সাঙ্গু লেকে একদিন...

মামুন হক এর ছবি
লিখেছেন মামুন হক (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৪/০৬/২০০৯ - ৩:০৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto
সবুজ বাঘের গ্যাংটক নামের কবিতা পড়ে মনে পড়ল, তাকেই চ্যাটে গল্পটা বলছিলাম। কিন্তু যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে ( আমার ধারণা এইটা বাঘ মামার ইচ্ছাকৃত, আমার গল্প শুনে হয়তো তার ঘুম পাচ্ছিল) তিনি বিনা নোটিশেই উধাও হয়ে গেলেন। মামাকে কিচ্ছাটা আর শোনানো হলোনা। তাই ভাবলাম আরোও কতো সহৃদয় বাঘের বাচ্চারা আছেন সচলে তাদেরই শোনাই। ঘুম পেলে মূলোদার আদি রসাত্মক আঁকিবুকিতে চোখ বুলিয়ে নেবেন একবার হাসি , অথবা ধুগোর ইটালিয়ান চায়ের দোকানে গিয়ে বেগুনী খেয়ে আসলেও ঘুম কেটে যাবে, নিজ দায়িত্বে খাবেন যদিও। আগেই বলে নেই হড়বড়িয়ে , ভাবনা চিন্তার জাক জমক ছাড়াই এক টানে লেখা, স্মৃতি বেঈমানী করছে...অনেক কিছুর ডিটেইলস ভুলে গেছি... বর্ণনার কোথাও ভুল-ত্রুটি দেখলে ক্ষমা-ঘেন্না করে দেবেন।

এটা ঐ সময়ের ঘটনা যখন আমি সুযোগ পেলেই হিমালয়ে চলে যেতাম, না সন্ন্যাস রোগে ভুগছিলাম না, কাঞ্চনজংঘার প্রেম বড় কঠিন জিনিষ, বোঝানো মুশকিল। এক পরিচিত দাদা আছেন কোলকাতায়, অমিত দত্ত নাম, আমার চেয়ে অনেএএক সিনিয়র। আমাকে খুব প্রশ্রয় দিতেন , ঢাকায় আমাদের বাড়িতেও এসেছেন কয়েকবার। অমিত ভাই ঘুমে (Ghoom) একটা টাইম শেয়ার কিনে রেখেছেন অনেক বছর হলো। নিজে গিয়ে গিয়ে ভাজাভাজা করে ফেলার পর ভাবলেন এবার আমার গরীব ভাই বেরাদারদেরও একটু চান্স দেই । আমাকে বল্লেন এবার হিমালয়ে যাওয়ার আগে তার সাথে যেন দেখা করে যাই , উনি ঘুমে তার যে ফ্ল্যাট আছে সেটায় কয়েকদিন থাকার ব্যবস্থা করে দেবেন। আমি তখন একলা বেড়াতে পছন্দ করতাম। কোলকাতা গিয়ে দাদার বাড়িতে উঠলাম, অনেক আড্ডা হলো, উনি রিজার্ভ ব্যাংক অভ ইন্ডিয়ায় কাজ করতেন, আমাকে ফরেক্স নিয়ে অনেক জ্ঞান দিলেন ( কিছুই বুঝি নাই, ফিন্যান্সের ছাত্র হলেও এর প্রতি আকর্ষণ কখনো জন্মায়নি)। আমি ধৈর্য ধরে শুনি, মাগনা ঘুমে ঘুমাবার লোভে। ভদ্রলোক সব ব্যবস্থা করে দিলেন, আমি তার টাইম শেয়ারে থাকার অনুমতিপত্র নিয়ে রাতের ট্রেনে শিলিগুড়ি চলে গেলাম।

দাদা বলেছিলেন সকালে ওখান থেকে টয় ট্রেনে যেতে, ইউনেস্কোর হেরিটেজ না কী যেন সেটা, ঘুম নাকি পৃথিবীর সর্বোচ্চ হিল স্টেশন ইত্যাদি ইত্যাদি। সময় অনেক বেশি লাগবে তাই আমি ট্রেনে না চড়ে আঁকা বাকা পাহাড়ী পথে মহিন্দ্রা জীপে ( কেন জানি জীপের নামটা এখনো ভুলিনি) সওয়ার হয়ে প্রায় ঘন্টা চারেক পর ঘুমে এসে পৌছালাম। জীপ যেখানে নামিয়ে দিল সেখান থেকে হাঁটা পথে শ’পাচেক গজ পরেই দিগন্ত বিস্তৃত পাহাড় আর দৈত্যের মতো উচু উচু সব গাছের কোলে দুই বা তিন কামরার লাগোয়া সব বাংলো, আমি অমিতদা’র বাংলোতে ব্যাকপ্যাক রেখেই আবার বাইরে চলে গেলাম । হিমালয়ের সৌন্দর্য অনেককেই নির্বাক করে দেয়, আমাকেও দিল। বহু মাইল দূরেও যদি একটা পাতা পড়ে তার শব্দও শোনা যাবে এমন নিস্তব্ধতা চার পাশে, এই নিস্তব্ধতাটাই মনের মাঝে গেঁথে গেল, স্থায়ী নিবাস গড়ে নিল। কিন্তু আমার অকর্মণ্য হৃদয় ঠেলে কোন গল্প কবিতা বা সাহিত্য টাইপের কিছু আসলোনা, কেন জানি কোন ছবি তুলতেও ইচ্ছা হলোনা । আমি এক টানা তিন দিন কোথাও গেলাম না। ঘুম, ঘুম আর ঘুম। ঘুম আর স্বপ্ন। ভাঙ্গা ভাঙ্গা স্বপ্ন, ছেঁড়া ছেঁড়া ঘুম আর অখন্ড অবসর। ঘুম আর দার্জিলিং টি। দুধ সাদা চা আর ধোঁয়া ওঠা ভেজ বিরিয়ানি। নেই টেলিফোন, নেইগো মোবাইল, নেইরে টেলিগ্রাম...

চারদিনের দিন ঘুম থেকে উঠে মনে হলো অনেক হয়েছে হাড় হাভাতের মতো এই নিখাদ ট্র্যাংকুলিটির অবগাহন। সবার পীঠে খেলে পেটে সয়না, বিষে বিষক্ষয় হয়ে আমার বৈরাগ্য কেটে গিয়ে রোমাঞ্চাভিলাষ জেগে উঠল। ইচ্ছে ঘোড়ার পীঠে স্যাডল চাপিয়ে ঘাড়ে গলায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বল্লাম চল চল চল...

অভাগা যেদিকে চায়, সাগর শুকিয়ে যায়...ইচ্ছে ঘোড়া কম্পাস হারিয়ে ঠায় দাড়িয়ে রইল, কোন দিকে যাই , কী করি কিছুই মাথায় চিঁ হিঁ রব তুলে আসছিল না। দার্জিলিং বহু ব্যবহারে জর্জরিত, কালিম্পং দেখা হয়েছে, গিয়েছি বাতাসী লুপও , সঞ্চল হ্রদকেও ক্যামেরার ফ্লাশে ভস্মীভূত করা হয়ে গেছে বার কয়েক। পায়ের নিচে সর্ষে নিয়ে জন্মেও নিজের নিরুদ্দিষ্টতায় তিতিবিরক্ত হয়ে বেখেয়ালী দ্রাগিস্তানের ঘুড়ার পাছায় কষে কয়েকটা চাপড় লাগাতেই হ্রেষাধ্বনিতে আকাশ কাঁপিয়ে ইচ্ছেঘোড়া গ্যাংটকের পানে যাত্রা শুরু করল। এই অঞ্চলের গ্যাংটকেই কোন গন্ডগোল বাঁধানো হয়নি ততদিনে।

ঘুম থেকে কী আগে শিলিগুড়ি গিয়েছিলাম , না সরাসরি গ্যাংটকে গিয়ে নেমেছিলাম তা মনে পড়ছেনা। তবে এটুকু মনে আছে যে আকাশছোঁয়া অ্যাল্টিচুডের কারণে ঘাড়, মাথা, কর্ণ, চক্ষু সর্বাঙ্গে ব্যথা নিয়ে রামধণু দেখতে দেখতে হোটেলে ঢুকেছিলাম। রুমটেক মঠ কি গ্যাংটকে পৌছার আগে দেখেছিলাম না পরে তাও মনে নেই, কী হবে এত সব মনে রেখে।

নিষিদ্ধ জিনিষের প্রতি মানুষের আকর্ষণ দুর্বার। কার কাছে যেন শুনেছিলাম হিমালয়ের সর্বোচ্চ হ্রদ সাঙ্গু লেক গ্যাংটক থেকে খুব একটা দূরে না ( যদ্দুর মনে পড়ে এক দেড় ঘন্টার রাস্তা)। আশে পাশে মিলিটারি বেইজ না কী যেন থাকার কারণে তখন বিদেশীরা সেখানে যেতে পারত না, বর্তমান পরিস্থিতি কী সেটা মূলোদাকে জিজ্ঞেস করে জেনে নেয়া যেতে পারে। আমার মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি চেপে বসল, গেলে এমন জায়গাতেই ( বানান পুলিশের এ আই জি মনোয়ার সাহেব লক্ষ করুন) যেতে হবে যেখানে যাওয়া বিলকুল নাজায়েজ। হোটেলের রিসেপশনে এক চ্যাংড়া ছেলে ছিল , সে আমাকে বুদ্ধি দিল পাসপোর্ট রেখে কলকাত্তাইয়া রকের ছেলে সেজে যেতে। তাই সই, এই ফাকে টুটা ফাটা হিন্দি আর পশ্চিমবঙ্গের কচকচানি বাংলার চর্চা করা যাবে। রিসেপশন থেকেই একটা ট্যুর গ্রুপের সাথে জুড়ে দেয়া হলো। মোটামুটি বিনা বাধায় ( একবার অবশ্য আর্মি চেকপোস্টে থামতে হয়েছিল , ঝানু ড্রাইভার একাই সামলে নিল, আমি গড়পড়তা কলকাতার ছেলেদের চাইতে দেখতে ভালো হলেও জলপাই রঙের হাবিলদার বাহাদুর আমায় ইরফান খানের কাজিন ভেবে একটা হুম দিয়েই ইন্সপেকশন শেষ করলেন) আমরা সাঙ্গু লেকের পাড়ে এসে পৌছালাম।

গাড়ি আস্তাবলে বেধে ড্রাইভার সেটাকে দলাই-মলাই আর দানা পানি দিতে ব্যস্ত হয়ে গেলেন। আমরা যাত্রীরা দশদিকে ছড়িয়ে পড়লাম। লোকজন ফটাফট ছবি তুলতে শুরু করল, আমিও মিনোল্টা ক্যামেরায় ব্যাটারী, ফিল্ম ইত্যাদি লোড করে বিপুল উৎসাহে লেকের ধারে এসে হাজির হলাম। কিন্তু আবারো বলি...অভাগা যেদিকে চায়...কীসের লেক ফেক তাকিয়ে দেখি পুরোটাই জমে যাওয়া বিশাল এক বরফ । হিমালয়ের উপরে এ যেন এক মাইল দৈর্ঘ প্রস্থের বিশাল আইস স্কেটিং অ্যারেনা। আর এটাই নাকি শীতকালের সাঙ্গু লেকের প্রধান আকর্ষণ । অন্য সবাই জেনে শুনেই এসেছেন , আমিই একমাত্র আশাভঙ্গের বেদনায় কাতর। ভেবেছিলাম হ্রদের নীল জলের ক্যানভাসে নীলাকাশ আর মেঘ-পর্বতের লুকোচুরির ছবি তুলে দেশে ফিরে সবাইকে দেখিয়ে বাহবা কুড়াব। তার বদলায় চারদিকে শুধু বরফ। বাচ্চারা সব বরফ দিয়ে বল বানিয়ে এ ওর গায়ে ছুড়ে খেলা শুরু করে দিয়েছে, দেখে মন ভালো হয়ে যেতে শুরু করল। এই বা কম কী, সাঙ্গু লেকে তো এসেছি । আমি টুকটাক ছবি তোলা শুরু করলাম। সুখে থাকতে ভুতে কিলায়, আমার হঠাৎ হলো, দেখিনা বরফের উপরে হাঁটাহাঁটি করা যায় কিনা। পরে জেনেছি এটা রীতিমত আত্মঘাতি চিন্তা ভাবনা, জায়গায় জায়গায় বরফ খুব পাতলা, লেকের জলও খুব গভীর , বরফ ভেঙ্গে পানিতে পড়ে গেলে দ্রুত উদ্ধারের জন্য বেওয়াচের বিশাল বক্ষা সামান্থা বা ইয়াসমিনের মতো কোন উদ্ধার কর্মীর সাহায্য মিলবেনা। আসলে হ্রদ ঢেকে দেয়া বরফের উপর হাঁটাকে হারাম ঘোষনা করে এককোণায় মাঝারী সাইজের একটি সাইনবোর্ড টানানো ছিল, আর আমার এমনই কপাল সেটাও ঢাকা পড়ে ছিল পুরু তুষারের নিচে। না হলেও আমার কোন লাভ হতোনা কারণ সতর্কবাণীটা লেখা ছিল হিন্দিতে।

আমি কী আর জানি যে লেকের চারপাশে ওয়াচ টাওয়ার আর তার মধ্য থেকে শ্যেন দৃষ্টিতে বাইনোকুলারে দু’চোখ রেখে সবকিছু খুব খিয়াল কৈরা দেখতেছেন গুর্খা রেজিমেন্টের জলপাই মানবেরা ! আমি হাঁটি হাঁটি পা পা করে হ্রদের কিনার হতে প্রায় দশ গজ দূরে চলে গেলাম। বাহাদূরী দেখাতে আরো ভেতরে যাবো এমন সময় খেয়াল করি হন্ত দন্ত হয়ে ঢাল বেয়ে নামছেন এক উর্দি পড়া জওয়ান আর হাত পা নড়ে চিৎকার করে আমাকে কী যেন বলছেন। একটু দেরীতে বুঝলেও মনে হলো আমাকে বোধ হয় বরফে হাঁটা বন্ধ করে পাড়ে উঠে যেতে বলা হচ্ছে। নিপাট ভদ্রলোকের মতো পাড়ে উঠতেই কোন রকম ভূমিকা ছাড়াই জলপাই ভায়া আমার বদন বরাবর ভয়ংকর এক লেফট জ্যাব চালালেন। তখন বয়স কম ছিল, রিফ্লেক্স ভালো ছিল , আমি বাউলি কেটে সরে যেতেই মহাখাপ্পা উর্দিওয়ালা তাল সামলাতে না পেরে বরফে আছাড় খেয়ে পপাত ধরনীতল । হারামজাদের পশ্চাতে তেমন প্যাডিং ছিল না , তবুও পতনের আওয়াজ জন সমক্ষে মানহানিকর মাত্রায় পৌছাল না, সফট বরফে সেফ ল্যান্ডিংয়ের কারণে। কিন্তু আমার আত্মারাম খাচা ছাড়া হয়ে গেল যখন উঠে দাড়িয়ে এক হাতে শকুনের মতো ছোবলে ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে, আরেক হাতে আমার কলার চেপে ধরে টেনে আমাকে কোথাও নিয়ে যেতে লাগল। এর মধ্যে আরো দুই তিনজন জওয়ানের আগমণ ঘটল। তারা আমার ফ্যাকাশে মুখ দেখে হাসি চেপে পশ্চাদ্দেশে বরফকল ওয়ালাকে হাসিমুখে কী যেন বলতে লাগল ( হয়তো আরে এত ক্ষেপেছিস কেন টাইপের কিছু) । ভাষাটা বুঝতে পারিনি, তবে সেটা আর যাই হোক বাংলা বা হিন্দি ছিলনা ( যাই মূলোদাকে জিগাইয়া আসি)।

আমাকে নিয়ে আসা হল লেক থেকে একটু দূরে চেকপোস্টে। কোন মার ধর করা হলোনা, যদিও আমি মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম কড়া কিছু পিডা খাওয়ার, আমার জানামতে আর্মিদের মুখের আগে হাত-পা চলে, আর যদি এরা জেনে যায় সে আমি আসলে বিদেশী তাহলে হয়তো বিনা বিচারে গুল্লি করে আমার লাশ ফেলে দেবে শ্মশানে । আমি মনে মনে দোয়া কালাম পড়তে লাগলাম । তেমন কিছু ঘটল না। আমাকে এক একটা ঘরে বসিয়ে রাখা হলো প্রায় ঘন্টাখানেক ( পরে জেনেছি ইন চার্জ অফিসার না থাকায় ঢোলারা কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না আমার শাস্তির ব্যাপারে)।

এক সাথে দুইটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা আমাকে বাঁচিয়ে দিল। দুপুরে শিফট চেঞ্জ হওয়ায় আমাকে যে ব্যাটা ধরে এনেছিল সে সহ পুরা রক্ষীবাহিনীর সবাই ব্যারাকে ফিরে গিয়ে তাদের জায়গায় নতুন জওয়ানেরা আসল যারা এই ব্যাপারে কিছুই জানতনা, আর সেকেন্ড ইন চার্জ টাইপের একজন যাকে ঐ মুষ্টিযোদ্ধা বদমেজাজী সিপাহি সব বলে গেছিল তার কাছে কয়েকজন গেস্ট আসায় তিনি তাদের নিয়ে ক্যান্টিনে না কোথায় যেন চলে গেলেন। পুরা ব্যাপারটা খেয়াল করে ধীরে ধীরে আমার চেহারার ফ্যাকাশে ভাব দূর হয়ে আবার বাদামী রং ফিরে আসতে শুরু করল, মাথায় দুষ্ট বুদ্ধির আনাগোনাও আরম্ভ হলো। উঠে দাড়িয়ে ভাবলাম ক্যামেরা গেছে যাক, ঝেড়ে দৌড় দিলে কেমন হয়? আশে পাশে কেউ নেই। আমি যখন মোটামুটি কনভিন্সড যে ঝেড়ে দৌড় দিলে জান বাঁচানো সম্ভব, ঠিক তখনই পেছন থেকে কে যেন গম্ভীর রবে বলে উঠল-‘ হোয়াই আর ইউ হিয়ার?’

ঘুরে তাকিয়ে দেখি নাক বোঁচা খর্বকায় এক উর্দিধারী, এই ব্যাটাই কমান্ডিং অফিসার টাইপের কিছু একটা। সেও সম্ভবত হিন্দি বা বাংলা না জানায় আমাকে বাঙ্গালী ভেবে ইংরেজিতে কথা বলছে। ভদ্রলোককে দেখে আমার কাছে ভদ্রলোকই মনে হলো, তার চেহারায় কোন হিংস্রতা ছিল না। স্বপ্নে পাওয়া উপস্থিত বুদ্ধি ঘাঁই মেরে গেল, আমি তার অজ্ঞানতাকে পুঁজি করে নির্দ্বিধায় মিথ্যা বলে গেলাম, জান বাঁচানো ফরজ। বললাম যে আমার ক্যামেরা হারিয়ে গেছে, নিচ থেকে একজন বলল এক জওয়ান সেটা খুজে পেয়ে এখানে এনে রেখেছেন। সে কথা না বাড়িয়ে তার ডেস্কে গিয়ে ক্যামেরাটা খুজে পেল, আমি ঠিক ঠাক মতো মডেল নাম্বার বলতে পারায় আমারে ক্যামারেটা ধরিয়ে দিয়ে বিদায় হতে বলল, আরো জানালো নিচে ট্যুরিস্ট বাসগুলো ছেড়ে যাচ্ছে , আমার ঝটপট গিয়ে বাসে উঠতে হবে। আমি পড়িমরি করে ছুটে গিয়ে আমার গাড়িতে উঠলাম। মনে হলো সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে এসেছি, কিন্তু আমি বাদে আর কেউ কিছু টের পায়নি। বাস ছেড়ে দেয়ার পর হাফ ছেড়ে ক্যামেরাটা হাতে নিয়ে ভালো করে দেখলাম, সব ঠিকই আছে, শুধু ব্যাটারী আর ফিল্ম গায়েব হয়ে গেছে...আমার এতো সাধের তোলা ছবিগুলা আর কাউকে দেখানো হলোনা। আমি জানে বাঁচার সুখ ভুলে জলপাই দাদাদের উদ্দেশ্য অকথ্য কিছু শব্দ ছুড়ে দিলাম, অবশ্যই নিঃশব্দে, ফিসফিসিয়েও না...
ছবিসূত্রঃ ইন্টারনেট


মন্তব্য

মূলত পাঠক এর ছবি

ইল্লি আর কী! গড়পড়তা কলকাতার ছেলের থেকে দেখতে ভালো! দেখছেন কয়টা কলকাতার ছেলে? বেশ হইছে ঝাড় খাইছেন, আপনেরে ঐ লেকের বরফ ফুটা কইরা চুবানি দেওন উচিত আছিল।

মামুন হক এর ছবি

আরে দাদা খেপেচো কেনো? তোমার কথা ক'বার বলেছি লেখায় খেয়াল করেচো হাসি তোমার কাছ থেকে শেখা পদাকর্ষণ প্রাক্টিস করছি, হয়েচে কিচু?
আর আমিতো গড়ের মাঠের গড়পড়তা ছোড়াদের কথা কয়েচি, তুই বা সৌরভদা আমার চেয়ে দেখতে কত্তো ভালো হাসি

হিমু এর ছবি
মামুন হক এর ছবি

হ ভাই পুরাই। এমন রাজ কপাল আমার কানের পাশ দিয়া গুল্লি অনেকবার গেছে কিন্তু এখনও জিন্দা আছি।

স্নিগ্ধা এর ছবি

আহা মামোমা, লেখাটা ভালু হইসে! বেশ কয়েকটা জায়গায় খিক খিক করে হাসলাম দেঁতো হাসি

মামুন হক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ বাতাসি হাসি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

বাপরে, সাংঘাতিক। কিন্তু অপরাধটা কী ছিল? বরফের উপরে গিয়ে বিপদ ডেকে আনা, নাকি ছবি তোলা? চিন্তিত

মামুন হক এর ছবি

আমিও পরিস্কার বুঝি নাই, বিরাট বিরাট ক্যামেরা নিয়ে মুস্তাফিজ ভাইয়ের মতো অনেককেই দেখেছিলাম ধ্যান লাগিয়ে ছবি তুলতে। তাইলে আমি তুললে গুনাহ হইল ক্যান কে জানে? লেকের একটু ভেতরে গেলে ওয়াচ টাওয়ারগুলো ভালোভাবে চোখে পড়ে, হয়ত ভাবছিল আমি ওখানে গিয়ে ওদের পাছা চুলাকনোর ছবি তুলছিলাম। তবে আইন ভেঙ্গে বরফের উপর হাঁটাটাই একটা বড় মাপের অপরাধ ছিল, আমি বেশি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম বিদেশি হয়ে বিনা অনুমতিতে ওখানে যাওয়ার কারণে।

সিরাত এর ছবি

বানান পুলিশের এ আই জি মনোয়ার সাহেব লক্ষ করুন

লেখাটা পড়তাছি, এইটা দেইখা ভাবলাম না, রিপ্লাই দিয়া লই!

'যায়গা'রে জায়গা করতে কইছি দেইখা এমুন করলেন? ওঁয়া ওঁয়া এটা তো আমার কলিগের সাত মাস বয়সের পুলাও পারবো! আমারে বানান নিয়া যে রাজর্ষিদা, শিমুল ভাই, দময়ন্তী আপা আর ইশতিয়াক রউফ কি করছে হেইটা জানেন ('উত্থান', 'ফলস্বরূপ', 'কারণ' লইজ্জা লাগে)? এ আই জি আমি না রে ভাই, ওরা!! আর আই জি হইলেন ওই s-s সাহেব। দেঁতো হাসি

তাও লেখায় আমার আসল নাম দেইখা ভালই লাগলো। স্ট্যান্ড করার পর ইন্টারভিউ হওয়ার মত একটা ব্যাপার! চাল্লু

জনস্বার্থে, আমার 'আসল নাম' মোহাম্মদ মনওয়ার হোসেন। ডাক নাম সিরাত। আমার মনওয়ার নামে একটা নিক এই ব্লগে বহু আগে দেওয়াও হইছিল, ওইডার যে কি হইছে কে জানে, এক ডজন চেষ্টার পরও ঢুকবার পারি নাই! মন খারাপ

আপনি কিন্তু আমার নামখান ভুল করছেন। মনোয়ার না, মন-ওয়ার। যু্দ্ধ! খাইছে

মামুন হক এর ছবি

আরে ভাই তুমি আপন মানুষ দেইখাই না খোচাটা দিলাম, 'জায়গামতো'লাগছে দেইখা অতীব প্রীত হইলাম। কোন দুঃখে সে আমার জায়গা বানানটা বারবার ভুল হয় সেইটা একটা গবেষণার বিষয়। তুমি জায়গায় জায়গায় ধরে না দিলে এইটা কোন দিন ঠিক হইত কিনা বলা মুশকিল। কৃতজ্ঞতা জানাতেই তোমার নাম নিলাম হাসি

সিরাত এর ছবি

উত্তম জাঝা!। ভাল্লাগছে। আপনে তাইওয়ানে গেলেন কবে কেমনে হিডা কন। আর আর্জেন্টাইন গরুর গল্প। ত্রিশটা দেশের কয়টা দিলেন??

মামুন হক এর ছবি

আবারো ধনেপাতা। তোমার নামের বানান ভুল করার জন্য নিজেরেই মাইনাস দিলাম। এখন থিকা তুমারে সঠিক বানানে সিরাতুল মুস্তাকিম কইয়া ডাকুম...হে হে হে
মজার ব্যাপার হলো আমার তাইওয়ান যাওয়ার পেছনে এই অমিত দত্তের একটা পরোক্ষ কিন্তু খুবই কার্যকর ভূমিকা ছিল। অনেকটা বাবেল মুভির কাহিনীর মতো। বলবোনে একদিন। আর্জেন্টিনার ঘটনাটা মজার কিছু না, অনেক আশা নিয়ে একদিনের জন্য গেছিলাম চিলি যাওয়ার পথে, ইমিগ্রেশন অফিসার কী বালছাল বুঝে আমারে ঘন্টাতিনেক নাইজেরিয়ান ড্রাগ ডিলারদের সাথে এয়ারপোর্টের মধ্যেই আটকিয়ে রাখলো। পরে মাফ টাফ চেয়ে ছাড়ল বটে কিন্তু সফরের মজাটাই মাটি হয়ে গেছিলো। তারপরেও শুনতে চাও এই কিচ্ছা? বড়ই বিস্বাদ লাগবে মনে হয়।
ত্রিশটা দেশের তিনটাও এখনও হয়নি। বানিয়ে গল্প লেখা সোজা, নিজের কথা লিখতে গেলেই হাজার দ্বিধা এসে ভর করে। লিখব ধীরে ধীরে...

সিরাত এর ছবি

আর্জেন্টিনার ঘটনাটা মজার কিছু না, অনেক আশা নিয়ে একদিনের জন্য গেছিলাম চিলি যাওয়ার পথে, ইমিগ্রেশন অফিসার কী বালছাল বুঝে আমারে ঘন্টাতিনেক নাইজেরিয়ান ড্রাগ ডিলারদের সাথে এয়ারপোর্টের মধ্যেই আটকিয়ে রাখলো। পরে মাফ টাফ চেয়ে ছাড়ল বটে কিন্তু সফরের মজাটাই মাটি হয়ে গেছিলো। তারপরেও শুনতে চাও এই কিচ্ছা? বড়ই বিস্বাদ লাগবে মনে হয়।

কন কি! ব্যাপক এ্যাডভেঞ্চার হইছে দেখা যায়! অবশ্যই শুনুম! অন্তত চিলির কাহিনীটা তো কন!

আপনার দেশ-বিদেশ ঘুরার কাহিনী শুইনা হিংসায় লাল হইয়া যাইতাছি! ম্যান, দক্ষিণ আমেরিকা ঘুরার বড়ই ইচ্ছা আমার। সামনে যদিও ব্যাংকক, মালয়েশিয়া ইত্যাদি দিয়া সাধ মিটামু।

যামুনে, বয়স মাত্র ২৬, টাইম আছে, কি কন মামুন ভাই? চোখ টিপি

মামুন হক এর ছবি

টাইম বহুৎ আছে সিরাত। যদিও আমার ঘর পালানো রোগের সূত্রপাত ১৮ বছর বয়স থেকেই। বিয়া শাদী করার আগ পর্যন্ত অনেক ঘুরছি। এখন আর আগের মতো পারিনা, বুইড়া বাঘ, খাঁচার মধ্যে পইড়া খালি ঝিমাই!
গেলে তাড়াতাড়ি যাও ভাই, ডোন্ট মিস দ্য ব্রাজিলিয়ান কার্ণিভাল হাসি

ভুতুম এর ছবি

আপনি দ্রুত ভ্রমণ কাহিনী নিয়ে একটা সিরিজ চালু করেন, নইলে কথা নাই।

খুব ভালু হইছে।

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

মামুন হক এর ছবি

তুমি চেরাগ আলির কাহিনী নিয়মিত লিখলে ভাইবা দেখুম, ভ্রমন কাহিনী বলতে ভাল্লাগে, চা-ডাইল পুরি সহযোগে, কিন্তু কেন জানি লিখতে ইচ্ছা করেনা। আছে কোন ওষুধ এই রোগের?

ভুতুম এর ছবি

আছে আছে। একটা সেক্রেটারি রেখে দেন, এরপর আপনি চা-ডাইলপুরি সহযোগে তাকে গল্পটা ডিকটেট করুন, সে লিখে নেবে।

-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি

সবজান্তা এর ছবি

আর-রে ! আরেকজন গ্যাংটক পার্টি পাওয়া গেলো হাসি

আমি গ্যাংটক গিয়েছিলাম বছর খানেক আগে।এ নিয়ে সচলে পাঁচ পর্বের ঐরাবতসম পোস্টও দিয়েছিলাম, ছবি সহ।

এখন গ্যাংটকের অবস্থা আপনার সময়ের চেয়েও বেশি খারাপ। আগে তো শুধু মাত্র পরিচয় লুকিয়েই ঢুকে পড়া যেত, কিন্তু মুম্বাইয়ের সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে প্রচণ্ড কড়াকড়ি - ভারতীয় নাগরিকত্বের কোন ধরনের প্রমাণ, ন্যাশনাল আইডি কার্ড ( যাকে ওখানে বলা হয় আই কার্ড), ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা এ ধরনের কিছু না থাকলে আশা শূন্য। আমাদের কপাল ভালো যে, আমার বাবার সবচেয়ে বড় ভাই সাতচল্লিশের দেশভাগের আগেই ডুয়ার্স অঞ্চলে চাকরি নিয়ে গিয়েছিলেন, সেই সুবাদের তাঁর ছেলে-মেয়ে সবাই ভারতীয় নাগরিক। তাঁর ছেলেই আই কার্ড দেখিয়ে আমাদের সবাইকে নিয়ে ঢুকে পড়েছেন। তখন সদ্য নিয়মটা চালু করেছিলো, তাই পুরা গ্রুপে একজনের আই কার্ড থাকলেও ঢুকতে দিয়েছে, তার উপর সাথে আমার মা, বাবা আর বোন থাকায় বুঝতে পেরেছিলো যে ক্ষতির আশংকা নেই।

আপনার সাথে কেন এমন করেছিলো, আন্দাজ করতে পারি। সাঙ্গু লেকের আশে পাশে তো বটেই, গ্যাংটক শহরের বাইরে বের হয়ে নাথুলা বর্ডারের দিকে যাওয়ার পথে গোটা সিকিম জুড়েই অসংখ্য এমোনেশন পয়েন্ট, সেনা ব্যারাক - যেগুলোর ছবি তোলা সঙ্গত কারণেই নিষিদ্ধ- আমাদের গাড়ির ড্রাইভার আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলো। হতে পারে আপনি হয়তো বেখেয়ালে হাঁটতে হাঁটতে তেমনই কোন কিছুর দিকেই ক্যামেরা তাক করে ফেলেছিলেন। অনেকটা এমন ঘটনা ঘটেছিলো আমার কিছুদিন আগের দার্জিলিং ট্যুরের সময়।

পাহাড় বিষয়ক বিশেষত হিমালয় ঘেঁষা ওই অঞ্চলটা আমার কাছে পুরা স্বপ্ন, কোন একদিন টাকা হলে ওইখানে বাড়ি করে থাকার ইচ্ছা আছে দেঁতো হাসি কাজেই এরকম লেখা স্টকে আরো থাকলে জলদি ছাড়েন।

পুনশ্চঃ আমার তোলা ছবি গুলি দেখতে পারেন সচলায়তনের পোস্টগুলি থেকে, সাংগু লেকের ছবি না তুলতে পারা দুঃখ ঘুঁচবে। ছবি পাবেন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে


অলমিতি বিস্তারেণ

উজানগাঁ এর ছবি

আপনার গল্পবলার স্টাইলটা ভাল। ইতি-উতি ঘুরে আসার সুযোগ কম। মনোযোগ আপনিতেই টেনে নেয়।

দার্জিলিং এবার নিয়ে ৪-৫বার হয়ে গেল। এই ৪-৫ বারই সিকিম ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। কষ্টটা মনে করিয়ে দিলেন। মন খারাপ

মামুন হক এর ছবি

বস সিকিম যাওয়া আজকাল এত কঠিন তা আমার ধারণায়ও ছিলোনা। আমি তাইলে ভালাই করছি আগে গিয়া, কপাল ভালো আগে গিয়া বাঘের খাদ্য হই নাই।
আরেকবার ট্রাই মারেন দেখেন কোন রাস্তা বাহির করতে পারেন কী না।

মামুন হক এর ছবি

কী চমৎকার লিখেছো ভাই। আগে পড়া থাকলে আমারটা হয়তো লেখাই হতোনা। ছবি টবি কিছু নেই, গিয়েছিলামও প্রায় একযুগ আগে, কিছু মনে আছে কিছু নেই। তারপর ইদানীং আবার এক শহরের কথা ভাবতে গিয়ে আরেক শহরের ছবি চলে আসায় মাথায়। তোমার ছবিগুলি দেখার আগ পর্যন্ত যতবার গ্যাংটক দেখতে কেমন ভাবতে গেছি ততবারই মাথায় কেপ টাউনের ছবি চলে আসছিল, অদ্ভুত ব্যাপার। আমি যখন গেছিলাম তখন গ্যাংটক অবশ্য এতো সাজানো গোছানো ছিলনা। এখনতো তোমার ছবিতে দেখলাম একেবারে ঝা চক চকে! অনেক ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

তীরন্দাজ এর ছবি

বাপরে দারুন লিখেছেন! দারুন বাঁচাও বেঁচে গেছেন! গুর্খার সৈন্যের কথা বলছি না। বরফের স্তর ভেঙ্গে যে নীচে ডুবে যাননি, সে কথা বলছি।

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

মামুন হক এর ছবি

ধন্যবাদ তীরুদা।

খেকশিয়াল এর ছবি

হাহাহা ভাই জটিল কাহিনী শুনাইলেন দেখি! আপনে আবার যে ট্রিক্স কইরা ক্যামেরা বাচাইছেন , জটিল জটিল। সাঙ্গু লেকে গিয়া আমিও নামতে চাইসিলাম, বরফের উপর দিয়া হাঁটতে চাইসিলাম, এখন ভাবতাসি হাঁটলে কি হইত ইয়ে, মানে...

------------------------------
'..দ্রিমু য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

মামুন হক এর ছবি

সাধে কী আর আপনে খেকশিয়াল আর আমি রাম বলদ! বুদ্ধিমান বইলা ফক্সি ব্রো বরফের উপ্রে হাঁটার বেওকুফি করেন নাই , আমি ভুদাই বইলাই গেছিলাম আরেট্টু হইলে।

কীর্তিনাশা এর ছবি

আহারে যদি যাইতে পারতাম...... ! মন খারাপ

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

মামুন হক এর ছবি

আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর

রাইতে যাইয়েন না নাইট রাইডার ভাই খানা-খন্দে ভরা চারদিক...

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

মনে হলো সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে এসেছি, কিন্তু আমি বাদে আর কেউ কিছু টের পায়নি।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

মামুন হক এর ছবি

হ । আমার বিটলামি ধরা পরলে কী হইত তা খোদাই ভালো জানে।

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

ফাটাফাটি হইছে লেখা হাসি
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

মামুন হক এর ছবি

স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

অসাধারণ লেখা। দুর্দান্ত লাগল। এই তাহলে ফেসবুকে উল্লেখ করা আপনার সেই কাহিনী! খুব খুব উপভোগ করলাম হাসি

তবে ক্যামেরার ফিল্ম গায়েব করায় তেবরো নেন্দা আর দিক্কার জানালাম। আফসোস, দেখতে পারলাম না আপনার তোলা ছবিগুলা মন খারাপ

বেড়াইসেন তো অনেক জায়গায়। সব জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা নিয়ে টপাটপ ভ্রমণ কাহিনী লিখে ফেলেন তো!

মামুন হক এর ছবি

হ ভাই। তোমারেই আগে আভাস দিছিলাম। পরে বাঘ মামারে শুনাইতে গিয়া দেখি সে সল্টেশ বিস্কুট না দিলে নাকি গপ্পো শুনেনা, কী আর আর করা বাকী সবাইরেই শুনাইলাম হাসি

সাইফ এর ছবি

মামুন ভাই, জোশ হইছে গল্প বলা, যেমন হাসলাম, তেমনই চমকাইলাম, আরেকটু হইলে তো মনে হয় পেদানি খাইছিলেন, হা হা হা।ভাগ্যিস শিফ্ট পাল্টাইছিল, নাহলে তো গল্পটা শোনাও হইত না।

দময়ন্তী এর ছবি

মজার৷
সবজান্তা ঠিকই বলেছেন, ঐ কারণেই আপনারে বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টা করেছিল মনে হয়৷

ইশশ সিকিমের দিকটায় আমার এখনও যাওয়া হয় নি৷ মন খারাপ দেখে ফেলতে হবে সময় করে৷
-----------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

উঁকি দিয়া দেখলাম আপনে আমার চেয়ে মাত্র কয়েক মাসের বড়। এই ঢাকা শহরে একই লগে দুইটা বাইড়া উঠলাম, টেরই পাইলাম না? আগে জানলে আমি আপনের ল্যাজ ধরে ঝুলে পড়তাম।

আবার হিংসা জানায়া গেলাম

সিরিজ চাই...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মামুন হক এর ছবি

নজু ভাই যা বলেন না !আমিও ভাবি কী কপাল দেশ ছাড়ার এত্ত বছর পর হাজার মাইল দূরের এই দ্বীপদেশে বসে আপনাদের মতো সব বসদের সাথে পরিচয় হলো!!
হিংসা খালি এক তরফা না, এই বান্দাও আপনার ট্যালেন্ট দেখে ভিতে ভিত্রে খালি জ্বলে হাসি

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

কোন দুঃখে ভাই ফিন্যান্স পড়তে গিছিলেন। কেউ পড়ে এমুন একটা কঠ্ঠিন বিষয়ে। শালার এই সাবজেক্টে পড়তে গিয়া জান ঝালাপালা হইয়া গেছিলো।
ভ্রমণ সুস্বাদু হইছে।

মুস্তাফিজ এর ছবি

যারা সিকিম ঘুইরা আইসে তাদের হিংসা।
এতবার ঐদিকে গেলাম কোনবার ঢুকতে পারিনাই, সাঙ্গুলেক বা হরভজনের মন্দির কোনটাই দেখা হয়নাই। সচলে আমার লেখা শুরুই হইছিলো মনে হয় দার্জিলিং নিয়া।
এবারে একটু তথ্য বিভ্রাট নিয়া কথা বলি
সাঙ্গু লেক পৃথিবীর উচ্চতম লেক না, হিমালয় অঞ্চলেরও না। এমনকি ভারতেও এরচাইতে উচুঁ আরো অনেক লেক আছে, ভারতের সবচাইতে উচুঁ লেক হিমাচল প্রদেশে, নাম সুরয তাল, সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ১৬,০২০ফিট উচুঁতে।
পৃথিবীর সবচাইতে উচুঁ লেক আর্জেন্টিনায় নাম অজো দেল সালাদো, উচ্চতা প্রায় ২১,০০০ফিট, এইটা আগে ভল্‌কানো ছিলো। উচ্চতার দিক থেকে সেরা দশে তিব্বতের চারটা, চিলির দুইটা আর চিলি-বলিভিয়ার দুইটা লেকের জায়গা আছে। এমনকি ইরানেও একটা আছে যেইটা ১৮৫০০ ফুট উচুঁতে।

...........................
Every Picture Tells a Story

মামুন হক এর ছবি

ধন্যবাদ মুস্তাফিজ ভাই।
মজার ব্যাপার হলো আমাকে তখন ট্যুর গাইড বা সিকিমের লোকজনরা আমাকে বলছিল সাঙ্গু লেক পিথিমীর সবচে উচা লেক। আরো মজার বিষয়, গতকাল আমার কাছে কিছু লোক আসছিল বলিভিয়া থেকে তাদেরও একই দাবী , বলিভিয়াতেই দুনিয়ার সর্বোচ্চ লেক, গিয়া দেইখা আসার জন্য দাওয়াত দিয়া গেল।
আপনি না বললে আমি ধান্ধায়ই থেকে যেতাম। আবারো ধন্যবাদ।

মুস্তাফিজ এর ছবি

বলিভিয়ার ঐটার নাম লিকাঙ্কাবুর, একটা আগ্নেয়গিরির মাথায়, চিলির সাথে মিলাইয়া পড়ছে (১৯৪০০ফিট), আরেকটা হইলো পুকুন্তিকা (১৮৫০০ফিট) এইটাও চিলির সাথে।
ঘুইরা আসেন (ইস্‌ আমারে যদি কেউ দাওয়াত দিত)।

...........................
Every Picture Tells a Story

তানবীরা এর ছবি

মামুন ভাই, নেপাল গেছেন কখনো? আকাশ পরিস্কার থাকলে মোটামুটি নেপালের যেকোন প্রান্ত থেকেই হিমালয় দেখা যায়, ব্যাপারটা জোশ না।

আমার অসম্ভব প্রিয় একটা জায়গা নেপাল যেখানে আমি অনেক বার ফিরে যেতে চাই

---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

মুস্তাফিজ এর ছবি

হিমালয় দেখা যায়, এভারেস্ট না
হো হো হো

...........................
Every Picture Tells a Story

মামুন হক এর ছবি

না রে ভাই , লজ্জার কথা। দেশে থাকতে আমার দৌড় ছিল ইন্ডিয়া পর্যন্তই। দেশ ছাড়ার পর ঐ অঞ্চলে আর তেমন যাওয়া হয়নি। যাবো একদিন অবশ্যই।

অমিত এর ছবি

গ্যাংটক জায়গাটা বেশ সুন্দর। যে হোটেলটাতে ছিলাম জানালা খুললে কি জানি একটা রেন্জ দেখা যেত (নাম মনে নাই), আর মেঘ ঢুকে পড়ত ঘরে। যদিও পরের ব্যাপারটা খুব একটা মজার না।
সাঙ্গু লেকে যেদিন গেলাম সেদিন প্রচন্ড বৃষ্টি। তাই ইয়াক এর পিঠে একটু ঘোরাফেরা করেই চলে আসতে হয়েছিল।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।