ফরাসী বিভ্রম

মামুন হক এর ছবি
লিখেছেন মামুন হক (তারিখ: বুধ, ০৭/১০/২০০৯ - ১১:৪৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নাহ্ ‌এনকিদু আসলেই একটা খারাপ লোক।

ফটাফট মুখের উপরে কথা বলে, ডিপ্লোম্যাসী বোঝেনা, স্থান-কাল-পাত্রের কথা না হয় বাদ ই দিলাম। এই লোকের কাছে কাঁদুনী গাইতে যাবার মানে হয় না, চিত্তে মলমদায়ী কোন কথাবার্তা তার কাছে থেকে পাওয়া যাবেনা। বরং ঠাস করে কাঠ খোট্টা একটা জবাব দিয়ে দেবে, দিলের দগদগে জখম তাতে বাড়বে বৈ কমবে না।

একদিন জিটকে একটু তরল মুডে ছিলাম, এঙ্কিদুরে দেখে জিগাই...আচ্ছা বলোতো আমারে দিয়া লেখালেখি হবে কিনা? শতকরা ৯৯% ভাগ বন্ধু বান্ধবই এই প্রশ্নে পজিটিভ বা উৎসাহমূলক জবাব দিবে। কদু মিয়া কী কইল?..." না, হবেনা, আপনারে দিয়া লেখালেখি হবেনা, তবে অন্য কাউরে দিয়াও হবেনা। তার মানে সবাই সমান। আপনি এইবার ইচ্ছা মতো লিখতে থাকেন। "

আমি টাশকি খেয়ে জিটক অফ করে দিলাম।

আমি নিজেও খুব ভুদাই টাইপের ন্যাড়া, একই বেলতলায় বারবার যাই। কয়দিন আগের ঘটনা, চেনা পরিচিত রাস্তায় হাওয়া খাচ্ছিলাম, মনের আনন্দে ঘুরছিলাম ফিরছিলাম, হঠাৎ সুখে থাকতে ভূতে কিলায় কথাটারে আবারও বাস্তব প্রমাণ করতে অচেনা এক কানা গলিতে ঢুকে পড়লাম। ঢুকছি তো শখে,কিন্তু পরে যারপরনাই বীভৎস পরিস্থিতি দেখে আর পালাবার পথ খুঁজে পাইনা। সেখান থেকে এসে খোমাখাতায় একটা ঝাল ঝাড়লাম, কিন্তু তাতে দুক্কু বাড়লো বৈ কমলোনা, ফলশ্রুতিতে ভীষণ বিরক্তিকর অপ্রত্যাশিত আক্রমণে জান জেরবার হয়ে গেল। আকাশ থেকে পড়ে গজগজ করতে করতে আবার একই বেলতলায় গেলাম।

জিটকে কদু মিয়ারে দেখে আগডুম বাগডুম কইলাম, বলার পর মনে হৈল আরে আমিতো ভুল নাম্বারে ডায়াল করছি, এই কাঁদুনীটা গাওয়ার দরকার ছিল রেনেট বা সাইফের মতো সংবেদনশীল কারো কাছে। কিন্তু ততক্ষনে চুকচুক জাতীয় সমবেদনার বদলে কদু মিয়ার কামান থেকে ছররা গুল্লি ছুটে গেছে, নিরুপায় আমি বুক-কান পেতে দিলাম...
" আগে কন আপ্নে গেলেন ক্যান ঐ গলিতে? ভূতে ধরছিল না পেত্নীতে, প্যারিসের সেই কানা গলিতে ঢুকে যে অভিজ্ঞতা হইছিল সেইটা এক্কেবারেই ভুলে গেছিলেন?"

কোন দুঃখে যে এনকিদুরে সেই গল্পটা বলতে গেছিলাম, এখন জায়গায় বেজায়গায় আমারে সেই কথা মনে করিয়ে খোঁটা দেয়।

তাই মনের দুঃখে গল্পটা আপনাদেরও শোনাই, সাথে বোনাস হিসাবে আরও দুই একটা শোনাবো যেগুলা কদু মিয়ারেও বলি নাই।

( এখন আন্দালুসীয় লেম্বুচিপা দিয়া একটু চা খেয়ে আসি )


মন্তব্য

সাইফ তাহসিন এর ছবি

মিয়া লেম্বু চিপা দিয়া চা খাইতে গেসেন, ভালু কতা, মাগার চা খাইতে গিয়া টা খুজলে কইলাম খবর আছে। মিয়া তাত্তাড়ি আসেন, লেহা দেন, কফি পিলামু, ভাত খিলামু, হরিঙের মাংস ভি খিলামু।

লেখা পুরাই মামুনীয় হইসে দেঁতো হাসি, যাক সেই চিপা গলিতে আবার গেলে কইলাম হক্কলের কাসে কইয়া দিমু আপনার সেদিনকার চিপাগলির কাহিনী ;)। আর আমারে সংবেদনশীল কইয়া আপনে অনেকেরে অপমান করলেন মিয়া। সচলে আমার মত বেফাস কথা আর কেউ কইসে বইলা মনে পড়তাসে না।

আমাগো এনকিদু ভাইজান ত্যাড়া কথা কইলেও মন পরিষ্কার বলেই মনে হইসে, ত্যানা প্যাচাইতে দেখি নাই কখনও।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

মামুন হক এর ছবি

এখন ঘুমাইতে যাই। সকালে উইঠা বাকিটা শুনামু। পাক্কা!

সাফি এর ছবি

চা খাইলে দেখি ঘুম পায়!

মামুন হক এর ছবি

হ, সব উলটা পালটা কারবার হাসি

জি.এম.তানিম এর ছবি

সচলের নীতিমালায় নতুন ধারা চাই... কোন লেখা পুরোটা শেষ না করে লাল চা, দুধ চা, আন্দালুসীয় চা ইত্যাদি কোন প্রকারের চা খাওয়া যাবে না।
আরেকটা জমাট লেখা মনে হয় অকালে গেল... মন খারাপ
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

মামুন হক এর ছবি

আরে যায় নাই, লেখা দিলাম তো!

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আজকাল লোকজন যে কেমন হয়ে গেসে না- কেউ লেখা রাখে না...

---------------------------------------------------------------------------

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

এনকিদু এর ছবি

বড় হলে কেউ কেউ লেখা রাখে না ।

মামুন ভাই ও কি বড় হয়েছেন ?


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

মামুন হক এর ছবি

জটিল প্রশ্ন। আগে ছোট হয়ে নেই, বড়ো পরে হলেও চলবে হাসি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

কয়দিন আগের ঘটনা, চেনা পরিচিত রাস্তায় হাওয়া খাচ্ছিলাম, মনের আনন্দে ঘুরছিলাম ফিরছিলাম, হঠাৎ সুখে থাকতে ভূতে কিলায় কথাটারে আবারও বাস্তব প্রমাণ করতে অচেনা এক কানা গলিতে ঢুকে পড়লাম।

কানাগলি এড়িয়ে চলবেন মজা পাইছেন নাকি অ্যাঁ ! আমাদের মতো সংখ্যালঘু রোগা পাতলা রুগ্ন অসহায়রা যে এসব কানা গলিতে শিয়াল-শকুনের হাতে পড়ে যায় মঝে মধ্যে। বেদনা পাইলেও কানাগলিতে আপনারে আসতেই হবে দেঁতো হাসি । কি আর করবেন! আমরা যে অবুঝ। আর তাছাড়া আমাদের জন্মও ওই কানাগলিতেই। মন খারাপ

ভালো বিপদে পড়ছেন গুরুজন গোত্রের হয়ে। দেঁতো হাসি
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

মামুন হক এর ছবি

আমি গুরুজন! বলিস কী? হাসি

মূলত পাঠক এর ছবি

ঐ গলিটা কি সত্যি সত্যি নাকি সিম্বলিক? একটু ধন্দে রইলাম। তাড়াতাড়ি চা খাইয়া আসেন।

মামুন হক এর ছবি

পৃথিবীর সব গলিই সত্যি, আবার একই সাথে সিম্বলিক হাসি

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

হয় চালাক হয়ে গেছি, নয়তো মামুন ভাইকে চিনে গেছি। শিরোনাম দেখেই কী মনে করে আগে লেখার আকার দেখে নিলাম। এই শিরোনামে মামুন হকের কাছ থেকে এত সংক্ষিপ্ত লেখা == কোথাও একটা ফাঁকি আছে। দেঁতো হাসি

মামুন হক এর ছবি

চলাক হও নাই, হৈলে কি আর সাধ করে নিজের গলায় দড়ি দিতা? দেঁতো হাসি
তবে ভাই ভাইরে না চিনলে আর ক্যাম্নে কী?

অবাঞ্ছিত এর ছবি

সেকী গল্প কই! চা খাইতে কয়দিন লাগবে? মন খারাপ

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

__________________________
ঈশ্বর সরে দাঁড়াও।
উপাসনার অতিক্রান্ত লগ্নে
তোমার লাল স্বর্গের মেঘেরা
আজ শুকনো নীল...

মামুন হক এর ছবি

লেখা দিলাম তো, চা খাওয়া শেষ, এখন পান্তামুক খাইতেছি হাসি

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

নাহ্ ‌এনকিদু আসলেই একটা খারাপ লোক।

এইটা নিয়া কুনো সন্দেহ নাই! চোখ টিপি

----------------------
আমার ফ্লিকার

---------------------
আমার ফ্লিকার

মামুন হক এর ছবি

হ, আমরা ভুক্তভোগীরাই জানি।

অতিথি লেখক এর ছবি

মামুন ভাই মানে রসে টইটুইম্বর গল্প। মামুলী একটা ঘটনাকে কী সুন্দর ভাবে বর্ণমালায় সাজিয়ে আমাদের উপহার দেয় এটা তার উদাহরণ। মামুন ভাই চা না হয় খাওয়া যায়, টা কে কী করা হয়?
টা খাওয়া বাদ দিয়া আমাদের জন্য লেখা দেন।

ধন্যবাদ।
দলছুট।

মামুন হক এর ছবি

আপ্নাকেও অনেক ধন্যবাদ দলছুট!

অমিত এর ছবি

আপনার স্ট্যাটাস-টা প্রিন্টস্ক্রিন এর কল্যাণে দেখলাম, আর একইসংগে কানাগলির নষ্ট লোকজনের কাজকর্মও দেখলাম।
আপনাকে কিছুই করা হয় নি ভ্রাতঃ। হাসি এটা কিছুই না।

মামুন হক এর ছবি

সান্ত্বনায় শান্তি পেলাম হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।