কথাকলি । ০১। প্রেমিক পাগল আর কবি

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: বুধ, ২৮/০৫/২০০৮ - ৩:০৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

৮৯ এ কলেজে ভর্তির কিছুদিন পরেই মোটামুটি ফাইনাল হয়ে গেলো আমি ঢাকা যাচ্ছি সিনেমায় নায়কের ছোটভাই হতে। কিন্তু মা-জননী রাজি না। তিনি বলেন আমার দুইদিকের রক্তই বেইমান। এরা একবার ঘর ছাড়লে আর সেই ঘরে ফেরে না কোনোদিন। নিজের চাচার সাথে ঝগড়া করে বাড়ি ছেড়ে জীবনেও নিজের বাপের ভিটাতে পা দেননি দাদা। আমার জন্মের দু-বছর পরে সর্বশেষ বাবা গিয়েছিলেন তার বাবার বাড়ি। নানা ষোলো বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে নিজের গ্রামে ভুলেও একবার পা ফেলেননি। আর নানির উপর রাগ করে বিশ বছর ধরে নানাবাড়ি যান না মা-জননী স্বয়ং

আমার দুইপাশে এরকম দুই বেওয়ারিশ জেনারেশন। সেজো ফুপু বলেন- এইগুলা হারাম রক্ত। এই রক্তে সবই আছে শুধু আঠা নাই

শুটিংয়ের দেড়-মাস বাকি। আমাকে চলে যেতে হবে মাসখানেকের মধ্যে। কলেজ ট্রান্সফারের ব্যবস্থাও প্রায় শেষ। এর মধ্যে একদিন সোহেলভাই এসে হাজির। আমার দু বছরে বড়ো ফুপুতো ভাই

সোহেল ভাইকে একটু এড়িয়ে চলি আমি। সারাক্ষণ আগামাথা ছাড়া বকবক। আর সবগুলো বকবকানির মূল উদ্দেশ্যই হলো নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ করা। আমার অ্যাকটিংয়ের কথা শোনার সাথে সাথে একটা বিশেষজ্ঞ লেকচার ঝেড়ে দিলো। এবং যোগ করল যে সে নাকি কোনো একটা নাটকের দলে কাজ করে

করলে করুক আমার কী? কিন্তু তার একটা কথা একটু অন্যরকম মনে হলো। বলল- আমাদের গ্রুপে দশ দিনের একটা ওয়ার্কশপ হচ্ছে। অভিনয় শেখাবে। অলরেডি একদিন হয়ে গেছে। তুমি এটাতে জয়েন করলে ঢাকা যাওয়ার আগে অভিনয়টা তোমার গ্রিপে চলে আসতো

বিষয়টা খারাপ না। সময়তো আছেই

পরেরদিন বিকেলে সিলেট পুরান মেডিকেলের সামনে এক চায়ের দোকানদারকে জিজ্ঞেস করলাম- এখানে নাটক হয় কোথায়?
লোকটা একটা নিচু জমির মতো জায়গায় তিনটা টিনশেডের একটা দেখিয়ে দিলো

অনেক লোক সামনের খোলা জায়গায় হুটোপুটি করছে। সবাই নিজের ব্যস্ততা দেখাতে ব্যস্ত। এরা টাউনের লোক। আমি একেবারে জৈন্তাপুরি। জৈন্তার লোকজনকে সিলেটের অন্য এলাকার লোকেরা ডাকে জৈন্তাপুরি ভূত

কারে সালাম দেবো আর কে যে কার থেকে বড়ো আমি হিসাব মিলাতে পারছিলাম না। এরা সবাই সাতাশ আটাশের মতো। সবাই এমন ভাব ধরে হাঁটছে যে সবাই সবার থেকে বড়ো নেতা। আমি তখন বাসদের অ্যাকটিভ মেম্বার। পলিটিক্সে এক ঝলকেই নেতা- পাতি নেতার পার্থক্য করা যায়। কিন্তু এখানে তো দেখি মুশকিল...

একটা পাবলিক বেশ লম্বা চওড়া ফর্সা এবং হ্যান্ডসাম। তার গলার আওয়াজও সবার থেকে বেশি। সবগুলো মেয়েই যেচে এসে তার সাথে কথা বলছে। অনুমান করলাম- এইটাই লিডার। তাইলে এরেই সালামটা দেই
দিলাম সালাম
একটা- দুইটা- তিনটা- চারটা
উত্তরতো দূরের। পাবলিক আমার দিকে তাকালই না

আরেক পাবলিক শ্যামলা হ্যান্ডসাম। লম্বা লিডারি পাঞ্জাবি পরা। গলা ভাঙা ভাঙা আর মুখে একটা মিঠাইমার্কা হাসি। সে এখানে ওখানে যায় আর উপদেশ দেয়। আমার দিকে তাকায় না

আরেক পাবলিক ক্লাউনের মতো তিড়িং বিড়িং করে মেয়েদের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। ফিসফিস করে কী যেন বলে মেয়েগুলা ফিক ফিক করে হাসে

আরেক পাবলিকের ক্যান্সার মার্কা খোঁচাখোঁচা দাড়ি। এলোমেলো চুল। শরীরে চামড়া আর হাড্ডির বাইরে এক ছটাক মাংসও নেই। চেহারা দেখে মনে হয় ক্রনিক ডিসেন্ট্রির রোগী। সবকিছুর উপরই বিরক্ত। কারো সাথেই তেমন কথা বলে না। কিন্তু সবচে সুন্দরী মেয়েটা ওর পাশে বসে ক্রমাগত বাকবাকুম করে যাচ্ছে সেই তখন থেকেই

আমাদের বয়েসি দুটো ছেলে। একটা একেবারে টমেটোর মতো টসটসে। বিস্কুটমার্কা চেহারা। জুনিয়র মেয়েগুলা সব সময়ই এর চারপাশে ঘুরঘুর করছে। আরেকটা পণ্ডিত। টিংটিংয়ে শরীর। হাতে একটা মোটা বই নিয়ে আমার দিকে এমনভাবে তাকাচেছ যেন আমি এসে পুরোটা এলাকাটাই নাপাক করে দিয়েছি

তখনও ওয়ার্কশপ শুরু হয়নি। মনে মনে সোহেল ভাইকে গালি দিতে দিতে আরেকটা একটা বিড়ি ধরিয়ে টানছি। পাশের সমাজসেবা অফিসের বারান্দায় বসা এক পাবলিক আমাকে ইশারা করল। এর বয়স অন্যদের থেকে পাঁচ ছয় বছর বেশি। চোখে একটা বুদ্ধিজীবী চশমা। ফ্রেমের উপর দিয়ে আমার দিকে তাকাল- নাম?
- লীলেন?
- লীলেন আবার নাম হয় কীভাবে? ওটা হবে লেনিন
- বাঙালরা দুটো দন্তিয় ন একসাথে উচ্চারণ করতে পারে না। লেনিনকে ডাকে লেলিন। এইজন্য আমার নামটা শুরু থেকেই রাখা হয়েছে লীলেন
- কীসে পড়া হয়?
- ইলিভেন সাইন্স। এমসি কলেজ
- বাড়ি?
- চিকনাগুল
- ওহ। জৈন্তাপুরি? জৈন্তাপুরিরাতো সিলেটি ভাষাই বলতে পারে না। বাংলা ভাষায় নাটক করবে কীভাবে?
- জৈন্তাপুরিরা কিন্তু সৌদি আরবে গিয়ে আরবিতেও মাটি কাটে
পাবলিক আমাকে একবার দেখল। চশমাটা একটু নেড়েচেড়ে আবার জিজ্ঞেস করল- তা এখানে কী করতে আসা?
- গ্রুপে কাজ করতে চাই

কথাটা সোহেল ভাইর শেখানো। দশ দিনের জন্য অভিনয় শিখতে এসেছি বললে নেবে না। বলতে হবে গ্রুপে কাজ করতে চাই

পাবলিক আমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত তাকাল- এখানে কাজ করতে মোটা হলে তিনটা যোগ্যতা লাগে। সেগুলো আছে?
- কী কী যোগ্যতা?
- কথাকলিতে কাজ করতে হলে প্রথমে কবি হতে হয়। তারপর প্রেমিক হতে হয় আর তারপর হতে হয় পাগল...

আমি তার চোখের দিকে তাকালাম- প্রথম দুটো যোগ্যতা অলরেডি আছে। আর তৃতীয়টা আপনাদের দেখাদেখি শিখতে সময় লাগবে না আমার

চশমা খুলে লোকটা দাঁড়িয়ে গেলো। আমাকে আরেকবার দেখে একটা হাসি দিলো- হবে। জৈন্তাপুরি হলেও কাজ হবে

লোকটা অম্বরীষ দত্ত সাধু। সাধুদা কথাকলির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি...
২০০৮.০৫.২৭ মঙ্গলবার


মন্তব্য

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বাহ্... থিয়েটারের গপ শুরু হইলো... দারুণ... চলুক...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বিরক্ত না হইলেই হইল
আমি বলি আমার জীবন থেকে কথাকলিকে বাদ দিয়ে দিলে পুরো জীবনটাতেই একটা শূন্য ছাড়া আর কিছু বাকি থাকে না
আর যখন প্রচণ্ড বিপদে পড়ি তখন মনে মনে জপি- আমি কথাকলির ছেলে...

০২
আমার জীবনের সবচে বড়ো সিরিজ বোধহয় হবে এটা
বহুবার চেষ্টা করছিলাম এটা শুরু করার জন্য। পারিনি
হঠাৎ করেই গতকাল শুরু করে দিলাম

দেখি কতটুকু যেতে পারি

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ইন্টারেস্টিং একটা সিরিজের ইঙিত ।

প্রান্তিকের কোন ছবি আছে নাকি লীলেন ভাই ?
মাঝে মাঝেই দেখতে ইচ্ছে হয় । কিন্তু আমার কাছে একটাও ছবি নেই ।

আগে যদি জানতাম এই ঘরগুলো একদিন ভেঙ্গে ফেলবে , নির্ঘাৎ ছবি তুলে রাখতাম ।

-----------------------------
কালের ইতিহাসের পাতা
সবাইকে কি দেন বিধাতা?
আমি লিখি সত্য যা তা,
রাজার ভয়ে গীত ভনি না।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দুয়েকটা রংজ্বলা ছবি থাকার কথা
আজ খুঁজে দেখব
প্রান্তিকের সবগুলো মানুষ মরে যাবার আগে কারো না কারো কাছে তো অবশ্যই পাওয়া যাবে
জোগাড় করব

আর সিরিজটা শুরুই করে দিলাম
একসাথে বসে স্বপ্ন। একসাথে হতাশা
সংঘাত- প্রেম- ক্ষয়- মৃত্যু আর অনিবার্য স্মরণের সেই নাটক কাহিনী

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍শেষমেষ হতে পেরেছিলেন নায়কের ছোট ভাই?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর? চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সন্ন্যাসীর ধৈর্যই যদি অত তাড়াতাড়ি ভেঙে যায় তাহলে কেমনে হয়

খাড়ান
আমিও একবার সন্ন্যাসী হবার জন্য গিয়েছিলাম
সেই কাহিনীও আসবে
তখন দেখব কার সাধনার দৌড় কতটুকু

মুশফিকা মুমু এর ছবি

কবি,প্রেমিক,পাগল গড়াগড়ি দিয়া হাসি মজারতো, তারপর কি হোলো? আপনার ছোট ভাইয়ের রোলটা কোন সিনামার ছিল?
-------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আস্তে আস্তে
তোমার বয়স ৮০ হবার আগেই সিরিজটা শেষ হবে নিশ্চয়তা দিচ্ছি

আকতার আহমেদ এর ছবি

কথাকলি । ০১। - মানে এটা একটা সিরিজ হতে যাচ্ছে !
দুর্দান্ত শুরু.. চলুক

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সিরিজ না
ম্যারাথন সিরিজ
কথাকলির সূত্র ধরেই ছড়া-কবিতা-গল্প-ব্লগ-সচলায়তন
কথাকলি ধরেই চাকরি বাকরি চাপাবাজি
কথাকলির কারণেই বাংলাদেশে থাকার সাহস
আর কথাকালির কারণেই প্রেম করতে না পারা

পুরোটা মিলে একটা সিরিজের সিরিজ বলা যেতে পারে
(ততক্ষণ পর্যন্ত সচলাররা আমারে না পিটালেই হয়)

রায়হান আবীর এর ছবি

আপনার নামকরণের ব্যাখ্যাটা তো দারুন...সিরিজটা চরম হবে মনে হচ্ছে। চলুক
---------------------------------

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কথাকলি নাটকের দলের নাম
পুরো নাম কথাকলি সিলেট

রেনেট এর ছবি

কথাকলির কথামালা কথকের মুখে চলতে থাকুক।
এই আমি বসলুম।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

লিটন এর ছবি

প্রান্তিক চত্বরে ঢুইকা প্রথমেই একটা 'লোক' আর পরের গুলা সব একেকটা পাবলিক... কারণ কি?

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ওই লোকরেও পাবলিক বানিয়ে দিলাম
যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তাদের চিনি না ততক্ষণ পর্যন্ত তারা সবাই লোক
আর যতক্ষণ পর্যন্ত তারা আমাকে চেনে না ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই পাবলিক

এটাও কথাকলির থিওরি

সুতরাং সাধু দা ছাড়া বাকি সবাই এখনও পাবলিক

খেকশিয়াল এর ছবি

অতঃ লীলেন কথন ...
চলুক চুলুক

-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

শাহীন হাসান এর ছবি

চলুক ...
ভাল-লাগছে ।
....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !

....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আমরা সাধারণ পাবলিক, সন্ন্যাসী না।
কাজেই ধৈর্য ধারণে আমরা বাধ্য নই।
তাড়াতাড়ি প্রশ্নগুলোর জবাব চাই।
০১. ছোট ভাইয়ের রোল করা সেই সিনেমার নাম কি?
০২. তিন নাম্বার যোগ্যতা অর্জনে আপনার লাগলো কতদিন?
০৩. পরের পর্ব কতক্ষণে ?

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ছবির নাম- মইরা যাইয়া দ্যাখ কেমন লাগে (আসিতেছে)

০২
তিন নম্বর যোগ্যতা শুধু অর্জন করতে হয় কিন্তু বললেই বাজার নষ্ট
এইটাই একমাত্র যোগ্যতা যা যোগ্যতা নাই বললে বেশি দাম পাওয়া যায়
সুতরাং...

০৩

পরের পর্ব
আসিতেছে.......

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

লীলেনের দেরী দেখে উত্তর দিচ্ছি-
১) সিনেমার নাম ছিলো "রসের বাইদানী"।খেয়াল করলে দেখবেন দেখবেন বাইদানী শব্দটা লীলেনকে কতটুকু আচ্ছন্ন করে আছে।
২)ঐটা আজ অবধি হয় নাই।যে কারণে শো'র দিন লীলেনকে টিকেট বিক্রি বা বাইরে ঘুরাঘুরি করতে দেখা যায়।
৩)পরের পর্বের জন্য লীলেনকে সতর্কবাণী-সব দিয়ে দিলে বইয়ের ক্রেতা পাওয়া যাবে না।

---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

ও আচ্ছা !
ঘটনা তাইলে এইরকম !!
তিন নম্বরে জনাব জাতে মাতাল তালে ঠিক,
তাই না প্রকাশকজী...?

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমি যখন নায়কের ছোটভাই হবার স্বপ্ন দেখছি তার কিছুদিন পরেই কিন্তু আহমেদুর রশীদ সাহেব সিনেমার প্রডিউসার হয়ে বসেছেন
এবং তার কাকরাইলের অফিসে সারি সারি নায়িকা নায়িকার মধ্যখানে বসে....
( আমি এর বেশি কিছু দেখিনি। মাত্র দুইদিন তার অফিসে গিয়েছিলাম)

সতর্কবাণীঃ
নিজেদের বৌ-বান্ধবীর হাত হইতে নিজেদের পিঠ নিজেরা সামলাইয়া রাখিবেন। এই সিরিজে কাহারো চামড়া বাঁচাইবার কোনো তরিকা নাই

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

কাকরাইলের দরজা কারো জন্য বন্ধ ছিলো না।
তবে নব্য প্রডিউসার কাম ডিরেক্টর লীলেন সাহেব তার সুটিং স্পটের ত্রিসীমানায় কাউরে ঘেষতে দেন না কেন- ব্যাপারটা নিয়ে অনেককে মুচকি হাসতে দেখা যায়।

---------------------------------------------------------
আমাকে ডাকে আকাশ, বোঝে মাটি হাওয়া জল
বোঝে না মানুষ আর বিনাশী মুদ্রার ছল

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

মাহবুব লীলেন এর ছবি

খালি মুচকি হাসি কেন
ঠা ঠা করে হাসলেও আমার অসুবিধা নেই

কিন্তু সাবেক সিনেমাওয়ালাদের সেটে ঢুকতে দিলে শট ফেলে নায়িকা কোনটা যে কোন দিকে যাবে তার কোনো ঠিক আছে?
(তার উপরে কোনো কবি শুনলে তো সঙ্গে সঙ্গে নাযিকার শরীরে ঘামাচি বের হয়ে যাবে)

তার চেয়ে শুটিংয়ের সময় নায়িকা থাকুক
পাবলিকের গালাগালির মধ্যেও নাটক বানাই

অতিথি লেখক এর ছবি

লীলেন ভাই সবই শুনলাম, বুঝলাম। দয়া করে অনুচ্ছেদগুলোর শেষ বাক্যে দাঁড়ি না দিলে পড়তে গিয়ে মাথা ধরে যাচ্ছে। স্লো অব মাইন্ড আর কি!! মনে হচ্ছে এটা আপনার স্টাইল। কিন্তু আমার মনোসংযোগে সমস্যা হয়। এদিকটা একটু দেখবেন, প্লিজ্!

জিজ্ঞাসু

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ডানে বামে জেলখানার গারদের মতো অতো ডান্ডা দেখতে ভালো লাগে?

ঠিক আছে
এখানে কয়েকটা দিয়ে দিলাম একসাথে

।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।।

চলবে?

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

মাঝপথে থেমে গেলে খবর আছে!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

প্রতিটা পর্ব প্রমাণসহ না পড়লে কিন্তু খবর আছে

দ্রোহী এর ছবি

এই সিরিজ দৌড়াক!!!!!!!!!


কি মাঝি? ডরাইলা?

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দৌড়াইতে আমার আপত্তি নাই
তয় আপনের গাদা বন্দুকডা দিয়া পেছন দিকে একটু কাবার দিয়েন

স্বপ্নাহত এর ছবি

নায়কের ছুড ভাই না হয়া ভীলেন হইলে আরো ভালা হইতো।

আমরাও তাইলে লীলেন ভাইরে ভিলেন লীলেন নামে আরেকটা নাম প্রদান করতে পারতাম । মন খারাপ

---------------------------

থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমার হিসেব মতে বর্তমান বাংলাদেশে একমাত্র গণতান্ত্রিক সম্পত্তি বোধহয় আমার এই নামটাই
একেক পাবলিক একেক কিসিমে ডাকে
আগে নাম ভুল বললে ঝেড়ে গালাগলি দিতাম
আর কোথাও ভুল লিখলে তো মাইর ছাড়া কথাই নাই

এখন ছেড়ে দিয়েছি
এখন যার যা ইচ্ছা ডাকে
শুধু বস শব্দটা শুনলে মনে হয় পায়ের জুতা খুলে পিটাই

মুজিব মেহদী এর ছবি

মজার লেখা। তবে বেশি মজা লাগল 'ক্যান্সার মার্কা খোঁচাখোঁচা দাড়ি', 'বিস্কুটমার্কা চেহারা' এবং 'আরবিতেও মাটি কাটে' পড়ে।
................................................................
আমার সমস্ত কৃতকর্মের জন্য দায়ী আমি বটে
তবে সহযোগিতায় ছিল মেঘ : আলতাফ হোসেন

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

সবজান্তা এর ছবি

যতই দিন যাচ্ছে, যতই লীলেন ভাই এর বহুমাত্রিক, বর্ণিল জীবনের কথা শুনছি, ততোই আফসোস লাগছে, এমন একটা বৈচিত্রময় জীবন যদি আমার হত।

লীলেন ভাই শুরু করেন, সিরিজ যত বড়ই হোক না কেন, আমি যে শেষ পর্যন্ত পাঠক থাকবো, নিশ্চয়তা দিতে পারি।


অলমিতি বিস্তারেণ

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আর আমার আফসোস হয় জীবনে একটা বারের জন্য যদি সবজান্তাদের মতো নিজের শরীরে ভালোছাত্র এবং ভদ্রলোকের স্টিকার লাগাতে পারতাম
তাহলে কতো মেয়ের মা বাবা যে আমার নামটা মুখস্থ করত....

সবজান্তা এর ছবি

স্টিকার লাগিয়েই বা কি লাভ হল বলেন ! কোন মেয়ের বাবা মা তো আর আমার নাম মুখস্ত করে বসে নেই।

আর সত্যি বলতে কি ছাত্রটা তাও যৎকিঞ্চিত, কিন্তু ভদ্রলোকের ট্যাগটা আসলে আমার গায়ে তেমন ভাবে নেই চোখ টিপি


অলমিতি বিস্তারেণ

তীরন্দাজ এর ছবি

- কথাকলিতে কাজ করতে হলে প্রথমে কবি হতে হয়। তারপর প্রেমিক হতে হয় আর তারপর হতে হয় পাগল...

পাগল না হলে কোন কাজই করা যায়না!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অনিন্দিতা এর ছবি

পড়ছি।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

খালি পড়লে হবে না স্যার
কিছু কিছু লিখেন না কেন?

প্রতিদিন কতজন সচল হয়ে যায়
আর আপনি এখনও মডুরামদের আপনাকে যাচাই করারই একটা সুযোগ দিলেন না

আসেন আসেন
গ্যালারি ছেড়ে মাঠে আসেন

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- বস বস পাব্লিকেরা এই সিরিজ চলাকালীন সময়ে বউসমূহ দ্বারা পিটিত হইবে, ভাবিতেই চরম মজা লাগিতেছে মনে।

আহা, আজি কি আনন্দ আকাশে বাতাশে! দেঁতো হাসি
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

এরকম সিরিজে এরকম কমেন্টের কারণে ধুগোর উপর ললনাগজব নাজিল হঊক।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।