আমি দুঃখিত আলী হোসেন

মামুন হক এর ছবি
লিখেছেন মামুন হক (তারিখ: শুক্র, ১৫/০১/২০১০ - ১০:৫৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই লেখাটা লিখতে গিয়ে বারবার থেমে গিয়েছি। লিখে কিছু হবে কিনা জানিনা, আবার না লিখেও পারছিনা। অসহায় এক অনুভূতি গ্রাস করে আছে। ভালো-মন্দ, হাসি-কান্না, সুখবর-কুখবর মিলেই তো আমাদের জীবন। তবুও মাঝে মাঝে এমন কিছু দুঃসময়ের সাক্ষী হয়ে যাই নিজেরও অজান্তে যা ভাসিয়ে নিয়ে যায় , ডুবিয়ে দেয় অবশ করা বিষাদের সাগরে।

ঘটনাটা শুনি গত শুক্রবার দুপুরে। মিশরী এক বন্ধু জানালো যে বাংলাদেশী এক অবৈধ অভিবাসী মারা গেছে তাইপেতে। অবৈধ অভিবাসীরাতো কতো দেশেই কতো ভাবে মারা যায়, বাংলাদেশী হলেও আমার করার তেমন কিছু নেই, কারণ তাইপে আমার শহর থেকে প্রায় ৩০০ মাইল দূরে। দায়সারা দুঃখপ্রকাশের পর আমি চলে যাচ্ছিলাম, কিন্তু পরের কথাটা আমার অন্তরাত্মা কাঁপিয়ে দিলো। অভাগা দেশী ভাইটি মারা গেছে প্রায় তিন মাস আগে আর তার লাশ এখনো পড়ে আছে তাইপে মর্গের ফ্রীজারে, শুরুতে টাকার অভাবে আর এখন আইনি জটিলতায় দেশে ফেরৎ পাঠানো যাচ্ছেনা।

গরীব দেশের নাগরিক হতে পারে, কিন্তু এতটা অবমাননা তো তার প্রাপ্য না। জীবিত অবস্থায় তাকে কেউ চায়নি, না নিজদেশ, না পরদেশ, কিন্তু মৃত্যুর পর স্বাভাবিক সৎকারের অধিকার থেকে তো সে বঞ্চিত হতে পারেনা। আমি বিস্তারিত জানতে চাইলে মিশরী খালেদ অপারগতা জানায়। সে নিজেও ঘটনাটা শুনেছে আরেক মরোক্কান বন্ধুর কাছ থেকে। নাম্বার নিয়ে সেই লোককে ফোন করি। তারও বিশদ জানা নেই। সে বলে তাইপেতে তার এক দেশী বন্ধু আছে তার সাথে যোগাযোগ করতে। আমি ফোনের পর ফোন করতে থাকি। এ বলে ওর কথা, ও বলে তার কথা। দুপুর থেকে রাত দশটা পর্যন্ত বিভিন্ন চেনা-অচেনা মানুষ, তাইপে মসজিদ আর সরকারী মর্গে ফোন করে আস্তে আস্তে মূল ব্যাপারটা জানি।

বেচারার নাম আলী হোসেন। বয়স বছর তিরিশের আশে পাশে। আদম ব্যাপারীর হাত ধরে তার তাইওয়ানে আসা প্রায় ছয় বছর আগে, জীবিকার সন্ধানে। পরে তার এক ছোট ভাইও এসেছিল, সুমন নামের। তাইওয়ানে অবৈধ অভিবাসীদের কর্ম সংস্থানের সম্ভাবনা বলতে গেলে শূন্য। তবুও আদম ব্যবসায়ীরা নানা প্রলোভন দেখিয়ে সাদাসিধা দেশী ভাইগুলোকে এখানে এনে ফেলে যায়, মূলত রাজধানী শহরেই। আমি দূরে থাকার কারণে তাদের কারো সাথেই আমার কোন যোগাযোগ নেই। জানিনা তারা এখানে কীভাবে ছিল, কী করতো, কী খেত। মাস তিনেক আগে কোন এক রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় আলী হোসেন মারাত্মক ভাবে আহত হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে রাস্তায় পড়ে থাকা অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয় পুলিশ। ল্যাম্প পোস্টের সাথে মাথায় ধাক্কা লাগায় মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। শুরু হয় যমে-মানুষে লড়াই। একটানা পনের দিন।

জীবন যুদ্ধের হার না মানা সেনানী আলী হোসেন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়েও শেষ রক্ষা করতে পারেনি। সুদূর প্রবাসে, আত্মীয়-পরিজনবিহীন অবস্থায়, ধুঁকতে ধুঁকতে সে মারা যায়। আহা বেচারা মরে গিয়ে বাঁচলেও আজকে আমার এই লেখাটার প্রয়োজন পড়তনা। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে মৃত্যু তাকে আপন করে নিলেও, মুক্তি তাকে ছোঁয়না। প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র আর দায়িত্ব নেবার মতো কারও অভাবে আলী হোসেনের আশ্রয় হয় সরকারী মর্গের হিমাগারে।

তার ভাই সুমন খবর পেয়ে গিয়েছিল হাসপাতালে, মৃতপ্রায় ভাইয়ের পাশে থাকতে । কিন্তু আগে থেকেই তক্কে তক্কে ছিল ইমিগ্রেশন পুলিশ। ভাইয়ের দেখভাল করতে গিয়ে সুমন ধরা পরে পুলিশের কাছে, বিনা ভিসায় থাকার অপরাধে। হাসপাতাল থেকেই সোজা জেলখানা, একমাস হাজতবাসের পরে দেশে যাবার ফিরতি প্লেনে উঠিয়ে দেয়া হয় তাকে। এদিকে অনিশ্চিত কালের জন্য আলী হোসেনের লাশ মর্গে রাখতে অনীহা প্রকাশ করে হাসপাতাল কতৃপক্ষ , ক্রিমেটোরিয়ামে পুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এই পরিস্থিতিতে টনক নড়ে স্থানীয় অভিবাসী সমাজের। তারা চাঁদা তোলা শুরু করে। এক পর্যায়ে যথেষ্ট পরিমান টাকাও সংগৃহিত হয়। কিন্তু বেঁকে বসে হাসপাতাল কতৃপক্ষ, পাওয়ার অভ অ্যাটর্নী ছাড়া তারা কারও কাছে লাশ হস্তান্তর করবেনা। আলী হোসেনের পরিবার ঢাকার আশেপাশের কোন গ্রামে থাকে। তাদের সাথে যোগাযোগ করা হয় এ বিষয়ে। তারা জানেওনা লাশ ফিরিয়ে আনার নিয়ম-নীতি, এ ব্যাপারে সাহায্য করার মতো কোন সরকারী সংস্থাও নেই। এদিকে ছোট ছেলেকে ফিরে পেলেও, বড়ো ছেলের অকাল মৃত্যুতে তাদের মা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন অনেকটাই। ছেলের লাশ দেখার আশায় দিন কাটাচ্ছেন। অপেক্ষায় তার দিন কাটেনা, কষ্টে-ক্ষোভে নিজের মাথার চুল ছেঁড়েন। এদিকে আলী হোসেনের লাশের উপর জমে আরও কয়েক পরত হিম।

আইনজীবির সহায়তায় পাওয়ার অভ অ্যাটর্নী তৈরী করা হয়, সেটাকে নোটারী করে বিদেশ মন্ত্রণালয়ের সিল-ছাপ্পর মেরে পাঠানো হয় তাইওয়ানে। তাইওয়ানে সেই কাগজকে চাইনিজে ভাষান্তর করা হয়। তারপর মূল কপি পাঠানো হয় হংকং এর বাংলাদেশ কনসুলেটে ( তাইওয়ানের সাথে বাংলাদেশের কোন কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই) সত্যায়িত করতে। হয়তো সরকারী অফিসগুলোতে মানুষের জীবন-মৃত্যু, আবেগ-অনুভূতির চাইতে আইন-কানুনের ওজন অনেক বেশি। সামান্য ভুলের অজুহাতে হংকং কনসুলেট সেই কাগজ সত্যায়িত করতে অস্বীকৃতি জানায়।

হংকং এ ফোন করে গতকাল সেটার কপি আনালাম। কেউ হয়তো আলী হোসেনের পরিবারকে বুঝিয়েছে যে ছেলে বিদেশে মারা গেলে অনেক ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়। ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবী দাওয়া সহ বিশাল ফিরিস্তি। অথচ সে ছিল এখানে অবৈধভাবে, ওয়র্ক পারমিট ছিলনা, ক্ষতিপূরণের তো প্রশ্নই ওঠেনা। সেটা বোঝালাম আলী হোসেনের ভাইকে। আলী হোসেনের পরিবার গ্রামে থাকে, সেখানে এখন ফসল কাটার মৌসুম। দু’একদিনের মধ্যে তারা কাজ কিছুটা সামলে ঢাকা যাবে, উকিলের কাছে । কাগজ পত্র সংশোধন করা গেলেই, এখানকার ঝুট ঝামেলা মিটিয়ে ফেলা যাবে।

দেশের ছেলেকে দেশের মাটিতেই ফেরৎ পাঠাবো, যত ঝামেলাই আসুক।

আলী হোসেনের ঘটনাটা বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। এমন অনেক আলী হোসেন মরে পড়ে আছে মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ডের জঙ্গলে, আরবের মরুতে বা ভূমধ্য সাগরের অথৈ জলে। এমন অনেক আলী হোসেন প্রতিদিন সহায়-সম্বল বিক্রি করে পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে, ভাগ্য পরিবর্তনের আশায়। প্রতারিত হচ্ছে, সর্বস্ব খোয়াচ্ছে, দাসের মতো শ্রম দিচ্ছে দুবেলা দু’মুঠো খাবারের প্রয়োজনে, জেলে ধুঁকছে, অথবা কর্মক্ষেত্রে শিকার হচ্ছে অবর্ণনীয় দুর্দশার, লাশ হয়ে ফিরে আসছে প্রতিদিন--সরকারের টনক নড়েনা। কোন এক আলী হোসেনের লাশ কার্যকর সরকারী উদ্যোগের অভাবে যে তিন মাস মর্গে পড়ে থাকবে, ক্রিমেটরিয়ামের দাউ দাউ আগুন যে তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকবে সেটাতে অবাক হবার কিছু না থাকলেও প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হবার মতো অনেক কিছু আছে। স্বাধীন দেশের নাগরিকের এতটা হেনস্থা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না। প্রবাসী মন্ত্রণালয় নামে যে হাতি পোষা হচ্ছে, তাদের কাজটা আসলে কী কেউ বলতে পারেন?

এই আলী হোসেনরাই মাসে মাসে ঘাম-রক্ত ঝরানো রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়ে অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল রাখছে। সরকার নির্লজ্জের মতো তাদের টাকায় সংসার চালায়, অথচ তাদের স্বার্থ সংরক্ষনের কোন উদ্যোগই নেয়না। হাতি মরে গেলেও নাকি তার লাখ টাকা দাম, আর এমন শত শত আলো হোসেন মরে পড়ে থাকলেও তাদের চার পয়সার দামও নেই সরকারের কাছে। আজ যদি প্রধানমন্ত্রীর ছেলে মারা যেত বিদেশে, হয়তো বিশেষ বিমানে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে , জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রেখে, তোপধ্বনি সহকারে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হতো। আর আলী হোসেনের কপালে দেশের মাটিও জোটেনা, বিদেশের বরফ জোটে। তার মায়ের বুকের শান্তির পতাকাটা চিরদিনের জন্য নেমে যায়, তার ভাই হাতকড়া পড়ে একা একা দেশে যাবার প্লেনে ওঠে, পেছনে ভাইয়ের লাশ—চোখের অশ্রু মোছারও উপায় থাকেনা। তার বাবা সবার অলক্ষে চোখ মোছে, বোন উদাস চোখে তাকিয়ে থাকে ভাইয়ের পথ চেয়ে। তাদের কথা শোনার, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবার কেউ নেই।

আমি দুঃখিত আলী হোসেন এমন একটা অভাগা দেশে আপনি জন্ম নিয়েছিলেন যেখানে দরিদ্র হয়ে জন্মানোই আজন্ম পাপ।

আমি দুঃখিত আলী হোসেন, আপনার ভাইয়ের মতো আমাদেরও দু’হাত যে পেছনে বাঁধা, আমরা চাইলেও আপনাদের জন্য কিছু করতে পারিনা, একচোখা রাষ্ট্রযন্ত্রকে সজাগ করতে পারিনা, কার্যকর নীতিমালা বানাতে পারিনা, দিন বদলাতে পারিনা, দেশ বদলাতে পারিনা-- আপনার মতো আমরাও যে বরফ হয়ে যাচ্ছি দিনকে দিন।


মন্তব্য

সাইফ তাহসিন এর ছবি

অনেকদিন পরে লিখলেন মামুন ভাই, কিন্তু এমন লেখা দিলেন, বাক্যহারা হয়ে গেলাম, ইয়ে, মানে...
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

স্বপ্নহারা এর ছবি

লেখাটা পড়ে ভীষণ কান্না পেল...নিজেকে খুব অক্ষম মনে হয়!

-------------------------------------------------------------
স্বপ্ন দিয়ে জীবন গড়া, কেড়ে নিলে যাব মারা!

-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...

তাসনীম এর ছবি

দুঃখ পেলাম...মনের প্রতিটা কথাই আপনি লিখে দিয়েছেন তাই আর কিছু লিখলাম না।

দেশের ছেলেকে দেশের মাটিতেই ফেরৎ পাঠাবো, যত ঝামেলাই আসুক।

আপনাকে ধন্যবাদ কষ্ট উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। বাংলাদেশ এম্বেসী কি চীজ আমরা প্রবাসীরা সবাই জানি। সবচেয়ে ভালো লেগেছে উপরের লাইনটা। ফিরে আসুন আলী হোসেন নিজ বাসভূমে।

--------------------------------------
যে কথা এ জীবনে রহিয়া গেল মনে
সে কথা আজি যেন বলা যায়।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রিয়াজ উদ্দীন এর ছবি

একজন মানুষ হিসাবে যে আপনি সোচ্চার হচ্ছেন এটা থেকে ভবিষ্যত নিয়ে আশা জাগে। বিশ্বের বড় বড় দেশগুলো নাকি অন্য দেশে এম্বেসি বানায় তাদের ক্ষমতা বিস্তার করতে আমাদের গুলার কি কাজ? এতযে হাতিঘোড়া করে সরকার এই ব্যপারগুলা ঠিক হয়না কেন? যেই কাজটা আদম ব্যপারিরা করে সেখানে সরকারের ফরমাল প্রতিষ্ঠান করলে অসুবিধা কি? তারা পয়সা নিয়েই সার্ভিস দিক। কিন্তু আদম ব্যপারিদের লোভের হাতে এই ভাবে এই হার ভাংগা খাটুনি করা লোকেদের আর তাদের পরিবারদের ভবিষ্যতকে ছেড়ে দেবার মানে কি? দেশে যে সরকার আছে সেটা কি দেখে বোঝা যাবে? মাথায় আসে না।

একবার গালফে করে দেশে যাচ্ছি। যাবার পথে এক ঢাকামুখি যাত্রীর সাথে কথা বলছিলাম। তার দুঃখের কথা বলছিল। আদম ব্যবসায়ী তাকে সুইডেন পাঠাবে বলে পাঠিয়েছিল সুদান। কাগজ পত্র সব ঠিকি আছে কিন্তু ভাওতা বাজি কেমন করলে দেখেন! শেষমেশ সেখানে কোন সুবিধা না করতে পেরে দেশে ফেরত আর বিমানে বিমান বালাদের হাতে লাঞ্ছনা অপমান। তা তাদের ইংরেজি ধমক ধামক বুঝতে না পেরে সে দাঁত কেলিয়ে হাসতে লাগল। ভাগ্যিস বেচারার ইংরেজি জানা ছিল না।
আলী হোসেনের জন্য মনটা খুবই খারাপ হল। এই আলী হোসেনরা হচ্ছে দেশের সবচেয়ে ভাল ছেলেরা। জীবন বাজি রেখে কেবল পরিবারের মূখে হাসি ফোটানর জন্য জানের বাজি রাখতে পারে কারা? এই আলী হোসেনেরাই। কিন্তু আমাদের ভাগ্য এমনই খারাপ এরা লাশ হয়েও বাড়ি ফিরতে পারছেনা। আপনার চেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই মামুন ভাই। হয়ত কোনদিন অবস্থার উন্নতি হবে। সেই আশায় থাকি।

নৈষাদ এর ছবি

...অথচ এই যে বৈশ্বিক মন্দার মধ্যেও আমাদের অর্থনীতি মাথা তুলে দাঁড়িয়ে ছিল, আমার দৃষ্টিতে তাতে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন আমাদের প্রবাসী ভাইরা। যতই চেচামেচি হোক না কেন, বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব আমাদের গায়ে লাগেনি, লেগেছিল এই প্রবাসীদের গায়ে, অথচ গত বছর প্রবাসীদের পাঠানো রেমিন্টেন্স বেড়েছে আগের বছরের তুলনায়...।

ধন্যবাদ আপনাকে...।

বর্ষা এর ছবি

দীর্ঘশ্বাস।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

********************************************************
আমার লেখায় বানান এবং বিরাম চিহ্নের সন্নিবেশনের ভুল থাকলে দয়া করে ধরিয়ে দিন।

অনিকেত এর ছবি

বস,
লেখাটা একেবারে কাঁপিয়ে দিয়ে গেল।

এক উদিত দুঃখের দেশে জন্ম যাদের, তাদের জীবনাবসান হবে মৃত্যুপুরে, এই তো হবার কথা, এই তো হয়---
আর কিছু বলবার নেই, বস।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

সরকারের আরো অনেক কাম আছে। যেমন ধরেন এয়ারপোর্ট-টা কি শেখের নামে হইবো না জিয়ার নামে? এইটা একটা বড় সিদ্ধান্ত অবশ্যই। সেই এয়ারপোর্ট দিয়া কয়টা আলী হোসেন গেলো আর কয়টা ফিরলো (বা ফিরলো না) - এই সব হিসাব করার টাইম আছে, কন?
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

সাইফ তাহসিন এর ছবি

চলুক
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদ্বপি গরীয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

জুয়েইরিযাহ মউ এর ছবি

এমন অনেক আলী হোসেন মরে পড়ে আছে মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ডের জঙ্গলে, আরবের মরুতে বা ভূমধ্য সাগরের অথৈ জলে।

ঠিক তাই।
কদিন আগে এ বিষয়ক একটি রিপোর্ট দেখেছিলাম কোন চ্যানেলে যেন, ওখানেও এসব কথা উঠে এসেছে।
কিন্তু স্থায়ী সমাধান পাওয়া যায় না।

-------------------------------------------------------
জানতে হলে পথেই এসো, গৃহী হয়ে কে কবে কি পেয়েছে বলো....


-----------------------------------------------------------------------------------------------------

" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি

রেনেট এর ছবি

কিচ্ছু বলার নেই।

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দুঃখিত আলী হোসেন

অতিথি লেখক এর ছবি

সাগরে কিংবা মরুভূমিতে আমাদের অনেক ভাই লীন হয়েছেন,পত্রিকায় খবর ছাপা হয়েছে,মাননীয় মন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করেছেন,আমরা আহত হয়েছি,ব্যাস,এই পর্যন্তই! আমরা যে কাঁদায় বাস করি, তা কাঁদাই থেকে যায়,শুদ্ধতা আমাদের জীবনে আসে না কখনও। আমাদের আরও কত মা চোখের জলে ভাসেন......আমরা আবারো মর্মাহত হই,পরিস্থিতি তবু পাল্টায় না,মন্ত্রীদের নির্লজ্জ,নির্লিপ্ত আচরণে নিজেই লজ্জা পেয়ে যাই। হায়! রাজা রানী পাল্টায়,তবু আমাদের অবস্থা পালটায় না!

-স্নিগ্ধা করবী

দ্রোহী এর ছবি

কিছুই বলার নেই।

দুর্দান্ত এর ছবি

মর্মান্তিক। আলী হোসেনের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
---
যেখানে কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, সেখানে বলতে হয় তাইপেই এর বাংলাদেশীরা নিজেরাই অনেকদুর কাজ এগিয়ে নিয়েছেন। কষ্টের মধ্যেও তাদের এই কাজটুকু ভাল লেগেছে।

মৃত্তিকা এর ছবি

সত্যিই মর্মান্তিক..........
তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি।

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

যেখানে রাষ্ট্র কিছু করতে অক্ষম, সেখানে আমাদের ব্যক্তিরাই এগিয়ে আসেন। এজন্য আমরা এখনও টিকে আছি।
হওয়ার কথা ছিল উল্টো।
পোড়ার দেশে এমনই হয়।

রেশনুভা এর ছবি

মনটা খারাপ হয়ে গেল ভাইয়া।

কীর্তিনাশা এর ছবি

.............

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

...............................

রাফি এর ছবি

---------------------------------------

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

মূলত পাঠক এর ছবি

দুঃখজনক!

শেখ নজরুল এর ছবি

আমিও আপনার মতো দুঃখপ্রকাশ করছি। ধন্যবাদ লেখার জন্য।
শেখ নজরুল

শেখ নজরুল

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

.................. .................. ..................

_________________________________________

সেরিওজা

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

দাস প্রথা উঠে যায় নাই। আমাদের তৃতীয় বিশ্বের গরীব লোকেরা নয়া কর্পোরেট রাজ্যের ক্রীতদাস। আমরা সেটা মেনে নিয়ে বিগম্যাকে কামড় বসাই।

আপনাকে লেখাটার জন্য সেলাম।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

কষ্ট লাগলো খুব লেখাটা পড়ে...

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

লেখাটা না পড়লেই ভালো করতাম। নিরাময়হীন কষ্টে ভুগতে ইচ্ছে করেনা। মন খারাপ
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

তানভীর এর ছবি

মনে পড়ে বেশ কিছুকাল আগে মাদক চোরাচালানের দায়ে বাংলাদেশের কারাগারে দণ্ডপ্রাপ্ত এক মার্কিন তরুণীকে আম্রিকান সরকার জেল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিল। সেটা যতটা না ছিল আম্রিকান সরকারের অন্য দেশের আইন-কানুনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন, তার চেয়ে বেশি ছিল নিজ দেশের নাগরিকের প্রতি কর্তব্যবোধ। আমরা তো আমাদের মধ্যে প্রবাসী কেউ চোর-ডাকাত থাকলে তার প্রতি অমন করে রাষ্ট্রের কর্তব্য পালন করতে বলছি না; অতটুকু আশাও করি না। কিন্তু নূন্যতম চক্ষুলজ্জা থাকলে যতটুকু করা উচিত, সেটুকু পালনেও সরকারগুলোর এত অনীহা কেন? অবশ্য চক্ষুলজ্জা থাকলে কেউ কি আর ম্যাঙ্গো পিপলের খরচে আত্মীয়-স্বজন-লটবহর নিয়ে বিদেশ সফর করে!

নাহার মনিকা এর ছবি

আমরা এ ধরনের খবর শুনি, মন খারাপ করি, কিন্তু তেমন কোন উদ্যোগ নিই না । আপনি নিজে উদ্যোগ নিয়ে যে কাজ করছেন তাকে অসাধারণ বললে নিছক ভদ্রতা করা হবে।
আপনার কাজ ঝঞ্ঝাটহীন শেষ হোক, আলী হোসেন দেশের মাটিতে ফিরে যাক এই কামনা।

অতিথি লেখক এর ছবি

মর্মান্তিক এসব ঘটনা দেখে/শোনে এখন আর দুঃখ অনুভব করিনা, বরফ হয়ে যাচ্ছি দিনকে দিন। সৌদি আরবে বাংলাদেশ এম্বেসী, কূটনৈতিক সম্পর্ক, বিশাল বাঙালী কমিউনিটি থাকা স্বত্তেও কোন কারনে কেও মারা গেলে লাশ পাঠানোর প্রক্রিয়া দেখে মাঝে মাঝে শীহরিত হই। আর যেখানে এসবের কিছুই নেই সেখানে কী হবে, তা সহজেই অনুমেয়।
আপনাকে/আপনাদের(যারা এই উদ্দ্যোগের সাখে আছেন) সেলুট।
- বুদ্ধু

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

উদ্ধৃতি :
এই আলী হোসেনরাই মাসে মাসে ঘাম-রক্ত ঝরানো রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়ে অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল রাখছে। সরকার নির্লজ্জের মতো তাদের টাকায় সংসার চালায়, অথচ তাদের স্বার্থ সংরক্ষনের কোন উদ্যোগই নেয়না।

'নির্লজ্জ' শব্দটাই লজ্জা পাচ্ছে এখানে।
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

তিথীডোর এর ছবি

কিচ্ছু বলার নেই!!!

--------------------------------------------------
"সুন্দরের হাত থেকে ভিক্ষা নিতে বসেছে হৃদয়/
নদীতীরে, বৃক্ষমূলে, হেমন্তের পাতাঝরা ঘাসে..."

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

Alimul Razi এর ছবি

Lekhata pore khub e kharap laglo. lekhok ke onek donnobad apnar sundor manosikotar jonno.

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

এই মন্তবটি আপনি Ctrl+Alt + P চেপে ফোনেটিক বাংলায় লিখতে পারতেন। সচলায়তনে রোমান অক্ষরে বাংলা লেখা নিরুৎসাহিত করা হয়।

মামুন হক এর ছবি

সাহায্য এবং সমবেদনার জন্য সবাইকে অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা। কাজ এখনো শেষ হয়নি। তবে আগাচ্ছে। আলী হোসেনের মরদেহ দেশে ঠিকঠাক ভাবে পৌছালে আপনাদের জানাবো।

তারানা_শব্দ এর ছবি

আলী হোসেন,দুঃখিত- এটুকু বলার মত সাহস নেই । মন খারাপ

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

দুঃখ হচ্ছে! হতচ্ছাড়া এ দেশটার মানুষের মরেও শান্তি নাই!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

মণিকা রশিদ এর ছবি

এরকম অনেক ঘটনা প্রবাস জীবনে অনেক শুনি,মন খারাপ হয়, কিন্তু আসলেই তেমন সাহায্য কাউকে করে উঠতে পারিনি। সেই দায় নিয়ে অপরাধবোধে ভুগি। আপনি যে নিজে দায়িত্ব নিয়ে সাহায্যে এগিয়ে গিয়েছেন, সম্মানবোধ সেজন্যে বাড়লো।
___________________________
শান্তিও যদি সিংহের মত গর্জায়, তাকে ডরাই।
--নরেশ গুহ

----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand

অতিথি লেখক এর ছবি

উদ্ধৃতিঃ
'জীবিত অবস্থায় তাকে কেউ চায়নি, না নিজদেশ, না পরদেশ, কিন্তু মৃত্যুর পর স্বাভাবিক সৎকারের অধিকার থেকে তো সে বঞ্চিত হতে পারেনা।'

খুব খারাপ লাগছে লেখটি পড়ে।

শেখ আমিনুল ইসলাম

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

.................................

তবু তো আলী হোসেনের লাশের ভাগ্যে হ'লেও আপনি এবং আপনার মতো আরো কিছু মানুষের ওইটুকু তত্পরতা জুটেছে, আরো কতো হাসান হোসেনের ভাগ্যে তো সেটাও মেলে না। মন খারাপ

___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

........................
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

এই দুঃসংবাদটা পড়ে শুধু আপসোস করতে পারি, আমরাও কিছু করতে পারি না। আমাদের টাকায় মন্ত্রী এমপি রা গাড়ি চালায় আর আমাদের কথা বেমালুম ভুলে যায়। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় ওরা মানুষ না জানোয়ার । বিদেশি কর্মরত যে ভাইদের টাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ সর্বোচ্চ হয়, সেই ভাইদের মৃতদেহ হিমাগারে পরে থাকে, এর যে দঃখজনক আর কি হতে পারে? দেশে যখন টাকা আসে তখন কী লেখা থাকে কোনটা বৈধ আর অবৈধ অভিবাসী ভাইয়ের পাঠানো? যদি লেখা না থাকে তাহলে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জনগণের টাকায় বিদেশ ঘুরে কি করেন? আলী হোসেন ভাই, আপনার জন্য সমবেদনা আছে কিন্তু আমাদের ক্ষমতা নেই। আর যাদের ক্ষমতা আছে তাদের সমবেদনা নাই, তাঁরা যে মানুষ না মন্ত্রী, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।

কামরুজ্জামান স্বাধীন

অকুতোভয় বিপ্লবী এর ছবি

তীব্রভাবে সহমত, মন খারাপ করা আর সমবেদনা জানানো ছাড়া আমরা আর কী-ই বা করতে পারি? মন খারাপ

---------------------------------------------------
ইটের পরে ইট সাজিয়ে বানাই প্রাণের কবিতা ...

------------------------------------
সময় এসেছে চল ধরি মোরা হাল,
শক্ত কৃপাণে তুলি বরাহের ছাল।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

মনটা খারাপ হয়ে গেল।

==============================
ঢাকার মৌন ঘ্রাণে বকুলফুলের নাভি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ

বোহেমিয়ান এর ছবি

সর্বশেষ খবরে খুব আনন্দিত হইছি ।
আগে শেষ পোস্ট পড়ছিলাম তার পর এইটা পড়লাম মন খারাপ

এক আলী হোসেন না হয় বাড়ি গেল, বাকিরা? মন খারাপ
__________________________
হৃদয় আমার সুকান্তময়
আচরণে নাজরুলিক !
নাম বলি বোহেমিয়ান
অদ্ভুতুড়ে ভাবগতিক !

_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।