বেঢপ বইমেলার বেখাপ্পা দর্শক

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: সোম, ০২/০৩/২০০৯ - ১২:২০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমি বোধহয় দিনদিন বেখাপ্পা হয়ে যাচ্ছি। কোথাও টিউনিং হয় না আমার
বানভাসি গণতন্ত্রে উচ্ছসিত সবার চোখে বইমেলা প্রচুর রঙিন লাগে
মাঠের গণ্ডি পার হয়ে রাস্তায় বের হয়ে আসা মেলাকে কেউ কেউ তুলনা করেন সীমানা পার হওয়ার সাথে

আমি রাস্তায় ঢুকে দেখি বইমেলার স্টল নিয়ে কেউ ক্যাসেট বাজিয়ে বিক্রি করে নিজের ছবি। কেউ বেচে এনজিও কেউ বেচে প্রবাস ক্যাচাল আর কেউ বেচে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর হাসি

২৮ দিনের একটা দিনও এই রাস্তাটাকে মেলা ভাবতে পারলাম না আমি। চা খেতে যখন ওইখান দিয়ে হেঁটে গেছি কেউ ফোন করলে বলেছি- মেলার বাইরে আমি...

বইমেলায় বইয়ের প্রকাশক ছাড়া কেউ স্টল পাবে না
এই সূত্র জানা থাকার পরেও আমরা প্রতিবছর সরকারি দলের পোস্টার বিক্রির জন্য ৩০টা স্টল মেনে নিয়েছি বহুদিন ধরে
এবার দেখি ডবল স্টল নিয়ে কেউ বিক্রি করে সাদা কাগজ। কেউ বিক্রি করে কুড়িয়ে কাড়িনে আনা সিডি ডিভিডি কেউ বিক্রি করে লিফলেট

০২

গতবারের আগে পর্যন্ত লিটলম্যাগে আমরা নিজেরাই ভাগাভাগি করে বসতাম
গতবার থেকে একাডেমি লটারি করে জায়গা দেয় সবার সুবিধার জন্য
এবার গিয়ে দেখি লিটল ম্যাগের সাথে নোট বই বিক্রি করছে একজন লটারি পেয়ে...
আরো কয়েকজন বসেছে যাদের আমিও চিনি না আমার পরিচিতি কেউও চেনে না

০৩
লিটল ম্যাগাজিনকে কেন্দ্র করে প্রতিবার জমজমাট থাকে মেলারর একটা অংশ
এবার তার সাতে আরো বেশি জম্পেশ একটা অংশ যোগ হয় মেলায়
ব্লগ আর অনলাইন লেখক কর্নার...
এই অংশটাতেই এবার সবচেয়ে বেশি প্রাণ দেখা গেছে মেলায়
নিজেদের বই। অনলাইন। আড্ডা। আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিসহ মেলার সবচে জমাট অংশ ছিল অঘোষিতভাবে বইমেলার এই অনলাইন জোন

এখানেই ৫০-৬০টা নতুন বই নিয়ে ছিল শুদ্ধস্বরের মূল স্টল। যার প্রায় অর্ধেক প্রকাশনা অনলাইন কেন্দ্রিক
কিন্তু মারাত্মকভাবে কোয়ালিটি ধ্বস নামা প্রকশনার বিশাল ভাণ্ডারসহ আহমেদুর রশীদকে এবার প্রচণ্ড অচেনা লাগে
না জেনে করা ২০০৪ সালের ভুল এবার আহমেদুর রশীদ করে সচেতন ভাবে...
এবার তাকে প্রকাশকের বাইরে লিটল ম্যাগ সম্পাদক ভাবতে খুবই কষ্ট করতে হয়েছে আমার...

০৪

অর্ধেকের বেশি মাঠ দালানের দখলে যাওয়া বইমেলার এক মাথায় লিটল ম্যাগ
এক মাথায় অনলাইন জোন
দুটোতেই তুমুল প্রাণ তুমুল আড্ডা
দুর্ঘনাক্রমে দুটোতেই বেশিরভাগ মানুষ আমার পরিচিত
আমি এক আড্ডা থেকে আরেক আড্ডায় ঢু মারি
হঠাৎ নিজেকে বেখাপ্পা মনে হয়
লিটল ম্যাগে অনেকেই অনেকের সাথে কথা বলে না
নতুন অনলাইন জোনও কি একেবারে উদার?
এখানেও কি কেউ কেউ কাউকে দেখে মুখ ফিরিয়ে নেননি?

০৫

আমি জানি ফেব্রুয়ারির বইমেলা বন্ধ হয়নি কোনোদিন
সবাইকে বলে গিয়েছিলাম ২৫ তারিখ মেলায় আসব না আমি। ঢাকার বাইরে থাকব
কিন্তু ২৫ তারিখ দুপুর থেকে যখন সবাই নিজের বাড়ির দিকে যাচ্ছে তখন গাজিপুর থেকে আমি এসে হাজির হই মেলায়- একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারির প্রতিদিনই খোলা
অন্তত এইটুকু আমি দেখতে চাই
পুরো মেলায় শখানেক মানুষের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আমি আবিষ্কার করি- একুশে মেলা বন্ধ হয় না কিছুতেই
২৬ তারিখেও তাই

০৬

মেলাটা বাংলা একাডেমির মাঠে থাকবে না আর
অন্য কোনো মাঠে চলে যাবে কোনো ঠিকাদার কিংবা পুলিশের দায়িত্বে
মেলাটা শুধু বই কিংবা প্রকাশনার মেলা থাকবে না আর
বইয়ের সাথে কাগজ স্টেশনারি ছবি এমনকি কনডমের স্টলও হয়তো থাকবে আগামীতে

আমার একটা বই বের হযেছিল এবার
কী কারণে যেন কেউ জিজ্ঞেস না করলে কাউকে বলাই হয়নি কথাটা
আগামীতে কি এবই মেলা ধরেই আমি পাণ্ডুলিপি এডিট করব?

জানি না

০৭

অনলাইন এবং ব্লগের লেখদের মহাস্রোতের ধাক্কাটা এবার টের পাওয়া গেছে পুরো মেলা জুড়ে
প্রায় ৫০টা প্রকাশনা অনলাইন লেখালেখি কেন্দ্রিক
চোখে পড়েছে মেলার সাধারণ দর্শকদেরও
আগামি বছর হয়তো এই সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যাবে
হয়তো মেলায় যুক্ত হবে স্থায়ি এক আন্তর্জাতিক এবং আন্তর্জালিক মাত্রা...

০৮

আশাবাদী হতেই হয়
আপাতত অন্য কোনো উপায় নেই
এবার একজন টিশার্টে আমর কবিতা ছাপিয়ে বিক্রি করেছে মেলায়
আগামীবার কনডমের গায়ে ছাপা হয়ে হয়তো আমার কোনো একটা লেখা এই মেলাতেই আসবে

কারণ নিজেদের দাবি করার মতো উৎসব আমাদের একেবারেই নেই...
২০০৯.০৩.০১ রোববার


মন্তব্য

নিবিড় এর ছবি

হুম...... মেলার বাইরের রাস্তার এই স্টল গুলো আসলেই খুব বিরক্তিকর লেগেছে।
*********************************************************
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

তারপরও স্বপ্ন দেখতে হয় ভাল কিছুর।
দেখবেন একসময় নিজেদের দাবি করার মতো উৎসবের রঙে ফিরে আসবে আমাদের এই বইমেলা।
আপনারা হাল ছাড়লে চলবে কেন?

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

আশাবাদী হতেই হয়
আপাতত অন্য কোনো উপায় নেই

মুজিব মেহদী এর ছবি

বইয়ের চাপেই একদিন অন্য সবকিছু দূর হয়ে যাবে।

স্টলবরাদ্দে রাজনৈতিক একটা কোটা প্রতিবারই থাকে দেখা যায়, এটা বন্ধ হবার কোনো লক্ষণ আপাতত দেখা যাচ্ছে না। তবে সিডি-পোস্টার ও এ জাতীয় অন্যান্য স্টলের চাপ কমাবার সূচনাটা হতে পারে সম্ভবত লেখকদের দিয়ে মেলা উদ্বোধন করবার প্রথা চালু করা থেকে।
দুদিন আগে-পরে লেখকদের এরকম একটা আন্দোলন শুরু করতেই হবে বলে মনে হয়।
..................................................................................
যেন ধ্যানের চেয়ে কখনো বেশি মূল্য না-পায় কোনো দৃশ্যগান, আর মানুষই যেন হয় প্রকৃত আরাধ্য জন আগুনে-ফাগুনে পুড়ে

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

বিপ্লব রহমান এর ছবি

একমত।

তবে 'বইয়ের চাপেই একদিন অন্য সবকিছু দূর হয়ে যাবে' এই কথাটির সঙ্গে বেশ খানিকটা দ্বিমত।

'দজ্জাল' মার্কা বইয়ের অত্যাচার কাম্য নয়।

মনে আছে, গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঢাবির টিএসএসসি বাঁধন নামে একটি মেয়ে থার্টি ফার্স্ট নাইটে 'ছাত্রলীগের সোনার ছেলেদের' খপ্পরে পড়ে দিগম্বর হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর আশির্বাদপুষ্ট ফেনীর গডফাদার জয়নাল হাজারি সংসদে উলঙ্গ বক্তব্য দিয়েই খান্ত হননি; তার হিজাব-বাহিনী তারই লেখা (?) 'বাঁধনের বিচার চাই' নামক একটি বই দিয়ে সেবারের বই মেলা ছেয়ে ফেলেছিলো!!

মেলার চরিত্র ও বইয়ের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার সত্যিই খুব প্রয়োজন।


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

সবজান্তা এর ছবি

আগেও বলছি, এখনো বলি

ফকির আলমগীর জিন্দাবাদ !


অলমিতি বিস্তারেণ

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

অনেকদিন পর একটা সুস্বাদু লেখা পড়লাম। এত সুস্বাদু লাগার কার‌ণ, লেখার অনেক বিষয়ই অনুভব করেছি নিজে।
---------------------------------------------
আমাকে ছুঁয়ো না শিশু... এই ফুল-পাখি-গান সবই মিথ্যা!

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

সাক্ষাতে বইমেলা দেখিনা ছয় বছর হয়। সে-জন্যই হয়তো অনেক দৃশ্যকল্প অনেক চেষ্টায়ও আঁকতে পারলাম না।

স্নিগ্ধা এর ছবি

আমারও ইশতিয়াকের মতো অবস্থা - এতদিন বইমেলা দেখি না যে বুঝতেই পারছি না ......

হাসিব এর ছবি

০১.
আমার প্রথম বইমেলা ভ্রমন এই সাদা কাগজ কেনা সূত্রেই ।
এক দুপুরে আমার এক মামা এস বললেন চল বইমেলায় যাই ।
বিকেল নাগাদ দেখা গেলো পিচ্চিমহলে চরম অপছন্দের ঐ মামা আমার মতো আরোও আধা ডজন গুড়িগুগলি যোগাড় করে ফেলেছেন । তখনকার দিনে বাইরে ঘোরাঘুরির জায়গাও তেমন ছিলো না বলে সবাই রাজি যেতে তার সাথে । তো মেলায় গিয়ে আসল ঘটনা বোঝা গেলো - উনি আমাদের সবাইকে এনেছেন সাদা কাগজ কেনানোর জন্য । কোন এক স্টলে (মনে নেই কোন স্টলে, সম্ভবত বাংলা একাডেমি) সাদা কাগজ সস্তায় বিক্রি হচ্ছে ছাত্রদের জন্য (সে যুগটা এরকম একটা একটা যুগ ছিলো যখন বাসের টিকেটেও ছাত্র ডিসকাউন্ট ছিলো) । সেখানে ঘন্টাখানেক লাইনে দাড়িয়েই আমি বইমেলা প্রথম চাক্ষুস করি । অতএব দেখা যাচ্ছে কাগজ বিক্রিও স্টলের মালিক ছাড়াও আরোও কয়েকজনের সুবিধে এনে দিতে পারে ।

০২.
কিন্তু ধরেন আমাদেরই কেউ একজন সেখান থেকে লটারি কিনলো এবং যদি লাইগ্গা গেলো তার কপালে ?

০৩.
কোয়ালিটি আর কোয়ান্টিটি হয়তো হাত ধরে চলে না সবসময় । তবু সেজন্যতো বই বেরনো বন্ধ থাকতে পারে না । কোয়ালিটি স্যাক্রিফাইসের কারনেই হয়তো এতোগুলো বই আলোর মুখ দেখছে ।
আর আহমেদুর রশীদ সারাজীবন লিটল ম্যাগের সম্পাদক হয়েই বা থাকবেন কেন ! আমি উনাকে অন্যপ্রকাশের মতো পাবলিকেশনসের মালিক হিসেবে দেখতে চাই ।

০৪.

লিটল ম্যাগে অনেকেই অনেকের সাথে কথা বলে না
নতুন অনলাইন জোনও কি একেবারে উদার?
এখানেও কি কেউ কেউ কাউকে দেখে মুখ ফিরিয়ে নেননি?

এইটা কি উদারত্ব নাকি ? এইটা হলে আমি বুঝবো মানুষ তার নিজের ভেতরের অনুভুতি চেপে সামনে হাসিমুখটা দেখাচ্ছে ।
আগামী বইমেলায় অনলাইনওয়ালাদের বিভেদটা আরোও প্রকট হবে ।
তবে আমার চিন্তায় মানুষে মানুষে বিভেদ চিরকালই ছিলো । কখনো প্রকাশ্য কখনো অপ্রকাশ্য । প্রকাশ্য হলেই ভালো । ঠকতে হয় না ।

০৫.
অবশ্যই একুশে বইমেলা বন্ধ হয় কিছুতেই । আমরা যারা যেতে পারিনি তারাও হাজির হয়েছি সেখানে আহমেদুর রশীদের পোস্টের মাধ্যমে ।

০৬.


আমার একটা বই বের হযেছিল এবার
কী কারণে যেন কেউ জিজ্ঞেস না করলে কাউকে বলাই হয়নি কথাটা

এটা প্রচুর লেখার ফল । ক'দিন পরে নিজের লেখাগুলোর তালিকা নিজেই হারিয়ে ফেলবেন । নিজের বইয়ের কথা সার্বক্ষনিক মাথায় নিয়ে বেড়াবে নতুনেরা; পুরনোরা নয় ।

০৭.
এটা অবশ্যই ইতিবাচক ।

০৮.

কারণ নিজেদের দাবি করার মতো উৎসব আমাদের একেবারেই নেই...

কথাটা ঠিক না । একুশে বইমেলাও এক অর্থে উতসব । জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলাতেও এতো প্রানের দেখা মেলে না । এছাড়া বসন্ত উতসব, পহেলা বৈশাখ অন্য দেশে আছে । কিন্তু সেগুলো অন্যরকম । ঢাকার রাস্তায় এসময়গুলোতে যে চেহারা হয় এরকমটা পৃথিবীর অন্য কোন দেশে হয় বলে শুনিনি ।

মাহবুব লীলেন
পয়েন্ট ধরে ধরে মন্তব্য করলাম । গতবারের লেখাটাও পড়েছি এবারেরটাও পড়লাম । আমার মনে হয়েছে আপনি মুখে বলেন আশার কথা কিন্তু মনে আপনার হতাশা বেশি আশার থেকে । উপরে বেশিরভাগ পয়েন্টেই তাই আশার থেকে হতাশা বেশি চোখে পড়ে । নেতিবাচক ঐ দিকগুলোর কিছু ইতিবাচক দিক ধরিয়ে দিলাম । চিয়ার আপ ম্যান ! হাসি ভবিষ্যতে কোন এক বইমেলায় দেখা হবে আপনার সাথে আশা রাখি ।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

লেখাটার প্রথম দু'টো পয়েন্ট পড়তেই মন্তব্য করার তাগিদ অনুভব করলাম। পাঠকদের মন্তব্যে আপনার মন্তব্য পড়ার পর অনুভব করলাম তার আর দরকার নেই। অসংখ্য ধন্যবাদ হাসিব। আর মহামতি লীলেনকে ব্যক্তিগতভাবে যা বলার প্রয়োজন অনুভব করলাম তা আবার দেখা হলেই বলব।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

হাসিবের সঙ্গে দেখার হবার জন্যই না হয় আসুক আরেকটা বইমেলা আগামী বছর...

০২
বিশাল মন্তব্যটা আমাকে বইমেলা সম্পর্কে আশাবাদী করতে না পারলেও হাসিবের সাথে দেখা হবার জন্য আশাবাদী করবে নিঃসন্দেহে....

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- হাসিব ভাইয়ের মন্তব্যে একটা বিশাল -ঐ-

লীলেন্দা, শেষমেশ কিনা আপনিও সৌরভের পথে হাঁটা ধরলেন? আগে কেবল (আমার এক কালীন শ্বশুর মশায়) সৌরভরে অনলাইন দেখলেই মনে করতাম, অই যে আইছে, আরেকটা বিষাদময়, হতাশাব্যঞ্জক লেখা পড়ুম আইজকা। এখন তো মনে হইতেছে আপনাকে অনলাইনে দেখলে সৌরভও তাঁর কী বোর্ড ছেড়ে পালাবে। ব্যাটা তো এমনিতেই লেখে কম, নাক বুঁচা ললনাদের সাথে হাসে বেশি!

লীলেন্দা, হাসিব ভাইয়ের মন্তব্যের শেষ লাইনের কথাটা আমারো। তখন আমাদের দুইজনরে সিঙারা-আলুপুরি খাওয়াইয়া দিয়েন। দিল খুইলা দোয়া করুমনে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আসেন আসেন
আগামীবার নিজের একখান পুস্তক নিয়ে চলে আসেন বইমেলায়
অটোগ্রাফের কলম ফ্রি
চলে আসেন

দময়ন্তী এর ছবি

এই লেখাটিও মর্মস্পর্শী লেখা৷

আমার কয়েকটা প্রশ্ন ছিল:
১৷ ঢাকা ছাড়াও বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গায়ও বইমেলা হয় নিশ্চয় ৷ তো, ঢাকা থেকে দূরবর্তী স্থানে ঢাকা বা আশেপাশের ছোট প্রকাশকরা যান কি? গেলে কি রকম সাড়া পান? না গেলে কেন যান না?
২৷ বইমেলা ছাড়া আলাদা করে লিটল ম্যাগাজিনের মেলা হয় কি? হলে তাতে পাঠকের কিরকম সাড়া পান?

-------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

বিপ্লব রহমান এর ছবি

দেখা যাক, জবাব দিতে পারি কী না।

১. চট্টগ্রাম ও রাঙামাটির কয়েকটি বই মেলার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, সেখানে যথেষ্টই দর্শক, ক্রেতা ও প্রকাশকের সমাগম থাকে । তবে বাংলা একাডেমীর বই মেলার চেয়ে এ সব মেলার চরিত্র একটু ভিন্ন; লীলেন ভাই এই লেখায় রাস্তায় গজিয়ে ওঠা বই মেলার যে চিত্র তুলে ধরেছেন, এসব মেলার মেজাজের সঙ্গে তার খানিকটা মিল আছে। ওই অনেকটা মিনা-বাজার টাইপ বারোয়ারি মেলা, তবে এতে কিছু বইয়ের দোকানও আছে; আর তাতে হুমায়ুন আহমেদ, ইমদাদুল হক মিলন, মোহাম্মাদ জাফর ইকবাল বাণিজ্য করেন বেশ।

২. সম্ভবত লিল-ম্যাগের আলাদা কোনো মেলা হয় না; এ নিয়ে কেউ ভাবেও নি বোধহয়। আর এটি বাস্তব রূপ দিতে গেলে বিস্তর দলবাজীর আশংকা আছে বলে শুনতে পাই।

ধন্যবাদ।


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

মাহবুব লীলেন এর ছবি

গত দুই বছর ধরে নিয়মিতভাবে ডিসেম্বরে একটা লিটল ম্যাগাজিন মেলা হয় ঢাকায়
ছোট আকারে হলেও সাড়া অনেক ভালো

লীনা ফেরদৌস এর ছবি

Lina Fardows

বরাবরই লেখকের লেখার মুগ্ধ পাঠক আমি । এত সুক্ষ পর্যবেক্ষণ সবার পক্ষে করা সম্ভব নয়, বিশেষ করে আমার মত একজনের পক্ষে কখনই সম্ভব নয়। তাই লেখটি পড়ার পর মনে হল আসলেইতো বই মেলাটি এবার এমনই ছিল। তবে এবার বই মেলার একটা পজিটিভ দিক হল মেলায় শিশুদের জন্য লেখা বইয়ের অনেক স্টল ছিল এবং প্রচুর শিশু তাদের বাবা মায়ের সাথে মেলায় এসে বই কিনেছে। কম্পিউটার গেমের শিকল ছিঁড়ে আমাদের শিশুদের বইয়ের প্রতি আগ্রহকে আমি অনেক পজিটিভ ভাবে দেখছি। অনেক ধন্যবাদ এরকম একটি লেখার জন্য ।

Lina Fardows

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

দুঃখ। মন খারাপ
তবু, বস, চলেন আশাবাদী হই।
আপনারা আশা ছাড়লে আমরা কী ধরবো বলেন? সিন্সিয়ারলি বলছি।

০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

ভীষন টাচি লেখা। কিন্তু আমি বলি কি, অতো ভেতরে ঢুকে দুঃখ কুড়িয়ে আনার দরকারটা কি?
বি পজিটিভ, ম্যান।
ইহা একখান সাবকান্ট্রি হইলো। দেঁতো হাসি

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

বিপ্লব রহমান এর ছবি

অমর একুশে গ্রন্থ মেলার এই সব অসঙ্গতি, সত্যিই মেনে নেয়া যায় না। যেমন:

এবার একজন টিশার্টে আমর কবিতা ছাপিয়ে বিক্রি করেছে মেলায়
আগামীবার কনডমের গায়ে ছাপা হয়ে হয়তো আমার কোনো একটা লেখা এই মেলাতেই আসবে

গড়াগড়ি দিয়া হাসি


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

মাহবুব লীলেন এর ছবি

মানুষ জাগিয়ে তোলে মানুষের মধ্যে আশাবাদ
মানুষ জাগিয়ে রাখে মানুষের মধ্যে আশাবাদ

০২

আশপাশের ভীষণ আশাবাদী মানুষগুলোকে দেখেই ভুল করে হলেও আশাবাদী হতে ইচ্ছে করে আবার....

০৩

সবাইকে ধন্যবাদ

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

"মানুষ মানুষের অভিশাপ,
মানুষ মানুষের ম্লানিমা।
মানুষই হয় তবু মানুষের-
বুকে বুকে হয় ইতিহাস রচনা।"

০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০-০
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি তো একটু দেরি করে পড়লাম! লীলেন ভাই দেখি একেবারে সবাইকে বারোয়ারি ধন্যবাদ দিয়ে দিলেন, আমার ভাগে কি কিছু নাই? মন খারাপ

লেখাটা ভাল লাগছে। এ কারণে যে, মানুষ যখন নিজের সাথে কথা বলে, ভাবে, চিন্তা করে, সেই কথাগুলো খুবই একাকী হয়। কেন জানি সেখানে আমি-আমিময় হয়ে ওঠার লাইনে লাইনে টের পাওয়া যায় যে আশেপাশের মানুষেরা জরুরি নয়, দরকারি নয়। তখন মনে হয় অবশ্যম্ভাবী বিষাদ ঢুকে পড়ে।

ব্যথার উপরে ব্যথা দিলে অনেক সময় ভালোই লাগে। আমার সেরাম লাগলো!

===
- অনীক আন্দালিব

মাহবুব লীলেন এর ছবি

অনীক আন্দালিব নামের একজনের কিছু কঠিন কবিতা পড়েছিলাম
আপনি কি সেই অনীক?

তানবীরা এর ছবি

গতোবার মেলায় আমি বি,এন,পির ষ্টলে গিয়েছি, দেখি এক কবি তার পুরো কবিতার বই জিয়া পরিবারের বন্দনা করেছেন, সব কবিতায়, সে বই উৎসর্গ করা হয়েছে জামিমা মানে তারেক জিয়ার মেয়েকে। আমার সন্দেহ আছে সেই মেয়ে বাংলা পড়তে পারে কি না। অবাক পৃথিবী, অবাক বাংলাদেশ।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

আপনিও অবশেষে বিষাদ-চাষী হলেন? মন খারাপ

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

শেখ জলিল এর ছবি

আশপাশের ভীষণ আশাবাদী মানুষগুলোকে দেখেই ভুল করে হলেও আশাবাদী হতে ইচ্ছে করে আবার....
...বারবার।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হুমম... আমিও চাইতেছি বাংলা একাডেমিতে মেলাটা আর না হউক। আমার বাড়ি থেকে যাতায়াত অনেক কষ্টকর, সময় সাপেক্ষ, আর খরচান্ত। ফেব্রুয়ারি মাসে ট্যাক্সিভাড়াই গুনতে হইছে গড়ে প্রতিদিন তিন চাইরশ টাকা। (এই টাকাটা বই কেনায় খরচ করলে বেশি আমোদ পাইতাম)

ভাবতেছি আগামীবার মেলাটাকে উত্তরায় নিয়ে আসার ষড়যন্ত্র কিভাবে সফল করা সম্ভব?
পরামর্শ দেন তো...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

মেলা উঠায় ভার্জিনিয়ায় নিয়ে আসা হোক। আমি তিন খানা পাহাড় দিলাম মেলার জন্য!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।