পরাজিত নবাব সিরাজউদ্দৌলা - পাঁচ

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: শনি, ১৯/০৫/২০১২ - ১:৩৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কোলকাতা জয় করে নবাব মুর্শিদাবাদ ফিরে গেছেন। ইংরেজ বাহিনীর ক্ষুদ্র অংশ ফুলতা গ্রামে দুর্দশার মধ্যে আছে। বাংলা পতনের খবর অন্য বড় ইংরেজ কুঠি মাদ্রাজে এখনো যায়নি। এরকম অবস্থায় শেষ হয়েছিল গত পর্ব। আজ ইংরেজ মাদ্রাজ থেকে জাহাজ পাঠিয়ে কোলকাতা পুনর্দখল করবে, হুগলীতে অন্যান্য ইয়োরোপীয় জাতের সাথে কাইজা লাগাবে আর নবাব ফৌজের হাতে মারা যাবেন কাজিন শওকত জং। এছাড়া বাংলা অ্যাফেয়ারে প্রথমবারের মত নোংরা নাকটি গলাবেন কর্নেল রবার্ট ক্লাইভ।

অপদার্থ শওকত জং কে নিয়ে আলোচনার কিছু নাই, তার মৃত্যুতে কারুর তেমন ক্ষতিবৃদ্ধি হয়নাই। যদিও ইংরেজ বলে থাকে শওকত জং কে লোকে সিরাজের থেকে বেশি পছন্দ করত ইত্যাদি, তা তারা বলে সিরাজের প্রতি অবজ্ঞা থেকেই। সিরাজ শওকত কোনটাকেই লোকে পছন্দ করতোনা, আর লোকের পছন্দে তাদের কিছু আসত যেতোও না। চোখ ফিরাই ক্লাইভের দিকে, অপদার্থ অপেক্ষা বুদ্ধিমান শয়তানের আলোচনা উত্তম।

ক্লাইভ ছিলেন খুবই বাজে ছাত্র, তিনবার তাকে এক্সপেল করা হয় স্কুল থেকে। প্রাইভেট স্কুলে পড়তেন তিনি। বুদ্ধি তার ভালোই ছিল, কিন্তু তার ব্যবহার ছিল খারাপ। যন্ত্রনায় অতীষ্ঠ হয়ে উকিল পিতা তাকে ১৭ বছর বয়সে কোম্পানীর কেরাণী হিসেবে ভারতগামী জাহাজে উঠিয়ে দেন। ঐ জাহাজ ব্রাজিলে থেমেছিল, যেখানে পর্তুগীজেরা জাহাজ নয় মাস আটকে রাখে। তখন ক্লাইভ ঐ ফাঁকে পর্তুগীজ শিখে ফেলেন, ভারতের বিরাট এলাকাজুড়ে তখন পর্তুগীজ ভাষার চল। যাই হোক, ১৭৪৩ সালে ক্লাইভ মাদ্রাজ পৌঁছান। তিন বছর পর অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্যে যুদ্ধ লাগলে ফরাসী ইংরেজ দুই পক্ষ নেয়, আর ফরাসীরা মাদ্রাজ দখল করে নেয়। তখন ক্লাইভ পালিয়ে বিশ মাইল দূরে সেন্ট ডেভিড দূর্গে গিয়ে আর্মিতে নাম লিখান। পরে ১৭৫১ সালে কর্ণাটকের নবাবী নিয়ে যখন ইংরেজ ফরাসী যুদ্ধ লাগে, ক্লাইভ তখন ক্যাপ্টেন। যুদ্ধজয় করে ইংরেজের চোখে তিনি হিরো। ইংল্যান্ডে ফিরে এমপি হবার চেষ্টা দিয়ে ব্যর্থ হন, তারপরে ল্যুটেনেন্ট কর্নেল পদে প্রমোশন পেয়ে মাদ্রাজ ফিরেন ক্লাইভ ১৭৫৬ সালে। তারপরে কোলকাতা পুনরুদ্ধারের অভিযানের খবর পেয়ে তার নেতৃত্বে ইংরেজফৌজ রওনা দেয়।

আরেক ইন্টারেস্টিং চরিত্র সিরাজের সেনাপতি মানিকচাঁদ। কোলকাতা নগরীকে আলিনগর নাম দিয়ে তার গভর্নর হিসেবে মানিকচাঁদকে নিয়োগ দেন সিরাজ। পরে যখন ক্লাইভ জাহাজ নিয়ে কোলকাতার কাছে বজবজ আক্রমণ করে তখন আধঘন্টা ফাইট দিয়ে মানিকচাঁদ চম্পট দেয়। ব্যাপক বীর সেনাপতি তাকে বলা যাচ্ছেনা। কলিকাতা কল্পলতা বইয়ে রঙ্গলাল সেন তাকে উল্লেখ করছেন “ভীরু স্বভাব মানিকচাঁদ” নামে। তিনি আরও বলেন, “এখানে বাঙ্গালী শাসন কর্তা মানিকচাঁদের বিষয়ে এই মাত্র বক্তব্য যে, সে ব্যক্তি পদস্থ হইলে যদিও অন্যূন ৫০,০০০ সহস্র এদেশীয় লোক পুনরায় কলিকাতায় আসিয়া বসতি করিয়াছিল কিন্তু তাহার নির্দয়তা ও অপহারকতার বিষয় বিখ্যাত থাকায় ধনীদিগের মদহ্যে প্রায় কেহ নগরে প্রত্যাগমন করেন নাই।” গুড পয়েন্ট, যদি ভালো শাসকই হবে তাহলে ধনীলোকে ফিরে আসলো না কেন? এছাড়া পরে মানিকচাঁদ ও ক্লাইভের মধ্যে যে পত্রবিনিময় হয় তাতে মানিকচাঁদ নিজেকে ইংরেজদের একজন বন্ধু বলে পরিচয় দেয়। অবশ্য চিঠিচাপাটির কথা ভিন্ন, ইংরেজেরও মেলা চিঠি পাওয়া যাবে যেখানে তারা নবাবের অনুগত বলে দাবী করছে। চিঠিপত্রে মিছে কথার অভাব নাই। তবে মানিকচাঁদ লোকটি মেরুদন্ডহীন ছিলেন ঠিকই, নবাবের উচিৎ ছিল আরও শক্ত লোক কোলকাতায় বসানো। লোক চিনার ক্ষমতা নবাবের ছিলও না।

এছাড়া এই সময়ের গল্প পাঠের সময় মাথায় ইয়োরোপের সাত বছরব্যাপী যুদ্ধের ব্যাপারটা মাথায় রাখা জরুরী। ইংরেজ নবাবকে টার্গেট করেছে ঠিক আছে, কিন্তু ফরাসীর সাথেও তার তখন স্নায়ুযুদ্ধ চলছিল। ক্লাইভ ফরাসীদের গুঁড়িয়ে দেবার জন্য এক পায়ে খাড়া ছিলেন, কিন্তু কোম্পানী হেডকোয়ার্টার থেকে গ্রীন সিগনাল না আসা পর্যন্ত চান্দেরনগর আক্রমণ করা যাচ্ছিল না। তাই আজ আমরা দেখব অ্যাডমিরাল ওয়াটসন হুগলীর তীরে গ্রাম গঞ্জ জ্বালিয়ে দিচ্ছেন ঠিকই কিন্তু চান্দেরনগর দখল করছেন না। চান্দেরনগরের পতন হবে ক্লাইভের হাতে, সে পরের পর্বের কথা। আসুন পড়ি অনুবাদ।

…................................................................................

(চতুর্থ পর্বের পর)

কোলকাতা শহর আর ফোর্ট উইলিয়ামের নয়া শাসক সিরাজউদ্দৌলা। পলাতক গভর্নর ড্রেক সায়েবকে শাস্তি দেবার জন্যে তিনি আস্ত গভর্নর হাউস গুঁড়িয়ে দিয়ে মসজিদ খাড়া করিয়ে দেন আর শহরের নাম পাল্টে হয় আলীনগর। নিজস্ব অফিসারদের চরম বিরক্তির প্রকাশ ঘটিয়ে তিনি তার অন্যতম প্রিয়লোক মানিকচাঁদকে গভর্নর বানিয়ে দেন। মানিকচাঁদ নামক হিন্দু ভদ্রলোকটি বর্ধমানের রাজার দেওয়ান ছিলেন, গঙ্গার পাড়ে মাইল কা মাইল জমি ছিল তার। শোনা যায় উড়িষ্যায় তিনি অসাধারন কাপুরুষতার পরিচয় দিয়েছিলেন, তাই এই লোকের এহেন প্রমোশন অন্যান্য জেনারেলদের মনে ব্যাপক চাঞ্চল্যের জন্ম দেয়। সবসময়ই দেখা গেছে বাংলার নবাবেরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিজস্ব লোক, বিশেষত হিন্দু লোক বসিয়ে দেয় যেন আবার কেউ বিদ্রোহ না করে বসে। তবে এই কথাও ঠিক যে ইংরেজ আক্রমণ ঠেকিয়ে রাখার জন্যে শক্ত কলজেওয়ালা লোকই দরকার ছিল কোলকাতার গভর্নর পদে, কিন্তু সিরাজ এত অল্পে সাফল্য পেয়েছিলেন যে ইয়োরোপীয়রা যে আবার আক্রমণ করতে পারে তার সেই ভয় ছিলই না।

এছাড়া ইংরেজ নবাবকে মোটামুটি এরকম ধারণা দেয় যে তারা ফুলতায় অপেক্ষা করছে মাদ্রাজ ফিরে যাবার জন্যে, একটু ভালো আবহাওয়া দরকার এই আর কি। এছাড়া রাজা মানিকচাঁদ, যিনি ফুলতার বেশিরভাগ জমির মালিক, বেশ তৃপ্তই ছিলেন ইংরেজদের আগমনের ফলে তার লোকেদের হাতে পয়সাকড়ির আগমন হয় সেজন্যে।

প্রথম প্রথম ফরাসী ওলন্দাজ ভারি মনখারাপ করেছিল যে তাদের ইয়োরোপীয় নামের অপমান ইত্যাদি দেখে, কিন্তু একই সাথে তা ছিল তাদের এক নম্বর বাণিজ্যিক প্রতিদ্বন্দ্বীর পতন। যদিও তারা ইংরেজ রেফিউজিদের আদরের সাথেই জায়গা দেয়, তবু তাদের মাথায় ছিল ইংরেজ বিদেয় হলে তাদেরই রমরমা। তাদের ভুল ভাঙতে দেরি হয়নি।

নবাব ২৪ তারিখ কোলকাতা ছেড়ে ২৫ তারিখ হুগলী পৌঁছান। পুরো শহর ঘেরাও করে তিনি বিসডম আর রেনঁ সাহেবকে চান্দেরনগরে তলব করেন, আর দূর্গ পতাকা ইত্যাদি ধ্বংসের জন্যে জরিমানা চার্জ করা হয়। ওলন্দাজদের কাছে দাবী করা হয় বিশ লাখ রূপী, তাই শুনে ওলন্দাজ দেশ ছেড়ে চলে যাবার হুমকি দিলে পরে খাজা ওয়াজিদের মধ্যস্থতায় তা সাড়ে চার লাখ রুপীতে নেমে আসে। এই সাড়ে চার লাখ রুপী নবাবের নজরানা আর খাজা ওয়াজিদের কমিশনসুদ্ধাই ধরা হয়েছিল। শেঠেরা এই টাকা নামমাত্র সুদে বাৎসরিক মাত্র নয় শতাংশ হারে ধার দেয়।

নানাবিধ মুলামুলির পর ফরাসীরা পরিশোধ করে সারে তিন লাখ রূপী, আর আর পিচ্চি ইয়োরোপীয় কোম্পানীগুলোও আনুপাতিক হারে জরিমানা দেয়। ড্যানিশরা দেয় ২৫ হাজার রূপী, অস্টেন্ডরা দেয় ৫ হাজার করে। দুর্ভাগ্যবশত ফরাসীরা কয়দিন আগেই দেশ থেকে বড় অঙ্কের অর্থ পায় বাণিজ্যের জন্যে, নবাব তা পুরাটাই হজম করেন।

বলা হয়ে থাকে যে নবাব যদি সত্যই তার নানার পলিসি ফের চালু করতে চাইতেন, অর্থাৎ ইংরেজ ফরাসী ওলন্দাজকে আর্মানীদের পর্যায়ে নামিয়ে আনা, তাহলে তিনি সেই মুহুর্তেই চান্দেরনগর চিনসুরার সকল দূর্গ গুঁড়িয়ে পাউডার বানিয়ে ফেলতেন। কিন্তু তা হয়নি। হয় তার এরকম আদৌ কোন ইচ্ছে ছিলনা, অথবা অস্থিরচিত্ত মানুষটি তার মত পরিবর্তন করেছিলেন। সম্ভবত এতদিনে তিনি এ ও বুঝে থাকবেন যে তার কানে যে দুর্ধর্ষ দূর্গটুর্গের খবর গিয়েছিল তা নিতান্তই জাল, এগুলো তেমন পোক্ত নয়। তাছাড়া চান্দেরনগর চিনসুরা হাতের কাছেই তো রইল, দরকারমত এগুলোও তিনি দখল নিয়ে নিতে পারবেন, তখন দূর্গ থাকলে তারই লাভ। অন্যান্য কারন হতে পারে উড়ো খবর ভেসে আসছিল যে মুর্শিদাবাদ আক্রান্ত হতে পারে, সম্রাটের উজির নাকি ঐ ধান্দা করছেন। এছাড়া মুর্শিদাবাদ যাওয়া এমনিতেও জরুরী পূর্ণিয়ার নবাবকে টাইটে রাখতে হলে। প্রথমটা নিছকই গুজব, কিন্তু পূর্ণিয়ার ব্যাপারটা সঠিক ছিল। ঝুম বৃষ্টির কারনে পূর্ণিয়ায় কিছু করাও যাচ্ছিল না।

ইংরেজ বন্দী মেসার্স, কলেট আর ওয়াটস কে ছেড়ে দেয়া হল, তারা নবাবের অফিসারদের লাথিগুঁতা ছেড়ে ফরাসী ক্যাম্পে এসে যারপরনাই আনন্দিত। তাদের সাথে চিঠি দিয়ে দেন নবাব রেনঁকে যেন এদের মাদ্রাজ পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর তিনি মুর্শিদাবাদের পথ ধরেন। ১১ই জুলাই মহা ধুমধামের সহিত বিজয়ী নবাব রাজধানীতে ঢোকেন, আর দিল্লীর মহান সম্রাটকে পত্রে লিখেন, “তৈমুরলং এর পরে হিন্দুস্তানের সর্বাপেক্ষা মহিমান্বিত বিজয়টি অর্জিত হয়েছে।”

নবাব ইংরেজদের মাল এবার কিনতে আহবান করলেন ফরাসী ওলন্দাজদের, কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভেবে তারা তা অস্বীকার করল। বিসডম সাহেব এমনকি হুকুম জারি করলেন যেন ব্যক্তিগতভাবেই কোন ওলন্দাজ এসব মাল না কিনে। ইংরেজের সাথে কাইজায় কে যেতে চায়।

এদিকে শওকত জং গোপনে দিল্লীতে কাঠি নাড়ছিলেন, শাহী উজিরের কাছ থেকে বাংলার নবাবী ফরমানও একটা বের করে ফেলেন তিনি। লোকে তাকে পছন্দই করত, কিন্তু দরবারের গুলাম হুসেন খাঁ সাহেবের মতে এই লোকটি আস্ত উন্মাদ। বেশিরভাগ সময় তিনি নেশার ঘোরে থাকতেন, আর বলে বেড়াতেন খালি বাংলা বিজয় নয় তিনি দিল্লীতেও নয়া সম্রাট বসাবেন আর একবারে কান্দাহার খোরাসান পর্যন্ত বিজয় করতে যাবেন। তিনি বলতেন, আমি উত্তরেই বাসা গাড়ব কারন বাংলার আবহাওয়া আমার শরীরে জুইত হয়না তেমন।

এই ব্যাপক প্ল্যানের অংশ হিসেবে পুরান অফিসারদের ছাঁটাই করে দেওয়া হল, তার প্রিয় হাবিব বেগের হস্তক্ষেপে যদিও পরে মিটমাট হয় তবু শওকত আর অফিসারদের তিক্ত সম্পর্ক থেকেই যায়। লালা নামের তার এক হিন্দু অফিসার পালিয়ে মুর্শিদাবাদ যায়, আর তার কাছে এসব খবর পেয়ে চিন্তায় পড়েন সিরাজ। রাসবিহারী নামে এক দূত পাঠানো হয়, যাকে শওকত জং রূঢ়ভাবে গ্রহন করেন আর মৌখিক বার্তা পাঠান যে তাকে বাংলার সুবাদার মেনে নিলে তার প্রাণভিক্ষা করা হবে আর তাকে ঢাকায় নির্বাসনের সুযোগ দেওয়া হবে।

তদ্দন্ডেই যুদ্ধ বাধিয়ে দেবার উদ্যোগ নিলেন সিরাজউদ্দৌলা, অক্টোবরের প্রথম দিকে সিপাই জড়ো করা শুরু হয়। তবে কিছু ঘটনা ব্যাপারটাকে পেঁচিয়ে তোলে। বলা হয়ে থাকে, এই সময় তিনি নিজের দরবারে সর্বসমক্ষে জগতশেঠকে চড় মারেন, তারপর কারারুদ্ধ করে রাখেন। মীর জাফর ও অন্যান্য অফিসারেরা এর হিল্লে হওয়া পর্যন্ত সৈন্যযাত্রায় অস্বীকৃতি জানান। জগতশেঠকে ছেড়ে দেওয়া হয়, কিন্তু অফিসারেরা উত্তেজিতই ছিল।

রাজমহল থেকে অল্প দূরেই দুই বাহিনীর মোলাকাত হয়। ১৬ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হয়, শওকত জং ময়দানে কাজিনকে দেখে তেড়ে আসে আর ঐখানেই তার মৃত্যু হয়। সকলে সারেন্ডার করে, পুর্ণিয়া হেরে যায়। দ্বীন মুহাম্মদ আর গুলাম শা, দুই অফিসার যারা শওকত জং এর হত্যার দাবীদার ছিল, তাদের দুইজনকেই বহিষ্কার করা হয়। সিরাজের ইচ্ছা ছিল তাকে জীবিত ধরে তার সাথে কথা বলা আর সম্ভব হলে তার পাশে আনা।

সিরাজ আসলে ময়দান থেকে অল্প দূরে রয়ে গিয়েছিল, আর তার মত করে সাজিয়ে পাঠানো হয় মীর জাফরের ছেলে মীরনকে। একে দেখেই শওকত জং তেড়ে গিয়ে মারা যায়। পুনরায় বিজয়ী নবাব ঢাকবাদ্য পিটিয়ে মুর্শিদাবাদ গমন করেন, সেখানে অপেক্ষা করছিল বাদশাহী ফরমান। বাংলার নবাবীর কনফার্মেশন। বলা হয়ে থাকে এতে তার দুই কোটি দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার রূপী খরচা হয়। সিরাজ এবার তার পয়সাকড়ির হিসেব নেন, দেখা যায় মণিমুক্তা ছাড়াই তার পকেটে ৬৮ কোটি রূপী।

এদিকে বাংলায় যুদ্ধবিগ্রহের খবর ফুলতা থেকে মাদ্রাজ কাউন্সিলে গেলে প্রথমে ছোট একটি যোদ্ধাদল মেজর কিলপ্যাট্রিকের নেতৃত্বে পাঠানো হয়। তারা বেদম অসুখে পড়ে আর ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি কর্নেল অ্যাডলারক্রনকে চিঠি দেন যে দুই তৃতীয়াংশ সিপাই ই খারিজ হয়ে গেছে। মাদ্রাজ কাউন্সিল নানান আলোচনার পরে ঠিক করল যে অবস্থা সিরিয়াস, পুরো বাংলা নয় আপাতত ফোকাস করি কোলকাতা পুনরুদ্ধারে। অ্যাডমিরাল ওয়াটসন বললেন সেপ্টেম্বরের আগে সৈন্য পাঠানো ঠিক হবেনা, বিষ্টিবাদলা কমুক। এই আবহাওয়ায় লোক পাঠালে পথেই অসুস্থ হয়ে পড়বে তিনভাগের একভাগ লোক। ২৪ তারিখ কাউন্সিলে দীর্ঘ বিরতির পর উদয় হন কর্নেল ক্লাইভ, ব্যাপারস্যাপার দেখে তদ্দন্ডেই তিনি বাংলা অভিযানে কমান্ডার হতে ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। ঠিক হল নৌপথে নেতৃত্ব দেবেন অ্যাডমিরাল ওয়াটসন আর স্থলপথে ক্লাইভ।

১৬ অক্টোবর মাদ্রাজ ছেড়ে বাংলার পথ ধরল ৫ রাজকীয় রণতরী কেন্ট, কাম্বারল্যান্ড, টাইগার, স্যালসব্যুরি আর ব্রিজওয়াটার, সাথে কোম্পানীর দুই রণতরী ওয়ালপোল আর মার্লবরো। পরে যোগ দেয় আরো তিনটে জাহাজ। লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে ওয়াটসন ফুলতা পৌঁছেন ১৫ ডিসেম্বর, সব জাহাজ তখনও আসেনি। বিশেষতঃ কাম্বারল্যান্ড আর মার্লবরো মাঝপথে আটকে যায়, ঐতে ছিল ২৫০ ইয়োরোপীয় আর ৪৩০ সিপাই ছাড়াও অধিকাংশ গোলাবারুদ।

ওয়াটসন ওলন্দাজদের কাছে জাহাজ পাইলট চেয়ে পাঠান। তার নিজের হাতে জাহাজ চালকের অভাব ছিলনা, এই অনুরোধের কারন সম্ভবত হুগলী নদীর চরিত্র। এই নদীর চ্যানেল এত ঘড়ি ঘড়ি পালটায় যে একে নিয়মিত ওয়াচ করা জরুরী। ওলন্দাজের জাহাজ পুরোটা সময়ই বন্দরে বাঁধা ছিল, তাই তারা সে কাজটি রুটিন করেই করত। বিসডম সায়েব কিন্তু ফট করে ইংরেজের হয়ে ফেভার করে নবাবকে চটাতে চাইলেন না, তিনি ইনিয়ে ইনিয়ে কইলেন তার সাতটার মধ্যে পাঁচটা পাইলটই ভারি অসুস্থ তাই অনুরোধ রক্ষা করা গেলনা।

যাইহোক ক্লিয়ার চ্যানেলের সংকেত পেয়ে ২৭ তারিখ যাত্রা শুরু হয়, ২৯ তারিখ তারা পৌঁছায় বজবজ। চতুর্দিকে ঝোপজঙ্গল, ঠিকমত দূর্গ দেখা যাচ্ছিলই না। ক্লাইভ শতচেষ্টা করেও শত্রুর গতিবিধি সংক্রান্ত কোন খবরই যোগাড় করতে পারেননি, মাইল দুয়েকের মধ্যেই যে শত্রুর ক্যাম্প তা তিনি জানতেন না। ছোট ছোট স্কাউট টীম নানাদিকে পাঠানো হল, তার নিজের অধীনে ছিল ২৬০ ইয়োরোপীয়ের সিপাইদল। হঠাত তারা আক্রান্ত হল মানিকচাঁদের পাঠানো দুই হাজার সিপাই দ্বারা। আধঘন্টামত চলে যুদ্ধ, গাছপাতা ঝোপজঙ্গলের আড়ালে নবাবী সৈন্য ভালোই ফাইট দিচ্ছিল, পরে ইংরেজ রিইনফোর্সমেন্ট আসাতে তারা পিছু হটে। ইংরেজ হারায় এক অফিসার, নবাবী ফৌজ হারায় চার। স্বয়ং মানিকচাঁদের পাগড়িতে বুলেট বিঁধে যায়।

পরদিন দূর্গ গুঁড়িয়ে দেয়া হয়, আর তারা মার্চ করে এগিয়ে যেতে থাকে। পয়লা জানুয়ারী ১৭৫৭ সালে ইংরেজ ফ্লিট তান্না দূর্গের দিকে এগুতে গেলে সেখানে ভিড়ানো ফরাসী জাহাজ তোপধ্বনি করে স্যালুট জানায়, এতে গুজব রটে ফরাসীরা ইংরেজকে দূর্গ দখলে সহায়তা করে। আসলে আক্রমনের খবর শুনে দূর্গের লোক আগেই পালিয়েছিল, ইংরেজ সেখানে খান চল্লিশ বন্দুক পেয়েছিল শুধু।

২ তারিখ ভোর পাঁচটায় কোম্পানী ফৌজ কোলকাতায় নামে, ওয়াটসনের জাহাজ কেন্ট আর টাইগার ফোর্ট উইলিয়ামের উল্টোদিকে আসে সাড়ে দশটার দিকে, কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফোর্ট উইলিয়াম খালি হয়ে যায় কারন গুজব রটে যে ইংরেজ ফ্লিটে নাকি যুদ্ধবন্দী নেবার জায়গা নেই। কেন্ট থেকে সশস্ত্র নৌকা পাঠানো হয় এই সন্দেহে যে ফরাসী ডিঙ্গিতে করে ইয়োরোপীয়রা পালাচ্ছে। দূর্গের ভিতর উদ্ধার করা হয় একানব্বই বন্দুক আর চারটে কামান।

কোলকাতা নগরী তখন বিধ্বস্ত। দূর্গের বারোটা বেজে গেছে। গভর্নমেন্ট হাউস, ব্যারাক আর ল্যাবরেটরি পুড়ে কয়লা। পূবদিকে নবাবের মসজিদ বানানোর জন্য কিছু এলাকা গুঁড়িয়ে সাফ করে দেয়া। দূর্গের বাইরে গীর্জা, কোম্পানী হাউস, বাংলো ইত্যাদি পুড়ে ছাই। নেটিভপল্লীর অবস্থা আরো গুরুতর, ইংরেজ নবাব দুই ফৌজই দরকারমত পুড়িয়ে দেয় সেসব এলাকা। উমিচাঁদের বাগানবাড়ি অবশ্য অক্ষতই ছিল, তবে সেটাও লুট করা হয়।

এইবার ফরাসীদের দিকে নজর দেওয়া হল, ইয়োরোপের যুদ্ধের গুজব তখন পথে ঘাটে। তারা কাশিমবাজার, ঢাকা আর চান্দেরনগরে ইংরেজদের সাহায্য করলেও সকলেরই বিশ্বাস ছিল ফরাসী আগেও নবাবকে সাহাজ্য করেছে সুযোগ পেলে আবারও করবে। কলকাতার পর্তুগীজেরা ছিল ক্যাথলিক, যুদ্ধের সময় তারা নানান বাজে কাজ করেছিল, আর যুদ্ধ বাধলে তারা ফরাসীর পক্ষই নিত বলে ধারণা করা হয়। কাউন্সিল ঠিক করল ক্যাথলিক ধর্মপ্রচার শহরে নিষিদ্ধ। সকল ক্যাথলিক পাদ্রীকে লাথি দিয়ে বিদেয় করা হল।

আমরা দেখেছি মানিকচাঁদ বজবজের যুদ্ধে মারা পড়তে পড়তে বেঁচে যান। তিনি কোলকাতায় ফিরে আসার বদলে হুগলীর পথ ধরেন যেন নবাবকে একটা খবর দেওয়া যায় যে তিনি যে ইংরেজকে পিটিয়ে তক্তা করেছিলেন এরা ঠিক সেরকম ইংরেজ নয় বলেই বোধ হচ্ছে। বিশেষতঃ বড় বড় জাহাজের টপাটপ বোমাবর্ষনে তিনি বেশ ভয় পান। এত বড় যুদ্ধজাহাজ বাংলায় কেউ চোখেই দেখেনি, ঐ জাহাজ মুর্শিদাবাদ পৌঁছালে বেবাক মুশকিল হয়ে যাবে বলে মনে হয়।

ইংরেজ ফৌজ হুগলীর পথ ধরে, জল ও স্থল উভয় পথে। পথে পড়ে বরানগর, ওলন্দাজ পত্তনি। ইংরেজ আবারও পাইলট চায়, ওলন্দাজ অস্বীকার করলে তাদের কোয়ার্টারমাস্টারকে কানে ধরে পাকড়ে নিয়ে আসা হয় আর পাইলটগিরিতে ঢুকানো হয়। স্থানীয় সওদাগরেরা লুটের ভয়ে মাল এদিক সেদিক পাঠিয়ে দেয়, কেউ গ্রামেগঞ্জে কেউ চিনসুরায়। কেউ কেউ বলে হুগলীর ফৌজদারকে নাকি ওলন্দাজ বন্দুক দিয়ে সাহায্য করে।

৯ তারিখ পথে পড়ে ফরাসী কুঠি চান্দেরনগর। তাদের পাশ দিয়ে যাবার সময় সৌজন্যমূলক তোপধ্বনি করা তো দূরের কথা, তারা স্থানীয় দূর্গের মাইল তিনেক দূরে নেমে লুটপাট অগ্নিসংযোগ লাগিয়ে দিল। দূর্গের আশপাশের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হল, বড়বড় গোলাঘরেও আগুন লাগল। পথে পড়া ছোট বাড়িগুলোও এলোপাতাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হল। কিছু ওলন্দাজ পত্তনিতেও লুটপাট হল এই কারণ দেখিয়ে যে তারা নাকি নবাবকে সাহায্য করেছে। ১৯ তারিখ নবাবের সকল দূর্গ ধ্বংস করে ইংরেজ কোলকাতার পথ ধরে, পথে দুই পাড়ের জমিজমায় নিত্যই গোলা ফেলা হয়। খালি ফরাসী এলাকাগুলো একটু ছাড় দেয়া হয়েছিল।

কলকাতা আর হুগলী আক্রমনের খবরে হুগলীর অল্প উত্তরে ত্রিবেণী এসে পৌঁছান নবাব সিরাজ।

(চলবে)

স্যামুয়েল চার্লস হিল লিখিত Bengal in 1756-1757; a selection of public and private papers dealing with the affairs of the British in Bengal during the reign of Siraj-uddaula অবলম্বনে। অনুদিত অংশের সকল মতামত লিখকের নিজস্ব।

তথ্যসূত্রঃ

১. ব্রিজেন কিশোর গুপ্ত, Sirajuddaullah and the East India Company, 1756-1757

২. কৃষ্ণ দত্ত, Calcutta: A Cultural and Literary History

৩. জি এ হেন্টি, With Clive in India

৪. নিতীশ সেনগুপ্ত, Land of Two Rivers: A History of Bengal from the Mahabharata to Mujib

৫. রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, কলিকাতা কল্পলতা

পাদটীকা

  • ১. দেওয়ান অর্থাৎ রাজস্ব প্রধান
  • ২. অ্যাড্রিয়ান বিসডম, তৎকালীন ওলন্দাজ চিনসুরা প্রধান
  • ৩. পিয়ের রেনঁ, তৎকালীন ফরাসী বাংলা প্রধান


মন্তব্য

তারেক অণু এর ছবি

চলুক
চান্দোরনগর মানে কি চন্দননগর?

সত্যপীর এর ছবি

জ্বী অণু ভাই।

..................................................................
#Banshibir.

ব্রুনো এর ছবি

চলুক চমৎকার।

সত্যপীর এর ছবি

কন কি?

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

(গুড়) কি শোনাইলেন রে ভাই এক্কেবারে আপনার ভক্ত হইয়া গেলাম একদিনেই পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম দেহি বেবাকে কি কয়

সত্যপীর এর ছবি

ভক্তসাবের নাম মুবারক জানা হৈল না।

..................................................................
#Banshibir.

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

পড়ছি। জানছি। চলুক

সত্যপীর এর ছবি

ধন্যবাদ, আছেন ভালো?

..................................................................
#Banshibir.

কল্যাণ এর ছবি

চমৎকার লেখা, টানা পড়ে শেষ করলাম। একটা জিনিস জানার খুব আগ্রহ হচ্ছে পীরবাবা, এই মানিকচাঁদ কত দিন বেঁচে ছিলো আর শেষ পর্যন্ত কিভাবে মরলো?

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

সত্যপীর এর ছবি

মানিকচাঁদ স্বাভাবিক মৃত্যুবরণই করেন যতদূর জানি, ইংরেজের সাথে মেলা খাতির ছিল তাই শেষ বয়সে ভালোই পোস্টে ছিলেন। মৃত্যুর পর ইংরেজ তার ছেলেগুলিকেও ভালো ভালো পোস্টে খাড়া করিয়ে দেয়। সুতরাং তিনি সফল একটি তেলাপোকা ছিলেন বলা যায় খাইছে

..................................................................
#Banshibir.

কল্যাণ এর ছবি

হ তেলাপোকারা শেষ পর্যন্ত কেমনে কেমনে যেনো ভালোই থাকে, আফসোস।

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক কিছু জানলাম

তাহমিদুর রহমান

সত্যপীর এর ছবি

ধন্যবাদ।

..................................................................
#Banshibir.

নিলয় নন্দী এর ছবি

তরতাজা লেখা হয়েছে।
পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
(গুড়)

সত্যপীর এর ছবি

তরতাজা হতেই হবে, লিখা পাব্লিশ করার আগে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে নেই কিনা চাল্লু

..................................................................
#Banshibir.

সাইদ এর ছবি

পীর সাব ১৯৫৭ না ১৭৫৭??

সত্যপীর এর ছবি

হে হে হে দেঁতো হাসি

ঠিক করি দিসি ভাই, ধন্যবাদ।

..................................................................
#Banshibir.

মন মাঝি এর ছবি

চলুক দারুন!

****************************************

সত্যপীর এর ছবি

ধইন্যা লইবেন? এই যে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন পোস্ট!

____
বুনোফুল

সত্যপীর এর ছবি

হাসি

..................................................................
#Banshibir.

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

পীর দাদা, অনেক দিন পর দিলেন লেখাটা।
বরাবরের মতই দারুন।

পরেরটা দিতে বেশি দেরি কইরেন না।

সত্যপীর এর ছবি

হৈ মিয়া নিজে তো লিখা দিসেন পাক্কা এক মাস হইল, আপনের পরের কিস্তি কই?

..................................................................
#Banshibir.

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

দেঁতো হাসি
যাক, আমার লেখার কথাও তাইলে কারও মনে আছে !!!
এইবারে তো ঝট্‌-জলদি লিখতেই লাগে। হাসি

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

ভাইজান, অসাম হৈছে। তবে একটু দেরিতে দেরিতে পোস্ট দিচ্ছেন মনে হয়? অধম পাঠকদের চাতক পথ চাওয়ার প্রতি সুবিচার করেন বস। সৈয়দ মুজতবা আলী আমার প্রিয় লেখক। আপনিও তার ছদ্মনাম নিয়ে সেরকমই দুর্দান্ত হয়ে উঠছেন। গুরু গুরু

সত্যপীর এর ছবি

এ কি কইলেন? আমি মুজতবা আলীর মতন দুর্দান্ত? উনার গল্পের কুট্টির মতন কই, আস্তে কন ঘোড়ায় শুনলে হাসব দেঁতো হাসি

..................................................................
#Banshibir.

উচ্ছলা এর ছবি

চলুক চলুক

অপদার্থ অপেক্ষা বুদ্ধিমান শয়তানের আলোচনা উত্তম।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

এরকম অসাম এক্সপ্রেশন একমাত্র তোমার কী-বোর্ড দিয়েই বেরুনো সম্ভব গড়াগড়ি দিয়া হাসি

সত্যপীর এর ছবি

দেঁতো হাসি

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

ওয়েটাইতেসি। পরের কাহিনি কোবে?

অর্ফিউস এর ছবি

পীর সাহেব।লেখাটা শেষ করবেন আশা করি।জটিল হইতেসে।মাঝখানে দিলেন তো হোঁচট খাইয়ে থামিয়ে। দেঁতো হাসি একেবারে ভক্ত বানায়ে ফেললেন, তবে লেখাটার বাকি পর্বগুলো না পেলে আফসোস থেকে যাবে। মন খারাপ

সত্যপীর এর ছবি

আসছে।

..................................................................
#Banshibir.

অর্ফিউস এর ছবি

খুব ভালো।অপেক্ষায় রইলাম। হাসি

অর্ফিউস এর ছবি

পীর সাহেব,একেরপর এক লিখতেছেন, কিন্তু এইটার পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি মেলাদিন হল।অনুগ্রহ করে লিখবেন কিন্তু।প্রত্যেকদিন এইখানে একবার করে ঢুঁ মারি,শুধু এর পরের পর্ব আসলো কিনা সেইটা দেখার জন্য।

সত্যপীর এর ছবি

এইটা একটু খুঁজাখুঁজি করে লেখতে হয় তাই আধা ফিনিশ পড়ে আছে। খালি অনুবাদ দিলে মানুষ ভারি রাগ করে। সময় সংকট কেটে গেলেই দিব, প্রতিদিন আসছেন শুনে খুব লজ্জা পাইলাম ভাই। অত্যন্ত দুঃখিত।

..................................................................
#Banshibir.

অর্ফিউস এর ছবি

এইটা একটু খুঁজাখুঁজি করে লেখতে হয় তাই আধা ফিনিশ পড়ে আছে। খালি অনুবাদ দিলে মানুষ ভারি রাগ করে। সময় সংকট কেটে গেলেই দিব, প্রতিদিন আসছেন শুনে খুব লজ্জা পাইলাম ভাই। অত্যন্ত দুঃখিত।

অনেক ধন্যবাদ ভাই।সময় করে লেখাটা দিয়ে দিয়েন। ভাল থাকবেন। শ্রদ্ধা

সত্যপীর এর ছবি

মোম্বাতি ক্যা? বাঁইচা আসি তো ইয়ে, মানে...

..................................................................
#Banshibir.

অর্ফিউস এর ছবি

আচ্ছা পীর সাহেব ,তাহলে আসেন কোলাকুলি করি। কোলাকুলি এইটা আগেই করতাম কিন্তু সেইদিন কমেন্ট রিজেক্ট হচ্ছিল। দেঁতো হাসি

চেরাগদান এর ছবি

পাঁচ পর্যন্ত এক টানা ভক্ষন করিলাম। চা, ভাত বেবাক ই ঠান্ডা হইয়া পড়িয়া আছে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।