Warning: Creating default object from empty value in i18ntaxonomy_term_page() (line 34 of /var/www/sachalayatan/s6/sites/all/modules/i18n/i18ntaxonomy/i18ntaxonomy.pages.inc).

মোগল শাসন

মোগল রাজপুত্র বিষয়ক ফানা ফানা

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: সোম, ২৯/০৩/২০২১ - ২:৪৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রচুর তো গালাগালি করলাম মোগল বাদশাদের। আওরঙ্গজেব তার ভাইগুলার কল্লা নামিয়ে নিল, ছেলেগুলিকে (কয়টা মেয়েকেও) গারদে পুরল বা নির্বাসনে মারল। বাপকে গারদে পোরা তো কবেই সারা। শাজাহান তার ভাই খসরুকে হাওয়া করে দিল (তাকে অবশ্য তার বাপ জাহাঙ্গীরই আঁধি করে রেখেছিল)। দুষ্ট লোক সব, নিঠুর হৃদয়।

আইসেন পাঠক মোগল রাজপুত্রদের ঘটনা বোঝার চেষ্টা করি। বাবুর থেকে আওরঙ্গজেব পর্যন্ত সকল বাদশার তিন থেকে পাঁচটা করে ছেলে ছিল। জ্যেষ্ঠত্ব (বড় ছেলে গদিতে বসা) বিষয়ক কোন নিয়ম তাদের নাই, বিশেষতঃ আকবরের পরে। সুতরাং আপনার গদিতে বসার সম্ভাবনা ২০% হতে ৩৩% মোটামুটি। রাজপুত্র বড় হতে হতে ভাইদের কেউ শরাব খেয়ে ঢলে পড়বে, কেউ কম বয়সে মারা যাবে। বাকি যারা আছে, তারা ভাই নয় শত্রু! মারবে অথবা মারা খাবে।

শাজাহান/ আওরঙ্গজেব ও পরবর্তী মোগল জমানায় উচ্চভ্রাতানিধন নিয়ে গভীর ফানা ফানার প্রয়োজন আছে। ১৫৮৫ সালে একটা আপাতঃ সাধারণ ঘটনা যেখানে চালু ছেলে আকবর কাবুলে একটা পরিবর্তন আনেন, সেইটাও দেখা চাই।


লড়াই ক্ষ্যাপা

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: শুক্র, ০৩/০১/২০২০ - ১২:৪২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মোগল সাম্রাজ্যের ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট বাবুর বাদশার জানপহেচান নেতা ছিলেন তার পূর্বপুরুষ আমীর তৈমুর। তৈমুর সমরখন্দে রাজধানী করেছিলেন, তাই বাবুর বাদশারও স্বপ্ন ছিল সমরখন্দ চেপে বসার। তৈমুর দিল্লীজয় করে ফিরে গিয়েছিলেন তাই বাবুরেরও শখ ছিল দিল্লী লুটে ফের সমরখন্দ বুখারায় ঘরের ছেলে ঘরে ফিরত যাবেন। কিন্তু ম্যান প্রপোজেস গড ডিজপোজেস। সমরখন্দ থেকে সেইযে জুয়ানকালে চড় খেয়ে কাবুল পালাতে হয়েছিল আর ফিরে যাওয়া হয়নি। বাকী জীবন সমরখন্দ জয়ের টাকা ও সিপাই জড়ো করার উদ্দেশ্যে ভারতবর্ষে নানাবিধ যুদ্ধমুদ্ধ করতে করতে আঁৎকা অক্কা পেয়ে কাবুলে ঘুম গেলেন বাবুর। রেস্টিনপীস।

ফাস্ট ফরোয়ার্ড সোয়াশো বছর। নাতির নাতি শাজাহানের আমল। কাবুল তখন মোগল সাম্রাজ্যের পশ্চিম সীমান্ত, সেখান হতে তিনি পুলা মুরাদ বখশকে আরো পচ্চিমে বলখের দিকে পাঠালেন অভিযানে, রিজার্ভ ফোর্স নিয়ে তৈয়ার ছিল আরেক পুলা আওরঙ্গজেব। অপারেশন সমরখন্দ।

বুড়াদাদা বাবুরের স্বপ্নপুরুষ, আমীর তৈমুরের রাজধানী সমরখন্দ। হাঁটু চাপড়ে শাজাহান কইলেন রাজা বানকে আনা রে। ফির না জানা রে। ছম ছমা ছম ছম।


যমুনা অথবা সালসাবিলের তীরে

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: সোম, ২৮/০১/২০১৯ - ১২:০৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রথম পর্ব

মনে করেন পরকালের বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। স্নিগ্ধ সালসাবিল ঝর্ণার তীরে গাছের ছায়ায় মাদুর পেতে দাদু-নাতি বাবুর আকবর বসে। কাছেই শুয়ে টাল বাদশা হুমায়ুন। পোড়া ভুট্টা খেতে খেতে ধীরকণ্ঠে পিতামহ বাবুর বলছেন, নাতিরে, বহোৎখুব। তিমুরিদ বংশের নাম উজ্জ্বল করেছিস রে বেটা। এমনকি ঘাড়ত্যাড়া রাজপুতগুলোকেও বশ করতে পেরেছিলি শুনলাম। উত্তম, অতি উত্তম। আকবর তখন বলবেন, হাঁ দাদুভাই। গুজরাতের বন্দর দরকারি জিনিস তাই রাজপুতানা কব্জা করে নিলাম। কেবল সিসোদিয়ার বাচ্চা প্রতাপ বড় যন্ত্রণা দিয়েছে।


কিভাবে মোগল হবেনঃ একটি সহজ পপি গাইড

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: শনি, ২৬/০৫/২০১৮ - ৮:২৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিদ্রোহ পর্ব

মনে করেন বিকালবেলা চা আর মুড়ি নিয়া বসে আছেন। আরামে পড়ছেন সচলায়তন। এমন সময় কুথা থেকে এক জ্বীনের বাদশা এসে কইল ওরে সুনা। আছিস কেমন? কী কচ্ছিস? আপনি কইবেন এই তো বাদশা সায়েব। পপি গাইড পড়ছি। মোগল হওয়ার বাসনা। আপনি কেমন?

জ্বীনের বাদশা তখন খলখল করে হেসে ধরেন কইবে, দুত্তোর পপি গাইড। এই সব বাদ দে। মোগল হতে চাস? আকবর করে দিতে পারি, হতে চাস আকবর?

আপনি তো খুশিতে উত্তেজনায় লুঙ্গিতে পিশাব করে দিয়ে বলবেন, আকবর? ও আল্লা আকবর? অবশ্যই হতে চাই।

আবার খলখল করে বিশ্রী হেসে জ্বীনের বাদশা তখন কইবে, যা তবে হয়ে যা - মুহম্মদ আকবর। ফুঃ!!

মুহম্মদ আকবর?


কিভাবে মোগল হবেনঃ একটি সহজ পপি গাইড

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: সোম, ০৫/০২/২০১৮ - ২:২৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মনসব ও বিবাহ পর্ব

কবি বলেছেন জন্ম হউক যথা, তথা কর্ম হউক ভালো।

আজাইরা বাকোয়াজ। জন্মই আসল কথা। কর্ম হইলে হইল না হইলে নাই। উঁচু বংশে জন্মাতে না পারার বেদনা থেকে কবি এই ছত্র লিখেছেন। মোগল বংশে আগের পর্বে জন্ম নিলেন স্মরণ আছে? এইসব ফাউ কবিতার ছত্র আপনার জন্য প্রযোজ্য নহে। মৌজে থাকেন। পান চিবান। শীষ দিয়ে গান ধরেন টিকাটুলির মোড়ে একটা হল রয়েছে। হলে নাকি ইয়ার কন্ডিশন রয়েছে।


কিভাবে মোগল হবেনঃ একটি সহজ পপি গাইড

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: রবি, ২৪/১২/২০১৭ - ১০:৫৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

জন্ম ও শিক্ষা পর্ব

আ। সাব্বাস। কত লক্ষ কোটি মানুষের ভিড়ে হাজারে হাজার পুলাপান জন্মায় প্রতিদিন, তার মাঝে আপনি জন্ম নিলেন আজ মোগল বংশে। আপনাকে অভিবাদন। আসুন তবে পরিবারের সাথে পরিচয় করিয়ে দেই। আপনার পিতা স্বয়ং বাদশা। বংশ তিমুরিদ। মাতা রাজপুত। আপনার আগে দুই ভাই, ভিন্ন মাতার পেটে। একটা বোন। জন্মস্থান আগ্রার কোন এক দূর্গ। রোজ শনিবার।

আলহামদুলিল্লা। আগ্রায় আজ ঈদ, ঘরে ঘরে আনন্দ। হ্যাশট্যাগ জশনে জুলুছ। পাথর ও আতর চালাচালি। বিরিয়ানি ও হালুয়া পাকশাক। রাজপথে লোকের মুখে হাসি ও হাতে মোহর।

কুটিল মোগল জীবনের পয়লা দিনে স্বাগতম পাঠক। বন্ধুর এই পথে পীরের পপি গাইড হউক আলোকবর্তিকা।


চাঁদের আলোয় একজন নিরাশ যুবক

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: রবি, ১২/০৬/২০১৬ - ৮:৪৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মেয়েটি পিছন থেকে আস্তে আস্তে হেঁটে কাছে এসে ডাক দিল, ভাইজান!

যুবকটি ফিরে না তাকিয়েই মাথা ঝাঁকাল অল্প, মুখে কিছু বলল না। মেয়েটি বসে পড়ল পাশে। কিছু সময় কেটে গেল চুপচাপ। উপরে মেঘমুক্ত আকাশ, হাল্কা বাতাস দিচ্ছে। চকচকে চাঁদের আলোয় ভেসে যাচ্ছে বাগান। মধ্যরাত পেরিয়ে গেছে সেই কখন! ভোর হবে কিছু পরেই। সাধারণত এই সময় এরকম বাইরে থাকলে আম্মি মানবতী কবর থেকে উঠে এসে বকে ফিরাতে নিয়ে আসেন, কিন্তু আজ এখনো তার সাড়া নেই। ভালই, ভাবে মেয়েটি। তারপর আচমকা সে জিজ্ঞাস করে,

আচ্ছা ভাইজান, আব্বাকে আপনি সত্যই ভাই বলে ডাকতেন?

বিষণ্ণ যুবকটি ফিক করে হেসে ফেলে বলে, হ্যাঁ তো!


ছবির গল্পঃ পাণ্ডবছাউনিতে ভয়াল রাত

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৪/০৩/২০১৬ - ৮:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আর ছিল দশবন্ত, পাল্কিবেয়ারার ছেলে। কারখানায় কাজ করত আর তার দেয়ালে নানান ছবি এঁকে রাখত মনের খেয়ালে। হঠাৎ একদিন মহাদর্শী বাদশার নজরে আসে এই দেয়ালের ছবি। তিনি খাজা (আব্দুস সামাদ) এর কাছে একে ছবির কাজ শিখতে পাঠান। দুদিন না যেতেই দশবন্ত তার সময়ের সবচাইতে দুর্দান্ত এবং অতুলনীয় চিত্রশিল্পী হয়ে ওঠে, কিন্তু মস্তিষ্কবিকৃতির করাল গ্রাস অসাধারন মানুষটিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আত্মহত্যা। কিছু অসামান্য প্রভুখন্ড সে রেখে গেছে বৈকি।

আবুল ফযল, আইন ই আকবরি।

প্রিয় পাঠক আজকের ছবির গল্প রযমনামা (অর্থাৎ যুদ্ধের গল্প) হতে উন্মাদ শিল্পী দশবন্তের এ নাইট অ্যাসল্ট অন দ্য পাণ্ডব ক্যাম্প।


ছবির গল্পঃ শাজাহানকে বিলাতি লকেট পরিহিত জাহাঙ্গীরের সাবাসি

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: রবি, ১৪/০২/২০১৬ - ৪:১১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

জাহাঙ্গীর বাদশার দাক্ষিণাত্য জয়ের স্বপ্নে কাঁথাবালিশ জাবড়ে মান্ডু শহরে থানা গাড়ার কথা আমরা আগের ছবির গল্পে দেখেছি। অক্টোবর, ১৬১৭। মান্ডুর আকাশে আজ চাঁদের গায়ে চাঁদ। শহরবাসী ভাবে করবে কী।তিন নং রাজপুত্র খুররম সদ্য দাক্ষিণাত্যে কিছু লড়াই জিতে বীরদর্পে বাপের কাছে ফিরেছেন। সন্তুষ্ট পিতা কয় পাত্তর মদ খেয়ে কইলেন যা ব্যাটা সাব্বাস। তোর নাম আজ থেকে শাহ-জাহান, দুনিয়ার রাজা। তিনি নিজে জাহাঙ্গীর (দুনিয়াজয়ী) আর ছেলে যদি হয় শাজাহান (দুনিয়ার রাজা) তাহলে কিছু টেকনিকাল সমস্যা থেকে যায় বটে তবে সেসব বাজে তর্ক।

প্রিয় পাঠক আজকের ছবির গল্পে মোগল শিল্পী প্রয়াগের আঁকা ছবি “জাহাঙ্গীর প্রেজেন্টিং প্রিন্স খুররম উইথ টার্বান অর্নামেন্ট”।


ছবির গল্পঃ মালিক অম্বর বিষয়ক জাহাঙ্গীরের মনকলা

সত্যপীর এর ছবি
লিখেছেন সত্যপীর (তারিখ: বুধ, ০৩/০২/২০১৬ - ১০:২৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

চতুর্থ মোগল বাদশা নূরউদ্দীন মুহম্মদ জাহাঙ্গীরের বুদ্ধিশুদ্ধি ছিল অল্প। তার টাইটেল জাহাঙ্গীর ফার্সীতে বোঝায় দুনিয়াজয়ী ব্যক্তি, তাই তার হুকুমে আঁকা ছবিতে প্রায়ই দেখা যায় তিনি হাস্যকরভাবে জামাজুতাসুদ্ধা একটা আস্ত ভূগোলকের উপর খাড়িয়ে আছেন। এইরকম একটা ছবি নিয়ে আলোচনা করি আজকে চলেন। ছবিতে মাছের উপর গরু, গরুর উপর পৃথিবী, পৃথিবীর উপর জাহাঙ্গীর। হাতে সোনার ধনুক, সেইটে দিয়ে সোনার তীর ছুঁড়ে মারছেন সড়কির উপর গাঁথা একটি কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের কেটে ফেলা মাথার হাঁ করা মুখের দিকে।

কৃষ্ণাঙ্গ মানুষটি দক্ষিণ ভারতের আফ্রিকান বংশোদ্ভূত গেরিলা কমান্ডার চাপু ওরফে মালিক অম্বর, যার যন্ত্রনায় বাপবেটা আকবর জাহাঙ্গীর ছিলেন অতীষ্ঠ।