর্ক আছে।
ভারত উপমহাদেশীয় বলতে যদি কেউ শুধুমাত্র আর্য-অনার্য বুঝে থাকে এবং ভারত উপমহাদেশে স্থায়ীবসতি স্থাপনকারী বাকিদের বিদেশী বলে থাকে, তাহলে, আমাকে বলতে হবে, আর্য-অনার্যরাও তো বাহির থেকে এদেশে এসেছে। তাহলে ভারত উপমহাদেশীয় কারা বা, ভারত উপমহাদেশেরে স্থানীয় মানুষ কারা? এ প্রশ্নটা থেকেই যায়।
তাই, ভারত উপমহাদেশে যুগ যুগ ধরে স্থায়ী বসতি স্থাপনকারী আর্য-অনার্য-গ্রীক-আরব-তুর্কি-আফগান-পার্সীয়ান-মঙ্গল-তাতার-ইউরোপিয়ান কোন মানুষকে আমার ভারতীয় উপমহাদেশের সন্তান ভাবতে কষ্ট হয় না। সারা ভারত উপমহাদেশে ছড়িয়ে থাকা যুগ যুগ ধরে এখানে বসতি স্থাপনকারী কোটি কোটি আর্য-অনার্য, চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গী বাজারে স্থায়ীভাবে বসবাসরত পর্তুগীজদের বংশধর, কলকাতার এ্যাংলো/গোরা বা, আরব, তুর্কি, মুঘল, মঙ্গল, তাতার, আফগান, ইরানী, ইউরোপিয়ানদের আমি বিদেশী বলতে পারি না।
০২।
ইংরেজ-মহীশুর যুদ্ধ কি আসলে শুধুমাত্র ভারতে ফরাসী-ব্রিটিশদের আধিপত্য বিস্তারের যুদ্ধ?
এর উত্তরে আমি বলব-'না'।
মহীশুর-নিজাম-মারাঠা-মালাবার-কর্নাটক-আরকোট-দক্ষিণ ভারতীয় রাজ্যগুলো যুদ্ধ করছিল নিজেদের রাজ্য বিস্তারের লক্ষ্যে। আর তাদের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও নিজেদের দুর্বলতায় কোম্পানীকে ভারত আগ্রাসনের সুয়োগ করে দিয়েছে।
ধরুন, কাত্তায়াম-মহীশুর যুদ্ধ। রাজ্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে মহীশুর কাত্তায়াম আক্রমন করলো। কাত্তায়াম ব্রিটিশদের থেকে অস্ত্র সাহায্য চাইল, অপরদিকে মহীশুর দেখলো ইংরেজদের প্রতিদ্বন্দ্বী ফরাসী; তাই মহীশুর ফরাসীদের কাছ থেকে অস্ত্র সাহায্য চাইল। এভাবেই ভারতের শক্তিগুলো নিজেরা মারামারি করে দুর্বল হয়েছে আর ভারতের আভ্যন্তরীন বিষয়ে কোম্পনীদের নাক গলানোর সুযোগ করে দিয়েছে।

দিগন্ত এর ছবি

উভয় পয়েন্টেই সমর্থন। নিজাম আগাগোড়া কিন্তু ব্রিটিশ বাহিনীকে সমর্থন দিয়ে গেছে, ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহেও তার কোনো পরিবর্তন ঘটে নি।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

নিজাম সর্ম্পকে একটা কথায় বলবো: পৃথিবীতে কিছু লোক আছেন যারা তেলাপোকা হয়ে হাজার বছর বাঁচতে চান, নিজামরাও সেই ঘরানার মানুষ। নিজামরা চাইলে ১৭৬৫-১৭৯৯ পর্যন্ত ভারতবর্ষে অনেক কিছু করতে পারতেন কিন্তু সিংহাসনের লোভে পারলো না।

দিগন্ত এর ছবি

কি করে বলি? নিজাম ১৯৩৭ সালের টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদের হিসাবে বিশ্বের সবথেকে ধনী ব্যক্তি ছিলেন। সুতরাং, নিজাম যা চেয়েছিলেন সেটা পেয়েছেন। বিশ্বের সবথেকে ধনী ব্যক্তিকে যদি আপনি তেলাপোকা বলেন সেটা আপনার সমস্যা চোখ টিপি


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

টাকা পয়সা দিয়ে কি সব হয় ভাই?
ব্রিটিশদের পা লেহন করে বিশাল ধন সম্পত্তির মালিক হওয়া নিজামের চেয়ে ব্রিটিশদের কামানের সামনে বেঁধে কামানের গোলা দিয়ে উড়িয়ে দেয়া দেশপ্রেমিক ভারতীয় সিপাহীর জীবনের সার্থকতা বেশি।

সত্যপীর এর ছবি

চলুক

..................................................................
#Banshibir.

দিগন্ত এর ছবি

আমার কমেন্টটা কিন্তু সারকাসম ছিল
আচ্ছা এগুলো কি ব্রিটিশদের কামান? এই সৈন্যরা কি ব্রিটিশ? দিল্লীতে আক্রমণকারী ব্রিটিশ-বাহিনীর ভাল অংশই কিন্তু ছিল ভারতীয় বা নেপালী।
http://en.wikipedia.org/wiki/Siege_of_Delhi#Preparation_for_the_Assault


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

হুমম, ব্রিটিশদেরই কামান। ভারতে ব্রিটিশ বাহিনীর অধিকাংশই ছিল স্খানীয় সৈন্য। নেপালী,শিখ,বার্মিজরা সংখ্যায় বেশি ছিল।

জাবেদুল আকবর এর ছবি

চলুক

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
পথের ক্লান্তি এর ছবি

চমৎকার। চলুক। শেরে মহীশূরের সম্বন্ধে যত জানছি, ততই মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছি।
মৃত্যুর ঠিক পূর্বেও নাকি তাকে আত্মসমর্পনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল, টিপুর জবাব ছিল, "It is far better to live for two days like a lion than for two hundred years like a lamb."

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
ব্রিটিশদের দ্বারা দূর্গের ভিতর অবুরদ্ধ হয়ে পড়লে সঙ্গী রাজা খান টিপুকে আত্মসমর্পণ করতে বলেন। টিপু জবাবে বলেন-"ওদের (ব্রিটিশ) কাছে মাথা নত করবো বলে তো এত যুদ্ধ করিনি। এই জীবনটার দাম কি এতই কম?"

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

টিপু সুলতান জিন্দাবাদ । গুরু গুরু

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
তানভীর এর ছবি

সম্ভবত এপিজে কালামের 'উইংস অফ ফায়ারে' পড়েছিলাম- কালাম সাহেব নাসার হেড কোয়ার্টারে প্রথম গিয়ে দেখতে পেলেন সেখানে টিপু সুলতানের যুদ্ধক্ষেত্রের ছবি দেয়ালে সুন্দর করে বাঁধাই করে রাখা আছে। আব্দুল কালাম অবাক- এই ছবি এখানে ঝুলানোর মাহাত্ম্য কী! জানা গেলো পৃথিবীর প্রথম রকেট উৎক্ষেপণ এখানেই হয়েছে, সে ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্যই নাসায় এই ছবি। ভারত তখনো মহাকাশে রকেট পাঠায় নি। কালাম কষ্ট পেলেন। আমরা আমাদের অতীত ভুলে গেছি আর এরা শুধু সেটা মনেই রাখেনি, সেই জ্ঞানকে পুঁজি করে কতদূর এগিয়ে গেছে! ভারতের মহাকাশ গবেষণা এগিয়ে নিতে প্রেসিডেন্ট কালামের কতটা ভূমিকা আছে জানি না, তবে এ ঘটনার পর তিনি এ ব্যাপারে বিশেষ উৎসাহী ছিলেন। টিপু সুলতানের সেই ছবি দেখে কালামের যে চৈতন্য হয়েছিলো, তা আমাদের দেশে দুর্লভ। আমরা তার বদলে টিপু সুলতান দেশি নাকি বিদেশি, হিন্দু না মুসলিম এসব বিতর্ক আর টিভি সিরিয়াল নিয়ে বেশি উৎসাহী।

লেখায় চলুক

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

একদম মনের কথা বলেছেন ভাই।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

আসলে আমরা কন একজন মহান মানুষকে পেলেই সবাই চেষ্টা করি তাঁকে একটা কোন গোত্রভুক্ত করতে ।
নাহলে শান্তি নেই ।
আর সেই কাজ করতে গিয়ে হারিয়ে ফেলি শিক্ষণীয় অনেক কিছুই ।

কালাম সাহেবের সম্বন্ধে যতটুকু পড়েছি তাতে একটাই কথা মনে হয়েছে ।
এই আকালেও আকজন মানুষ আছেন যাঁকে শ্রদ্ধায় কুর্ণিশ করা যায় দ্বিধাহীন ভাবে।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

আসলে আমরা কন একজন মহান মানুষকে পেলেই সবাই চেষ্টা করি তাঁকে একটা কোন গোত্রভুক্ত করতে ।

চলুক

হাসান মামুন এর ছবি

সত্যপীরের অনুবাদের থতমত খাওয়াটা অনেক কেটেগেছে। চলুক

সত্যপীর এর ছবি

হিঃ হিঃ হিঃ। শয়তানী হাসি

..................................................................
#Banshibir.

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

সত্যপীর, তোমার অনুবাদ মিস করতেছি। ওঁয়া ওঁয়া তাড়াতাড়ি, পোস্ট ছাড়ো মিয়া।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

মানে বুঝলাম না হাসান ভাই । ইয়ে, মানে...

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

হাসান মামুন,
সত্যপীরের অনুবাদ তো অসাধারণ।
জেমস সাহেবদের মত গোঁড়া ভারত-উপমহাদেশ বিরোধীদের থেকে ভারত ও এর মানুষ সর্ম্পকে ভালো কিছু আশা করাটাই দুরাশা।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

হাসান মামুন এর ছবি

সত্যপীরের অনুবাদ ভালো না তা বলছি না। তিনি যেই বইয়ের অনুবাদ করছেন , এই বিষয়ে সেই ধরনের দৃষ্টিকোনের বই বা প্রবন্ধ আমি আগে কখন পড়ি নাই। তাই প্রথম পড়াতে অনেকটা থতমত খেয়েছিলাম। এখন অনেকটা কেটেছে কারন যা আমরা স্কুল কলেজে পড়ে থাকি তার সাথে মিলাইতে পারছি। অসাধারন সিরিজ হচ্ছে সত্যপীর আর আপনার লেখার। বলা যায় অনেকটা নতুন করে জানছি। আপনার আগের পোষ্ট এর সত্যপীরের মতামত ১০০ ভাগ সহমত। সামনে একই বিষয়ে ২ দৃষ্টি ভঙ্গির সিরিজ পোষ্ট আশা করছি ।

আপনারা ২ জনেই অসাধারন

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

লইজ্জা লাগে
আসেন ভাই কোলাকুলি
মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ ভাই।

সত্যপীর এর ছবি

ভাই বুকে আসেন কোলাকুলি

..................................................................
#Banshibir.

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

সবুজ পাহাড়ের রাজা কে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ ।

খুব ভাল লাগছে আপনার লেখা ।
চালিয়ে যান ।

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
মরুদ্যান এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
উচ্ছলা এর ছবি

টিপু সুলতান আসলেই একটা বাঘের বাচ্চা হাসি

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

আসলেই।
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

বান্ধবী এর ছবি

টিপুর বাঘ, তলোয়ার – এসব নিয়ে আলাদা করে কিছু লিখুন। সহজভাবে জানতে ইচ্ছে করে হাসি

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

সবই লিখব। হাসি
মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ ভাই।

শান্তুনু বড়ুয়া এর ছবি

পেরামবাক্কামের ধোলাই! মহীশুরের জয় হোক! লেখা চলুক।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।