শুভ জন্মদিন গুরু!

মামুন হক এর ছবি
লিখেছেন মামুন হক (তারিখ: শুক্র, ৩০/১০/২০০৯ - ১০:১৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto

দিয়েগো ম্যারাডোনা সম্পর্কে কম বেশি জানেনা না এমন মানুষ এই যুগে বিরল। তার জন্ম, বেড়ে ওঠা, ফুটবলিং ক্যারিয়ার, ব্যক্তিজীবন ইত্যাদি বিশদ আলোচনার জন্য যোগ্য ব্যক্তি আমি নই, তাই জন্মদিনে তাকে নিয়ে দুয়েকটা কথা বলেই ক্ষান্ত দিচ্ছি।

ম্যারাডোনার সাথে আমার প্রথম পরিচয় ১৯৮৬ সালে। আমার প্রজন্মের আরও অনেকের মতোই প্রথম বিশ্বকাপ খেলা দেখতে গিয়ে। তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি, স্কুল খোলা। রাত জাগা নিষেধ। তবুও ফুটবল অন্তঃপ্রান আমি ঘুমের ভান করে পড়ে থাকতাম। সবাই ঘুমিয়ে গেলে চুপিচুপি উঠে শব্দ কমিয়ে টিভি ছেড়ে খেলা দেখতাম। কিন্তু প্রথম রাতেই বিড়াল মারার বদলে মায়ের কাছে ধরা পড়ে গিয়ে টিভিতে তালা পড়লো। স্কুলে পর বাকীটা দিন ফুটবল নিয়ে থাকি, এখন আবার যদি রাতের বেলায়ও তা করি তাহলে তো লেখাপড়া মাথায় উঠবে। ফলে পরের দিনে বিকেলে টিভিটে পুণঃপ্রচার দেখা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। বিকেলের পর বিকেল খেলার মাঠে না গিয়ে টিভির সামনে বসে পড়ি, ফুটবল গিলে খাই--কখনও হা করে , কখনো বিস্ফোরিত চোখে।

তখনো আমি কোন বিশেষ দলের ভক্ত না, ফুটবলের একনিষ্ঠ ভক্ত। আর্জেন্টিনা বনাম কোরিয়ার খেলা দেখতে গিয়ে প্রথম ম্যারাডোনাকে চোখে পড়ল। যতোটা না স্কিলের জন্য তার চেয়ে বেশি তারপ্রতি প্রতিপক্ষের সম্ভ্রমের জন্য, পায়ে বল পড়লেই যে কোন উপায়ে তাকে থামিয়ে দেয়ার মরিয়া চেষ্টার জন্য। খর্বকার, চনমনে, ছটফটে, অত্যন্ত দ্রুতগতির এই খেলোয়ারটিকে মনে ধরে গেল। কিছুটা সহমর্মিতা থেকে, কিছুটা বলের উপরে তার অসাধারণ দখলের কারণে। তখনও আমরা কচি কাচারা জাগলিং, ড্রিব্লিং ইত্যাদিকে ফুটবলের সবচে গুরুত্বপূর্ণ অংশ মনে করতাম। বড়ো ভাইকে ধরতেই জানা গেল এই হচ্ছে আর্জেন্টিনার ক্যাপ্টেন, সে নিজে ব্রাজিলের ভক্ত , ম্যারাডোনাকে বিশেষ পাত্তা দিতনা।

এর পর আর্জেন্টিনার প্রতিটা খেলা দেখি আর ম্যারাডোনার প্রতি প্রেম আরও গাঢ় হতে থাকে। অদ্ভুত এই লোক, এত ছোট, এত মার খায় তবুও দমেনা। আমার বন্ধুবান্ধবদের অনেকেই ব্রাজিলের সমর্থক, ম্যারাডোনা তাদের কাছে কীটস্য কীট। আমি পরিবারের সাথে ঝগড়া করে, বন্ধুদের সাথে মারামারি করে আমার ম্যারাডোনা ভক্তিকে আরও জোরালো করে নিলাম। ১০ বছর বয়সেই সেমি প্রফেশনাল ফুটবলে যোগ দিয়ে আজীবন প্রতিপক্ষের নির্মম হামলা সহ্য করে এসেছেন। আমার জীবনে আমি আর কোন ফুটবলারকে এভাবে মার খেতে বা আক্রান্ত হবে দেখিনি। কিন্তু প্রায় প্রতিবারই দমে না গিয়ে উঠে দাড়িয়েছেন, পালটা হামলায় বিপর্যস্ত করে দিয়েছেন প্রতিপক্ষকে, প্রমাণ করেছেন হু দ্য বস ইজ। সত্যি বলতে এই জিনিষটাই তাকে আমার জীবনের গুরুর আসনে বসিয়ে দিয়েছে। জীবনে অনেক ঝড়ঝঞ্ঝার মধ্য দিয়ে গিয়েছি, দিয়েগো ম্যারাডোনা জীবন সংগ্রাম এবং ফুটবল মাঠে অলৌকিক সব কীর্তিকাণ্ড আমাকে প্রতিটা বিপদে সাহস যুগিয়েছে। এখনও যোগায়। বুয়েনেস আইরেসের বস্তি থেকে উঠে এসে সমস্ত পৃথিবীর মসনদে বসা , প্রেরণার জন্য এর চেয়ে ভালো উদাহরণ আর কী হতে পারে?

৮৬ বিশ্বকাপ থেকে আজ অবধি ম্যারাডোনার প্রতিটি পদক্ষেপ , উত্থান-পতন মন্ত্রমুগ্ধের মতো অনুসরণ করে আসছি, আগামীতেও করে যাব।

আজ ম্যারাডোনার ৪৯ তম জন্মদিন। শুভ জন্মদিন গুরু!

কথা অনেক হলো, চাইলে আরও দুই চার মাস একটানা বলে যাওয়া যায় গুরুকে নিয়ে, কিন্তু এত্ত সময় আপনাদেরও নাই, আমারও নাই। তাই কিছু ভিডু কাম ভুডু দেখেন ( কৃতজ্ঞতাঃ কিংকু ভাই)।

অদম্য ম্যারাডোনা
ইতালী গিয়ে ম্যাড়মেড়ে ন্যাপোলিকে ম্যারাডোনা বলতে গেলে একহাতে পালটে দিয়েছিলেন, ইতালী সেরার পাশাপাশি ইয়োরোপ সেরাও বানিয়েছিলেন।

ন্যাপোলিতে ম্যারাডোনা

ম্যারাডোনা!

সব রাজাদের রাজা ম্যারাডোনা!!!

হ্যান্ড অভ গড

গোল অভ দ্য সেঞ্চুরী

মারাত্মক দৌড়ের উপর আছি। তাড়াহুড়া করে গুরু জন্মদিনে এই পোস্টটা দিলাম।
আবারও শুভ জন্মদিন দিয়েগো আর্মান্দো ম্যারাডোনা, একদিন দেখা হবে ।


মন্তব্য

সাইফ তাহসিন এর ছবি

আহা ম্যারাডোনা, যার কারনে কিনি জীবনের প্রথম ভিউ কার্ড, যার কারনে ফুটবলে আসক্ত হয়ে পড়ি। লেখাটা খুব ভালো লাগলো, আর স্মৃতির বিভিন্ন পাতায় আলো জ্বেলে দিল। তাই মামুন ভাইয়ের সাথে গলা মিলিয়ে বলি, শুভ জন্মদিন গুরু, ফুটবলের অন্যতম কিংবদন্তী ম্যারাডোনা।

মামুন ভাই, প্রথম ভিডিওটা "আপনার চোঙ্গা" হতে সরিয়ে দিয়েছে, সেটা একটু ঠিক করে দিবেন?
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অম্লান অভি এর ছবি

আমি তাঁর ভক্ত হয়েছি সেই সাল থেকেই এবং একমাত্র ফাইনাল ম্যাচ থেকেই। বাবার চোখ অপারেশনের জন্য ছোট ছেলে হিসেবে সঙ্গী ছিলাম ভারতের রায়গঞ্জে। কাজিনরা বেশ তোড় জোড় করে উঠিয়ে নিয়ে গেল টিভি রুমে। ঘর ভর্তি মানুষ ছোট্ট টিভি পর্দার সাথে দর্শকের চোখ গুলি সেটে ছিল। সেই ভাগিদার চোখ একজোড়া আমার। তারপর বাবাকে নিয়ে দেখে ফিরলাম দুখিত বাবার সাথে মাসহ দেশে ফিরলাম। স্কুলের সহপাঠিদের সাথে ভাগাভাগি করলাম ফাইনালের গল্প আর শুনলাম তাদেরটাও।
তারপর কতদিন টিশার্টের জন্য বায়না ধরা এবং পরিধান। সেই সনে স্কুল শিক্ষকদের একটা ধর্মঘট চলছিল বলেই বাবা-মায়ের সঙ্গি হতে পেরেছিলাম। আমি তখন ক্লাস সিক্স। বাড়ি এসে শুনলাম ফাইনাল ঝড় বয়ে গেছে বাড়িতে। আমি কি খুব মিস করেছিলাম এমন মনে হয়নি। আমি চাচতো ভাইবোনদের মধ্যে সবার ছোট হওয়ায় আদর আর আনন্দ ভাগে কমতি হয়নি বিদেশ বিভুইতে।
স্মৃতি উস্কে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। আর স্মৃতি নাড়ানিয়া দিয়াগো মারাদোনাকে শুভেচ্ছা।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

অনিকেত এর ছবি

শুভ জন্মদিন গুরু!
আমি জীবনে হাতে গোনা কয়েকবার ফুটবলে পা ঠেকিয়েছি। শুধু ফুটবল নয়, অন্যান্য প্রায় সব খেলার ব্যাপারেই আমি সমান 'কৃতবিদ্য'। কিন্তু তাতে কী?
ম্যারাডোনার ভক্ত হতে হলে খেলোয়াড় হতে লাগে না।

ম্যারাডোনা আমার কাছে গুরু কেবল ফুটবলের যাদুকর বলে নয়। আমার দেখা অন্যতম আবেগী এক মানুষ এই ম্যারাডোনা। নানান সময়ে তার সে আবেগী মনের নিঃসঙ্কোচ বহির্প্রকাশ ঘটেছে। ১৯৮৬ তে ম্যারাডোনা বিশ্বকাপের সাথে বিশ্বকেও জয় করেছিলেন। তার আগে পর্যন্ত ফুটবলের অবিসংবাদিত নেতা ছিল ব্রাজিল।১৯৮২ এর পর থেকে আস্তে আস্তে পৃথিবীর মাঠে মাঠে একটা নতুন নাম, একটা নতুন মন্ত্র গুঞ্জরিত হতে শুরু করে। ফুটবল খেয়ে-পরে যারা বেঁচে আছেন তারা হয়ত এর আগে থেকেই এই নতুন নামটির সাথে পরিচিত হয়েছিলেন। কিন্তু এই ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের ঘরে ঘরে একটা ছোটখাট মানুষের নাম পৌছে গেল ১৯৮৬'র পরপরই। আমরা যারা কেবল বিশ্বকাপ আসলে পরে ফুটবল জ্বরে আক্রান্ত হতাম, তারা প্রথমবারের মত শুনছিলাম ম্যারাডোনার নাম।

বীরভোগ্যা এ বসুন্ধরা।
পৃথিবীর আর সকলের মত আমরা বাঙ্গালীরাও ভীষন বীর-পূজারী। আমাদের প্রতিদিনের ঘা খাওয়া,পোড় খাওয়া অন্ধকার ব্যর্থ জীবনে খুব অল্পকিছু লোক ভোরের আলো এনে দিতে পারতেন। ১৯৮৬-র পর সেই অল্প ক'জনের নামের লিষ্টিতে ম্যারাডোনা ঢুকে গেলেন।

আমরা সাধারণ মানুষরা অবাক হয়ে দেখলাম খেলোয়াড় ম্যারাডোনাকে। দেখলাম মাঠে বল নিয়ে তার 'অমানুষিক' কারিকুরি। আপাত অসম্ভব একটা পরিস্থিতি থেকে বল বের করে নিয়ে এসে প্রায় শূন্য ডিগ্রী কোন থেকে গোল করেছেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করা এই গোলটি এখন পর্যন্ত সর্বকালের সেরা গোল হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু আমরা যারা সাধারন মানুষ, তারা কেবল ফুটবলেই থেমে রইলাম না। খুব দ্রুত আমরা জেনে গেলাম তাঁর জীবন ইতিহাস। জেনে গেলাম, ব্যুয়েন্স আইরিসের পথে পথে কাপড়ের পুটঁলিকে বল বানিয়ে খেলতে থাকা এক দরিদ্র ছেলের স্বপ্নের মত উত্থানের কাহিনী। সাথে সাথে আমরা হাতে কিল মেরে বললাম---এইতো, এই লোকটার অপেক্ষায়ই তো আমরা ছিলাম!!! আমরা জীবনে যা হতে পারিনি, যা হতে পারবোনা, যে প্রাচুর্যময় জীবনের কথা কেবল মাত্র স্বপ্নেই দেখা সম্ভব, ম্যারাডোনা দেখালেন--- সেসবের কোনকিছুই অধরা নয়।

লক্ষ লক্ষ বামনের মধ্যে বড় হয়ে ম্যারাডোনা দেখিয়ে দিলেন কিভাবে চাঁদ কে ছুঁতে হয়। তাই ম্যারাডোনার প্রতিটি জয় আমাদের প্রত্যেকের নিজস্ব জয়। আমরা সব পোড় খাওয়া লোক তার মাঝেই খুঁজে নিতে শুরু করলাম আমাদের বেঁচে থাকার রসদ। স্থবির অর্থনীতি, আকাশচুম্বী দারিদ্র্য আর ফকল্যান্ডের যুদ্ধে দারুন এক অপমানকর পরাজয়---আর্জেন্টিনার বুক ভাঙ্গা মানুষগুলোর সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর একটা অবলম্বন হয়ে উঠেছিলেন ম্যারাডোনা। তাই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের এই জয় যেন সেই পরাজয়ের গ্লানিমোচন। ম্যারাডোনা যখন আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে নিয়ে গেলেন,তখন সাথে করে নিয়ে গেলেন সারা পৃথিবীর মানুষের সহমর্মীতা। সেই ফাইনাল খেলায় জার্মানির মুখোমুখি হয়েছিলেন ম্যারাডোনা---এগারোজন খেলোয়াড় নিয়ে নয়, সারা পৃথিবীকে সাথে নিয়ে। জার্মানির সেদিন কোনভাবেই জেতার কথা নয়। জেতেও নি।

ফাইনালের শেষ বাঁশিটি বাঁজার সাথে সাথে কান্নায় ভেঙ্গে পড়া ম্যারাডনার সাথে আমরা সবাই সামিল হয়েছিলাম।

সেই থেকে শুরু--
সেই থেকে ম্যারাডোনা আমার গুরু।

এরপরে ক্রমে ক্রমে আমরা জানতে পেরেছি তার বেপরোয়া জীবনাচরনের কথা, মাদকাসক্তির কথা, বারবার প্রেসের সামনে মিথ্যাচারন এবং আরো সব আনুষঙ্গিক লাগামহীনতার কথা।

আমরা দুঃখিত হয়েছি। যেমন আমরা দুঃখিত হই পাড়ার সবার প্রিয় ছেলেটি বখে গেলে। আমরা বিব্রত হই। হতাশ হই। অপমানিতও বোধ করি হয়ত।

কিন্তু ১৯৯০-এ যখন তিনি ফিরে আসেন--আমরা আমাদের সকল ওজর-আপত্তি পাশে সরিয়ে রেখে আবার তার কাতারে দাঁড়াই। গ্রামে গ্রামে লোকজন শিরনী দিতে থাকল। পাড়ায় পাড়ায় উঠল প্রার্থনার রব।

আর্জেন্টিনা আর ম্যারাডোনার জন্যে।

পরের কথা সকলেই জানেন।

আমরা দেখলাম এক নক্ষত্রের পতন।
হয়ত তার এই পতন অবশ্যম্ভাবী ছিল। কিন্তু আমদের সাধারন মানুষের মন তো আর সেটা মানতে চায় না। সবকিছু জানার পরও তাই আমাদের মনের খুব গভীরে বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হত---হয়ত ম্যারাডোনার কথাই ঠিক, হয়ত এ সবই তার বিরুদ্ধে এক গভীর চক্রান্ত।

এরপর বহুদিন গিয়েছে।
আস্তে আস্তে বিস্মৃতির পথে হাটা শুরু করেছেন ম্যারাডোনা। সম্প্রতি আর্জেন্টিনার কোচ নিযুক্ত হয়ে আবারো আলোচনায় ফিরেছেন তিনি। ভীষন রকম বাজে খেলেও কোনমতে বিশ্বকাপের টিকিট জোগাড় করতে পেরেছে তার টিম। তাতে কী? বিশ্বকাপে যাবার আনন্দে ভেসে গিয়ে সেদিন ম্যারাডোনা আবারো উলটাপালটা বেসামাল মন্তব্য করেছেন। শুনেছি ফিফা তাকে ৫ ম্যাচের জন্য ব্যান করার চিন্তা করছে। সেক্ষেত্রে ম্যারাডোনার হয়ত এই বিশ্বকাপে যাবার স্বপ্ন ধুলিস্মাৎ হতে চলেছে।

সে যাই হোক, আজকের এই দিনটা সেই দুশ্চিন্তা করার দিন নয়।
আজকের দিনটা বামন হয়েও চাঁদ ছুঁয়ে আসা এক মানুষের জন্মদিন।
আজ আমার গুরুর জন্মদিন।

অনেক শুভেচ্ছা গুরু!

আর মামুন ভাই কে লক্ষ তারার ফুল---চমৎকার লেখাটা দেবার জন্যে।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

পোস্টের চেয়ে বড় মন্তব্য দেখে একটু ভয়ে আছিলাম, আমার গুরুকে অনিকেতদা আবার আগ পাশ তোলা ধোলাই করলেন কিনা, বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, আপনার মন্তব্যটা খুব ছুয়ে গেল, এত সাবলীল করে লেখে গেলেন, কিছুক্ষন মন্ত্রমুগ্ধের মত বসে থাকলাম, তারপর আবার পড়তে শুরু করলাম, অসাধারন এই মন্তব্যের জন্যে আপনাকে উত্তম জাঝা! (মানিক) (বিপ্লব) এবং লক্ষকোটি তারা দিয়ে গেলাম।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

হিমু এর ছবি
সুহান রিজওয়ান এর ছবি

অসাধারণ একটা স্মৃতিচারণ অনিকেতদা। মামুন ভাইয়ের লেখাও জব্বর হইসে। ম্যারাডোনার খেলা সরাসরি দেখার সৌভাগ্য আমার হয় নাই। তারপরেও বিভিন্ন সব ক্লিপ দেখে আমি তাঁর ফ্যান। ব্রাজিল সমর্থক আমি- তাই বলে সুন্দর ফুটবলের পূজাও কম করি না। ম্যারাডোনা অসাধারণ- সন্দেহ নাই।

অফটপিকঃ

দেখলাম মাঠে বল নিয়ে তার 'অমানুষিক' কারিকুরি।

কেবল একটা জায়গায় আমি আরেকজনকে অনেকখানি আগায় রাখি। আমার প্রজন্মের বলেই কীনা কে জানে- কিন্তু আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি রোনালদিনহোর চেয়ে বেশি কিছু করা কারো পক্ষেই সম্ভব না। কাউকে হেয় করার জন্যে বলি নাই। আসলেই এটা আমার বিশ্বাস।
______________________________________________________

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

সেরা সময়ের রোনালদিনহোর চেয়ে বেশি স্কিল দেখানো হয়তো আসলেই আর কারো পক্ষে সম্ভব না ... কিন্তু স্কিল যেমন একটা ফ্যাক্টর, তেমনি ফ্যাক্টর সেই স্কিলের প্রয়োগ ... রোনালদিনহোর সেরা সময়টা মাত্র তিন বছরের, এবং শুধুই বার্সেলোনার হয়ে ... সে যদি এই সাফল্যটা ব্রাজিলের হয়েও দেখাতে পারতো, আর এত দ্রুত ফুরিয়ে না যেত, সেও একটা গ্রেট হতে পারতো; কিন্তু পারে নাই ...

এইখানেই ম্যারাডোনা আর জিনেদিন জিদানের আসল গ্রেটনেস ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আরে বস, আমার কাছে মনে হয় ফুটবলটা দিনকে দিন কঠিন হইতেসে। ম্যারাডোনার গোলটাই দেখেন- প্রায় সব ডিফেন্ডার ফার্স্ট টাইম চার্জ করসে; এই যুগে তো এইটা অকল্পনীয়। এই যুগে আসলেই দুই থেকে তিন বছরের বেশি কারো পক্ষে সেরা থাকা সম্ভব না। জিদানও কিন্তু রোনালদিনহোর সমানই টানা তিনবার বর্ষসেরা হইসে- এর বেশি না।

একমাত্র ফ্যাকটর হইলো ২০০৬ এর বিশ্বকাপটা ব্রাজিল জিতলো না, জিতলে রোনালদিনহোই যে সেরা সেইটা প্রমাণ হইতো।

______________________________________________________

মধ্যরাতের কী-বোর্ড চালক

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

উত্তম জাঝা! গুল্লি

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

আমি আবার এরে ভালা পাই না খাইছে

---------------------
আমার ফ্লিকার

বিপ্রতীপ এর ছবি

ফুটবল খেলা ঠিকঠাক মতো বোঝার আগে থেকেই গুরুর ভক্ত আছি দেঁতো হাসি
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আর্জেন্টনার সাপোর্টার নই, কিন্তু বসকে একবাক্যে বস মানি। গুরু গুরু

অতিথি লেখক এর ছবি

মামুন ভাই,

ধন্যবাদ। আজ মারাদোনার জন্মদিন জানতামই না। আপনার পোষ্ট খুব উপকারে আসছে। আমি রাতে বসে কুস্তুরিকার সিনেমা 'আন্ডারগ্রাউন্ড' নিয়ে একটা লেখা ধরছিলাম।কথা প্রসঙ্গে আসলো কুস্তুরিকার অসাধারণ ডকুমেন্টারি 'মারাদোনা'। পরে আর ভূগর্ভে না গিয়ে মারাদোনাতেই
স্থিথু হলাম।

আর কি বলা যায়। হাজার হলে ও দা গডস মাস্ট বি ক্রেজি

শুভাশীষ দাশ

রেশনুভা এর ছবি

৮৬ সালের বিশ্বকাপের সময় বয়স চার। কিছুই বুঝি না কিন্তু ঐ যে "ম্যারাডোনা" শব্দটা সারাজীবনের জন্য মস্তিষ্কে গাঁথা হয়ে গেছে। ওঁর সাত খুন আসলেই মাফ আমার কাছে।

মজনুভাই [অতিথি] এর ছবি

ফুটবলের বাউল, ম্যারাডোনা।

ভুল বললাম কি?

স্বাধীন এর ছবি

শুভ জন্মদিন গুরু। আর মামুন ভাইকে পোষ্টটি দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

আমার ফুটবল বোঝার বয়স হতে হতে ম্যারাডোনার দিন শেষ গিয়েছিল, ম্যারাডোনা কি জিনিস সেইটা আর অনুভব করা হয়নি ... বরং ম্যারাডোনা ম্যারাডোনা করে মানুষজনের লাফালাফি, বিবর্ণ একটা আর্জেন্টাইন টিম, আর তার পাশে রোমারিও-বেবেতোদের গোলের পর গোল করা দেখে আমি ব্রাজিলের সাপোর্টার হয়ে গেলাম ... ম্যারাডোনাকে নিয়ে বিশেষ কোন ভালোবাসা ছিল না ...

পরে আস্তে আস্তে স্ট্যাটিসটিক্স আর বিবর্ণ কিছু ইউটিউব ভিডিও দেখে টের পেলাম ম্যারাডোনা কি জিনিস ... ক্লাব আর আন্তর্জাতিক ফুটবল দুই ক্ষেত্রেই সমান নৈপুণ্য, দুর্বল আর্জেন্টিনা আর তার চেয়েও দুর্বল নেপোলিকে শূণ্য থেকে একেবারে শীর্ষে তুলে নেয়া মুখের কথা না ... নাউ আই স্যালুট হিম ...

তবে কোচ হিসাবে উনাকে আমি ভালো পাই না দেঁতো হাসি
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...

তানবীরা এর ছবি

মামুন ভাই, আপনার পায়ের কি অবস্থা ? কবে শুরু করছেন খেলা?

আপনার গুরুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা

**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

মামুন ভাই, খুব ভালো লাগলো! উনারে আমিও গুরু গুরু মানি! দেঁতো হাসি

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

পুতুল এর ছবি

গুরুকে শুভ জন্মদিন।
৮৬ পুরো খেলাটা পরিক্ষার জন্য বাদ গেছে!
**********************
ছায়া বাজে পুতুল রুপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কি দোষ!
!কাঁশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।